চলারপথে রিপোর্ট :
চলতি বছরের এসএসসি সমমান পরীক্ষার বিজ্ঞান বিভাগের শেষ পরীক্ষা ছিল আজ ২৭ মে শনিবার। এদিন পদার্থ বিজ্ঞান পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১০টা থেকে পরীক্ষা শুরু হয়ে সুষ্ঠু পরিবেশে বেলা ১টায় পরীক্ষা শেষ হয়। পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরপরই তিন তলা ভবনের উপর থেকে ছাত্রদের শোরগোল চেচামেচি ভেসে আসে। হঠাৎ এমন অস্বাভাবিক শোরগোল শুনে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দু’জন অফিস পিয়নকে বিষয়টি দেখতে পাঠান। অফিস পিয়নরা গিয়ে দেখে ছাত্ররা ময়লা ফেলার প্লাষ্টিকের ঝুরি ও পানি খাওয়ার গ্লাস ভাংচুর করছে। শ্রেণী কক্ষের কয়েকটি টেবিল এলোমেলো পড়ে আছে।
পরে শিক্ষকরা এগিয়ে এলে ছাত্ররা বিদ্যালয় ত্যাগ করে। শনিবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় এসএসসি পরীক্ষার সাব সেন্টার নাছরীন নবী পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। ওই কেন্দ্রে রেলওয়ে সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়, আমোদাবাদ শাহ আলম উচ্চ বিদ্যালয় এবং হীরাপুর শহীদ নোয়াব মেমোরিয়্যাল উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দেয়।
এদিকে টানা একটি মাস সুন্দরভাবে পরীক্ষা দিলেও শেষ দিন এসে ছাত্রদের এমন আচরণের কারণ খোঁজে পাচ্ছেন না শিক্ষকরা। শিক্ষকদের ধারনা, এবছর প্রথমবারের মতো পরীক্ষা কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়। ক্যামেরা লাগানোর ক্ষোভ থেকে এমনটি করে থাকতে পারে দুষ্টু ছাত্ররা।
শনিবার বিকাল ৫টায় সরজমিনে নাছরীন নবী পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, তিন তলার একটি ওয়াশ রুমের লুকিং গ্লাসের কাঁচ ভাঙ্গা। একটি কক্ষের সিসি ক্যামেরা উপরের দিকে ঘুরানো। বিদ্যালয়ে প্রবেশের ছোট গেটের একটি অংশ দেয়াল থেকে খুলে পড়ে আছে। পানি সাপ্লাইয়ের ৪টি ট্যাপের মাথা ভাঙ্গা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুইজন পরীক্ষার্থীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, বিদ্যালয়ের একজন পিয়ন এক ছাত্রের শার্টের কলারে ধরেছিল। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে অন্য ছাত্ররা এমন করেছে।
নাছরীন নবী পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক কাজী মোঃ ইকবাল বলেন, আমি সকালেই আভাস পেয়েছিলাম। আজ শেষ পরীক্ষা ছাত্ররা গোলমাল করতে পারে। ক্যামেরা লাগানোর কারণে ছাত্ররা ক্ষুব্ধ ছিল।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নাছরীন নবী পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেবব্রত বনিক বলেন, জেলা প্রশাসক স্যারের পরামর্শে এবছর এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়। ছাত্ররা সারা বছর যা পড়ালেখা করেছে এখন তারা ভালো করে পরীক্ষা দিবে। এতে অসুবিধা কোথায়। সিসি ক্যামেরা লাগানোর কারণ এ ধরনের আচরণ করে থাকতে পারে বলে তিনি বলেন।
চলারপথে ডেস্ক :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন উপজেলায় চাষ পদ্ধতি সহজলভ্য হওয়া কৃষকরা দিন দিন ঝুঁকছেন ভুট্টার চাষের দিকে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় যা চোখে পড়ার মত। অনুকূল আবহাওয়া ও আধুনিক কৃষি প্রযুক্তিতে কৃষকদের আগ্রহ সৃষ্টি হওয়ায় ভুট্টার বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা স্থানীয়রা কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় প্রায় ১৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টার আবাদ করা হয়। যা গত বছরের চেয়ে ৫ হেক্টর বেশি। তবে ভুট্টা চাষে উদ্বুদ্ধ করতে কৃষকদের সার, বীজসহ সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।
কৃষক সামছু মিয়া বলেন, কত কয়েকবছর যাবৎত ধরে ভুট্টা চাষ করছেন। এ মৌসুমে তিনি বাড়ি সংলগ্ন ৪ বিঘা জমি ভুট্টা আবাদ করেন। এ চাষ করতে বিনামূল্যে বীজ ও সারসহ অন্যান্য সব উপকরণ পেয়েছেন। ভুট্টা আবাদ করতে প্রতি বিঘায় পানি, জমি প্রস্তুত, লাগানোসহ তার ৮/১০ হাজার টাকা তার খরচ হয়। প্রতিটি জমিতেই এখন ফুল এসেছে। কয়েকদিনের মধ্যেই মোটা হয়ে যাবে। বর্তমানে জমিতে যে অবস্থা দেখা যাচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে কোনো দুর্যোগ না হলে ভালো ফলন পাওয়া যাবে।
আরেক কৃষক ফরিদ মিয়া বলেন, বোরো ধানের চেয়ে ভুট্টায় লাভ বেশি। তাই তিনি ভুট্টা চাষ করছেন। ভুট্টার কোনো কিছুই ফেলে দেওয়া হয় না। এর পাতা গরুকে খাওয়ানো হয়, তাছাড়া ডাটা ও মোচা লাকড়ি হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
উপজেলা কৃষি অফিস বলেন, সব ধরনের ফসল উৎপাদনে আমরা কৃষকদের আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করছি। যাতে করে কৃষকরা সহজভাবে কৃষি উপকরণ পেয়ে ফলন বৃদ্ধি করতে পারে। বিশেষ করে ভুট্টা চাষ করতে আগ্রহী কৃষকদের মাঝে উন্নত মানের ভুট্টার বীজ ও সার বিনামূল্যে দেওয়া হয়। বীজ, সার ও তেলের জন্য সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছি।
মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন, আখাউড়া :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় তিন দিনব্যাপী ভূমি মেলার উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ ২৫ মে রোববার সকাল ১০টায় উপজেলা ভূমি অফিস মাঠে আয়োজিত এ মেলার শুভ উদ্বোধন করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো: ফয়সল উদ্দিন। মেলার উদ্বোধন শেষে বর্ণাঢ্য র্যালি হয়।
উপজেলা ভূমি অফিস আয়োজিত উক্ত মেলা ও র্যালিতে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য কর্মকর্তা রৌনক জাহান, উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বাহার মিয়া, সাধারণ সম্পাদক ডা: খোরশেদ আলম, পৌর বিএনপির সভাপতি সেলিম মিয়া, সাধারণ সম্পাদক আক্তার খান, মুক্তিযোদ্ধা বাহার মিয়া, বিএনপি নেতা আবুল ফারুক বকুল, ভূমি সহকারী কর্মকর্তা আশফাকুর রহমান, আশতোষ ভৌমিক, সাদ ইবনে আলম, আব্দুর রহমান, নাজির আশীষ দাস ও আব্দুল আহাদ প্রমুখ।
নিয়মিত ভূমি উন্নয়ন কর প্রদান করি নিজের জমি সুরক্ষিত রাখি এ বিষয়কে সামনে রেখে মেলায় বিভিন্ন ইউনিয়ন ভূমি অফিসের প্রতিনিধিরা জনগণের কাজ করছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
কিডিন ও পিত্তে পাথর, হার্টে সমস্যা, ডায়াবেটিস ও শ্বাসকষ্ট রোগে ভুগছেন মনোয়ারা বেগম (৫৫)। চিকিৎসক বলেছেন অপারেশন করাতে। কিন্তু টাকার অভাবে অপারেশন করাতে পারছেন না তিনি। টাকার জন্য ঠিকমত ওষুধ সেবন করতেও পারেন না। দিন দিন তার শরীরের অবস্থা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। বাঁচার জন্য, চিকিৎসার জন্য সহৃদয় মানুষের সহযোগিতা চান স্বামী হারা অসহায় এই নারী। মনোয়ারা বেগম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া পৌরশহরের রাধানগর পশু হাসপাতাল সংলগ্ন আলমগীর মিয়ার বাড়িতে মেয়ের সাথে ভাড়া বাসায় থাকেন। দ্রুত তার কিডনি ও পিত্ত পাথরের অপারেশন করা দরকার।
জানা যায়, পৌরশহরের দেবগ্রামের ফুল মিয়ার মেয়ে মনোয়ারা বেগম। ১০ বছর আগে স্বামী মারা গেলে ১ টি ছেলে ও ২ টি মেয়ে নিয়ে বাবার বাড়িতে আশ্রয় নেন। বহু কষ্ট করে মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন। সংসারে অভাব অনটন লেগেই থাকতো। সংসারে স্বচ্ছলতা ফেরাতে বড় আশা বুকে নিয়ে ছেলেকে বিদেশ পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু চাকরী না পেয়ে ছেলে দেশে ফিরে এসেছে। স্বামী নাই। ছেলে বেকার। সংসারে আয় রোজগার করার কেউ নাই। বিগত ৪ বছর ধরে মনোয়ারা বেগম বিভিন্ন রোগে ভুগছেন। তার চিকিৎসার জন্য প্রচুর অর্থের প্রয়োজন। কিন্তু টাকার অভাবে চিকিৎসা ও ঠিকমত ওষুধ সেবন করতে পারছেন না তিনি।
সরেজমিনে বাসায় গিয়ে দেখা যায়, টিন সেডের ছোট্ট একটি রুমে শুয়ে আছেন মনোয়ারা বেগম। শরীর অনেকটা শুকিয়ে গেছে। ঠিকমত কথা বলতে পারছিলেন না তিনি। কথা বলতে গিয়ে বার বার হাঁপিয়ে উঠছিলেন তিনি।
অসহায় এই নারী বলেন, বাবা গরীব। পরের বাড়িতে থাকি। আমার টাকা পয়সা নাই। আমার খুব কষ্ট। ওষুধপত্র সেবন করতে পারছি না। ডাক্তার বলছে কিডনি ও পিত্ত পাথরের অপারেশ করাতে কিন্তু টাকার জন্য পারতেছি না। আত্মীয় স্বজনের সহযোগিতায় কোন রকমে চলতেছি। মরলে বেচে যেতাম, মরিও না বাঁচিও না। মানুষের দয়ায় আল্লাহ যদি আমাকে মরন পথ থেকে বাঁচায়।
এ ব্যাপারে আখাউড়া পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও দেবগ্রাম এলাকার পৌর কাউন্সিলর মোঃ বাবুল মিয়া বলেন, মনোয়ারা বেগমের অসুস্থতার বিষয়টি আমি অবগত আছি। যতটুকু পারি সহযোগিতা করবো।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে মাছ রফতানি করে ১ দশমিক ৬৮ কোটি ইউএস ডলার অর্থাৎ বাংলাদেশি ১৯০ কোটি টাকা বৈদেশিক মুদ্রা আয় হয়েছে। রফতানি হওয়া মাছের মোট পরিমাণ প্রায় ছয় হাজার ছয়শ’ ৬১ মেট্রিক টন।
আজ ৩১ জুলাই বুধবার আখাউড়া মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এ তথ্য জানানো হয়।
উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় আরো জানানো হয়, আখাউড়ায় গত বছর পাঁচ হাজার ৩২৫ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদন হয়। এর মধ্যে তিন হাজার ৬৮০ টনের চাহিদা মিটিয়ে এক হাজার ৬৪৫ মেট্রিক টন মাছ উদ্বৃত্ত থেকে যায়। আখাউড়া মোট পুকুরের সংখ্যা দুই হাজার ৩৪৮ টি যার আয়তন ৬১৩ দশমিক ৬০ হেক্টর। এছাড়া নদী আছে তিনটি। খালের সংখ্যা তিনটি। বিলের সংখ্যা ১৩টি যার আয়তন ১৬৫ হেক্টর। আটটি প্লাবন ভূমির আয়তন ১ হাজার ৪০০ হেক্টর।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গাজালা পারভীন রুহির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মনির হোসেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহবুদ্দিন বেগ, সংরক্ষিত ভাইস চেয়ারম্যান রোকসানা বেগম, কৃষি কর্মকর্তা তানিয়া তাবাসসুম, ধরখার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. শাফিকুল ইসলাম। মৎস্য কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিমের উপস্থাপনায় এতে সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা রওনক জাহান, সাংবাদিক জুটন বনিক, চাষী আবুল হাসেম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এর আগে অতিথিবৃন্দ উপজেলা পরিষদের পুকুরে মাছের পোণা অবমুক্ত করেন ও র্যালি অনুষ্ঠিত হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া স্থলবন্দরে চারদিন আমদানি রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। আগামী ১৬ জুন থেকে ১৯ জুন পর্যন্ত ব্যবসায়িক ছুটি ঘোষণা করায় এ সময় আমদানি রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক থাকবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
আখাউড়া স্থলবন্দর আমদানি-রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশন এর সাধারণ সম্পাদক মো. সফিকুল ইসলাম বুধবার সকালে জানান, ১৬ জুন রবিবার থেকে ১৯ জুন বুধবার নাগাদ বন্দরে ব্যবসায়িক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।
বিষয়টি দু’দেশের ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্টদের ইতোমধ্যে অবহিত করা হয়েছে।