চলারপথে রিপোর্ট :
গত ২১ ডিসেম্বর ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে মোবাইল ফোন হারিয়েছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার মো. আশিকুর রহমান। এ বিষয়ে তিনি আশুগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। পুলিশ তদন্তে বেরিয়ে আসে ওই মোবাইল ফোনটিতে ব্যবহৃত হচ্ছে জেলার বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ এইচ ইফরান উদ্দিন আহমেদের নামে রেজিস্ট্রেশন করা সিমকার্ড।
ইউএনও ইফরান উদ্দিন অবশ্য বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
শনিবার রাতে মোবাইল ফোনে বলেন, ‘আমার নামে নিবন্ধিত থাকা বাংলালিংকের একটি সিম অফিসের কর্মচারী জালালকে দিয়েছিলাম। এনআইডি কার্ড পাচ্ছিল না, তার নামে সিম নিবন্ধন করা যাচ্ছিল না বলে আমারটা দেওয়া হয়। কিশোরগঞ্জের ভৈরব থেকে কিনে আনা একটি মোবাইল ফোনে সে সিমটি ব্যবহার করে। বিষয়টি যে এত দূর গড়াবে বুঝতে পারিনি।
এ ঘটনায় ভবিষ্যতের জন্য আমার একটা শিক্ষা হয়ে গেল। আমাকে আরো সতর্ক হতে হবে।’
এদিকে আশিকুর রহমান বাদী হয়ে ইউএনওর বিরুদ্ধে গত বৃহস্পতিবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। আদালত মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন।
আশিকুর রহমান জানিয়েছেন, মামলা দায়েরের পর থেকে তিনি বেশ চাপে আছেন। মোবাইল ফোনটি নিয়ে আসার জন্য থানা থেকে বলা হচ্ছে। কিন্তু এখন যেহেতু মামলা হয়েছে সেহেতু আদালতের মাধ্যমে বিষয়টির ফয়সালা হবে।
আশুগঞ্জ উপজেলার সোনারামপুর গ্রামের বাসিন্দা সাংবাদিক আশিকুর রহমান তার মামলায় ও এ প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা বলার সময় অভিযোগ করেন, গত বছরের ২১ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আশুগঞ্জ উপজেলার তালশহর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু শামার একটি ইটভাটার সামনে থেকে তার স্যামসাং ব্র্যান্ডের একটি মোবাইল ফোনসহ অন্যান্য জিনিস ছিনতাই হয়। তবে ছিনতাই মামলা পুলিশ নিতে চাইবে না বলে এ ঘটনায় চলতি বছরের ১৯ ফেব্রুয়ারি আশুগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
বিষয়টি তদন্ত করেন আশুগঞ্জ থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মুহাম্মদ মুজিবুর রহমান। পুলিশের তদন্তে মুঠোফোন ব্যবহারকারী হিসেবে আসামির নাম হিসেবে ইরফান উদ্দিনের (ইউএনও) নাম আসে।
আশিকুর রহমান বলেন, ‘মামলার আসামি হিসেবে ইউএনওর নাম আসার বিষয়টি আমিও নিশ্চিত হই। অফিস কর্মচারী ফয়সাল ফোনটি দেবে দেবে করে দেননি। উল্টো ফোনের কাগজপত্র দেওয়াসহ নানা কথা বলতে থাকেন। পরে আমি আদালতে মামলা দায়ের করি। মামলায় ইউএনওকে আসামি করা হয়েছে।’
হারিয়ে যাওয়া ফোন উদ্ধারের তদন্ত কর্মকর্তা মো. মুজিবুর রহমান বলেন, ‘ওই ফোনে ব্যবহার হওয়া সিমটি ইউএনওর নামে। বাদী অভিযোগ করেছিলেন ফোন হারিয়েছে। এখন একজন সেটি পেয়ে ফেরত দিয়েছে। বাদীকে বলার পর তিনি সেটি নিচ্ছেন না।’
চলারপথে রিপোর্ট :
চাঁদার জন্য ব্রাহ্মণবড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার চরচারতলায় দিদার হোসেন নামে ১৪ বছরের এক কিশোরকে এক পা গাছে ঝুলিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় মারধর করেছে একদল বখাটে যুবক। এসময় তারা কিশোরের পরিবারের নিকট মোবাইল ফোনে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করলেও শেষ পর্যন্ত ৩০ হাজার টাকায় মুক্তি মেলে।
এ ঘটনায় আজ ২০ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার ভুক্তভোগী দিদার হোসেনের বাবা মো. খায়ের মিয়া বাদী হয়ে আশুগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছে। মামলায় অভিযুক্ত আসামিরা হলেন উপজেলার চরচারতলা গ্রামের জামির (৪১), মাসুদ রানা (৩১), তোফাজ্জল (২৮), সাইফুল ইসলাম শাকিল (৩০), নাসির (৪০) ও আকাশ (৩০)।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ১৪ ফেব্রুয়ারি বুধবার সকালে তোফাজ্জলের কাছে দিদারের কাজের পাওনা ৮’শ টাকা চাইতে গেলে তোফাজ্জল তা দিতে অস্বীকার করে। এসময় দিদারের সাথে তোফাজ্জলের কথা কাটাকাটি ও একপর্যায়ে হাতাহাতি হয়। দুপুরে দিদার বাড়ি থেকে বের হলে একই এলাকার জামির, তোফাজ্জল, মাসুদ, শাকিল, আকাশ ও নাসির দিদারকে মিডল্যান্ড পাওয়ার প্লান্টের পাশে নিউ এশিয়া প্রজেক্টের খালি জায়গায় নিয়ে যায়। পরে সেখানে একটি কড়ই গাছের ডালে দিদারকে ডান পায়ে দড়ি বেঁধে উল্টো ভাবে ঝুলিয়ে এলোপাথাড়ি পেটাতে থাকে। একপর্যায়ে দিদারের মাকে মাসুদের মোবাইল ফোন দিয়ে ২ লাখ টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে নিতে বলা হয়। পরে দিদারের মা বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে ঋণ করে ৩০ হাজার টাকা মাসুদকে দিলে গাছের ঝুলন্ত অবস্থা থেকে দিদারকে মাটিতে নামানো হয়। ঘটনা কাউকে জানালে মেরে ফেলার এবং দুই বোনকে তুলে নেয়ার হুমকি দেয় তারা।
মামলার বাদী খায়ের মিয়া বলেন, তাদের ভয়ভীতির কারণে আমি প্রথমে কাউকে জানায়নি। আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাহিদ আহাম্মেদ বলেন, দিদারের পরবিারের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামিদের অবিলম্বে ধরতে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসির মুন্সীকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
আজ ১৯ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নান ও সদস্য সচিব সিরাজুল ইসলাম সিরাজ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই বিষয়টি জানানো হয়।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সাধারণ মানুষকে হুমকি, ভয়-ভীতি প্রদর্শন এবং নীতি ও আদর্শ পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থেকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে তার বিরুদ্ধে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাই আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাসির মুন্সীকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপ-নির্বাচন ৫ নভেম্বর রবিবার। নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে আজ ৪ নভেম্বর শনিবার দুপুর ১টা থেকে শুরু হয়েছে নির্বাচনী সরাঞ্জাম বিতরণ।
এসময় সরাইল উপজেলার ৮৪টি কেন্দ্র ও আশুগঞ্জ উপজেলার ৪৮টি কেন্দ্র মিলিয়ে মোট ১৩২টি ভোটকেন্দ্রের জন্য ব্যালট পেপার, ব্যালট বাক্স, সিলসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম বিতরণ করা হয়। দুই উপজেলার উপজেলা পরিষদ থেকে বিভিন্ন কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসারদের কাছে এসব সরাঞ্জাম বুঝিয়ে দেন দুই উপজেলার সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা। পরে তারা কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে এসব সরাঞ্জাম ভোটকেন্দ্রের উদ্দেশ্যে নিয়ে যান।
জেলা রিটানিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম বলেন, সুষ্ঠু ও স্বতস্ফূর্তভাবে উপ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সব ধরণের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। নির্বাচনের সার্বিক নিরাপত্তায় র্যাব, পুলিশ, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ পর্যাপ্ত পরিমাণ আইনশৃংঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবে।
প্রসঙ্গত, গত ৩০ সেপ্টেম্বর এ আসনের সংসদ সদস্য উকিল আব্দুস সাত্তার ভুইয়া মৃত্যুবরণ করায় উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। এই আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ১০ হাজার ৭২ জন।
স্টাফ রিপোর্টার :
আশুগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের কয়েকটি বাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করেছে পুলিশ। ১৬ জানুয়ারি সোমবার দুপুরে উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের নোনার বাড়ির মৃত সাইদুর রহমানের ছেলে মোঃ হাবিবুর রহমান, মুন্সিবাড়ির মৃত আব্দুর রহিমের ছেলে হাজী সাইফুল ইসলাম এবং বাবরের বাড়ির আমির হামজার ছেলে মনির হোসেনের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে এসব দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। উদ্ধারকৃত দেশীয় অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে একাইট্টা, বল্লম ও টেঁটা ইত্যাদি।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার ও শনিবার গায়ে সিএনজির ধাক্কা লাগার মত তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে দুর্গাপুর গ্রামের জারুর গোষ্ঠি (রাসেল চেয়ারম্যানের গোষ্ঠি) এবং বারঘরিয়া (মিজান মেম্বারের গোষ্ঠি) গোষ্ঠির লোকজনের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এক পর্যায়ে সংঘর্ষ পুরো গ্রামবাসীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। দুই দফা সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশ ও স্থানীয় বিশিষ্টজনেরা ঘণ্টার পর ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনলেও এর রেশ যেন কিছুতেই কাটছে না।
আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ আজাদ রহমান জানান, পুনরায় সংঘর্ষে লিপ্ত হতে দু’পক্ষই তাদের বাড়িতে দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র জড়ো করতে থাকে। টের পেয়ে পুলিশ উভয় পক্ষের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ১০৫টি বিভিন্ন জাতের দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। সংঘর্ষের পর থেকে দুর্গাপুর গ্রামে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করাসহ সার্বক্ষণিক পুলিশী টহল জোরদার করা হয়েছে। এছাড়া সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ১১১ জনের নাম উল্লেখসহ ৩-৪শ’ লোকের নামে মামলা দায়ের করেছে।