অনলাইন ডেস্ক :
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপির রাজনীতি দফার বিভ্রান্তিতে ঘুরপাক খাচ্ছে। কখনো ১০ দফা, কখনো ২৭ দফা, কখনো ১ দফা, আবার কখনো ৩১ দফা! বিএনপি কর্তৃক বিভিন্ন সময়ে ঘোষিত এসব দফা জনগণ কর্তৃক ইতোমধ্যেই প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।
আজ ১৩ জুলাই বৃহষ্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কর্তৃক উত্থাপিত রূপরেখাকে অন্তঃসারশূন্য ও অকার্যকর বলে প্রত্যাখ্যান করে এই বিবৃতি প্রদান করা হয়।
ওবায়দুল কাদের এমপি বলেন, বিএনপি কিছু দিন পর পর নতুন নতুন দফা নিয়ে রাজনীতিতে টিকে থাকার ব্যর্থ চেষ্টা করছে। বিএনপির এই দফা জনগণের চাহিদা বিবেচনা করে নয় বরং ঐতিহ্যগতভাবে তাদের দুর্নীতি, লুটপাটতন্ত্র এবং সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদকে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদানের স্বৈরতান্ত্রিক অপরাজনীতি ফিরিয়ে আনার কূটকৌশল।
তিনি বলেন, তাদের এসব দফা ও রূপরেখায় জনকল্যাণের সুনির্দিষ্ট কোনো কর্মপন্থা নেই। জনগণ তাদেরকে আস্থায় না নিলেও জনগণকে বিভ্রান্ত করতে তারা মরিয়া হয়ে অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি আজ যেসব রূপরেখা ও দফা তুলে ধরছে, প্রকৃতপক্ষে তারা তা বিশ্বাস ও ধারণ করে না। কারণ তারা ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় এসব নীতির বিরুদ্ধে সব ধরনের ধ্বংসাত্মক কর্মকা- চালিয়েছিল।
তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্র’-কে সাইনবোর্ড হিসেবে ব্যবহার করে তারা দুর্নীতির বরপুত্র, একুশে আগস্টের নারকীয় গ্রেনেড হামলার মাস্টারমাইন্ড, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমানের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিএনপি জনগণকে সেই ‘হাওয়া ভবন’-এর দুঃশাসনের যুগে ফিরিয়ে নিতে চায়। আজ তারা দুর্নীতির শে^তপত্র প্রকাশের কথা বলছে! অথচ বিএনপির শাসনামলে টানা পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়নের কলঙ্কের কথা জনগণ ভুলে যায়নি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি তাদের তথাকথিত রূপরেখায় ধর্মীয় স্বাধীনতার কথা বলেছে! শ্রমিকের ন্যায্য মজুরির কথা বলেছে! কৃষকের অধিকারের কথা বলেছে! -এ যেন ভূতের মুখে রাম নাম।
তিনি বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সামরিক স্বৈরাচার জিয়াউর রহমানই এদেশে ধর্মীয় স্বাধীনতার উপর প্রথম আঘাত হেনেছিল এবং বিএনপির এমপি, মন্ত্রী ও ক্যাডারবাহিনী সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নারীদের উপর পাশবিক ও বর্বর অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়েছিল। তাদের ধর্মীয় স্বাধীনতার উপর বার বার আঘাত হেনেছে বিএনপি। ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি তাদের শাসনামলে শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণে কিছুই করেনি, বরং তাদের হাত শ্রমিকের রক্তে রঞ্জিত। এমনকী পবিত্র রমজান মাসে বেতন-বোনাসের দাবীতে আন্দোলন করায় ১৭ জন শ্রমিককে গুলি করে হত্যা করেছিল।
তিনি বলেন, কানসাটে বিদ্যুতের দাবীতে আন্দোলনরত মানুষকে গুলি করে হত্যা এবং সার ও তেলের দাবীতে আন্দোলন করায় কৃষকের বুকে বুলেট বিদ্ধ করেছিল বিএনপি। তাদের অতীত অপকর্মের জন্য অনুতপ্ত না হয়ে, জাতির সামনে ক্ষমা প্রার্থনা না করে আজ তারা বিভ্রান্তির রূপরেখা উপস্থাপন করছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, মুখে গণতন্ত্রের কথা বলছে! আসলে গণতন্ত্রের মোড়কে তারা তাদের সেই হিং¯্র রাজনীতির পুনরাবৃত্তি ঘটাতে চায়। গণতান্ত্রিক পন্থায় অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নত-সমৃদ্ধ শান্তিপূর্ণ ও কল্যাণকর বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার প্রধানতম অন্তরায় বিএনপি এবং তার দোসররা।
তিনি বলেন, সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী সকলের অংশগ্রহণে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করে যাচ্ছে।
আজকের বাংলাদেশে কৃষক, শ্রমিক, জনতার ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে জানিয়ে কাদের বলেন, প্রান্তিক মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটেছে। যে কয়বার শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধি পেয়েছে, তা আওয়ামী লীগের আমলেই হয়েছে। কৃষি খাতে ব্যাপক প্রণোদনা ও কৃষি গবেষণার মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে।
তিনি বলেন, ক্ষুধা ও চরম দারিদ্র্যের অভিঘাত থেকে মুক্তি পেয়েছে জাতি। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনির আওতায় অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষের জীবনমানের উন্নতি ঘটেছে। আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে ভূমিহীন-গৃহহীন অসহায় মানুষের মাথা গোঁজার ঠাই এবং অর্থনীতির মূলধারায় সম্পৃক্ত হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আগামীর উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশে জনকল্যাণের এই ধারা অব্যাহত থাকবে। বিএনপির এই ধরনের তথাকথিত রূপরেখা ও আন্দোলনের হুমকি বাংলাদেশের চলমান উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। বাংলাদেশের জনগণ বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধভাবে এই অপশক্তির ষড়যন্ত্র প্রতিহত করবে। বাসস
চলারপথে রিপোর্ট :
মোহনগঞ্জে ৫টি মিষ্টি দোকানে ২৩ হাজার টাকা জরিমানা করেছে মোবাইল কোর্ট। আজ ১৭ জুলাই সোমবার সন্ধ্যায় পৌর শহরের কাচারি রোডে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার ভূমি মো.জাহাঙ্গীর আলম। এসময় অস্বাস্থকর নোংরা পরিবেশে মিষ্টি তৈরি ও সংরক্ষণ। নষ্ট মিষ্টি দোকানে বিক্রি সহ বিভিন্ন অনিয়মের কারনে মো.আলী আসমানের মোহনগঞ্জ মিষ্টান্ন ভাণ্ডার কে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। শংকর বাবুর মিষ্টি দোকানে ৫ হাজার টাকা, মনোরমা মিষ্টান্ন ভাণ্ডার ৫ হাজার টাকা, ও মিষ্টি মুখ দোকানে ২ হাজার টাকা ও অন্য একটা দোকানে ১হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। এসময়
মোহনগঞ্জ থানা পুলিশ সহযোগিতা করেন। মেবাইল কোর্টের ম্যাজিস্ট্রেট জাহাঙ্গীর আলম জানান, নোংরা পরিবেশে মিষ্টি তৈরি করে, সমনে সুন্দর করে ডিসপ্লে করছে এসব দোকান। ময়লা সংযুক্ত এসব মিষ্টি খেয়ে শিশু সহ সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতেপড়বে।
অনলাইন ডেস্ক :
শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেছেন, সরকার দেশের মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে গণিত ও বিজ্ঞানের শিক্ষক হিসেবে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের নিয়োগ দেওয়ার উদ্যোগ নেবে। নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে ও শিক্ষক সংকট মেটাতে এ উদ্যোগ নেওয়া হবে।
আজ ২ মার্চ শনিবার সকালে ঢাকায় ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স-বাংলাদেশ (আইডিইবি) মিলনায়তনে প্রতিষ্ঠানটির জেলা ও সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন প্রতিনিধি সম্মেলন ও বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘শিক্ষক সংকট নিরসনে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের কাজে লাগাতে এবং বর্তমান কারিকুলামে যে শিক্ষা দর্শন, ‘অ্যাক্টিভিটি বেইসড লার্নিং’-এর উদ্যোগ নিয়েছে, সেখানে ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে। যেহেতু আমাদের চাহিদা আছে, ডিপ্লোমা প্রকৌশলীরা শিক্ষক হিসেবে গণিত ও বিজ্ঞানের শিক্ষক হিসেবে আসতে পারেন। আমাদের নতুন কারিকুলাম অনুযায়ী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গণিত ও বিজ্ঞানের অনেক শিক্ষক প্রয়োজন।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা মনে করছি ৬০ হাজারের মতো গণিত ও বিজ্ঞানের শিক্ষকের অভাব রয়েছে। সেখানে আমাদের ডিপ্লোমা পাস করা ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়োজিত করতে পারলে শিক্ষক সংকট সমাধান করা সম্ভব হবে। সেটা আমাদের বিবেচনায় আছে।’
ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের স্নাতক সমমানের মর্যাদা দেওয়া প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘একজন এসএসসি পাস শিক্ষার্থীর বিএসসি (পাস কোর্স) পাস করতে সময় লাগে পাঁচ বছর। অন্যদিকে ডিপ্লোমা পাস করতে সময় লাগে চার বছর। সে ক্ষেত্রে ডিপ্লোমা পাস করা একজন শিক্ষার্থী এক বছর কোনো সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করলে তাকে বিএসসি (পাস) সমমানের মর্যাদা দেওয়া যেতে পারে। সে বিষয়ে অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
আইডিইবির প্রেসিডেন্ট প্রকৌশলী এ কে এম এ হামিদের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রকৌশলী রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক। স্বাগত বক্তব্য দেন আইডিইবির সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. শামসুর রহমান।
চলারপথে রিপোর্ট :
সিলেট অঞ্চলে মৃদু ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। গতকাল রবিবার রাত ৮টা ২৩ মিনিটে এ ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৪.২। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ভারতের মেঘালয়ে।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা শাহ মো. সজিব হোসাইন জানান, ভূমিকম্পের ধরণ মৃদু হওয়ায় সিলেট অঞ্চলের বেশিভাগ মানুষ এটি অনুভব করতে পারেননি। তিনি বলেন, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকাস্থ ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণাগার ও গবেষণা কেন্দ্র থেকে ২৩৭ কিলোমিটার দূরে ভারতের মেঘালয়ের নংস্টইন।
অনলাইন ডেস্ক :
সংলাপের কথা শুনে বিএনপির নেতাদের আবারও জিহ্বায় পানি এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, সংলাপ নিয়ে আপাতত আমরা ভাবছি না, ভাবব কি না সেটা পরের বিষয়। গতবারের কথা আমাদের মনে আছে; এক বার নয়, দুই বার তাদের সঙ্গে সংলাপে বসেছি। রেজাল্ট কী?
ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস উপলক্ষে ৮ জুন বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।
কাদের বলেন, নিষেধাজ্ঞার জন্য নালিশ করতে করতে বিএনপি এখন নিজেরাই ফাঁদে পড়েছে। তারা নিজেরাই ‘ফাঁদে পড়ে কান্দে’। এখন তারা নালিশ করে নিষেধাজ্ঞার পরিবর্তে পেয়েছে ভিসানীতি। এই ভিসানীতি নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কাকে ভিসা দেবে, কাকে দেবে না, একটা সেই দেশের ব্যাপার। আমরাও আমাদের দেশে কাকে ভিসা দেব, কাকে দেব না, সেটাও আমাদের ব্যাপার। এ নিয়ে ভয় পাওয়ার কী আছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ফখরুল সাহেবের জিহ্বায় পানি আসছে। মনে করছে আওয়ামী লীগ তাদেরকে সংলাপে ডাকবে। এই সংলাপের কথা আমরা ভাবছি না। নিরপেক্ষ কে? আপনার নেত্রী বলেছে শিশু এবং পাগল। শিশু এবং পাগল ছাড়া কেউ নিরপেক্ষ নয়। কাজেই আপনি শিশু এবং পাগলের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নিরপেক্ষ ব্যক্তি খুঁজে বের করুন। তারপর বোঝা যাবে কী হবে। আর এটা নিয়ে মাথা খারাপ করে কাজ নেই, এই তত্ত্বাবধায়ক আর আসবে না, তত্ত্বাবধায়ক মরে গেছে। এই মরা জিনিসকে আর জীবিত করার চেষ্টা করবেন না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করেনি, এটা নিষিদ্ধ করেছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
তিনি বলেন, বিএনপি নমিনেশন লন্ডন থেকে দেয়, ঢাকা থেকে দেয়, নয়াপল্টন থেকে দেয়, গুলশান থেকে দেয়। বিভিন্ন জায়গা থেকে নমিনেশন বিক্রি করে। এটাই হচ্ছে বিএনপি। মনে আছে ওই নমিনেশন বাণিজ্য, অনেকের পকেট খালি করেছে। একেক জায়গায় তিনজন চারজন করে নমিনেশন পেয়েছে, এটা হচ্ছে বিএনপি।
কাদের বলেন, আমাদের স্বাধীন নির্বাচন কমিশন ছিল না। খালেদা জিয়ার ইচ্ছায় নির্বাচন কমিশন ছিল আজিজ মার্কা নির্বাচন কমিশন। সেটা আর হবে না। সেই দিন চলে গেছে। আমাদের নেত্রী পার্লামেন্ট আইন করে স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন। নির্বাচন কমিশন নিয়ে আপনাদের চিৎকার করার কোনো কারণ নেই।
সেতুমন্ত্রী বলেন, আজকে বিদেশি বন্ধুরা তারা চায় নিরপেক্ষ নির্বাচন। তারা চায় ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশন। আমাদের নেত্রী দেশি বিদেশিদের আশ্বস্ত করে বলেছেন যে, নিরপেক্ষ অবাধ নির্বাচন করব। বিএনপি চায় তত্ত্বাবধায়ক। বিএনপি চায় শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে। এটা মামা বাড়ির আবদার।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নিয়মের মধ্যে থাকুন। আপনারা আমাদের শপথে থাকুন। আমাদের আবারও ৬ জুন, ৭ মার্চের শপথ নিতে হবে।
তিনি বলেন, বিএনপি গণতন্ত্র গিলে খেয়েছে। নির্বাচন ব্যবস্থা গিলে খেয়েছে। এরা মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ গিলে খেয়েছে। এদের হাতে দেশ নিরাপদ নয়। এরা যদি ক্ষমতা ফিরে পায়, বিএনপি নামের বিষধর সাপ গোটা দেশ গিলে খাবে।
বিদ্যুৎ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা জনগণকে বলেছি, আপনারা সময় দিন। ১০-১৫টা দিন সময় দিন। সব ঠিক হবে। বঙ্গবন্ধু কন্যার ওপর ভরসা রাখুন।
নতুন ভোটারদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশের তরুণ সমাজ, এবার তোমরা যারা প্রথমবার ভোট দেবে তোমরা স্মার্ট বাংলাদেশের পক্ষে ভোটটা দেবে।
অনলাইন ডেস্ক :
‘পানি যখন বাড়ছিল, উপায় না দেখে আম্মা ও ছোট ভাইকে ফ্রিজের ওপর তুলে দিয়ে আমি চৌকির ওপর দাঁড়াই। পানি যখন আমার নাক বরাবর চলে আসে তখন বাঁচার আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। সাহায্য চেয়ে আগে অনেকগুলো পোস্ট দিয়েছিলাম ফেসবুকে। তখন শেষ পোস্টটি লিখি, লাশ উদ্ধার অইমু (হব) হয়তো, জীবিত উদ্ধার অইতে (হতে) পারতাম না…হয়তো এইটা শেষ পোস্ট।’
বন্যার পানিতে পরিবারসহ আটকে পড়ে মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে দেখা মো. সাজ্জাদুর রহমান সাজন গণমাধ্যমের কাছে ভয়াবহ রাতের বর্ণনা এভাবেই দিচ্ছিলেন। রাতে উদ্ধার হওয়ার পর আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে যখন বর্ণনা দিচ্ছিলেন, তখনো তার গলা কেঁপে কেঁপে উঠছিল।
সাজন বললেন, ‘পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস যখন ব্যর্থ হয়েছে তখন এলাকার ভাইয়েরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমাদের বাঁচিয়েছেন।’
টানা বৃষ্টিপাত আর পাহাড়ি ঢলে সিলেট জেলার পাঁচ উপজেলা কমবেশি বন্যাকবলিত।
এর মধ্যে সবচেয়ে আক্রান্ত জৈন্তাপুর। উপজেলায় বুধবার রাতে নিজ ঘরে আটকা পড়ে মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছিলেন সাজন ও তার পরিবার। এ সময় সাহায্য চেয়ে তিনি একের পর এক ফেসবুকে পোস্ট দিতে থাকেন। বিষয়টি তখন জৈন্তাপুরের সীমানা ছেড়ে মধ্যরাতে সিলেটজুড়ে আলোচিত হয়ে ওঠে।
বুধবার (২৯ মে) রাত ৯টা ১৮ মিনিটে সাহায্য চেয়ে প্রথম পোস্টটি দেন সাজন। সেখানে তিনি লেখেন, ‘আমি দৌলা চেয়ারম্যানের ভাতিজা, দিলু মিয়ার পোয়া (ছেলে) বাড়ি ফেরীঘাট, আমরারে কেউ বাঁচাও, আমরার মরণ সামনে কেউ বাঁচাও আমরারে। মা ভাই লইয়া আটকি গেছি (মা, ভাইসহ আটকা পড়েছি)।’
সাজনের বাড়ি থেকে খানিকটা দূরত্বে ফেরিঘাট। প্রথম পোস্ট দেওয়ার পাঁচ মিনিট পর আক্ষেপ প্রকাশ করে দ্বিতীয় পোস্ট দেন, ‘হায়রে ফেরীঘাটের নৌকা, একটা নৌকা নাইনি বাছাইবার লাগি (একটা নৌকা নেই কি বাঁচানোর জন্য)।
’ রাত ৯টা ৫৫ মিনিটে তৃতীয় পোস্টে তিনি বাঁচার আকুতি জানিয়ে লেখেন, ‘অনেক স্রোতের কারণে কেউ উদ্ধারের জন্য আসতে পারছে না, সুন্দর এই ভুবনে বাঁচার অনেক ইচ্ছা।’
এর ২৯ মিনিট পর লেখেন, ‘এখনো কেউ উদ্ধারে আইছে না (আসেনি)।’ এই পোস্টের কমেন্টে স্থানীয় অনেকে তাকে সান্ত্বনা দিয়ে তারা এসেছেন বলে জানান। এ সময় ইউএনও আসেন পরিবারটিকে উদ্ধার করতে। শাকিল আহমদ নামের একজন ওই কমেন্ট বক্সে জানান, ব্রিজের পূর্ব পাশের নৌকা ব্রিজ পার হচ্ছে না, ফেরিঘাটের দক্ষিণের নৌকা প্রবল স্রোতের জন্য পার করা যাচ্ছে না। হরিপুর থেকে একটি নৌকা আসছে গাড়িতে করে।
শতাধিক কমেন্টে তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। রাত ১১টা ৮ মিনিটে সাজন জীবনের আশা ছেড়ে দিয়ে লেখেন, ‘লাশ উদ্ধার অইমু (হব) হয়তো, জীবিত উদ্ধার অইতে পারতাম না (হতে পারব না), হয়তো এইটা শেষ পোস্ট।’ তার এ পোস্ট কয়েক হাজার মানুষকে উদ্বেগের মধ্যে ফেলে দেয়।
পাহাড়ি ঢলের জন্য তীব্র স্রোতের কারণে সাজন ও তার পরিবারকে উদ্ধারে যাওয়া যাচ্ছিল না। ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ গিয়ে চেষ্টা করেও কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছিল না। স্রোতের তীব্রতার কারণে কোনো নৌকা উদ্ধারে যেতে সাহস করছিল না। পরে স্থানীয় কয়েকজন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাদের উদ্ধারে যান। রাত দেড়টার দিকে তারা নৌকা নিয়ে ঘটনাস্থল পৌঁছতে সক্ষম হন। রাত ১টা ৩৯ মিনিটে সাজন পোস্ট দেন ‘আলহামদুলিল্লাহ আমি আর আমার পরিবার উদ্ধার।’ সেখানে হাজারখানেক মানুষ স্বস্তির কথা জানিয়ে কমেন্ট করেন।
মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা মো. সাজ্জাদুর রহমান সাজন বলেন, ‘পানি বাড়ছিল। ফেসবুকে বারবার পোস্ট দিয়ে সাহায্য চাইলেও কেউ আসতে পারছিল না। তীব্র স্রোতের কারণে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ প্রশাসন ফিরে গেছে। পরে এলাকার ভাইয়েরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তীব্র স্রোতের মধ্যে আমাদের বাঁচাতে আসেন। হরিপুরের মামুন ভাই, কমলাবাড়ির ময়না ভাইসহ বেশ কয়েকজন আসেন। পরে রাত ৪টার দিকে উদ্ধার করে নিয়ে যান।’ আটকে পড়ার মুহূর্তের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কল্পনাও করিনি বেঁচে ফিরতে পারব।’
বন্যার পানি বাড়তে শুরু করার পরও কেন আশ্রয়কেন্দ্রে না গিয়ে বাড়ি থেকে গেলেন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমরা সারা জীবন দেখে এসেছি সকালে পানি বাড়লে বিকেলে কমে যায়। এখানে তো জোয়ারের (পাহাড়ি ঢলের) পানি। এত দীর্ঘ সময় ধরে আর এত দ্রুত পানি বাড়বে এটা আমরা জীবনেও ভাবিনি।’
রাতের ভয়াবহ পরিস্থিতি বর্ণনা করে তিনি বলেন, ‘বিদ্যুতের মেইন সুইচ বন্ধের চেষ্টা করছিলাম বারবার। কিন্তু ওটা স্পর্শ করলেই বিদ্যুৎ ঝাঁকি দিচ্ছিল। এ রকম পরিস্থিতিতে একসময় আমার নাক পর্যন্ত যখন পানি চলে আসে তখন ধরেই নিয়েছিলাম মৃত্যু সময়ের ব্যাপার মাত্র।’
২৩ বছর বয়সী সাজন জানান, তিনি স্থানীয় একটি কলেজে ডিগ্রি তৃতীয় বর্ষে পড়ছেন। তার বাবা দিলু মিয়া বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তিনি ২০১২ সালে মারা যান। মা আর ১৫ বছর বয়সের ভাইকে নিয়ে তার সংসার।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করলে সিলেটের জৈন্তাপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম (পিপিএম) বলেন, ‘এ রকম পাহাড়ি ঢলের সময় স্রোত কী পরিমাণ বাড়ে সেটা উনার জানা ছিল। তার এভাবে বাড়িতে থাকা ঠিক হয়নি। রাতে আমরা খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে খেয়াঘাট এলাকায় যাই। কিন্তু পানির স্রোত এত তীব্র ছিল যে অনেক চেষ্টা করেও কোনো নৌকা বা মাঝি ম্যানেজ করা যায়নি।’
মাঝিরা কেউ জীবন ঝুঁকিতে ফেলে উদ্ধারে যেতে চাচ্ছিল না জানিয়ে ওসি বলেন, ‘বড় নৌকাও যেতে রাজি হচ্ছিল না। তারা বলছিল, আমরা গেলে আমরা মারা পড়ব।’
তিনি আরো বলেন, ‘তখন আমি স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সাদ্দাম সাহেবের সঙ্গে যোগাযোগ করে উদ্ধারের অনুরোধ করি। তখন তিনি বলেন, তিনিও তার বাসার দ্বিতীয় তলায় আটকা পড়েছেন। তবু চেষ্টা করবেন। পরে রাতে স্থানীরা তাদের উদ্ধার করেন।’ সূত্র : কালেরকণ্ঠ