অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি দেওয়ায় রাজশাহী জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সাঈদ চাঁদকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আজ ২৫ মে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দেক নগরীর ভেড়ীপাড়া মোড় থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পর তাকে আরএমপি কার্যালয়ে আনা হয়েছে।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আনিসুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, একটি মাইক্রোবাসে তল্লাশি চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এর আগে, শুক্রবার পুঠিয়ার শিবপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বিএনপির সমাবেশ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে হুমকি দেন চাঁদ। এ সময় তিনি বলেন, ‘আর ২৭ দফা বা ১০ দফা নয়। শেখ হাসিনাকে কবরে পাঠাতে হবে।’
চলারপথে রিপোর্ট :
বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিচালিত সরকার বিষমুক্ত স্বদেশ বিনির্মাণের জন্যই বিরামহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, রাষ্ট্র কাঠামো বিষাক্ত নয়, বরং বিষমুক্ত স্বদেশ বিনির্মাণের জন্যই বিরামহীনভাবে কাজ করে আসছে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরিচালিত সরকার।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের হাস্যকর ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাতে ওবায়দুল কাদের আজ ৫ মে শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বন্দুকের নলের মুখে অবৈধ ও অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতা দখলকারী নিষ্ঠুর স্বৈরাচার জিয়াউর রহমানের হাতে জন্ম নেওয়া বিএনপি দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থেকে রাষ্ট্র কাঠামোকে বিষাক্ত করে গেছে এবং তার প্রতিক্রিয়া ও ক্ষত এখনও সমাজ-রাষ্ট্র বয়ে বেড়াচ্ছে।
তিনি বলেন, বিএনপি রাজনীতির নামে রাষ্ট্র কাঠামোর সর্বত্রই মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী আদর্শ এবং স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তিকে প্রতিষ্ঠিত ও লালন-পালন করেছে। সময়ের সাথে সাথে বিএনপি একটি বিষবৃক্ষে পরিণত হয়েছে। সেই বিষবৃক্ষকে সমূলে উৎপাটন করে আগামী প্রজন্মের জন্য একটি অসাম্প্রদায়িক প্রগতিশীল উন্নত-সমৃদ্ধ নিরাপদ ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার বদ্ধপরিকর।
ওবায়দুল কাদের বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও আওয়ামী লীগ এই জনপদের সুদীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রামের পথপ্রদর্শক। সুদীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রামের পথপরিক্রমায় ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু কর্তৃক স্বাধীনতা ঘোষণার পর দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয়েছে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী সংগঠন শুধু নয়, এ দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামেও নেতৃত্বদানকারী সংগঠন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য যে সরকার আইনগত বৈধতা ও স্বীকৃতি অর্জন করে বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার বন্দরে পৌঁছে দিয়েছিল, সেই সরকার ছিল ১৯৭০ সালে নির্বাচনে বিজয়ী আওয়ামী লীগের জনপ্রনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত সরকার তথা আওয়ামী লীগ সরকার।
ওবায়দুল কাদের বলেন, মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী প্রতিষ্ঠান আওয়ামী লীগ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাণের সংগঠন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আওয়ামী লীগে মুক্তিযোদ্ধাদের সংখ্যার হিসাব তুলতে গিয়ে নিজের স্বাধীনতা বিরোধী অবস্থানকেই সুস্পষ্ট করেছেন। ব্যক্তি স্বার্থে ও ক্ষমতার লোভে আদর্শচ্যুত কতিপয় দালাল, খুনি ও স্বাধীনতা বিরোধী গোষ্ঠীকে নিয়ে গঠিত বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুলের আওয়ামী লীগ সম্পর্কে এই ধরনের অবমাননাকর বক্তব্য তাদের স্বাধীনতা বিরোধী অবস্থানের বহিঃপ্রকাশ ছাড়া কিছু নয়।
তিনি বলেন, বাঙালি জাতির হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ অর্জন যে স্বাধীনতা, তার ইতিহাসের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ওতপ্রোতভাবে জড়িত। স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস আওয়ামী লীগের ইতিহাস; মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস আওয়ামী লীগের ইতিহাস; এদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের ইতিহাস আওয়ামী লীগের ইতিহাস।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস থেকে যদি কেউ আওয়ামী লীগকে বিচ্ছিন্ন করতে চায় তাহলে তারাই এ দেশের জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকারের প্রতি শতভাগ নিষ্ঠা রেখে সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণই আওয়ামী লীগের প্রধান লক্ষ্য।
তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আজ বিভেদের কথা বলছেন! এতে আমাদের আফসোস হয়। জাতির পিতার অবিসংবাদিত নেতৃত্বে বাংলার হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খ্রিস্টানসহ সকল ধর্মের মানুষ যুদ্ধ করে এ দেশের স্বাধীনতা অর্জন করেছে। জাতির পিতাকে হত্যার পর খুনি-ঘাতকচক্র স্বাধীনতা বিরোধী পাকিস্তানি ভাবধারায় দেশকে পিছনের দিকে নিয়ে যায়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের পবিত্র চেতনাকে ভূ-লুণ্ঠিত করে স্বাধীনতা বিরোধী সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে রাজনৈতিক বৈধতা দিয়ে বিভেদের গোড়াপত্তন করেছিল সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান। স্বাধীনতা বিরোধী, বঙ্গবন্ধুর খুনিচক্র, ভুঁইফোঁড়, দালাল রাজনীতিবিদ ও কালোবাজারীদের ঐক্যবদ্ধ প্লাটফরম হিসেবে সৃষ্টি হয় বিএনপি। তখন এ দেশের মুক্তিযোদ্ধারা অবর্ণনীয় নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়।
তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা তখন নিজেদের পরিচয় দিতেও ভয় পেত। তথাকথিত সেনা অভ্যুত্থানের মিথ্যা অভিযোগে সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর শত শত মুক্তিযোদ্ধা সেনা অফিসার এবং শত শত মুক্তিযোদ্ধা সৈনিককে ফাঁসি দিয়ে ও ফায়ারিং স্কোয়াডে নৃসংশভাবে হত্যা করে জিয়াউর রহমান।
ওবায়দুল কাদের বলেন, জিয়াউর রহমানের হাতে প্রতিষ্ঠিত বিএনপির মুখম-লে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নির্যাতনের কলঙ্কের কালিমা রয়েছে। সেই কলঙ্কের কালিমা এবং স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির সঙ্গে তাদের সহ-অবস্থানের ঘটনা আড়াল করতেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আওয়ামী লীগে মুক্তিযোদ্ধাদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তুলে একটা বিভ্রান্তি সৃষ্টির পাঁয়তারা করছেন।
সূত্র : বাসস
অনলাইন ডেস্ক :
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শপথ নেওয়ার মাসপূর্তির একদিন পর ঢাকাসহ ২৫ জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
আজ ৯ সেপ্টেম্বর সোমবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ঢাকা, ফরিদপুর, সিলেট, হবিগঞ্জ, শেরপুর, ময়মনসিংহ, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মাগুরা, রংপুর, গাইবান্ধা, নওগাঁ, নাটোর, পাবনা, বগুড়া, জয়পুরহাট, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, চাঁদপুর, গাজীপুর, কুমিল্লা, মৌলভীবাজার, খুলনা ও গোপালগঞ্জে নতুন জেলা প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত ২০ আগস্ট এসব জেলার ডিসিকে প্রত্যাহার করে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দফতরে বদলি করা হয়। এর মধ্যে একটি প্রজ্ঞাপনে ঢাকা, সিলেট, হবিগঞ্জ, ময়মনসিংহ, মাগুরা, রংপুর, গাইবান্ধা, নওগাঁ, নাটোর, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, গাজীপুর, কুমিল্লা, মৌলভীবাজার, খুলনা ও গোপালগঞ্জের ডিসিকে প্রত্যাহার করার কথা জানানো হয়েছে।
দ্বিতীয় প্রজ্ঞাপনে ফরিদপুর, শেরপুর, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, পাবনা, বগুড়া, জয়পুরহাট ও চাঁদপুরের ডিসিকে প্রত্যাহার করার কথা বলা হয়।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর মাঠ প্রশাসনকে নতুন করে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। দায়িত্ব নেওয়ার পরই জনপ্রশাসনে বড় পরিবর্তনে হাত দেয় সরকার।
গত ১৪ আগস্ট একদিনেই জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানসহ ১১ জন সচিবের চুক্তি বাতিল করা হয়। আর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিবকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে। এছাড়া পদ-পদায়ন থেকে বঞ্চিত কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে উপসচিব ও যুগ্ম সচিব পদে বড় পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। পুলিশ প্রশাসনেও আনা হয়েছে বড় পরিবর্তন। এরই অংশ হিসেবে জেলা প্রশাসকদের প্রত্যাহার করে নতুন করে জেলা প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।
অনলাইন ডেস্ক :
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ৯ মার্চ। এছাড়া মৃত্যুজনিত কারণে একই দিন কুমিল্লা সিটির মেয়র পদে উপ-নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আনিছুর রহমান আজ ২২ জানুয়ারি সোমবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) এই দুই নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা চলবে ভোটগ্রহণ।
আনিছুর রহমান বলেন, এবারও ৫ ধাপে অনুষ্ঠিত হবে উপজেলা পরিষদের নির্বাচন। এপ্রিলে প্রথম ধাপের নির্বাচন সম্পন্ন করার পরিকল্পনা আছে।
অনলাইন ডেস্ক :
ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে দুর্ঘটনাকবলিত ‘সাগর নন্দিনী-২’ নামের তেলবাহী জাহাজ থেকে তেল অপসারণের সময় ফের বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। বিস্ফোরণের পরপর জাহাজে আগুন লেগে গেছে। এতে ৯ পুলিশ সদস্যসহ ১১ জন দগ্ধ হয়েছেন।
আজ ৩ জুলাই সোমবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ঝালকাঠি পৌরসভার খেয়াঘাট সংলগ্ন এলাকায় নদীতে এ ঘটনা ঘটে। সেখানে সাগর নন্দিনী-৪ নামে আরেকটি জাহাজ নোঙ্গর করা রয়েছে। সেটিতেও আগুন ছড়িয়ে যেতে পারে।
ঝালকাঠি সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাসির উদ্দীন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালাচ্ছে। ঘটনাস্থলে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় ঝালকাঠি শহরজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আগুনের মাত্রা ক্রমাগত বাড়ছে। ঘটনাস্থলের কয়েক কিলোমিটার দূরেও আকাশে কালো ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত ১১ জন দগ্ধ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বরাবরের মতো স্থানীয় ট্রলার চালক ও সাধারণ লোকজন বিভিন্নভাবে আহতদের উদ্ধারে সহায়তা করছেন।
ওসি মো. নাসির উদ্দীন বলেন, বাকি তেল অপসারণ করার সময় জাহাজটিতে পুনরায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে ৯ পুলিশ সদস্যসহ ১১ জন দগ্ধ হয়েছেন। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
এর আগে গত ১ জুলাই শনিবার দুপুরে বিকট শব্দে সাগর নন্দিনী-২ জাহাজে বিস্ফোরণ ঘটে। পরে পুরো জাহাজে আগুন লেগে যায়। এতে চারজন শ্রমিক দগ্ধ হন এবং চারজন শ্রমিক নিখোঁজ হন। পরে দুই দিন অভিযান চালিয়ে নিখোঁজ চারজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে নতুন সরকার গঠন করেছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। নতুন সরকারসহ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী সব এমপিদের নিয়ে প্রথম সংসদ অধিবেশন বসতে যাচ্ছে ৩০ জানুয়ারি মঙ্গলবার। দ্বাদশ সংসদে নতুন এমপিদের প্রথম অধিবেশনের আগে রেওয়াজ অনুযায়ী ভাষণ দেবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
এই সংসদের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া আওয়ামী লীগ সরকারি দল ও মাত্র ১১টি আসন নিয়ে বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করতে চায় জাতীয় পার্টি। তবে আসন সংখ্যা কম হলেও জাতীয় পার্টির সদস্যরা সংসদে কার্যকর বিরোধী দলের ভূমিকা পালনের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। অবশ্য পাশে থাকছে তাদের থেকে প্রায় ৬গুণ বেশি ৬২টি আসনে বিজয়ী স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যরা।
সংসদ সচিবালয় জানায়, ২৯ জানুয়ারি সোমবার একাদশ সংসদের মেয়াদ শেষ হয়েছে। আজ মঙ্গলবার থেকে অধিবেশনের মাধ্যমে দ্বাদশ সংসদের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হতে যাচ্ছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ২২৩টি আসন পেয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। অন্যদিকে, মাত্র ১১টি আসন নিয়ে সংসদে বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করবে জাতীয় পার্টি এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ৬২ জন আওয়ামী লীগের পাশেই থাকবে বলে জানা গেছে। মঙ্গলবার বেলা ৩টায় ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. শামসুল হক টুকুর সভাপতিত্বে এই সংসদের প্রথম অধিবেশন বসবে। অধিবেশনের শুরুতে স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এরপর শোক প্রস্তাব উত্থাপন করা হবে। পরে সংসদে ভাষণ দেবেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। তিনি সরকারের সফলতা ও আগামীতে করণীয় বিষয়ে দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখবেন। পরে ওই ভাষণের উপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাব নিয়ে পুরো অধিবেশনে সরকার ও বিরোধী দলের সদস্যরা আলোচনা করবেন। এই অধিবেশনে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিল পাস হতে পারে।
সংসদ সচিবালয় আরও জানায়, অধিবেশনকে সামনে রেখে সংসদ ভবন এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। প্রথম দিনে দর্শনার্থীদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। সংসদ ভবন এলাকায় সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অধিবেশনকে কেন্দ্র করে সংসদ ভবনজুড়ে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। অধিবেশনকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে সংসদ সচিবালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে চিফ হুইপ নুর-ই-আলম চৌধুরী জানান, ৩০ জানুয়ারি থেকে দ্বাদশ সংসদের মেয়াদ শুরু হচ্ছে। এই সংসদের সরকার ও বিরোধী দলের সব সদস্যকে অধিবেশনে উপস্থিত থাকতে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। গত সংসদের থেকে এবার বেশি সময় অধিবেশন চলবে। প্রথমদিন ডেপুটি স্পিকারের সভাপতিত্বে অধিবেশন শুরু হবে। সংসদে রাষ্ট্রপতিকে স্বাগত জানাতে ইতোমধ্যে বিশেষ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এছাড়া আসন বিন্যাসের কাজ চূড়ান্ত করা হয়েছে।
একাদশ সংসদের মতো দ্বাদশ সংসদে বিরোধী দলের দায়িত্ব পালন করবেন মাত্র ১১টি আসনে বিজয়ী জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যরা। ইতোমধ্যে জাপা চেয়ারম্যান জিএম কাদের বিরোধী দলীয় নেতা, জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বিরোধী দলীয় উপনেতা ও জাপা মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্ন বিরোধী দলীয় প্রধান হুইপ হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন জানান, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় দ্বাদশ সংসদের প্রথম অধিবেশনে ভাষণ দেবেন। রাষ্ট্রপতির ভাষণ ইতোমধ্যে মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডসহ সাফল্য ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তার বক্তব্যে প্রাধান্য পাবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোটের নেতা শেখ হাসিনা পঞ্চমবারের মতো সংসদ নেতার দায়িত্ব পালন করবেন। গত ১০ জানুয়ারি শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন সরকার ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা। এই সংসদে আওয়ামী লীগ ২২৩টি, জাতীয় পার্টি ১১টি, ওয়ার্কার্স পার্টি একটি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) একটি, কল্যাণ পার্টি একটি এবং স্বতন্ত্র সদস্যরা ৬২টি আসন পেয়েছে। এবারই ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বিরোধী দলের থেকে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যের সংখ্যা প্রায় ছয়গুণ বেশি। গত রোববার স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের সরকারি বাসভবন গণভবনে আমন্ত্রণ জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে প্রধানমন্ত্রী সংসদকে কার্যকর করতে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন। অন্যদিকে স্বতন্ত্ররা সংরক্ষিত নারী আসনের সিদ্ধান্ত প্রধানমন্ত্রীর ওপর ছেড়ে দেন।
সংসদ সচিবালয় জানায়, অধিবেশনকে সামনে রেখে নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এজন্য সংসদের টানেল ও ড্রাইভওয়েতে যেকোনো ধরনের গাড়ি রাখা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে দর্শনার্থীদের মোবাইল বাইরে রেখে প্রবেশ করতে বলা হয়েছে। এছাড়া প্রত্যেকটি মোবাইল বিশেষভাবে পরীক্ষার জন্যও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অধিবেশন কক্ষে সংসদ সদস্যদের বসার চেয়ার ঠিক আছে কি না তাও পরীক্ষা করা হয়েছে। অধিবেশন কক্ষের সব মাইক্রোফোন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। অধিবেশন চলাকালে সব লিফট ত্রুটিমুক্ত রাখতে বলা হয়েছে। ইতোমধ্যে সংসদ ভবন ফুলসহ বিভিন্ন গাছ দিয়ে সাজানো হয়েছে। অধিবেশন চলাকালে অক্সিজেন সুবিধাসহ সার্বক্ষণিক একটি অ্যাম্বুলেন্স রাখতে বলা হয়েছে। সংসদ লবিতে একজন ডাক্তারসহ প্রয়োজনীয় সামগ্রী থাকবে। এছাড়া সংসদ অধিবেশন ও সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠক সম্পর্কে অবহিত করতে সংসদ সদস্যদের জন্য ‘শর্ট ম্যাসেজ সার্ভিস’ নামে একটি সার্ভিস চালু করা হয়েছে।
সচিবালয় কর্মকর্তারা জানান, নতুন সংসদের প্রথম দিনের অধিবেশনে প্রধান বিচারপতি, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টারা, দেশ-বিদেশি কূটনীতিক, রাজনৈতিক নেতা, সরকারি কর্মকর্তা এবং ভিআইপিদের আত্মীয় স্বজনসহ পাঁচ শতাধিক অতিথি উপস্থিত থাকবেন। ইতোমধ্যে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে সংগৃহীত তালিকা চূড়ান্ত করে আমন্ত্রণপত্র বিতরণ করা হয়েছে। আমন্ত্রণপত্র ছাড়া কোনো অতিথি ওই দিন সংসদ ভবনে প্রবেশ করতে পারবেন না।
সংসদ নেতার নির্দেশ ও স্পিকারের পরামর্শ অনুযায়ী চিফ হুইপ নুর-ই-আলম চৌধুরী আসনবিন্যাস চূড়ান্ত করেছেন। আসন বিন্যাসে একাধিকবার নির্বাচিত, রাজনৈতিক দলে অবস্থান, ভোটের ব্যবধান, জনপ্রিয়তাসহ কয়েকটি বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বারবার নির্বাচিতদের তুলনামূলক সামনের দিকে আসন দেওয়া হলেও প্রথমবার নির্বাচিত হয়েও সামনের সারিতে আসন পেয়েছেন কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম।
সর্বোচ্চ নয় বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার রেকর্ড
সবচেয়ে বেশি নবমবার সংসদ সদস্য হওয়ার রেকর্ড গড়েছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ ও প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম। আর ৮ বার সংসদ সদস্য হয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান খান, সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান। এছাড়া বর্তমান কৃষিমন্ত্রী উপাধ্যক্ষ আবদুস শহীদ, মো. দবিরুল ইসলাম, মির্জা আজম ও বীর বাহাদুর উশৈসিং সাতবার নির্বাচিত হয়েছেন। তারা সকলেই সামনের সারিতে আসন পেয়েছেন।