অনলাইন ডেস্ক :
বেসরকারি রেসিডেন্ট ও নন-রেসিডেন্ট পোস্ট গ্রাজুয়েট মেডিকেল শিক্ষার্থীদের (ট্রেইনি চিকিৎসক) ভাতা ২৫ হাজার টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. বায়জীদ খুরশীদ রিয়াজ আজ ১৬ জুলাই রবিবার সন্ধ্যায় বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে কিছুক্ষণ আগে এ সিদ্ধান্ত এসেছে। আমরা সবাইকে এমনটি নিশ্চিত করছি।’
তবে এ সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট নন বেসরকারি রেসিডেন্ট ও নন-রেসিডেন্ট পোস্ট গ্রাজুয়েট মেডিকেল শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে পোস্ট গ্রাজুয়েট চিকিৎসক ডা. তানভির বলেন, ভাতা বাড়ানো হয়েছে কিনা আমাদের এখনও জানানো হয়নি। যদি হয়ে থাকে, আগে আমাদের বলার কথা। খবরে জানতে পারলাম ৫ হাজার টাকা বাড়ানো হয়েছে। এটা হয়ে থাকলে আমরা মানি না।
এর আগে, ভাতা বাড়ানোর দাবিতে আজ রোববার অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন পোস্টগ্রাজুয়েট ট্রেইনি চিকিৎসকরা। বিকেল ৫টার দিকে প্রায় ৭ ঘণ্টা পর শাহবাগ-সায়েন্স-ল্যাবমুখী রাস্তা ছাড়েন আন্দোলনকারীরা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদের আশ্বাসে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন। এর আগে বিকেল ৪টার দিকে উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করেন চিকিৎসকদের তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল। সেখান থেকে ফিরে এসে পোস্টগ্রাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. জাবির হোসেন বলেন, উপাচার্য আমাদের লিখিত আশ্বাস দিয়েছেন, সাত দিনের মধ্যে সরকারের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন এবং সুখবর জানাবেন।
গত ৮ জুলাই থেকে ভাতা বাড়ানোর দাবিতে কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল ইউনিভার্সিটি (বিএসএমএমইউ) ও বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ান্স অ্যান্ড সার্জনস (বিসিপিএস) অধিভুক্ত পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি চিকিৎসকরা। এরপর দাবি আদায়ে শাহবাগ ও বিএসএমএমইউতে অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করেন তারা। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে স্মারকলিপিও দেন।
চিকিৎসকরা ভাতা ২০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকায় উন্নীত করার দাবিতে এ কর্মবিরতি পালন করে আসছিলেন। তাদের দাবি—তাদের ভাতা ২০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকায় উন্নীত ও নিয়মিত ভাতা প্রদান করতে হবে।
প্রসঙ্গত, পোস্ট গ্র্যাজুয়েট চিকিৎসকরা দুই বছর থেকে পাঁচ বছর উচ্চশিক্ষার জন্য প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকেন এবং এই সময়টা তারা হাসপাতালে ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসা দেন।
একই সঙ্গে নিয়ম অনুযায়ী, তারা প্রাইভেট প্র্যাকটিস করতে পারবেন না। এজন্য তারা সরকারের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা ভাতা পেয়ে থাকেন। তবে এ টাকা একটা বড় শহরে থেকে সংসার পরিচালনার জন্য সামান্য বলে মনে করেন চিকিৎসকরা।
তারা বলছেন, বাড়ি ভাড়া ও স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে উচ্চ বাজার মূল্যের এই কঠিন সময়ে সংসার চালানো কষ্টের। তাই তারা ভাতা বৃদ্ধির জন্য আন্দোলন করে আসছেন।
চলারপথে ডেস্ক :
বৃষ্টির জন্য হাহাকার পড়েছে চারদিক। ফসলি জমি শুকিয়ে গেছে। ফলে আউশ আবাদ ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার কর্মধা ইউনিয়নের টাট্রিউলি গ্রামে বৃষ্টির জন্য বিশেষ নামাজ (সালাতুল ইস্তেসকার) ও দোয়া করা হয়েছে।
আজ ১৩ মে শনিবার সকাল ১০টার দিকে হায়দরগঞ্জ মসজিদ সংলগ্ন মাঠে এই নামাজ আদায় করেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। হায়দরগঞ্জ টাইটেল মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল শায়খ মাওলানা জাফর আহমদ এ বিশেষ নামাজ ও দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন। এতে অংশ নেন কয়েক শতাধিক ধর্মপ্রাণ মানুষ।
নামাজে অংশ নেওয়া মুসল্লিরা বলেন, প্রচণ্ড দাবদাহ ও অনাবৃষ্টির কারণে শুকিয়ে যাচ্ছে মাঠঘাট ও কৃষিজমি। তীব্র খরায় ফলস উৎপাদন নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা। গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন মানুষ। এজন্য মহান আল্লাহর কাছে আমরা বৃষ্টির জন্য দোয়া করেছি।
নামাজ ও দোয়া মোনাজাত পরিচালনাকারী মাওলানা জাফর আহমদ বলেন, এখন বর্ষা মৌসুম চলছে। কিন্তু বৃষ্টি না হওয়ায় হাহাকার চলছে। জমিতে হাল চাষ করা যাচ্ছে না। মহান আল্লাহ নিকট আমরা বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করেছি। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনসহ আনুগত্য প্রকাশে এই নামাজ আদায় ও দোয়া মোনাজাত করা হয়। আল্লাহ যেন রহমত নাজিল করেন, এটিই আমাদের কামনা।
চলারপথে রিপোর্ট :
নতুন বছর মানেই এক নতুন সম্ভাবনা, নতুন আশায় পথ চলা। আজ শুক্রবার পহেলা বৈশাখ। চৈত্রসংক্রান্তির মাধ্যমে ১৪২৯ সনকে বিদায় জানিয়ে বাংলা বর্ষপঞ্জিতে আজ যুক্ত হবে নতুন বছর ১৪৩০। আজ সকালে সোনালি সূর্য রাঙিয়ে দেবে নতুন স্বপ্ন, প্রত্যাশা আর সম্ভাবনাকে। নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে, বাঙালি জাতি আজ এক কাতারে। ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে বাঙালির একমাত্র অসাম্প্রদায়িক উৎসবের দিন এটি। আবহমানকাল বাংলার গ্রামীণ জনপদে উদযাপিত হওয়া নববর্ষের আয়োজন এখন ছুঁয়েছে নগর জীবনে এবং নতুন মাত্রায়। সর্বত্র উদযাপিত হচ্ছে বাংলার উৎসব, উচ্চারিত হচ্ছে বাঙালিয়ানার জয়গান। পহেলা বৈশাখ বাঙালির জাতীয় জীবনে পরম আনন্দের দিন। বাঙালির অসাম্প্রদায়িক উৎসবের দিন আজ। এবার মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রতিপাদ্য হচ্ছে- ‘বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি’। মঙ্গল শোভাযাত্রাটি চারুকলা অনুষদ থেকে সকাল ৯টায় বের হয়ে শাহবাগ মোড় ঘুরে পুনরায় চারুকলা অনুষদে গিয়ে শেষ হবে।
‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো/তাপসনিশ্বাসবায়ে মুমূর্ষুরে দাও উড়ায়ে/বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক/যাক।’ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা নববর্ষকে আবাহন জানিয়েছিলেন এভাবেই। নববর্ষ বিদায়ী বছরের গস্নানি মুছে দিয়ে বাঙালি জীবনে ওড়ায় নতুনের কেতন, চেতনায় বাজায়
মহামিলনের সুর। সব ভেদাভেদ ভুলে সব বাঙালিকে দাঁড় করায় এক সম্প্রীতির মোহনায়। নববর্ষের আগমনী ধ্বনি শুনলেই সমগ্রজাতি নতুনের আহ্বানে জেগে ওঠে। গ্রামের জীর্ণ-কুটির হতে বিলাসবহুল ভবন কিংবা দূর প্রবাসের মেগাসিটি-সর্বত্রই প্রবাহিত হয় আনন্দের ফলগুধারা। পহেলা বৈশাখ উদযাপন এখন বাংলাদেশের গন্ডি ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বে। প্রতিটি বাঙালি দিনটিকে উদযাপন করে উৎসবের আমেজে। বাংলা নববর্ষে মহামিলনের আনন্দ উৎসব থেকেই বাঙালি ধর্মান্ধ অপশক্তির কূট ষড়যন্ত্র করার আর কুসংস্কার ও কূপমন্ডূকতার বিরুদ্ধে লড়াই করার অনুপ্রেরণা পায়।
পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি এম আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে পৃথক বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ তার বাণীতে বলেন, ‘পহেলা বৈশাখ আমাদেরকে উদার হতে শিক্ষা দেয় এবং জাতীয়তাবাদে অনুপ্রাণিত হয়ে বিশ্বমানবের সঙ্গে মিশে যাওয়ার শক্তি জোগায়। এই উদারনৈতিক চেতনাকে ধারণ করে বঙ্গবন্ধুর রাষ্ট্রদর্শন, বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার আদর্শ এবং রাষ্ট্রভাষা চেতনার বহ্নিশিখা অন্তরে ধারণ করে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত, সুখী-সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ হোক আজকের দিনে সকলের অঙ্গীকার।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন, ‘এই শুভ নববর্ষের প্রাক্কালে আমাদের প্রার্থনা এই যে, আমরা যেন সমস্ত অন্ধকার ও বাধা-বিপত্তি দূর করে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে পারি।’
কৃষিকাজ ও খাজনা আদায়ের সুবিধার জন্য বাংলা সন গণনার শুরু মোঘল সম্রাট আকবরের সময়ে। ১৫৫৬ সালে কার্যকর হওয়া বাংলা সন প্রথমদিকে পরিচিত ছিল ফসলি সন নামে, পরে তা পরিচিত হয় বঙ্গাব্দ নামে। কৃষিভিত্তিক গ্রামীণ সমাজের সঙ্গে বাংলাবর্ষের ইতিহাস জড়িয়ে থাকলেও এর সঙ্গে রাজনৈতিক ইতিহাসেরও সংযোগ ঘটেছে। পাকিস্তান শাসনামলে বাঙালি জাতীয়তাবাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয় বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের। আর ষাটের দশকের শেষে তা বিশেষ মাত্রা পায় রমনা বটমূলে ছায়ানটের আয়োজনের মাধ্যমে। দেশ স্বাধীনের পর বাঙালির অসাম্প্রদায়িক চেতনার প্রতীকে পরিণত হয় বাংলা বর্ষবরণ অনুষ্ঠান। উৎসবের পাশাপাশি স্বৈরাচার-অপশক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদও এসেছে পহেলা বৈশাখের আয়োজনে। ১৯৮৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে বের হয় প্রথম মঙ্গল শোভাযাত্রা। ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর ইউনেস্কো এ শোভাযাত্রাকে বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মর্যাদা দেয়।
বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে নববর্ষ উদযাপন পরিণত হয়েছে বাংলাদেশের সর্বজনীন উৎসবে। নতুন পোশাক পরে সবাই মিলিত হন সাংস্কৃতিক আয়োজনে। ছায়ানট রমনার বটমূলে বর্ষবরণের যে প্রভাতী অনুষ্ঠান শুরু করেছিল তা আজ বিশ্ব জুড়ে বর্ষবরণের প্রতীক হয়ে উঠেছে। শহরে বৈশাখ যে ব্যাপক উৎসবের উপলক্ষ নিয়ে আসে গ্রামীণ জীবনে তার আমেজ ভিন্ন। নগরজীবনে এই দিন যেমন পান্তা-ইলিশ খাওয়ার ধুম পড়ে যায়, তেমনি যুক্ত হয় নতুন কাপড় পরার আয়োজনও। গ্রামবাংলায় সকালবেলা দই-চিড়া দিয়ে অতিথি আপ্যায়ন করার রেওয়াজ আছে। ব্যবসায়ীরা দোকানে দোকানে হালখাতার আনুষ্ঠানিকতায় মিষ্টি দিয়ে তাদের ক্রেতাদের স্বাগত জানান।
কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়িতে চৈত্র সংক্রান্তিতে অনুষ্ঠিত হয় বিজু উৎসব। জাতি-ধর্ম-বর্ণ, নির্বিশেষে সব মানুষ, সব বাঙালি সকল সংকীর্ণতার ঊর্ধ্বে উঠে সমগ্র জাতি একই হৃদয়াবেগে একটি মোহনায় মিলিত হয়ে পালন করে এই সর্বজনীন উৎসব। চিরায়ত বাঙালিত্বের অহংকার আর সংস্কৃতির উদার আহ্বানে জাগরুক হয়ে নাচে-গানে, গল্পে-আড্ডায়, আহারে-বিহারে চলে নতুন বছরকে বরণ করার পালা। বাংলা নববর্ষ তাই বাঙালিদের জীবনে সবচেয়ে বড় সর্বজনীন ও অসাম্প্রদায়িক উৎসব। এর মাধ্যমে জাতি তার স্বকীয়তা ও জাতীয়তাবাদী চেতনার শক্তি সঞ্চয় করে, সচেষ্ট হয় আত্মপরিচয় ও শিকড়ের সন্ধানে। নববর্ষই বাঙালি জাতিকে ইস্পাত-কঠিন ঐক্যে আবদ্ধ করেছিল, শক্তি ও সাহসের সঞ্চার করে স্বাধিকার সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে প্রেরণা জুগিয়েছিল।
১৪২৯-এর আনন্দ বেদনা, হাসি-কান্নার হিসাব চুকিয়ে শুরু হবে নতুন এক পথচলা। ১৪৩০ সনকে বরণ করতে জাতি-ধর্ম-বর্ণ গোত্র নির্বিশেষে সর্বজনীন উৎসবে ঘরোয়া পরিবেশে মেতে ওঠা বাঙালি গাইবে ‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো’। আবহমান বাংলার চিরায়ত অসাম্প্রদায়িক মানবিক চেতনার মূলে রয়েছে এক অসাধারণ অনুষঙ্গ; সেটি হলো বাংলা নববর্ষ তথা পহেলা বৈশাখ। ঐতিহাসিক ধারাবাহিকতায় বাংলা বর্ষবিদায় ও বরণের অনুষ্ঠানমালা আমাদের সেই ঐতিহাসিক চেতনাকে প্রোজ্জ্বল করে। স্বদেশ মানস রচনায় বাঙালি সংস্কৃতি, কৃষ্টি, ঐতিহ্য সর্বোপরি ইতিহাসের আলোকে রক্ষণশীল ও পশ্চাৎপদ চিন্তা-চেতনাকে পরিহার করে আধুনিক ও প্রাগ্রসর অভিধায় জাতিসত্তাকে যথাযথ প্রতিবাদ করার সম্মিলিত প্রতিশ্রম্নতি বাংলা নববর্ষকে দান করেছে অনবদ্য মাঙ্গলিক যাত্রাপথ।
বাঙালির হাজার বছরের ঐতিহ্য হলো বাংলা বর্ষের প্রথম দিন পহেলা বৈশাখ। আর বাঙালিদের কাছে বাংলা নববর্ষ বরণ হলো একটি প্রাণের উৎসব। বাংলা নববর্ষের অন্যতম অনুষঙ্গ হলো মঙ্গলশোভাযাত্রা। ইউনেস্কো বাংলাদেশের পহেলা বৈশাখের মঙ্গল শোভাযাত্রাকে অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতীক হিসেবে চিহ্নিত করেছে। ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর ইউনেস্কো মঙ্গল শোভাযাত্রাকে বিশ্বাস সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের স্বীকৃতি প্রদান করে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, সৌহার্দ ও ভ্রাতৃত্ববোধ প্রতিষ্ঠা করে নববর্ষ বাঙালি জাতীয়তাবাদী চেতনা ও সাংস্কৃতিক সৌধের ভিত আরও সুদৃঢ় করুক, নববর্ষের উদার আলোয় ও মঙ্গলবার্তায় জাতির ভাগ্যাকাশের সব অন্ধকার দূরীভূত হোক, সাম্প্রদায়িক ও জঙ্গিবাদী অশুভ শক্তির বিনাশ ঘটুক, একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াক, এটাই হোক নতুন বাংলা নববর্ষ-১৪৩০ এর প্রত্যাশা।
নতুন বছরের উৎসবের সঙ্গে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর কৃষ্টি ও সংস্কৃতির নিবিড় যোগাযোগ। গ্রামে মানুষ ভোরে ঘুম থেকে ওঠে, নতুন জামাকাপড় পরে এবং আত্মীয়স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবের বাড়িতে বেড়াতে যায়। বাড়িঘর পরিষ্কার ও সুন্দর করে সাজানো হয়। বিশেষ খাবারের ব্যবস্থাও থাকে। বাংলা বর্ষবরণ বাংলাদেশের একটি সার্বজনীন উৎসব। নতুন বছরের প্রথম দিন সবাই যার যার সাধ্যমতো উৎযাপনের মাধ্যমে দিনটি পালন করেন। বর্ষবরণ যে কয়টি জিনিস এখন অত্যাবশ্যকীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে পান্তা ইলিশ বা ইলিশ মাছ খাওয়া। বাঙালির বর্ষবরণ ইলিশ ছাড়া হয় না। এ ছাড়া কয়েকটি গ্রামের মিলিত এলাকায়, কোনো খোলা মাঠে আয়োজন করা হয় বৈশাখী মেলার। মেলাতে থাকে নানা রকম কুঠির শিল্পজাত সামগ্রীর বিপণন, থাকে নানা রকম পিঠা পুলির আয়োজন। অনেক স্থানে ইলিশ মাছ দিয়ে পান্তা ভাত খাওযার ব্যবস্থা থাকে। ইলিশ মাছের সঙ্গে পান্তা ভাত ও শুঁটকি মাছ, আচার, ডাল, কাঁচা লঙ্কা, এবং পিঁয়াজ কুঁচির সংমিশ্রণের এই খাদ্যটি পয়লা বৈশাখের জনপ্রিয় খাদ্য। এই দিনের একটি পুরানো সংস্কৃতি হলো গ্রামীণ ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করা। এর মধ্যে থাকে নৌকা বাইচ, লাঠিখেলা ও কুস্তি। হাল আমলে ক্রিকেট ও ফুটবল যুক্ত হচ্ছে।
দিনটি বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গে নববর্ষ হিসেবে বিশেষ উৎসবের সঙ্গে পালিত হয় সর্বজনীন উৎসব। বিশ্বের সব প্রান্তের সব বাঙালি এ দিনে নতুন বছরকে বরণ করে নেন, ভুলে যাবার চেষ্টা করে অতীত বছরের সব দুঃখ-গস্নানি। সবার কামনা থাকে যেন নতুন বছরটি সমৃদ্ধ ও সুখময় হয়। বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা একে নতুনভাবে ব্যবসা শুরু করার উপলক্ষ হিসেবে বরণ করে নেন। এদিনে তারা হালখাতা করে থাকেন। বাংলাদেশে প্রতি বছর ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখ পালিত হয়। বাংলা একাডেমি কর্তৃক নির্ধারিত আধুনিক পঞ্জিকা অনুসারে এই দিন নির্দিষ্ট করা হয়েছে।
বাংলা দিনপঞ্জির সঙ্গে হিজরি ও খ্রিস্টীয় সনের মৌলিক পার্থক্য হলো হিজরি সন চাঁদের হিসাবে এবং খ্রিস্টীয় সন ঘড়ির হিসাবে চলে। এ কারণে হিজরি সনে নতুন তারিখ শুরু হয় সন্ধ্যায় নতুন চাঁদের আগমনে। ইংরেজি দিন শুরু হয় মধ্যরাতে। পহেলা বৈশাখ ভোর থেকে শুরু হয়। ভারতবর্ষে মোঘল সম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার পর সম্রাটরা হিজরি পঞ্জিকা অনুসারে কৃষি পণ্যের খাজনা আদায় করত। কিন্তু হিজরি সন চাঁদের উপর নির্ভরশীল হওয়ায় তা কৃষি ফলনের সঙ্গে মিলত না। এতে অসময়ে কৃষকদেরকে খাজনা পরিশোধ করতে বাধ্য করা হতো।
হালখাতা বাংলা সনের প্রথম দিনে দোকানপাটের হিসাব আনুষ্ঠানিকভাবে হালনাগাদ করার প্রক্রিয়া। গ্রাম, শহর বা বাণিজ্যিক এলাকা, সব স্থানেই পুরানো বছরের হিসাব বই বন্ধ করে নতুন লাল রংঙের হিসাব বই খোলা হয়। হালখাতার দিনে দোকনদাররা তাদের ক্রেতাদের মিষ্টান্ন আপ্যায়ন করে থাকেন। এই প্রথাটি এখনো অনেকাংশে প্রচলিত আছে, বিশেষ করে স্বর্ণের দোকানে। ১৯৬০-১৯৭০ দশকে পুরান ঢাকায় হিন্দু ব্যবসায়ী বিশেষ করে পাইকারি ব্যবসায়ীদের মধ্যে হালখাতা প্রথা অনুসরণের প্রবণতা ছিল। এমনকি বেশ ভাবগাম্ভীযের্র সঙ্গেই পালিত হতো অসাম্প্রদায়িক এই আচার-অনুষ্ঠানটি। হালনাগাদের খাতাটি ছিল লাল রঙের লাল সালু কাপড়ের মলাটে মোড়ানো। দুই-তিন ভাঁজ করে তার উপর ফিতা দিয়ে বেঁধে রেখে হাত বিনিময় হতো। এই খাতাটিই ছিল বিগত বছরের যাবতীয় হিসাবের বিবরণী নথি।
আবহমান বাংলার মঙ্গল শোভাযাত্রা ১৯৮৬ সালে চারুপীঠ নামের একটি বেসরকারি সংগঠন যশোরে সর্বপ্রথম নববর্ষ উপলক্ষে আনন্দ শোভাযাত্রা বের করে। পাপেট, বাঘের প্রতিকৃতি, পুরানো বাদ্যযন্ত্রসহ নানা শিল্পকর্ম দিয়ে সাজানো শোভাযাত্রাটি দেশ জুড়ে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করে। অতঃপর এর আদলেই ১৯৮৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইন্সটিটিউটের উদ্যোগে আয়োজিত হয় আরও একটি শোভাযাত্রা। তখন প্রেক্ষাপট ছিল ১৯৮০’র দশকের স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের এক হওয়া এবং শান্তির বিজয় ও অপশক্তির অবসান কামনা। সেই আনন্দ শোভাযাত্রাটি সকল স্তরের মানুষের মাঝে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়। সেদিন থেকে প্রতি বছর বৈশাখের প্রথম সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইন্সটিটিউটের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এই আনন্দ শোভাযাত্রা অব্যাহত রাখে। বিশালাকার পুতুল, বিভিন্ন পশুপাখির বিচিত্র মুখোশ ও সাজসজ্জার পাশাপাশি বাদ্যযন্ত্র ও নৃত্যের মাধ্যমে জাকজমক করে তোলা হয় এই আনন্দ শোভাযাত্রা। প্রথম দিকে চারুকলার এই শোভাযাত্রাটির নাম ছিল বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা। পরবর্তীতে ১৯৯৬ সাল থেকে এটি মঙ্গল শোভাযাত্রা হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। অশুভ মানুষের কথা ভেবে মুখোশ করা হয় শোভাযাত্রায়।
১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর সরকার পহেলা বৈশাখকে জাতীয় পার্বণ হিসেবে ঘোষণা করেন। স্বাধিকার আন্দোলনের সময় ছায়ানটের গানে গানে যে প্রতিবাদের ধারা সৃষ্টি করেছিল তা মুক্তি সংগ্রামের প্রেরণার পথে বড় শক্তি যুগিয়েছে। ২০০১ সালে ছায়ানটের অনুষ্ঠানে বোমা বিস্ফোরণের পরে যেমন মৌলবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে ছায়ানট যেন মানবতার পক্ষে লড়াইয়ে তাদের প্রত্যয়ের কথাই ব্যক্ত করছে বারবার। আজ সেই আলোড়ন পরিণত হয়েছে প্রতিটি বাঙালির প্রাণের উৎসবে।
অনলাইন ডেস্ক :
মেট্রোরেলের এমআরটি লাইন-৬ এর আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ ৪ নভেম্বর শনিবার দুপুরে বিদ্যুৎচালিত দ্রুতগতির যানের এ অংশের উদ্বোধন করা হয়।
তবে আজ উদ্বোধন করা হলেও আগামীকাল ৫ নভেম্বর রবিবার থেকে এটি সর্বসাধারণের চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। প্রথমে তিনটি স্টেশন চালুর মাধ্যমে এ অংশের মেট্রোরেল চলাচল শুরু হবে। স্টেশনগুলো হলো- মতিঝিল, বাংলাদেশ সচিবালয় ও ফার্মগেট।
আগারগাঁও-মতিঝিল অংশের উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে নগরবাসী ২০ দশমিক ১ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে পারবেন মাত্র ৩১ মিনিটে। এতে বাঁচবে ওই পথ ব্যবহারকারী মানুষের কর্মঘণ্টা, অর্থনীতির চাকা ঘুরবে আরও দ্রুত।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ৫ নভেম্বর থেকে সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চলাচল করা ট্রেনগুলো উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে মতিঝিল পর্যন্ত উভয় দিকে চলাচল করবে। বেলা সাড়ে ১১টা থেকে পরবর্তী ট্রেনগুলো শুধু উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলাচল করবে। এ সময় মতিঝিল পর্যন্ত কোনো ট্রেন আর চলাচল করবে না।
ডিপো থেকে কমলাপুর পর্যন্ত মেট্রোরেলের ২১.২৬ কিলোমিটার রেলপথে মোট স্টেশন থাকছে ১৭টি। স্টেশনগুলো হচ্ছে- উত্তরা উত্তর, উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর ১১, মিরপুর ১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ সচিবালয়, মতিঝিল ও কমলাপুর।
বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেল এমআরটি লাইন-৬ উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশ গত বছরের ডিসেম্বরে চালু হয়। ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা ব্যয়ে উত্তরা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত ২১ দশমিক ২৬ কিলোমিটার এলিভেটেড মেট্রো লাইন নির্মাণের ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সরকার।
অনলাইন ডেস্ক :
সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী মানুষের ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে। কিন্তু জ্বালানি তেল, কয়লা বা গ্যাসের অভাব সারা বিশ্বব্যাপী। এখন কেনাটাই অনেকটা মুশকিল। ক্রয় করাটা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তারপরও প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। ইতোমধ্যে কাতার ও ওমানের সঙ্গে চুক্তি সই হয়ে গেছে। জলবিদ্যুৎ আমদানিরও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কয়লা কেনার জন্য ইতোমধ্যে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে যাতে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো আবার চালু করা যায়। আজ ৪ জুন রবিবার সংসদের বৈঠকে শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসের অতিমারি আর ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের ফলে সমগ্র বিশ্বে যে খাদ্যমন্দা, মুদ্রাস্ফীতি, পরিচালনা ও পরিবহন ব্যয়, বিদ্যুতের ঘাটতি- এটা প্রত্যেকটি মানুষের জীবনকে অসহনীয় করে তুলেছে। বাংলাদেশ সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছে। বিশ্বের এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতি আর কতদিন চলবে তা কেউ বলতে পারে না। হয়তো বিশ্ব পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যেতে পারে।
আওয়ামী লীগ দলীয় চট্টগ্রাম-১০ আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ডা. আফছারুল আমীনের মৃত্যুতে সংসদে শোক প্রস্তাব আনা হয়। চলতি সংসদের কোনো সদস্যের মৃত্যুতে বৈঠক মুলতবি করার রেওয়াজ রয়েছে। শোক প্রস্তাব গ্রহণের পরের দিনের কার্যক্রম স্থগিত করে সোমবার বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত সংসদের বৈঠক মুলতবি করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।
শোক প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ নেতা বলেন, সরকার জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় উদ্যোগ নিয়েছে। আজকে স্বাধীনতার সুফল মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছাচ্ছে। মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি হয়েছে। যদিও ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞা, পাল্টা নিষেধাজ্ঞা, বিশ্বব্যাপী মুদ্রাস্ফীতি, জ্বালানি তেলের অভাবের কারণে এখন শুধু বাংলাদেশ নয়, উন্নত দেশগুলোও হিমশিম খাচ্ছে। ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে কিন্তু জ্বালানির অভাব হচ্ছে।
সরকারপ্রধান বলেন, লোডশেডিং বা বিদ্যুৎ ব্যবহার সীমিত করা হচ্ছে। খাদ্যপণ্য থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। উন্নত দেশেও বহু মানুষ চাকরি হারাচ্ছে। এমন একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সারা বিশ্বব্যাপী।
তিনি বলেন, জানি না আর কখনও এ রকম পরিস্থিতি হয়েছিল কিনা। হয়তো প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে হয়েছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে তো দুর্ভিক্ষ ও মন্বন্তর দেখা দিয়েছিল।
সবাইকে সাশ্রয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সংসদ নেতা বলেন, বিদ্যুৎ ব্যবহারে একটু সাশ্রয়ী হতে হবে। সব জিনিস ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে। খাদ্য উৎপাদনও বাড়াতে হবে। চেষ্টা করে যেতে হবে। বিশ্বের এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতি আর কতদিন চলবে তা কেউ বলতে পারে না। হয়তো বিশ্ব পরিস্থতি আরও খারাপের দিকে যেতে পারে। দেশের মানুষের সুরক্ষার জন্য, খাদ্য নিরাপত্তার জন্য যা যা করণীয় তা করে যাচ্ছেন বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
মরহুম আফসারুল আমীনকে স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি ছাত্রজীবন থেকে ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। প্রতিটি সংগ্রামে তিনি ভূমিকা রেখেছেন। নিবেদিতপ্রাণ ছিলেন। দলের প্রতি তাঁর নিষ্ঠা ও সততা ছিল অতুলনীয়। তিনি মন্ত্রী হিসেবেও অত্যন্ত সাফল্য দেখিয়েছেন।
তিনি বলেন, ৭৫ এর পর ২১টি বছর মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি করা হয়েছে। অনেক মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দেওয়ারও সাহস পেতেন না। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সংগ্রামের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা হয়েছে। সেই সংগ্রামে আফরারুল আমিনকে পাওয়া গেছে।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী সবসময়ই দুর্গতদের সেবা করে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯১ সালের ঘুর্ণিঝড় হয়েছে, মানুষ মারা গেছে। তৎকালীন বিএনপি সরকার জানেইনি যে ঘূর্ণিঝড় হয়েছে। সকলের আগে আমাদের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ছুটে যায়। আমি নিজেও ছুটে যাই। সেই কুতুবদিয়া, মহেলখালী, বাশখালী- মানুষের লাশ, মহিলা ও শিশুর লাশ ভাসছে। তখন আফসারুল আমিনসহ চট্টগ্রামের সকল নেতারা মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। আমরা সাধ্যমতো রিলিফ দেওয়া ও লাশ দাফনের ব্যবস্থা করি। এটা নিয়ে সংসদে প্রধানমন্ত্রী (খালেদা জিয়া) বলেছিলেন, যত মানুষ মরার কথা ছিল তত মানুষ মরেনি। তিনি তখনও জানেননি। তাঁর কাছে কোনো খবর ছিল না। আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম কত মানুষ হলে আপনার তত মানুষ হবে।
শোক প্রস্তাবের ওপর অন্যদের মধ্যে সিনিয়র পার্লামেন্টারিয়ান তোফায়েল আহমেদ, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ, শিক্ষা উপমন্ত্রী মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সরকারি দলের মোতাহার হোসেন, নুরুল ইসলাম নাহিদ, ওয়াসিকা আয়শা খান, জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু ও মসিউর রহমান রাঙা বক্তব্য রাখেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ঝিনাইদহে বারোইখালি এলাকায় আজ ২৫ আগস্ট শুক্রবার দুপুরে অভিযান চালিয়ে পাঁচ জুয়াড়িকে আটক করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
আটককৃতরা হলেন সদর উপজেলার আড়ুয়াডাঙ্গা গ্রামের আসামি মৃত আফসার উদ্দিন বিশ্বাস ছেলে গোলাম রসুল, বারোইখালী গ্রামের শাহাদত শেখের ছেলে সবুজ হোসেন, মৃত সায়েম মন্ডলের ছেলে কালাম হোসেন, উদয়পুর গ্রামের বাহাদুর মীরের ছেলে রজব আলী,যশোর সদর উপজেলার মঙ্গলগাতী গ্রামের মৃত আব্দুল হামিদের ছেলে হাসিনুর রহমান খোকন।
ঝিনাইদহ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি শাহীন উদ্দিন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে বারোইখালি এলাকায় টাকা দিয়ে জুয়া খেলা চলছে। সেসময় পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে জুয়া খেলা অবস্থায় পাঁচ জন জুয়াড়িকে আটক করে। ওইসময় তাদের কাছ থেকে নগদ ৯ হাজার ২৫০ টাকাসহ জুয়া খেলার সরঞ্জামাদি উদ্ধার করে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।