চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রায় ৫৫ কিলোমিটার সড়কের পিচ উঠে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। গত কয়েক দিনের প্রবল বর্ষণে এসব রাস্তা আরো বেহাল হয়ে পড়েছে। গর্তে যানবাহন আটকে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। এসব সড়কে হেঁটে চলা দায় হয়ে পড়েছে এলাকাবাসীর।
নাসিরনগর উপজেলার ধরমন্ডল, হরিপুর, চাতলপার, গোয়ালনগর, চাপরতলা, গোকর্ণ, কুন্ডা ও সদরের বিভিন্ন সড়কে চালক-যাত্রী ও বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চার বছর ধরে উপজেলার বিভিন্ন সড়ক বেহাল। সংস্কারও নেই। চার বছরে এসব সড়কে দুই শতাধিক যানবাহন দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে। ঝাঁকুনি থেকে বাচতে হেঁটে গন্তব্যে যাচ্ছেন অনেকে। রোগী, বয়স্ক ব্যক্তি ও অন্তঃসত্ত্বা নারীদের নিয়ে পথ চলতে বেশি সমস্যা হচ্ছে।
জানা গেছে, উপজেলায় এলজিইডির ১০৩ কিলোমিটার পাকা সড়ক রয়েছে। এর মধ্যে গত বছরের বন্যায় প্রায় ৫৫ কিলোমিটার সড়ক, ১০টি সেতু-কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এসব সড়কের অধিকাংশ সংস্কার হয়নি। তবে ২০২১-২২ ও ২৩ অর্থবছরে সদর থেকে তিলপাড়া হয়ে চিতনা পর্যন্ত ছয় কিলোমিটার রাস্তা মেরামত করা হয়েছে।
নাসিরনগর থেকে ধরমন্ডল ইউনিয়নে যেতে ৯ কিলোমিটার পাকা সড়ক রয়েছে। এ রাস্তা ব্যবহার করে পাশের লাখাই উপজেলার ২০টি গ্রামসহ ধরমন্ডল ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রাম। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় ইট, বালু ও কার্পেটিং উঠে গিয়ে সড়ক খানাখন্দে ভরে গেছে। রাস্তার অবস্থা এতটাই খারাপ যে মানুষ হেঁটে যেতেও ভয় পায়।
ধরমন্ডল ইউনিয়নের বাসিন্দা আতর চান বিবি বলেন, ‘গাড়িত উঠলে ঝাক্কি লাগে। মাজায় ব্যথা করে। তাই হাইট্ট্যা (হেঁটে) বাড়িত যাইতাছি।’
সদরের কলেজ মোড় থেকে গোকর্ণ ও হরিপুর ইউনিয়ন হয়ে পাশের উপজেলা মাধবপুর পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার সড়কে প্রায় ১৮ হাজার গর্তের সৃষ্টি হয়েছে বলে দাবি এলাকাবাসীর। তিন ইউনিয়নের ৩৫টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ ভোগান্তিতে আছে। কলেজ মোড় থেকে গোকর্ণ ইউনিয়নের ছৈয়ারকুড়ি বাজার পর্যন্ত সাত কিলোমিটার সড়কের প্রতি পাঁচ ফুট দূরত্বে বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে।
গোকর্ণ সৈয়দ ওয়ালী উল্লাহ স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী তায়েবা আক্তার বলল, তারা তিন কিলোমিটার হেঁটে বাড়িতে যাওয়া-আসা করে প্রতিদিন। যানবাহন থাকলেও ঝাঁকুনির ভয়ে কেউ গাড়িতে উঠতে চায় না।
হরিপুর ইউনিয়নের মঞ্জুর আলী বলেন, ‘রাস্তার অবস্থা এত খারাপ যে এক দিন গাড়িত উঠলে তিন দিন ঘুমান লাগে। ভোটের সময় নেতারা রাস্তা কইরা দেওনের কথা কইলেও ভোট চইলা গেলে দেয় না।’
স্বস্তিতে নেই কুন্ডা, ফান্দাউক ও চাপরতলা ইউনিয়নের লোকজনও। তাঁদের অভিযোগ, কুন্ডা ইউনিয়নের তুল্লাপাড়া থেকে মছলেন্দপুর পর্যন্ত সাত কিলোমিটার, মছলেন্দপুর থেকে রানিয়াচং আশ্রয়ণ প্রকল্প পর্যন্ত প্রায় ছয় কিলোমিটার পাকা রাস্তা এখন কাঁচা সড়কে পরিণত হয়েছে।
গোকর্ণ ইউনিয়নের বেড়িবাঁধের রাস্তা এবং ওই এলাকার দুটি সেতু ভেঙে রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে। বর্ষায় অতিরিক্ত পানি হলে বেড়িবাঁধ ভেঙে এলাকার বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হবে বলে শঙ্কা স্থানীয়দের।
বুড়িশ্বর ইউনিয়নের বেনীপাড়া গ্রামে হবিগঞ্জ-নাসিরনগর-সরাইল আঞ্চলিক মহাসড়কের একটি সেতুর রেলিং ভেঙে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। বাঁশ দিয়ে বেঁধে সেতুটি রক্ষার চেষ্টা করছে সংশ্লিষ্টরা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী ডেইজি রায় টুম্পা বলেন, বিষয়টি জানা ছিল না তাঁর। তবে সেতুর অবস্থা দেখে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
পাউবো নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনজুর রহমান বলেন, কুন্ডা ও গোকর্ণ বেড়িবাঁধ এলাকায় নতুন করে সেতু নির্মাণ করছেন না তারা। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সেতুটি দেখভাল করবে।
উপজেলা প্রকৌশলী রবিউল হোসাইন বলেন, এসব রাস্তা ও সেতুর টেন্ডার প্রক্রিয়া চলমান। বর্ষায় যেন জনদুর্ভোগ কমানো যায়, সে জন্য কিছু রাস্তা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সংস্কার করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
নাসিরনগরে দুর্নীতি দমন কমিশনের আয়োজনে ও উপজেলা দূর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির উদ্যোগে এবং মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের সহযোগিতায় উপজেলা পর্যায়ে দুর্নীতি বিরোধী রচনা ও বিতর্ক প্রতিযোগিতা এবং পুরস্কার বিতরন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ২২ মে বুধবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে ‘রুখবো দুর্নীতি গড়বো দেশ, হবে সোনার বাংলাদেশ”এই শ্লেøাগানে এবং অভাব নয়, সীমাহীন লোভই দুর্নীতির কারণ বিষয়ে বির্তক প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়। বির্তক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি প্রধান শিক্ষক মোঃ আবদুর রহিম।
উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন ভূইয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ সোহাগ রানা, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আজহারুল ইসলাম ভূইয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক মোহাম্মদ আরজু, নাসিরনগর সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) জামিল ফোরকান, নাসিরনগর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ আবদুল হক।
অনুষ্ঠানে দুর্নীতি বিরোধী রচনা প্রতিযোগিতায় দুই গ্রুপে ৬ জন বিজয়ী ও বির্তক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন এবং রানার্সআপ বিজয়ী দলের মাঝে পুরস্কার প্রদান করা হয়। এসময় বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, উপজেলার বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮২ জন শিক্ষার্থী রচনা প্রতিযোগিতায় ও চারটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দুর্নীতি বিরোধী বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহন করে। বির্তক প্রতিযোগিতার চুড়ান্ত পর্বে নাসিরনগর আশুতোষ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ও গোকর্ণ সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহ স্কুল এন্ড কলেজ দল অংশগ্রহন করে। চুড়ান্ত পর্বে বির্তকের বিষয় ছিল অভাব নয় সীমাহীন লোভই দুর্নীতির প্রধান কারণ।
এতে নাসিরনগর আশুতোষ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় বিপক্ষে অংশগ্রহন করে প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। শ্রেষ্ঠ বক্তা নির্বাচিত হন নাসিরনগর আশুতোষ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইফফাত জাহান ফারিয়া।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে প্রান্তিক শিশুদের অধিকার, উন্নয়ন ও মননশীলতা বিকাশের লক্ষ্যে উপজেলার জেঠাগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয় মিলনায়তনে “মিট দ্যা চিলড্রেন” শীর্ষক কর্মশালা আজ ২ মার্চ শনিবার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
“শিশুরা দেশের সব চাইতে মূল্যবান সম্পদ, কেননা স্মার্ট বাংলাদেশ বির্নিমাণে তাদের হাত ধরেই আসবে আগামী দিনের সমষ্ঠিগত উন্নয়ন ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে জেঠাগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণির ১৫০ জন শিক্ষার্থীকে নিয়ে অনুষ্ঠিত দিনব্যাপী এই কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্বাস উদ্দিন।
এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন “মিট দ্যা চিলড্রেন” বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী মোঃ আরিফ ইকবাল।
বিশেষ অতিথি ছিলেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: আওতাদ হোসেন খানঁ, নাসিরনগর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আজিজুর রহমান চৌধুরী, শিক্ষানুরাগী মোঃ মাহবুবুর রহমান, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য, মোঃ শহীদ মাষ্টার, বিপ্লব দেব।
দিনব্যাপী কর্মশালা পরিচালনা করেন বিশিষ্ট মোটিভেশনাল স্পিকার ও লিডারশীপ ট্রেইনার মো: এখলাছ উদ্দিন।
উক্ত কর্মশালার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সচেতনতা, শিক্ষা পরিকল্পনা, খেলাধূলা, বিজ্ঞান চর্চা, সাংস্কৃতিক চর্চা ও সৃষ্ঠিশীল বিভিন্ন কার্যক্রমের উপর আলোকপাত করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার নাসিরপুর সাহেব বাড়ির কৃতি সন্তান সৈয়দ শাহ আবদুল্লাহ কল্যাণ ট্রাস্টের সভাপতি দানবীর মরহুম আলহাজ্ব সৈয়দ আবু এমাদের মাগফিরাত কামনায় আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
৫ মার্চ মঙ্গলবার বিকালে স্থানীয় এলাকাবাসীর আয়োজনে সুচীউড়া গাউছিয়া আজিজিয়া আবদুল্লাহ (রহ:) দাখিল মাদ্রাসা মাঠে সৈয়দ আবু এমাদের জীবন ও কর্ম শীর্ষক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
পীরজাদা সৈয়দ সিরাজুল ইসলাম কনা মিয়ার সভাপতিত্বে মো: মিছির উদ্দিন মাষ্টারের পরিচালনায় আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথি ছিলেন গাউছিয়া আজিজিয়া আবদুল্লাহ (রহ:) দাখিল মাদ্রাসার প্রতিষ্টাতা সভাপতি পীরে তরিকত আলহাজ্ব মাওলানা সৈয়দ আবুল মোজাররদ আশিক বিল্লাহ।
বিশেষ অতিথি‘র বক্তব্য রাখেন বৃন্দাবন সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর সৈয়দ ছগির আহমেদ, প্রভাষক মাওলানা এখলাছুর রহমান, গাউছিয়া আজিজিয়া আবদুল্লাহ (রহ:) দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো: শাহ আলম, সাবেক প্রধান শিক্ষক সৈয়দ শওকতুল ইসলাম,গোর্কণ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি মো: আমিনুল ইসলাম বেলায়েত,গাউছিয়া আজিজিয়া আবদুল্লাহ (রহ:) দাখিল মাদ্রাসার সহ-সভাপতি মো: আতিকুর রহমান খসরু,সমাজসেবক হুমায়ুন রেজা চৌধুরী, মো: আকতার হোসেন,শিক্ষক হোসাইন আহমেদ ও হাবিবুর রহমান মাষ্ঠার।
আলোচনা সভা শেষে মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি পীরে তরিকত আলহাজ্ব মাওলানা সৈয়দ আবুল মোজাররদ আশিক বিল্লাহ ।
দোয়া মাহফিলে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ গ্রহণের পর নাসিরনগর উপজেলার সকল কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় ও মাসিক সমন্বয় সভার মধ্যদিয়েই প্রথম সরকারি কাজ শুরু করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দ এ.কে একরামুজ্জামান সুখন।
আজ ২৫ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মো: ইমরানুল হক ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন নব-নির্বাচিত সংসদ সদস্য বিশিষ্ট শিল্পপতি সৈয়দ এ.কে একরামুজ্জামান সুখন।
আরো বক্তব্য রাখেন উপজেলা চেয়ারম্যান ও আইনশৃঙ্খলা কমিটির উপদেষ্টা রাফিউদ্দিন আহমেদ, উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি মোনাব্বর হোসেন, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ ফজলে ইয়াজ আল হোসাইন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রুবিনা আক্তার, থানার অফিসার্স ইনর্চাজ (ওসি) মো: সোহাগ রানা, উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানগন।
প্রধান অতিথি সৈয়দ এ.কে একরামুজ্জামান এমপি বলেন সরকারের সকল পরিকল্পনা ও সেবা তৃণমূল পর্যায়ে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাদের সততা, নিষ্ঠা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
তিনি আরো বলেন অপরাধ প্রবণতা বন্ধে ও আইনশৃঙ্খলা উন্নয়নের পাশাপাশি প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে সকলের সহযোগিতায় এ উপজেলার উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখে আমি এ উপজেলাকে গড়ে তুলব শান্তিময়, সুন্দর উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে। তাই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সকল কর্মকর্তাকে জনগনের সেবক হিসেবে দাপ্তরিক সেবা প্রদানসহ সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহবান জানান। এরপর সংসদ সদস্য সৈয়দ এ.কে একরামুজ্জামান উপজেলা মাসিক সমন্বয় সভায় যোগ দেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
নাসিরনগরে ২০১৬ সালের আলোচিত সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত ৮টি মামলার মধ্যে নাসিরনগর উপজেলা সদরের পশ্চিমপাড়ার পুরাতন দূর্গামন্দিরে অগ্নিসংযোগ মামলার রায়ে উপজেলার সাবেক দুই ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনকে ৪ বছর করে কারাদন্ডাদেশ দিয়েছে আদালত।
আজ ১৬ মার্চ বৃহস্পতিবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ মাসুদ পারভেজ এই রায় ঘোষনা করেন। কারাদন্ডের পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে দুই হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালত পুলিশের পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) কাজী দিদারুল আলম রায় ঘোষনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন নাসিরনগর উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মোঃ আবদুল আহাদ, উপজেলার হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা দেওয়ান আতিকুর রহমান আঁখি, মোঃ মোখলেছ মিয়া, মোঃ মফিজুল হক, খসরু মিয়া, নাজির রহমান, মোঃ মাফুজ মিয়া, ইদু মিয়া, সায়হাম রাব্বি শ্যাম, মীর কাশেম, আনিস মিয়া, তাবারক রেজা ও সজিব চৌধুরী।
রায় ঘোষণার সময় সাবেক চেয়ারম্যান শেখ মোঃ আবদুল আহাদসহ ৮জন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। সাবেক চেয়ারম্যান দেওয়ান আতিকুর রহমান আঁখিসহ ৫জন পলাতক রয়েছেন। দন্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে সবার বাড়ি নাসিরনগর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়।
নাসিরনগর থানা ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, নাসিরনগর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের হরিণবেড় গ্রামের বাসিন্দা রসরাজ দাসের ফেসবুক আইডি থেকে ইসলাম ধর্মকে অবমাননা করে একটি পোস্ট দেয়ার অভিযোগে ২০১৬ সালের ৩ নভেম্বর রাতে নাসিরনগর উপজেলা সদরের হিন্দু অধ্যুষিত কয়েকটি গ্রামে হামলা চালিয়ে কয়েকটি মন্দিরসহ বাড়ি-ঘর ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে দুষ্কৃতিকারীরা। এসব ঘটনায় নাসিরনগর থানায় আটটি মামলা দায়ের করা হয়।
উপজেলা সদরের পশ্চিমপাড়ার পুরাতন দূর্গামন্দির ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় নাসিরনগর থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাধন কান্তি চৌধুরী বাদী হয়ে ১৩ জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছিলেন। মামলাটি দীর্ঘ তদন্ত শেষে ১৩জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ মাসুদ পারভেজ এই মামলার রায়ে উপজেলার সাবেক দুই ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনকে ৪ বছর করে কারাদন্ডাদেশ দেন।
এ ব্যাপারে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজ উদ্দিন বলেন, সাক্ষ্য-প্রমান ও বিচার বিশ্লেষন করেই এই মামলার রায় ঘোষণা করা হয়েছে। এই রায়ের মাধ্যমে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং এটি অনুকরনীয় রায় হয়ে থাকবে।
এ ব্যাপারে আসামী পক্ষের আইনজীবী কামরুজ্জামান মামুন বলেন, মামলার রায়ে আমরা সংক্ষুব্দ। যে কোন মামলার সাজা দিতে গেলে নূন্যতম সাক্ষ্য-প্রমাণ প্রয়োজন। কিন্তু সাক্ষ্য-প্রমাণহীন এই মামলায় ১৩ জনকে কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। আমরা ন্যায় বিচার পাইনি। এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবো।