ইউক্রেনের কিয়েভে ফের রাশিয়ার বিমান হামলা

আন্তর্জাতিক, 30 May 2023, 821 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে আবারও বড় ধরনের বিমান হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। স্থানীয় সময় আজ ৩০ মে মঙ্গলবার ভোরে নতুন করে এ হামলা চালায় রুশ সামরিক বাহিনী। চলতি মাসে কিয়েভে রাশিয়ার এটা ১৭তম বিমান হামলা। ইউক্রেনের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা রুশ এই হামলা ঠেকাতে তৎপর রয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়া মঙ্গলবার ভোরে কিয়েভে নতুন করে ‘বিশাল’ আক্রমণ শুরু করেছে এবং ইউক্রেনীয় বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এই হামলা ঠেকাতে তৎপর রয়েছে বলে শহরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। অন্যদিকে ইউক্রেনের অন্যান্য বেশ কয়েকটি অঞ্চলে বিমান হামলার সাইরেন বাজানো হয়েছে।

কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামে বলেছেন, ‘ব্যাপক আক্রমণ হচ্ছে! কেউ নিরাপদ আশ্রয় ত্যাগ করবেন না।’ কিয়েভের সামরিক প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলেছেন, বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হামলা প্রতিহত করছে। তবে রুশ মিসাইল বা ড্রোনের ধ্বংসাবশেষ রাজধানীর ঐতিহাসিক পোডিল এবং পেচেরস্কি মহল্লাসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় আঘাত হেনেছে।

মেয়র ক্লিটসকো বলেছেন, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় হোলোসিভস্কি এলাকায় আহত হওয়ার পর ২৭ বছর বয়সী এক নারীকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। ক্লিটসকো আরো বলেছেন, রাশিয়ার হামলার পর ধ্বংসাবশেষ পড়ে আগুন লেগে যাওয়ায় মঙ্গলবার ভোরে কিয়েভের সুউচ্চ অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের বাসিন্দাদের সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। প্রাথমিক তথ্য অনুসারে, একজন আহত হয়েছেন বলে ক্লিটসকো বলেছেন।

কিয়েভের সামরিক প্রশাসনের কর্মকর্তারা তাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলে একটি ছবি পোস্ট করেছেন, যাতে একটি বহুতল অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিংয়ের ওপরের তলায় আগুন জ্বলতে দেখা যাচ্ছে। শহরের রাষ্ট্রীয় প্রশাসন টেলিগ্রামে বলেছে, বেশ কয়েকটি অ্যাপার্টমেন্টের জানালা-দরজা ভেঙে গেছে। রয়টার্স অবশ্য স্বাধীনভাবে এসব প্রতিবেদন যাচাই করতে সক্ষম হয়নি। সূত্র : রয়টার্স

Leave a Reply

ঈদুল ফিতরে ৫ দিন, ঈদুল আযহায়…

অনলাইন ডেস্ক : আগামী বছরের (২০২৫ সাল) সরকারি ছুটির তালিকা Read more

৩০ লাখ টাকা করে পাবে ছাত্র…

অনলাইন ডেস্ক : বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে প্রত্যেক শহীদ পরিবারকে পুনর্বাসনের জন্য Read more
ফাইল ছবি

২০২৫ সালের সরকারি ছুটির তালিকা প্রকাশ

অনলাইন ডেস্ক : ২০২৫ সালের সরকারি ছুটির তালিকা অনুমোদন করেছে Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভূমিকম্প ও অগ্নিকান্ড বিষয়ক মহড়া…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দূর্যোগ প্রশমন দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসনের Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দেশীয় অস্ত্র-নগদ টাকা উদ্ধারসহ দুই…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গত ২৪ ঘন্টায় গ্রেফতারী পরোয়ানার আসামীসহ Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অনির্দিষ্টকালের জন্য…

চলারপথে রিপোর্ট : পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তাদের বরখাস্তের প্রতিবাদে ও Read more

আন্দোলনে নিহত তানজিল মাহমুদ সুজয় এইচএসসি…

চলারপথে রিপোর্ট : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর Read more

পল্লীবিদ্যুতের ১০ জেলা কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুৎ, বিদ্যুৎ…

চলারপথে রিপোর্ট : বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কয়েকটি জেলার ১০ Read more
ফাইল ছবি

শেখ হাসিনাকে গ্রেফতারে ট্রাইব্যুনালের পরোয়ানা

অনলাইন ডেস্ক : পদত্যাগের পর দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী Read more

ভারত ৪৬ রানে অলআউট

অনলাইন ডেস্ক : ঘরের মাঠে বাংলাদেশের বিপক্ষে দাপট দেখিয়েছিল ভারত। Read more

কসবায় ২০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি বিদ্যুৎ…

চলারপথে রিপোর্ট : অস্ত্র মামলায় ২০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত মো. মোস্তাফিজুর Read more
ফাইল ছবি

৮ জাতীয় দিবস বাতিল করে আদেশ…

অনলাইন ডেস্ক : আটটি জাতীয় দিবস বাতিল করে আদেশ জারি Read more

ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ৪৪ হাজার ছুঁই ছুঁই

আন্তর্জাতিক, 17 February 2023, 981 Views,

চলারপথে ডেস্ক :
তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা প্রায় ৪৪ হাজার ছুঁয়েছে। তুরস্কে এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৮ হাজার ৪৪ দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে সিরিয়ায় নিহত বেড়ে দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার আটশ জন।

ভূমিকম্পের দ্বিতীয় সপ্তাহেও তুরস্কে উদ্ধারকাজ চলছে। তবে প্রতিদিন উদ্ধার হওয়া মানুষের সংখ্যা কমছে। ১৬ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার কাহরামানমারাস প্রদেশের ধ্বংসস্তূপ থেকে এক কিশোরীকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।

এদিকে জাতিসংঘ সিরিয়ায় ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত এলাকার মানুষের জন্য ৪০ কোটি ডলার সহায়তা জরুরি বলে জানায়। সংস্থাটি আরো জানায়, তুরস্কের দুর্গত এলাকার মানুষদের জন্য ১০০ কোটি ডলার সহায়তা প্রয়োজন।

জাতিসংঘের ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিভাগের প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস বৃহস্পতিবার বলেন, অবর্ণনীয় কষ্ট পাচ্ছেন তারা। আমাদের অবশ্যই তাদের অন্ধকার সময়ে পাশে দাঁড়াতে হবে ও নিশ্চিত করতে হবে তারা প্রয়োজনীয় সহায়তা পাবেন।

গত ৬ ফেব্রুয়ারি ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। এর কেন্দ্র ছিল সিরিয়ার সীমান্তবর্তী তুরস্কের গাজিয়ান্তেপ শহরের কাছে। পরে আরও কয়েক দফায় ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
সূত্র : আল জাজিরা

নৌকায় ভেসে ভেসে লিবিয়ার ‘গেম ঘরে’ আটকা কয়েকশ বাংলাদেশি

আন্তর্জাতিক, 18 December 2022, 1112 Views,

চলার পথে অনলাইন ডেস্ক:
পিরোজপুরের নাজিরপুরের সফিকুল ইসলাম ওরফে শফিউল্লাহ শেখ। ভাগ্য বদলাতে ১৩ লাখ টাকায় ইতালি যাওয়ার জন্য চুক্তি করেন। প্রথমে সাত লাখ টাকা দেন; পরবর্তীসময়ে আরও পাঁচ লাখ টাকা দেওয়ার কথা ছিল। ইতালি যাওয়ার কথা বলে প্রথমে দুবাই, পরে সিরিয়া হয়ে লিবিয়ার ‘গেম ঘর’ নামক টর্চাল সেলে নিয়ে শফিউল্লাহকে নির্যাতন করতো একটি সংঘবদ্ধ মানবপাচারকারী চক্র। চলতি বছরের ২৮ অক্টোবর রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও ডেমরা থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে মানবপাচারকারী চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা (তেজগাঁও) বিভাগ। একই সঙ্গে অপহৃত শফিউল্লাহকে লিবিয়া থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
রাজধানীর গুলিস্তানে নুরুজ্জামান রাজুর একটি মোবাইল ফোন মেরামতের দোকান ছিল। ইউরোপে একটি উন্নত জীবন শুরুর আশায় ২৯ বছর বয়সী এই তরুণ তার দোকান প্রায় ১২ লাখ টাকায় বিক্রি করেন। চলতি বছরের মার্চে দেশ ছেড়ে চলে যান স্বপ্নের দেশ ইতালি। মানবপাচারকারী চক্র তাকে প্রথমে দুবাই ও পরে লিবিয়ায় পাঠায়। কিন্তু রাজু লিবিয়ার বেনগাজিতে পৌঁছানোর পর তার যাত্রা হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। সেখানে তিনি গত আট মাস ‘গেম ঘরে’।
এভাবেই রাজুর বাবা আমিনুল ইসলাম তার ছেলের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার করুণ বর্ণনা দেন। আমিনুল বলেন, ‘আমি প্রতি দু-তিনদিন পরপর আমার ছেলের কাছ থেকে ফোন পাই। গেম ঘরের লোকরা মুক্তিপণের জন্য রাজুকে নির্যাতন করছে। সে সাহায্যের জন্য কান্নাকাটি করে কিন্তু আমি অসহায়।’
রাজুর বাবা আরও বলেন, ১০ লাখ টাকা চেয়ে ছেলের নির্যাতনের ভিডিও পাঠিয়েছে। যখন আমি বলেছিলাম আমার কাছে এতো টাকা নেই, তখন একজন বাংলাদেশি নিজেকে শরীফ বলে পরিচয় দিয়ে আমাকে ফোন করে ৭ লাখ টাকায় চুক্তি করা হয়েছে বলে জানান।
পরে সম্পত্তি বিক্রি করে ও ঋণ নিয়ে আমিনুল ইসলাম সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা দিয়ে রফাদফা করে শরীফের মাধ্যমে। এরপর নভেম্বর মাসে তিনি দুটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও একটি মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠান। টাকা দেওয়ার পরেও আমিনুলের ছেলে রাজুর কপালে মুক্তি মেলেনি।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লার শরীফ হোসেন। এই মানবপাচার চক্রের মূলহোতা। তিনি থাকেন লিবিয়ার বেনগাজিতে। লিবিয়ায় অবস্থান করা বাংলাদেশি লোকজন তাকে সমীহ করেন। কারণ, তিনি সেখানে ‘মাফিয়া শরীফ’ নামে পরিচিত। এই শরীফ সেখানে বসে ‘গেম ঘর’র মালিক। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ইউরোপে পাঠানোর কথা বলে শরীফের চক্র লোকজনকে লিবিয়া নিয়ে ‘গেম ঘর’ এ আটকে রেখে নির্যাতন চালায় এবং বাংলাদেশে ভুক্তভোগীদের পরিবারের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নেয়। তবে সেই গেম ঘরের চাবি থাকে মাদারীপুর জেলার বাসিন্দা তাজনাহার রিক্তা নামে এক নারীর কাছে।
ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) মানবপাচারের একটি মামলা তদন্ত করতে গিয়ে এই গেম ঘরের তথ্য পেয়েছে। বাংলাদেশ থেকে হাজার মাইল দূরে সেই ‘গেম ঘর’ এ নির্মম নির্যাতনের শিকার কয়েকশ বাংলাদেশি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন, মাদারীপুরে অবস্থানকারী রিক্তার হাতে শরীফ মাফিয়ার চাহিদা অনুযায়ী টাকা দিলেই গেম ঘর থেকে পাচার হওয়া ব্যক্তিদের মুক্তি মেলে। লিবিয়ার গেম ঘর থেকে মুক্তি পাওয়ার সেই চাবি আগে থাকতো শরীফের স্ত্রী সুমি আক্তারের কাছে। এই সুমি গত নভেম্বরে লিবিয়ায় মাফিয়া স্বামীর রাজ্যে চলে গেছেন। এরপর সেই দায়িত্ব পান রিক্তা। সম্পর্কে সুমির ভাবি রিক্তা।
সিটিটিসি জানায়, বাংলাদেশ থেকে অবৈধপথে ইউরোপ নেওয়ার কথা বলে লিবিয়ার গেম ঘরে আটকে রাখার চক্রগুলোর মধ্যে শরীফ হোসেন অন্যতম। তাকে বেনগাজিতে সবাই মাফিয়া হিসেবে চেনে। ফরিদপুর, মাদারীপুর ও শরীয়তপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় এই চক্র ছড়িয়ে রয়েছে। তাদের চক্রে নারী সদস্যও রয়েছে।
সিটিটিসির ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) তৌহিদুল ইসলাম বলেন, শরীফ ও রিক্তা চক্রের মোবাইল ব্যাংকিংসহ বিভিন্ন ব্যাংকে শতাধিক অ্যাকাউন্টের তথ্য মিলেছে। এর মধ্যে ৭০টি অ্যাকাউন্ট তারা যাচাই করে দেখেছেন।
এতে দেখা গেছে, ওই অ্যাকাউন্টগুলোতে গত দুই বছরে অন্তত ৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে লোকজনকে লিবিয়ায় পাচার, সেখানে গেম ঘরে আটকে ও জিম্মি নাটক সাজিয়ে ভিকটিম পরিবারগুলো থেকে এই টাকা আদায় করে শরীফ চক্র।
সিটিটিসির আরেক কর্মকর্তা বলেন, লিবিয়ায় মাফিয়া শরীফের গেম ঘরে কয়েক মাস ধরে তিন শতাধিক বাংলাদেশি বন্দি অবস্থায় রয়েছে। তাদের ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি নেওয়ার কথা বলে সেখানে নিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। তবে অবৈধ অভিবাসী অনুপ্রবেশে দেশটির নৌ সীমান্তে কড়াকড়ির কারণে কেউ যেতে পারছেন না। এ অবস্থায় শরীফ জিম্মির নাটক সাজিয়ে বাংলাদেশে থাকা ভুক্তভোগীদের পরিবারের কাছ থেকে টাকা নিচ্ছেন।
ওই কর্মকর্তা বলেন, গেম ঘরে আটক থাকা লোকদের খাওয়ার খরচও তাদের স্বজনরা বাংলাদেশ থেকে পাঠান। মাসে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা খাওয়া খরচ হিসেবে শরীফের লোকদের হাতে তুলে দিতে হচ্ছে।
এডিসি তৌহিদুল ইসলাম বলেন, গত নভেম্বরে শরীফ দেশেই ছিলেন। তার বিষয়ে তথ্য পেয়ে তাকে গ্রেফতারে উদ্যোগও নেওয়া হয়। তবে ৩০ নভেম্বর দুই স্ত্রী সুমি আক্তার ও হালিমা বেগমকে নিয়ে তিনি দেশ ছাড়েন। এরপরই রিক্তা শরীফের হয়ে দেশে সমন্বয়কের দায়িত্ব পান। তবে শরীফের পুরো পরিবার, তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনও এই পাচার চক্রে জড়িত। এরই মধ্যে কয়েকজনকে গ্রেফতার করে চক্রের কার্যক্রম নিয়ে বেশকিছু তথ্য মিলেছে।
এই কর্মকর্তা বলেন, শরীফের বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরোর (এনসিবি) শাখায় তারা চিঠি লিখবেন, যাতে ইন্টারপোলের মাধ্যমে তাকে দেশে ফেরানো যায়। তার গেম ঘরে থাকা বন্দিদের কীভাবে মুক্ত করা যায়, সে বিষয়েও পরামর্শ করা হবে।
দেশ থেকে যেভাবে যে রুটে পাচার ॥ সিটিটিসি কর্মকর্তারা বলছেন, শরীফ চক্রের দালালরা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে। দালালরা ইউরোপ যেতে ইচ্ছুক লোকজনকে খুঁজে বের করে। এরপর তাদের কাছ থেকে প্রথম দফায় ৩ থেকে ৪ লাখ করে টাকা নেয়। প্রলোভন দেখানো হয়, এক সপ্তাহের মধ্যে বৈধভাবে বড় জাহাজে করে ইতালি পাঠানো হবে। এরপর ইউরোপ যেতে ইচ্ছুক লোকজনকে প্রথমে বৈধভাবে (ভ্রমণ ভিসায়) দুবাই, মিশর বা তুরস্ক পাঠানো হয়। এসব দেশেও শরীফের চক্রের লোকজন রয়েছে।
তারা বাংলাদেশ থেকে পাঠানো লোকজনকে রিসিভ করে নিজেদের কাছে রাখে। এরপর সুযোগ মতো লিবিয়ার বেনগাজিতে পাঠানো হয়। সেখানে শরীফ ও তার দুই স্ত্রীসহ তাদের মাফিয়া চক্রের লোকজন রিসিভ করে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে নেয়। এরপর শুরু হয় গেম ঘরের খেলা।
সিটিটিসির কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম জানান, তাদের কাছে তথ্য রয়েছে, নভেম্বরে শরীফ দুই স্ত্রীকে নিয়ে লিবিয়ায় নিজের ডেরায় চলে গেলেও প্রথম স্ত্রী হালিমা বেগম সেখানে মারা যান। শরীফ তার পরিবারের কাছে দাবি করেছেন, হালিমা স্ট্রোক করে মারা গেছেন। তবে তাকে মেরে ফেলা হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। শরীফকে দেশে ফেরাতে পারলে এসব প্রশ্নের উত্তর মিলবে।
শরীফ চক্রের স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে লিবিয়া হয়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে গেছেন, বর্তমানে লিবিয়ায় শরীফের গেম ঘরে রয়েছেন- এমন অন্তত ছয় ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তাদের মধ্যে শরীয়তপুর জেলার বাসিন্দা সোহরাব হোসেন গেম ঘর থেকে লিবিয়া যাওয়ার পথে নৌকাডুবির পর আন্তর্জাতিক শরণার্থী সংস্থার মাধ্যমে উদ্ধার হয়ে দেশে ফেরেন। তিনি বলেন, তারা স্থানীয় দালালদের মাধ্যমে প্রথমে ৪ লাখ টাকায় লিবিয়া যান। সেখানে তাদের একটি বাসায় রাখা হলেও কয়েকদিন পর জাহাজে তুলে দেওয়ার কথা বলে সমুদ্রের অদূরে একটি গুদামঘরের মতো বাসায় নেওয়া হয় তাকেসহ কয়েকজনকে। সেখানে তার মতো আরও কয়েকজনকে দেখতে পান। এটিই গেম ঘর নামে পরিচিত। এখান থেকেই সাগরে ছোট ছোট নৌকায় তুলে দেওয়া হয়, তাকেও একইভাবে তুলে দেওয়া হয়েছিল। যদিও তাকে বলা হয়েছিল, বড় জাহাজে ইতালি নেওয়া হবে। সেই কথা বলে তার পরিবারের কাছ থেকে আরও ৬ লাখ টাকা নেওয়া হয়। তবে স্থানীয় দালাল চক্রটি তার এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় তিনি নাম বলতে রাজি হননি।
শরীফের গেম ঘরে জিম্মি অবস্থা থেকে উদ্ধার হয়ে বিভিন্ন সময়ে দেশে ফেরা লোকজন পুলিশকে বলেছে, তাদের বাসা থেকে গেম ঘরে নেওয়ার সময়ে লিবিয়ার স্থানীয় পুলিশ বা দেশটির সন্ত্রাসী চক্র তুলে নিয়ে যায়। অনেককে গেম ঘর থেকেও তুলে নেওয়া হয়। এরপর শরীফ ও তার লোকজন দেশে থাকা দালালদের মাধ্যমে পরিবার ও স্বজনদের জানিয়ে দেন এবং তাদের মুক্ত করতে ৫ থেকে ৮ লাখ টাকা দাবি করেন।
মাদারীপুরের শিবচরের একজন বাসিন্দা রহিম শেখ গত জুলাইয়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি পৌঁছতে পেরেছেন। তিনি ইমো অ্যাপসে সম্প্রতি এই প্রতিবেদককে বলেন, তাকে এক সপ্তাহের মধ্যে বড় জাহাজে ইতালি নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি ছয় মাস লিবিয়ায় থাকেন। এর মধ্যে মাফিয়াদের হাতে একবার জিম্মি হন। কিন্তু নিজের এলাকায় টাকা দেওয়ার পর মুক্ত হন। যদিও তার জিম্মি বা অপহরণ হওয়ার বিষয়টি পরিবারকে তিনি জানাতে পারেনি। যারা জিম্মি করে, অপহরণ করে তারাই ভুক্তভোগীদের পরিবারকে বলে, ভয় দেখিয়ে ও নির্যাতনের ভিডিও পাঠিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়।
লেনদেন ইতালিতে, হুন্ডি হয়ে আসে দেশে ॥ সিটিটিসির ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম এডিসি তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ইতালিতেও মাফিয়া শরীফের একটা সিন্ডিকেট রয়েছে। তারা অবৈধভাবে ইউরোপে লোক পাঠিয়ে অন্তত ৫ কোটি টাকা পাচারের তথ্য পেলেও এর বাইরে বড় অঙ্কের টাকার লেনদেন হয় ইতালিতে। পরে সেই টাকা হুন্ডির মাধ্যমে আসে দেশে। মূলহোতা শরীফের বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরোর (এনসিবি) শাখায় চিঠি পাঠানো হবে। যাতে গেম ঘরে থাকা বাংলাদেশিদের উদ্ধার করা যায়।
বিদেশ যেতে ইচ্ছুক বাংলাদেশি তরুণ-যুবকদের উদ্দেশ্যে পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, উন্নত জীবন-যাপনের জন্য দালালরা ইউরোপ যেতে ইচ্ছুক লোকজনকে টার্গেট করে। প্রলোভন দেখানো হয়, বৈধভাবে বড় জাহাজে ইতালি পাঠানো হবে। এরপর ইউরোপ যেতে ইচ্ছুক লোকজনকে প্রথমে বৈধভাবে (ভ্রমণ ভিসায়) দুবাই, মিশর বা তুরস্ক পাঠানো হবে। এসব প্রলোভন থেকে নিজেকে ও পচিরিতদের সতর্ক করতে হবে। অন্যথায় মাসের পর মাস গেম ঘরে থেকে নির্যাতনের শিকার হয়ে দেশে থাকা পরিবারের কষ্টার্জিত সম্পদ বিনষ্ট হবে।

সূত্র : জাগো নিউজ ২৪.কম

অনুমতি ছাড়া হজ করলে জেল-জরিমানা

আন্তর্জাতিক, 24 February 2024, 330 Views,
ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক :
আসন্ন হজ মৌসুমে অনুমতি ছাড়া হজ পালন থেকে বিরত থাকার জন্য পর্যটক এবং বাসিন্দাদের সতর্কতা দিয়েছে সৌদি আরব। আর যারা এ আইন ভঙ্গ করবেন তাদের ৫০ হাজার রিয়াল জরিমানা করা হবে। যা বাংলাদেশি অর্থে প্রায় ১৫ লাখ টাকার সমান।

গতকাল শুক্রবার আমিরাত ভিত্তিক গণমাধ্যম গালফ নিউজে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, নিরবচ্ছিন্ন ও সুন্দরভাবে হজ মৌসুম শেষ করতে এমন সব কঠোর শাস্তির বিধান রেখেছে সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়। হাজিদের পরিবহন সেবা দানকারীদেরও সতর্ক করে দিয়েছে মন্ত্রণালয়।

তারা বলেছে, যে বা যারা অনুমতিবিহীন ব্যক্তিদের মক্কায় পরিবহন করার সময় ধরা পড়বেন তাদেরকেও ৫০ হাজার রিয়াল জরিমানা করা হবে। প্রবাসীদের বেলায় শাস্তি আরও কঠোর করা হয়েছে।

মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যেসব প্রবাসী হজ মৌসুমের এই আইন ভঙ্গ করবেন, তাদের ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হবে। কারাভোগের পর নিজ দেশে তাদের ফেরত পাঠানো হবে এবং পরবর্তী ১০ বছরে সৌদিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে।

এছাড়া শাস্তির আওতায় আসা ব্যক্তিদের পরিচয় স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করা হবে। যাতে জনসাধারণ তাদের চিহ্নিত করে রাখতে পারে।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে এ বছর জুনের ১৪ তারিখে হজ শুরু হতে পারে।

থার্টি ফার্স্টে নাইটে ফানুসে ঢাকার ৪ জায়গায় আগুন

আন্তর্জাতিক, 3 January 2023, 1016 Views,

স্টাফ রিপোর্টার:
কঠোর নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও থার্টি ফার্স্ট নাইটে রাজধানীর আকাশ ছেয়ে যায় নানা রঙের ফানুসে। আর এসব ফানুসের কারণে রাজধানীতে চারটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স। ফায়ার সার্ভিস জানায়, এসব আগুনে বড় ধরনের কোনো ক্ষয়ক্ষতি না হলেও স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তবে এ চারটি আগুনের মধ্যে শুধু এক জায়গায়ই ফায়ার সার্ভিসকে কাজ করতে হয়েছে। বাকি তিন জায়গায় ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি যাওয়ার আগেই আগুন নিভে যায়। সোমবার (১ জানুয়ারি) সকালে এসব তথ্য জানান ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রোজিনা আক্তার।
তিনি বলেন, রাত ১২টার পর আমরা রাজধানীর চার জায়গায় ফানুসের কারণে আগুন লেগেছে বলে জানতে পেরেছি। সেই স্থানগুলো হলো- সদরঘাট হকার্স মার্কেটের টিনের ছাদ, লালবাগ মৌলভীবাজার মসজিদের সামনে বিদ্যুতের তার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলের ছাদ ও মানিকদি বাজারের একটি বাসার ছাদ। এর মধ্যে মানিকদি বাজারের আগুন নিয়ন্ত্রণে আমাদের দুটি ইউনিট ১০-১৫ মিনিট কাজ করেছিল। বাকি তিন জায়গার আমাদের গাড়ি পৌঁছানোর আগেই আগুন নিভে যায়। রোজিনা আক্তার বলেন, এই চার জায়গায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটলেও তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তবে আগুনের কারণে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল।
এর আগে ডিএমপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, থার্টি ফার্স্ট নাইটে যাতে ফানুস ওড়ানো না হয় এবং আতশবাজি না ফোটানো হয়ে সে বিষয়ে প্রতিটি থানায় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে থার্টি ফার্স্ট নাইট উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, থার্টি ফার্স্টে উন্মুক্ত স্থানে কোনো আয়োজন করা যাবে না। কোথাও কোনো ডিজে পার্টি হবে না। কোথাও আতশবাজি-পটকা ফুটানো যাবে না, ফানুস ওড়ানো যাবে না। আপনারা জানেন, ঢাকা অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। তাই স্ট্রিক্টলি অনুরোধ করছি যাতে কেউ ফানুস না ওড়ায়। ফানুস ওড়ালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আখাউড়া স্থলবন্দরে আমদানি-রফতানি শুরু

আখাউড়া, আন্তর্জাতিক, 18 September 2024, 58 Views,
ফাইল ছবি

চলারপথে রিপোর্ট :
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী ও বিশ্বকর্মা পূজা উপলক্ষে দুইদিন বন্ধ থাকার পর আজ ১৮ সেপ্টেম্বর বুধবার সকাল থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে যাবতীয় আমদানি-রফতানি কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

এ সময় ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়ে উভয় দেশের পাসপোর্টধারী যাত্রী পারাপার স্বাভাবিক ছিল। বন্ধ শেষে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম শুরু হওয়ায় বন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, ব্যবসায়ী ও শ্রমিকেদের মাঝে কর্মচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে।

আখাউড়া স্থলবন্দর মৎস্য রফতানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. ফারুক মিয়া বলেন, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী ও বিশ্বকর্মা পূজা উপলক্ষে গত ২ দিন এ বন্দর দিয়ে যাবতীয় আমদানি-রফতানি কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। বিষয়টি ভারতীয় ব্যবসায়ীদেরকে জানানো হয়েছে। বন্ধ শেষে সকাল থেকে পুনরায় এ বন্দর দিয়ে যাবতীয় আমদানি-রফতানি কার্যক্রম চালু হয়েছে।

আখাউড়া স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন ইনচার্জ মোহাম্মদ খায়রুল আলম বলেন, ঈদে মিলাদুন্নবী ও বিশ্বকর্মা পূজা উপলক্ষে যাবতীয় আমদানি-রফতানি কার্যক্রম ২ দিন বন্ধ থাকলেও এ বন্দর দিয়ে উভয় দেশের পাসপোর্টধারী যাত্রী পারাপার অন্য সময়ের মতো স্বাভাবিক ছিল।

উল্লেখ্য, আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যসহ উত্তর-পূর্ব ভারতের ৭টি পাহাড়ি রাজ্যে পাথর, ছোট বড় মাছ, সিমেন্টসহ অর্ধশতাধিক পণ্য রফতানি করা হয়।