অনলাইন ডেস্ক :
যানবাহন চলাচল চালু হওয়ার পর থেকে চলতি মাসের ৭ জুন পর্যন্ত পদ্মা সেতুতে ৭৫৮ কোটি ৮ লাখ ৭৫০ টাকার টোল আদায় হয়েছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
আজ ১৪ জুন বুধবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেনের এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এ তথ্য জানান।
এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন। এ দিন প্রশ্নোত্তর টেবিলে উত্থাপিত হয়।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী ২০২২ সালের ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন। ওই মাসের ২৬ জুন থেকে যান চলাচলের জন্য সেতুটি উন্মুক্ত করার পরে চলতি মাসের ৭ তারিখ পর্যন্ত ৭৫৮ কোটি ৮ লাখ ৭৫০ টাকার টোল আদায় করা হয়েছে। এর মধ্যে গত বছরের জুলাই মাসে সর্বোচ্চ ৭৮ কোটি ৫০ লাখ টাকার টোল আদায় হয়েছে। গত এপ্রিল মাসে ৭১ কোটি ১৩ লাখ টাকার টোল আদায় হয়েছে।
বিরোধী দল জাতীয় পার্টির আরেক সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজীর প্রশ্নের উত্তরে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, দেশের প্রথম বিআরটি ব্যবস্থা দ্রুত চালু করার জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে। গত ৩১ মে পর্যন্ত পূর্ত কাজের অগ্রগতি ৮৯ দশমিক ৭৭ শতাংশ। আগামী অক্টোবর মাসের মধ্যে বিআরটি সিস্টেমের বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরুর পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক :
নিজের পায়ে ভর করে হাঁটতে পারতেন না। কখনো মা-বাবা ও বন্ধুদের কোলে চড়ে, কখনো হুইলচেয়ার বা স্টিলের লাঠিতে ভর করে পড়াশোনা শেষ করেন মো. ইমতিয়াজ কবির (২৪)। এরপর একটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে সফটওয়্যার প্রকৌশলী হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন। কিন্তু ইমতিয়াজ আর অফিসে যাবেন না। কখনো মায়ের কোলে চড়ে বসবেন না। প্রাণ খুলে হাসবেন না। আজ ৮ ফেব্রুয়ারি বেলা তিনটায় চট্টগ্রাম নগরের এভারকেয়ার হাসপাতালে তিনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেছেন।
মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন ইমতিয়াজ কবিরের ফুফাতো ভাই মোহাম্মদ মাহমুদুর রহমান। তিনি বলেন, ইমতিয়াজ নানা রোগে আক্রান্ত ছিলেন। সর্বশেষ ফুসফুসের রোগে ভুগছিলেন। নিশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। এসব রোগ নিয়ে তাঁকে ৫ ফেব্রুয়ারি এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। আর আজ মৃত্যু হয়েছে। মাহমুদুর রহমান জানান, ইমতিয়াজের মৃত্যুর পর তাঁর মা–বাবার আহাজারি থামছেই না। একমাত্র বোন অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। ভাইকে হারিয়ে বোনটিও দিশাহারা। এখন ইমতিয়াজের ঘরজুড়ে কেবলই স্মৃতি। পড়ে আছে জামা, জুতা ও বইপত্র।
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করেছিলেন ইমতিয়াজ। গত জুন মাসে প্রতিবন্ধকতা জয়ী ইমতিয়াজ তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক জাপানি তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি কোডল্যাব এফজেডসির ঢাকা অফিসে সফটওয়্যার প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করছিলেন ইমতিয়াজ। গত বছরের ১ আগস্ট জাতীয় দৈনিকে ‘বাবা ও বন্ধুদের কোলে চড়ে পড়াশোনা করা ইমতিয়াজ এখন পেশাদার সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার’ শিরোনামে ইমতিয়াজকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল।
ইমতিয়াজদের বাড়ি নড়াইলে। তবে তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রামে বসবাস করে আসছেন। ইমতিয়াজের ঢাকায় চাকরি হওয়ার পর তাঁর সবকিছু গুছিয়ে দিতেই মা চট্টগ্রাম থেকে রাজধানীতে গিয়েছিলেন। তাঁর বাবার নাম ইনামুল কবীর। ইমতিয়াজের ফুফাতো ভাই মাহমুদুর রহমান জানান, দুই মাস ধরে ইমতিয়াজ চট্টগ্রামে থাকছিলেন। অসুস্থতার কারণে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম চলে এসেছিলেন তিনি। এখন ইমতিয়াজের মরদেহ নড়াইলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আগামীকাল শুক্রবার সকালে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
ইয়াসমিন নাহার ২০১৩ সাল থেকে চট্টগ্রামের কৃষ্ণকুমারী সিটি করপোরেশন বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। তবে তাঁর চাকরি এখনো স্থায়ী হয়নি। তাঁর স্বামী ইনামুল একসময় পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। তবে শারীরিক অসুস্থতার কারণে ২০১৮ সালের পর তাঁর পক্ষে পূর্ণকালীন এই চাকরি আর চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি। বর্তমানে তিনি খণ্ডকালীন একটি কাজ করছেন। ছেলে ইমতিয়াজ চাকরি পাওয়ায় পরিবারটি নতুন করে স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিল। কিন্তু সেই স্বপ্ন আর বাস্তব হলো না।
জন্মগতভাবেই ইমতিয়াজের ডান পা বাঁকা ছিল। পরে দেশে-বিদেশে তাঁর চিকিৎসা করানো হয়। পায়ে দেওয়া হয় প্লাস্টার। প্লাস্টার খোলার সময় তাঁর পা ভেঙে যায়। পরে তাঁর দুই পায়ে সমস্যা দেখা দেয়। মেরুদণ্ডের হাড়েও সমস্যা দেখা দেয়। এইচএসসি পরীক্ষার আগে একবার তাঁর শরীরের পুরো বাঁ পাশ অবশ হয়ে গিয়েছিল। ইমতিয়াজ সোজা হয়ে বসতে পারেন না। হাতেও পুরোপুরি শক্তি পান না।
মা ইয়াসমিন বলেছিলেন, একপর্যায়ে ছেলের শারীরিক সীমাবদ্ধতার বিষয়টি মেনে নেন। মনস্থির করেন, প্রতিবন্ধকতার কারণে ছেলে যাতে কোথাও পিছিয়ে না পড়ে। ছেলেকে ভালো স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়িয়েছেন। নিজের শারীরিক কষ্ট ভুলে পড়াশোনার জন্য ছেলেকে কোলে নিয়ে পাঁচতলা পর্যন্ত উঠেছেন। আর ছেলের মধ্যেও জীবনে ভালো কিছু করার প্রচণ্ড ইচ্ছাশক্তি সব সময় কাজ করছিল।
অনলাইন ডেস্ক :
ছাত্রলীগের দুই কেন্দ্রীয় নেতা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নেতাকে থানায় মারধরের ঘটনা নিয়ে মুখ খুলেছেন রাষ্ট্রপতির সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) আজিজুল হকের স্ত্রী পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) সানজিদা আফরিন। আজ ১২ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার আলাপকালে তিনি বলেন, ‘সোস্যাল মিডিয়ায় আমি বুলিংয়ের শিকার। অনেকে নোংরা মানসিকতার পরিচয় দিচ্ছে। একটি ছবি ছড়িয়ে দিয়ে হারুন স্যারের সঙ্গে আমার বিয়ের কল্পকাহিনী প্রচার করছে। যে কেউ ভালোভাবে খেয়াল করলেই বুঝবে- ওই ছবির নারী আমি নই। এর আগে অনেক ইস্যুতে অনেকেই বুলিংয়ের শিকার হয়েছেন। এবার আমি এর শিকার।’
সানজিদা আরও বলেন, ‘হাসপাতালে কী ঘটেছে সে ব্যাপারে তদন্ত হচ্ছে। তদন্তে পুরো বিষয় বেরিয়ে আসবে। ঘটনার দিন হাসপাতালে আমার স্বামী পৌঁছার পর আমাকে কোনো কিছু নিয়ে প্রশ্ন করেননি। আমার স্বামী প্রথম এডিসি হারুন স্যারের ওপর চড়াও হন।’
এডিসি হারুনের সঙ্গে ব্যক্তিগত কোনো সম্পর্ক আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হারুন স্যারের সঙ্গে আমার কোনো ব্যক্তিগত সম্পর্ক নেই। তিনি শুধুমাত্র আমার কলিগ। তবে হারুন স্যারের সহযোগিতা নিয়েছিলাম। তিনি আমাকে ডাক্তারের সিরিয়ালের ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। এ ছাড়া আর কিছুই জানি না।’
সানজিদা আরো বলেন, ‘ইনটেনশন (উদ্দেশ্য) দেখে মনে হয়েছে, তারা আমাদের দু’জনকে পাশাপাশি দাঁড় করিয়ে একটা ভিডিও করতে চাচ্ছে। পরবর্তীতে তারা সেটি ইউজ (ব্যবহার) করবেন, একটি অসৎ উদ্দেশ্যের জন্য হতে পারে।’
পরিকল্পিতভাবে আপনার স্বামী এই ঘটনা ঘটিয়েছেন কি-না জানতে চাইলে সানজিদা বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে এই ঘটনা ঘটিয়েছে কি-না বলতে পারব না। তবে তিনি খুব মারমুখী ছিলেন।’
সানজিদা ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ক্রাইম বিভাগের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) হিসেবে কর্মরত এবং ৩১তম বিসিএস কর্মকর্তা।
সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সানজিদা বলেন, ‘বেশ কিছুদিন আমার কার্ডিয়াক সমস্যা হচ্ছিল। ২০১৯ সাল থেকে আমি হাইপার টেনশনের মেডিসিন খাচ্ছি। চার-পাঁচ মাস ধরে সমস্যাটা বেড়ে যায়। শনিবার ব্যথা বেড়ে যায়। সেদিন ফ্রি সময় থাকায় ডাক্তার দেখাতে চাই। আমি যে ডাক্তারকে দেখাই, তিনি দেশের বাইরে থাকায় ইব্রাহীম কার্ডিয়াক হাসপাতালে এডিসি হারুন স্যারকে একটি সিরিয়াল করে দিতে বলি। তিনি ওসির মাধ্যমে সিরিয়াল ম্যানেজ করে দেন।’
ডিএমপির এই কর্মকর্তা বলেন, ‘সন্ধ্যায় ৬টায় আমি সেখানে যাওয়ার পরে দেখি, যেই ডাক্তারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেওয়া হয়েছে তিনি একটি কনফারেন্সে আছেন। বিষয়টি হারুন স্যারকে জানালে, তিনি আশপাশে থাকায় হাসপাতালে আসেন। তিনি এসে একজন ডাক্তারকে ম্যানেজ করেন। তাকে দেখানোর পর বেশ কিছু টেস্ট দেন।’
ঘটনার সময় ইটিটি রুমে ছিলেন দাবি করে সানজিদা বলেন, “এ ঘটনার সময় আমি যে রুমে ইটিটি করানো হয় সেই রুমে ছিলাম। ইটিটি করানোর ১৫-২০ মিনিট পর আমি বাইরে একটা হট্টগোলের শব্দ শুনি। প্রথম যে সাউন্ডটা (শব্দটা) কানে আসে যে স্যারই (এডিসি হারুন) চিৎকার করে বলছেন, ‘ভাই, আপনি আমার গায়ে হাত তুললেন কেন? আপনি তো আমার গায়ে হাত তুলতে পারেন না’।”
তিনি আরো বলেন, ‘আমার প্রথমে ধারণা হয়েছিল যে, হয়তো অন্য কারো সঙ্গে ঝামেলা। কিছুক্ষণ পর আমি দেখতে পাই আমার হাজব্যান্ড (আজিজুল হক মামুন), উনি আসলে ওখানে কী করছিলেন, কেন গিয়েছিলেন আমি জানি না। ওনাকে টোটালি আউট অব মাইন্ড লাগছিল (মানসিকভাবে স্থির ছিলেন না) এবং খুবই উত্তেজিত ছিলেন। ওনার সঙ্গে আরো কয়েকজন ছেলে ছিল, আমি আসলে তাদের চিনি না। তারা স্যারকে (এডিসি হারুন) মারতে মারতে ইটিটি রুমে নিয়ে এলেন।’
‘তারা মূলত স্যারকে (এডিসি হারুন) মারতে মারতে, টেনে-হিঁচড়ে এই রুমে নিয়ে আসে। স্যার তাদের হাত থেকে বাঁচতে ইটিটি রুমের এক কোনায় গিয়ে দাঁড়ান’, যোগ করেন সানজিদা।
সানজিদা বলেন, “এরপর আমার হাজব্যান্ড তার সঙ্গে থাকা লোকজনকে বললেন, ‘এই ভিডিও কর।’ পরে সবাই ফোন বের করে ভিডিও করা শুরু করে। যখন তারা ভিডিও শুরু করে তখন আমি আমার হাজব্যান্ড এবং তার সঙ্গে থাকা লোকজনের সঙ্গে চিল্লাচিল্লি শুরু করি। এরপর আমি যারা ভিডিও করছে তাদের মোবাইল কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে তাদের হাতের সঙ্গে লেগে আমিও হাতে সামান্য ব্যথা পাই। তার কারণ আমি চাচ্ছিলাম না সেই অবস্থায় কেউ আমার ভিডিও করুক। আর তাছাড়া আমার হাজব্যান্ডের সঙ্গে যেসব ছেলে ছিল আমি তাদের কাউকে চিনতামও না।”
তিনি আরও বলেন, ‘ওই অবস্থায় আমার হাজবেন্ড আমার গায়ে হাত তোলে এবং স্যারকে বের করার চেষ্টা করে। তখন স্যারের কাছে বিষয়টি সেফ মনে হয়নি। এরপর স্যার কিছুক্ষণ অপেক্ষা করছিলেন। তখন হাসপাতালের সিকিউরিটির লোকজনও আসেন। এর ১০/১৫ মিনিট পর থানা ফোর্স এলে তারা সেখান থেকে বের হয়ে যায়।’
প্রসঙ্গত, শনিবার রাতে রাজধানীর শাহবাগ থানায় ছাত্রলীগের ২ কেন্দ্রীয় নেতাকে পুলিশ নির্মমভাবে পিটিয়ে আহত করে বলে অভিযোগ ওঠে। আহত ব্যক্তিরা হলেন- ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হল শাখার সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক ও শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ।
ভুক্তভোগী ও তাদের সহপাঠীদের অভিযোগ, পুলিশের রমনা বিভাগের এডিসি হারুন অর রশিদ তাদের থানার ভেতিরে নিয়ে বেড়ধক পেটান। এমনকি ছাত্রলীগ নেতা পরিচয় দেওয়ার পরও হারুনের সঙ্গে ১০-১৫ পুলিশ সদস্য মিলে তাদের পিটিয়েছেন।
সংগৃহীত
অনলাইন ডেস্ক
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগ থেকে মোবাইল চুরির সময় চার নারীকে আটক করেছেন আনসার সদস্যরা।
আজ ১৪ নভেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। ওই চার নারীকে আটক করার পর হস্তান্তর করা হয়েছে শাহবাগ থানায়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল আনসারের প্লাটুন কমান্ডার (পিসি) উজ্জ্বল ব্যাপারী বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনদের কাছ থেকে কৌশলে মোবাইল চুরি করতেন আটক চার নারী। আজ মোবাইল চুরি করার সময় এক নারীকে হাতেনাতে ধরে ফেলে আমাদের আনসার সদস্যরা। পরে ওই নারীকে জিজ্ঞাসাবাদের পর সিসি ফুটেজ দেখে আরও ৩ জনকে আমরা ধরি।
তিনি বলেন, বিষয়টি হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হককে জানানো হলে তিনি পুলিশকে জানান। পরে শাহবাগ থানায় চার নারীকে হস্তান্তর করা হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনী হত্যার ঘটনায় সঠিকভাবে দোষী নির্ণয়ে তদন্তের জন্য প্রয়োজনে ৫০ বছর সময় দিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।
আজ ১ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
একটি ধর্ষণ মামলার দ্রুত বিচারের কথা বলছেন। কিন্তু সাগর-রুনির হত্যার বিচার কেন হচ্ছে না- এমন প্রশ্নে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘দেখেন, সাগর-রুনিকে নিয়ে কথা বলবেন, আমি বুঝলাম। কিন্তু এই মামলায় যদি পুলিশ তদন্ত শেষ না করতে পারে, তাহলে জোর করে সেই তদন্ত সমাপ্ত করে একটা চূড়ান্ত প্রতিবেদন কিংবা অভিযোগপত্র দেওয়ানো কি ঠিক?’
তিনি বলেন, ‘তাদের তদন্তে যতদিন সময় লাগে সঠিকভাবে দোষী নির্ণয় করতে তাদেরকে ততটুকু সময় দিতে হবে, সেটা যদি ৫০ বছর হয়, ৫০ বছর দিতে হবে।’
তাহলে কি আমরা ৫০ বছর অপেক্ষা করবো এই রায়ের জন্য- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘এটি নিয়ম নয়, এই মামলাটি ব্যতিক্রমী। যেসব মামলায় অপরাধীকে ধরা গেছে, সেগুলোর বিচার তড়িৎ হচ্ছে। যেখানে অপরাধীকে ধরা যাচ্ছে না, তদন্ত শেষ করতে পারছেন না, অবশ্যই তাদেরকে সময় দিতে হবে।’
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক গোলাম মোস্তফা সারোয়ার ওরফে সাগর সারোয়ার ও তার স্ত্রী এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন নাহার রুনা ওরফে মেহেরুন রুনি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের বাসায় খুন হন। এই হত্যাকাণ্ডের পর রুনির ভাই নওশের আলম রোমান শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলা করেন।
সেসময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তারা বলেছিলেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই খুনিদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনা হবে। কিন্তু ৪৮ ঘণ্টা পেরিয়ে প্রায় এক যুগ হয়ে গেলেও এখনও এ মামলার বিচারই শুরু করা যায়নি। যদিও এই সাংবাদিক দম্পতি হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে বিভিন্ন সময় রাজপথে আন্দোলন করেছেন তাদের সহকর্মীরা।
চলারপথে রিপোর্ট :
ইউএনওর বোন পরিচয়ে হতদরিদ্র নারীদের প্রশিক্ষণ, চাকরিসহ নানান সরকারি অনুদান পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন নাসিমা আক্তার স্বপ্না নামে এক নারী।
এ ঘটনায় প্রতারক স্বপ্নাকে গ্রেপ্তারের দাবিতে আজ ৭ নভেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয় ঘেরাও করে স্মারকলিপি দেন ভুক্তভোগী হতদরিদ্র নারীরা।
অভিযুক্ত প্রতারক নাসিমা আক্তার স্বপ্না আদিতমারী টিএনটি পাড়ার নুর ইসলামের মেয়ে।
ভুক্তভোগীরা জানান, গ্রামীণ হতদরিদ্র বেকার নারীদের স্বাবলম্বী করার প্রতিশ্রুতিতে সেলাইসহ নানান প্রশিক্ষণ ও মাসিক ১০ হাজার করে সম্মানী দেওয়ার কথা বলে জনপ্রতি দুই/তিন হাজার করে কয়েকশ নারীর কাছ থেকে টাকা নেন নাসিমা আক্তার স্বপ্না। একই সঙ্গে তাদের মহিলা বিষয়ক, সমাজসেবা, সমবায় ও যুব উন্নয়ন দফতরের বিভিন্ন সরকারি ভাতাসহ নানান সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে চার/পাঁচ হাজার করে টাকা আদায় করেন তিনি। নাসিমা আক্তার স্বপ্না নিজেকে আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বোন পরিচয় দিয়ে গ্রামীণ নারীদের সঙ্গে প্রতারণা করে কোটি টাকার বেশি হাতিয়ে নেন।
প্রথমদিকে নিজেকে ইউএনওর বোন পরিচয় দিয়ে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে আদিতমারী মহিলা উন্নয়ন সংস্থার ব্যানার ব্যবহার করে প্রশিক্ষণ চালু করেন। যা দেখে গ্রামীণ নারীরা সত্য বলে মেনে নিয়ে তার প্রতারণার ফাঁদে পা বাড়ান। এভাবে পুরো উপজেলায় জাল বিস্তার করে কোটি টাকা হাতিয়ে নেন নাসিমা আক্তার স্বপ্না।
চার/পাঁচ মাস আগে স্থানীয়রা বিষয়টি ইউএনওকে মৌখিকভাবে জানালে তিনি মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স থেকে স্বপ্নার প্রশিক্ষণ বন্ধ করে দেন। পরে প্রতারক স্বপ্না কৌশলে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নিজ বাড়ি আদিতমারী হ্যালিপ্যাড এলাকায় স্থানান্তরিত করেন। এরই মাঝে প্রথম দফায় প্রশিক্ষণ নেওয়া নারীদের প্রশিক্ষণের তিন মাস মেয়াদ শেষ হলেও সম্মানী পাননি। ফলে সম্মানী নিয়ে নারীদের সঙ্গে কয়েক দফায় মারামারির ঘটনা ঘটে স্বপ্নার। প্রতিবাদকারী নারীদের শায়েস্তা করতে স্বপ্নার রয়েছে নিজস্ব লাঠিয়াল বাহিনী।
এতেই শেষ নয়, অনেক বেকার নারীকে সরকারি চাকরি পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে চার/পাঁচ লাখ করে টাকাও হাতিয়ে নিয়েছেন স্বপ্না। চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছে স্বপ্না সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের নিকট আত্মীয় পরিচয় দিতেন বলেও ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন।
চাকরি, সরকারি অনুদান বা প্রশিক্ষণের ভাতা না পেয়ে একপর্যায়ে ভুক্তভোগীরা তার প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও প্রতারক স্বপ্নার প্রতারণা বন্ধ না হওয়ায় ফুঁসে ওঠেন নারীরা।
প্রতারিত ও ভুক্তভোগী শত শত হতদরিদ্র নারী ৭ নভেম্বর মঙ্গলবার সকালে প্রথমে লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কে থানার গেটে মানববন্ধন করে প্রতারক স্বপ্নার গ্রেপ্তার দাবি করেন। ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন শেষে নারীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে আদিতমারী ইউএনও অফিস ঘেরাও করে দ্রুত প্রতারক স্বপ্নার গ্রেপ্তার দাবি করেন। এ সময় একই দাবিতে ইউএনওকে স্মারকলিপি দেন ভুক্তভোগীরা।
ভুক্তভোগী সাথী বেগম বলেন, প্রশিক্ষণে সম্মানী ও সরকারি অনুদান দেওয়ার কথা বলে স্বপ্না ইউএনওর বোন ও মন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় দিয়ে আমাদের কাছে টাকা নেন। ইউএনওর বোন জন্যই স্বপ্না মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে অফিস করেছিলেন। এটাই আমাদের বলে প্রতারণা করেছিলেন। ইউএনওর বোন ছাড়া সরকারি অফিসে তার প্রশিক্ষণ হত না। এটা ভেবে আমি টাকা দিয়েছি। এছাড়া অভিযোগ দিয়েও যখন তার প্রতারণা বন্ধ হয়নি। তখন আমরা ভেবেছি, হয়ত স্বপ্না ইউএনও এবং মন্ত্রীর আত্মীয় হবে।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত নাসিমা আক্তার স্বপ্নাকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রশিদা বেগম বলেন, আদিতমারী মহিলা উন্নয়ন সমিতি স্বপ্নার মায়ের। চার মাস আগে প্রতারণার বিষয়টি জানতে পেরে তার মাকে এ ব্যানার ব্যবহারে নিষেধ করা হয়। পরে তারা ব্যানার ছাড়াই এসব প্রতারণা করছে। তাদের কোনো ফান্ড বা প্রজেক্টও নেই। এটা তাদের প্রতারণা বলে মনে হয়েছে এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে।
আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিআর সারোয়ার বলেন, স্বপ্না প্রতারণা করতে আমার বোন বলে পরিচয় দিতে পারে, কিন্তু বোন তো দূরের কথা তাকে আমি চিনিও না। প্রতারণা একটি ফৌজদারি অপরাধ। তাই ভুক্তভোগীদের মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। স্মারকলিপির বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হবে।