চলারপথে রিপোর্ট :
দীর্ঘ প্রায় ২৩ বছর পর নিজ জন্মভূমিতে ফিরলেন হারিয়ে যাওয়া ফজিলা খাতুন নেছা (৫৫)। শুক্রবার দুপুরে ভারতের ত্রিপুরাস্থ বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশন আগরতলা থেকে আখাউড়া চেকপোষ্ট দিয়ে তাকে দেশে পাঠায়।
এর আগে তিনি ২০০০ সালে ঝিনাইদহ জেলার নিজ বাড়ি থেকে হারিয়ে যান। ফজিলা খাতুন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বিষয়খালি গ্রামের খয়বার আলীর মেয়ে। এদিকে হারিয়ে যাওয়া ফজিলা খাতুনকে গ্রহণ করতে সীমান্তের শূণ্য রেখায় উপস্থিত ছিলেন তার মেয়েসহ স্বজনরা। দীর্ঘ অপেক্ষার পর মাকে ফিরে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙ্গেন পরেন মেয়ে পিঞ্জিরা আক্তার। মেয়ের দিকে অপলক তাকিয়ে থাকেন অসুস্থ ফজিলা খাতুন। সীমান্তের শূণ্য রেখায় এসময় হৃদয় বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়। দীর্ঘ দিন পর স্বজনকে ফিরে পেয়ে আনন্দে উচ্ছ্বাসিত হয়ে পড়েন স্বজনরা। তবে অসুস্থতার কারণে ফজিলা কথা বলতে পারেননি। তিনি কিভাবে ভারতে গিয়েছিলেন তাও জানা যায়নি।
সীমান্তের শূন্য রেখায় ফজিল খাতুনের ভাইপো মোঃ শাহজালাল বলেন, ২০২২ সালের আগস্ট মাসে উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে জানতে পারি আমার ফুফু ভারতের আগরতায় মানসিক হাসপাতালে আছে। তারপর সরকারের সাথে যোগাযোগ করে ত্রিপুরার হাই কমিশনার আরিফ মোহাম্মদের সহযোগিতায় আজকে ফুফুকে দেশে আনতে পেরেছি।
মাকে ফিরে পেয়ে পিঞ্জিরা আক্তার বলেন, মা যখন হারিয়ে যায় তখন আমার বয়স ১২। শুনেছি মা হারিয়ে গেছে। মাকে অনেক খোঁজাখুজি করেও পাইনি। মা এতদিন আমাদের কাছে মৃত ছিল। আজ জীবিত ফিরে পেয়ে খুব আনন্দ লাগছে।
ত্রিপুরাস্থ বাংলাদেশের সহকারী হাই কমিশনার আরিফ মোহাম্মদ বলেন, দীর্ঘ ২৩ বছর পরে হারিয়ে যাওয়া এক মাকে তার সন্তানের কাছে পৌঁছে দিয়েছি। তিনি মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। তিনি নিজ বাড়ি থেকে হারিয়ে যান। তার পরিবারের লোকজন তাকে অনেক খোজাখুজি করেও পায়নি। পরবর্তীতে কোন এক সময় তাকে ত্রিপুরায় পাওয়া যায়। পরে ত্রিপুরার মর্ডাণ সাইক্রিয়াটিক হাসপাতালে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে ত্রিপুরা পুলিশ আমাকে তার কথা বলে। আমি বাংলাদেশ সরকারের কাছে তার তথ্য প্রেরণ করে তার নাগরিকত্ব যাচাই করে ভারত সরকারকে অবহিত করি। ভারত সরকারের অনুমতি সাপেক্ষে আজকে তাকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছি। তিনি ত্রিপুরা রাজ্য সরকারকে ধন্যবাদ জানান। তিনি আরও বলেন, একদিকে যেমন আনন্দের। একই সাথে আমাদেরকে আরও সচেতন হতে হবে।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় হাই কমিশনের প্রথম সচিব মোঃ রেজাউল হক চৌধুরী, মোঃ আল আমিন, ৪২ বিএসএফ আগরতলা আইসিপির কোম্পানী কোমান্ডার ধিবেকান দিমান, আখাউড়া ইমিগ্রেশন পুলিশের ইনচার্জ হাসান আহমেদ ভূইয়া, বিজিবি আখাউড়া আইসিপির ইনচার্জ মোঃ শাহআলম, ইমিগ্রেশন পুলিশের এএসআই দেওয়ান মুর্শেদুল হক প্রমুখ।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় পৃথক মাদকবিরোধী অভিযানে ১০ কেজি গাঁজাসহ ৩ মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- বিজয়নগর উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের হামদু ভূইঁয়ার ছেলে আমজাদ হোসেন পান্না, নবীনগরের বাঘাউড়া গ্রামের মৃত আক্তার হোসেনের ছেলে কামাল হোসেন ও আখাউড়া পৌরশহরের শান্তিনগর এলাকার জাকির হোসেনের ছেলে সোহেল মিয়া।
আজ ২৬ জানুয়ারি শুক্রবার দুপুরে তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এর আগে, এদিন সকালে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে থানা পুলিশ এ তথ্য জানিয়েছে।
পুলিশ জানায়, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার বিকেলে পৌরশহরের রেলওয়ে পশ্চিম কলোনি কুমারপাড়া কবরস্থান এলাকায় অভিযান চালানো হয়। এ সময় আমজাদ হোসেন পান্নাকে ৬ কেজি গাঁজাসহ এবং রাতে খড়মপুর বাইপাস সংলগ্ন ব্রিজ এলাকা থেকে অপর আরেক অভিযানে কামাল ও সোহেলকে ৪ কেজি গাঁজাসহ হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় কামাল ও সোহেলের কাছ থেকে মাদক কারবারে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে।
আখাউড়া থানার ওসি মো. নূরে আলম বলেন, ১০ কেজি গাঁজাসহ তিন ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মাদক আইনে নিয়মিত মাদক মামলা দিয়ে জেলা আদালতে পাঠানো হয়েছে।
আখাউড়া প্রতিনিধি :
ভারত থেকে ৯৫৮ টন রডের প্রথম চালান আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ত্রিপুরায় নেওয়া হয়েছে। আজ ২৩ জানুয়ারি সোমবার দুপুরে আখাউড়া স্থলবন্দর থেকে বাংলাদেশি ট্রাকে করে রডগুলো আগরতলা স্থলবন্দর থেকে খালাস করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, টাটা স্টিলের ৯৫৮ টন রড এমভি বোলকার নামের একটি জাহাজে গত ৭ জানুয়ারি কলকাতার হলদিয়া বন্দর থেকে লোড করা হয়। শনিবার সন্ধ্যায় জাহাজটি আশুগঞ্জ বন্দরে এসে নোঙর করে। পরে আশুগঞ্জ নদীবন্দর থেকে সড়কপথে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের আগরতলায় নিয়ে যাওয়া হয়।
এগুলোর সিঅ্যান্ডএফের দায়িত্বে আছে আখাউড়া স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট আদনান ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল।
আদনান ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী আক্তার হোসেন জানান, আশুগঞ্জ নৌবন্দরে জাহাজ থেকে ট্রাকযোগে আখাউড়া স্থলবন্দরে আনা হয়। কাস্টমস ও বন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে সোমবার দুপুর থেকে রডগুলো ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা বন্দরে খালাস করা হয়।
তিনি বলেন, ত্রিপুরার আগরতলার মেসার্স এসএম করপোরেশন নামে একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য রডগুলো নেওয়া হচ্ছে।
আখাউড়া বন্দর কর্তৃপক্ষের সহকারী পরিচালক (ট্রাফিক) আতিকুল ইসলাম জানান, ইন্দো-বাংলা প্রোটোকল অন ইনল্যান্ড ওয়াটার ট্রানজিট অ্যান্ড ট্রেডের আওতায় এ পণ্য পরিবহন করা হচ্ছে। বন্দরে রক্ষণাবেক্ষণ বন্দর মাশুলবাবদ ৩০৫ টাকা ২২ পয়সা ট্রাকপ্রতি পাবে।
মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন, আখাউড়া থেকে :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে খরিপ-১ মৌসুমে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে উফসী আউশ ধানের বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে।
আখাউড়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে ২৪ মার্চ সোমবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ চত্বরে উপকারভোগী ৫’শ জন কৃষকের হাতে এসব কৃষি উপকরণ তুলে দেওয়া হয়। বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার গাজালা পারভিন রুহী। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মোঃ জাহিদ হাসান, দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোঃ আয়েত আলী প্রমুখ।
এসময় উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার ৫’শ জন প্রান্তিক কৃষককে সার ও বীজ দেওয়া হয়। এরমধ্যে আখাউড়া পৌরসভায় ২০ জন, উত্তর ইউনিয়নে ৪০ জন, দক্ষিণ ইউনিয়নে ১৬০ জন, মোগড়া ইউনিয়নে ১২০ জন, মনিয়ন্দ ইউনিয়নে ১৫০ জন এবং ধরখার ইউনিয়নে ১০ জন। প্রত্যেক কৃষককে প্রতি বিঘা জমির জন্য ৫ কেজি করে আউশ ধানের বীজ, ১০ কেজি করে ডিএপি সার এবং ১০ কেজি করে এমওপি সার দেওয়া হয়।
এ ব্যপারে উপজেলা কৃষি অফিসার তানিয়া তাবাস্সুম বলেন, আখাউড়া উপজেলা ৫টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ৫’শ প্রান্তিক কৃষকের মাঝে ৫ কেজি করে বীজ, ১০ কেজি ডিএপি সার এবং ১০ কেজি এমওপি সার দেওয়া হয়। এবার আউশ ধানের লক্ষ্যমাত্রা ২৫০ হেক্টর। সেজন্য কৃষকদের মাঝে সরকার প্রণোদনা দিয়েছে। আশা করি আউশের আবাদ বৃদ্ধি পাবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ও যানবাহনের কাগজপত্র যাচাই-বাছাইয়ে আখাউড়া থানা পুলিশের উদ্যোগে বিশেষ অভিযান চলছে। আজ ১ এপ্রিল শনিবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত আখাউড়া-সুলতানপুর সড়কের খড়মপুর এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মাদক চোরাচালান, মোটর সাইকেলের বৈধ কাগজপত্র না থাকাসহ বিভিন্ন অপরাধ মুলক কর্মকান্ড নিয়ন্ত্রণে এ অভিযান চলছে।
আখাউড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শফিকুল ইসলাম জানান, বিকেল সাড়ে তিনটা নাগাদ ড্রাইভিং লাইসেন্স , হেলমেট না থাকা এবং মোটর সাইকেলে দুইয়ের অধিক আরোহী থাকার কারনে ২২টি মামলায় মোট ১লক্ষ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এবিষয়ে আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো.আসাদুল ইসলাম জানান, মাদককারবারী ও মাদকসেবীরা এ সড়ক ব্যবহার করে জেলা সদরসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আখাউড়া সীমান্তে এসে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করছে। এসব নিয়ন্ত্রণে সড়কে চেকপোষ্ট বসিয়ে অভিযান চালানো হচ্ছে। আখাউড়াকে মাদকমুক্ত করার জন্য এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি। অভিযানে অন্যান্যের মধ্যে টিএসআই আশরাফুল ইসলাম, সেকেন্ড অফিসার মাহমুদ মুহিন, এসআই মোবারক, আলমগীর, আবু ছালেক, কামরুজ্জামান, এরশাদ প্রমুখ পুলিশ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।