অনলাইন ডেস্ক :
নিজ ঘরের মানুষের বিদ্রোহে সব উলট-পালট করে দেয়। যেমনটি ঘটেছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের ক্ষেত্রে। তার দীর্ঘদিনের সঙ্গী ওয়াগনার প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন হঠাৎ বিদ্রোহ করে বসে। আর এতে সব হিসাব পাল্টে যেতে থাকে। দ্রুত ঘুরে যেতে রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধে মোড়। রাশিয়া যুদ্ধের ময়দান ছেড়ে নিজ ঘর রক্ষায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে। তবে ২৪ ঘন্টা পার না হতে সেই ভয়ঙ্কর পরিস্তিতি থেকে বেরিয়ে আসছে পেরেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট। বলা চলে বেঁচে গেলে তিনি।
দুই দশকের বেশি সময় ধরে রাশিয়ার একচ্ছত্র ক্ষমতায় রয়েছেন ভ্লাদিমির পুতিন। দিন দিন বেড়েছে সেই ক্ষমতা। রাজনৈতিক জীবনে বহু বাধা আর চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি পড়তে হয়েছে তাকে। সেসব উৎরেই এই পর্যন্ত এসেছেন তিনি। ইউক্রেনে আক্রমণ শুরুর পর থেকে নানা সংকট তাকে নতুন করে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। তবে সেই পরিস্থিতি হঠাৎ করে কালবৈশাখীতে রুপ নেয় বেসরকারি আধা-সামরিক বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপের বিদ্রোহ।
ভয়ংকর এক দিন পার করেছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। বলা হচ্ছে, ক্ষমতাসীন পুতিনকে প্রকাশ্যে চ্যালেঞ্জ করে এত বড় হুমকিতে এর আগে ফেলতে পারেনি কেউ। তবে এই যাত্রায় ‘বেঁচে’ গেলেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
জানা গেছে, রাশিয়ার ভাড়াটে ওয়াগনার বাহিনীর প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোঝিন ‘রক্তপাত এড়াতে’ তার অনুগতদের মস্কোমুখী যাত্রা বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন এবং তিনি নিজে বেলারুশে নির্বাসিত জীবনযাপন করতে রাজি হয়েছেন। এর মাধ্যমে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের রাজনৈতিক জীবনে নেমে আসা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্চের অবসান হলো বলে ধারণা করা হয়েছে।
নতুন কয়েকটি ভিডিওতে দেখা যায় যে প্রিগোঝিন ও তার বাহিনী দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় রোস্তভ-অন-ডন ত্যাগ করছে।
এদিকে বেলারুশের প্রেসিডেন্টের সাথে করা চুক্তির ব্যাপারে ক্রেমলিন খুব বেশি কিছু বলছে না। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেশকভ বলেছেন, প্রিগোঝিনকে প্রেসিডেন্ট পুতিন ‘কথা দিয়েছেন’ যে তিনি বেলারুশে যেতে এবং সেখানে বসবাস করতে পারবেন। আর তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো প্রত্যাহার করা হবে।
এর আগে রাশিয়ার রাজধানী দখলের উদ্দেশে লিপেৎস্ক থেকে ২০০ কিলোমিটার এগিয়ে গিয়েও আচমকা থমকে যায় প্রিগোঝিনের ভাড়াটে সেনাবাহিনী। কারণ হিসাবে জানানো হলো, রক্তপাত এড়াতেই আপাতত মস্কো অভিযান স্থগিত। ভাড়াটে সেনাবাহিনীর প্রধান প্রিগোঝিন নিজের টেলিগ্রামে জানিয়েছেন, রক্তপাত এড়াতেই মস্কো দখলের পরিকল্পনা বাতিল করা হয়েছে। পাশাপাশি, বিবিসি সূত্রে দাবি করা হয়েছে, বেলারুসের নেতা আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর সাথে এ বিষয় নিয়ে কথা হয় ভাড়াটে সেনাবাহিনীর প্রধান প্রিগোঝিনের। তার পরেই প্রিগোঝিন মস্কোর দিকে ধাবমান সেনাসদস্যদেরকে ফিরে আসার নির্দেশ দেন।
চলতি সপ্তাহেই ইউক্রেনের সীমান্ত পেরিয়ে রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডে বড় অভিযান শুরু করে বিদ্রোহী ওয়াগনার বাহিনী। প্রিগোজিনের মালিকানাধীন ভাড়াটে যোদ্ধারা শনিবার সকালে ইউক্রেন সীমান্তের অদূরে পশ্চিম রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ শহর ভোরোনেজ দখল করে বলে কয়েকটি পশ্চিমি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে দাবি করা হয়েছে। এর আগে ওয়াগনার বাহিনী শুক্রবার ইউক্রেন সীমান্ত লাগোয়া রোস্তভ-অন-ডন শহরের দখল নিয়েছিল। প্রিগোজিন দাবি করেছেন, একটি গুলি খরচ না-করেও রোস্তভ-অন-ডন শহরে সেনার সদর দফতর দখল করে তার বাহিনী। আর এতে সহায়তা করেছেন স্থানীয়েরা। তিনি একটি অডিও-বার্তা দিয়ে জানিয়েছিলেন, গোটা দেশের তার বাহিনীকে সমর্থন করা উচিত। কারণ তার বাহিনী ‘ন্যায়ের পদযাত্রায় নেমেছে। রোস্তভ-অন-ডন থেকে মস্কোর দূরত্ব প্রায় হাজার কিলোমিটার। এর পর মস্কোর দিকে আরো ২০০ কিলোমিটার এগিয়ে যায় তারা। কিন্তু তার পরেই আচমকা বন্ধ অভিযান।
কিন্তু আচমকা কেন মন বদল হলো একদা পুতিনের সহচর প্রিগোঝিনের? তার একাধিক ব্যাখ্যা পাওয়া যাচ্ছে। বিবিসির নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষাবিষয়ক সাংবাদিক ফ্রাঙ্ক গার্ডনারের দাবি, মস্কো অভিযান অসমাপ্ত রাখার চাপের উৎস রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনই। লুকাশেঙ্কোকে কাজে লাগিয়ে তিনি ভাড়াটে বাহিনীকে ঘোল খাইয়ে দিলেন। পাশাপাশি, গার্ডনারের বক্তব্য, প্রিগোঝিন মস্কো দখলের অভিযানে যোগ দিতে যে প্রকাশ্য বার্তা দিয়েছিলেন জনসাধারণের কাছে, তা-ও কাজে আসেনি। রাশিয়ার সেনাবাহিনীর মধ্যে বিদ্রোহ তো দূরঅস্ত , সাধারণ মানুষকেও খুব বেশি সংখ্যায় ভাড়াটে সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে দেখা যায়নি। তাই সম্ভবত দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া অবস্থা থেকেই মস্কো অভিযান বাতিল করার ভাবনা প্রিগেঝিনের। মস্কো অভিযান বাতিল হলো বটে, কিন্তু এর পর কী হবে প্রিগোঝিনের? তার রাজনৈতিক বা সামরিক ভবিষ্যৎ কিন্তু এখন পুতিনের মুঠোবন্দি, এমনটাই মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের একটি অংশ।
একদা পুতিন-ঘনিষ্ঠ হোটেল ব্যবসায়ী প্রিগোঝিনের ওই ভাড়াটে বাহিনী রুশ সেনাবাহিনীর অংশ নয়। কিন্তু গত দেড় বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে তারা রুশ বাহিনীর সহযোগী হয়ে ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নিয়েছে। অতীতে আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে গৃহযুদ্ধেও লড়েছে এই পেশাদার ভাড়াটে বাহিনী। ইউক্রেন যুদ্ধের কৌশল নির্ধারণ নিয়ে গত কয়েক মাস ধরে রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু এবং সেনাপ্রধান ভ্যালেরি গেরাসিমভের সাথে মতবিরোধ চলছিল প্রিগোঝিনের। রুশ সেনাবাহিনী পরিকল্পিতভাবে ওয়াগনার যোদ্ধাদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছিল বলেও অভিযোগ করেছিলেন তিনি। এ বার সরাসরি মস্কোর বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে ধরেছে প্রিগোজিনের ভাড়াটে যোদ্ধারা।
ট্যাঙ্ক এবং সাঁজোয়া গাড়ি নিয়ে প্রায় ২০ হাজার ওয়াগনার যোদ্ধা মস্কো দখলের অভিযানে নেমেছিল বলে একাধিক সংবাদ মাধ্যম দাবি করেছিল। তাদের রুখতে রুশ ‘চপার’ (যুদ্ধ হেলিকপ্টার) ধারাবাহিক আক্রমণ চালাচ্ছিল। এমনকি, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় সাধারণ নাগরিকদের প্রাণহানির ঝুঁকি সত্ত্বেও আকাশপথে হামলা চালানো হয়। প্রেসিডেন্ট পুতিন শনিবার জাতির উদ্দেশে ভাষণে বলেন, ‘বিশ্বাসঘাতকেরা সমুচিত জবাব পাবে।’ প্রিগোঝিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করেন তিনি।
শনিবার সন্ধ্যায় যখন রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর দিকে এগিয়ে আসছিল প্রিগোঝিনের ভাড়াটে বাহিনী, এই পরিস্থিতিতে বাসিন্দাদের শহরে ঘুরে বেড়ানোর বিষয়ে সতর্ক করছিলেন মস্কোর মেয়র সেরগেই সোবিয়ানিন। তিনি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিলেন, ‘পরিস্থিতি কঠিন। আমি বলব, যতটা সম্ভব শহরে ঘুরে বেড়ানো বন্ধ করুন।’ তিনি এ-ও জানিয়েছিলেন, শহরের বেশ কিছু রাস্তা বন্ধ থাকবে। রাশিয়ার রোস্টভ শহর দখল করেছে ওয়াগনার যোদ্ধারা। ইউক্রেন-সংলগ্ন দক্ষিণ রাশিয়ার রোস্টভ অঞ্চলের গভর্নরও বাসিন্দাদের ঘরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু ভারতীয় সময় মধ্যরাতেই নাটকীয় পালাবদল!
একদা পুতিন-ঘনিষ্ঠ
প্রিগোজিন একদা পুতিন-ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত ছিলেন। পেশায় হোটেল ব্যবসায়ী। তার ওই ভাড়াটে বাহিনী রুশ সেনার অংশ নয়। কিন্তু গত দেড় বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে তারা রুশ বাহিনীর সহযোগী হয়ে ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নিয়েছে। অতীতে লিবিয়া, সিরিয়া, মোজাম্বিক, সুদানের মতো দেশে গৃহযুদ্ধেও লড়েছে প্রায় ৪০ হাজার যোদ্ধার এই পেশাদার ভাড়াটে বাহিনী। ইউক্রেন যুদ্ধের কৌশল নির্ধারণ নিয়ে গত কয়েক মাস ধরে রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু এবং সেনাপ্রধান ভ্যালেরি গেরাসিমভের সাথে মতবিরোধ চলছিল প্রিগোজিনের। রুশ সেনাবাহিনী পরিকল্পিতভাবে ওয়াগনার যোদ্ধাদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছিল বলেও অভিযোগ করেছিলেন তিনি। এবার সরাসরি মস্কোর বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে ধরেছে প্রিগোঝিনের ভাড়াটে যোদ্ধারা।
‘ন্যায়ের পদযাত্রা’
চলতি সপ্তাহেই ইউক্রেনের সীমান্ত পেরিয়ে রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডে বড় অভিযান শুরু করেছিল বিদ্রোহী ওয়াগনার বাহিনী। প্রিগোঝিনের মালিকানাধীন ভাড়াটে যোদ্ধারা শনিবার সকালে ইউক্রেন সীমান্তের অদূরে পশ্চিম রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ শহর ভোরোনেজ দখল করে বলে কয়েকটি পশ্চিমি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে দাবি করা হয়েছিল। এর আগে ওয়াগনার বাহিনী শুক্রবার ইউক্রেন সীমান্ত লাগোয়া রোস্তভ-অন-ডন শহরের দখল নিয়েছিল। প্রিগোজিন দাবি করেছেন, একটি গুলি খরচ না-করেও রোস্তভ-অন-ডন শহরে সেনার সদর দফতর দখল করেছে তার বাহিনী। আর এতে সহায়তা করেছেন স্থানীয়েরা। তিনি একটি অডিও-বার্তা দিয়ে জানিয়েছেন, গোটা দেশেরই তার বাহিনীকে সমর্থন করা উচিত। কারণ তার বাহিনী ‘ন্যায়ের পদযাত্রা’য় নেমেছে। রোস্তভ-অন-ডন থেকে মস্কোর দূরত্ব প্রায় হাজার কিলোমিটার। এর পর মস্কোর দিকে আরো কয়েক শ’ কিলোমিটার এগোয় তারা। তার পরেই অভিযান বাতিল ঘোষিত হয়। সূত্র : আল জাজিরা, সিএনএন, বিবিসি ও অন্যান্য।
হাকিকুল ইসলাম খোকন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে :
যুক্তরাষ্ট্রে বন্দুকধারীর হামলায় ২ জন নিহত হয়েছে। দেশটির ওরেগন অঙ্গরাজ্যের ক্লাটসকানি শহরে গতকাল শনিবার এ ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় আরো তিনজন আহত হওয়ার খবর জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টাইমস অফ ইন্ডিয়া। জানা গেছে, নিহতদের মধ্যে সন্দেহভাজন হামলাকারীও রয়েছে।
কোলাম্বিয়া কাউন্টির শেরিফ কার্যালয় জানায়, স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে ইলমারি রোডের একটি বাড়িতে এই হামলার ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলে পৌঁছে পাঁচজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে নিরাপত্তা বাহিনী। এর মধ্যে সন্দেহভাজন বন্দুকধারীও ছিল, যে ঘটনাস্থলেই মারা যায়।
কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে, এ ঘটনায় সবাই একে অপরকে আগের থেকেই চিনতেন। এটি কোনো আত্মহত্যার ঘটনা নয় বলেও জানানো হয়েছে। এই হামলার তদন্ত করছে কোলাম্বিয়া কাউন্টি মেজর ক্রাইমস টিম ও ওরেগন রাজ্য পুলিশ।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
অনলাইন ডেস্ক :
সুদানে আটকে পড়া ব্যক্তিদের সরিয়ে আনতে যাওয়া তুরস্কের একটি উড়োজাহাজ হামলার শিকার হয়েছে। তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, রাজধানী খার্তুমের কাছে ওয়াদি সেইদনা বিমানবন্দরে অবতরণের সময় উড়োজাহাজটি লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। এতে সেটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। খবর বিবিসি ও আলজাজিরার।
এক বিবৃতিতে তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হামলার শিকার হওয়ার পরও সি-১৩০ মডেলের উড়োজাহাজটি নিরাপদে অবতরণ করেছে। সেটির জ্বালানিব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিমানবন্দরে তা মেরামতের কাজ চলছে। এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। তবে উড়োজাহাজটিতে কে বা কারা গুলি চালিয়েছে, তা বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়নি।
উড়োজাহাজটিতে হামলার জন্য সুদানের আধা সামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসকে (আরএসএফ) দায়ী করেছে দেশটির সামরিক বাহিনী। তবে এ দাবি নাকচ করে এক বিবৃতিতে আরএসএফ বলেছে, ‘মধ্যরাত থেকে আমরা যে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছি, তা মেনে চলতে আমাদের বাহিনী কঠোরভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আর ওয়াদি সেইদনার আকাশসীমায় আমরা কোনো উড়োজাহাজকে হামলার লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছি, এমন খবর সত্য নয়।’
বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় রাত ১০টা থেকে আরো তিন দিনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় আরএসএফ। তবে এই যুদ্ধবিরতি তেমন একটা কার্যকর হয়নি। যুদ্ধবিরতির পরও গতকাল রাতভর খার্তুমে আরএসএফের নানা লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে সুদানের সামরিক বাহিনীর যুদ্ধবিমানগুলো। এর আগের তিন দিনের যুদ্ধবিরতির সময় সুদান থেকে হাজার হাজার মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ কাজে হাত লাগিয়েছে তুরস্কসহ বেশ কয়েকটি দেশ।
ক্ষমতার দ্বন্দ্বে সুদানের সামরিক বাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে ১৫ এপ্রিল লড়াই শুরু হয়। এ সংঘাতের এক পক্ষে সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান। অপর পক্ষে আরএসএফের প্রধান জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো ওরফে হেমেদতি। প্রায় দুই সপ্তাহের সংঘাতে দেশটিতে কয়েক শ মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন কয়েক হাজার।
দুই পক্ষে সশস্ত্র এই লড়াই সবচেয়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে খার্তুম ও আশপাশের এলাকাগুলোতে। লড়াই শুরুর আগে সেখানে কোটি মানুষের বসবাস ছিল। সংঘাতের মুখে অনেকেই সেখান থেকে পালিয়ে যাচ্ছেন। আর এখনো যাঁরা থেকে গেছেন, তাঁরা খাবার, পানি ও জ্বালানির চরম সংকটে রয়েছেন।
অনলাইন ডেস্ক :
চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে জাপানের রাজধানী টোকিওতে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইট প্রধানমন্ত্রী এবং তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে আজ ২৫ এপ্রিল মঙ্গলবার স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটে দেশটির হানিদা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন।
এ সময় জাপানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তাকেই শুনসুকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানান। বিমানবন্দরে তাকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।
এর আগে প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বিমানটি সকাল ৭টা ৫৬ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে। শেখ হাসিনা জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার আমন্ত্রণে ২৫ থেকে ২৮ এপ্রিল জাপান সফর করছেন।
মন্ত্রিসভার সদস্য, মন্ত্রিপরিষদসচিব, তিন বাহিনীর প্রধানগণ, মহা-পুলিশ পরিদর্শক এবং কূটনৈতিক কোরের প্রধানরা বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানান।
অনলাইন ডেস্ক :
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে অবৈধ অভিবাসীদের তাড়াতে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে দেশটির অবৈধ অভিবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। কর্মস্থলে অনেকে ভয়ে যাচ্ছেন না । স্কুলে যেতে চাচ্ছে না শিশুরা। তারা ভয় পাচ্ছে। অনেক মা-বাবার কাজ বন্ধ। অবৈধ অভিবাসীদের খোঁজে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে বাসা-বাড়ি আর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হানা দিচ্ছে দেশটির বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় সংস্থার সদস্যরা। স্থানীয় সময় রবিবার থেকে শুরু হয় সাঁড়াশি এ অভিযান। অভিযানে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই)-এর পাশাপাশি অংশ নিয়েছেন এফবিআই ও ড্রাগ এনফোর্সমেন্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশনসহ (ডিইএ) বিচার বিভাগের বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা। অভিবাসন, মাদক, অস্ত্র আর কাস্টমস বিষয়ক ভিন্ন ভিন্ন বিভাগের অভিযানে গ্রেফতারের সংখ্যা দেড় হাজার ছাড়িয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষ এখন প্রতিদিন শত শত বৈধ কাজগপত্রহীন অভিবাসীকে আটক করে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়ে দিচ্ছে। এর মাধ্যমে, যারা বেআইনিভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছে তাদের বহিষ্কার করতে ২০২৪ নির্বাচনী প্রচারণার সময় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেয়া প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
জো বাইডেন ক্ষমতায় থাকাকালে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ সীমান্ত দিয়ে বহু অভিবাসী প্রবেশ করেছিলেন। তাদের বড় অংশের ঠিকানা হয়েছিল টেক্সাস। তখন টেক্সাসের গভর্ণর গ্রেগ অ্যাবট এই অভিবাসীদের বাইডেনের দল ডেমোক্রেটিক পার্টি শাসিত শহরগুলোয় পাঠিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে শিকাগোর স্থানীয় একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, ট্রাম্প প্রশাসনের নানা তৎপরতার মুখে আতঙ্কে রয়েছেন শহরটির অনেক অধিবাসী। তাদের অনেকে স্কুল বা কাজে যাচ্ছেন না। যেমন শহরটির উপকণ্ঠে বসবাস করা দুই বোন ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকে স্কুলে যাচ্ছে না। তাদের মা–বাবাও কাজে যাওয়া বন্ধ রেখেছেন।
ইউএস কমিটি ফর রিফিউজিস অ্যান্ড ইমিগ্র্যান্টস নামের আরেকটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট এনা মারিয়া বেনা বলেন, ‘শিশুরা স্কুলে যেতে চাচ্ছে না। তারা ভয় পাচ্ছে। তারা মা–বাবার কাছ থেকে এসব বিষয়ে শুনছে। সম্প্রদায়ের মানুষের কাছ থেকে শুনছে। আমার মনে হয়, যখন শিক্ষার্থীরা ভয়ের কারণে স্কুলে যেতে চায় না, তখন ওই সম্প্রদায়ের মনের অবস্থা কী, তা অনেকটাই বোঝা যায়?’
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন প্রশাসনের নির্দেশে স্থানীয় সময় গত রবিবার থেকে ঝটিকা অভিযান শুরু করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। অভিযানে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই)-এর পাশাপাশি অংশ নিয়েছেন এফবিআই ও ড্রাগ এনফোর্সমেন্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেশনসহ (ডিইএ) বিচার বিভাগের বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা। গতকালপরিচালিত দেশব্যাপী অভিযানে ৯৫৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই অভিযান এক সপ্তাহ ধরে চলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ট্রাম্পের ইশারায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে অবৈধ অভিবাসী তাড়ানোর দায়িত্ব পেয়েছেন টম হোম্যান। তিনি আইসিইর সাবেক ভারপ্রাপ্ত পরিচালক। সিএনএনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে হোম্যান ঝটিকা অভিযান শুরুর দিনকে ‘একটি ভালো দিন’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তাঁর মতে, এই অভিযান ‘মোড় বদলে’ দেওয়ার মতো একটি ঘটনা।
সাক্ষাৎকারের সময় ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের শিকাগো শহরে ছিলেন টম হোম্যান। তিনি বলেন, এ বিষয়ে (অবৈধ অভিবাসন) পুরো প্রশাসনকে কাজে লাগিয়েছেন। শিকাগোর জননিরাপত্তা এবং জাতীয় নিরাপত্তা হুমকিগুলোর ওপর নজর রাখতে আজ আমরা সরকারের সব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাকে মাঠে নামিয়েছি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে আইসিই লিখেছে, রবিবার দেশজুড়ে ৯৫৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অবৈধ অভিবাসীদের ধরতে শিকাগোয় এই ‘বাড়তি অভিযান’ ছাড়াও আটলান্টা, পুয়ের্তো রিকো, কলোরাডো, লস অ্যাঞ্জেলেস, অস্টিন ও টেক্সাস শহরে অভিবাসনসংক্রান্ত কর্মকর্তাদের তৎপরতা লক্ষ করা গেছে।
শিকাগোতে ট্রাম্পের অভিবাসনবিরোধী পদক্ষেপের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছে শহরটির অভিবাসীদের অধিকার নিয়ে সোচ্চার সংগঠনগুলো। আদালতে দাখিল করা নথিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, শিকাগোয় অভিবাসীদের জন্য ছাড় থাকার কারণে শহরটি ট্রাম্প প্রশাসনের অভিযানের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এটা সংবিধানের প্রথম সংশোধনীতে যে বাগ্স্বাধীনতার অধিকার দেয়া হয়েছে, সেটি খর্ব করে। একইসাথে চতুর্থ সংশোধনীতে অযৌক্তিক তল্লাশি ও আটকের বিরুদ্ধে যে সুরক্ষা দেয়া হয়েছে, তা লঙ্ঘন করে।
অনলাইন ডেস্ক :
জাতিসংঘের শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কোর বিমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে ‘ঢাকার রিকশা’ ও ‘রিকশা চিত্র’।
আজ ৬ ডিসেম্বর বুধবার আফ্রিকার দেশ বতসোয়ানার কাসানে বিমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ বিষয়ক কনভেনশনের চলমান ১৮তম আন্তঃরাষ্ট্রীয় পরিষদের সভায় এ স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
জামদানি, শীতল পাটি, বাউল গান ও মঙ্গল শোভাযাত্রার স্বীকৃতির পর বাংলাদেশের পঞ্চম বিমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে ঢাকার রিকশা ও রিকশা চিত্র এ স্বীকৃতি লাভ করেছে।
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, এর ফলে গত আট দশক ধরে চলমান রিকশা চিত্রকর্ম একটি বৈশ্বিক ঐতিহ্য হিসেবে ইউনেস্কোর স্বীকৃতি লাভ করল।
উল্লেখ্য, গত ছয় বছর ধরে এ চিত্রকর্মের নিবন্ধন ও স্বীকৃতির প্রক্রিয়া চলমান থাকলেও প্রথম চেষ্টায় তা ব্যর্থ হয়। গত বছর (২০২২) পুনরায় নথিটি জমাদানের সুযোগ দেওয়া হয়। এরপর সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে ও প্যারিসের বাংলাদেশ দূতাবাসের সহযোগিতায় সম্পূর্ণ নথিটি নতুনভাবে প্রস্তুত করা হয়।
বাংলাদেশের রিকশা চিত্র ইউনেস্কোর বিমূর্ত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় সভায় উপস্থিত আন্তঃরাষ্ট্রীয় পরিষদের সদস্য, মন্ত্রী ও রাষ্ট্রদূতসহ শতাধিক দেশের প্রতিনিধি বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতকে অভিনন্দন জানান। পাশাপাশি এ চিত্রকর্মের বৈচিত্র্যপূর্ণ বহিঃপ্রকাশে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
এ অর্জনের মাধ্যমে ইউনেস্কোতে বাংলাদেশের ধারাবাহিক সাফল্যের মুকুটে আরও একটি পালক যুক্ত হলো।
এ স্বীকৃতিকে বাংলাদেশের জন্য বিরল সম্মান হিসেবে অভিহিত করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ ও সচিব খলিল আহমদ।
প্রসঙ্গত, গত ১৫ নভেম্বর ৪২তম সাধারণ পরিষদের সভায় বাংলাদেশ ইউনেস্কো নির্বাহী পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হয়। ইউনেস্কোতে বাংলাদেশের এ ধারাবাহিক সাফল্যকে সংশ্লিষ্ট মহল বাংলাদেশের কূটনৈতিক অগ্রযাত্রা হিসেবে অভিহিত করেন।