চলারপথে ডেস্ক :
পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র থাকাকালে ট্রান্সফরমারের বৈদ্যুতিক তারের স্পর্শে ঝলসে যায় দুই হাত। সেই থেকে এক হাত নেই, আরেক হাত আছে কনুই পর্যন্ত। হাত হারিয়ে দমে না যাওয়া সেই অদম্য মানুষটি চবির সদ্য সাবেক শিক্ষার্থী বাহার উদ্দিন রায়হান। হাত না থাকার কারণে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দ্বারে দ্বারে ঘুরে চাকরি পাননি রায়হান। কিন্ত রায়হানের অদম্য ইচ্ছাশক্তি নজর কেড়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের। তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এনহ্যান্সিং ডিজিটাল গভর্নমেন্ট অ্যান্ড ইকোনমি (ইডিজিই) প্রকল্পের ‘প্রশিক্ষণ সমন্বয়ক’ পদে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতকোত্তর পাস করেছেন বাহার। বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তরে জিপিএ ৪-এর মধ্যে পেয়েছেন ৩ দশমিক ১৩। যুক্ত ছিলেন বিভিন্ন সামাজিক কাজেও। কিন্ত এতসব অর্জন খুশি করতে পারেনি চাকরির বাজারকে। পরিবারে আছে শুধু মা। ছোটবেলা থেকে এই মায়ের সাহায্যে এতটা পথ অতিক্রম করেছে রায়হান। এবার মাকে সাহায্য করার জন্য একটা চাকরির প্রয়োজন ছিল তার। তাই রায়হানকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই লেখালেখি করেন। তার বন্ধুরা তুলে ধরেন সংগ্রামের গল্প। যা নজর কাড়ে সরকারের আইসিটি বিভাগের।
পরে আজ ১৫ মে সোমবার রাজধানীর আইসিটি টাওয়ারে আনুষ্ঠানিকভাবে বাহারের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
চাকরি পাওয়ার পর আনন্দ প্রকাশ করে বাহার উদ্দিন রায়হান বলেন,’যেখানে বেসরকারি সেক্টরগুলোতে চাকরি পাচ্ছিলাম না, সেখানে সরকারি চাকরি ছিল আমার জন্য অবিশ্বাস্য। তারা আমার স্পৃহাকে মূল্যায়ন করে সুযোগ দিয়েছেন এই জন্য আমি কৃতজ্ঞ। নিজের সর্বোচ্চ চেষ্টা করবো এই বিভাগে ভালো করার এবং দেশের মানুষের জন্য কাজ করার চেষ্টা করবো।’
মায়ের আনন্দের কথা জানিয়ে রায়হান আরো বলেন, ‘আমার মা অনেক খুশি হয়েছেন। তিনি সারা গ্রামে মিষ্টি বিতরণ করছেন।’
সবশেষে হতাশ না হয়ে তরুণ সমাজকে নিজের চাহিদা অনুযায়ী যোগ্যতা তৈরির উপদেশ দেন রায়হান।
চবির ইতিহাস বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবদুল্লাহ আল মাসুম বলেন, ‘রায়হান তার প্রতিবন্ধকতা নিয়ে বিভাগ থেকে ভালো ফলাফল করেছে। সুযোগ সুবিধা থাকার পরও অনেক সাধারণ শিক্ষার্থীরাও রায়হানের মতো ফলাফল করতে পারে না। তার অদম্য ইচ্ছাশক্তি তাকে সাফল্য এনে দিয়ছে। বিভাগের ছাত্র হিসেবে তার এই অর্জনে আমরা গর্বিত।’
শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক পেইজে লিখেন,’ আজ অন্য রকম একটি দিন আমাদের জন্য। শৈশবে দুই হাত হারানো অদম্য তরুণ বাহার উদ্দিন রায়হান আজ যোগ দিলেন আইসিটি পরিবারে। এনহান্সিং ডিজিটাল গভর্নমেন্ট অ্যান্ড ইকোনমি (EDGE) প্রকল্পের অধীনে ১,০০,০০০ প্রশিক্ষণ কার্যক্রম তত্ত্বাবধানের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিল সে।’
রায়হানকে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়ার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) নির্বাহী পরিচালক রনজিৎ কুমার, আইসিটি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহ, ইডিজিই প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. মুহম্মদ মেহেদী হাসান, পলিসি অ্যাডভাইজার আব্দুল বারী, কম্পোনেন্ট টিম লিডার ড. মাহফুজুর ইসলাম শামীমসহ আইসিটি বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ।
রায়হানের বাড়ি কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার লক্ষ্যারচর ইউনিয়নে। ২০০৪ সালের ৩০ অক্টোবর এক দুর্ঘটনায় এক হাত ও আরেক হাতের কনুই পর্যন্ত হারান। দুর্ঘটনার পর আয়ত্ত করেন মুখ দিয়ে লেখা। আত্মবিশ্বাসী রায়হান আবার ২০০৮ সাল থেকে পড়াশোনা শুরু করেন। চকরিয়া সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তি হন। ২০১৪ সালে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে জিপিএ ৩ দশমিক ৪১ পেয়ে এসএসসি পাস করেন রায়হান। তারপর মানবিক বিভাগে ভর্তি হন চকরিয়া কলেজে। সেখান থেকে এইচএসসি পাস করে প্রতিবন্ধী কোটায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে ভর্তির সুযোগ পান তিনি।
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুঃখ প্রকাশ করে বলেছেন, সারাবিশ্ব গাজায় হত্যাকাণ্ড প্রত্যক্ষ করছে, কিন্তু তা বন্ধে কেউ কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এটি খুবই দুঃখজনক।
আজ ২৪ মার্চ রবিবার গণভবনে ফিলিস্তিনের ফতেহ আন্দোলনের (শাসক দল) মহাসচিব লেফটেন্যান্ট জেনারেল জেবরেল আলরজউবের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এ কথা বলেন তিনি।
সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচ রাইটার মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। নজরুল ইসলাম বলেন, গাজায় ইসরায়েলি হামলার বিষয়ে নীরব অবস্থানের জন্য মানবাধিকার সংস্থাগুলোর কঠোর সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটি এক ধরনের ভন্ডামি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ থাকা উচিত এবং এটি করা উচিত মুসলিম উম্মাহর নিরাপত্তা এবং ফিলিস্তিনিদের দুর্দশা লাঘবের জন্য।
শেখ হাসিনা ফিলিস্তিনিদের প্রতি তার দ্ব্যর্থহীন সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে গাজায় নারী ও শিশুসহ হাজার হাজার মানুষ হত্যাসহ ইসরায়েলি বাহিনীর হাসপাতালে হামলার নিন্দা করেন। তিনি গাজায় মৃত্যুর জন্য শোক প্রকাশ করেন এবং গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এরই মধ্যে মিশরের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য দুই দফা ত্রাণ সহায়তা পাঠিয়েছে। আমি যেখানেই সুযোগ পেয়েছি ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য আন্তর্জাতিক ফোরামে সবসময় আওয়াজ তুলেছি।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
অনলাইন ডেস্ক :
৩ ডিসেম্বর মঙ্গলবার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক ও এক্স অ্যাকাউন্টে এক বিবৃতিতে এ মন্তব্য করেছেন তথ্য উপদেষ্টা।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করতে ভারতের শাসক গোষ্ঠী ‘সংখ্যালঘুর বিষয়টিকে’ সামনে এনে বাংলাদেশ বিরোধী প্রচারণা শুরু করেছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।
বিবৃতিতে নাহিদ ইসলাম বলেন, ভারতের ক্ষমতাসীন অভিজাতরা বিভেদ সৃষ্টিকারী রাজনীতি ও বাংলাদেশ বিরোধী ভাষণে লিপ্ত হচ্ছে। বাংলাদেশের পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা এবং আসামের সাথে ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক রয়েছে; তারা আমাদের স্টেকহোল্ডার। বাংলাদেশে চলমান আন্দোলনকালে কলকাতা ও দিল্লি থেকে ছাত্রছাত্রীরা আমাদের সাথে সংহতি প্রকাশ করে শেখ হাসিনার নৃশংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে। ভারতের এই গণতন্ত্র প্রেমী মানুষ গুলো আমাদের বন্ধু।
ভারতের শাসক অভিজাত ও হিন্দুত্ববাদী শক্তি এই ধরনের গণতান্ত্রিক সম্পর্ক ও সম্প্রীতি চায় না। তারা বাংলাদেশের উত্থান ও শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক জাগরণকে হুমকি মনে করে। ফলে তারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ঘৃণা বৃদ্ধি করছে। ‘সংখ্যালঘু নিপীড়ন’ বর্ণ ব্যবহার করে, দিল্লি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন এবং বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ও জাতি-পুনর্নির্মাণ প্রক্রিয়া ব্যাহত করার চেষ্টা করছে।
আমরা শুরু থেকেই জোর দিয়ে আসছি যে ভারত সরকারকে অবশ্যই আওয়ামী লীগের লেন্স দিয়ে বাংলাদেশকে দেখা বন্ধ করে দিতে হবে এবং সমতা, ন্যায্যতা এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের উপর ভিত্তি করে একটি নতুন সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে।
হিন্দুসহ সকল সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পূর্ণ নাগরিকত্ব অধিকার, মর্যাদা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ বদ্ধপরিকর। আওয়ামী লীগের আমলে সংখ্যালঘুরা চরম নিপীড়নের শিকার অথচ দিল্লি নিঃশর্তভাবে আওয়ামী লীগকে সমর্থন করেছে। ভারত যখন তাদের নিজেদের সংখ্যালঘুদের অধিকার নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়, তখন তারা আওয়ামী লীগকে আশ্রয় ও সহায়তা দিয়েছে, একটি দল যারা সংখ্যালঘুদের নির্যাতন করেছিল এবং বাংলাদেশে গণহত্যা করেছিল।
গণহত্যা ও শিশু হত্যার জন্য দায়ী একজন পলাতক শেখ হাসিনাকে আশ্রয় ও সহায়তা প্রদান অব্যাহত রেখে ভারত সরকার যৌথ গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে ক্ষুণ্ণ করার ঝুঁকি নিচ্ছে। ভারত ভুলে গেলে চলবে না যে তার স্থায?িত্ব ও অখণ্ডতা বাংলাদেশের স্থায?িত্ব ও অখণ্ডতার সাথে ঘনিষ্ঠভাবে সংযুক্ত।
বাংলাদেশকে ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত করার চেষ্টা করছে বিজেপি। এটা হলে ভারতের দেশীয় রাজনীতির জন্য ক্ষতিকর হবে। বাংলাদেশ বিরোধী ও মুসলিম বিরোধী রাজনীতি ভারতের জাতীয় স্বার্থ সাধন করবে না বা তার ঐক্যতে অবদান রাখবে না। সুতরাং, আমরা ভারতকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার বন্ধ করে গণতন্ত্রের প্রতি সম্প্রীতি ও সম্মান বজায় রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।’
অনলাইন ডেস্ক :
বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির নেতারা এমন অনেক কিছু সামাজিক মাধ্যমে লিখছেন, যা লেখা উচিত নয় বলে জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আজ ৫ আগস্ট সোমবার বিকেলে সাংবাদিকদের সঙ্গে কয়েক মিনিটের আলাপে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের ঘটনায় সবাই উদ্বিগ্ন। কিন্তু সেটা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে এমন কিছু বলবেন না বা লিখবেন না, যা বাংলাদেশ বা ভারতের জন্য সমস্যা হতে পারে। কারণ, বিজেপির লোকেরা এমন কিছু কথা সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, যা করা উচিত নয় বলে মনে করি।’
একই সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজের দলের নেতা-কর্মীদেরও বাংলাদেশ নিয়ে কিছু লেখার বিষয়ে সাবধান করে দেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের নেতাদেরও বলব, কেউ কিছু লিখতে যাবেন না। আপনাদেরও (সাংবাদিকদের) বলব। সমাজের প্রত্যেক মানুষকে বলব। প্রতিবেশীর কিছু হলে পাশের রাজ্যে তার প্রভাব পড়ে। সে ক্ষেত্রে শান্ত থেকে পরিস্থিতি বিবেচনা করতে হবে।’
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাদের একটা দায়িত্ব রয়েছে এবং তাঁদেরও এমন কিছু লেখা উচিত নয়, যা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য সমস্যার হয়ে উঠতে পারে।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিষয়টা দেশের ওপর ছেড়ে দিন। দেশে সরকার আছে। কোনো রকম প্ররোচনামূলক বা হিংসাত্মক মন্তব্য করবেন না।
সাধারণ মানুষের কাছে মমতার আবেদন, তাঁরা যেন কোনো অবস্থাতেই সাম্প্রদায়িক কোনো আচরণ না করেন এবং আইন নিজের হাতে না নেন।
তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘আমাদের অনেকে ওখানে রয়েছেন। ভারত সরকার ও বাংলাদেশ সরকার অবশ্যই তাঁদের দেখে রাখবে। আমাদের (রাজ্য সরকারকে) ভারত সরকার যা বলবে, আমরা সেইভাবে কাজ করব।’
তাৎপর্যপূর্ণভাবে সপ্তাহ দু-এক আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, বাংলাদেশে বড় কোনো সমস্যা হলে এবং সেখানকার মানুষ পশ্চিমবঙ্গে এলে তাঁদের এখানে অবশ্যই আশ্রয় দেওয়া হবে। এই প্রসঙ্গে জাতিসংঘের একটি প্রস্তাবের উল্লেখ তিনি করেছিলেন।
বিষয়টি নিয়ে প্রবল বিতর্ক হয়। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য নিয়ে তাঁদের আপত্তির কথা ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানান। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই আপত্তির কথা স্বীকার করে বলেন, ভারতের পররাষ্ট্রবিষয়ক আচরণ কী হবে, এ প্রসঙ্গে কথাবার্তা বলার অধিকার একমাত্র ভারত সরকারের রয়েছে, রাজ্যের নেই।
রাজ্য সরকারের গোয়েন্দা আধিকারিকদের কয়েকজন ৫ আগস্ট সোমবার বলেন, ‘সোমবারের ঘটনা দেখে আমাদের মনে হচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রীকে আগেই বাংলাদেশের অবস্থা সম্পর্কে জানানো হয়েছিল। তিনি হয়তো আগেই বুঝতে পেরেছিলেন, সোমবার যে ঘটনা বাংলাদেশে ঘটল, তা ঘটতে চলেছে। অনেক সময় মুখ্যমন্ত্রী সব কথা চেপে রাখতে পারেন না এবং প্রকাশ্যে বলে ফেলেন। সেটাই হয়তো তিনি জুলাইয়ের সভায় বলে ফেলেছিলেন।’
রাজ্য সরকারের গোয়েন্দা সূত্র এই দিন জানায়, বাংলাদেশের পদত্যাগী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রথমে আগরতলা নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখান থেকে তিনি দিল্লির উদ্দেশে যাত্রা করেন। তবে আগরতলায় সরকারি স্তরে এই বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। পশ্চিমবঙ্গও সরকারি স্তরে আনুষ্ঠানিকভাবে এ নিয়ে কেউ মুখ খোলেননি।
ভবিষ্যতে দিল্লিতে শেখ হাসিনার স্থান হবে কি না, এই প্রশ্নের উত্তরে ভারতের এক সাবেক রাজ্যপাল বলেন, তিনি মনে করেন, ভারতে হাসিনার স্থান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাঁর আশা, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই বিষয়ে নির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত নেবে। তবে সব দিক বিবেচনা করেই তাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
অনলাইন ডেস্ক :
ইতালির রোমে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ খাদ্য ব্যবস্থা সামিট+২ স্টকটেকিং মোমেন্টে যোগদান শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফরসঙ্গীদের বহনকারী কাতার এয়ারওয়েজের একটি নিয়মিত ফ্লাইট বুধবার রাত ১টা ৫০ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। রোম থেকে ঢাকায় আসার পথে ফ্লাইটি কাতারের দোহার হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক ঘণ্টা যাত্রাবিরতি করে।
এর আগে ফ্লাইটটি প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফরসঙ্গীদের নিয়ে ইতালির স্থানীয় সময় বুধবার সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় দুপুর ১টা ৪৫ মিনিট) রোম ফিউমিসিনো বিমানবন্দর থেকে দেশের উদ্দেশ্যে রওনা হয়।
রোম থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছালে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবসহ সামরিক-বেসামরিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাঁকে স্বাগত জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের আমন্ত্রণে ইউএনএফএসএস+২ সম্মেলনে যোগ দিতে ২৩ জুলাই ইতালির রোমে পৌঁছেন।
খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) সদর দপ্তরে ২৪-২৬ জুলাই ইউএনএফএসএস+২ সম্মেলনটি ‘সাসটেইনেবল ফুড সিস্টেম ফর পিপল, প্লানেট অ্যান্ড প্রোসপারিটি : ডাইভার্স পাথওয়ে ইন এ শেয়ার্ড জার্নি’ প্রতিপাদ্য নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী ২৪ জুলাই বিশেষ অতিথি বক্তা হিসেবে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনে ভাষণ দেন।
ইউএনএফএসএস+২-এ ২০ জনেরও বেশি রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানসহ ১৬০ টিরও বেশি দেশ থেকে প্রায় ২০০০ প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। শেখ হাসিনা ‘ফুড সিস্টেম অ্যান্ড ক্লাইমেট অ্যাকশন’ শীর্ষক পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনেও অংশ নেন। একই দিন সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী এফএও সদর দপ্তরে বাংলাদেশ-বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কক্ষের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও যোগ দেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের খাদ্য ব্যবস্থা শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে এফএও সদর দপ্তরে সদ্য উদ্বোধনকৃত বাংলাদেশ-বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কক্ষে নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহালের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। এ ছাড়াও, ইতালির তিন মন্ত্রী-কৃষিমন্ত্রী ফ্রান্সেস্কো ললোব্রিগিদা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও পিয়ান্তেদোসি এবং বিচারমন্ত্রী কার্লো নর্দিও এফএও সদর দপ্তরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
এএফও’র মহাপরিচালক কু ডংইউ, ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড অব এগ্রিকালচারাল ডেভেলপমেন্ট (আইএফএডি) এর প্রেসিডেন্ট আলভারো লারিও এবং ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের (ডব্লিউএফপি) নির্বাহী পরিচালক সিন্ডি হেনসলি ম্যাককেইনও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
২৫ জুলাই প্রধানমন্ত্রী ইউরোপের ১৫টি দেশে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতগণকে নিয়ে আয়োজিত ‘আঞ্চলিক দূত সম্মেলনে’ যোগ দেন।
এ ছাড়া ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সঙ্গে শেখ হাসিনার দ্বিপাক্ষিক বৈঠক ও দু’টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে ‘জ্বালানি সহযোগিতা’ ও ‘সাংস্কৃতিক বিনিময় কর্মসূচি’ শীর্ষক দুটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) বিনিময় হয়।
শেখ হাসিনা ইতালিতে প্রবাসী বাংলাদেশিদের দেওয়া নাগরিক সংবর্ধনায়ও যোগ দেন।
সূত্র : বাসস
চলারপথে রিপোর্ট :
হবিগঞ্জের মাধবপুরে দাওয়াত খেয়ে বাড়ি ফেরার পথে বজ্রপাতে চাচি ও ভাতিজির মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আরও এক নারী আহত হয়েছেন। আজ ২৯ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার ছাতিয়াইন ইউনিয়নের শিমুলঘর সড়ক বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
মাধবপুর প্রশাসন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শিমুলঘর গ্রামে দাওয়াত খেয়ে ফেরার পথে শিমুলঘর সড়ক বাজারে বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই ছাতিয়াইন গ্রামের সোহেল মিয়ার স্ত্রী শান্তা আক্তার (৩২) ও ভাই রুবেল মিয়ার মেয়ে সাদিয়া আক্তারের (১০) মৃত্যু হয়। এ সময় এই পরিবারের শারমিন আক্তার নামে এক নারী আহত হন। তাকে মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
মাধবপুর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) আতিকুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, নিহতদের মরদেহ মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছে। সেখানে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।
মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনজুর আহসান জানান, প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। সরকারিভাবে পরিবারটিকে সহায়তা করা হবে।