অনলাইন ডেস্ক :
দিনের শুরুটা ভালো না হলেও পরবর্তীতে বোলার ও ব্যাটারদের দুর্দান্ত নৈপুন্যে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে ৯ উইকেট হাতে নিয়ে ৩৭০ রানের বড় ব্যবধানে এগিয়ে থেকে চালকের আসনে বসে গেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ।
আজ ১৫ জুন বৃহস্পিতবার সকালে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৩৮২ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। এরপর আফগানিস্তানকে প্রথম ইনিংসে ১৪৬ রানে গুটিয়ে দেয় বাংলাদেশের বোলাররা। এতে প্রথম ইনিংস থেকে টাইগাররা ২৩৬ রানের লিড পেলে ফলো-অনে পড়ে আফগানিস্তান। কিন্তু আফগানিস্তানকে ফলো-অন না করিয়ে ম্যাচের তৃতীয় ইনিংসে দ্বিতীয়বারের মত ব্যাট হাতে নেমে দ্বিতীয় দিন শেষে ১ উইকেটে ১৩৪ রান করে বড় লিড দাঁড় করিয়েছে বাংলাদেশ।
মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম দিন শেষে ৭৯ ওভারে ৫ উইকেটে ৩৬২ রান করেছিলো বাংলাদেশ। নাজমুল হোসেন শান্ত ১৪৬, মাহমুদুল হাসান জয় ৭৬ রানে আউট হন। দিন শেষে মুশফিকুর রহিম ৪১ ও মেহেদি হাসান মিরাজ ৪৩ রানে অপরাজিত ছিলেন।
আজ, দ্বিতীয় দিন ব্যাট হাতে সুবিধা করতে পারেনি বাংলাদেশের পরের দিকের ব্যাটাররা। বাকী ৫ উইকেটে মাত্র ২০ রান যোগ করতে পারে বাংলাদেশ। ৯ রানে শেষ ৫ উইকেট হারায় টাইগাররা। এরমধ্যে ৩টিই নেন আফগানিস্তানের হয়ে অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা নিজাত মাসুদ।
মুশফিক ৭৬ বলে ৪টি চারে ৪৭ ও মিরাজ ৮টি চারে ৮০ বলে ৪৮ রানে আউট হন। লোয়ার অর্ডারে তাসকিন আহমেদ ২, তাইজুল শূন্য, শরিফুল ইসলাম ৬ রানে আউট হন। বল হাতে আফগানদের পক্ষে সেরা বোলার ছিলেন প্রথম দিন ২ উইকেট নেয়া মাসুদ। ১৬ ওভারে ৭৯ রানে ৫ উইকেট নেন তিনি।
নিজেদের প্রথম ইনিংসে খেলতে নেমে ভালো শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন আফগানিস্তানের দুই ওপেনার ইব্রাহিম জাদরান ও আব্দুল মালিক। ৫ ওভারে ১৭ রান তুলে ফেলেন তারা। অবশ্য দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে বিচ্ছিন্ন হতে পারতেন জাদরান ও মালিক। শরিফুলের বলে লিটনের হাতে জীবন পান জাদরান।
জীবন পেয়ে সুবিধা করতে পারেননি জাদরান। ষষ্ঠ ওভারে শরিফুলের শিকার হন তিনি। ৬ রান করেন জাদরান। এরপর আফগানিস্তানের উপর চাপ বাড়ান আরেক পেসার এবাদত। মধ্যাহ্ন বিরতির আগে আফগানদের ২ উইকেট তুলে নেন এবাদত। মালিককে ১৭ ও রহমত শাহকে ৯ রানে শিকার করেন এবাদত। এতে ৩ উইকেটে ৩৫ রান নিয়ে বিরতিতে যায় আফগানিস্তান।
বিরতি থেকে ফিরে আফগানিস্তান শিবিরে দ্বিতীয়বারের মত আঘাত হানেন শরিফুল। অধিনায়ক হাসমতুল্লাহ শাহিদিকে ৯ রানে থামান তিনি। এতে ৫১ রানে ৪ উইকেট হারায় আফগানিস্তান। এ অবস্থায় দলের হাল ধরে বাংলাদেশের বোলারদের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন আফসার জাজাই ও নাসির জামাল। জুটিতে ৭৩ বলে ৬৫ রান তুলে উইকেটে সেট হয়ে যান তারা। এ অবস্থায় জুটি ভাঙ্গতে মরিয়া ছিলো বাংলাদেশ।
অবশেষে দলীয় ১১৬ রানে জামালকে লেগ বিফোর আউট করে বাংলাদেশকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন মিরাজ। ৬টি চারে ৩৫ রান করেন জামাল।
মিরাজের ব্রেক-থ্রুর পর আফগানিস্তানকে চেপে ধরেন এবাদত ও তাইজুল। এতে ৩৯ ওভারে ১৪৬ রানে শেষ হয় আফগানদের প্রথম ইনিংস। আফগানদের পক্ষে জাজাই সর্বোচ্চ ৩৬ ও জানাত ২৩ রান করেন।
এবাদত ৪৭ রানে ৪টি, শরিফুল ২৮ রানে, তাইজুল ৭ রানে এবং মিরাজ ১৫ রানে ২টি করে উইকেট নেন। ইনিংসে ২ উইকেট নিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ারে ১৫০ ও মিরপুরের ভেন্যুতে ৫০ শিকার পূর্ণ করেন মিরাজ।
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ৩৮২ রানের জবাবে ১৪৬ রানে অলআউট হয়ে ফলো-অনে পড়ে আফগানিস্তান। কিন্তু আফগানদের ফলো-অন না করিয়ে ম্যাচের ২৩৬ রানে এগিয়ে থেকে তৃতীয় ইনিংসে আবারও ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ।
জাকির হাসানকে নিয়ে ইনিংস শুরু করে প্রথম ওভারের শেষ বলে ক্যাচ দিয়ে জীবন পান মাহমুদুল হাসান জয়। কিন্তু দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে আফগানিস্তানের বাঁ-হাতি স্পিনার আমির হামজার বলে আউট হন ৪টি চারে ১৩ বলে ১৭ রান করা জয়।
দলীয় ১৮ রানে জয়ের বিদায়ের পর জাকিরকে নিয়ে ওয়ানডে স্টাইলে খেলেছেন প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান নাজমুল হোসেন শান্ত। ব্যক্তিগত ৯ রানে জীবন পেয়ে আহমাদজাইর করা ১৮তম ওভারে শেষ চার বলে চারটি বাউন্ডারি মারেন শান্ত।
ইনিংসের ২১তম ওভারে বাউন্ডারি মেরে টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান জাকির। পরের ওভারের প্রথম বলে চারের সহায়তায় টেস্টে চতুর্থ হাফ-সেঞ্চুরি করেন শান্ত। হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নিয়ে অবিচ্ছিন্ন থেকে দিন শেষ করেন জাকির ও শান্ত। দু’জনই ৬৪ বল করে খেলে সমান ৫৪ রানেই অপরাজিত আছেন। জাকির ৬টি ও শান্ত ৮টি চার মারেন।
স্কোর কার্ড (টস-আফগানিস্তান)
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস (প্রথম দিন শেষে ৩৬২/৫, ৭৯ ওভার, মুশফিক ৪১*, মিরাজ ৪৩*) :
মাহমুদুল হাসান ক ইব্রাহিম ব রহমত ৭৬
জাকির হাসান ক আফসার ব নিজাত ১
নাজমুল হোসেন শান্ত ক নাসির ব হামজা ১৪৬
মোমিনুল হক ক আফসার ব নিজাত ১৫
মুশফিকুর রহিম ক জামাল ব মাসুদ ৪৭
লিটন দাস ক ইব্রাহিম ব জহির ৯
মিরাজ ক হামজা ব আমাদজাই ৪৮
তাসকিন এলবিডব্লু ব আজাদজাই ২
তাইজুল ক মালিক ব নিজাত ০
করিফুল বোল্ড মাসুদ ৬
এবাদত অপরাজিত ০
অতিরিক্ত (বা-৮, লে বা-১, নো-১৬, ও-৭) ৩২
মোট (অলআউট, ৮৬ ওভার) ৩৮২
উইকেট পতন : ১/৬ (জাকির), ২/২১৮ (মাহমুদুল), ৩/২৫৬ (মোমিনুল), ৪/২৭১ (শান্ত), ৫/২৯০ (লিটন), ৬/৩৭৩ (মিরাজ), ৭/৩৭৫ (মুশফিক), ৮/৩৭৫ (তাইজুল), ৯/৩৭৭ (তাসকিন), ১০/৩৮২ (শরিফুল)।
আফগানিস্তান বোলিং :
আহমদজাই : ১০-১-৩৯-২ (নো-১),
মাসুদ : ১৬-২-৭৯-৫ (ও-১, নো-৪),
জানাত : ১১-৩-৩৩-০ (ও-১),
জহির : ১৬-০-৯৮-১ (ও-১, নো-৮),
হামজা : ২৪-১-৮৫-১ (নো-৩),
শাহিদি : ৩-০-৯-০
রহমত : ৬-১-৩০-১।
আফগানিস্তান প্রথম ইনিংস :
জাদরান ক লিটন ব শরিফুল ৬
মালিক ক জাকির ব এবাদত ১৭
রহমত ক তাসকিন ব এবাদত ৯
শাহিদি ক মিরাজ ব শরিফুল ৯
জামাল এলবিডব্লু ব মিরাজ ৩৫
জাজাই ক শরিফুল ব এবাদত ৩৬
জানাত স্টাম্প লিটন ব মিরাজ ২৩
হামজা ক মোমিনুল ব এবাদত ৬
আহমাদজাই ক লিটন ব তাইজুল ০
মাসুদ ক জাকির ব তাইজুল ০
জহির অপরাজিত ০
অতিরিক্ত (লে বা-১, নো-৪) ৫
মোট (অলআউট, ৩৯ ওভার) ১৪৬
উইকেট পতন : ১/১৮ (জাদরান), ২/২৪ (মালিক), ৩/৩৫ (রহমত), ৪/৫১ (শাহিদি), ৫/১১৬ (জামাল), ৬/১১৬ (জাজাই), ৭/১২৮ (হামজা), ৮/১৪০ (আহমাদজাই), ৯/১৪৬ (মাসুদ), ১০/১৪৬ (জানাত)।
বাংলাদেশ বোলিং :
তাসকিন : ৭-০-৪৮-০ (নো-৪),
শরিফুল : ৮-২-২৮-২,
এবাদত : ১০-১-৪৭-৪,
তাইজুল : ৫-০-৭-২,
মিরাজ : ৯-১-১৫-২।
বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস :
মাহমুদুল হাসান ক জাদরান ব হামজা ১৭
জাকির হাসান অপরাজিত ৫৪
নাজমুল হোসেন শান্ত অপরাজিত ৫৪
অতিরিক্ত (নো-৩, ও-৬) ৯
মোট (১ উইকেট, ২৩ ওভার) ১৩৪
উইকেট পতন : ১/১৮ (জয়)।
আফগানিস্তান বোলিং :
আহমদজাই : ৫-০-৩৪-০,
মাসুদ : ৩.৫-০-৩০-০ (নো-৩),
হামজা : ৬.১-০-২৭-১,
জানাত : ৪-০-২৪-০ (ও-২),
জহির : ৪-০-১৯-০।
অনলাইন ডেস্ক :
পাঁচ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে সফরকারী জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সহজ জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।
আজ ৩ মে শুক্রবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের দেওয়া ১২৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ২৮ বল ও ৮ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ দল।
১২৫ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ৫ রান তুলতেই লিটনের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ৩ বলে ১ রান করে সাজঘরে ফিরেন টাইগার ওপেনার লিটন কুমার দাস। এরপর ধীর গতির ব্যাট করেন নাজমুল শান্ত। আউট হওয়ার আগে তিনি ২৪ বলে ২১ রান করেন। এরপর তানজিদ তামিম ও তাওহীদ হৃদয় ঝড়ো ব্যাটিং করে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। অভিষিক্ত তানজিদ তামিম ৪৭ বলে ৬৭ রান করেন ও তাওহীদ হৃদয় ১৮ বলে করেন ৩৩ রান।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই প্রথম উইকেট হারায় জিম্বাবুয়ে। মাহেদী নিজের প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলেই সরাসরি বোল্ড করে ফেরান জিম্বাবুয়ের ওপেনার ক্রেইগ আরভিনকে (০)। এরপর শরিফুল ইসলাম এক ওভারে তিন বাউন্ডারি সহ হজম করেন ১৩ রান। কিন্তু তাসকিন আহমেদ এসে রানের চাকায় লাগাম টানেন। যার ফল তুলে নেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। প্রথমবার বল হাতে নিয়ে দারুণ নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেন সাইফউদ্দিন।
ওভারের শেষ বলে তিনি জিম্বাবুয়ের অভিষিক্ত ব্যাটার জয়লর্ড গাম্বিকে (১৪) বিদায় করেন। উইকেট পতনের মিছিল এরপর চলতেই থাকে। ষষ্ঠ ওভারে ফের বল হাতে নেন মাহেদী। এবার প্রথম বলেই রান আউটের শিকার হন একপ্রান্ত আগলে রাখা ব্রায়ান বেনেট (১৬)।
পরের বলে এসেই ডাক মারেন জিম্বাবুয়ের অধিনায়ক সিকান্দার রাজা। মাহেদীর লেন্থ বলে প্যাডেল সুইপ খেলতে গিয়ে ফার্স্ট স্লিপে থাকা লিটন দাসের হাতে ক্যাচ তুলে দেন রাজা। ১ উইকেটে ৩৬ রান করা জিম্বাবুয়ে আর কোনো রান যোগ করার আগেই হারায় আরও ৩ উইকেট।
এখানেই শেষ নয়। তাসকিন পরের ওভারে তুলে নেন জোড়া উইকেট। ওভারের প্রথম দুই বলেই তিনি বিদায় করেন শন উইলিয়ামস ও রায়ান বার্লকে। দু’জনেই বিদায় নিয়েছেন রানের খাতা খোলার আগেই। এরপর অষ্টম ওভারে লুক জঙওয়ে (২) বিদায় নেন সাইফউদ্দিনের বলে।
৪১ রানে ৭ উইকেট হারানোর পর ওয়েলিংটন মাসাকাদজাকে সঙ্গে নিয়ে ক্লিভে মাদানদে ইনিংস গড়ার দায়িত্ব নেন। শুরুতে তারা ধীরস্থিরভাবেই খেলছিলেন। কিন্তু শেষদিকে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন তারা।
শরিফুলের করা ১৭তম ওভারে ১১ ও রিশাদ হোসেনের করা পরের ওভারে ১৬ রান নেন মাসাকাদজা ও মাদানদে। এরপর ১৮তম ওভারের প্রথম বলে তাসকিনকেও ছক্কা হাঁকান মাসাকাদজা। এক বল পরই অবশ্য তার সঙ্গী মাদানদেকে বোল্ড করেন তাসকিন।
তার ইয়র্কার মাদানদের দুই পায়ের মাঝখান দিয়ে স্টাম্পে আঘাত করে। অষ্টম উইকেটে জিম্বাবুয়ের রেকর্ড ৬৫ বলে ৭৫ রানের জুটি ভেঙে যায় এতে। ৬ চারে ৩৯ বলে ৪৩ রান করে আউট হন মাদানদে। তার বিদায়ের পর জিম্বাবুয়ের রান হয়নি খুব একটা। শেষ বলে রান আউট হওয়ার আগে ৩৮ বলে ৩৪ রান করেন মাসাকাদজা।
বাংলাদেশের হয়ে ৪ ওভারে ১৪ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন তাসকিন। সমান ওভারে ১৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট পান সাইফউদ্দিনও।
জিম্বাবুয়ের ছোট লক্ষ্য তাড়ায় বাংলাদেশের শুরুটা মোটেও ভালো ছিল না। ব্যাট হাতে অনেকদিন ধরেই অধারাবাহিক ওপেনার লিটন দাস শুরুটা করেন বাজেভাবে। ব্লেসিং মুজারাবানির করা দ্বিতীয় ওভারের দ্বিতীয় বলেই বোল্ড তিনি। গুড লেংথে ফেলা বলটি লিটনের ব্যাট ও প্যাডের ফাঁক গলে স্টাম্প ভেঙে দেয়। এতে ৩ বলে মাত্র ১ রানেই থামল সর্বশেষ ১৯ ইনিংস আগে ফিফটির দেখা পাওয়া লিটন। যা বিশ্বকাপের আগে বাংলাদেশের জন্যও বড় চিন্তার কারণ!
শান্ত ভালো খেলতে থাকলেও কাটা পড়েছেন দলের ৫৭ রানের মাথায়। ২৪ বলে ২১ রান করে সাজঘরে ফিরে যান তিনি। তবে তানজিদকে থামানোই যাচ্ছিল না। দারুণ ছন্দে থাকা এই ওপেনার দৃষ্টিনন্দন সব শটে হাঁকাচ্ছিলেন একের পর এক বাউন্ডারি। দুর্দান্ত দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে অভিষেকেই হাঁকিয়েছেন ফিফটি।
চারে নেমে দারুণ কিছু শট খেলেছেন তাওহিদ হৃদয়ও। শেষ দিকে তানজিদ-হৃদয়ের ব্যাটে চড়েই এগিয়েছে বাংলাদেশের ইনিংস। দুজনে মিলে হতে দেননি কোনো বিপদ। হেসেখেলেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ। ২৮ বল হাতে রেখে ৮ উইকেটের জয় পায় টাইগাররা। তানজিদ অপরাজিত ছিলেন ৪৭ বলে ৬৭ রানের ইনিংস খেলে। অন্যদিকে হৃদয় ১৮ বলে ৩৩ রান করে শেষ পর্যন্ত টিকে ছিলেন। দলকে জিতিয়েই মাঠ ছেড়েছেন তানজিদ-হৃদয়। জিম্বাবুয়ের হয়ে ১টি করে উইকেট নেন লুক জঙ্গুয়ে এবং ব্লেসিং মুজারাবানি।
অনলাইন ডেস্ক :
ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত ফরাসি গায়িকা, অভিনেত্রী ও ফ্যাশন আইকন জেন বার্কিন প্যারিসে মারা গেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর।
আজ ১৬ জুলাই রবিবার স্থানীয় গণমাধ্যম তার কাছের লোকজনের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, তাকে তার বাড়িতে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে।
ফরাসি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এক শোক বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, দেশটি তার একজন আইকনকে হারাল।
২০২১ সালে বার্কিনের স্ট্রোক হয়েছিল। তার আগে কয়েক বছর ধরে তিনি হার্টের সমস্যায় ভুগছিলেন।
লন্ডনে জন্মগ্রহণ করা বার্কিন ফরাসি ভাষায় গান গেয়ে খ্যাতি পান। ১৯৭০ এর দশকে তিনি ফ্রান্সে স্থানান্তরিত হন।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বার্কিনকে একজন ‘ফরাসি আইকন’ ও ‘পূর্ণাঙ্গ শিল্পী’ আখ্যা দেন। ম্যাক্রোঁ বলেন, তিনি আমাদের এমন সুর ও ছবি দিয়েছেন যা কখনো ভোলা যাবে না।
ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী এলিজাবেথ বোর্ন বলেছেন, তিনি ‘প্রজন্ম জয়ী’ শিল্পী। ক্লাসিক ব্লো আপ (১৯৬৬), ডেথ অন দ্য নাইল (১৯৭৮) ও ইভিল আন্ডার দ্য সান (১৯৮২) বার্কিন অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র। খবর- বিবিসি ও রয়টার্স
স্পোটর্স ডেস্ক :
নিউজিল্যান্ড সফরে আরো একটি হারের স্বাদ পেল বাংলাদেশ। তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচটি ৭ উইকেটে হারল সফরকারীরা। এতে সিরিজ হার বাঁচাতে পারলেন না নাজমুল হোসেন শান্তরা। একই সঙ্গে আরো দীর্ঘ হলো নিউজিল্যান্ডের মাটিতে কিউইদের বিপক্ষে সাদা বলের সংস্করণে জয়।
নেলসনে সৌম্য সরকারের ক্যারিয়ার-সেরা ১৬৯ রানের ইনিংসের পরেও তিন শর আগেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ, থামে ২৯১ রানে। রান তাড়ায় হেনরি নিকোলসের ৯৫ ও উইল ইয়াংয়ের ৮৯ রানের সুবাদে ২২ বল হাতে রেখে অনায়াস জয় তুলে নিয়েছে স্বাগতিকরা।
২৯২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দারুণ শুরু করা নিউজিল্যান্ড। অবশেষে জুটি ভাঙেন হাসান মাহমুদ। ১১তম ওভারের শেষ বলে রিশাদ হোসেনের দারুণ ক্যাচে আউট হয়েছেন রাচীন রবীন্দ্র। এই ব্যাটার ৩৩ বলে ৭টি চার ও একটি ছক্কায় ৪৫ রান করেন। উদ্বোধনীতে উইল ইয়ংয়ের সঙ্গে তিনি ৭৬ রানের পার্টনারশিপ গড়েছেন।
দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে উইল ইয়ং ও হেনরি নিকোলস ১৩১ বলে ১২৮ রান তোলেন। অবশেষে এই জুটি ভাঙেন হাসান মাহমুদ। ৯৪ বলে ৮৯ রান করা এই ব্যাটারকে হাসান নিজের ক্যাচেই ফেরান। ইয়ং ৮টি চার ও ২টি ছক্কা হাঁকান।
কিউইদের তৃতীয় উইকেট তুলে নেন শরিফুল। ৯৯ বলে ৯৫ রান করা হেনরি নিকোলসকে সেঞ্চুরি করতে দেননি এই বাঁহাতি। নিকোলস ৮টি চার ও একটি ছক্কায় নিজের ইনিংস সাজান। টম ল্যাথাম ৩৪ ও টম বøান্ডেল ২৪ রানে অপরাজিত থাকেন।
বাংলাদেশি বোলারদের মধ্যে ২টি উইকেট পান হাসান মাহমুদ। একটি উইকেট পান শরিফুল।
টস হেরে এর আগে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি। দলীয় ১১ রানে অ্যাডাম মিলনের বলে ব্যক্তিগত ২ রানে আউট হন এনামুল হক। এরপর অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও লিটন দাস ৬ রানকরে দ্রæতই ফিরে যান। এ দুজনকেই পর পর দুই ওভারে তুলে নেন জ্যাকব ডাফি। আর দলীয় ৮০ রানে তাওহীদ হৃদয় ১২ রান করে রান আউট হলে চাপে পড়ে বাংলাদেশ।
তবে একপ্রান্ত আগলে রেখে ধীরে সুস্থে ব্যাটিং করেন সৌম্য সরকার। এই বাঁহাতি ৫৮ বলে ফিফটি ও ১১৬ বলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরির দেখা পান। পঞ্চম উইকেট জুটিতে তিনি মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে ১০৮ বলে ৯১ রানের পার্টনারশিপ গড়ে দলকেও উদ্ধার করেন। ডাফির তৃতীয় শিকার হওয়া মুশফিক ৫৭ বলে ৫টি চারে ৪৫ রানে মাঠ ছাড়েন।
এরপর অন্য ব্যাটাররা সেভাবে জ্বলে উঠতে না পারলেও সৌম্য টাইগারদের একাই পথ দেখান। সেঞ্চুরির পরই মূলত ব্যাটে ঝড় তোলেন। ইনিংসের শেষ ওভারে উইলিয়াম ও’রোরকের প্রথম বলে সৌম্য আউট হন। ১৫১ বলে ২২টি চার ও ২টি ছক্কায় ১৬৯ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন তিনি। শেষ ওভারে আরও দুটি উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
কিউই বোলারদের মধ্যে ৩টি করে উইকেট পান ডাফি ও রোরকে।
চলারপথে রিপোর্ট :
অনূর্ধ্ব-১৯ জাতীয় দলের ক্রিকেটার আরিফুল ইসলামকে নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মাহমুদ পারভেজ এ সংবর্ধনার আয়োজন করেন।
আজ ১৫ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার সকালে পৌর মিলনায়তনে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন পৌরসভার প্যানেল মেয়র আব্দুল গণি, সিনিয়র সাংবাদিক সুবীর বসাক, মোস্তফা কামাল, মেয়রপত্নী সুলতানা নাসরিন ঝুমা, কিশোরগঞ্জের ক্রিকেট কোচ আশরাফ উদ্দিন স্বপন, সাবেক ক্রিকেটার শহীদুল হক লাভলু প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে পৌর মেয়রের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা স্মারক হিসেবে ক্রিকেটার আরিফুল ইসলামকে ২০ হাজার টাকার চেক ও একটি ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
সংবর্ধনার জবাবে ক্রিকেটার আরিফুল ইসলাম বিশ্বমানের ক্রিকেটার হওয়ার আকাংখা প্রকাশ করে বলেন, আমি বড়দের বিশ্বকাপ জেতাতে চাই। এর জন্য যত পরিশ্রম করতে হয় আমি করবো ইনশাল্লাহ।
পৌরসভার মেয়র মাহমুদ পারভেজ বলেন, নিজ জেলার কৃতী ক্রিকেটারকে সংবর্ধনা দিতে পেরে আমি আনন্দিত। শুধু ক্রিকেটার নয়, যে কোনো ক্ষেত্রে যিনি ভালো অবদান রাখবেন তাদেরকেও আমি অনুপ্রাণিত করবো। এ জেলার ক্রিকেট তথা খেলাধুলার মান উন্নয়ন ও প্রসারে ভূমিকা রাখার আগ্রহ প্রকাশ করেন তিনি।
উল্লেখ্য, ক্রিকেটার আরিফুল ইসলাম সম্প্রতি শেষ হওয়া অনূর্ধ্ব-১৯ যুব বিশ্বকাপ ২০২৪ এ বাংলাদেশের ব্যাটারদের মধ্যে সর্বোচ্চ রান করেন।
কিশোরগঞ্জ জেলা পাকুন্দিয়া উপজেলার এগারসিন্দুর ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামের আফজাল হোসেন ও ফারজানা পারভীন দম্পতির সন্তান তিনি। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তার পিতা-মাতাও উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে সকলকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
আজকাল যৌবন ধরে রাখতে, সুন্দর দেখাতে নারী-পুরুষ সবাই দারুণ আগ্রহী। কাজেই পোশাক, চুল, ত্বক ও দাড়ির স্টাইল সময়ের সঙ্গে মিলিয়ে চলতে এবং নিজেকে তরুণ দেখাতে অনেক কিছুই করতে হয়। তবে কি এসবই শেষ সমাধান? মোটেও এমনটা নয়। রূপ বোদ্ধাদের মতে, ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখতে এবং নিজেকে চিরতরুণ রাখার জন্য ছোট ছোট কিছু নিয়ম মেনে চলা প্রয়োজন। স্কিন কেয়ার রুটিন ও স্বাস্থ্যকর লাইফস্টাইলই উজ্জ্বল-তারুণ্যদীপ্ত ত্বকের ইচ্ছা পূরণ করবে।
প্রাথমিক স্কিন কেয়ার : ভিটেন-হ্যার্ডেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ত্বক বিশেষজ্ঞ উলরিকে হাইনরিশ বলেন, ‘বয়স বাড়া মানেই কোনো কিছু পরিত্যাগ করা নয়। বয়সের সঙ্গে সৌন্দর্য হারাতে হবে- এমন কোনো কথা নেই। বয়সের সঙ্গে ত্বক পাতলা এবং শুষ্ক হয়। তাই এমন ক্রিম বা কসমেটিক ব্যবহার করতে হবে যাতে ভিটামিন এ, সি এবং ই-থাকে। আর হ্যাঁ, ত্বক ভালো রাখতে প্রাথমিক স্কিন কেয়ার রুটিন মেনে চলা প্রয়োজন। না হলে ত্বকের সমস্যা বাড়তে পারে। এমনকি বয়সের ছাপ পড়ে ত্বকে।
প্রাত্যহিক ত্বকের পরিচর্যা
প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে এবং রাতে শুতে যাওয়ার আগে প্রথমে মুখ ভালোভাবে ক্লিনজিং করুন। তারপর প্রাকৃতিক টোনার ও ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন।
সানস্ক্রিন কখনো ভুলবেন না। রোদের ক্ষতিকারক রশ্মি ত্বকের ক্ষতি করে। ফটোএজিং ঘটায়। ফলে সময়ের আগেই ত্বক বুড়িয়ে যায়। তাই মেঘলা দিনেও সানস্ক্রিন ব্যবহার করা উচিত।
বয়স ৩০ পেরোলেই অ্যান্টি-এজিং স্কিন কেয়ার রুটিন ফলো করা উচিত। রেটিনল, AHA সমৃদ্ধ প্রোডাক্ট ত্বকে ব্যবহার করতে হবে। সৌন্দর্যচর্চায় আগের ট্রেন্ড ফিরে এসেছে। অর্থাৎ গাছগাছালির পাতা, রস, শেকড় ইত্যাদির তৈরি ভেষজ ক্রিম, পাউডার, তেল ব্যবহার করতে পারেন।
অসময়ে ত্বকে বলিরেখা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। শারীরিক সমস্যা বা পুষ্টির অভাবেও এমন হতে পারে। সঠিকভাবে ত্বকের যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি আপনাকে জীবনশৈলীর দিকেও নজর দিতে হবে। বিশেষ করে স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে।
পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করাও জরুরি। রাতে অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম দরকার। নিয়মিত ব্যায়াম করতে ভুলবেন না। এই ছোট ছোট নিয়মগুলো মেনে চললেই আপনিও পাবেন চিরতরুণ ত্বক।
লেখা : উম্মে হানি