অনলাইন ডেস্ক :
নাইজেরিয়ার নাগরিক চার্লস ইফেন্ডে উদজুয় ভ্রমণ ভিসায় বাংলাদেশে আসেন ২০১৯ সালে। কিছুদিন পর একটি মাদক মামলায় তার পাসপোর্ট জব্দ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এরপর পলাতক অবস্থায় কাপড় কিনে নাইজেরিয়ায় রপ্তানি করে আসছিলেন তিনি। ব্যবসার আড়ালে একটি প্রতারক চক্র গড়ে তোলেন। ২০২১ সালে ভ্রমণ ভিসায় বাংলাদেশে এসে কাপড়ের ব্যবসা শুরু করা নাইজেরিয়ার আরেক নাগরিক ফ্র্যাংক কোকো ওবিরক্স ছিলেন তার প্রধান সহযোগী।
ওই দুই নাইজেরীয়সহ এ চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। বুধবার রাজধানীর বাড্ডা, বসুন্ধরা আবাসিক ও কদমতলীর শামীমবাগ এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
আজ ২৫ মে বৃহস্পতিবার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১০ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, নিজেদের একটি উন্নত দেশের ধনী ব্যক্তি হিসেবে পরিচয় দিয়ে ব্যবসায়ী ও উচ্চবিত্তদের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়াত চক্রটি। এরপর ভুক্তভোগীর অনিচ্ছা সত্ত্বেও সম্পর্ক গভীর করতে নাটক সাজাত তারা। পরে তারাই কাস্টমস কর্মকর্তা সেজে ভুক্তভোগীকে ফোন করে পার্সেল গ্রহণের জন্য ধাপে ধাপে টাকা নিয়ে আত্মগোপন করত।
তিনি আরো জানান, গত ১৭ মে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখানে এক নারীর ঠিকানায় একটি পার্সেল পাঠায় চক্রটি। পরদিন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কাস্টমস কর্মকর্তা পরিচয়ে এক নারী জানায়, তার নামে একটি মূল্যবান পার্সেল বিমানবন্দরে এসেছে। পার্সেল ডেলিভারি করতে কাস্টমস চার্জ ৬০ হাজার টাকা পরিশোধ করতে হবে। এরপর ওই নারীর কাছ থেকে তিন ধাপে ৭৩ হাজার ৩২০ টাকা নেয় চক্রটি। পরে প্রতারণার শিকার হয়েছেন বুঝতে পেরে ওই নারী থানায় অভিযোগ করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
পাবনা সদরে আম পাড়াকে কেন্দ্র করে ভাতিজার ছুরিকাঘাতে আব্দুল আলিম (৪০) নামের একজনকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় তানজিল হোসেন নামের ওই ভাতিজাকে আটক করেছে পুলিশ।
আজ ১৫ জুন বৃহস্পতিবার সকালে সদরের মালঞ্চি ইউনিয়নের কামারগ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত আলিম মালঞ্চি ইউনিয়নের কামারগ্রামের মৃত জনাব আলীর ছেলে। তিনি একটি ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপে কাজ করতেন। আটক তানজিল একই এলাকার আব্দুল হালিম মোল্লার ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, একটি আম গাছকে কেন্দ্র করে করে দীর্ঘদিন ধরে তাদের পরিবারের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। এদিন সকালে চাচা আব্দুল আলিম আম পাড়তে যায়। আম পাড়তে চাচাকে নিষেধ করলে দুই পরিবারের দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। এসময় ভাতিজা তানজিল চাচাকে এলোপাতারিভাবে ছুরিকাঘাত করে। স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
পাবনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে হত্যাকারি ভাতিজাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক :
অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করায় নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের সফলভাবে নির্বাচন পরিচালনার মাধ্যমে দেশে গণতান্ত্রিক শক্তি আরও সুদৃঢ় হয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয় হয়েছে দেশের জনগণের, জয় হয়েছে গণতন্ত্রের।
আজ ৩০ জানুয়ারি মঙ্গলবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে দেওয়া ভাষণের শুরুতে এসব কথা বলেন রাষ্ট্রপতি।
নির্বাচনে জয়-পরাজয় থাকবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, জনগণের রায় মেনে নিয়ে গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রাখাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। দেশের গণতন্ত্রের জন্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে আয়োজন অত্যন্ত যুগান্তকারী ঘটনা, যা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয় হয়েছে দেশের জনগণের, জয় হয়েছে গণতন্ত্রের।
তিনি বলেন, নির্বাচন ঘিরে একটি মহল সহিংসতা ও সংঘাত সৃষ্টি করে গণতন্ত্রের শান্ত-স্নিগ্ধ যাত্রাপথে বাধা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালিয়েছিল। তাদের গণতন্ত্র বিরোধী ও সহিংস কর্মকাণ্ড সাময়িকভাবে জনগণকে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে রাখলেও ভোটারদের ভোটদান থেকে বিরত রাখতে পারেনি। সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত ও সক্রিয় অংশগ্রহণের জন্যই সরকার ও নির্বাচন কমিশনের সব পদক্ষেপ সার্থক হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন বর্জনকারী দলগুলো সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করেছে। আমি আশা করি— ভবিষ্যতে দেশের রাজনৈতিক দলগুলো সহিংসতা ও নৈরাজ্যের পথ পরিহার করে সাংবিধানিক অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং জনগণ ও গণতন্ত্রের কল্যাণে অহিংস পন্থায় গঠনমূলক কর্মসূচি পালন করবে। সরকারও এক্ষেত্রে সংযত আচরণ করবে- এটাই সবার প্রত্যাশা।
১৯৭৫-এর ১৫ আগস্টের বর্বর হত্যাকাণ্ড ইতিহাসে সবচেয়ে বেদনাদায়ক অধ্যায় উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি নিহত বঙ্গবন্ধু পরিবারের আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনা করেন।
মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচন পরবর্তী দেশে যে নৃশংস সহিংসতা হয়েছিল তা ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়। এর মাধ্যমে আমাদের হাজার বছরের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্যকে ভূলুণ্ঠিত করা হয়েছিল। কিন্তু ২০০৮ সালের নির্বাচনসহ পরবর্তীতে অনুষ্ঠিত সকল নির্বাচনে সহিংসতার পুনরাবৃত্তি থেকে মুক্তি পেয়েছি।
গণতন্ত্র ও উন্নয়নের নিষ্কণ্টক পথচলার জন্য রাজনৈতিক দলগুলো উদার ও গঠনমূলক মনোভাব নিয়ে জনগণের পাশে দাঁড়াবে এটাই দেশবাসীর প্রত্যাশা বলেও উল্লেখ করেন রাষ্ট্রপতি।
চলারপথে রিপোর্ট :
নাটোরের বড়াইগ্রামে বড়াল নদীর উপর নির্মিত একটি সেতু ভেঙ্গে পড়ায় বড়াইগ্রাম পৌর সদরের সাথে ৯ গ্রাসের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। শুক্রবার দুপুরে উপজেলার বড়াইগ্রাম পৌরসভার চক-বড়াইগ্রাম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
বড়াইগ্রাম সরকারি কলেজের প্রভাষক শফিউল হাসান তিতু ও স্থানীয় কাউন্সিলর আব্দুস সামাদ সরকার জানান, সম্প্রতি বরেন্দ্র বহুমুখি উন্নয় কর্তৃপক্ষের অর্থায়নে বড়াল নদীটিকে বড়াল খাল নাম দিয়ে খনন করে। এসময় ওই সেতুর নিকবর্তী এলাকায় অধিক খনন করে ফেলে। এরপর বৃষ্টিসহ বন্যার পানির শ্রোত শুরু হলে ব্রীজটি ধসে পড়ে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়।
তারা আরো বলেন, এই পথে গোপালপুর, কুন্ডুপাড়া, জালোড়া, তালশো, মেরিগাছা, বাঘাইট, মহাননদগাছা, মল্লিকপুর, আটাই গ্রামের অন্তত ৫ লাখ মানুষ চলাচল করে। তাদের নিত্যপণ্য ক্রয় এবং কৃষি পন্য বিক্রির জন্য এই পথেই আনা-নেয়া করতে হয়। দ্রুত এর প্রতিকার না করতে পারলে এই এলাকার মানুষকে অন্তত ৫ কিলোমিটার ঘুরে কাঁচা সড়ক দিয়ে চলাচল করতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে বড়াইগ্রাম পৌর মেয়র মাজেদুল বারী নয়নের মোবাইল ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয় নাই।
এলজিইডি নাটোরের নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম বলেন, সেতুটি পৌর এলাকায়, তাই আমাদের পক্ষে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা সম্ভব হচ্ছে না।
অনলাইন ডেস্ক :
আজ ৪ ডিসেম্বর সোমবার ঝিনাইগাতী মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে মিত্র বাহিনীর সহযোগীতায় মুক্তিযোদ্ধারা ঝিনাইগাতী অঞ্চলকে শত্রু মুক্ত করে।
দিনটি উপলক্ষে আজ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমিটি ও ঝিনাইগাতী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড শ্রদ্ধাভারে শস্মরণ করবে বলে মুক্তিযোদ্ধা সন্তান কমান্ডের সভাপতি সাইফুল ইসলাম জানায়।
পাক-হানাদার বাহিনী ১৯৭১ এর ২৫ মার্চ কালো রাতে যখন ঢাকার বুকে হত্যাযজ্ঞে ঝাঁপিয়ে পড়ে সেই রাতেই ৩-৪৫ মিনিটে প্রেরীত স্বাধীনতার ঘোষনার টেলিগ্রাম ম্যাসেজ ঝিনাইগাতী ভি এইচ এফ ওয়্যারলেস অফিসে এসে পৌঁছে।
ম্যাসেজ পেয়েই ওয়্যারলেস মাস্টার জামান সাহেব তার অফিসের পিয়ন পাঠিয়ে শেষ রাতের দিকে আওয়ামী লীগ নেতা ফকির আ: মান্নানের বাসায় সংবাদ দেন।স্বাধীনতার ঘোষনার সংবাদ পেয়ে পরদিন ভোরেই অর্থাৎ ২৬ শে মার্চ সকালে ছাত্র নেতা ফকির আ: মান্নান, হারুনুর রশিদ মাষ্টার, বাবু অনন্ত কুমার রায়, সেকান্দর আলী ফকির সহ অনেকেই ওয়্যারলেস অফিসে এসে পৌছান।
ইংরেজীতে লেখা টেলিগ্রাম ম্যাসেজটি পেয়েই নেতৃবৃন্দ তৎক্ষনাৎ তা শেরপুর সংগ্রাম পরিষদ নেতৃবৃন্দের কাছে প্রেরন করেন। ২৬ মার্চ সকাল থেকেই বাঁধভাঙ্গা জোয়ারের মতো ঢাকার সর্বশেষ সংবাদ কি তা জানার জন্যে শেরপুর শহরে মানুষ সমবেত হতে থাকে।
ঝিনাইগাতী ওয়্যারলেসে পাঠানো স্বাধীনতার ঘোষণা পত্রটি শেরপুর সংগ্রাম পরিষদ নেতৃবৃন্দ হাতে পেয়েই তা বাংলায় অনুবাদ করে শেরপুর নিউ মার্কেট মোড়ে জনতার স্বতঃস্ফুর্ত সমাবেশে পাঠ করে শুনানো হয়।
বঙ্গবন্ধুর পাঠানো স্বাধীনতার ঘোষনার শ্রবণ করে সমবেত জনতা মুর্হুমুর্হু শ্লোগানে মুখরিত করে তোলে শেরপুরের আকাশ বাতাস। ২৭ মার্চ সকালে শেরপুর সংগ্রাম পরিষদ নেতৃবৃন্দ সর্বজনাব এডভোকেট আব্দুল হালিম সাবেক এমপি, মুহসিন আলী মাস্টার ও ছাত্র নেতা আমজাদ আলী ঝিনাইগাতী এসে পৌছেন।
ঝিনাইগাতীর নেতৃবৃন্দ তাদের অভ্যর্থনা জানান। ছাত্রনেতা ফকির আব্দুল মান্নানকে সঙ্গে নিয়ে তারা নকশি ইপিআর ক্যাম্পে যান। নকশি ক্যাম্পের সুবেদার হাকিম নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠকে বসেই বিদ্রোহ ঘোষণা করেন।
দেশকে শত্রু মুক্ত করা সহ পাক হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করার জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করে শুরু হলো প্রতিরোধ সংগ্রাম। যুদ্ধের প্রস্তুতি হিসাবে রাংটিয়া পাতার ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ শিবির খোলা হয়। ট্রেনিং শেষে এসব স্বেচ্ছাসেবক সহ মুজিব বাহিনী ও ইপিআর সৈনিকদের নিয়ে সুবেদার হাকিম মধুপুরে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন।
পরে তা পিছু হটে পুরাতন ব্র্হ্মপুত্র নদের চরে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। ২৬ এপ্রিল সুবেদার হাকিম এর খোলা জীপ এসে দাঁড়ায় ঝিনাইগাতী আমতলায়। সুবেদার হাকিম জনতাকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে অনুরোধ জানিয়ে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত ঝিনাইগাতী শত্রু মুক্ত ছিল। ২৭ এপ্রিল পাক বাহিনীরা বহর নিয়ে গোলা বর্ষন করতে করতে পৌছায় ঝিনাইগাতী বাজারে।
ঝিনাইগাতী প্রবেশ করেই আওয়ামী লীগ অফিস আগুন ধরিয়ে দেয়। গাড়ী বহর নিয়ে রাংটিয়া পাহাড় পর্যন্ত গিয়ে আবার পিছনে ফিরে এসে ঐদিন বিকালেই কোয়ারীরোডে পাক বাহিনী ক্যাম্প স্থাপন করে। পরে ঝিনাইগাতীর এক মাইল দক্ষিণে আহম্মদ নগর হাই স্কুলে তাদের সেক্টর হেড কোর্য়াটার স্থাপন করে। যা মুক্তিযোদ্ধাদের ১১নং সেক্টরের বিপরীতে পাক বাহিনীর ব্রহ্মপুত্র নদের উত্তরে একমাত্র সেক্টর হেড কোর্য়াটার যার দায়িত্বে ছিলেন মেজর রিয়াজ।
এছাড়া পাক বাহিনী শালচূড়া, নকশি, হলদীগ্রাম, তাওয়াকোচা, মোল্লাপাড়ায় ক্যাম্প স্থাপন করে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৬ বৈশাখ জগৎপুর গ্রামে হানা দিয়ে গ্রামটি পুড়িয়ে দেয় এবং পাক বাহিনী ৪১ জন গ্রাম বাসীকে গুলি করে হত্যা করে। ৫ জুলাই কাটাখালি ব্রীজ ধ্বংস করে মুক্তিযোদ্ধারা রাংঙ্গামাটি গ্রামে আশ্রয় নেয়। দালালদের খবরে পাক বাহিনী রাংঙ্গামাটি গ্রামে তিন দিক থেকে ঘিরে ফেলে। শুধু রাংঙ্গামাটি বিলের দিক খোলা ছিল।
সম্মুখ যুদ্ধে কমান্ডার নাজমুল আহসান শহীদ হন। তাঁর লাশ আনতে গিয়ে আলী হুসেন ও মোফাজ্জল শহীদ হন। পরদিন রাঙ্গামাটি গ্রামে হানা দিয়ে পাক বাহিনী ৯জন গ্রাম বাসীকে এক লাইনে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে। ২৩ আগষ্ট বীর মুক্তিযোদ্ধারা তাওয়াকুচা ক্যাম্প দখল করে এবং মুক্ত তাওয়াকুচায় বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলণ করে। তাওয়াকুচা যুদ্ধে ৪ জন পাক সৈন্য ও ৭ জন রাজাকার নিহত হলে পাক বাহিনী ক্যাম্প ছেড়ে দিয়ে পিছু হটে আসে। ৩ আগষ্ট নকশি ক্যাম্প আক্রমন করে মুক্তিযোদ্ধারা।
আগের দিন ২ আগষ্ট বিকেলে মেজর জিয়া নকশি ক্যাম্প আক্রমনের জন্যে মুক্তিযোদ্ধাদের হাতিয়ারের অবস্থান গুলো পরিদর্শন করেন। ওই দিনের যুদ্ধে ২৬ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ও নিখোজ হন। যুদ্ধে পাক বাহিনীর ৩৫ জন সৈন্য নিহত হয়।
২৭ নভেম্বর কমান্ডার জাফর ইকবালের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা ঝিনাইগাতী বাজারের রাজাকার ক্যাম্প দখল করে ৮টি রাইফেল সহ ৮ জন রাজাকারকে ধরে নিয়ে যায়।
২৮ নভেম্বর পাক বাহিনী ঝিনাইগাতী হানা দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা এবিএম সিদ্দিকের ছোট ভাই ওমর (১১) ও মুক্তিযোদ্ধা মকবুলের পুত্র খালেক (১০), পাক বাহিনীর দালালদের খবরে ৮ জনকে আহম্মদ নগর ক্যাম্পের বধ্যভূমিতে ধরে নিয়ে এক লাইনে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করে। পরে তাদের এক গর্তে মাটি চাপা দিয়ে পুতে রাখে।
৩ ডিসেম্বর রাত আনুমানিক দেড়টায় শালচূড়া ক্যাম্পের পাক বাহিনী কামালপুর দুর্গের পতনের আগাম সংবাদ পেয়ে পিছু হটে এবং আহম্মদ নগর হেড কোর্য়ারটারের সৈনিকদের সাথে নিয়ে রাতেই মোল্লাপাড়া ক্যাম্প গুটিয়ে শেরপুরে আশ্রয় নেয়।
এভাবে রাতের আঁধারে বিনা যুদ্ধে ঝিনাইগাতী শত্রু মুক্ত হয়। ৪ ডিসেম্বর বীর মুক্তিযোদ্ধারা ঝিনাইগাতীতে স্বাধীন বাংলার অহংকারের পতাকা উড়ায় এবং মুক্তদিবস ঘোষণা করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
আগামী ৯ সেপ্টেম্বর উদ্বোধন হরে বহুল কাঙ্ক্ষিত আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ। ইতিমধ্যেই উদ্বোধনের সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আজ ২ সেপ্টেম্বর শনিবার দুপুরে প্রকল্পের কাজ পরিদর্শন করেন রেলওয়ের একটি প্রতিনিধি দল। প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মোঃ ইয়াছিন।
প্রতিনিধি দলে উপস্থিত ছিলেন রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অবকাঠামো) শহীদুল ইসলাম, পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক জাহাঙ্গীর হোসেন, আখাউড়া-লাকসাম ডুয়েলগেজ ডাবললাইন প্রকল্পের পরিচালক মোঃ সুবক্তগীনসহ রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
আগামী ৯ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ভার্চুয়ালি আখাউড়া-আগরতলা রেলপথটি উদ্বোধন করার কথা রয়েছে।
প্রতিনিধি দলের সদস্যরা আখাউড়া-আগরতলা রেলপথের প্রারম্ভিক স্টেশন আখাউড়ার গঙ্গাসাগর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ট্যাক কারে করে ভারত সীমান্তবর্তী শিবনগর পর্যন্ত ঘুরে দেখেন।
পরিদর্শন শেষে আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ প্রকল্পের পরিচালক আবু জাফর মিয়া বলেন, প্রকল্পের ৯৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। খুব শীঘ্রই এটি উদ্বোধন হবে। কিছু কাজ যেগুলো বাকি আছে- তা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই শেষ হবে। রেলপথটি দিয়ে প্রথমে পণ্যবাহী ট্রেন চলাচল করবে। এর মাধ্যমে ভারতের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্য আরো বাড়বে।
উল্লেখ্য, সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৮ সালের জুলাই মাসে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া থেকে ভারতের আগরতলার নিশ্চিন্তপুর পর্যন্ত ১২ দশমিক ২৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে আখাউড়া-আগরতলা ডুয়েলগেজ রেলপথ নির্মাণ কাজ শুরু হয়। রেলপথটির ৬ দশমিক ৭৮ কিলোমিটার পড়েছে বাংলাদেশ অংশে। প্রকল্পের কাজটি বাস্তবায়ন করছে ভারতের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান টেক্সমেকো রেল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড। প্রকল্পের বাংলাদেশ অংশের সাড়ে ৬ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় প্রায় ২৪১ কোটি টাকা।
দেড় বছরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও করোনা মহামারীসহ নানা সংকটের কারণে নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। পরে কয়েক দফা প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়েছে গত জুন মাসে। এই রেলপথটি উত্তর-পূর্ব ভারতের সাথে সরাসরি যুক্ত করবে বাংলাদেশকে।
ইতিমধ্যেই প্রকল্পের বাংলাদেশ অংশের রেলপথে রেললাইন বসানোর কাজ শেষ। এছাড়াও প্রকল্পের ১৬টি সেতু ও কালভার্টের সবকটিরই কাজ শেষ হয়েছে। আর ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে প্রায় ৯৫ ভাগ।