চলারপথে রিপোর্ট :
পাবনা সদর উপজেলায় সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের আওতায় বিতরণকৃত কম্বাইন হার্ভেস্টারের মাধ্যমে ধান কর্তন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আজ ১৮ জুন রবিবার সকালে উপজেলার ভাড়ারা ইউনিয়নের নলদহ গ্রামের একটি মাঠে এ কম্বাইন হার্ভেস্টারের মাধ্যমে ধান কর্তন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর পাবনার উপ-পরিচালক ডক্টর জামাল উদ্দিন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ি, পাবনার অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) মোঃ রোকনুজ্জামান, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাহানা পারভীন লাবনী, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা এবং কৃষকগণ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাহানা পারভীন লাবনী জানান, উদ্বুদ্ধ করণের মাধ্যমে কৃষকের ৪০ একর জমিতে এবং সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পের আওতায় বীজ সহায়তার মাধ্যমে ৫০ একর জমির প্রকল্প থেকে সরবরাহকৃত অটোমেটিক বীজ বপন যন্ত্রের মাধ্যমে সমলয় চাষাবাদে প্রথম পর্যায়ে ট্রেতে বীজ বপনের মাধ্যমে চারা তৈরি করা হয়। যন্ত্রের সাহায্যে চারা তৈরি করে জমিতে রোপণ পাবনা সদর উপজেলায় এবারই প্রথম। পরবর্তীতে রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে ধান রোপণ করা হয়।
তিনি আরো জানান, আধুনিক পদ্ধতি কম্বাইন হারভেস্টারের মাধ্যমে ১ একর জায়গার ধান ১ ঘণ্টায় কাটা সম্ভব এবং এতে কৃষকের খরচ হবে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা। যেখানে গতানুগতিক পদ্ধতিতে ১ একর জমির ধান কাটা থেকে মাড়াই পর্যন্ত ৫ জন লোকের প্রায় ৩ থেকে ৪ দিন সময় লাগবে, একই সাথে খরচ হবে প্রায় ২০ হাজার টাকা। বর্তমান সরকার শতকরা ৫০ ভাগ ভর্তুকিতে বিভিন্ন ধরনের কৃষি যন্ত্রপাতি কৃষকদের প্রদান করার ফলে যেমন সময়, শ্রম ও টাকা সাশ্রয় করা সম্ভব হয়েছে কৃষকদের, তেমনি তারা লাভবান হচ্ছে। দেশের কৃষি সেক্টর যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে আধুনিকায়ন হচ্ছে। এভাবেই দেশের কৃষকরা স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট কৃষকে রূপান্তরিত হবেন।
অনলাইন ডেস্ক :
বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর সাথে সরকার পতন পর্যন্ত যুগপৎ আন্দোলনের জন্য জোট ছিল বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার ভাষ্যমতে, ‘এই মুহূর্তে কোনো জোট নেই। আমাদের যে জোট ছিল, আন্দোলনের জন্য জোট, সেটা অনেক আগেই অকার্যকর হয়ে গেছে। এটা এখন কোনো কাজ করে না। অনেক আগেই আমরা যুগপৎ আন্দোলন শুরু করেছি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে প্রোগ্রাম ঠিক করে যুগপৎ আন্দোলন করেছি সরকার পতন অবধি। এটা এখন বলবত নেই।’
আজ ৩০ আগস্ট শুক্রবার দেশের একটি জাতীয় দৈনিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জামায়াত ইসলামীর সঙ্গে জোট নিয়ে এ মন্তব্য করেছেন মির্জা ফখরুল। ফখরুল আরো বলেন, ‘অন্য দলগুলোর সঙ্গে আমরা আলোচনা অব্যাহত রেখেছি, কারণ এখনো কেয়ারটেকার সরকার আছে, এরপর নির্বাচন আছে। সুতরাং রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আমরা আলোচনা বজায় রাখছি, এটা জরুরি। এই মুহূর্তে আমাদের কোনো জোট নেই। আমরা জোটবদ্ধ নই।’
নির্বাচনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে সময় দেওয়ার বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার তো অন্তর্বর্তী সরকার। একটি নির্বাচিত সরকার থেকে আরেকটি নির্বাচিত সরকার হতে যে সময় দরকার। এটি কোনো নির্বাচিত সরকার নয়। এটি একটি সিলেক্টেড সরকার।’
এদিকে শেখ হাসিনার পতনের পর থেকেই বিএনপির সঙ্গে পুরোনো সব দ্বন্দ্ব মেটাতে প্রস্তাব করেছেন শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। এ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেছেন, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল সবসময় গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। সরকার পতনের পর চেয়ারপারসনও বলেছেন- আমরা প্রতিশোধ, প্রতিহিংসার রাজনীতি করতে চাই না। আমরা সৌহার্দ্য, ভালোবাসা এবং সুসম্পর্কের রাজনীতি করতে চাই। কিন্তু একই সময়ে জনগণের কাছে জবাবদিহি একটা বড় বিষয়। আজকে আওয়ামী লীগকে তার গত ১৫ বছরের কর্মকাণ্ডের জন্য জবাবদিহি করতে হবে। দেশের রাজনীতি, অর্থনীতিকে কীভাবে তারা ধ্বংস করেছে, তার জন্য তাকে তো জবাবদিহি করতে হবে। তারা জবাবদিহি করে গণতান্ত্রিকভাবে রাজনীতি করলে আমাদের তো কোনো আপত্তি নেই। আমরা বিশ্বাস করি- যেকোনো দলের যে কোনো ব্যক্তির রাজনীতি করার অধিকার আছে, সেভাবে করবে।’
তারেক রহমানকে বিএনপি দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনতে চায় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তাঁর ফিরে আসা দেশের জন্য, দলের জন্য খুব প্রয়োজন।’ এ সময় চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিএনপি কাজ করছে বলেও জানান বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, ‘চেষ্টা হচ্ছে কত দ্রুত তাকে বিদেশে নেওয়া যায়। এটি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে তার শারীরিক কন্ডিশনের ওপর।’ সূত্র : দ্য ডেইলি স্টার
চলারপথে রিপোর্ট :
কনকনে শীতকে উপেক্ষা করে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতায় নারী-পুরুষসহ সকল বয়সী মানুষের ঢল নেমেছে। গ্রামের একটি ফসলের মাঠে অতিথিদের বসার স্টেজ। তার সামনে মাঠের চারপাশে দড়ি দিয়ে গোল চত্বর চিহ্নিত করে, তার চারপাশ দিয়ে ঘুরছে ঘোড়ার দল। শীতকে উপেক্ষা করে কেউ দাঁড়িয়ে, আবার কেউবা মাটিতে বসে উৎসবমুখর পরিবেশে উপভোগ করছেন ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা। আবার মাঠের এক পাশে নানা রকম খাবারের পসরা সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা। যেন সেখানে মেলা বসেছে।
হারিয়ে যাওয়া গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলা পুনরুদ্ধারে মঙ্গলবার পড়ন্ত বিকালে এমন চিত্র দেখা যায় দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার এলুয়াড়ী ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামে। সেখানে এলাকাবাসীর উদ্যোগে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতায় ফুলবাড়ী উপজেলাসহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে তিনটি গ্রুপে ২০ জন খেলোয়াড় তাদের নিজ নিজ ঘোড়া নিয়ে ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন।
দুপুরের পর থেকে দূর-দূরান্ত থেকে ঐতিহ্যবাহী ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতাকে ঘিরে ওই এলাকায় তৈরি হয় উৎসবের আমেজ। খেলা দেখতে পেরেও খুশি দর্শকরা।
খেলা দেখতে আসা শফিকুল ইসলামসহ দর্শকরা বলেন, ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলা। আগে বিভিন্নস্থানে খেলাগুলো দেখা যেতো, কিন্তু এখন আর তেমন দেখা যায় না। দীর্ঘদিন পরে আবারও এমন খেলার আয়োজনে খুশি আমরা। স্থানীয়রাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এই খেলা দেখতে আসেন দর্শনার্থীরা।
খেলার শুরুতে আগে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রতিযোগিতা উদ্বোধন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার এমপি। খেলা শেষে এ প্রতিযোগিতায় তিনটি বিভাগে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অর্জনকারীদের মাঝে পুরস্কার দেওয়া হয়।
ফুলবাড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মিল্টনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মঞ্জু রায় চৌধুরী, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নীরু সামসুন্নাহার, উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মিজানুর রহমান মিজান, সাধারণ সম্পাদক মুশফিকুর রহমান বাবুল, ব্যবসায়ী রাজু কুমার গুপ্ত ও ব্যবসায়ী রাজু কুমার রহুল আমিন প্রমুখ।
অনলাইন ডেস্ক :
রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের বিভিন্ন শহরে নিম্ন আয়ের বিশেষ করে বস্তিবাসীদের জন্য আবাসন প্রকল্প গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।
আজ ১৩ মে সোমবার সচিবালয়ে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে এ উদ্দেশ্যে গণপূর্তমন্ত্রী র. আ. ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর সভাপতিত্বে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা মোতাবেক গণপূর্তমন্ত্রী নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ভাড়াভিত্তিক ফ্ল্যাট নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় প্রকল্প প্রস্তাবনা তৈরি ও তা দ্রুততম সময়ের মধ্যে মন্ত্রণালয়ে প্রেরণের জন্য নির্দেশ দেন। প্রকল্প বাস্তবায়নে তিনি পরিবেশ সুরক্ষা, প্রয়োজনীয় বনায়ন, উন্মুক্ত স্থান সংরক্ষণ, খেলার মাঠ, স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপন, সৌরশক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার, পোড়ামাটির ইটের পরিবর্তে পরিবেশবান্ধব ব্লক ইট ব্যবহার, রেইন ওয়াটার হার্ভেস্টিং এর ব্যবস্থা, সারফেস ওয়াটার ব্যবহারের সর্বোচ্চ সুযোগ রাখার পরামর্শ প্রদান করেন। প্রাথমিকভাবে তিনি জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের আওতায় টঙ্গীর দত্তপাড়ায় তিনটি পর্যায়ে ১০০টি বহুতল ভবনে ১২৬০০টি ফ্ল্যাট নির্মাণের যে প্রস্তাবনা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে তা দ্রুততম সময়ে বাস্তবায়ন করার নির্দেশনা দেন। ইতিমধ্যে এ প্রকল্পের ফিজিবিলিটি স্টাডি (সম্ভাব্যতা যাচাই) সম্পন্ন হয়েছে। প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে ১৭টি ১৫তলা বিশিষ্ট ভবনে ২১৪২টি আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে। ২য় পর্যায়ে ৪৭টি ভবনে ৫৯২২টি ও তৃতীয় পর্যায়ে ৩৬টি ভবনে ৫৪৩৬টি ফ্ল্যাট নির্মাণের প্রস্তাব প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
মন্ত্রী রাজধানীর করাইল বস্তি ও টিএন্ডটি কলোনীর বস্তিতে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ও গণপূর্ত অধিদপ্তরকে পৃথক প্রকল্পের মাধ্যমে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য ফ্ল্যাট নির্মাণের জন্য প্রকল্প গ্রহণের নির্দেশনা প্রদান করেন। ৭৫০ বর্গফুট গ্রস আয়তনের এসব ফ্ল্যাটের অভিন্ন ডিজাইন প্রণয়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তিনি প্রধান স্থপতিকে মৌখিক নির্দেশনা দেন। রাজধানী ঢাকার পাশাপাশি দেশের অন্যান্য শহরেও প্রয়োজনীয়তার নিরিখে পর্যায়ক্রমে এ ধরনের প্রকল্প গ্রহণ করা হবে। উল্লেখ্য, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন উত্তরা আবাসন প্রকল্পে (তৃতীয় পর্যায়) নিম্ন আয়ের মানুষের আবাসনের জন্য ১০ একর জমি নির্দিষ্ট রয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে উক্ত জমিতে নিম্ন আয়ের মানুষের আবাসনের জন্য ফ্ল্যাট নির্মাণে প্রকল্প প্রস্তাব তৈরির জন্য মন্ত্রী নির্দেশনা প্রদান করেন।
প্রকল্প বাস্তবায়নে নিজস্ব অর্থায়নের পাশাপশি বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার অর্থায়নও সম্ভব হলে গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জনান। ইতিমধ্যে রাজধানীর মিরপুরের জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ বস্তিবাসীদের জন্য ৫৩৩টি ভাড়াভিত্তিক ফ্ল্যাট নির্মাণ করেছে। এসব ফ্ল্যাটে তারা স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে বসবাস করছে। এ ছাড়া সিরাজগঞ্জের কোবদাস পাড়ায় জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের স্বল্প আয়ের মানুষের উন্নত জীবন ব্যবস্থা শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে জেলার নদী ভাঙন কবলিত, ভূমিহীন বস্তিবাসীদের পুনর্বাসন করা হয়েছে। পরবর্তী প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে এসব প্রকল্পের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর জন্য মন্ত্রী পরামর্শ দেন। সেই সঙ্গে সরকারের এসব জনহিতকর কার্যক্রম সম্পর্কে সর্বসাধারণের মাঝে ইতিবাচক প্রচারের জন্য তিনি পরামর্শ দেন।
সভায় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নবীরুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিববৃন্দ, জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. মোস্তাফিজুর রহমান, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব) সিদ্দিকুর রহমানসহ মন্ত্রণালয় ও এর অধীন বিভিন্ন দপ্তর/সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
অনলাইন ডেস্ক :
যথাসময়ে নির্বাচন হতে হবে জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ‘রাজনৈতিক বিভাজন থাকতে পারে, তবে সংবিধানের বাইরে গিয়ে ভোট করার কোনো সুযোগ নেই।’
জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদল। আজ ২৯ নভেম্বর বুধবার বিকেল ৩টায় নির্বাচন কমিশন ভবনের ৫০২ নম্বর কক্ষে বৈঠক শুরু হয়, শেষ হয় বিকেল ৫টায়। বৈঠক শেষে এসব কথা বলেন সিইসি।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘ভোট যথাসময়ে হবে, সংবিধানের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। সাংবিধানিক সীমাবদ্ধতা তারা বুঝতে পেরেছেন। কোনো রাজনৈতিক ইস্যুতে যে ইসি হস্তক্ষেপ করতে পারে না এটা তারা (ইইউ প্রতিনিধিদল) বুঝতে পেরেছেন।’
সিইসি বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন করতে আমরা সাংবিধানিকভাবে বাধ্য। এই বিষয়টা আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের স্পষ্ট করে বুঝিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নের অ্যাম্বাসেডর চার্লস হোয়াইটলিসহ ৭টি দেশের রাষ্ট্রদূত এসেছিলেন। এটাকে আমরা বলি ইইউ ডেলিগেশন। তারা আগেও একাধিকবার এসেছেন। তাদের একটা এক্সপার্ট ইলেকশন পর্যবেক্ষণ টিম আসবেন বলে জানিয়েছেন। এরই মধ্যে চারজন এসেছেন। তারা দীর্ঘসময় আমাদের প্রস্তুতি সম্পর্কে জেনেছেন। আমাদের প্রস্তুতিটা অনেক দূর এগিয়ে গেছে। এটা তারা জানতেন না। তারা আজও এসেছেন, এর মধ্যে আমাদের কী কী অগ্রগতি হয়েছে- সে অগ্রগতিগুলো তাদের জানিয়েছি। আমরা আগের মতোই স্পষ্ট করে জানিয়েছি, নির্বাচন ফ্রি-ফেয়ার, পিসফুল এবং ক্রেডিবল যাতে হয়, সেটি নিশ্চিত করতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘আমরা তাদেরকে জানিয়েছি, আমাদের কমিশনাররা বিগত দুই সপ্তাহ ধরে বাইরে বাইরে ঘুরেছেন এবং তারা জনগণ ও প্রশাসনকে বিষয়গুলো অবহিত করেছেন। যাতে করে প্রশাসন স্থানীয়ভাবে তাদের সব শক্তিকে সমন্বিত করে অবাধ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনটা নিশ্চিত হয়। তারা আমাদের বক্তব্যে সন্তুষ্ট হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন করতে আমরা সাংবিধানিকভাবে বাধ্য। এটা আমরা খুব স্পষ্ট করে তাদের বুঝিয়েছি। আমার বিশ্বাস, আমাদের যে সাংবিধানিক সীমাবদ্ধতা এটা তারা বুঝতে পেরেছেন।’
রাজনৈতিক অঙ্গনে যদি কোনো মতবিরোধ থাকে, বিভেদ-বিভাজন থাকে, সেখানে কোনোভাবেই আমরা কোনো হস্তক্ষেপ করতে পারি না বলেও জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার।
বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল ও চার কমিশনার উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে ঢাকায় নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের অ্যাম্বাসেডর চার্লস হোয়াইটলির নেতৃত্বে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ডেপুটি হেড অব মিশন ব্রেন্ড স্পাইনার, সংস্থাটির পলিটিক্যাল অফিসার সেবাস্তিয়ান রিগার ব্রাউন উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন- সুইডেনের অ্যাম্বাসেডর আলেকজান্ডার বার্গ ফন লিন্দ্রে, ডেনমার্কের অ্যাম্বাসেডর ক্রিস্টিয়ান ব্রিক্স মুলার, স্পেনের অ্যাম্বাসেডর ফ্রান্সিসকো ডি আসিস বেনিতেজ সালাস, ইতালির অ্যাম্বাসেডর আন্তোনিও অ্যালেসান্দ্রো, কিংডম অব নেদারল্যান্ডসের অ্যাম্বাসেডর ইরমা ফেন ডুয়েরেন, ফ্রান্সের ডেপুটি হেড অব মিশন গুইলাম অড্রেম ডে কারড্রেল ও জার্মান অ্যাম্বাসির উপরাষ্ট্রদূত জ্যান জ্যানোভস্কি।
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘রমজান মাসের শুরুতে খেজুর, আমদানি করা ফল, লেবু, তরমুজ, পেঁয়াজসহ কয়েকটি পণ্যের দাম কিছুটা চড়া ছিল। তবে এসব পণ্যের দাম কয়েক দিনের মধ্যেই স্বাভাবিক ও সহনীয় পর্যায়ে নেমে এসেছে। জিনিসপত্রের দাম বাড়লে সাধারণ মানুষের, বিশেষ করে সীমিত আয়ের মানুষের কষ্ট হয়। আমরা দেশবাসীর প্রত্যাশা অনেকাংশেই পূরণ করতে সক্ষম হয়েছি।’
আজ ২৫ মার্চ সোমবার সন্ধ্যায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এ বছর সরকারিভাবে এবং দলগতভাবে ইফতার পার্টির আয়োজন নিরুৎসাহিত করেছি। আওয়ামী লীগ এবং এর সকল সহযোগী সংগঠন নির্দেশমতো তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত গরিব-দুস্থদের মধ্যে ইফতারসামগ্রী বিতরণ করছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এবারের রমজান মাসকে সামনে রেখে আমরা বেশ আগে থেকেই চিনি, ছোলা, ডাল, ভোজ্য তেলসহ কয়েকটি পণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ গড়ে তুলি।
একচেটিয়া বাজার তৈরি করে অধিক মুনাফা যাতে কেউ করতে না পারে সে জন্য ভারত হতে ৫০ হাজার মেট্রিক টন পিঁয়াজ এবং প্রায় সমপরিমাণ আলু আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়। পাশাপাশি রমজান মাসের শুরু হতে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য রাজধানী ঢাকার অন্তত ২৫টি স্থানে ট্রাকে করে মাছ, মাংস, ডিম এবং দুধ সুলভ মূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে। টিসিবি প্রথম পর্যায়ে সারা দেশের এক কোটি কার্ডধারী পরিবারের জন্য সুলভ মূল্যে চাল, ডাল, ভোজ্য তেল, চিনি এবং ছোলা―এই পাঁচটি পণ্য বিতরণ করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দ্বিতীয় পর্যায়ে ঢাকা ও আশপাশের এলাকার কার্ডধারী পরিবারের জন্য চাল, ডাল, ভোজ্য তেল, চিনি, ছোলা ও খেজুর―এই ছয়টি পণ্য বিতরণ করছে।
ঈদ উপলক্ষে সারা দেশের এক কোটি ৬২ হাজার ৮০০ পরিবারের জন্য সরকার এক লাখ ৬২৮ মেট্রিক টন চালের বিশেষ বরাদ্দ দিয়েছে। প্রতি পরিবার বিনা মূল্যে ১০ কেজি করে চাল পাবেন।
তিনি আরো বলেন, লাদেশ আওয়ামী লীগ জন্মের পর থেকেই গণতন্ত্র, মানবিধাকার এবং মানুষের মৌলিক অধিকার আদায়ের লড়াই করে আসছে। এসব লড়াইয়ের অংশ হিসেবেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পাকিস্তানের স্বৈরশাসন, শোষণ-নির্যাতনের নাগপাশ থেকে মুক্তিলাভ করে সৃষ্টি হয় বাংলাদেশের। সাধারণ মানুষের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য তিনি প্রণয়ন করেন বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংবিধান যেখানে চার মূলনীতি হিসেবে যুক্ত হয়েছে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র এবং ধর্মনিরপেক্ষতা।
১৯৭৫-এর পর আইয়ুব-ইয়াহিয়ার অনুকরণে জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করলে আওয়ামী লীগই প্রথম এগিয়ে আসে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে। পরের ২১ বছর আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মী রাজপথে রক্ত ঝরিয়েছে গণতন্ত্র এবং ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। ১৯৮১ সালে ছয় বছরের নির্বাসন শেষে দেশে ফিরে আসার পর ভোট ও ভাতের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম করতে গিয়ে আমাকেও বারবার মৃত্যুর মুখোমুখি এবং কারাবন্দি হতে হয়েছে। আমাকে হত্যার জন্য কমপক্ষে ১৯ বার সশস্ত্র আক্রমণ চালানো হয়।