চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় উম্মুক্ত নিলামে বিক্রি করা বালু অপসারণ কাজ শুরু হয়েছে। আজ ১৬ মে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোঃ মোশারফ হোসেনের উপস্থিতিতে বালু অপসারণ কাজ শুরু হয়। বিকেল পর্যন্ত জলাশয় থেকে প্রায় ৫০ ট্রাক্টর বালু অপসারণ করা হয়।
এ সময় নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ শাহআলমসহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ৮ মে সোমবার দুপুরে সদর উপজেলার নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের বড়হরন লেবেল ক্রসিং এলাকায় রেলওয়ে জলাশয় অবৈধভাবে বালু ফেলে ভরাটের দায়ে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ মোশারফ হোসেন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে একটি ভেকুসহ জলাশয়ে ফেলা প্রায় ১৫ হাজার ঘনফুট বালু জব্দ করেন। পরে তিনি চার কার্যদিবসের মধ্যে উম্মুক্ত নিলাম ডেকে বালু বিক্রির জন্য নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ আলমকে নির্দেশ দেন।
এসিল্যান্ডের নির্দেশে গত ১০ মে বুধবার বিকেলে নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গনে উম্মুক্ত নিলাম আহবান করেন ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আলম।
সে সময় এসিল্যান্ড মোঃ মোশারফ হোসেনের উপস্থিতিতে নিলামে বড়হরণ গ্রামের মোঃ মাঈনুদ্দিন নামে এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ মূল্য ৮১ হাজার টাকায় জব্দ করা বালু কিনে নেন। মঙ্গলবার সকাল থেকে নিলাম ডাকা মোঃ মাঈনুদ্দিন কয়েকটি ট্রাক্টর দিয়ে বালু অপসারনের কাজ শুরু করেন।
সদর উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় লোকজন ও নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, বড়হরণ এলাকায় রেলের জলাশয় বালু ফেলে ভরাট করে ফেলে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র।
এ ঘটনার প্রতিবাদে গত ৭ মে রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সদর উপজেলার বড়হরণ লেবেল ক্রসিং এলাকায় মানববন্ধন করে এলাকার সর্বস্তরের জনগণ।
পরদিন দুপুরে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ মোশারফ হোসেন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ঘটনাস্থল থেকে একটি ভেকুসহ জলাশয়ে ফেলা প্রায় ১৫ হাজার ঘনফুট বালু জব্দ করেন।
এ ব্যাপারে নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ আলম বলেন, রেলওয়ের জলাশয়ে অবৈধভাবে ফেলা বালু ৮১হাজার টাকায় উম্মুক্ত নিলামে বিক্রির পর মঙ্গলবার থেকে এই বালু অপসারণ কাজ শুরু হয়।
এ ব্যাপারে সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোঃ মোশারফ হোসেন বলেন, উম্মুক্ত নিলামে বিক্রি করা বালু মঙ্গলবার সকাল থেকে অপসারণ শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার সারাদিনে প্রায় ৫০ ট্রাক্টর বালু অপসারণ করা হয়। কয়েকদিনর মধ্যেই জলাশয়ে ফেলা বালু অপসারণ করা শেষ হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
দেশে কিছু সংখ্যালঘুদের উপর হামলার খবর এলেও তা ধর্মীয় কারণে নয়, নিছক রাজনৈতিক কারণে বলে উল্লেখ করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কওমী ছাত্রসমাজ।
আজ ১৩ আগস্ট মঙ্গলবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ছাত্র সমাজের পক্ষ থেকে বলা হয়, আওয়ামীলীগের কিছু হিন্দু নেতারবাড়ি-ঘওে আক্রমণকে কেন্দ্র ধর্মীয় উপাসনালয়ে আক্রমণ হয়েছে চলে চালিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা চলছে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন হাফেজ আল মেহরান শাওয়াল। কওমী ছাত্র সমাজের পক্ষে হাফেজ ফখরুল হাসান, হাফেজ তারেক জামিল, হাফেজ মুজাহিদুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। হিন্দু সম্প্রদায়ের পক্ষে বক্তব্য রাখেন আনন্দময়ী কালীবাড়ির পুরোহিত জীবন চক্রবর্তী, দক্ষিণ কালীবাড়ির সাধারণ সম্পাদক রাকে শবণিক, সমীর চক্রবর্তী প্রমুখ।
ছাত্র সমাজের পক্ষ থেকে জানানো হয়, চলমান পরিস্থিতিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আলেম সমাজ ও মুসলমানদেও সহায়তা নিয়ে কওমী মাদরাসা ছাত্ররা বিভিন্ন মন্দির পাহারা দিচ্ছে। এখন পর্যন্ত জেলার কোনো উপাসনালয়ে হামলার ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু একটি কুচক্রী মহল গুজব ছড়াচ্ছে বলে সচেতন থাকার আহবান জানানো হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এ কমিটি ঘোষণা করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন নেতাকর্মীরা।
এ উপলক্ষে আনন্দ মিছিল করেছেন নেতাকর্মীরা। গত ১ জুলাই সোমবার বিকেলে বৈরী আবহাওয়াকে উপেক্ষা করে শহরের লোকনাথ ট্যাংকের পাড় থেকে আনন্দ মিছিল বের হয়। পরে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে এসে শেষ হয়। মিছিলে নেতৃত্ব দেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু। পরে বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন জানান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া গণমানুষের নেতা র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি উপহার দিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ কমিটি নবীন প্রবীণের সমন্বয়ে করা হয়েছে। এজন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং গৃহায়ন গণপূর্ত মন্ত্রী উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীকে ধন্যবাদ জানান।
এ সময় তিনি জানান, আগামী নভেম্বর মাসের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের অধিনস্থ সব অঙ্গ সংগঠনের সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠন করা হবে। এর মাধ্যমে তৃণমূলে আওয়ামী লীগ অঙ্গ সংগঠনকে শক্তিশালী করা হবে।
অপরদিকে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু বলেন, ‘আগামী দিনে যেকোনো আন্দোলন সংগ্রামে উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী নেতৃত্বে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে থেকেই সরকার বিরোধী অপশক্তিকে মোকাবিলা করবে।’
শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান তিনি।
সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, নবগঠিত কমিটির সহসভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন-২, ডা. মো. আবু সাঈদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহাবুল আলম খোকন, তাসলিমা সুলতান খানাম নিশাত, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মো. মহসিন, সৈয়দ এখতেশামুল বারী তানজিল, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক এমবি কানিজ, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক স্বপন রায়, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম ফেরদৌস, দপ্তর সম্পাদক মো. মনির হোসেন ও শ্রম সম্পাদক মোশতাক আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
জামাই পিঠা, বউ পিঠা, মালপোয়া, হৃদয়হরণ, কলাপিঠা, লবঙ্গ লতিকা, জামদানি, জুড়ি, ঝিনুক, নারকেলের ভাজা পুলি, সেদ্ধপুলি, দুধপুলি, ছিটাপিঠা, ফুলঝুড়ি, পাকান পিঠা, মাসকলাই, দুধচিতই, পাটিসাপটা, মুখ চাহনি, পানতোয়া, সন্দেশ-নেভিকুলা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রসমালাইসহ বাহারি জাতের শতাধিক পিঠা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া ইউনাইটেড কলেজে জেলার ঐতিহ্যবাহী পিঠা নিয়ে কলেজ প্রাঙ্গণে হাজির হন একাদশ-দ্বাদশ শিক্ষার্থীরা।
আজ ২০ জানুয়ারি সোমবার এই কলেজে পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয়। এই উৎসবে নানা জাতের পিঠার মাধ্যমে বাংলার ঐতিহ্যকে ফুটিয়ে তুলেছেন শিক্ষার্থীরা। সোমবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত কলেজ প্রাঙ্গণে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এ পিঠা উৎসবের আয়োজন করে। বেলা ১১টার দিকে কলেজ প্রাঙ্গণে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ইবনে আইন মারুফ পিঠা উৎসবের আয়োজন করেন।
এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কলেজের উদ্যোক্তা ও পরিচালক হারুন অর রশিদ ও শাহীন মৃধা, পরিচালক ও প্রভাষক সিরাজুল ইসলাম, প্রভাষক শাহাদৎ হোসেনসহ কলেজের সকল শিক্ষক।
কলেজের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির মানবিক, ব্যবসা শাখা ও বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা ছয়টি স্টল বসান। এসব স্টলে তাঁরা বাংলাদেশের বিভিন্ন ঐতিহ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বাহারি জাতের পিঠা নিয়ে হাজির হন। এসব স্টলে শতাধিক প্রকারের পিঠা শোভা পেয়েছে। বেলা ১১টার দিকে সরেজমিনে কলেজ প্রাঙ্গণে গিয়ে নবীন শিক্ষার্থীদের বর্ণিল সাজে উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে। বিভিন্ন স্টলে ছিল নানা ধরনের পিঠা। ব্যবসায় শাখা বিভাগের একটি স্টলে গিয়ে ব্যতিক্রমী কিছু পিঠা চোখে পড়ে।
শিক্ষার্থীরা মালপোয়া, হৃদয়হরণ, কলাপিঠা, লবঙ্গ লতিকা, জামদানি, জুড়ি, ঝিনুক, নারকেলের ভাজা পুলি, সেদ্ধপুলি, দুধপুলি, ছিটাপিঠা, ফুলঝুড়ি, পাকান পিঠা, মাসকলাই, দুধচিতই, পাটিসাপটা, মুখ চাহনিসহ শতাধিক জাতের পিঠা নিয়ে হাজির হয়েছেন।
মানবিক বিভাগের একটি স্টলে জামাই পিঠা, বউ পিঠাসহ নানান জাতের পিঠা চোখে পড়ে। মানবিক বিভাগের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী খাদিজা আক্তার ও জেরিন আক্তার বলেন, শিক্ষার্থীরা দিনটিকে উৎসবের রং দিয়েছে। তারা দেশের ঐতিহ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পিঠা তৈরি করেছেন। আমরা আজ সবাই মিলের বাংলার ঐতিহ্যকে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া ইউনাইটেড কলেজের উদ্যোক্তা ও পরিচালক হারুন অর রশিদ ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ইবনে আইন মারুফ বলেন, একসময় বাংলার ঘরে ঘরে শীত এলে পিঠা বানানোর ধুম পড়ে যেত। কিন্তু এই ঐতিহ্য অনেকটাই হারিয়ে যাচ্ছে। নতুন প্রজন্মের কাছে গ্রামবাংলার এই চিরন্তন ঐতিহ্য তুলে ধরতে এ উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। প্রতি বছর আমরা এই উৎসবের আয়োজন করে থাকি।
পিঠা উৎসবের স্টলগুলোতে পাপড়ি, ঝিনুক, পাকন, রেশমি, ত্রিভুজ, ঝিলমিল, ডিম সুন্দরী, হৃদয়হরণ, বেণি, চন্দ্রপুলি, চিংড়ি পিঠাও প্রদর্শন করা হয়। বেলা পৌনে ১টার দিকে কলেজের শিক্ষক, অভিভাবক ও কলেজের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন।