অনলাইন ডেস্ক :
মুক্তি পেয়েছেন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রধান জল্লাদ শাহজাহান ভূঁইয়া। আজ ১৮ জুন রবিবার সকাল ১১টা ৪৬ মিনিটে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি।
অস্ত্র ও হত্যা মামলায় ৪২ বছরের দণ্ডপ্রাপ্ত শাহজাহানের সাজা কমে ৩২ বছর হয়েছে। সেই সাজা খেটে ৭৩ বছর বয়সী শাহজাহান ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেতে যাচ্ছেন। ১৯৫০ সালের ২৬ মার্চ নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ইছাখালী গ্রামে জন্ম নেওয়া শাহজাহান ভূঁইয়া উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শেষ করে স্থানীয় রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন।
নথি অনুসারে, ১৯৯২ সালের ৮ নভেম্বর ডাকাতির জন্য ১২ বছর এবং ১৯৯৫ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর অপর একটি মামলায় ডাকাতি ও হত্যার জন্য ৩০ বছরের কারাদণ্ড হয় তার। এ ছাড়া, উভয় রায়ে তাকে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদণ্ড হয় তার। শাহজাহান দাবি করেন, তিনি আরো বেশি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছেন। তবে, জেলের রেকর্ডে এই সংখ্যা ২৬।
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুভাষ কুমার ঘোষ বলেন, ‘হয়তো তিনি ঠিক বলে থাকতে পারেন কিন্তু এখন পর্যন্ত আমাদের রেকর্ডে ২৬টি তথ্যই আছে।’
এই ২৬ জনের তালিকায় আছে সাবেক মন্ত্রী আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলী এবং বঙ্গবন্ধুর খুনি বজলুল হুদা ও শাহরিয়ার রশিদের নাম।
কারা কর্মকর্তারা বলছেন, প্রবিধান অনুসারে শাহজাহানের সাজা ১০ বছরের কিছু বেশি সময় কমানো হয়েছে। যেহেতু শাহজাহানের সঙ্গে কেউ কখনো দেখা করতে আসেনি, তাই কারা কর্তৃপক্ষ তার ওই ২ মামলার জরিমানার ১০ হাজার টাকা পরিশোধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সুভাষ কুমার ঘোষ বলেন, ‘শাহজাহান তার জীবনের একটা বড় অংশ জেলে কাটিয়েছেন। কারামুক্তির খবরে তিনি খুশি হলেও যাওয়ার জায়গা না থাকায় তিনি উদ্বিগ্ন।’ সুভাষ জানান, কারা কর্তৃপক্ষ শাহজাহানকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করবে, যাতে তিনি তার বাকি জীবন সুন্দরভাবে কাটাতে পারেন।
শাহজাহান বিয়ে করেনি এবং তার বাবা-মাও বেঁচে নেই। তারপরও তিনি কারাগার থেকে বের হওয়ার পর গ্রামের বাড়িতে যেতে চান জানিয়ে সুভাষ বলেন, ‘তিনি (শাহজাহান) আমাদের বলেছিলেন যে, বাকি জীবন পৈতৃক গ্রামে কাটানোর ইচ্ছা তার।’
অনলাইন ডেস্ক :
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ৯ মার্চ। এছাড়া মৃত্যুজনিত কারণে একই দিন কুমিল্লা সিটির মেয়র পদে উপ-নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
নির্বাচন কমিশনার (ইসি) আনিছুর রহমান আজ ২২ জানুয়ারি সোমবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) এই দুই নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা চলবে ভোটগ্রহণ।
আনিছুর রহমান বলেন, এবারও ৫ ধাপে অনুষ্ঠিত হবে উপজেলা পরিষদের নির্বাচন। এপ্রিলে প্রথম ধাপের নির্বাচন সম্পন্ন করার পরিকল্পনা আছে।
অনলাইন ডেস্ক :
ধর্ম-বর্ণ ও মতের পার্থক্য থাকলেও বাংলাদেশের সব মানুষ একই পরিবারের সদস্য বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি আরো বলেন, শত পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও আমরা পরস্পরের শত্রু নই।
আজ ৫ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ও মুসলিমসহ বিভিন্ন ধর্মের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
অধ্যাপক ড. ইউনূস বলেন, আমাদের নানামত, নানা ধর্ম থাকবে, নানা রীতিনীতি থাকবে কিন্তু আমরা সবাই একই পরিবারের সদস্য। এটাতে জোর দিয়েছিলাম। শত পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও আমরা পরস্পরের শত্রু নই। আমাদের জাতীয়তা, পরিচয়ের প্রশ্নে এক জায়গায় চলে আসি। আমরা বাংলাদেশি, এক পরিবারের সদস্য।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শপথ গ্রহণের পরে শুনতে আরম্ভ করলাম সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন হচ্ছে। তখন মনটা খারাপ হয়ে গেল। এর পরপরই ঢাকেশ্বরী মন্দিরে গেলাম। সেখানেও বললাম আমরা একই পরিবারের সদস্য। তিনি বলেন, সব দাবিদাওয়া বাদ দিলেও একটা দাবি পরিষ্কার আমাদের সবার সমান অধিকার, বলার অধিকার, ধর্মের অধিকার, কাজকর্মের অধিকার। সেটা এসেছে সংবিধান থেকে। যেটা নাগরিক হিসেবে প্রাপ্য, রাষ্ট্রের দায়িত্ব সেটা নিশ্চিত করা। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, শুনলাম এখনো সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হচ্ছে। তাই আমি সবাইকে নিয়ে বসলাম এটা থেকে কীভাবে উদ্ধার হওয়া যায়। দুর্গাপূজার নিরাপত্তায় সরকারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, সেটা পুরো জাতীয় উৎসবে পরিণত হয়েছিল। তখন তৃপ্তি পেলাম একটুতো কাজ করেছি। ভুল তথ্যের বিষয়ে সবাইকে সজাগ ও সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এখন আবার নতুন কথা হামলা হচ্ছে, অত্যাচার শুরু হচ্ছে। বিদেশি গণমাধ্যম বলব না প্রচার মাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে। আমি খোঁজ নিচ্ছি, কী হচ্ছে? সবদিকে দেখলাম এটা হচ্ছে না। তথ্যের মধ্যে বিশাল ফারাক আছে। এটা ঠিক না। এটার অবসান হতে হবে। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা যে তথ্য পাচ্ছি তা ভুল হতে পারে। তথ্যের ওপর বসে থাকার কিছুই নেই, এটার অর্থ অন্ধের মতো বসে থাকা। ভেতরে গিয়ে দেখতে হবে। খোঁজ নিতে হবে তথ্যের গরমিল কেন? তাতে ওরা যা বলছে তা কি মিথ্যা প্রচার? না আমরা যা বলছি তা মিথ্যা প্রচার। সত্যটা কোথায়? তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্যের কোনো ফারাক নেই। সঠিক তথ্য কীভাবে পাব, সেটা আমাদের জানা প্রয়োজন। প্রকৃত তথ্যের ক্ষেত্রে অনেক সময় সরকারি তথ্যের ওপর ভরসা করে লাভ নেই। কারণ কর্তা যা চাই, তারা সেভাবে বলে। আসলটা মন খুলে বলতে চাই না। আমরা আসল খবরটা জানতে চাই। সেই প্রক্রিয়াটা প্রতিষ্ঠিত করতে চাই। এত বড় দেশে যে কোনো ঘটনা ঘটতে পারে, কিন্তু প্রকৃত তথ্য জানতে চাই। তাৎক্ষণিক খবর পেলে যাতে সমাধান করা যায়। যেদিক থেকেই দোষী দোষীই। তাকে বিচারের আওতায় আনা সরকারের দায়িত্ব। ড. ইউনূস বলেন, প্রথম কথাটা হলো না হওয়ার পরিবেশ সৃষ্টি করা। আর হয়ে গেলে তাৎক্ষণিক প্রতিকারের ব্যবস্থা করা। আমি যা বলছি তা দেশের বেশিরভাগ মানুষ মনে করে। আমরা এক পরিবারের মানুষ হিসেবে সামগ্রিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারি। সেখানে তথ্য ও প্রতিকার হলো বড় বিষয়। তিনি বলেন, আমি পেলাম তথ্য কিন্তু প্রতিকার পেলাম না। সমস্যা হয়ে গেলে সমাধান করতে হবে। আজকের আলোচনা খোলাখুলি, আমরা সবাই আলোচনা করব। আমাদের লক্ষ্যে কোনো বাধা নেই। তথ্যপ্রবাহ কীভাবে পাব, দোষীকে কীভাবে ধরব। যাতে সবাই সঠিক তথ্যটা পেয়ে যায়। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এমন বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলতে চাই। যার নাম দিয়েছি নতুন বাংলাদেশ। এটা আমাদের করতে হবে। আপনাদের কথা বলে সন্তুষ্ট করে আজকের মতো বিদায় দিলাম, তা নয়। এটা দ্রুত করতে হবে।সংখ্যালঘু সমস্যার বিষয়ে অবাধ, সত্য তথ্য কীভাবে সংগ্রহ করা যায় সে বিষয়ে ধর্মীয় নেতাদের পরামর্শ চান প্রধান উপদেষ্টা। তিনি বলেন, কীভাবে নিরাপদে তথ্য সংগ্রহ করব? যে তথ্য দিচ্ছে সে যেন বিব্রত না করে তাও নিশ্চিত হতে হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
মানসিক স্বাস্থ্য একটি সর্বজীনন মানবাধিকার এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে পাবনায় নানা কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস পালন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে আজ ১০ অক্টোবর মঙ্গলবার সকালে পাবনা মানসিক হাসপাতালের পরিচালক ডা: শাফকাত ওয়াহিদ এর নেতৃত্বে একটি র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি হাসপাতাল চত্ত্বর প্রদক্ষিণ করে হাসপাতাল গেটে এসে শেষ হয়। পরে হাসপাতাল হল রুমে একটি সাইন্টিফিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
পাবনা মানসিক হাসপাতালের পরিচালক ডা: শাফকাত ওয়াহিদের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন পাবনা মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ডা: মো. উবাইদুল্লাহ ইবনে আলী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন পাবনা মেডিকেল কলেজের ইএনটি বিভাগের অধ্যাপক ডা: আহম্মেদ তাউস, পাবনা মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা: এ এম. শফিকুল হাসান, পাবনা মেডিকেল কলেজের সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা: এম ডি. রায়হানুর রহমান, পাবনা মেডিকেল কলেজের সাইকিয়াট্রি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা: মোহাম্মদ আলী, পাবনা জেলা হিউম্যান রাইটস কমিটির ইউনিট কো-অর্ডিনেটর ব্লাস্ট মেম্বার এম ডি. আলমগীর হোসেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন পাবনা মানসিক হাসপাতালের সুপারিনটেনডেন্ট ডা: মো. এহিয়া কামাল, পাবনা মানসিক হাসপাতালের সাইকিয়াট্রি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা: এম ডি. রাজিবুর রহমান, পাবনা মানসিক হাসপাতালের সাইকিয়াট্রি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা: এ কে এম. শফিউল আযম, পাবনা মানসিক হাসপাতালের সাইকিয়াট্রি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা: আহসান আজিজ সরকার, ডা: আঞ্জুমান-ই- ফেরদৌস, ডা: আফরিন জান্নাতুল ফেরদৌস, ডা: আসমা খাতুন, ডা: মো. রুহিদ হোসেন, ডা: মো. মুশফিকুর রহমান, ডা: মো. মাহফুজুর রহমান প্রমুখ।
চলারপথে রিপোর্ট :
খুবই নিস্তব্ধ ও সুনসান নীরব দুলালপুর গ্রামটি। লালমাটির ওপর তৈরি পাঁকা সড়ক দিয়ে ভেতরে ঢুকলেই দুই পাশে দেখা যায় হরেক রকমের বাগান। আর সেখানেই স্থানীয় আলমগীর ভূঞা গড়ে তুলেছেন চায়না থ্রি জাতের কমলার বাগান। বাগানজুড়ে ধরে আছে অনেক রঙিন কমলা। গত বছরও এ বাগানে প্রচুর কমলা ধরেছিল। দ্বিতীয়বারের মতো বাগানে কমলার বাম্পার ফলন হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার বিষ্ণপুর ইউনিয়নের একটি গ্রাম দুলালপুর। ২০১৯ সালে বিজয়নগর উপজেলার বিষ্ণপুর ইউনিয়নে চায়না জাতের কমলা বাগানের যাত্রা শুরু হয়। প্রবাসফেরত আলমগীর ভূঞা এই এলাকায় সর্বপ্রথম চায়না থ্রি জাতের কমলার বাগান চাষের উদ্যোগ নেন। পরীক্ষামূলক চাষেই তিনি লাভবান হয়েছেন। ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও বিভিন্ন গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছে দুলালপুরের এই কমলা বাগান। বিভিন্ন হণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, গত মৌসুমে আলমগীর ভূঞা ১৩ লাখ ৬৫ হাজার টাকার কমলা বিক্রি করেছিলেন। কমলা বাগানে কর্মরত মো. রাসেল গণমাধ্যমকে বলেন, এ বছর আলমগীর ভূঞা দুই বিঘা জমিতে চায়না থ্রি জাতের কমলার চাষ করছেন। বিশাল এই বাগানে রয়েছে ১৭৫টি গাছ। তবে বাগানে পরিচর্যা ও যত্নে দিতে হয় অক্লান্ত শ্রম ও অর্থ। দুই বিঘা জমির কমলা চাষে খরচ পড়েছে সাড়ে ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা। গত বছরের তুলনায় যত্ন ভালো হওয়ায় ও স্থানীয় কৃষি অফিসারের সঠিক পরামর্শে ১৬ খেকে ১৭ লাখ টাকার কমলা বিক্রি হবে বলে আশা রাসেলের। জানা যায়, আলমগীর মিয়ার চাষ দেখে অনেকেই এখন কমলা চাষে উদ্বুদ্ধ হয়েছে। বাণিজ্যিকভাবে বিষ্ণপুর গ্রামে এখন পাঁচজন কমলাচাষ করছেন। তারা হলেন—ছতুরপুর গ্রামের খোকন মিয়া, মহেশপুর গ্রামের নুরুজ্জামান, কালু মিয়া, ইগরতলির তৈয়বুর রহমান।
কথা হয় আরেক কমলা চাষি মহেশপুর গ্রামের নুরুজ্জামানের সঙ্গে। তিনি জানান, প্রবাস থেকে ফিরেছেন চার বছর আগে। এলাকায় ফিরেই চাষাবাদ শুরু করেন। গত মৌসুমে আলমগীর মিয়াকে দেখেই নতুন উদ্যোক্তা হয়ে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা খরচ করে তিন বিঘা জমিতে চায়না থ্রি জাতের রঙিন কমলা চাষ করেন। নতুন উদ্যোক্তা হিসেবে ভালো মুনাফা হবে বলে আশা ব্যক্ত করেন নুরুজ্জামান।
বাগানে প্রবেশ করলেই বাশের বেড়া দিয়ে বানানো হয়েছে একটি ছোট ঘর। তার পাশেই টেবিল চেয়ার ও মাপ নির্ধারণের জন্য ডিজিটাল মেশিন নিয়ে বসে রয়েছেন বাগানের কর্মরত লোকজন। পাশেই একটি বিশাল ঝুড়িতে রাখা আছে কমলা। বাগানে ঘুরতে আসা দর্শনার্থী অথবা কমলা নিতে আসা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করতেই ঝুড়িতে কমলাগুলো বাছাই করে রাখা হয়েছে। ব্যবসায়ী অথবা দর্শনার্থী সবার কাছ থেকে ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয় রঙিন কমলা। তবে অনেকেই আবার ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছে। সেই কমলাগুলো পাকাপোক্ত হওয়ার আগেই এমন দরে বিক্রি করছে। বাগানের ভেতর ঢুকতেই দেখা মিলে মনোমুগ্ধকর অপূর্ব দৃশ্য। বাগানজুড়ে ধরে আছে অনেক কমলা। প্রতিটি গাছের থোকায় থোকায় সবুজ পাতার ফাঁকে যেন রঙিন কমলাগুলো উঁকি দিচ্ছে।
বিজয়নগর উপজেলার বিষ্ণপুর ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল উদুদ জানান, বিজয়নগর কৃষিতে সম্ভাবনাময় একটি উপজেলা। এ উপজেলায় নানা সবজি ও ফলমূল আবাদ হচ্ছে। ইতোমধ্যে এ অঞ্চলের লিচুর খ্যাতি পুরো দেশজুড়ে। কাঁঠাল, পেয়ারা, ড্রাগন, আম, আনারস, বড়ই, গ্রিন মাল্টা চাষ হচ্ছে। এরই মধ্যে চায়না কমলা চাষ শুরু হয়। বাণিজ্যিকভাবে নতুন করে কমলা চাষে অনেকেই আগ্রহী হচ্ছেন। এখন পর্যন্ত ৯ বিঘা জমিতে চায়না কমলা আবাদ করেছেন পাঁচজন কৃষক। এ বছর বিষ্ণপুর ইউনিয়নের এই পাঁচ বাগানে ২৫ লাখ টাকার কমলা বিক্রি লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। তবে আশা করি সেটি ছাড়িয়ে যাবে এবং সামনে কমলার বাগান আরও বাড়বে বলে কৃষি বিভাগ মনে করেন।
এদিকে কমলা বাগানগুলো এখন ভ্রমণের স্থান হিসেবে রূপ নিয়েছে। রঙিন কমলার স্বাদ নিতে ভ্রমণপিপাসুরা আসছেন প্রতিনিয়ত। বাগান পরিদর্শন শেষে টাটকা কমলা ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছে বাড়ি। কমলা বাগানের এমন দৃশ্য দেখতে প্রতিনিয়ত ভিড় জমান দর্শনার্থীরা।
বাগানে ঘুরতে আসা এক দম্পতি জানান, ফেসবুকের ছবি দেখে বাগানে এসেছেন নিজের চার বছরের ছেলেকে নিয়ে। কমলা বাগান দেখে অনেকটাই মুগ্ধ হয়েছেন। এই বাগানের কমলা খেতে নাকি বেশ সুস্বাদু বলে জানান তিনি।
স্টাফ রিপোর্টার:
বিদ্যুৎ খাতে দক্ষতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ এবং সর্বোপরি গ্রাহক সেবার মান উন্নয়নে এন্টারপ্রাইজ রিসোর্স প্ল্যানিং (ইআরপি) বাস্তবায়নে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগ ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ পুরস্কার ২০২২’ অর্জন করেছে। সোমবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব হাবিবুর রহমানের হাতে এ পুরস্কার তুলে দেন।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিতে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াচ্ছি। ইআরপি বাস্তবায়নের ফলে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ, ব্যয় হ্রাস, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ, পারফর্মেন্স পর্যালোচনা, তথ্যের অবাধ বিনিময়, তথ্যগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। সরকারি পর্যায়ে বিদ্যুৎ বিভাগেই প্রথমবারের মতো সফলভাবে ইআরপি বাস্তবায়ন করা হয়েছে। যা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানেও উৎসাহের সঞ্চার করবে। তিনি আরও বলেন, আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা চিহ্নিত করতে এই প্রযুক্তিটি কার্যকরি অবদান রাখবে। ইতোপূর্বে আমরা শতভাগ বিদ্যুতায়নের মাধ্যমে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ এবং মুজিববর্ষে শতভাগ বিদ্যুতায়ন সফলভাবে সম্পন্ন করায় ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২২’ অর্জন করেছি।
দক্ষতা উন্নয়ন, অটোমেশন প্রক্রিয়া ত্বরান্বিতকরণ, বাজেট ও ব্যয় ব্যবস্থাপনায় গতিসঞ্চার করা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, জনগণের সাধ্যের মধ্যে নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করাসহ গ্রাহকের সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে বিদ্যুৎ বিভাগ এবং এর আওতাধীন ১৫টি সংস্থায় ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে ইআরপি কার্যক্রম বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। প্রথমবারের মতো সরকারি পর্যায়ে এ উদ্যোগ গ্রহণ করায় প্রাথমিকভাবে বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিলেও সংশ্লিষ্ট সবার ঐকান্তিক প্রয়াসের ফলে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ৪টি মডিউল বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়। এ ৪টি মডিউলের বিশেষ দিকগুলো হলো- হিউম্যান রিসোর্স অ্যান্ড পে রোল, ফিক্সড অ্যাসেট, প্রকিউরমেন্ট এবং ফাইন্যান্স।