একজনও কালো টাকা সাদা করেনি : অর্থমন্ত্রী

জাতীয়, 2 June 2023, 757 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
গত এক বছরে একজনও কালো টাকা সাদা করেনি বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

আজ ২ জুন শুক্রবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা জানতে চান, গত বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিলেও এবারের বাজেটে এ ধরনের কোনো সুযোগ কেন রাখা হয়নি। পরে এ কথা জানান মন্ত্রী।

মুস্তফা কামাল বলেন, গত বছরের বাজেটে বলেছিলাম, কেউ যদি অপ্রত্যাশিত টাকা দেশে নিয়ে আসে, তাহলে সেই টাকার কোনো কর দিতে হবে না। গত বাজেটে এ সুযোগটি দেওয়ার পরও এখন পর্যন্ত কোনো অপ্রত্যাশিত টাকা বাংলাদেশে আসেনি। তাই এবারের বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা হয়নি।

গত অর্থবছরের বাজেটে অর্থমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী, কেউ যদি বিদেশ থেকে অর্থ আনেন, তাহলে ৭ শতাংশ কর দিলেই হবে। আর বিদেশে থাকা স্থাবর সম্পত্তি বাংলাদেশে না আনলে ওই সম্পদের মূল্যের ওপর ১৫ শতাংশ এবং বিদেশে থাকা অস্থাবর সম্পত্তি বাংলাদেশে না আনলে এর ওপর ১০ শতাংশ হারে কর আরোপ করা হবে। গত বছরের ১ জুলাই থেকে চলতি মাসের ৩০ জুন পর্যন্ত অর্থাৎ এক বছরের জন্য এ সুবিধা বহাল থাকবে বলে জানানো হয়েছিল।

২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড.আব্দুর রাজ্জাক, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, বা‌ণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন‌শি, ‌শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম, অর্থসচিব ফা‌তেমা ইয়াস‌মিন, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবরা।

এর আগে ১ জুন বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেট সংসদে পেশ করেন অর্থমন্ত্রী। প্রস্তাবিত বা‌জে‌টের আকার ধরা হয় ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা।

Leave a Reply

আন্দোলনে আহতদের দেখতে নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে প্রধান…

অনলাইন ডেস্ক : ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহত ব্যক্তিদের খোঁজখবর নিতে রাজধানীর Read more

বাঞ্ছারামপুরে শেখ হাসিনাসহ তার দোসরদের বিচারের…

চলারপথে রিপোর্ট : বাঞ্ছারামপুর উপজেলা বিএনপির সহনশীলতায় বিশ্বাস করে, শান্তিপ্রিয় Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রাক্তন স্কাউটদের বিশেষ সাধারণ সভা

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রাক্তন স্কাউটস সংগঠনের গঠনতন্ত্র প্রণয়ন ও Read more

আখাউড়ায় মাকে বাঁচাতে গিয়ে মৃত্যুর কোলে…

চলারপথে রিপোর্ট : আখাউড়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত মাকে দেখামাত্র অসুস্থ Read more

বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ইকুয়েডরকে হারাল ব্রাজিল

অনলাইন ডেস্ক : ইকুয়েডরের বিপক্ষে রদ্রিগোর একমাত্র গোলে জয়ের দেখা Read more

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ ও হতাহতদের…

চলারপথে রিপোর্ট : বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া, জেলা ছাত্রদল, যুবদলের Read more

মালয়েশিয়ায় একদিনে অভিযানে ২২২ বাংলাদেশি আটক

অনলাইন ডেস্ক : মালয়েশিয়ার কেদাহ রাজ্যে অভিযান চালিয়ে ২২২ জন Read more

নবীনগরে ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ’র ৫২তম মৃত্যুবার্ষিকী…

চলারপথে রিপোর্ট : উপমহাদেশের শাস্ত্রীয় সঙ্গীত জগতের কিংবদন্তি ‘সুরসম্রাট’ খ্যাত Read more

ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর মৃত্যুবার্ষিকী আজ

চলারপথে রিপোর্ট : আজ ৬ সেপ্টেম্বর ‘সুরসম্রাট’ ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর Read more

জাতীয় সঙ্গীতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে উদীচীর…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জাতীয় সঙ্গীতের বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে Read more

সালমান শাহকে হারানোর আজ ২৮ বছর

অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশী চলচ্চিত্রের বাঁক ঘোরানো তুমুল জনপ্রিয় অভিনেতা Read more

দু’দল গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষে আহত প্রায়…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবায় দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষের Read more

আমরা বিশ্বব্যাংকের প্রতি আস্থা বজায় রেখেছি : প্রধানমন্ত্রী

জাতীয়, 2 May 2023, 1065 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বর্তমানে উন্নয়নশীল দেশ হয়ে ওঠার পথে বাংলাদেশের মসৃণ উত্তরণ এবং পরবর্তীতে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে উত্তরণ লাভ করা, ও এর ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ বাস্তবায়নের জন্য বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতা বৃদ্ধি প্রয়োজন। আমাদের আস্থা আছে বিশ্বব্যাংকের ওপর। আশা করছি বিশ্বব্যাংকও বাংলাদেশের উন্নয়নের অংশিদার হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আরও বলেছেন, “২০২৬ সালে জাতিসংঘের এলডিসি মর্যাদা থেকে মসৃণ ও টেকসই উত্তরণ লাভের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ। বিশ্বব্যাংককে আমি আমাদের মানব পুঁজি ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা উন্নয়ন কর্মসূচিগুলিকে একটি মসৃণ উত্তরণের জন্য সহায়তা দেয়ার জন্য অনুরোধ করছি। সে লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ আইডিএ উইন্ডোটি সংরক্ষণ ও অব্যাহত রাখা প্রয়োজন।”

যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্বব্যাংক সদর দপ্তরের প্রিস্টন অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত “বিশ্বব্যাংক-বাংলাদেশ অংশীদারিত্বের ৫০ বছরের প্রতিফলন” শীর্ষক পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে সোমবার ভাষণ দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী বিশ্বব্যাংকের সামনে পাঁচটি সুনির্দিষ্ট পরামর্শ রেখেছেন যা বিশ্বব্যাংক ঋণদাতাদের বিবেচনায় নেয়া উচিত।

এ সময় পাঁচটি প্রকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন (আড়াই বিলিয়ন) ডলারের একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্টের কাছে পদ্মা বহুমুখী সেতুর একটি ছবি তুলে দেন।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ২০৪১ সালের মধ্যে উচ্চ আয়ের অর্থনীতিতে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য অবকাঠামো ও লজিস্টিকসে বিনিয়োগ অব্যাহত রাখবে।

শেখ হাসিনা বলেন, “আমি আশা করব বিশ্বব্যাংক অতীতের মতো আগামী বছরগুলোতে আমাদের ভৌত ও সামাজিক উভয় খাতে মেগা-প্রকল্পগুলোতে সম্পৃক্ত হবে।”

ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০৩১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার জাতীয় আকাঙ্খার সঙ্গে জাতিসংঘের এসডিজির সমন্বয় করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, “এসডিজি বাস্তবায়নের জন্য বিশ্বব্যাংক ও অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীদের বর্ধিত, ছাড় দেয়া এবং উদ্ভাবনী অর্থায়নের জরুরি প্রত্যাশা রয়েছে।”

প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেছেন যে, মহামারী, সশস্ত্র সংঘাত এবং জলবায়ু জরুরি অবস্থার কারণে চলমান বৈশ্বিক একাধিক সংকট বেশিরভাগ উন্নয়নশীল অর্থনীতিগুলোকে গুরুতর চাপের মধ্যে ফেলেছে।

তিনি বলেন, মহামারী ও সশস্ত্র সংঘাত থেকে উদ্ভূত একাধিক সংকট সত্ত্বেও, কিছু উন্নয়ন অংশীদার তাদের ঋণের খরচ এবং সুদের হার বাড়িয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমি বিশ্বব্যাংক ও অন্যান্য উন্নয়ন অংশীদারদেরকে কার্যকর বিকল্প খুঁজে বের করার আহ্বান জানাচ্ছি যাতে আমাদের অর্থনীতিগুলো উদ্ভুত চ্যালেঞ্জগুলি আরও ভালভাবে মোকাবেলা করতে পারে।”

তিনি বলেন, বাংলাদেশ আশা করে যে, জলবায়ু সংক্রান্ত কর্মকা-ে বিশ্বব্যাংকের বর্ধিত সম্পৃক্ততা প্যারিস চুক্তির অধীনে অর্থায়নের ঘাটতি পূরণে সহায়তা করবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “আমরা জলবায়ু প্রশমন ও অভিযোজনের মধ্যে অর্থায়নের সমান বণ্টনের ওপর জোর দেব।”

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও প্রস্তুতিতে বিশ্বব্যাপী রোল-মডেল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে এবং আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা, দুর্যোগ-সহিষ্ণু অবকাঠামো এবং সম্প্রদায় ভিত্তিক পদক্ষেপের ক্ষেত্রে প্রচুর বিনিয়োগ করেছে।

তিনি বাংলাদেশকে জলবায়ু অভিযোজনের একটি জীবন্ত গবেষণাগার হিসেবে বর্ণনা করেন যেখানে বেশ কিছু প্রকৃতি-ভিত্তিক ও কৌশলগত সমাধান রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ এর অধীনে প্রকল্পগুলি বাস্তবায়নে আমাদের সাথে যোগ দেয়ার জন্য বিশ্বব্যাংক ও অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগীদের আমন্ত্রণ জানান।”

রোহিঙ্গা ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারে তাদের নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে তারা জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে, কিন্তু আজ পর্যন্ত একজন রোহিঙ্গাও ফিরে যায়নি।

তিনি বলেন, “বিস্তৃত অঞ্চলের জন্য ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তার প্রভাবের পাশাপাশি পরিস্থিতি আমাদের জন্য ক্রমেই কঠিন হয়ে উঠছে। আমি বিশ্বব্যাংককে আমাদের মানবিক প্রচেষ্টায় যোগদানের জন্য এবং রোহিঙ্গা ও তাদের সম্প্রদায়ের জন্য ৫৯০ মিলিয়ন ডলার অনুদানের জন্য ধন্যবাদ জানাই।”

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ গত চার দশকে মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে এবং ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে ব্যাপক নৃশংসতার পর থেকে তাদের সংখ্যা ১.২ মিলিয়নে পৌঁছেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণ নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছিলো।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিজের ভাগ্য গড়তে নয়, দুঃস্থ মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য তিনি ক্ষমতা গ্রহণ করেছেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাবা-মা এবং তিন ভাইসহ সবকিছু হারিয়ে দেশবাসীকে পাশে পেয়ে তিনি দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, তাঁকে তাঁর জীবনের অনেক ঝুঁকির মুখোমুখি হতে হয়েছে, তবে তিনি কখনই মাথা নত করেননি।

তিনি বলেন, ‘আমি কখনো মাথা নিচু করে দেশবাসীকে অসম্মান করতে চাই না।’

প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, বাঙালি একটি বিজয়ী জাতি, আমরা বিজয়ী জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে এগিয়ে যেতে চাই। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অব্যাহত ও অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে, কারণ তার আশেপাশে থাকা লোকদের কঠোর পরিশ্রম, আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করার কারণে এবং সে সাথে রয়েছে দেশের জনগণের অটুট সমর্থন।

প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব আহমেদ ওয়াজেদ, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এবং প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমানসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।

বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস এবং এর প্রাক্তন প্রধান অর্থনীতিবিদ কৌসিক বসু অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন এবং বৈশ্বিক ঋণদাতা ভিপি মার্টিন সমাপনী বক্তব্য রাখেন।

শেখ হাসিনা বলেন, তিনি বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশের অংশীদারিত্বের ৫০ বছর উপলক্ষ্যে সবার সাথে যোগ দিতে পেরে আনন্দিত।

তিনি বলেন, “আমি প্রেসিডেন্ট মালপাসকে তার আমন্ত্রণ ও আতিথেয়তার জন্য ধন্যবাদ জানাই। বিশ্বব্যাংকে অনেক বাংলাদেশীকে নিয়োজিত দেখে আমি আনন্দিত।” তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ নির্বিঘেœ এগিয়ে যেতে থাকবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংক একটি নেতৃস্থানীয় উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশকে ধারাবাহিকভাবে সহায়তা করে আসছে। বিশ্বব্যাংক চলমান আইডিএ কর্মসূচির অধীনে বাংলাদেশের জন্য বর্তমান বৈদেশিক সহায়তার প্রায় ৩২ শতাংশ অবদান রাখে।

তিনি আরো বলেন, “এছাড়া, আইএফসি এবং এমআইজিএ আমাদের বেসরকারী খাতকেও সহায়তা করছে।”

শেখ হাসিনা বলেন, “এখানে (বিশ্বব্যাংক) আমার উপস্থিতি ইঙ্গিত দেয় যে, আমরা বিশ্বব্যাংকের প্রতি আমাদের আস্থা বজায় রেখেছি। আগামী দুই দশকে আমাদের সাফল্য নির্ভর করবে আমাদের সম্মিলিত সক্ষমতা এবং ন্যায়সঙ্গত ও টেকসই উপায়ে উদীয়মান চ্যালেঞ্জগুলি অতিক্রম করার প্রচেষ্টার উপর”।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার পিতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দূরদর্শী নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র এবং ধর্মনিরপেক্ষতাকে আমাদের সংবিধানে মৌলিক রাষ্ট্রীয় নীতি হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। তার নৃশংস হত্যাকা-ের পর, জাতিকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনতে আমাদের দীর্ঘ ২১ বছরের গণতান্ত্রিক সংগ্রাম করতে হয়েছে। তিনি বলেন, ২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহন তার সরকার ২০২১ সালের মধ্যে একটি ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গড়ার অঙ্গীকার করে।

তিনি বলেন, “টানা তিন মেয়াদে জনগণ ও দেশের সেবা করার সুযোগ লাভের জন্য আমি আমাদের জনগণের কাছে কৃতজ্ঞ। গত দেড় দশকে, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সুষ্ঠু সামষ্টিক অর্থনৈতিক মৌলিক বিষয়গুলির জন্য বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘটেছে। ”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৫ সালে, বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশ হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করেছে এবং ২০২১ সালে, জাতিসংঘ এটিকে দ্বিতীয়বারের মতো এলডিসি মর্যাদা থেকে উত্তরণ লাভের যোগ্য ঘোষণা করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ২৬.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের অর্থনৈতিক উদ্দীপনা প্যাকেজ এবং বিনামূল্যের গণ টিকাদানের মাধ্যমে সফলভাবে কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলা করেছে।

তিনি বলেন, “আমাদের নিজস্ব সম্পদে পদ্মা বহুমুখী সেতুর সমাপ্তি এবং গত বছর এর উদ্বোধন সম্ভবত আমাদের সহনশীলতা ও সাফল্য অর্জনের সেরা উদাহরণ।”

শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশ আজ বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতি হিসাবে আবির্ভূত হয়েছে, যার জিডিপি ৪৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

তিনি বলেন, “আমাদের অর্থনীতি গত এক দশকে গড়ে ৬ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। মহামারীর ঠিক আগে এটি ৮.১৫ শতাংশে পৌঁছেছে। এর ফলে ২০২২ সালে মাথাপিছু আয় ২,৮২৪ মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২২ সালে সার্বিক দারিদ্র্যের হার ১৮.৭ শতাংশে নেমে এসেছে যা ২০০৬ সালে ছিল ৪১.৫ শতাংশ।

তিনি বলেন, তার সরকার সামাজিক সুরক্ষার জন্য জাতীয় বাজেট বরাদ্দ ৪০ গুণ বাড়িয়েছে, যা জিডিপির ২.৫ শতাংশ।

শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার এক বছর আগে সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার বিনা খরচে সকল গৃহহীন ও ভূমিহীন মানুষকে আবাসন প্রকল্পের আওতায় আনার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, “আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে, আমরা প্রায় ৫০ লাখ মানুষকে বিনা খরচে বাড়ি দিয়েছি এবং আয়সংস্থানমূলক দক্ষতা ও সহায়তা দিয়েছি।” প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, তার সরকার প্রতিটি বাড়ির দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা এবং বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের শ্রমশক্তিতে নারীদের অংশগ্রহণের হার আমাদের আঞ্চলিক দেশগুলোর তুলনায় বেশি।

শেখ হাসিনা বলেন, “আমাদের সরকার সম্প্রতি আমাদের জাতীয় জিডিপিতে নারীদের গৃহস্থালির কাজ প্রতিফলিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা বাংলাদেশকে একটি আঞ্চলিক সংযোগ, বিমান ও লজিস্টিক হাব হিসেবে গয়ে তোলার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়।
তিনি বলেন, “আমরা ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি, যা ২০৩০ সালের মধ্যে আনুমানিক দশ মিলিয়ন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই বিশ্বব্যাপী সরবরাহ শৃঙ্খলে একটি নির্ভরযোগ্য অংশীদার হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। বিশ্বের শতাধিক সেরা সবুজ কারখানার অর্ধেকেরও বেশি এখন বাংলাদেশে রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে একটি ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ে তোলার জন্য তার পরবর্তী রূপকল্প চালু করেছে যার লক্ষ্য ডিজিটালভাবে নাগরিকদের ক্ষমতায়িত করা; চেহারাহীন সরকারি সেবা প্রদান; একটি জ্ঞান-ভিত্তিক নগদ অর্থ লেনদেনহীন অর্থনীতি; এবং একটি অধিকার-ভিত্তিক ন্যায়সঙ্গত এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ।

বেনাপোল দিয়ে ভারতে গেল প্রধানমন্ত্রীর উপহারের আম

জাতীয়, 12 June 2023, 695 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে গেল প্রধানমন্ত্রীর উপহারের হাড়ি ভাঙ্গা আম। পশ্চিম বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর নামে ২৪০ কার্টুনে ১২শ কেজির আমের চালানটি আজ ১২ জুন সোমবার দুপুরে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে।

বাংলাদেশ কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার তানভীর আহমেদ ভারতীয় কাস্টমস কর্তৃপক্ষের নিকট আমের চালানটি হস্তান্তর করেন। এ সময় উভয় দেশের কাস্টমস এবং বন্দর কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

সিএন্ডএফ এজেন্ট প্রতিষ্ঠান রবি ইন্টারন্যাশনাল কাস্টমস বন্দরের যাবতীয় কর্মকাণ্ড সম্পাদনায় সহযোগিতা করেন বলে কাস্টমস সূত্রে জানা যায়।

নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে রাজপথে নামার ঘোষণা মৃধার

জাতীয়, 15 October 2023, 486 Views,
Ziaul Haque Mridha

চলারপথে রিপোর্ট :
বহুল আলোচিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপ-নির্বাচন ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। তফসিল অনুযায়ী প্রার্থীরা প্রতীক বরাদ্দ পাবেন ২০ অক্টোবর। এর আগে প্রার্থীরা উঠান বৈঠক ও পরামর্শ সভা করে যাচ্ছেন। নির্বাচন কমিশনের বাছাই শেষে এ নির্বাচনে ছয় প্রার্থীর মধ্যে একজনের মনোনয়ন অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি নিয়ম অনুযায়ী আপিল করতে পারবেন।

মনোনয়ন বৈধ হওয়া প্রার্থীরা হলেন- ন্যাশনাল পিপলস পার্টির প্রার্থী মো. রাজ্জাক হোসেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক মৃধা, জাকের পার্টির জহিরুল ইসলাম (জুয়েল), আওয়ামী লীগের শাহজাহান আলম, জাতীয় পার্টির আব্দুল হামিদ। স্বতন্ত্র প্রার্থী ইব্রাহীমের মনোনয়ন বাছাইয়ে অবৈধ ঘোষণা করা হয়।

তবে নির্বাচনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী শাহজাহান আলম সাজু ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মহাজোট থেকে দুবারের সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধাকে মনে করছেন ভোটাররা।

এদিকে, স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক মৃধা ১৪ অক্টোবর শনিবার রাতে তার নিজ বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার কালিকচ্ছের ঘোষপাড়ায় এক সভায় নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে রাজপথে নামার ঘোষণা দিয়েছেন।

তিনি বলেন, ইউরোপ-যুক্তরাষ্ট্রসহ সারা পৃথিবী বাংলাদেশের নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে। দেশে দুটি নির্বাচন হচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও লক্ষ্মীপুর। এ দুটি নির্বাচনের দিকে বিশ্ব তাকিয়ে আছে। সরকার যদি এ নির্বাচনে কোনো প্রকার কারচুপি করে, একজনের ভোট আরেকজনকে দিয়ে দেয়, যদি দরজা বন্ধ করে দেয়, যদি রাতের অন্ধকারে সিল মারে, তাহলে সরকারকে ফলাফল ভোগ করতে হবে। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন না হলে আমি রাজপথে নামার ঘোষণা দিলাম।

মৃধা আরো বলেন, ৫ নভেম্বর নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু দেখতে চাই। আমরা চাই আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব এ স্লোগান বাস্তবায়িত হোক। আমরা চাই একটা সুন্দর নির্বাচন। মানুষ চুন খেয়ে দই দেখলে ভয় পায়, চুন আর দই যেন একাকার না হয় তা সরকারের কাছে আকুল আবেদন।

সাবেক এ সংসদ সদস্য বলেন, শেখ হাসিনাকে বলতে চাই, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হোক। এটা প্রমাণের দায়িত্ব আপনার। আপনিই একমাত্র ব্যক্তি যিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ভাবে দেখাতে পারেন আমি সুন্দর নির্বাচন দিয়েছি। আগামী দিনেও এ ধরনের নির্বাচন দেবো। এটা আপনার জন্য ভালো এবং মঙ্গল হবে। আর উল্টাপাল্টা হলে, বাধা দিলে বাধবে লড়াই। এ লড়াইয়ে আমরাই জিতবো।

বহুল আলোচিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঞা ৩০ সেপ্টেম্বর মারা যান। তার মৃত্যুতে ৩ অক্টোবর আসনটি শূণ্য ঘোষণা করে নির্বাচনের তফসিল দেয় বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন।

ভাইদের সঙ্গে অভিমান করে ১৬ বছর জঙ্গলে

জাতীয়, 29 May 2023, 899 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
পৈত্রিক সম্পত্তি আত্মসাৎ করায় ভাইদের ওপর প্রচণ্ড অভিমান জমে মুজিবুর রহমানের। সেই অভিমান থেকে স্বেচ্ছা নির্বাসনে যান কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার এই বাসিন্দা। এরপর একে একে ১৬টি বছর জঙ্গলেই কাটিয়ে দিয়েছেন। সেখানে জরাজীর্ণ এক ডেরা তৈরি করে শিয়াল-সাপ-বিচ্ছুর সঙ্গে অর্ধাহার-অনাহারে কাটিয়েছেন বন্য জীবন।

মুজিবুর রহমানের স্বেচ্ছা নির্বাসনের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশের পর ঘটনাস্থলে ছুটে যান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। এরপর মুজিবুর রহমান শুনিয়েছেন তার মানবেতর জীবনযাপনের গল্প।

উপজেলার ১০নং গুনাইঘর দক্ষিণ ইউনিয়নের মাশিকাড়া গ্রামের উত্তরপাড়ার পাশের একটি জঙ্গলে মুজিবুর রহমানে দেখা মিলেছে। বিশাল জঙ্গলের ঝোপঝাড় পেরিয়ে মধ্যভাগে গিয়ে দেখা যায় পলিথিনের ছাউনির একটি ছোট ডেরায় বসে আছেন ৬০ বছর বয়সী মুজিবুর রহমান।

প্রশাসনের লোকজন আসার খবরে ডেরা থেকে বেরিয়ে আসেন তিনি। এরপর জানিয়েছেন, সাজানো সংসার ধ্বংস হবার গল্প। তিনি জানান, সৎ ভাইরা পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করায় অভিমানে জঙ্গলেই ঠাঁই নিয়েছেন তিনি। জঙ্গলে থাকায় পাততে পারেননি সংসারও।

মুজিবুর রহমান আরও জানান, তার বাবা লাল মিয়ার প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুর পর দ্বিতীয় বিয়ে করেন। দ্বিতীয় সংসারের একমাত্র সন্তান তিনি। বাবার প্রথম সংসারে ফরিদুল ইসলাম ও জহিরুল ইসলাম নামে তার দুই ভাই রয়েছে। বাবা লাল মিয়া রেলওয়েতে চাকরি করতেন। বড় ভাই ফরিদুল আলম পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে চাকরি করতেন।

ষাটোর্ধ্ব এই ব্যক্তি আরও জানান, তিনি কাঁচপুর মালেক জুট মিলে চাকরি করে সৎ ভাই জহিরুল ইসলামকে বিএ পাশ করান। সেই জহিরুল ইসলামই তার পৈত্রিক সম্পত্তির ১০৫ শতাংশ জমির ৮৫ শতাংশ লিখে নেয়। এরপর তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। ভাইয়ের ওপর রাগে অভিমানে ২০০৭ সাল থেকে জঙ্গলে ডেরা বানিয়ে সেখানে ঠাঁই নেন তিনি।

মুজিবুর রহমান জানান, বিয়ে করে বউ রাখার ঘর নেই, তাই বিয়েটাও করতে পারেনি। অর্ধাহারে, অনাহারে, রোদ-বৃষ্টি-ঝড়ে, আর শেয়ালের হাঁকডাকের মধ্যেই খুপড়ির মধ্যে পড়ে থাকতেন তিনি।

তিনি বলেন, কখনও ভাত আর আলু সিদ্ধ করে লবণ-মরিচ দিয়ে, কখনও শুকনো খাবার খেয়ে থেকেছি। শিয়াল-সাপ-বিচ্ছু কখনও আমার ক্ষতি করেনি। ক্ষতি যা করার মানুষ করেছে।

এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য মুজিবুর রহমানের ভাইদের পাওয়া যায়নি। তবে মুজিবুরের ভাই ফরিদুল আলমের ছেলে আল-আমিন বলেন, আমার কাকা খুব অভিমানী। আমার দাদার জায়গা জমি এখনও ভাগ হয়নি। তবে জহিরুল ইসলাম চাচা কিছু জমি তার নিজের নামে লিখে নিয়েছে। মুজিবুর চাচার পাওনা বুঝিয়ে দিতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিগার সুলতানা জানান, মজিবুর রহমানকে তার পৈত্রিক জমির কাগজপত্র নিয়ে এসিল্যান্ডের সঙ্গে দেখা করার জন্য বলা হয়েছে। কাগজপত্র ঠিক থাকলে তার পাওনা জমি তাকে উদ্ধার করে দেওয়া হবে। অন্যথায় তার আবাসনের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।

এ সময় উপজেলা চেয়ারম্যান ও কুমিল্লা (উত্তর) জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ তার চোখের চিকিৎসা করাতে ১০ হাজার টাকা প্রদান করেন। একই সঙ্গে তাকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।

বিএনপি নির্বাচন চায় না: প্রধানমন্ত্রী

জাতীয়, 26 July 2023, 572 Views,
ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক :
অশুভ শক্তির হাত থেকে বাংলাদেশকে রক্ষার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, বিএনপি নির্বাচন চায় না বরং দেশে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরির অপেক্ষায় রয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার ইতালিতে প্রধানমন্ত্রী তার আবাসস্থলের ফ্যার্নান্দেস হলে প্রবাসী বাংলাদেশিদের আয়োজিত এক কমিউনিটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘তারা (বিএনপি) বাংলাদেশকে আবারও অস্থিতিশীল পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিতে চায়। তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’ খবর বাসসের।

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগেরও সভাপতি শেখ হাসিনা আগামী সাধারণ নির্বাচনে আবারও তার দলের নির্বাচনী প্রতীক নৌকায় ভোট চেয়ে বলেছেন,‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়তে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আসতে হবে।

তিনি অভিযোগ করেন, বিএনপি নির্বাচন চায় না বরং দেশে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নির্বাচন অবশ্যই সংবিধান অনুযায়ী হবে। বিএনপি জানে জনগণ তাদের ভোট দেবে না। তাই বিএনপি দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়। ভোট কারচুপির কারণে যারা বিতাড়িত হয়েছে জনগণ তাদের ভোট দিতে যাবে কেন?’

শেখ হাসিনা প্রশ্ন তোলেন, অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে মানুষ হত্যার পর কীভাবে তারা ভোট চায়?

তিনি বলেন, ‘তারা (বিএনপি) নির্বাচন চায় না। তারা তাদের কিছু বিদেশি প্রভুর পা চাটে এবং তারা চায় দেশের মানুষ তাদের (বিদেশি প্রভুদের) দ্বারা কষ্টভোগ করুক।’

প্রধানমন্ত্রী সকলকে মনে করিয়ে দেন, বিএনপি কখনো দেশবাসীর কল্যাণ চায় না। বরং তারা বাংলাদেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়।

তিনি বলেন, ‘তাদের (বিএনপি) উদ্দেশ্য হলো ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করা। তাই তাদের লক্ষ্য বাংলাদেশের অগ্রগতি ব্যাহত করা।’

র‌্যাবের কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা বিধিনিষেধের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, তাদের দ্বারা আমরা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমন করেছি। আমরা এর রহস্য বুঝতে পারছি না।’

যারা স্বাধীনতা যুদ্ধে সমর্থন করেনি তারা এখন বাংলাদেশের সঙ্গে বিভিন্নভাবে খেলা খেলতে চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘খেলোয়াড়দের খেলতে দেওয়া যাবে না।’

তিনি বলেন, যে কোনো অসৎ উদ্দেশ্য নস্যাৎ করতে দেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

বৈধ উপায়ে রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য প্রবাসী বাংলাদেশীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বাংলাদেশে বিশেষ করে আইসিটি খাত, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প এবং ক্ষুদ্র শিল্পে বিনিয়োগের জন্য বিদেশি অংশীদারদের সন্ধান করার জন্য তাদের অনুরোধ করেন।

তিনি প্রবাসীদের যে দেশে তারা থাকছে সে দেশের আইন মেনে চলার জন্য এবং বিদেশে চাকরি প্রার্থীদের অবৈধ চ্যানেলের মাধ্যমে অন্য দেশে পাড়ি জমাতে নিরুৎসাহিত করার আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতির মধ্যে খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর জন্য প্রবাসীদের তাদের পরিবার এবং আত্মীয়দের এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি না রাখতে উৎসাহিত করতে বলেছেন।

তিনি বলেন, তার সরকার খাদ্য সংরক্ষণ ব্যবস্থার উন্নতির জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন খাতে তার সরকারের সাফল্য এবং ২০০৯ সাল থেকে দেশের অর্জিত অগ্রগতির কথাও তুলে ধরেন।