অনলাইন ডেস্ক :
পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থানার সাবেক অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ আব্দুল্লাহ, তার স্ত্রী ফারহানা আক্তার এবং শাশুড়ি কারিমা খাতুন এর বিরুদ্ধে পিরোজপুরে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর সমন্বিত জেলা কার্যালয় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। জ্ঞাত আয় বহির্ভ‚তভাবে ১৮ কোটি ১৫ লক্ষ টাকার সম্পদ থাকায় তাদের বিরুদ্ধে আজ বৃহস্পতিবার মামলাটি দায়ের করে দুদক এর সহকারী পরিচালক মোস্তাফিজ।
মামলার প্রধান অভিযুক্ত আব্দুল্লাহ বর্তমানে ফেনী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের ক্রাইম শাখায় কর্মরত আছেন। ১৯৯১ সালে উপ-পরিদর্শক পদে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে যোগদানের পর ২০০৭ সালে পরিদর্শক পদে পদোন্নতি পান আব্দুল্লাহ। তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় কর্মরত ছিলেন।
আব্দুল্লাহ এর বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার, মাদক ও চোরাকারবারিদের সাথে সখ্যতা, মিথ্যা মামলা রেকর্ড ও অনৈতিকভাবে বিপুল পরিমান সম্পদের অর্জনের মাধ্যমে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ তদন্তের জন্য ২০২০ সালে দুদক এর বরিশাল সমন্বিত জেলা কার্যালয়কে অনুমোদন দেয়া হয়। এরপর পিরোজপুরে দুদকের কার্যালয় প্রতিষ্ঠার পর এটি পিরোজপুর কার্যালয় তদন্ত শুরু করে।
মামলার বাদী মোস্তাফিজ জানান, আব্দুল্লাহ এর নিজ নামে ঢাকায় দুইটি প্লট, স্ত্রী ফারহানার মামে দুইটি আবাসিক ফ্ল্যাট, একটি বাণিজ্যিক স্পেস এবং স্ত্রী ফারহানা এর ব্যাংক হিসাব হতে অর্থ পরিশোধ করে শাশুড়ি কারিমা খাতুনের নামে একটি আবাসিক ফ্ল্যাট কেনা হয়েছে যেগুলোর মূল্য ১৫ কোটি ৭ লক্ষ টাকার অধিক। এছাড়া ফারহানার নামে থাকা দুইটি জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে এক কোটি টাকা ম‚ল্যমানের সঞ্চয়পত্র কেনা হয়েছে। ফারহানা আরও একটি জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য আবেদনও করেছে। অভিযুক্ত এ ৩ ব্যক্তির নামে স্থাবর এবং অস্থাবর মিলিয়ে ১৮ কোটি ১৫ লক্ষ টাকার অবৈধ সম্পদের খোঁজ পেয়েছে দুদক। যার মধ্যে স্ত্রী ফারহানার নামে রেজিস্ট্রেশনকৃত ৩১ লক্ষ টাকা ম‚ল্যমানের একটি গাড়িও রয়েছে। এর মধ্য থেকে ১৮ কোটি টাকার স্থাবর সম্পদ ক্রোক ও অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধ করেছে দুদক। এছাড়া ফারহানার বিভিন্ন ব্যাংক হিসেব থেকে ২৬ কোটি ৫০ লক্ষ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করা হয়েছে বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, নির্বাচনে অংশ নিয়ে সরে যাওয়াটাও রাজনীতির জন্য সুখবর নয়। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেশের অনেক আসন থেকে জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা সরে যাচ্ছেন। নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত থাকব কিনা তা সময় বলে দেবে।
আজ ১ জানুয়ারি সোমবার দুপুরে রংপুর নগরীর কোর্ট চত্বরে গণসংযোগকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন।
জি এম কাদের বলেন, অনেক সময় অনেক প্রার্থী নির্বাচনের শেষ পর্যন্ত থাকেন না। কেউ আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়ে প্রকাশ করেন, আবার কেউ ঘোষণা করেন না। তবে পার্টির প্রার্থীদের মধ্যে আমার একটা নির্দেশনা আছে। যারা নির্বাচন করতে চান করবেন, না চাইলে সেটিও সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা তাদের রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, প্রার্থীতা প্রত্যাহার হুমকির কারণে হতে পারে, অর্থের অভাবে হতে পারে। তবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে সরে যাওয়াটা ওই আসনের ভোটাররা ভালোভাবে দেখেন না। নির্বাচন থেকে সরে গেলে, প্রার্থীরা অন্য কারো প্ররোচণায় কিংবা সমর্থনে বা আতাঁত করে অথবা ভয়ে সরে গেছে এমন একটা ম্যাসেজ যায়। যা রাজনীতির জন্য সুখবর নয়। দেশের বিভিন্ন আসন থেকে জাপার প্রার্থীরা সরে যাচ্ছেন। এই অবস্থায় শেষ পর্যন্ত জাতীয় পার্টি নির্বাচনে থাকবে কিনা সেটা সময়ে বলে দেবে। সেই পর্যন্ত অপেক্ষা করেন।
গণসংযোগে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও রংপুর সিটি মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা আলাউদ্দিন মিয়া, জেলা জাতীয় পার্টির সদস্যসচিব আব্দুর রাজ্জাক, মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসীর, কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক সম্পাদক আজমল হোসেন লেবুসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সাম্প্র্রতিক কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীরা দেশে শ্রীলঙ্কা টাইপ তাণ্ডব সৃষ্টির চেষ্টা করতে চেয়েছিল এবং তারা সরকার উৎখাতের পরিকল্পনা করেছিল।
তিনি বলেন, ‘তারা (বিশৃঙ্খলাকারীরা) তো আসলে শ্রীলঙ্কার মতো সহিংসতা এবং সরকার উৎখাতের পরিকল্পনা করেছে।”
আজ ৩১ জুলাই বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব মো. নাঈমুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, কোটা সংস্কারকে কেন্দ্র করে সাম্প্রতিক আন্দোলন মোটেও স্বাভাবিক আন্দোলন নয়, বরং এক পর্যায়ে তা প্রায় সন্ত্রাসী হামলায় পরিণত হয়।
তিনি বলেন, ‘এটা কোন সাধারণ আন্দোলন ছিল না। এটা এক পর্যায়ে প্রায় সন্ত্রাসী আক্রমণের মতো হয়ে যায়।’
এসময় প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, এ্যাম্বাসেডর-অ্যাট-লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন এবং মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাম্প্রতিক সহিংসতায় জীবন ও সম্পদহানির কথা দুঃখের সঙ্গে উল্লেখ করেন জানিয়ে তার প্রেস সচিব বলেন, এ সময় ভারতের হাই কমিশনার বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সহিংসতায় জীবন ও সম্পদহানির ঘটনায় শোক জানান।
ধারাবাহিকভাবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রম স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসাকে স্বাগত জানান প্রণয় ভার্মা।
ভারতের হাইকমিশনার বলেন, ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী হিসেবে ভারত সব সময় বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের ভিশন, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধিকে সমর্থন করে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক ভারত সফর প্রসঙ্গে প্রণয় ভার্মা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক সফল সফর অর্থবহ ফলাফল অর্জন করেছে এবং যা অতীতের অর্জনকে সুসংসহত করেছে এবং ভবিষ্যতে সহযোগিতার একটা ব্লু-প্রিন্ট সৃষ্টি করেছে।
হাইকমিশনার বলেন, দুই দেশের যে জাতীয় ডেভেলপমেন্ট ভিশন- ‘বাংলাদেশের ২০৪১ এবং ভারতের ২০৪৭’ ভিশনের ভিত্তিতে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক সহযোগিতার একটা নতুন যুগে প্রবেশ করেছে। ডিজিটাল ও গ্রিন অংশীদারিত্ব, স্যাটেলাইটের যৌথ উন্নয়ন, ব্লু ইকোনোমি, ওশানোগ্রাফি, ফিনটেকসহ নতুন নতুন ক্ষেত্রে সহযোগিতা হবে।
আঞ্চলিক কানেকটিভিটি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, চার দেশের (বাংলাদেশ, ইন্ডিয়া, নেপাল ও ভুটান) মধ্যে কানেকটিভিটি জোরালো করার জন্য আমার সব দরজা খোলা।
সূত্র : বাসস
অনলাইন ডেস্ক :
নির্বাচন কমিশনার (ইসি) বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) আহসান হাবিব খান জানিয়েছেন, সাংবাদিকদের ক্যামেরা ভাঙচুর করলেই ২ থেকে ৭ বছরের জেল হবে।
তিনি বলেন, নতুন আইন করা হয়েছে, সাংবাদিকদের ক্যামেরা কেউ ভাঙচুর করলে দুই থেকে সাত বছরের জেল হবে। সাংবাদিকদের কার্যবান্ধব ও সহযোগী হিসেবে রাখতে সব সুযোগ রয়েছে। সাংবাদিকরা স্বাধীনভাবে কাজ করবেন। যখন ভোট গণনা হবে, সেটাও ভিডিও করতে পারবেন তারা। এর চেয়ে বেশি স্বচ্ছতা কী হতে পারে! সাংবাদিক হিসেবে আপনারা সঠিক জিনিসটা প্রকাশ করবেন। এতে নির্বাচন কর্মকর্তারা সচেতন ও সতর্ক হবেন।
আজ ১৯ ডিসেম্বর মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১২টায় কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচন কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তা, গোয়েন্দা কর্মকর্তা ও প্রার্থীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) আহসান হাবিব খান।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক এহতেশাম রেজার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আহসান হাবিব খান বলেন, অংশগ্রহণমূলক, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। একজন ভোটার নির্বিঘ্নে-নির্ভয়ে বাড়ি থেকে ভোটকেন্দ্রে যাবে এবং ভোট প্রদান করবেন। সেই পরিবেশ সৃষ্টি করার দায়িত্ব আমাদের। যেখানে ঝামেলা আছে, সেগুলো সমাধান করা হবে। প্রয়োজনে সেনাবাহিনী কাজ করবে, টহল দেবে। আমরা আমাদের শ্রেষ্ঠটা দিয়ে চেষ্টা করছি, করবো। আমাদের সাফল্য অনিবার্য।
ইসি আহসান হাবিব খান আরও বলেন, সব প্রার্থীই আমাদের কাছে সমান। ভোটাররা পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন। কেউ ঝামেলা করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অসদাচরণের জন্য প্রার্থিতা বাতিল হতে পারে। নির্বাচন কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, অনিয়ম করলে ছাড় নয়। ভোটকেন্দ্রের বাইরে কেউ ঝামেলা করলে পুলিশ অ্যাকশন নেবে। বিশৃঙ্খলা করার সুযোগ নেই, সেই সুযোগ আমরা দেব না। কোথাও অনিয়ম হলে সেই কেন্দ্রের ভোট বন্ধ হবে। তদন্ত সাপেক্ষে দায়িত্বরতদের সাসপেন্ড করা হবে, অ্যাকশন নেওয়া হবে। আমাদের কাছে কোনও ছাড় নেই। আমরা জিরো টলারেন্স মন্ত্রে বিশ্বাসী।
তিনি বলেন, সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে মুঠোফোনে ও সরাসরি কথা হয়েছে। রাতের আঁধারে কেউ যদি হামলা-অগ্নিসংযোগ করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
পথ হারানো বাংলাদেশকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও সঠিক পথে নিয়ে এসেছেন বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক।
আজ ৮ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদ চত্বরে শিক্ষার্থীদের মেধাবৃত্তি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করার পর দেশকে একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার অনেক চেষ্টা করা হয়েছে। যেসব রাজাকার, আলবদররা মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করেছে, মা-বোনদের সম্ভ্রম নষ্ট করেছে তারাই আবার বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়েছে। পাকিস্তান বাহিনীর সঙ্গে সম্পর্ক রাখার পরেও তারা ক্ষমতায় এসে দাপটের সঙ্গে দেশকে লুণ্ঠন করেছে। তারা ইতিহাস বিকৃত করে, বঙ্গবন্ধুর সঠিক জায়গা দিতে চায়নি।
তিনি বলেন, আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও এই দেশকে সঠিক পথে নিয়ে এসেছেন। এই পথ ধরেই তিনি বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করেছেন।
অনুষ্ঠানে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আল মামুন সরকারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর আসনের সংসদ সদস্য র,আ,ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম, পুলিশ সুপার মো. শাখাওয়াত হোসেন, পৌর মেয়র মিসেস নায়ার কবির। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এম.এম মাহমুদুর রহমান।
পরে জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে জেলার ছয় উপজেলায় ৩৩০ জন এসএসসি ও এইচএসসি শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২৬ লাখ ৭৬ হাজার টাকা এবং বাক ও শারীরিক প্রতিবন্ধীদের মধ্যে এক লাখ ১২ হাজার টাকা আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনার নদীর পানি সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে ৭ সে.মি. বৃদ্ধি পেয়েছে। পানি বাড়ার সাথে সাথে যমুনা নদীর তীরবর্তী এলাকায় ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। প্রতিদিন ভাঙনে বিলীন হচ্ছে বসতভিটা-ফসলী জমি-গাছপালা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বহু স্থাপনা। এতে নিঃস্ব হয়ে পড়ছে ভাঙনকবলিতরা।
তাদের অভিযোগ, ভাঙনরোধে পাউবো যেমন ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না তেমনি ভাঙনের শিকার মানুষগুলো খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করলেও কেউ খোঁজ নিচ্ছে না। ভাঙনের শঙ্কায় নির্ঘুম রাত কাটছে নদী তীরবর্তী মানুষের। অন্যদিকে, পানি বাড়ায় চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে শুরু করেছে।
জানা যায়, গত এক সপ্তাহ যাবত যমুনা নদীর পানি পানি বাড়ছে। পানি বাড়ার সাথে সাথে যমুনার অরক্ষিত তীরবর্তী বিস্তৃর্ন এলাকায় ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। বর্তমানে শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরী, জালালপুর ইউনিয়ন, এনায়েতপুরের ব্রাহ্মণগ্রাম, চৌহালীর খাসপুকুরিয়া ইউপির ভুতের মোড়, বাঘুটিয়া, ওমারপুর, বেলকুচি এবং কাজিপুর উপজেলার নিশ্চিন্তপুর চরে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন ভাঙনে বসতবাড়ী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ফসলি জমি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ভাঙন আতঙ্কে নদীর তীরবর্তী মানুষ নির্ঘুম রাত পার করছে।
আর গত দেড়মাসে এসব অঞ্চলের প্রায় ৩ সহস্রাধিক বসতভিটা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিলীন হয়ে গেছে।
শাহজাদপুরের পাঁচিল গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম, রহিমা খাতুন, শরিফুল ইসলাম ও শুকুর ফকির জানান, দুদিন আগেও বসতভিটা ছিল। হঠাৎ প্রবল ঘুর্নাবর্তের কারণে বসতভিটাসহ আসবাবপত্র সব কিছু নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। কোনরকম ছেলে-মেয়ে নিয়ে রক্ষা পেয়েছি। বর্তমানে যাবার কোনো জায়গা না থাকায় খোলা আকাশের নীচে মানবেতর জীবনযাপন করছি। বসতঘর তোলার জায়গা না থাকায় ঘরগুলো ওয়াপদা বাঁধসহ বিভিন্ন স্থানে স্তুপ করে রেখেছে। ঝড় বৃষ্টি ও রোদে পুড়ে খেয়ে না খেয়ে আমাদের জীবন পার করছি। এতো কস্টে থাকলেও কেউ আমাদের খোঁজ নিতে আসেনি।
চৌহালীর বাসিন্দা মনিরুল ইসলাম জানান, ভাঙনে ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে। এক ইঞ্চি জায়গাও নেই। এখন একেবারে নিঃস্ব অবস্থায় পড়ে গেছি। ভবিষ্যতে কিভাবে চলবে সে চিন্তায় রাতে ঘুম হয় না। সরকার বা জনপ্রতি ও প্রশাসন কেউ আমাদের একটু সহযোগিতা করছে না। স্থানীয়দের অভিযোগ, সরকার নদী তীর রক্ষায় সাড়ে ৬শ কোটি টাকা ও চৌহালী রক্ষায় প্রায় ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিলেও পাউবো ও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ না করায় তাদের গাফিলতির কারণে নদী ভাঙছে।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রনজিত কুমার সরকার জানান, যমুনা পানি বাড়ায় ভাঙ্গনও বাড়ছে। বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ভাঙন শুরু হয়েছে। এতো বড় এরিয়ায় ভাঙনরোধে ব্যবস্থা গ্রহণের সামর্থ্য পাউবোর নেই। এরপরেও যেখানে বেশি ভাঙছে সেখানে জিওব্যাগ ফেলে ভাঙন নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।