চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পৃথক স্থানে বজ্রপাতে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে।
আজ ৮ জুন বৃহস্পতিবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ও আশুগঞ্জ উপজেলায় এ ঘটনা ঘটে।
বজ্রপাতে মৃতরা হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মাছিহাতা ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামের মৃত জালু মিয়ার ছেলে শাহজাহান মিয়া (৫০) ও আশুগঞ্জ উপজেলার চরচারতলা গ্রামের নাসির মিয়ার ছেলে হৃদয় মিয়া (২২)।
এছাড়া একইদিন মাছিহাতা ইউনিয়নের খেওয়াই গ্রামে বজ্রপাতে তিনটি গরু মারা গেছে।
মাছিহাতা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান আল-আমিনুল হক পাভেল জানান, বিকেলে বৃষ্টি শুরু হলে শাহজাহান মাঠে গরু আনতে যান। এ সময় বজ্রপাতে তার মৃত্যু হয়। পাশাপাশি একই সময়ে বজ্রপাতে খেওয়াই গ্রামে কৃষক মনা ভূঁইয়ার তিনটি গরু মাঠে ঘাস খাওয়া অবস্থায় মারা গেছে।
তিনি জানান, নিহতের পরিবারকে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৫ হাজার টাকা সহায়তা করা হয়েছে।
আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাহিদ আহমেদ জানান, হৃদয় প্রতিদিন মেঘনার চরে চরচারতলা গ্রামের জসীম উদ্দিনের মহিষের পাল দেখভাল করতেন। বিকেলের দিকে হঠাৎ আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। এর পরই মুসলধারে বৃষ্টির সঙ্গে শুরু হয় প্রচণ্ড মেঘের গর্জন। এ সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই হৃদয়ের মৃত্যু হয় এবং উজ্জ্বল নামে এক ব্যক্তি গুরুতর আহত হন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল–আশুগঞ্জ) আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনী লড়াইয়ে আছেন জামাতা ও শ্বশুর। তবে এ আসনে ভোটারদের মধ্যে আলোচনায় জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থী রেজাউল ইসলাম ভূঞা ও আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী মঈন উদ্দিনের নাম বেশি চাউর হচ্ছে।
এ আসনে জাতীয় পার্টিকে ছাড় দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। ফলে এখানে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী নেই। তবে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ সাতজন প্রার্থী আছেন। এর মধ্যে জাপার প্রার্থী রেজাউল ইসলাম ভূঞা ও তাঁর শ্বশুর স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক মৃধার (ঈগল) নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতার বিষয়টি নজর কাড়ছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তাঁরা আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন।
এখানকার প্রার্থীরা হলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মঈন উদ্দিন (কলার ছড়ি), জাতীয় পার্টির প্রার্থী দলটির অতিরিক্ত মহাসচিব ও প্রেসিডিয়াম সদস্য রেজাউল ইসলাম ভূঞা, তাঁর শ্বশুর জাপার দুবারের সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির (রওশন) সহসভাপতি জিয়াউল হক মৃধা (ঈগল প্রতীক), সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত মুফতি ফজলুল হক আমিনীর ছেলে ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মো. আবুল হাসানাত আমিনী ও বিএনপির দলছুট সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার ছেলে তৃণমূল বিএনপির মাইনুল হাসান, বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশনের ছৈয়দ জাফরুল কদ্দুছ ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টির রাজ্জাক হোসেন। সমঝোতার কারণে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য শাহজাহান আলমকে সরে দাঁড়াতে হয়েছে।
নেতা-কর্মীরা বলছেন, রেজাউল ইসলাম ভূঞা ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার কোড্ডা গ্রামের বাসিন্দা। একই আসনে তাঁর শ্বশুর সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধা স্বতন্ত্র প্রার্থী। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও জামাই-শ্বশুরের দ্বন্দ্ব ছিল আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। তখন তাঁরা একে অপরের সঙ্গে প্রকাশ্যে বিরোধে জড়ান। রেজাউল তখন মহাজোটের প্রার্থী ছিলেন। সে সময় ভোটের দুই দিন আগে নির্বাচন থেকে সরে যেতে বাধ্য হন রেজাউল। তবে শ্বশুর জিয়াউল হক মৃধা সিংহ প্রতীক নিয়ে শেষ পর্যন্ত স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাঠে ছিলেন। গত ৫ নভেম্বরের উপনির্বাচনেও জিয়াউল হক অংশ নিয়েছিলেন।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য প্রয়াত উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার সঙ্গে বর্তমানে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মঈন উদ্দিনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়। নির্বাচনে আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া বিএনপির প্রার্থী হয়ে ৮৩ হাজার ৯৯৭ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছিলেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মো. মঈন উদ্দিন পেয়েছিলেন ৭৫ হাজার ৪১৯ ভোট। ওই নির্বাচনে জিয়াউল হক মৃধা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সিংহ প্রতীকে ৩৯ হাজার ভোট পেয়ে তৃতীয় হন। কোনো কোনো নেতা-কর্মীর ভাষ্য, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল ও জনপ্রিয়তার কারণে সবার চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন মঈন উদ্দিন।
রেজাউল ইসলাম ভূঞা বলেন, ‘ক্ষমতাসীন দল সারা দেশে ২৬টি আসন জাতীয় পার্টিকে ছাড় দিয়েছে, যার একটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন। আশা করি, আওয়ামী লীগের সভাপতির আদেশ এখানে পালিত হবে। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা তাঁকে হতাশ করবেন না।’
জাপার সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধা বলেন, ‘কে নির্বাচন করল, সেটা দেখার বিষয় নয়। আমি এ জনপদে দুবার সংসদ সদস্য ছিলাম। আমার অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে নির্বাচন করব।’
স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মঈন উদ্দিন বলেন, ‘নির্বাচন থেকে সরে যেতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ওপর কোনো চাপ নেই।’
চলারপথে রিপোর্ট :
ভারত থেকে আমদানি করা প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের এক কোটি চার লাখ টাকার কাঁচামালসহ দুই কাভার্ডভ্যান নিয়ে পালিয়েছেন চালক। এ ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ থানায় মামলা হয়েছে।
৩ নভেম্বর শুক্রবার কোম্পানির লিগ্যাল অফিসার জুলফিকার হোসেন খান বাদী হয়ে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে মামলাটি করেন।
মামলার বিবাদীরা হলেন, মাগুরা সদরের বুজরুক শ্রীকুন্ডি গ্রামের ওয়াহিদুল মোল্লার ছেলে কাভার্ডভ্যান চালক ইয়াছিন হোসেন (৩৩), একই এলাকার আবছার মোল্লার ছেলে হেলপার জিসান হোসেন (২৫), আনছার বিশ্বাসের ছেলে মিরাজ মিয়া (৩৯), অহিদুল মোল্লার ছেলে হেলপার মো. হৃদয় (১৯) এবং একই জেলার মহম্মদপুর থানার বিনোদপুর গ্রামের আবুল মোল্লার ছেলে কাভার্ডভ্যান চালক মো. তুহিন (৩৫)।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ১৪ অক্টোবর ভারত থেকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রাণ-আরএফএল কোম্পানির বৈদ্যুতিক মালামাল তৈরির কাঁচামাল (অ্যালুমিনিয়াম ইনগট) আমদানি করা হয়। মালামাল নিয়ে ৩০ অক্টোবর রাতে হবিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে কারখানায় পৌঁছানোর উদ্দেশ্যে রওয়ানা করে কোম্পানির নিজস্ব দুটি কাভার্ডভ্যান। পরদিন মালামাল নিয়ে হবিগঞ্জে পৌঁছানোর কথা থাকলেও কাভার্ডভ্যান দুটি যায়নি। এ অবস্থায় ১ নভেম্বর বুধবার রাতে কোম্পানির নিজস্ব কাভার্ডভ্যানগুলোতে সংযোজন থাকা জিপিএস ট্র্যাক করে দেখা যায়, কাভার্ডভ্যান দুটি মেঘনা নদীর সেতু অতিক্রম করে আশুগঞ্জের দিকে যাচ্ছে। পরবর্তী সময়ে একাধিকবার ট্র্যাকিং করলে কাভার্ডভ্যান দুটি আশুগঞ্জে অবস্থান দেখায়।
২ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে পুনরায় ট্র্যাকিং করলে কাভার্ডভ্যানের জিপিএস এবং চালক-হেলপারের ফোন বন্ধ দেখায়। এ অবস্থায় বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও এক কোটি চার লাখ টাকার আমদানি করা কাঁচামালসহ কাভার্ডভ্যান দুটির সন্ধান মেলেনি।
আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাহিদ আহমদ বলেন, মামলার পরপরই পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। মালামালসহ কাভার্ডভ্যান দুটি উদ্ধার ও আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জে মহাসড়কের পাশে পার্কিং করা একটি যাত্রীবাহি অটোরিক্সাকে একটি কাভার্ডভ্যান চাপা দিলে শিশুসহ ৪ জন নিহত এবং ৩ জন আহত হন। আজ ২১ আগস্ট সোমবার দুপুরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আশুগঞ্জ উপজেলার সোহাগপুর বাসস্ট্যান্ডে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন, সরাইল উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নের বড়ইবাড়ি গ্রামের মোঃ সোহেল মিয়া (২৭), একই গ্রামের নাজমুল মিয়ার ছেলে মোঃ জিলানী (৮), একই ইউনিয়নের শাখাইতি গ্রামের জাফর আলীর ছেলে মোঃ আসকর মিয়া (৬০) ও কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা উপজেলার মির্জাপুর গ্রামের আবদুর রশীদের ছেলে মোঃ উজ্জ্বল মিয়া (৩৭)।
আহতরা হলেন, নিহত জিলানীর বাবা নাজমুল মিয়া, মা শাহানা বেগম ও ছোট বোন তাইরিন (দেড় বছর)। আহতদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।
হাইওয়ে পুলিশ জানায়, দুপুরে ঢাকাগামী একটি কাভার্ডভ্যান আশুগঞ্জ উপজেলার সোহাগপুর বাসস্ট্যান্ড পৌছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সোহাগপুর বাসস্ট্যান্ডে পার্কিং করা একটি সিএনজি চালিত অটোরিক্সাকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই অটোরিক্সাযাত্রী সোহেল মিয়া ও জিলানী নিহত এবং আসকর মিয়া, উজ্জ্বল মিয়া, নাজমুল মিয়া, শাহানা বেগম ও শিশু তাইরিন আহত হন।
খবর পেয়ে হাইওয়ে থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে হতাহতের উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রেরণ করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আসকর মিয়া ও উজ্জ্বল মারা যায়।
এ ব্যাপারে খাটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকুল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, আশুগঞ্জে কাভার্ড ভ্যানের চাপায় শিশুসহ ৪জন নিহত এবং ৩জন আহত হয়েছে। আমরা নিহতদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে প্রেরণ করেছি। এ ঘটনায় যাথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। ঘটনার পর পরই কাভার্ড ভ্যানের চালক ও হেলপার পালিয়ে গেছে।