চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়া পৌরসভার সরু সড়কের ওপর ফুটপাত দখল ও অটোরিক্সা স্ট্যান্ড থাকায় প্রতিদিনই ভোগান্তিতে পড়তে হয় জনগণের। রেলস্টেশন, পৌর কার্যালয়, পোস্ট অফিস ও মায়াবী সিনেমা হলের সামনে থাকা অটোরিক্সা স্ট্যান্ডের কারণে সড়ক বাজারের প্রধান সড়কটিতে নিয়মিতই লেগে থাকে যানজট।
সম্প্রতি ড্রেন নির্মাণের কারণে এ সড়কের পৌর কার্যালয়ের সামনে চলাচল দায়। কয়েকমাস ধরেই অপরিকল্পিত ভাবে ড্রেন গুলোর নির্মাণ কাজ চলছে। এতে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা। আর এসব বিষয় ধরা পরে এই এলাকার সংসদ সদস্য আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের চোখে।
জনগণের ভোগান্তি দূর করতে আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলেন আইনমন্ত্রী। এরপর ৩ জুলাই সোমবার বিকেলে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঈদ পরবর্তী ভার্চুয়ালি মত বিনিময়ের সময়ও মন্ত্রী প্রসঙ্গটি তুলে ধরেন।
এ সময় তিনি আখাউড়া পৌর সভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. তাকজিল খলিফা কাজলকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘মেয়র সাহেব, জনগণ রেলস্টেশনে নামার পর খুব বিরক্ত হয়। কারণ একপাশে বাজার, আরেক পাশে সিএনজি স্ট্যান্ড। আমি ওসি সাহেবকে বলেছি, স্টেশনের পাশে মাইক্রোবাস যেখানে থাকে সেখানে সিএনজি স্ট্যান্ড নিয়ে যেতে। যেন সড়কটা ফাঁকা থাকে। এই সড়কটি সংস্কার করতে এরই মধ্যে টেন্ডার হয়ে গেছে। কসবা-আখাউড়া জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমার অনুরোধ সেখানে বাজার বসাবেন না। আপনি এখানে প্রতিনিধি আমি জানি। আপনি ব্যবস্থা না নিলে আমি ব্যবস্থা নিবো।’
মন্ত্রীর এমন নির্দেশনার কয়েক ঘণ্টা পরই সন্ধ্যা থেকে যানজট নিরসনে উদ্যোগ নেয় পুলিশ। এতে করে স্বস্তি ফিরে এসেছে এলাকায়। অনেক দোকানি নিজ থেকে অস্থায়ী দোকানগুলো সরিয়ে নিতে শুরু করেছেন।
এ বিষয়ে আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘স্টেশন থেকে বেরুনোর পথটি যেন পরিষ্কার থাকে সে বিষয়ে মন্ত্রী মহোদয় নির্দেশনা দিয়েছেন। নির্দেশনা পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় পোষ্ট অফিসের সরকারি ৫টি গাছ টেন্ডার ছাড়া কর্তন করা হয়েছে। গাছের পরিমাপ, মূল্য নির্ধারণ এবং সরকারি অনুমতি না নিয়ে পোষ্ট মাস্টার আজহার উদ্দিন এসব মূল্যবান গাছ কর্তন করেছেন। গাছের কয়েকটি কান্ড এবং ঢালপালা পোষ্ট চত্বরের মাটিতে ফেলে রাখা হয়েছে। এর আগে বুধবার গাছগুলি কাটা হয়। তবে পোষ্ট মাস্টার আজহার উদ্দিন দাবি করে বলেন গাছ কাটার বিষয়ে বিভাগীয় অনুমতি রয়েছে।
জানা যায়, আখাউড়া পৌরশহরের প্রাণকেন্দ্র সড়ক বাজারে পোষ্ট অফিসের একতলা ভবন রয়েছে। পোষ্ট অফিস চত্বরে বেশ কিছু ফলজ ও বনজ গাছ রয়েছে। পোষ্ট মাষ্টার আজহার উদ্দিন এসব গাছ থেকে ৫টি গাছ কর্তন করেছেন। এরমধ্যে একটি গাছের গুড়ি থেকে বাকী গাছগুলো কান্ডের উপরের অর্ধাংশ ঢালপালাসহ কেটে ফেলেছেন। তবে গাছ কাটার জন্য পোষ্ট অফিস বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় বন বিভাগের কোন অনুমতি নেয়নি পোষ্ট মাস্টার।
আজ ২৩ মার্চ বৃহস্পতিবার সরজমিনে পোষ্ট অফিসে দেখা যায়, পোষ্ট অফিসের সামনের খোলা জায়গায় কিছু গাছের কান্ড এবং ঢালপালা রাখা হয়েছে। গাছ কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা পোষ্ট মাস্টার আজহার উদ্দিন বলেন, গাছের ঢালপালা বিদ্যুতের তারে পড়েছিল। এজন্য কেটে দিয়েছি। গাছ কাটার বিষয়ে বিভাগীয় অনুমতি রয়েছে। তবে, তিনি লিখিত কোন অনুমতি দেখাতে পারেন নি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা বন কর্মকর্তা গোলাম মোস্তাফা বলেন, গাছ কাটার বিষয়ে পোষ্ট অফিসের কোন চিঠি পাইনি। বিষয়টি আমি অবগত নই।
আখাউড়া উপজেলার সদ্য সাবেক বন কর্মকর্তা মোঃ আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, গাছ কাটতে হলে বন বিভাগকে অবগত করা হলে তারপর মাপঝোক করে মূল্য নির্ধারণ করা হয়। তারপর নিলাম কমিটি নিলাম দেওয়ার পর নিলাম প্রাপ্ত ব্যক্তি গাছ কাটবেন। এটাই নিয়ম।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ডাক বিভাগের কুমিল্লা ডেপুটি পোষ্ট মাস্টার জেনারেল (ডিপিএমজি) মোঃ মোজাম্মেল হক বলেন বৃষ্টির পানি যাতে ছাদে না পরে সেজন্য গাছের ঢালপালার ছেটে দেওয়ার নির্দেশনা আছে। তবে গাছ কাটার কোন অনুমতি দেওয়া হয়নি। বিষয়টি তদন্ত করার জন্য কসবা পোষ্ট মাস্টারকে নির্দেশ দিয়েছি।
স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাশেমকে (৭৩) রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে। শনিবার দিবাগত রাত ৯টার দিকে উপজেলার শাহবাজপুর গ্রামে নিজ বাসভবনে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। পারিবারিক সূত্র জানায়, আবুল হাশেম দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। গত শনিবার রাতে নিজ বাসভবনে তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। গতকাল রোববার দুপুরে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের মাঠে তাকে নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মুহাম্মদ সরওয়ার উদ্দীনের নেতৃত্বে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেয়া হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মো. ইসমত আলী, সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসলাম হোসেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ৫ ছেলেসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় আগুন পুড়িয়ে হত্যা করার নারীর খণ্ডিত মাথা উদ্ধার করেছে পুলিশ। পাশাপাশি ওই নারীর পরিচয় জানা গেছে।
আজ ২৪ ডিসেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে আখাউড়া উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়নের গাজির বাজার এলাকার একটি পুকুর থেকে মরদেহের মাথাটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত নারীর নাম হরলুজা (৫০)। তিনি স্থানীয় নুরুল ইসলাম ব্যাপারীর স্ত্রী। তিনি ওই এলাকায় একটি কলোনিতে বসবাস করতেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আখাউড়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছমিউদ্দিন জানান, এ ঘটনায় ফারহান রনি নামের এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
রনি আখাউড়া উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহনেওয়াজ ভূইয়ার ছেলে। তিনি একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তার স্বীকারোক্তিতে মরদেহের খণ্ডিত মাথা একটি পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। হত্যাকাণ্ডের কারণ উদঘাটনের চেষ্টা চলছে।
এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ সকালে উপজেলার গাজীর বাজার এলাকার এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে রাজহাঁস চুরি হয়। সকাল ৭টার দিকে হাঁস খুঁজতে এসে শাহনেওয়াজ ভূঁইয়ার জায়গায় পরিত্যক্ত টিনের ভাঙা ঘর থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখেন। সেখানে থাকা ফারহান রনি জানান, তিনি পাতা পোড়াচ্ছেন। এ কথায় বিশ্বাস না হলে হাঁসের মালিক দুই ভাই এনামুল ও রোমান এবং তাদের চাচাতো ভাই উবায়দুল ঘরের ভেতরে কী আছে দেখতে চান। এতে ফারহান ক্ষুব্ধ হয়ে তাদের মারার হুমকি দেন। এতে আরো সন্দেহ তৈরি হয়। পরে গ্রামের লোকজনসহ ওই ঘরে ঢুকে গর্তে মরদেহ পুড়তে দেখা যায়।
আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানি ॥ সংশ্লিষ্টদেরকে নোটিশ
স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ব্রোকেন স্টোন বা চূর্ণ পাথরের ঘোষণা দিয়ে ভারত থেকে আমদানি হয়েছে ২৭০০ টন পাথরের ধুলা (ডাস্ট)। মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানির অভিযোগে ছাড়পত্র মিলছে না কাস্টমসের। যে কারণে প্রায় এক মাস ধরে আখাউড়া স্থলবন্দরে এই ডাস্ট বা ধুলাগুলো পড়ে আছে। কাস্টমসের গঠিত তদন্ত কমিটিও ডাস্ট উল্লেখ করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িরা দাবি করেছেন, এতে প্রতিদিন লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদেরকে। এ জন্য তারা কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে দায়ী করছেন। রপ্তানিমুখী আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে প্রথমবারের মতো চূর্ণপাথর আমদানি হয় গত ১৩ নভেম্বর। এরপর কয়েক দফায় মোট ২৭০০ টন আমদানি করে ভারতীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। এ প্রতিষ্ঠানটি আশুগঞ্জ নদীবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত মহাসড়ক চারলেনে উন্নীত করার কাজের জন্য পাথর আমদানি করেছে। আমদানিকৃত চূর্ণপাথরগুলো প্রতি টন আমদানি হয়েছে ১৩ মার্কিন ডলারে। এগুলো বন্দর থেকে ছাড়ানোর কাজ পায় সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট খলিফা এন্টারপ্রাইজ। তবে কাস্টমস থেকে ছাড়পত্র নিতেই বাঁধে বিপত্তি। প্রথমবারের মতো আমদানি হওয়ায় পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ছাড়পত্র দেওয়ার কথা জানায় কাস্টমস। পরবর্তীতে এগুলো পরীক্ষা করে পাথরের বদলে ডাস্ট আনা হয়েছে জানিয়ে আটকে দেয়া হয়। ফলে প্রতিদিনই বন্দর কর্তৃপক্ষকে মাশুল বাবদ প্রায় ৩৬ হাজার টাকা গুনতে হচ্ছে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে।
অভিযোগ উঠেছে- আমদারিকারক প্রতিষ্ঠান ভাঙা পাথরের ঘোষণা দিয়ে ডাস্ট এনেছে। এজন্য কাস্টমসের তরফ থেকে চার সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়। তদন্ত শেষে রিপোর্ট দেওয়া হয় ডাস্ট হিসেবে। তবে দ্রুত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে বলে জানান কাস্টমসের কর্মকর্তারা।
এদিকে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে চূর্ণ পাথর বা ডাস্ট আমদানির অনুমতি না থাকায় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে আগামী ১০ দিনের মধ্যে তাদেরকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট খলিফা এন্টারপ্রাইজকেও কার্যার্থে একই চিঠি দেওয়া হয়। সিএন্ডএফ এর মালিক হলেন আখাউড়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মো.তাকজিল খলিফা কাজল।
খলিফা এন্টার প্রাইজের প্রতিদিন নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আমরা প্রথম দফা আনার পর বলা হয় সব আনার পর অনুমতি দেওয়া হবে। এখন বলা হচ্ছে এ ধরণের পাথরের অনুমতি নেই। এখন পাথর আটকে থাকায় আমরা লোকসানের মুখে পড়েছি।’
আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ‘তদন্ত করে আমদানি করা পণ্য ডাস্ট হিসেবে পাওয়া গেছে। এ ধরণের পণ্য আমদানির অনুমতি নেই। এখন এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন।’
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়া উপজেলার তন্তর এলাকায় মো. হেবজু মিয়া (৬০) নামে এক বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে উঠেছে তার প্রতিবেশি পরিবারের লোকজনের বিরুদ্ধে।
২৭ আগস্ট মঙ্গলবার রাতে এ ঘটনা ঘটানোর পর ওই প্রতিবেশি পরিবারের লোকজন বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেছে।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া থানার ওসি মোহাম্মদ সোহেল জানান, প্রতিবেশি শাহ আলম মিয়ার বাড়ির একটি মোবাইল ফোন চুরি হয়।
অভিযোগ তোলা হয়, হেবজু মিয়ার স্ত্রীর বিরদ্ধে। বিষয়টি মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জানতে চাইলে প্রতিবেশি বাড়ির লোকজনের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় কাঠের বস্তু দিয়ে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় বৃদ্ধের পক্ষ থেকে কেউ অভিযোগ দিলে সে অনুযায়ী প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।