অনলাইন ডেস্ক :
তিন ম্যাচ সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে ৭ উইকেটের জয় পেল বাংলাদেশ। দাপুটে এই জয়ে সিরিজে ২-১ হোয়াইটওয়াশ এড়াল টাইগাররা।
সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ১৭ রানে জয় পায় আফগানিস্তান। দ্বিতীয় ম্যাচে রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরানের জোড়া সেঞ্চুরিতে ৩৩১ রান করে আফগানরা।
টার্গেট তাড়া করতে নেমে চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে ১৪২ রানের বড় ব্যবধানে হারে বাংলাদেশ। টাইগারদের হারিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই ২-০ ব্যবধানে সিরিজ নিশ্চিত করে আফগানরা।
প্রথম দুই ম্যাচে হেরে মঙ্গলার তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে হোয়াইটওয়াশের শঙ্কায় ছিল টাইগাররা। মানরক্ষার ম্যাচে দুর্দান্ত বোলিংয়ে আফগানদের ১২৬ রানে অলআউট করেন শরিফুল-তাসকিন-তাইজুলরা।
৩০০ বলে ১২৭ রানের মামুলি স্কোর তাড়া করতে নেমে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৫৯ বল হাতে রেখেই জয় নিশ্চিত করে বাংলাদেশ।
দলের জয়ে ৬০ বলে তিন চার আর দুটি ছক্কার সাহায্যে অনবদ্য ৫৩ রানের ইনিংস খেলেন অধিনায়ক লিটন দাস। ৩৯ বলে পাঁচ বাউন্ডারির সাহায্যে ৩৯ রান করে ফেরেন সাকিব আল হাসান। ১৯ বলে ২২ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন তাওহিদ হৃদয়। ১১ রানে ফেরেন নাজমুল হোসেন শান্ত। শূন্য রানে আউট হন নাইম শেখ।
আজ ১১ জুলাই মঙ্গলবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে ৪৫.২ ওভারে ১২৬ রানে অলআউট হয় আফগানিস্তান। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৫৬ রান করেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই।
বাংলাদেশ দলের হয়ে পেসার শরিফুল ইসলাম নেন ৪ উইকেট। ২টি করে উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ ও তাইজুল ইসলাম। একটি করে উইকেট নেন সাকিব আল হাসান ও মেহেদি হাসান মিরাজ।
চলারপথে ডেস্ক :
মুন্সিগঞ্জের একটি অনুষ্ঠানে স্টেজ পারফর্ম করছিলেন অপু বিশ্বাস ও নিরব। নাচ চলাকালীন অপু বিশ্বাসকে কোলে ওঠাতে গিয়ে পড়ে যান নায়ক নিরব। সোশ্যাল মিডিয়ায় তারই একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। কেউ কেউ বিষয়টি নিয়ে ট্রোলও করছেন। গত ১১ মার্চ মুন্সিগঞ্জে একটি অনুষ্ঠানে পারফর্ম করতে গিয়ে এমন বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েন তারা। যদিও পরিস্থিতি সামলে নাচ চালিয়ে যান অপু-নিরব।
কী কারণে পড়ে গিয়েছিলেন অপু-নিরব? এ প্রশ্নের উত্তর জানিয়েছেন নায়ক নিরব। এ অভিনেতা বলেন, ‘‘মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার একটি রিসোর্টে এ আয়োজন ছিল। সেখানে আমরা ‘হৃদয়ের আয়না’, ‘জল পড়ে পাতা নড়ে’, ‘বিয়াইন সাব’সহ চারটি গানে পারফর্ম করি। এর মধ্যে শেষ গান ছিল ‘বিয়াইন সাব’। এ গানে পারফর্ম করার প্রায় শেষ মুহূর্তে হঠাৎ আমার কোল থেকে অপু পিছলে পড়ে যায়। যদিও আমরা কেউ ব্যথা পাইনি। ৫-৬ সেকেন্ড পরই স্বাভাবিকভাবে উঠে দাঁড়িয়ে আবার নেচেছি। এমনকী আবারো অপুকে কোলে নিয়েই নেচেছি।’’
কারণ উল্লেখ করে নিরব বলেন, ‘পড়ে যাওয়ার মূল কারণটা অনেকে জানেন না। সাধারণত একটি অনুষ্ঠানে যে রকম স্টেজ করা হয়, ওই স্টেজটি সে রকম ছিল না। আমরা টাইলসের ওপর নেচেছি। টাইলসে পা পিছলে যাচ্ছিল। আমরা কেউই টাইলসে নেচে অভ্যস্ত নই। যে কারণে বারবার জুতা পিছলে যাচ্ছিল। কার্পেট বা অন্য কিছু হলে এই ধরনের সমস্যা হতো না। জায়গাটা ছিল সংকীর্ণ, অপুর পোশাক ছিল পাতলা পলিয়েস্টার কাপড়ের। সেটাও কিছুটা পিচ্ছিল থাকায় কোলে নিয়ে নাচতে গিয়ে পড়ে যায়। এর বাইরে অন্য কোনো কারণ নেই।’
নিরব-অপু সর্বশেষ ‘ছায়া বৃক্ষ’ নামের সিনেমায় অভিনয় করেন। বন্ধন বিশ্বাস পরিচালিত এই সিনেমা মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে।
স্পোর্টস ডেস্ক
টানা দ্বিতীয় জয়ে সুপার সিক্স পর্ব নিশ্চিত করল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। আরিফুল ইসলামের সেঞ্চুরিতে যুক্তরাষ্ট্রের সামনে বড় লক্ষ্য ছুড়ে দিয়েছিল তারা।
এরপর বল হাতে দারুণ অবদান রাখলেন মাহফুজুর রহমান রাব্বি ও অন্য বোলাররা। আর তাতেই প্রতিপক্ষকে উড়িয়ে দিল বাংলাদেশের যুবারা।
২০২৪ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে আজ ১২১ রানের বিশাল জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। ব্লুমফন্টেইনে টস হেরে আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ২৯১ রান সংগ্রহ করে তারা। এরপর যুক্তরাষ্ট্রকে ১৭০ রানেই অলআউট করে দেন বাংলাদেশের বোলাররা।
ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের শুরুটা অবশ্য স্বস্তির ছিল না। দলীয় ২৯ রানেই ওপেনার আদিল বিন সিদ্দিকের (১৩) উইকেট হারায় তারা। এরপর অবশ্য আরেক ওপেনার আশিকুর রহমান শিবলি লড়াই চালিয়ে চান চৌধুরী মো. রিজওয়ানকে নিয়ে। তাদের জুটি বড় হওয়ার আগেই অবশ্য বিদায় নেন শিবলি (২৭)।
শিবলির বিদায়ের পর রিজওয়ান ও আরিফুল মিলে ভালো জুটি গড়েন। সেই জুটিও ভাগে দলীয় ১০০-এর আগেই। ৪০ বলে ৩৫ রানের ইনিংস আসে রিজওয়ানের ব্যাট থেকে। তবে এরপর বিপদ হতে দেননি আরিফুল ও আহরান। দুজনের ১২২ রানের জুটিই বাংলাদেশের বড় সংগ্রহের ভিত্তি গড়ে দেয়।
আহরার ফেরেন ৪৯ বলে ৪৪ রান করে। আর আরিফ খেলেন ১০৩ বলে ৯ চারে সাজানো ১০৩ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলে। এছাড়া লোয়ার মিডল অর্ডারে নেমে অধিনায়ক মাহফুজুর রহমান রাব্বি খেলেন ১৭ বলে ৩১ রানের ঝোড়ো ইনিংস।
বল হাতে যুক্তরাষ্ট্রের বোলার আর্য গার্গ ৩টি এবং আরিন নাদকার্দি নেন ২টি উইকেট।
জবাব দিতে নেমে যুক্তরাষ্ট্র সুবিধা করতে পারেনি শুরু থেকেই। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছে তারা। ওপেনার প্রান্নাভ ছেত্তিপালায়াম ও উৎকর্ষ শ্রীবাস্তব ছাড়া বাংলাদেশি বোলারদের তোপের মুখে দাঁড়াতেই পারেননি দলটির অন্য ব্যাটাররা। প্রান্নাভ ৫৭ রান করতে খেলে ফেলেন ৯০ বল। আর ৪৯ বলে ৩৭ রান করেন উৎকর্ষ। কিন্তু আর কেউ তাদের সঙ্গ দিতে না পারায় বড় হার নিয়ে মাঠ ছাড়ে তারা।
বল হাতে বাংলাদেশ দলের রাব্বি ১০ ওভারে ৩১ রান খরচে নেন ৪ উইকেট। এছাড়া ১টি করে উইকেট নেন ইকবাল হোসেন ইমন, শেখ পারভেজ জীবন, রাফি উজ্জামান রাফি, এবং আরিফুল ইসলাম।
অনলাইন ডেস্ক :
লস অ্যাঞ্জেলেসে চলমান বিধ্বংসি দাবানলের মধ্যে অ্যাঞ্জেলিনা জোলি তার সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। ৪৯ বছর বয়সী জোলি সম্প্রতি জানান, তিনি এই সপ্তাহে লস অ্যাঞ্জেলেস এলাকা থেকে সরে যাওয়া বন্ধুদের জন্য তার বাড়িটিকে উন্মুক্ত করে রেখেছেন। সেইসাথে তিনি সবাইকে এই বিপর্যয়ে মানবিক হওয়ার আহ্বান জানান।
একটি সূত্র পিপল ম্যাগাজিনকে জানায়, অ্যাঞ্জেলিনা খুবই দুঃখিত হয়েছেন বাড়ি হারিয়েছেন যারা তাদের জন্য। অনেকে আছেন যারা নিঃস্ব হয়েছেন। দাবানলের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এমন সবার পাশে থাকতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ তিনি।
৭ জানুয়ারি প্যাসিফিক পালিসেডস থেকে শুরু হওয়া দাবানল ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী ১০ হাজারেরও বেশি স্থাপনা, যার মধ্যে বাসা এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অন্তর্ভুক্ত- ধ্বংস হয়ে গেছে। এই দাবানল ৮০ হাজারেরও বেশি বেশি মানুষকে বাস্তুচ্যুত করেছে। তাদের মধ্যে আছেন লেইটন মিস্টার, প্যারিস হিলটন, জেমস উডস, অ্যাডাম ব্রডি, ম্যান্ডি মুর, আন্না ফ্যারিস, রিকি লেকের মতো সেলিব্রিটি।
১০ জানুয়ারি পর্যন্ত কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, দাবানলের কারণে মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। এই দাবানল লস অ্যাঞ্জেলেসের ইতিহাসের অন্যতম সবচেয়ে বিধ্বংসী দাবানল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এমন সময়ে অ্যাঞ্জেলিনা জোলির এই মহানুভবতা মুগ্ধ করেছে সবাইকে। এছাড়াও জানা গেছে, অনেক সেলিব্রিটিই ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় এগিয়ে এসেছেন। সে তালিকায় আছেন হ্যালি বেরি, শ্যারন স্টোনরা। তারা আর্থিক সহায়তা নিয়ে সক্রিয় হয়েছেন। জেমি লি কার্টিস এবং তার পরিবার ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ১ মিলিয়ন ডলার দান করতে দিয়েছেন প্রতিশ্রুতি।
অনলাইন ডেস্ক :
ছুরিকাহত সাইফ আলি খানের অস্ত্রোপচার শেষ হয়েছে। মুম্বাইয়ের লীলাবতী হাসপাতাল সূত্রে ভারতের সংবাদমাধ্যম জানায়, প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে চলা এই অস্ত্রোপচারে ইতিমধ্যেই চিকিৎসকেরা অভিনেতার শরীর থেকে ছুরির ফলা বের করে এনেছেন। কসমেটিক সার্জারি করা হয়েছে তার ক্ষত অংশে।
জানা গেছে, সাইফের শরীর থেকে প্রায় ২-৩ ইঞ্চির একটি ধারালো বস্তু বের করা হয়েছে। চিকিৎসকরা মনে করছেন ওটা ছুরির ভাঙা অংশ। লীলাবতী হাসপাতালের পক্ষ থেকে আগেই জানানো হয়, ছয়টি ক্ষত রয়েছে অভিনেতার শরীরে। এর মধ্যে দুইটি ক্ষত বেশ গভীর। সাইফ শিরদাঁড়ার কাছেও আঘাত পেয়েছেন বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
আরও পড়ুন
বলিউড থেকে নার্গিস ফাখরি যে কারণে দুরে সরে যান
অন্যদিকে, মধ্যরাতে সাইফের বাড়িতে ঢুকে হামলা এবং ডাকাতির চেষ্টার ঘটনায় তিন সন্দেহভাজনকে আজ ১৬ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সকালে মুম্বাই পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, বুধবার রাত ২টা নাগাদ সাইফের বাড়িতে হামলা করে এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি। ডাকাতির উদ্দেশেই এই হামলা বলে প্রাথমিকভাবে জানায় পুলিশ। ওই দুর্বৃত্ত সাইফকে ছুরি দিয়ে কুপিয়েছে। তার পরেই জখম অভিনেতাকে ভর্তি করা হয় মুম্বাইয়ের লীলাবতী হাসপাতালে। তবে যে ব্যক্তি সাইফকে ছুরিবিদ্ধ করেন, তিনিই ধরা পড়েছেন কি না, তা স্পষ্ট নয়। জানা গেয়েছে, আটক তিনজনই অভিনেতার বাড়িতে কাজ করেন।
মুম্বাই পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (ডিসি) দীক্ষিত গেদাম বলেন, একজন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি সাইফ আলি খানের বাড়িতে ঢোকেন। তার পর অভিনেতার সাথে ওই ব্যক্তির হাতাহাতি হয়। আহত অভিনেতার চিকিৎসা চলছে। চলছে ঘটনার তদন্ত।
আরও পড়ুন
শীগ্রই ‘কালনী এক্সপ্রেস’ ট্রেন যাত্রাবিরতি করবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বুধবার রাত ২টা নাগাদ সাইফের বাড়িতে ঢোকে অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তরা। ডাকাতির উদ্দেশেই এই অনুপ্রবেশ বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ। ওই দুর্বৃত্ত সাইফকে ছুরি দিয়ে কোপায়। তার পরই জখম অভিনেতাকে ভর্তি করা হয় মুম্বইয়ের ওই হাসপাতালে।
মুম্বাইয়ের বান্দ্রায় সৎগুরু শরণ বিল্ডিং নামের একটি বাড়িতে থাকেন সাইফ। সেখানে তার সঙ্গে থাকেন অভিনেতার স্ত্রী বলিউড অভিনেত্রী করিনা কাপুর খান। সাইফদের সঙ্গে থাকেন তার দুই শিশুসন্তান, আট বছরের তৈমুর এবং চার বছরের জেহ। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, দুর্বৃত্তরা যখন ওই বাড়িতে ঢোকে, সেই সময় বাড়ির সবাই গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। শব্দ পেয়ে সবাই উঠে পড়লে ওই দুর্বৃত্ত সেখান থেকে বেরিয়ে যায়।
চলারপথে রিপোর্ট :
শেরপুরে প্রতিবছর বারুনী মেলা শেষে ‘বউ মেলা’ অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজ ২৭ এপ্রিল বৃহস্পতিবার উপজেলার গাড়ীদহ ইউনিয়নের গাড়ীদহ নামক স্থানে করতোয়া নদীর পশ্চিম কোল ঘেঁষে এই মেলা বসে। মেলায় ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ই নারী। কোনো পুরুষ আসতে পারে না। তাই বিভিন্ন বয়সী নারীরা প্রাণভরে মেলায় ঘুরে বেড়িয়েছেন। কিনেছেন প্রসাধনীসহ নানা পণ্য সামগ্রী। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে এই মেলা। বিগত কয়েক যুগ ধরে এই অঞ্চলের নারীদের জন্য মেলাটির আয়োজন হয়ে আসছে।
জানা যায়, প্রতি বছর বিশাল মাঠজুড়ে মেলা বসে। মেলায় স্থান পেয়েছে বিভিন্ন ধরনের দোকান। এক পাশে চলছে হুন্ডা ও নাগরদোলা খেলা। নারীরা দলবেঁধে আবার এলোমেলোভাবে দোকানে দোকানে ঘুরছেন। জিনিসপত্র পছন্দ করছেন। দরদাম করে পছন্দের জিনিসটি কিনছেন। আবার অনেকেই ছেলে-মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে নানা ধরনের ভাজিপুরি দোকানে যান। সন্তানদের আবদার পুরনে সেগুলো দোকানে বসে বা পাশে দাঁড়িয়ে অনেককে খেতেও দেখা যায়।
এলাকার নিমাই চন্দ্রের স্ত্রী কল্পনা ঘোষ জানান মেলা থেকে বিভিন্ন ধরনের খেলনা, কসমেটিকস, হাত পাখা, কাঠের সামগ্রী, মিষ্টান্ন সামগ্রী কিনেছেন। ছেলে-মেয়েকে হুন্ডা খেলা দেখিয়েছেন। নাগরদোলায় চড়ে ওরা ব্যাপক আনন্দ করেছে।
মেলায় আসা সালমা আকতার জানান, বাড়ির কাছে মেলা হওয়ায় সকালে একদফা এসেছিলাম। বিকেলেও আরেকদফা মেলায় এসেছি। অনেক কিছু খেয়েছি। মেলা থেকে কিছু সাংসারিক জিনিসপত্র কেনা হয়েছে। পাশাপাশি সন্তানদের জন্য নানা ধরনের খেলনা কিনেছি। বাদ যায়নি মিষ্টি কেনা। বউ মেলাটি ভীষণ আনন্দ দিয়েছে বলেও জানান তিনি।
মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য আনিছুর রহমান জানান, প্রত্যেক বছর চৈত্রের বারুনী তিথির দ্বিতীয়দিনে এখানে বউ মেলার আয়োজন করা হয়। তবে এবার তিথি অনুযায়ী মেলা হয়নি। রোজার কারণে সেটি করা সম্ভব হয়নি। তাই রোজার ঈদের পরপরই বৈশাখে মাসে এসে ঐতিহ্যবাহী মেলাটি হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বউ মেলায় এসে বিভিন্ন বয়সী নারীরা এসে নানা ধরনের জিনিসপত্র কিনেছেন। এছাড়া এবার মেলা জাকজমকভাবে হওয়ায় সময়সীমা আরও দুই-একদিন বাড়তে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
হিন্দু শাস্ত্রমতে, বারুনী তিথিতে এককালের প্রমত্তাখ্যাত করতোয়া নদীতে স্নানোৎসব করা হতো। এই তিথিতে এখানে স্নান করলে অতীত জীবনের সব পাপ মোচন করে দেন ইশ্বর। ইশ্বরের অপার কৃপা লাভ করা যায়। তাই উপজেলার গাড়ীদহ এলাকায় বহমান করতোয়া নদীতে স্নানোৎসবের আয়োজন করা হতো। যুগ যুগ ধরে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের এই উৎসবকে ঘিরে মেলাটি হয়ে আসছে। সেই থেকে এই মেলায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের পাশাপাশি মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষও সমানভাবে অংশগ্রহণ করে আসছেন। মেলা ঘিরে এই অঞ্চলের প্রতিটি বাড়িতে বিরাজ করে উৎসবের আমেজ। স্বজনদের পদভারে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো গাড়ীদগ গ্রাম ও আশেপাশের এলাকা।
এলাবার প্রবীণ ব্যক্তি আজমল হোসেন জানান, কবে থেকে এখানে স্নানোৎসব ও মেলা হয়ে আসছে তা সঠিক করে বলা মুশকিল। তবে অনুষ্ঠানটি যে শতবর্ষী তা ধারণা করা হয়। আর এখানে কয়েক যুগ ধরে বউমেলা হয়ে আসছে বলেও জানান তারা।