চলারপথে রিপোর্ট :
মো: আব্দুর রাজ্জাক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া :
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও প্রখ্যাত চলচ্চিত্র অভিনেতা আকবর হোসেন পাঠান ফারুক মুক্তিযুদ্ধে অবিস্মরণীয় ভূমিকা পালন করেছেন।
ফারুকের মৃত্যুতে বুধবার সংসদে শোকপ্রস্তাবের আলোচনায় যোগ দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ফারুক একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। আইয়ুববিরোধী আন্দোলনের সময় থেকেই তিনি ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। প্রতিটি সংগ্রাম ও আন্দোলনে তিনি যথার্থ সাহসিকতার সঙ্গে অবদান রেখেছেন। ছয় দফা আন্দোলন ও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে তার ভূমিকা কখনই ভোলার নয়। তার মৃত্যু আমাদের সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে অপূরণীয় ক্ষতি।
তিনি বলেন, ফারুক শুধু রাজনীতিবিদ হিসেবেই অবদান রাখেননি, তিনি সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও অবদান রেখেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে সাংস্কৃতিক কর্মীরা আওয়ামী লীগের পক্ষ নিয়েছেন এবং এর নেতাকর্মীদের সাহস জুগিয়েছেন।
তিনি আরো বলেন, ১৯৭৫ সালের মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের পর যখন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম মুছে ফেলা হচ্ছিল এবং সবাই তার নাম উচ্চারণ করতে সাহস পাচ্ছিল না, তখন সংস্কৃতিকর্মীরা এগিয়ে আসেন।
শেখ হাসিনা বলেন, তিনি (ফারুক) বঙ্গবন্ধুর নামে একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন গঠন ও দেশাত্মবোধক গানকে সামনে নিয়ে এসে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে উজ্জীবিত করতে ভূমিকা রেখেছিলেন। সুতরাং তিনি এ দেশের জন্য বিরাট অবদান রেখেছেন।
এর আগে একাদশ জাতীয় সংসদের ২৩তম অধিবেশনের (বাজেট অধিবেশন) শুরুতে সংসদে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
এ নিয়ে আলোচনা শেষে বুধবার সর্বসম্মতিক্রমে শোক প্রস্তাব গৃহীত হয়।
সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আসাদুজ্জামান নূর, মেহের আফরোজ ও হাবিব হাসান, বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের, জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ ও আনিসুল ইসলাম মাহমুদ আলোচনায় যোগ দেন।
আকবর হোসেন পাঠান গত ১৫ মে সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে মারা যান।
এছাড়া সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপির সংসদ সদস্য কবির হোসেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ঐক্য-ন্যাপের সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক পঙ্কজ ভট্টাচার্য, প্রখ্যাত লেখক ও ঔপন্যাসিক সমরেশ মজুমদার, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রোকিয়া আফজাল রহমান, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির মা রহিমা ওয়াদুদ ও বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী কল্যাণী কাজীর মৃত্যুতে সংসদে গভীর শোক প্রকাশ করা হয়।
সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতে এবং দেশ-বিদেশে দুর্ঘটনায় মৃত্যুতে সংসদ গভীর শোক প্রকাশ করেছে।
পরে এক মিনিট নীরবতা পালন ও রুহের মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হাফিজ রুহুল আমিন মাদানী।
প্রথা অনুযায়ী, বর্তমান সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠানের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাবটি গৃহীত হলে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সংসদের দিনের কার্যক্রম মুলতবি করা হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
লাল-সবুজের পতাকা হাতে বিশ্ব ভ্রমণ করেছেন নাজমুন নাহার। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে তিনি ১৬৭টি দেশ ভ্রমণের রেকর্ড গড়েছেন। সর্বশেষ ক্যারিবীয় অঞ্চলের দেশ সেন্ট লুসিয়া ভ্রমণের মাধ্যমে এই কৃতিত্ব অর্জন করেন নাজমুন। দেশটির প্রধানমন্ত্রী ফিলিপ জোসেফ পিয়ের এক বিশেষ সাক্ষাতে তাঁকে অভিনন্দন জানিয়ে ‘সুপার ব্রেভ গার্ল’ আখ্যা দেন।
ভ্রমণের নতুন রেকর্ড গড়ার পর নাজমুন নাহারকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সেন্ট লুসিয়ার অন্যতম প্রধান পত্রিকা ‘দ্য ভয়েস’। খ্যাতনামা সাংবাদিক মার্বেলা অ্যান্থনির লেখায় তাঁর স্বপ্ন, সংগ্রাম ও বিশ্ব অভিযাত্রার কঠিন চ্যালেঞ্জের কথা উঠে এসেছে। নাজমুন নাহার দেশের সুনাম অক্ষুণ্ন রেখে এভাবেই গৌরবের সঙ্গে বাংলাদেশকে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন বিশ্ববাসীর কাছে।
২০০০ সালে ভারতের ভূপালের পাঁচমারিতে ‘ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল অ্যাডভেঞ্চার প্রোগ্রামে’ অংশগ্রহণের মাধ্যমে তাঁর বিশ্ব ভ্রমণের সূচনা হয়। এর পর থেকে ছুটে বেড়াচ্ছেন বিভিন্ন দেশ। এই ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালের ১ জুন ১০০তম দেশ ভ্রমণের মাইলফলক স্পর্শ করেন জাম্বিয়া ও জিম্বাবুয়ের সীমান্তের ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাতের ওপর। ১৫০তম দেশ ভ্রমণের মাইলফলক সৃষ্টি করেন আফ্রিকার দেশ সাওতমে অ্যান্ড প্রিন্সিপ। ২০২৩ সালের মে মাস থেকে তিনি এবার অভিযাত্রা শুরু করেছেন দক্ষিণ আমেরিকার দেশ সুরিনাম ও গায়ানা থেকে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ ত্রিনিদাদ ও টোবাগো, গ্রেনাডা, সেন্ট ভিনসেন্ট এবং গ্রেনাডাইন, বার্বাডোস ও সেন্ট লুসিয়া পর্যন্ত।
২২ বছর ধরে এক দেশ থেকে আরেক দেশে বিভিন্ন জনপদের মাঝে বাংলাদেশের পতাকা তুলে ধরছেন নাজমুন নাহার। এ ছাড়া তিনি পরিবেশ রক্ষা ও বাল্যবিয়ে বন্ধের লক্ষ্যে বিশ্বজুড়ে মানুষের মাঝে সচেতনতা তৈরিতে কাজ করেন। নাজমুন বিভিন্ন দেশে ভ্রমণের সময় শান্তি ও ঐক্যের বার্তা পৌঁছে দেন এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিশু ও তরুণদের উৎসাহিত করেন।
বেশিরভাগ দেশ সড়ক পথে ভ্রমণ করেছেন নাজমুন। ২২ বছরের বিশ্ব অভিযাত্রার মাঝে তিনি বহু প্রতিকূলতার মুখোমুখি হয়েছেন। মৃত্যুমুখে পড়েছেন বহুবার। তবুও একের পর এক দেশ ভ্রমণ করছেন লাল-সবুজ পতাকা হাতে। শিরোনাম হয়েছেন বিশ্ব গণমাধ্যমে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী, রাষ্ট্রপ্রধান, বিখ্যাত ব্যক্তিরা তাঁকে সংবর্ধনা দিয়েছেন।
বাংলাদেশের লক্ষ্মীপুর সদরে জন্ম নেওয়ায় নাজমুন নাহার সুইডেনের লুন্ড ইউনিভার্সিটি থেকে এশিয়ান স্টাডিজ বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। এ ছাড়া তিনি হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড এশিয়া বিষয়ে পড়াশোনা করেন দক্ষিণ কোরিয়ার সিউল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে। নাজমুন নাহারের আশা, বাংলাদেশের পতাকা হাতে বিশ্বের সব দেশে যাবেন।
চলারপথে ডেস্ক :
সব প্রকার বৈষম্য ও সাম্প্রদায়িকতামুক্ত সমতা ভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে দেশবাসীসহ বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘আমরা যুদ্ধ ও সংঘাত চাই না, নর-নারী-শিশু হত্যা আমাদের তীব্রভাবে ব্যথিত করে। আমরা শান্তিতে বিশ্বাস করি। টেকসই শান্তি বিরাজমান থাকলে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়। রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর শান্তির নীতি অনুসরণ করি।’
তিনি সব প্রকার বৈষম্য ও সাম্প্রদায়িকতামুক্ত সমতা ভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে দেশবাসীসহ বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী ২৫ মার্চ ‘গণহত্যা দিবস’ উপলক্ষে শুক্রবার দেওয়া এক বাণীতে এ আহ্বান জানান।
২৫ মার্চ ‘গণহত্যা দিবস’। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তান হানাদার বাহিনী বাংলাদেশে বিশ্বের বর্বরতম হত্যাযজ্ঞ পরিচালনা করে। অত্যন্ত দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে তিনি স্মরণ করেন একাত্তরের ২৫ মার্চের কালরাতে আত্মোৎসর্গকারী সব শহিদদের, যাদের তাজা রক্তের শপথ বীর বাঙালিদের অস্ত্রধারণ করে স্বাধীনতা অর্জন না করা পর্যন্ত জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করেছিল।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হাজার বছর ধরে শৃঙ্খলিত বাঙালি জাতিকে মুক্ত করার প্রয়াসে সারা জীবন ত্যাগ স্বীকার করেছেন। তিনি বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষা করতে গিয়ে ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ প্রথম গ্রেফতার হন এবং কারাবরণ করেন। সেই থেকে ’৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ’৫৪-এর একুশ দফা, ’৬২-এর আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন, ’৬৬-এর ছয় দফা, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানসহ সব আন্দোলন সংগ্রামে অত্যন্ত দূরদর্শীতার সঙ্গে নেতৃত্ব প্রদান করেছেন।
তিনি ১৯৬৯ সালের ৫ ডিসেম্বর হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মৃত্যুবার্ষিকীতে ঘোষণা করেছিলেন, ‘আজ হতে পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় এদেশটির নাম হবে পূর্ব-পাকিস্তানের পরিবর্তে শুধুমাত্র বাংলাদেশ’। তিনি মন্ত্রিত্ব ছেড়ে দলকে সুসংগঠিত ও শক্তিশালী করেছিলেন এবং স্বাধীনতা অর্জনের জন্য পুরো জাতিকে প্রস্তুত করেছিলেন। জাতির পিতার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ’৭০-এর নির্বাচনে জাতীয় পরিষদে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। কিন্তু পাক-সামরিক জান্তা ক্ষমতা হস্তান্তরে নানা টালবাহানা শুরু করে। বৈঠকের মাধ্যমে সময় ক্ষেপণ করে তারা নিরস্ত্র বাঙালি নিধনের উদ্দেশ্যে গোপন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ২ মার্চ থেকে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন; ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে দীর্ঘ ২৩ বছরের শাসন-শোষণ থেকে মুক্তির লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট রূপরেখা প্রদান করেন এবং ১৫ মার্চ থেকে ৩৫ দফা নির্দেশনা পালনের আহ্বান জানান। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নির্দেশ সারা পূর্ব-বাংলায় অক্ষরে অক্ষরে পালিত হয়। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের সব প্রশাসনিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড তার আদিষ্ট পথেই পরিচালিত হতে থাকে। বাংলাদেশে ইয়াহিয়ার শাসন সম্পূর্ণ অচল হয়ে যায়। ইয়াহিয়া-ভুট্টো বারবার সমঝোতার প্রস্তাব দিতে থাকে। কিন্তু বাংলাদেশের অবিসংবাদিত নেতা ক্ষমতার মোহ ত্যাগ করে এদেশের মুক্তিকামী মানুষের পক্ষে অটল থাকেন। ২৩ মার্চ পাকিস্তান দিবসে সারা দেশে বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত পতাকা উত্তোলন করা হয়।
তিনি বলেন, ২৫ মার্চ সন্ধ্যায় অসহযোগ আন্দোলনের মধ্যেই ইয়াহিয়া গোপনে ঢাকা ত্যাগ করেন। মধ্যরাতে পাকিস্তানি সৈন্যরা সাঁজোয়া ট্যাংক নিয়ে ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ পরিচালনা করে ঘুমন্ত নিরস্ত্র বাঙালিদের হত্যা করতে শুরু করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পিলখানা এবং রাজারবাগে অতর্কিতে হামলা চালিয়ে ছাত্র-শিক্ষক, বাঙালি পুলিশ ও সামরিক সদস্যদের হত্যা করতে থাকে। ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে গ্রেফতার করে। এর অব্যবহিত পূর্বেই জাতির পিতা স্বাধীনতার চূড়ান্ত ঘোষণা বার্তা লিখে যান- ‘ইহাই হয়তো আমার শেষ বার্তা, আজ হইতে বাংলাদেশ স্বাধীন-চূড়ান্ত বিজয় অর্জন না করা পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাও’। যা প্রথমে ইপিআর’র ওয়্যারলেসের মাধ্যমে প্রচারিত হয় এবং সঙ্গে সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মাধ্যমে এই বার্তা দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানিরা বন্দি নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ওপর অমানুষিক নির্যাতন চালায়; এমনকি তাকে হত্যা করার চেষ্টা করে। ১৩ জুন সাংবাদিক অ্যান্থনি মাসকারেনহাস যুক্তরাজ্যের একটি পত্রিকার প্রথম পাতায় বাঙালিদের ওপর পাকিস্তানিদের নির্মম বর্বরতার বাস্তব চিত্র নির্ভর একটি বিস্তারিত নিবন্ধ প্রকাশ করলে বাংলাদেশের পক্ষে বিশ্বজনমত সৃষ্টি ত্বরান্বিত হয়। দীর্ঘ ৯ মাস সশস্ত্র যুদ্ধে ৩০ লাখ মানুষ শহিদ হয়, ২ লাখ মা-বোন সম্ভ্রম হারায় এবং গোটা দেশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়। অবশেষে ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের মাধ্যমে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা লাভ করে।
শেখ হাসিনা বলেন, দীর্ঘ ২১ বছর আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ জনগণের বিপুল ভোটে জয়লাভ করে সরকার গঠন করে। ১৯৯৮ সালের ৫ অক্টোবর আমরা জাতিসংঘের গণহত্যা বিরোধী কনভেনশন অনুস্বাক্ষর করি। ১৯৯৭ সালে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে শান্তির সংস্কৃতির ওপর রেজুলুশন গ্রহণের প্রস্তাব করি, যা ১৯৯৯ সালে গৃহীত হয়। সে অনুযায়ী জাতিসংঘ ২০০০ সালকে ‘আন্তর্জাতিক শান্তির সংস্কৃতির বর্ষ’ এবং ২০০১-২০১০ সময়কে ‘শান্তির সংস্কৃতি এবং অহিংস দশক’ ঘোষণা করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ২০০৮ সাল থেকে সব নির্বাচনে জনগণের অকুণ্ঠ সমর্থন নিয়ে গত ১৪ বছরের বেশি সময় একটানা তাদের ভাগ্যোন্ননের জন্য কাজ করছি। এরই মধ্যে আমরা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মানবতাবিরোধী অপরাধী ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছি। সংবিধানে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করেছি, ফলে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের পথ বন্ধ হয়েছে।’
তিনি বলেন, আমরা ২৫ মার্চকে ‘গণহত্যা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করেছি। প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারে গণহত্যা এড়াতে ভীত-সন্ত্রস্ত ১১ লাখের বেশি বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দিয়েছি। আমরা জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ নির্মূলে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে কাজ করে যাচ্ছি। ইতোমধ্যেই বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত করেছি। ২০৪১ সালের বাংলাদেশ হবে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’। আমরা ‘বাংলাদেশ ব-দ্বীপ পরিকল্পনা-২১০০’ প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করছি: ভবিষ্যত প্রজন্ম এই পরিকল্পনাকে সময়োপযোগী করে বাস্তবায়ন করতে পারবে।
প্রধানমন্ত্রী ‘গণহত্যা দিবস’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সব কর্মসূচির সাফল্য কামনা করেন।
সূত্র : বাসস
অনলাইন ডেস্ক :
আজ বিশ্ব মেডিটেশন দিবস। এ বছর দেশে দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘ভালো মানুষ ভালো দেশ, স্বর্গভূমি বাংলাদেশ’। দিবসটি উপলক্ষে রবিবার প্রতি বছরের মতো এবারও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণসহ সারা দেশে ভোর ৬টায় একযোগে বিভিন্ন উন্মুক্ত স্থানে প্রাণায়াম বা দমচর্চা, প্রত্যয়ন পাঠ ও মেডিটেশন চর্চার আয়োজন করেছে। আর এর মধ্য দিয়ে ধ্যানীরা সুস্থতা ও প্রশান্তির বাণীকে ছড়িয়ে দেবেন সবার কাছে।
কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, দেশে দিনদিন মেডিটেশনের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। পরিপূর্ণ সুস্থতার জন্য বিদ্যমান চিকিৎসার পাশাপাশি মেডিটেশন যে প্রয়োজন, সেই পরামর্শ এখন চিকিৎসকরা দিচ্ছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সম্প্রতি যোগ-মেডিটেশনকে স্বাস্থ্যসেবার পরিপূরক হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছে। জানা গেছে, বিশ্ব জুড়ে এখন প্রায় ৫০ কোটি মানুষ নিয়মিত ধ্যান বা মেডিটেশন করেন। শারীরিক মানসিক সামাজিক ও আত্মিক অর্থাৎ সুস্থ থাকতে মেডিটেশন বা ধ্যানের কার্যকারিতা এখন চিকিৎসাবিজ্ঞানে প্রমাণিত। সুস্থতা ও সাফল্যের পথ দেখায় মেডিটেশন।
ছয় বছর আগে উইল উইলিয়ামস নামে এক ব্রিটিশ মেডিটেশন প্রশিক্ষক প্রথম এ দিবসটি পালনের উদ্যোগ নেন। উইল উইলিয়ামস ছিলেন অনিদ্রার রোগী। মেডিটেশনের মাধ্যমে নিরাময় লাভের পর তিনি এ সম্পর্কে আরো উত্সাহী হয়ে ওঠেন। তবে বাংলাদেশে মেডিটেশন চর্চার ইতিহাসে টানা ৩০ বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন। এই চর্চার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন লাখো মানুষ। নিয়মিত মেডিটেশন চর্চাকারীরা বিশ্বাস করেন, মেডিটেশন চর্চার ভেতর দিয়ে সুস্থতা ও প্রশান্তির বাণী ছড়িয়ে দেওয়া প্রয়োজন।
অনলাইন ডেস্ক :
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, গ্রিস আরও ৬টি দেশে দূতাবাস খোলার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম।
১৭ এপ্রিল বুধবার স্থানীয় সময় রাত ১০টা ৩০ মিনিটে এথেন্সে ‘নভোটেল এথেন্স’ হোটেল বলরুমে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ কমিউনিটি ইন গ্রিস আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
গ্রিসের রাজধানী এথেন্সে নবম ‘আওয়ার ওশান কনফারেন্সে’ যোগদানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেখানে সফরে রয়েছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের যে ভাষণ আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অবিচ্ছেদ্য অংশ, সেই ৭ মার্চও বিএনপি পালন করে না। এতেই স্বাধীনতা-মুক্তিযুদ্ধে বিএনপি কতটুকু বিশ্বাস আছে তার প্রমাণ মেলে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭১ সালে মুজিবনগর সরকারের অধীনে অন্যান্য সেক্টর কমান্ডারদের মতোই ৪০০ টাকা মাসিক বেতনের কর্মচারি ছিলেন জিয়াউর রহমান। অথচ পরিতাপের বিষয়, সেই বিএনপি মুজিবনগর সরকারের শপথ গ্রহণ দিবস ১৭ এপ্রিল পালন করে না।’
মুজিবনগর দিবস স্মরণে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল তৎকালীন কুষ্টিয়া জেলার বৈদ্যনাথতলা অর্থাৎ বর্তমান মেহেরপুর জেলার মুজিবনগরে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকারের শপথ গ্রহণের আগের মধ্যরাতে দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের কলকাতা প্রেসক্লাবে সমবেত হতে বলা হয়। গোপনীয়তার মধ্যে তাদেরকে পরদিন সকালে মুজিবনগরে পৌঁছানো হয় যেখান থেকে তারা সংবাদ পরিবেশন করেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এ সময় গ্রিস প্রবাসী বাংলাদেশিদের আইনানুগ ও পরিশ্রমী জীবনের জন্য নিজেরও গ্রিক পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রশংসার কথা জানিয়ে এই সুনাম অক্ষুন্ন রাখতে ও সবাইকে বৈধ পথে রেমিটেন্স পাঠাতে আহবান জানান মন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
গ্রিস আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ ত্রিশটিরও বেশি সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।
গ্রিস আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুল মান্নান মাতুব্বরের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল হাওলাদারের সঞ্চালনায় বাংলাদেশ দূতাবাসের চার্জ দ্য এফেয়ার্স মোহাম্মদ খালেদ, বাংলাদেশ কমিউনিটি ইন গ্রিস নেতৃবৃন্দের মধ্যে গোলাম মওলা, হাজী আব্দুল কুদ্দুস, আব্দুল খালেক মাতুব্বর, আহসান উল্লাহ হাসান, শেখ আল আমিন, আব্দুল কুদ্দুস মাতুব্বর, রায়হান খান, মিজানুর রহমান আলফা প্রমুখ সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগ দেন। সূ্ত্র :বাসস
অনলাইন ডেস্ক :
গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেছেন, আমাদের সমস্ত উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান আছে। কোনো উন্নয়ন কর্মকাণ্ড স্থবির হয়নি। রিজার্ভ নিয়েও দেশে কোনো সংকট নেই। আজ ১৮ ফেব্রুয়ারি রিববার দুপুরে রাজশাহীতে কর্মরত গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন দফতর ও সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী বলেন, উন্নয়ন প্রকল্পের দীর্ঘসূত্রিতা সর্বত্রই বিরাজমান। এটা দূরীকরণে বর্তমান মন্ত্রীসভা কাজ করবে। দীর্ঘসূত্রিতা পরিহার করে কীভাবে দ্রুত কাজগুলো করা যায় তা নিয়ে কাজ করবো। আর সুন্দর ও ভালো কাজ করতে গিয়ে হয়তো বিলম্বিত হয়। প্রকল্পে সমন্বয়ের ত্রুটি-বিচ্যুতির কারণে কাজে দীর্ঘসূত্রিতা হয় উল্লেখ করে রাজশাহীর উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোর সমন্বয় সাধনে তিনি কাজ করছেন বলে জানান। আরডিএ থেকে অনুমোদন না নিয়ে কেউ আবাসন গড়ে তুললে সেটা বে-আইনি কাজ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এটা দেখার দায়িত্ব জেলা প্রশাসনের। সুতরাং, জেলা প্রশাসক এটা দেখুক। এরআগে, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিনের সভাপতিত্বে রাজশাহীতে কর্মরত গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন দফতর ও সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপূর্তমন্ত্রী।