চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাপরিষদের চেয়ারম্যান, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আল-মামুন সরকার বলেছেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজরিত আখাউড়া উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের ভারত সীমান্তলগ্ন ঘাঘটিয়া পদ্মবিলে শিক্ষার্থীদের জন্য জেলাপরিষদ থেকে ‘‘মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি বিনোদন কেন্দ্র” নির্মাণ করা হবে।
তিনি বলেন মুক্তিযুদ্ধের সময় এই সীমান্ত দিয়ে হাজার হাজার যুবক সশস্ত্র প্রশিক্ষণের জন্য এবং হানাদার বাহিনীর হামলায় বিতারিত হাজার হাজার শরণার্থী ১৯৭১ সালে এই সীমান্ত দিয়ে ভারতে যাতায়াত করেছে।
কসবা-আখাউড়া নির্বাচনী এলাকার সংসদ সদস্য, আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মাননীয় মন্ত্রী, অ্যাডভোকেট আনিসুল হক মুক্তিযুদ্ধের তীর্থভূমি কসবা-আখাউড়া এলাকার সকল যুদ্ধক্ষেত্র, গণকবর ও শহীদ সমাধি সংরক্ষণে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে তাঁর অনুকূলে বরাদ্দকৃত ১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকার বিশেষ বরাদ্দের আওতায় এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। কসবা-আখাউড়ার মুক্তিযুেদ্ধর স্মৃতি বিজরিত বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন শেষে ডাকবাংলোতে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় জেলাপরিষদ চেয়ারম্যান এই তথ্য অবহিত করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় আনন্দ র্যালি ও কেক কেটে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন পালন করা হয়েছে।
আখাউড়া উপজেলা আওয়ামলীগ ও এর সহযোগি সংগঠনের উদ্যোগে আজ ২৯ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বিকালে শহরের সড়ক বাজারস্থ দলীয় কার্যালয় থেকে একটি আনন্দ শোভাযাত্রা বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
শোভাযাত্রায় নেতাকর্মীরা প্রধানমন্ত্রীর ছবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড হাতে স্লোগান দিয়ে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানায়।
পরে দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা শেষে ও কেক কাটার মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্ম দিন উদযাপন করা হয়।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন বাবুল, আওয়ামীলীগ নেতা সেলিম ভূইয়া, উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, দক্ষিণ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ জালাল উদ্দিন, ছাত্রলীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন বেগ শাপলু, সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন নয়ন প্রমুখ।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় রেলওয়ে প্রকল্পের রেললাইনে গাছ ফেলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেন শাহানুর সরকার নামে এক ব্যক্তি। তার দাবি, আখাউড়া-আগরতলা নবনির্মিত রেললাইন তার মালিকানাধীন জায়গার ওপর দিয়ে নেওয়া হয়েছে। অথচ তাকে জমি অধিগ্রহণের টাকা দেওয়া হয়নি।
তার এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ রেলওয়ে ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসন তদন্ত শুরু করে। ১৭ আগস্ট বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত রেলওয়ের প্রকল্পের জায়গা মাপজোখ করে সেখানে শাহানুরের কোনো জায়গা পায়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ১৩ আগস্ট রবিবার আখাউড়া উপজেলার মনিয়ন্দ ইউনিয়নের শিবনগর এলাকায় সীমান্তের শূন্য রেখার পাশে আখাউড়া-আগরতলা রেললাইন প্রকল্পে গাছ ফেলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন শাহানুর সরকার। তিনি ওই ইউনিয়নের খারকোট এলাকার মৃত খোরশেদ মিয়ার ছেলে।
সেসময় তিনি সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, আখাউড়া-আগরতলা রেললাইন প্রকল্পে তার ২৬ শতাংশ জায়গা পড়েছে। এর মধ্যে শিবনগর মৌজায় ১৬৮ দাগের সাড়ে ৮ শতক ও ১৬৫ দাগের সাড়ে ১৭ শতক জমি রয়েছে। এখন ওই জমির ওপরে রেললাইন তৈরির কাজ প্রায় শেষ হতে যাচ্ছে। কিন্তু তিনি সেই জমি অধিগ্রহণের কোনো টাকা পাননি।
শাহানুর সরকারের এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে রেলওয়ে মন্ত্রণালয় ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসন তদন্ত শুরু করে। প্রাথমিক অবস্থায় ১৪ আগস্ট আখাউড়া উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রশান্ত চক্রবর্তী সেই জায়গা পরিদর্শন করেন। বৃহস্পতিবার সহকারী কমিশনার (ভূমি), জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসন ও রেলওয়ের সার্ভেয়ার রেললাইন প্রকল্প এলাকা মাপজোখ করেন। সারাদিন মাপজোখ করে অভিযোগকারী শাহানুর সরকারের কোনো জায়গা রেললাইনের ওপর পাওয়া যায়নি।
আখাউড়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রশান্ত চক্রবর্তী বলেন, জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা ও সার্ভেয়ার এসেছেন। তারা ভূমি অধিগ্রহণ ও রেললাইনের অ্যালাইনমেন্ট রেফারেন্স ধরেছেন। রাস্তা থেকে তারা মেপে আসছেন। তাদের মাপে প্রতীয়মান হয়, অধিগ্রহণ করা জায়গাতেই রেললাইন হয়েছে। কারও ব্যক্তিগত জায়গায় রেললাইন হয়নি।
তিনি আরো বলেন, আমরা অভিযোগকারী ব্যক্তিকে বুঝিয়ে বলেছি তার জায়গায় রেললাইন হয়নি। তার যে একটি ভুল ধারণা ছিল, পুরো ম্যাপ দেখে তাকে আমরা বুঝিয়ে দিয়েছি। উনি বলেছেন বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন। শাহানুর সরকার স্থানীয় এক আমিন দিয়ে জায়গাটি পরিমাপ করিয়েছিলেন। আমরা সেই আমিনকে আসতে বলেছিলাম। কিন্তু গত দুইদিন সময় নিয়েও তিনি আসেননি। শাহানুরকে আমিন কী বুঝিয়েছে, তা আমরা জানি না। তবে শাহানুর সাহেব জানিয়েছেন যে, আমিন তাকে বলেছেন রেললাইন যেখানে হওয়ার কথা ছিল তা সরে গেছে। অথচ মাপজোখ করার পর দেখা গেলো, ভূমি অধিগ্রহণ করা জায়গাতেই রেললাইন হয়েছে। আমিন তাকে যা বলেছিলেন, তা ঠিক না।
তবে অভিযোগকারী শাহানুর সরকার বলেন, উনারা আমাকে ম্যাপ অনুযায়ী আমার জায়গা দিচ্ছেন না। কিন্তু দলিল ও বিএস অনুযায়ী আমার জায়গা অধিগ্রহণে পড়েছে। উনারা এখানে-সেখানে আমার জায়গা দেখাচ্ছেন। আমার আমিন আসেননি। তার বাড়িতে গিয়েও অনেক অনুরোধ করেছিলাম আসতে, তবুও সে আসেননি। তাহলে আমার জায়গা কোথায়? আমি এই বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেব।
মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া থানার ওসি মোহাম্মদ ছমি উদ্দিন। আজ ২১ জানুয়ারি মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় থানার সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত উপজেলা ইমাম পরিষদের সাথে মতবিনিময় কালে তিনি এই ঘোষণা দেন।
আখাউড়া উপজেলা ইমাম পরিষদের সভাপতি ও থানা মসজিদের খতিব মাওলানা কাজী মাইনুদ্দিনের সভাপতিত্বে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় দেবগ্রাম জামিয়া মাজহারুল হক মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মুফতি আসাদুজ্জামান, মুহিসুন্নাহ মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আসাদ আল হাবিবসহ উপজেলার বিভিন্ন মসজিদের ইমাম ও মাদ্রাসার প্রিন্সিপালরা।
মতবিনিময় সভায় আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ ছমি উদ্দিন আরো বলেন, মাদক একটি সামাজিক সমস্যা। মাদক ব্যবসায়িদের কোন ছাড় দেয়া হবেনা।
তিনি আখাউড়াকে মাদক মুক্ত করতে উপস্থিত সকলের সহযোগীতা চেয়েছেন। এছাড়াও তিনি সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ, নারী নির্যাতন, ইভটিজিং, বাল্যবিবাহ বন্ধে তথ্য প্রদান করতে সকলকে অনুরোধ করেন।
মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন, আখাউড়া থেকে :
আখাউড়ায় বজ্রাঘাতে দুই কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। আজ ১১ মে রোববার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার উপজেলার ধরখার ইউনিয়নের রুটি এবং বনগজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন শেখ সেলিম মিয়া (৬০) ও মো. জামির খান (২২) নামে দুই কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
ধরখার ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. আশেক মিয়া বজ্রপাতে দুজনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ধরখার ইউনিয়নের রুটি গ্রামে নিজ জমিতে ধান কাটার পর খড় শুকানোর সময় শেখ সেলিম এবং একই ইউনিয়নের বনগজ গ্রামে মেশিন দিয়ে ধান মাড়ানোর সময় মো. জামির খান আকস্মিক বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মার যান।
নিহত শেখ সেলিম মিয়া ধরখার ইউনিয়নের রুটি গ্রামের উত্তর পাড়ার শেখ বাড়ির শেখ নোয়াব মিয়ার ছেলে। আর মো. জামির খান একই ইউনিয়নের বনগজ গ্রামের মদন খানের ছেলে।
আখাউড়া থানার ওসি মো. ছমিউদ্দিন জানান, বনগজ গ্রামের জাকির খাঁ ধান ভাঙার মেশিন নিয়ে কাজ করছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় ‘শয়তানের নিশ্বাস’ (ডেভিল ব্রেথ) দিয়ে লুটে নেয়া মোটরসাইকেল চক্রের সক্রিয় সদস্য জুয়েলকে (২৭) গ্রেপ্তার ও তার কাছে থাকা ৩টি দামি মোটরসাইকেল উদ্ধার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। গতকাল ২৫ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) এসআই রবিউল ইসলাম। এর আগে শনিবার রাতভর ঢাকা ও চট্টগ্রাম পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি পুলিশ) পৃথক দুটি দল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় অভিযান চালিয়ে জুয়েলকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
জুয়েলের বাড়ি আখাউড়া পৌরশহরের তারাগন গ্রামে। তার পৌর শহরের বাইপাস এলাকায় একটি মোটরসাইকেল ওয়ার্কশপ রয়েছে।
গোয়েন্দা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম রাউজান থানার বাসিন্দা মামুন মোটরসাইকেলে রাইড শেয়ারিং করেন। গত ২৭ জানুয়ারি একজন যাত্রী নিয়ে হাটহাজারী উপজেলায় যাওয়ার পথে মোবাইলে কৌশলে বিষাক্ত কেমিক্যাল যা ‘শয়তানের নিঃশ্বাস’ নামে পরিচিত ওই রাসায়নিক পদার্থ তার নাকের কাছে ধরে স্মৃতিভ্রম করেন। পরে তার কথামতো মামুন নিজেই প্রতারকের হাতে তুলে দেন তার রাইড শেয়ারিংয়ের মোটরসাইকেল ও তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন। এরপর দ্রুত সটকে পড়ে প্রতারক।
গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্তে নামে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা (ডিবি) দল। এরপর ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে বিভিন্ন সূত্র ধরে আসামিদের নাম ও ঠিকানা শনাক্ত করে ডিবি পুলিশ। পরে আখাউড়া থেকে গ্রেফতার করা হয় জুয়েলকে। এ সময় তার দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ৩টি দামি বাইক উদ্ধার করে গোয়েন্দা পুলিশ। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার এসআই রবিউল ইসলাম জানান, মূলত দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে এ চক্রের মূলহোতারা ভয়াবহ মাদক ‘স্কোপোলামিন’ অপরাধ জগতে ‘ডেভিলস ব্রেথ’ বা ‘শয়তানের নিশ্বাস’ নাকের কাছে ধরে স্মৃতিভ্রম করে মোটরসাইকেল লুট করে আখাউড়া নারায়ণপুর গ্রামের রাব্বি এবং জুয়েলের মোটরসাইকেল ওয়ার্কশপে নিয়ে আসা হতো। এখানে মোটরসাইকেলের চেসিস নম্বর ও কিছু মালামাল পরিবর্তন করে ভারতীয় টানা মোটরসাইকেল বলে অন্য জায়গায় বিক্রি করা হতো। তিনি জানান, এ চক্রের সদস্য রাব্বি পলাতক থাকলেও তার ভাই হৃদয়কে জিম্মি করে ৩টি বাইকসহ জুয়েলকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়। সবকয়টি মোটরসাইকেলই ‘শয়তানের নিশ্বাস’ দিয়ে লুটে আনা হয়েছে।
আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছমিউদ্দিন বলেন, ‘চক্রের সদস্য রাব্বি পলাতক। তাকে গ্রেফতার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’