চলারপথে রিপোর্ট :
নেত্রকোনার দুর্গাপুরে হঠাৎ ঝড়ের তান্ডবে ঘরবাড়ি, গাছপালা, মসজিদ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। উপড়ে গেছে অসংখ্য গাছ-পালা। এদিকে বিরিশিরি সড়কের ঘোড়াইত নামক স্থানে চলন্ত অটোরিক্সায় গাছ পড়ে গুরুতর আহত আদম আলী ফকির (৫০) নামের এক ব্যক্তির চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
আজ ২ জুন শুক্রবার সকালে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় তার। নিহত আদম আলী ফকির উপজেলার কাকৈরগড়া ইউনিয়নের বন্দসাংসা গ্রামের মৃত সিরাজ উদ্দীনের ছেলে।
এর আগে ১ জুন বৃহস্পতিবার বিকেলে পৌর শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ঝড় আঘাত হানে। এতে অর্ধশতাধিক কাঁচা-পাকা ঘরবাড়ি, গাছপালা, আম, লিচুসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফলেরও ব্যাপক ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। ঝড়ের সঙ্গে বজ্রপাত এবং শিলাবৃষ্টিও হয়েছে।
জানা গেছে, হঠাৎ করে ঝড়ে দুর্গাপুর পৌর শহরের দশাল গ্রামের রুবিনা বেগম, আবু রায়হান, হক মিয়া, এমদাদুলসহ আরো অনেকেরই বসতঘর লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে অর্ধশতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঝড় ও তুমুল বৃষ্টিতে মৌসুমি ফল আম, লিচু, কলাসহ বিভিন্ন ফসলেরও ক্ষতি হয়েছে। প্রবল বেগে বয়ে চলা বাতাসে উড়ে গেছে সদর ইউনিয়নের এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চাল।
ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত পৌর শহরের দশাল এলাকার হক মিয়ার স্ত্রী দোলনা বেগম বলেন, ‘আমার একটি মাত্র টিনের ঘর। হঠাৎ করেই ঝড় চলে আসে, কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই পুরো ঘর ভেঙে গেছে।
পোলাপাইনগুলারে নিয়ে এই ঝড়ের মধ্যেই অন্য বাড়িতে গিয়ে উঠছি। স্বামী ঢাকায় কাজ করেন। ৪ সন্তান নিয়ে এই ঘরেই থাকতাম।’
একই এলাকার আবু রায়হান বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে প্রচন্ড রোদ আজো রোদ থাকলেও হঠাৎ ঝড় শুরু হয়। ঝড়ের শুরুতেই প্রথমে আমার ঘরের বারান্দা উড়িয়ে নিয়ে যায় এরপর মুহূর্তেই ঘরের চাল উড়িয়ে নিয়ে গেছে। ঘরের ভিতরে থাকা সবাইরে নিয়ে অন্যস্থানে আশ্রয় নিতে পেরেছিলাম তাই কারো ক্ষতি হয় নাই।’
পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মানির হোসাইন মানিক বলেন, ‘ঝড়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় গিয়ে গিয়ে আমি সবার খোঁজ নিচ্ছি।’
সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাদেকুল ইসলাম বলেন, ‘আমার ইউনিয়নে অনেক ঘরবাড়ি ও একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করছি।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ রাজীব-উল-আহসান বলেন, ‘ঝড়ে বেশ কয়েকটি ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে খবর পেয়েছি। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সহায়তা দেওয়া হবে।
অনলাইন ডেস্ক :
দেশের চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস কমিয়ে গবেষণায় মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, পাবনাতেই হবে দ্বিতীয় পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র।
আজ ১১ মার্চ সোমবার প্রধানমন্ত্রী তাঁর কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ, এনএসটি ফেলোশিপ এবং বিশেষ গবেষণা অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্যবিষয়ক গবেষণায় বাংলাদেশের পিছিয়ে থাকার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ডাক্তার সাহেবরা প্র্যাকটিস করেন, টাকা কামাই করেন, গবেষণার দিকে বেশি যান না।
ঠিক? কয়েকজন ডাক্তার আছেন, আমি সামনাসামনি জিজ্ঞাসা করছি। এখন গবেষণার প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে।’
চিকিৎসকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘গবেষণায় গুরুত্ব দিলে দেশের মানুষ আরো সুস্থ হবে, সবল হবে, মেধাবীরা আরো মেধা বিকাশের সুযোগ পাবে। গবেষণা অপরিহার্য। স্বাস্থ্য বিষয়ে যাঁরা গবেষণা করবেন, তাঁদের বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হবে।’
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সব ক্ষেত্রেই যে গবেষণার বিকল্প নেই, সে কথা তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, ‘কৃষিতে গবেষণা করে আজকে আমরা শুধু খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ না, বাংলাদেশে এখন আমাদের ফল, ফুল, মূল, এমনকি টিউলিপ, যেটা শীতের দেশ ছাড়া হয় না, সেই টিউলিপও বাংলাদেশে হচ্ছে। স্ট্রবেরিও বাংলাদেশে হচ্ছে। সবই গবেষণার ফসল। গবেষণা আমাদের নতুন দুয়ার খুলে দেয়। আর বাংলাদেশের মাটি হচ্ছে সোনার মাটি, যা লাগানো যায় সেটাই হয়। এটাই হচ্ছে বাস্তবতা।’
চিকিৎসকদের তিনি বলেন, ‘যাঁরা সরকারি চাকরি করছেন, তাঁরা প্রাইভেট প্র্যাকটিসটা একটু কমিয়ে দিয়ে গবেষণার দিকে মনোযোগ দেন। যাঁরা গবেষণা করবেন, তাঁদের উত্সাহ দেওয়ার জন্য যা প্রয়োজন আমরা করব।
গবেষণাটা আমাদের খুব দরকার। বিজ্ঞান এবং স্বাস্থ্য বিজ্ঞান, এই দুইটার ওপর আমাদের গবেষণায় সবচেয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। আমরা চাই, আমাদের গবেষণায় আরো বেশি লোক মনোযোগী হবেন। গবেষকদের কোনো অসুবিধা থাকলে সেটা কিভাবে দূর করা যায়, সে ব্যাপারে আমাদের সরকার সব সময় অত্যন্ত আন্তরিক।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে গবেষণার জন্য যে টাকা আমরা অনুদান হিসেবে দিচ্ছি, মনে রাখতে হবে, এই টাকাটা বাংলাদেশের জনগণের টাকা। জনগণের টাকা জনগণের কল্যাণে যেন লাগে। কারণ গবেষণা থেকে যেটা উদ্ভাবন হবে, সেটা কিন্তু জনগণের কাজে লাগবে। সেই কথাটাই মাথায় রাখতে হবে। আমি মনে করি তরুণের যে মেধাশক্তি, সেটা বিকাশের মধ্য দিয়ে দেশকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব।’
অনূর্ধ্ব-১৬ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জেতায় বাংলাদেশের মেয়েদের অভিনন্দন জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘ষোলর নিচে যারা (মেয়ে), তারা তো ভারতকে তিন গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন। তাদেরকে আমি ডাকব এবং তাদের ডেকে প্রাইজমানি দিয়ে উত্সাহিত করব।’
১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশের যে উল্টো যাত্রা শুরু হয়েছিল সেই ইতিহাসও অনুষ্ঠানে মনে করিয়ে দেন তাঁর মেয়ে শেখ হাসিনা।
দেশের দ্বিতীয় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রও পাবনার রূপপুরে করা হবে উল্লেখ করে প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দ্বিতীয়টির কাজ যাতে শুরু করা যায় সেই ব্যাপারে এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘আমরা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছি। আরেকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের চেষ্টা করেছিলাম দক্ষিণে। কিন্তু সেখানের মাটি এত নরম, প্রতিটি দ্বীপে আমরা অনুসন্ধান চালিয়ে দেখেছি। আসলে সেখানে করা বোধ হয় সম্ভব নয়। তবে এখন যেখানে আমরা বিদ্যুৎকেন্দ্র করেছি সেটার কাজ সম্পূর্ণ শেষ হওয়ার পর দ্বিতীয়টাও আমরা এই পাবনাতে, এই রূপপুরেই করতে পারব।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রীর উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটার কাজ যখন শেষ হবে সঙ্গে সঙ্গে আমরা যেন দ্বিতীয়টার কাজ শুরু করতে পারি, এখন থেকে আমাদের সেই প্রস্তুতি নিতে হবে। তা ছাড়া বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ আমরা উেক্ষপণ করেছি এবং স্যাটেলাইট-২ উেক্ষপণেও আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি।’
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি জাহিদ মালেক।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আলী হোসেন।
অনলাইন ডেস্ক :
২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত টানা ৩ মেয়াদে আওয়ামী লীগ লীগ সরকার গণতান্ত্রিক ধারা ও স্থিতিশীলতা বজায় রেখে জনকল্যাণমুখী ও সুসমন্বিত পরিকল্পনার মাধ্যমে একটি সমতা ও ন্যায়ের ভিত্তিতে গণতান্ত্রিক দেশ বিনির্মাণের পথে জাতিকে অগ্রসরমান রেখেছে উল্লেখ করে দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ওপর ভরসা রাখতে দেশবাসীকে আহ্বান জানিয়েছেন।
আজ ৪ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ আহ্বান জানান। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ভাষণ দেন তিনি।
জাতির উদ্দেশে তিনি বলেন, গত ২৭ ডিসেম্বর আপনাদের সামনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে তুলে ধরেছি। বিশদভাবে ব্যাখ্যা দিয়েছি কী অবস্থায় দেশকে পেয়েছিলাম, আর আপনাদের জীবনমান উন্নয়নে কতটুকু বাস্তবায়ন করতে পেরেছি। দেশের যে উন্নয়নের ধারা সূচিত হয়েছে, তা টেকসই করে আরও উন্নত জীবন যাতে আপনারা পান- আপনাদের ভোটে নির্বাচিত হতে পারলে আগামী ৫ বছরে আমরা কী কী কাজ করব সেই ব্যাখ্যা তুলে ধরেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, আজকে আপনাদের কাছে নৌকা মার্কায় ভোট চাইতে হাজির হয়েছি। এই উন্নয়নকে টেকসই করা, আপনাদের জীবনমান উন্নত করা, আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত স্মার্ট সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোলার সুযোগ চাই।
তিনি বলেন, ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত টানা ৩ মেয়াদে আওয়ামী লীগ লীগ সরকার গণতান্ত্রিক ধারা ও স্থিতিশীলতা বজায় রেখে জনকল্যাণমুখী ও সুসমন্বিত পরিকল্পনার মাধ্যমে একটি সমতা ও ন্যায়ের ভিত্তিতে গণতান্ত্রিক দেশ বিনির্মাণের পথে জাতিকে অগ্রসরমান রেখেছে। ইতোমধ্যে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণের একটি টেকসই ভিত্তি স্থাপিত হয়েছে। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছে। ২০২৬ সাল থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা শুরু হবে। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ে তোলার যে সুযোগ পাওয়া যাবে তা কার্যকর করা এবং যে চ্যালেঞ্জগুলো রয়েছে; তা একমাত্র আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেই মোকাবিলা করতে পারবে। বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছি। সম্ভাবনাময় বিশাল তরুণ সমাজ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের মূল কারিগর। তারুণ্যের শক্তি বাংলাদেশের অগ্রগতি।
শেখ হাসিনা বলেন, আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। গণতন্ত্র ও আইনের শাসনে বিশ্বাসী রাজনৈতিক দলগুলো এবং প্রতিষ্ঠানের প্রতি অনুরোধ, সাংবিধানিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হয় এমন কোন উদ্ভট ধারণাকে প্রশ্রয় দেবেন না এবং ইন্ধন জোগাবেন না।
তিনি বলেন, আমরা একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রত্যাশা করছি। এই প্রথম বাংলাদেশে আইনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনকে আর্থিকভাবে স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা নির্বাচন কমিশনের অধীনে ন্যস্ত করা হয়েছে। সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে নির্বাচন কমিশন নির্বাচন পরিচালনা করছে। আমাদের সরকার সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। গণমানুষের দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে, দেশের মানুষের অর্থ-সামাজিক উন্নতি নিশ্চিত করে। জনগণের খাদ্য, নিরাপত্তা, চিকিৎসা, বাসস্থান, শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও ব্যাপক হারে অবকাঠামো উন্নয়ন হয়।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রেখে যাওয়া দেশের পররাষ্ট্রনীতির প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা শান্তিতে বিশ্বাস করি, সংঘাতে নয়। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়, এই নীতিতেই আমরা বিশ্বাস করি। এই নীতি নিয়েই আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে আমরা বর্তমান যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার উপযোগী করে উন্নত করেছি।
দেশবাসীর উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আপনারা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে আপনাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন। আমি আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। এই দীর্ঘ চলার পথে যতটুকু অর্জন, তার সবটুকুই আপনাদের অবদান। আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া এ অর্জন করা সম্ভব হতো না। চলার পথে যদি কোনো ভুল-ভ্রান্তি করে থাকি, তাহলে আপনারা ক্ষমাসুন্দর চোখে দেখবেন- এটাই আমার আবেদন। আবার সরকার গঠন করতে পারলে, ভুলগুলো শোধরাবার সুযোগ পাব। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ‘নৌকা’ মার্কায় ভোট দিয়ে আমাকে আপনাদের সেবা করার সুযোগ দিন।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজীবন সংগ্রাম করেছেন এদেশের মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য, দুখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাবার জন্য। আমি বাবা, মা, ভাই সব হারিয়ে দুঃখ-বেদনাকে সম্বল করে আপনাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। আপনাদের মাঝে খুঁজে পেয়েছি- আমার বাবার স্নেহ, মায়ের মমতা এবং ভাইয়ের মায়া। আপনারাই আমার পরিবার, আমার ওপর ভরসা রাখুন। আসুন, সবাই মিলে এই বাংলাদেশকে স্মার্ট সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের স্বপ্ন পূরণ করি।
কবি সুকান্তের ভাষায় বলতে চাই-
‘আমাদের ডাক এসেছে
এবার পথে চলতে হবে।
ডাক এসেছে চলতে হবে আজ সকালে
বিশ্বপথে সবার সঙ্গে সমান তালে।
পিছন পানে তাকাস নি আজ, চল সম্মুখে
জয়ের বাণী নূতন প্রাতে বল ও-মুখে।’
চলারপথে রিপোর্ট :
পটুয়াখালীর গলাচিপায় বজ্রপাতে হাবিয়া বেগম (৫২) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। আজ ৭ অক্টোবর শনিবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নে এই ঘটনা ঘটে।
বাড়ির পাশে পুকুর পারে বৃষ্টির সময় গাছের নিচে আশ্রয় নিতে গিয়ে সেখানেই বজ্রপাতে তার মৃত্যু হয়। নিহত হাবিয়া বেগম ওই ইউনিয়নের উত্তর চরখালী গ্রামের মো. রুহুল আমিন ফকিরের স্ত্রী। তার দুই ছেলে রয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ শোনিত কুমার গায়েণ বলেন, শনিবার দুপুরে বৃষ্টির মধ্যে পুকুর পারে গিয়েছিলেন হাবিয়া বেগম। হঠাৎ বৃষ্টির প্রকোপ বেড়ে গেলে গাছের নিচে আশ্রয় নেন তিনি। সেখানেই বজ্রপাতে তার মৃত্যু হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
৮ মে বিশ্ব রেডক্রস-রেড ক্রিসেন্ট দিবস। যুদ্ধে কাতর দুস্থদের সেবার উদ্দেশ্যে ১৮৬৩ সালে যাত্রা শুরু হয়েছিল রেডক্রস বা রেড ক্রিসেন্টের। এর প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন সুইজারল্যান্ডের নাগরিক হেনরি ডুনান্ট। ১৮২৮ সালের আজকের এই দিনে জন্মগ্রহণ করেছিলেন তিনি। মূলত ১৯১০ সালে তাঁর মৃত্যুর পর তাঁর জন্মদিন ৮ মে তারিখে ‘বিশ্ব রেডক্রস-রেড ক্রিসেন্ট’ দিবস হিসেবে পালন করা শুরু হয়। এর সদর দপ্তর সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অবস্থিত। রেডক্রস ও রেড ক্রিসেন্টের কিছু মূলনীতি রয়েছে।
বর্তমানে আন্তর্জাতিক রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট আন্দোলন বিশ্বব্যাপী প্রায় ৯৭ মিলিয়ন স্বেচ্ছাসেবী, সদস্য ও কর্মী নিয়ে গঠিত। বাংলাদেশে রেডক্রসের যাত্রা শুরু হয় ১৯৭৫ সালে। সে সময় ১৫টি স্কুলে জুনিয়র রেড ক্রস কার্যক্রম শুরু হয়। পরে ১৯৭৮ সালে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে যুব রেড ক্রস কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বাইরেও এর সূচনা ঘটে। বর্তমানে বাংলাদেশের ৬৪টি জেলা ও ৪টি সিটি করপোরেশনে রেড ক্রস-রেড ক্রিসেন্টের মোট ৬৮টি ইউনিট রয়েছে, যারা দেশের যেকোনো প্রয়োজনে সেবা দিতে প্রস্তুত। তাদের সাতটি মূলনীতির মধ্যে রয়েছে মানবতা, পক্ষপাতহীনতা, নিরপেক্ষতা, স্বাধীনতা, স্বেচ্ছামূলক সেবা, একতা ও সর্বজনীনতা।
অনলাইন ডেস্ক :
আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারামুক্তি দিবস আজ। দীর্ঘ ১১ মাস কারাভোগের পর ২০০৮ সালের ১১ জুন সংসদ ভবন চত্বরে স্থাপিত বিশেষ কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি। সেনা সমর্থিত ১/১১-এর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই গ্রেফতার হয়েছিলেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
কারাগারের থাকা অবস্থায় শেখ হাসিনা অসুস্থ হয়ে পড়লে বিদেশে চিকিৎসার জন্য তাকে মুক্তি দেয়ার দাবি ওঠে বিভিন্ন মহল থেকে। আওয়ামী লীগসহ অন্যান্য অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের ক্রমাগত চাপ, আপসহীন মনোভাব ও অনড় দাবির মুখে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার শেখ হাসিনাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। এরপর থেকে দিনটি শেখ হাসিনার কারামুক্তি দিবস হিসেবে পালন করে আসছে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো।
মুক্তি পেয়েই চিকিৎসার উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্রে যান তিনি। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায়ই তার অস্থায়ী জামিনের মেয়াদ কয়েক দফা বাড়ানো হয়। ২০০৮ সালের ৬ নভেম্বর দেশে ফিরলে স্থায়ী জামিন দেওয়া হয় তাকে।
এরপর ২০০৮ সালের ৬ নভেম্বর দেশে ফিরলে স্থায়ী জামিন দেওয়া হয় তাকে। একই বছর ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয় লাভ করে। ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে গঠিত হয় মহাজোট সরকার।
সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে টানা চতুর্থ মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।