চলারপথে রিপোর্ট :
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পথে দেশ এগিয়ে গেছে। এখন স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হবে।
বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনী ওয়াদা ছিল ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার। এ পথে আমরা অনেকদূর এগিয়েছি। এখন গ্রামে বসেও ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল মিলছে।
আজ ১৭ জুন শনিবার সকালে চাঁদপুর শহরের পুরানবাজার ডিগ্রি কলেজ মিলনায়তনে জেলার নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়সমূহের প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ: আমাদের করণীয়’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ‘আগামীর বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ’। এই স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে শিক্ষকরা বড় ধরনের ভূমিকা রাখতে পারেন। শিক্ষকদের প্রচেষ্টার মাধ্যমেই শিক্ষার্থীরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে অবদান রাখতে পারবে। দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনবলের বিকল্প নেই। তাই সামনের দিনে প্রযুক্তিগত শিক্ষার ওপর এবং আমাদের প্রশিক্ষিত জনগোষ্ঠী গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে এবং সে অনুযায়ী কাজ করতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও নীতি-আদর্শ ধরে রেখে কাজ করেছি। এরই ফলস্বরূপ দেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ ঘটেছে। এ ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।
জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে শেখ হাসিনার অবিচল নেতৃত্বে সবাইকে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে দীপু মনি বলেন, বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
এসময় তিনি শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশের চারটি স্তম্ভের মূল হচ্ছে স্মার্ট নাগরিক। স্মার্ট নাগরিক না হলে স্মার্ট অর্থনীতি হবে না, স্মার্ট সরকার হবে না, স্মার্ট সমাজ হবে না। আর সেই স্মার্ট নাগরিক তৈরি করবেন আপনারা, যারা মানুষ গড়ার কারিগর। শিক্ষাই হচ্ছে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার মূল হাতিয়ার। আর শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার মূল কারিগর।
কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ জামাল নাছেরের সভাপতিত্বে এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান, জেলা পুলিশ সুপার মো. মিলন মাহমুদ, চাঁদপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক অসিত বরণ দাস, চাঁদপুর সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. মাসুদুর রহমান, জেলা শিক্ষা অফিসার প্রাণকৃষ্ণ দেবনাথ।
সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক অধ্যাপক মো. আজহারুল ইসলাম। আলোচনায় অংশ নেন পুরানবাজার ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ রতন কুমার মজুমদার।
বোয়ালমারী প্রতিনিধি :
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক ও বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. কামরুল আহসান তালুকদারের (পিএএ) উদ্যোগে এই প্রথম বোয়ালমারীতে ব্যবসায়ীদের মাঝে স্পট ডিলিং লাইসেন্স বিতরণ করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে আজ ৫ এপ্রিল বুধবার বেলা ১১টায় উপজেলা পরিষদ হলরুমে ফরিদপুর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বিপুল চন্দ্র দাস এসব লাইসেন্স স্পটে বিতরণ করেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোশারেফ হোসাইনের সভাপতিত্বে লাইসেন্স বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নেজারত শাখার ডেপুটি কালেক্টর মো. মুজিবুল ইসলাম, উপজেলা চেয়ারম্যান এমএম মোশাররফ হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ রাসেল রেজা, প্রকল্প বাস্তবায় কর্মকর্তা মেহেদী হাসান, আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা পিজুস কুমার, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শ্যামল সাহা, বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম বাবু, অ্যাড. কোরবান আলী প্রমুখ।
অনলাইন ডেস্ক :
আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হবে। সে উপলক্ষে যান চলাচলের বিষয়ে নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। এতে ৭২ ঘণ্টা মোটর সাইকেল ও ২৪ ঘণ্টা সর্বসাধারণের যান চলাচলের বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
৩১ ডিসেম্বর রবিবার রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সহকারী সচিব মো. জসিম উদ্দিন প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮ এর ৩২ ধারা অনুযায়ী অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচন উপলক্ষে ভোট গ্রহণের জন্য নির্ধারিত দিনের পূর্ববর্তী মধ্যরাত অর্থাৎ ৬ জানুয়ারি দিবাগত মধ্যরাত ১২টা থেকে ৭ জানুয়ারি দিবাগত মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত (২৪ ঘণ্টা) ট্যাক্সি, পিক আপ, মাইক্রোবাস ও ট্রাক চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে।
একইসঙ্গে ৫ জানুয়ারি দিবাগত মধ্যরাত ১২টা থেকে ৮ জানুয়ারি মধ্যরাত পর্যন্ত (৭২ ঘণ্টা) মোটর সাইকেল চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে।
এতে আরো বলা হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী, প্রশাসন ও অনুমতিপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক; জরুরি সেবা কাজে নিয়োজিত যানবাহন এবং ওষুধ, স্বাস্থ্য-চিকিৎসা ও অনুরূপ কাজে ব্যবহৃত দ্রব্যাদি ও সংবাদপত্র বহনকারী সব ধরনের যানবাহন; আত্মীয়-স্বজনের জন্য বিমানবন্দরে যাওয়া, বিমানবন্দর হতে যাত্রী বা আত্মীয়-স্বজনসহ নিজ বাসস্থানে অথবা আত্মীয়-স্বজনের বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য ব্যবহৃত যানবাহন (টিকেট বা অনুরূপ প্রমাণ প্রদর্শন) এবং দূরপাল্লার যাত্রী বহনকারী অথবা দূরপাল্লার যাত্রী হিসেবে স্থানীয়পর্যায়ে যাতায়াতের জন্য যে কোনো যানবাহন; প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর জন্য একটি, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর নির্বাচনী এজেন্ট (যথাযথ নিয়োগপত্র/ পরিচয়পত্র থাকা সাপেক্ষে) এর জন্য একটি গাড়ি (জিপ, কার, মাইক্রোবাস ইত্যাদি ছোট আকৃতির যানবাহন) রিটার্নিং অফিসারের অনুমোদন ও গাড়িতে স্টিকার প্রদর্শন সাপেক্ষে চলাচলের অনুমতি প্রদান; সাংবাদিক, পর্যবেক্ষক অথবা জরুরি কোনো কাজে ব্যবহৃত মোটর সাইকেল রিটার্নিং অফিসারের অনুমোদন সাপেক্ষে চলাচলের অনুমতি প্রদান; নির্বাচন কমিশনের অনুমোদন সাপেক্ষে নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা/কর্মচারী অথবা অন্য কোনো ব্যক্তির জন্য মোটর সাইকেল চলাচলের অনুমতি প্রদান; জাতীয় মহাসড়ক, বন্দর ছাড়াও আন্তঃজেলা বা মহানগর থেকে বাহির বা প্রবেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, মহাসড়ক ও প্রধান প্রধান রাস্তার সংযোগ সড়ক বা উক্তরূপ সব রাস্তায় নিষেধাজ্ঞা শিথিলের বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন এবং স্থানীয় প্রয়োজনীয়তা ও বাস্তবতার নিরিখে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটরা কতিপয় যানবাহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ অথবা শিথিল করার বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন।
প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, উল্লিখিত যানবাহনসমূহ চলাচলের ওপর বর্ণিত সময়সূচি অনুযায়ী নিষেধাজ্ঞা আরোপ অথবা শিথিলের জন্য সংশ্লিষ্ট জেলা ম্যাজিস্ট্রেট/ মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারকে এতদ্বারা ক্ষমতা অর্পণ করা হলো। এ নিষেধাজ্ঞা যথাযথ ভাবে বলবৎ করার জন্য এবং প্রয়োজন বোধে জনসাধারণের অবগতির জন্য ট্রাফিক সাইন প্রদর্শনের নিমিত্ত জননিরাপত্তা বিভাগ/ সুরক্ষা সেবা বিভাগ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো।
অনলাইন ডেস্ক :
আজ ১১ জ্যৈষ্ঠ, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী। জাতীয় পর্যায়ে কবির জন্মবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি ছিলেন একাধারে প্রেমিক ও বিদ্রোহী। উপন্যাস, নাটক, সঙ্গীত আর দর্শনেও নজরুলের অনবদ্য উপস্থিতি বর্ণাঢ্য করেছে বাংলা সাহিত্যকে। অসাধারণ প্রতিভার অধিকারী এই মানুষটি ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ (ইংরেজি সাল অনুযায়ী ২৪ মে, ১৮৯৯ সাল) ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার আসানসোলের চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব-কৈশোর-তারুণ্যের জীবনের পরতে পরতে সংগ্রাম করতে হয়েছে তাকে। জড়িয়েছিলেন নানা পেশায়। ১৯১৭ সালে যোগ দেন সেনাবাহিনীতে। অংশ নেন প্রথম বিশ্বযুদ্ধেও। এরই মাঝে তৎকালীন প্রভাবশালী কবি-সাহিত্যিকদের সংস্পর্শে আসেন তিনি। ১৯২২ সালে প্রকাশ করেন ধূমকেতু পত্রিকা।
বাংলা ১৩০৬ বঙ্গাব্দের ১১ জ্যৈষ্ঠ বর্ধমান জেলার আসানসোলের জামুরিয়া থানার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মেছিলেন কাজী নজরুল ইসলাম। তার ডাক নাম ‘দুখু মিয়া’। পিতার নাম কাজী ফকির আহমেদ ও মা জাহেদা খাতুন।
কাজী নজরুল ইসলাম চিরপ্রেমের কবি। তিনি যৌবনের দূত। তিনি প্রেম নিয়েছিলেন, প্রেম চেয়েছিলেন। মূলত তিনি বিদ্রোহী, কিন্তু তার প্রেমিক রূপটিও প্রবাদপ্রতিম। তাই মানুষটি অনায়াসেই বলতে পারেন ‘আমার আপনার চেয়ে আপন যে জন খুঁজি তারে আমি আপনায়।’ পৃথিবীতে এমন কয়জন আছেন যিনি প্রেমের টানে রক্তের সর্ম্পককে অস্বীকার করে পথে বেরিয়ে পড়তে পারেন?
১৯৭২ সালে কবি নজরুলকে সপরিবারে নিয়ে আসা হয় স্বাধীন বাংলাদেশে। এরপর মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশেই ছিলেন। ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট তৎকালীন পিজি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন এই মহাবিদ্রোহী ও প্রেমিক পুরুষ। কবির ইচ্ছানুসারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে তাকে সমাধিস্থ করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ট্রাফিক আইন মেনে চলার জন্য ঠাকুরগাঁওয়ে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হয়েছে। আজ ২৯ আগস্ট মঙ্গলবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এই প্রচারণার উদ্বোধন করা হয়েছে। সচেতনতামূলক প্রচারণার উদ্বোধন করেন ঠাকুরগাঁওয়ের পুলিশ সুপার উত্তম প্রসাদ পাঠক।
এ সময় ঠাকুরগাঁওয়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) লিজা বেগম, ঠাকুরগাঁও ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর আমজাদ হোসেন, ঠাকুরগাঁও সদর থানা ওসি (তদন্ত) জিয়াউর রহমানসহ ট্রাফিক ও জেলা পুলিশের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় জেলা পুলিশ সুপার উত্তম প্রসাদ পাঠক যানবাহন চালকদের ট্রাফিক আইন মনে চলার জন্য লিফলেট বিতরণ করেন। সেইসাথে হেলমেট পরিধান ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সঙ্গে রাখার আহবান জানানো হয়। সেসময় বেশকিছু মোটরসাইকেল চালককে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা ও হেলমেট বিতরণ করেন পুলিশ সুপার ।
চলারপথে রিপোর্ট :
আজ ২০ এপ্রিল রাঙামাটির নানিয়ারচর বুড়িঘাটের চিংড়ি খালের ছোট দ্বীপে চির নিন্দ্রায় শায়িত থাকা বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফের শাহাদাৎ বার্ষিকী।
বাঙ্গালী জাতির এই শ্রেষ্ঠ সন্তান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ১৯৭১ সালের এই দিনে বুড়িঘাটে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সাথে সম্মুখ সমরে মর্টার শেলের আঘাতে শহীদ হয়েছিলেন।
উইকিপিডিয়ার তথ্যে ৮ ই এপ্রিল থাকলেও মূলত তারিখটি হবে ২০ এপ্রিল ১৯৭১।এই দিনটি নানিয়ারচরবাসীর জন্য রক্তে ঝরা দিন।
এ মহান বীর ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে ২০শে এপ্রিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হয়েছিলেন । ২৬মার্চ যুদ্ধ শুরু হলে সহকর্মীদের সঙ্গে তিনিও ছুটে আসেন পার্বত্য চট্টগ্রামে। রাঙামাটি জেলার নানিয়ারচর উপজেলার বুড়িঘাটে শত্রু বাহিনীর নৌযান একাই ধ্বংস করেন ।
বাঙালীর এই মহান যোদ্ধা ১৯৪৩ সালের পহেলা মে ফরিদপুর জেলার মধুখালী উপজেলার পিতা ইমাম মুন্সি মেহেদি হাসান এবং মাতা মুকিদুন্নেসার ঘরে জন্মগ্রহণ করেন ।
পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর ২নং কমান্ডো ব্যাটেলিয়ানের দুই কোম্পানি সৈনিক ৭টি স্পিড বোট ও ২টি লঞ্চ রাঙামাটি-মহালছড়ি নৌপথের আশেপাশে অবস্থানরত মুক্তিবাহিনীর উপর আক্রমণ করে। ৬টি লঞ্চে অস্ত্র গোলাবারুদ মজুদ ও মর্টার সজ্জিত ছিলো। পাকিস্তানী বাহিনী মুক্তিবাহিনীর অবস্থান টের পাওয়া মাত্রই তাদের অবস্থানের উপর মর্টারের গোলাবর্ষণ শুরু করে। তাদের এই অতর্কিত আক্রমণে মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে।
এই সুযোগে হঠাৎ পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কমান্ডো ব্যাটেলিয়নের দুই কোম্পানি সৈন্য, বেশ কয়েকটি স্পীড বোট এবং দুটি লঞ্চে করে বুড়িঘাট দখলের জন্য আক্রমন করে। মর্টার আর ভারী অস্ত্র দিয়ে চালানো আক্রমণে প্রতিহতে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখেন বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ। এই লড়াকু সৈনিকের একসময় পাকবাহিনীর মর্টারের গোলার আঘাতে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় তার দেহ।
বাংলার অসীম সাহসী বীর মুন্সি আব্দুর রউফ এর দেহ পরবর্তীতে বীরমুক্তি যোদ্ধা দয়ালকৃষ্ণ চাকমা উদ্ধার করে বুড়িঘাটের চিংড়ি খাল সংলগ্ন টিলায় সমাহিত করেন।
১৯৯৬ সালে তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর)-এর উদ্যোগে সমাহিত স্থানটিতে নির্মিত করেন বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফের সমাধি সৌধ।
মুক্তিযুদ্ধে তার অবদান বিবেচনা করে বাংলাদেশ সরকার তাকে বীরশ্রেষ্ঠ খেতাবে ভূষিত করেন এবং বাংলাদেশ রাইফেলস ১৯৭৩ সালে সিপাহী মুন্সি আব্দুর রউফকে ল্যান্স নায়েক পদে মরোণোত্তর পদবিতে পদোন্নতি প্রদান করেন, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সি আব্দুর রউফ তার জীবনের বিনিময়ে রক্ষা করেন সহযোদ্ধার জীবন এবং পাকিস্তানী বাহিনীর বহু সৈন্যকে প্রতিহত করেছেন।
পার্বত্য অঞ্চলের দূর্গম নানিয়ারচর বুড়িঘাটে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হওয়া এই মহান বীরকে নিয়ে নানিয়ারচরবাসী গর্ববোধ করেন।