চলারপথে রিপোর্ট :
আশুগঞ্জে পাগলা কুকুরের কামড়ে নারী-শিশু সহ ১০জন আহত হয়েছেন। আজ ৯ জুলাই রবিবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত উপজেলার তারুয়া ইউনিয়নের তারুয়া, খারাসার ও নাওঘাট গ্রামে ১০জনকে কুকুরে কামড়ায়।
আহতদের মধ্যে ৭জনকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরা হলেন, হামিদা বেগম (২৪), লামিম (৬), মিহির (১২), ইয়ামিন (৫), লামিছা (৩), ফাহিম (১০) ও খাদিজা বেগম (১০)।
হাসপাতালে আহতদের স্বজনরা জানায়, উপজেলার রবিবার সকাল থেকেই উপজেলার খারাসার গ্রামে একটি পাগলা কুকুর এসে উৎপাত শুরু করে। পরে কুকুরটি খারাসার গ্রামে কয়েকজন পথচারীকে কামড়িয়ে তারুয়া ও নাওঘাট এলাকায় চলে আসে। পরে সেখানেও নারী-শিশুদের কামড়িয়ে আহত করে। ৪ শিশুকে কামড়িয়ে কোমড় ও পায়ের মাংস ক্ষতবিক্ষত করে। আহতদের মধ্যে ৭জনকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও বাকী ৩জন স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নেন।
এ ব্যাপারে তারুয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাদল সাদির জানান, পাগলা কুকুর কামড়ানোর বিষয়টি জানতে পেরেছি। আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাহিদ আহমেদ বলেন, কুকুরে কামড়ানোর বিষয়টি আমি অবগত নই। খোঁজ নিয়ে বলা যাবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীসহ পাঁচজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁদের মধ্যে সম্পদে এগিয়ে আছেন জাতীয় পার্টির টানা দুই বারের সাবেক সংসদ সদস্য ও এবারের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক মৃধা। আর বার্ষিক আয়ে এগিয়ে আছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহজাহান আলম। চার বছরে জিয়াউল হকের বার্ষিক আয় কমলেও নিজের নামের পাশাপাশি স্ত্রীর নামে সম্পদ প্রায় পাঁচ গুণ বেড়েছে।
আগামী ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য উপনির্বাচন উপলক্ষে জমা দেওয়া হলফনামা ঘেঁটে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা প্রার্থীরা হলেন আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদবিষয়ক উপকমিটির সদস্য ও স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান আলম, জাতীয় পার্টির আবদুল হামিদ, স্বতন্ত্রপ্রার্থী জিয়াউল হক মৃধা, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির রাজ্জাক হোসেন ও জাকের পার্টির জহিরুল ইসলাম।
হলফনামা অনুযায়ী, পাঁচজনের মধ্যে তিনজন প্রার্থী উচ্চশিক্ষিত। তাঁদের মধ্যে শাহজাহান আলম এমবিএস (মাস্টার্স ইন বিজনেস স্টাডিজ), আবদুল হামিদ ও স্বতন্ত্রপ্রার্থী জিয়াউল হক মৃধা এলএলবি পাস। রাজ্জাক হোসেন উচ্চমাধ্যমিক ও জহিরুল ইসলাম স্বশিক্ষিত।
নৌকার প্রার্থী শাহজাহান আলমের হলফনামা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, তিনি পেশায় শিক্ষক। শিক্ষাগত যোগ্যতা এমবিএস পাস। আশুগঞ্জ উপজেলায় নিজের প্রতিষ্ঠিত বঙ্গবন্ধু কারিগরি ও বাণিজ্যিক মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ তিনি। ২০১৫ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতে তাঁর নামে দুটি মামলা ছিল। তবে দুটি মামলা থেকে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
হলফনামা অনুযায়ী, শাহজাহান আলমের বার্ষিক আয় ১১ লাখ ২৩ হাজার ১১৬ টাকা। তাঁর নিজ নামে ১২ লাখ ৬৪ হাজার ২৬২ টাকা এবং স্ত্রীর নামে ১৫ লাখ ৫৫ হাজার ৩৩২ টাকার অস্থাবর সম্পত্তি আছে। নিজ নামে সোনা আছে ২০ তোলা। নিজ নামে ৬২ লাখ ৯৩ হাজার ৪৫৭ টাকার এবং স্ত্রীর নামে ১২ লাখ ৯৬ হাজার স্থাবর সম্পত্তি রয়েছে। নিকটাত্মীয়ের কাছ থেকে তিনি ১৩ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছেন।
জিয়াউল হক মৃধার পেশা আইনজীবী। তাঁর বিরুদ্ধে ১৯৯৯ সালে মামলা হলেও তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রত্যাহার করা হয়। হলফনামায় তিনি বার্ষিক আয় ৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা ও তাঁর ওপর নির্ভরশীল বড় ছেলের বার্ষিক আয় ৬ লাখ ৩১ হাজার ১২ টাকা দেখিয়েছেন। একাদশ সংসদ নির্বাচনের সময় তাঁর বার্ষিক আয় ছিল ২৬ লাখ ৭৭ হাজার ৬৩১ টাকা। অর্থাৎ গত পাঁচ বছরে তাঁর বার্ষিক আয় ২২ লাখ ১৭ হাজার ৬৩১ টাকা কমেছে।
হলফনামা অনুযায়ী, স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে জিয়াউল হক মৃধার বর্তমানে নিজ নামে সরাইল ও রাজউকের পূর্বাচলের নিউটাউনে ৬৩ লাখ ২৫ হাজার ৫৭৯ টাকার সম্পত্তি, স্ত্রীর নামে ১৬৩ শতক জমি ও যৌথ মালিকানায় ৯ একর ৫০ শতক জমি আছে। অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে বর্তমানে নিজ নামে ৪৬ লাখ টাকা মূল্যের একটি ল্যান্ডক্রুজার প্রাডোসহ ৯১ লাখ ৩৭ হাজার ১৪৯ টাকার সম্পত্তি আছে। এ ছাড়া স্ত্রীর নামে ৭ ভরি সোনাসহ ২ লাখ ৭৭ হাজার ৯৪৮ টাকার এবং নির্ভরশীলদের নামে ৩৫ ভরি সোনাসহ ২৪ লাখ ২০ হাজার টাকার সম্পদ আছে।
জাতীয় পার্টির প্রার্থী আবদুল হামিদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। পেশায় তিনি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। কৃষি ও অন্যান্য খাত থেকে তাঁর বার্ষিক আয় ৫ লাখ হাজার ৯৬ হাজার ২০০ টাকা বলে তিনি হলফনামায় উল্লেখ করেছেন। ব্যবসা থেকে তাঁর ওপর নির্ভরশীলদের আয় ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। তাঁর নিজ নামে ৩০ লাখ ২৭ হাজার ১৪৫ টাকা এবং স্ত্রীর নামে ২২ লাখ ৯৬ হাজার ৯০০ টাকার অস্থাবর সম্পত্তি আছে। নিজ নামে সোনা আছে ৪০ ভরি ও স্ত্রীর নামে আছে ৩৭ ভরি। সরাইলে তাঁর ১০ বিঘা কৃষিজমি ও দশমিক ৪৫ শতক অকৃষিজমি আছে। আর স্ত্রীর নামে ৬ লাখ ৯৩ হাজার টাকার অকৃষিজমি আছে বলে হলফনামায় লেখেন তিনি।
জাকের পার্টির প্রার্থী জহিরুলের নামে মামলা নেই। ব্যবসা থেকে তাঁর বার্ষিক আয় ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা। তাঁর নিজ নামে ২৬ লাখ টাকার অস্থাবর সম্পত্তি আছে। তাঁর নামে ৩০ শতক কৃষি জমি ও আধা পাকা টিনশেডের দুই কোঠার একটি দালান আছে।
ন্যাশনাল পিপলস পার্টির রাজ্জাক হোসেনের নামে মামলা নেই। ব্যবসা থেকে তাঁর বার্ষিক আয় ৫ লাখ ১০ হাজার টাকা। তাঁর নিজ নামে ২৮ লাখ ৭ হাজার ৭০০ টাকার অস্থাবর সম্পত্তি আছে। স্থাবর সম্পত্তি হিসেবে তাঁর নামে ৩০ শতক কৃষিজমি আছে। তাঁর ১২ লাখ টাকার ব্যাংক লোন আছে বলে হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের আলোচিত সংসদ সদস্য উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া গত ৩০ সেপ্টেম্বর মারা যান। এতে আসনটি শূন্য হয়। নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুযায়ী আগামী ৫ নভেম্বর এ আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
বিশেষ প্রতিনিধি :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২-(সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপ-নির্বাচন বুধবার। ইতিমধ্যেই সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে প্রশাসন। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে।
আজ ৩১ জানুয়ারি মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকে ভোট কেন্দ্রগুলোতে ইভিএম মেশিনসহ নির্বাচনী সরঞ্জামাদি পাঠানো হয়েছে। বুধবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪ টা পর্যন্ত চলবে ভোট গ্রহন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলা ও আশুগঞ্জ উপজেলা নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২- আসন গঠিত। দুই উপজেলায় রয়েছে ১৭টি ইউনিয়ন। এর মধ্যে সরাইল উপজেলায় রয়েছে ৯টি ইউনিয়ন ও আশুগঞ্জ উপজেলায় রয়েছে ৮টি ইউনিয়ন।
উপ-নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ৩লাখ ৭৩ হাজার ৩১৩ জন। এর মধ্যে সরাইল উপজেলায় ২ লাখ ৪১ হাজার ৭৯টি এবং আশুগঞ্জ উপজেলার মোট ভোটার ১ লাখ ৩২ হাজার।
উপ-নির্বাচনে মোট কেন্দ্র ১৩২টি। এর মধ্যে সরাইল উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে ৮৪টি ও আশুগঞ্জ উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে ৪৮টি ভোট কেন্দ্র করা হয়েছে।
উপ-নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৫ জন প্রার্থী। এরা হলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের পদ থেকে পদত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া এই আসনের ৫ বারের সাবেক সংসদ সদস্য, সাবেক প্রতিমন্ত্রী উকিল আবদুস সাত্তার ভূইয়া-(কলারছড়ি প্রতীক), জাতীয় পার্টির প্রার্থী আবদুল হামিদ ভাসানী-(লাঙ্গল), স্বতন্ত্র প্রার্থী ও এই আসনের ২ বারের সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা (আপেল প্রতীক), জাকের পার্টির জহিরুল ইসলাম জুয়েল-(গোলাপ ফুল), ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ও আশুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান, বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা আবু আসিফ আহমেদ-(মোটর গাড়ী প্রতীক)।
তবে প্রতীক বরাদ্দের পর স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা পত্রিকায় বিবৃতি দিয়ে নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়িয়েছেন।
উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বর্তমানে বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা আবু আসিফ আহমেদ (মোটর গাড়ি প্রতীক) গত শুক্রবার রাত থেকে নিখোঁজ রয়েছেন। তবে পুলিশের দাবি আবু আসিফ নিজেই আত্মগোপন করেছেন।
এদিকে নিখোঁজ স্বামীর (আসিফ) সন্ধান পেতে ও অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ করতে জেলা প্রশাসক ও উপ-নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেছেন আবু আসিফের স্ত্রী মেহেরুন্নেছা মেহরিন। মঙ্গলবার দুপুরে লোক মারফত তিনি রিটার্নিং অফিসারের কাছে এই আবেদনপত্র পাঠান। আবেদনের অনুলিপি প্রধান নির্বাচন কমিশনার, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার, আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার, আশুগঞ্জ থানার ওসির কাছে ও দেয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক ও উপ-নির্বাচরে রিটার্নিং অফিসার মোঃ মোঃ শাহগীর আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে বিএনপি থেকে পদত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া (কলারছড়ি প্রতীক) নির্বাচনে সুবিধাজনক অবস্থায় আছেন।
“উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া সমর্থক গোষ্ঠির ব্যানারে” বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সদর আসনের সংসদ সদস্য র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, সরাইল উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা আজাদ ওরফে শিউলী আজাদ, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আল-মামুন সরকারের নেতৃত্বে আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা প্রতিদিন নির্বাচনী এলাকায় কলারছড়ির পক্ষে প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছেন।
নেতৃবৃন্দ ভোটের দিন প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে স্থানীয় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারদেরকে নির্দেশনা দেন। প্রচার-প্রচারণায় সরকারি দলের নেতাদের সহযোগীতা পেয়ে উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া সুবিধাজনক অবস্থায় আছেন। নির্বাচনে তিনি চমক দেখাতে পারেন বলে মনে করছেন নির্বাচনী এলাকার লোকজন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার আশুগঞ্জ ও সরাইল এলাকার একাধিক ভোটার বলেন, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২- আসনে বিএনপির সাবেক এমপি ব্যারিষ্টার রুমিন ফারহানা প্রার্থী হতে পারেন। ব্যারিষ্টার রুমিন ফারহানা যাতে নির্বাচনী এলাকায় সুবিধা না করতে পারেন সেজন্য আওয়ামীলীগ বিএনপির পদত্যাগী নেতা উকিল আবদুস সাত্তারের পক্ষে মাঠে নেমেছে। উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২- আসন থেকে ৫ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
এদিকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে জয়ের প্রত্যাশা করেছেন জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী আবদুল হামিদ ভাসানী ও জাকের পার্টির প্রার্থী জহিরুল ইসলাম ভূঞা।
এদিকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে প্রশাসন। নির্বাচনে ১হাজার ১শত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করার পাশাপাশি থাকবে ৪ প্লাটুন বিজিবির সদস্য, র্যাবের ৯টি টিম, পুলিশের ৯টি মোবাইল টিম এবং ৪টি স্ট্রাইকিং টিম। প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে নিরাত্তার দায়িত্ব পালন করবে ৩জন পুলিশ, অস্ত্রধারী ২জন আনসার, লাঠিধারী ১০জন আনসার ও ২জন গ্রাম পুলিশ।
উপ-নির্বাচনে ১৭টি ইউনিয়নে ১৭জন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও ২ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন।
এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার মোঃ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, উপ-নির্বাচন উপলক্ষে আমরা ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করেছি। কোন ধরনের বিশৃংখলা সহ্য করা হবেনা। কেউ বিশৃংখলার চেষ্টা করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এ ব্যাপারে উপ-নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম জানান, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। কেউ বিশৃংখলার চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ নৌ-বন্দর থেকে আখাউড়া স্থল বন্দর পর্যন্ত মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরন কাজের কারনে গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। মহাসড়কে ফেলা বালি পাশের খালে পড়ে ভরাট হয়ে যাওয়ায় এই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।
সরজমিনে দেখা গেছে গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে সদর উপজেলার সুহিলপুর, বুধল ও মজলিশপুর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে চরম দুর্ভোগে পড়েছে ওইসব গ্রামের বাসিন্দারা। খাল ভরাট হওয়ার কারণে জমিতে উঠা পানি নিষ্কাশন হচ্ছেনা। বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে ফসলি জমি। পানি উঠেছে বাড়ি-ঘরেও। সব কিছু মিলিয়ে কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের দুর্ভোগের সীমা নাই। বিশেষ করে খাঁটিহাতা বিশ্বরোড থেকে সুহিলপুর পর্যন্ত সড়কের পাশের বাসিন্দারা দুর্ভোগে পড়েছে।
এদিকে জলাবদ্ধতার খবর পেয়ে গত শনিবার দিনব্যাপী সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ সেলিম শেখ ও উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোঃ মোশারফ হোসেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে ভেকু দিয়ে খালে পড়া বালি অপসারণ করে পানি নিষ্কাশনের কাজ শুরু করেছেন। গতকাল রোববার দুপুর পর্যন্ত চলে খালের বালি অপসারনের কাজ।
সুহিলপুর গ্রামের মোঃ মজিদ মিয়া বলেন, মহাসড়ক চারলেন করার কারনে রাস্তায় ফেলা বালি পাশের খালে পড়ে খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় আমাদের গ্রামের বিভিন্ন অংশে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন গত ১৫ দিন আগে আমি আমার তিন কানি জমিতে ধান রোপন করেছিলাম। আমার জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। ঘর-বাড়ি জলাবদ্ধ হয়ে আছে।
বুধল ইউনিয়নের নন্দনপুর গ্রামের সফর আলী বলেন, আড়াইশ মুরগীসহ আমার একটি খামার পানিবন্দী হয়ে আছে। খাল ভরাটের কারনে এখানকার জায়গা জমি, ঘরবাড়ি সব বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধ হয়ে আছে। খালের বালি অপসারণ করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না করলে আমাদের দুর্ভোগ আরো বাড়বে।
এ ব্যাপারে সুহিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুর রশিদ বলেন, গত কয়েক দিনের বৃষ্টির কারনে এলাকার প্রায় শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। প্রায় দুইশত কানি ফসলি জমি পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
পুকুরের পাড় ভেঙ্গে কয়েক লাখ টাকার মাছ ভেসে গেছে।ফোরলেন রাস্তার কারনে খাল ভরাট করে ফেলায় পানি নিষ্কাশন সম্ভব হচ্ছে না। আমি আপাতত ভেকু এনে নালা পরিষ্কার করে পানি নিষ্কাশনের চেষ্টা করছি।
এ ব্যাপারে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ সেলিম শেখ বলেন, পানি নিষ্কাষনের জন্য কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের পাশের যেসব জায়গা বালু দিয়ে ভরাট হয়ে গেছে শনিবার দিনব্যাপী ভেকু দিয়ে খালের সেইসব বালু অপসারণ করে পানি নিষ্কাষনের ব্যবস্থা করেছি। আজ রোববার ও বালি অপসারণ করা হচ্ছে। আশা করি দ্রুত পানি নেমে যাবে। মানুষের দুর্ভোগও লাঘব হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আশুগঞ্জ উপজেলায় ২ হাজার ৪০০ কেজি (৮০ বস্তা) ভারতীয় জিরাসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল ২১ অক্টোবর সোমবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার সোনারামপুর রাজমনি হোটেলের সামনে থেকে কাভার্ড ভ্যান বোঝাই জিরাসহ তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- সুনামগঞ্জের বিশম্ভরপুর উপজেলার বোনপুর গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে আবু সিদ্দিক, জামালপুরের বকশিগঞ্জ উপজেলার লিলাশিখা (নতুনপাড়া) গ্রামের মো. আলমের ছেলে মো. বাহাদুর, রাজশাহীর শাহমখদুম উপজেলার নবা নতুনপাড়া গ্রামের আব্দুল গাফ্ফারের ছেলে মো. সাগর।
সোমবার রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পুলিশের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সোমবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আশুগঞ্জ উপজেলার সোনারামপুর রাজমনি হোটেলের সামনে থেকে একটি কাভার্ড ভ্যানসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। কাভার্ডভ্যান তল্লাশি করে ৮০ বস্তা ভারতীয় জিরা উদ্ধার করা হয়। জিরার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা কোনো সঠিক তথ্য দিতে পারেনি।
এতে আরো উল্লেখ করা হয়, শুল্ক ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে অবৈধভাবে জিরা আনা হয়েছে বিধায় তাদের কাছ থেকে ৮০ বস্তা জিরা (প্রতি বস্তায় ৩০ কেজি) ও জিরা বহনকারী কাভার্ড ভ্যান জব্দ করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ষষ্ঠ উপজেলা পর্যায়ের নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আশুগঞ্জ ও বাঞ্ছারামপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আগামীকাল ২৯ মে বুধবার অনুষ্ঠিত হবে। ইতিমধ্যে ভোট গ্রহণের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
আজ ২৮ মে মঙ্গলবার দুপুরের পর থেকে আশুগঞ্জ ও বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় ১৫০ টি ভোট কেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জাম বিতরণ করা হয়। স্ব স্ব উপজেলার উপজেলা পরিষদ মিলনায়তন থেকে বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
এ সময় সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার উপস্থিতিতে দুটি উপজেলার ১৫০টি ভোট কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তার কাছে ব্যালট, বাক্স, সীলসহ নির্বাচনী সরাঞ্জাম বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরে কড়া নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে এসব সরাঞ্জাম পৌছে দেয়া হয়। তবে নির্বাচনের দিন ভোর থেকে কেন্দ্রগুলোতে ব্যালট পেপার সরবরাহ করা হবে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জেসমিন সুলতানা জানান, নির্বাচনে আইন শৃংঙ্খলা রক্ষায় বিপুল পরিমান পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও আনসার বাহিনীর পাশাপাশি নির্বাহী ম্যজিস্ট্রেট এবং জুডিসিয়াল ম্যজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন।
উল্লেখ্য, দুই উপজেলার নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ৮ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৮ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। দুই উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ১৩ হাজর ৮৮২ জন।