চলারপথে রিপোর্ট :
সিলেট অঞ্চলে মৃদু ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। গতকাল রবিবার রাত ৮টা ২৩ মিনিটে এ ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৪.২। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ভারতের মেঘালয়ে।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা শাহ মো. সজিব হোসাইন জানান, ভূমিকম্পের ধরণ মৃদু হওয়ায় সিলেট অঞ্চলের বেশিভাগ মানুষ এটি অনুভব করতে পারেননি। তিনি বলেন, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকাস্থ ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণাগার ও গবেষণা কেন্দ্র থেকে ২৩৭ কিলোমিটার দূরে ভারতের মেঘালয়ের নংস্টইন।
অনলাইন ডেস্ক :
‘জুতার তলা ক্ষয় হইয়া গেছে হাঁটতে হাঁটতে। সময় পাইলেই পুলামাইয়ার লাইগা ছুইটা আসি বাড়িত। গোসল করাই, খাওয়াই, তারপর ঘুম পাড়াইয়া আবার ছুটি গার্মেন্টে। হেগো বাপ ফালাইয়া চইলা গেছে, আমিতো মা, আমি তো যাইতাম পারতাম না।’ কথাগুলো বলছিলেন ত্রিশ বছর বয়সী গার্মেন্টকর্মী আয়েশা।
আয়েশার গ্রামের বাড়ি লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায়। কম বয়সে বিয়ে হয় তাঁর। স্বামী ঢাকায় দক্ষিণখানে গার্মেন্টে চাকরি করতেন। পরে এক সহকর্মীকেও বিয়ে করেন তাঁর স্বামী। এক পর্যায়ে আয়েশা ও দুই সন্তানের খোঁজখবর নেওয়া বন্ধ করে দেন। সন্তানদের নিয়ে আয়েশা বিপাকে পড়েন। ঢাকায় ছুটে আসেন স্বামীকে খুঁজতে। তাতে ব্যর্থ হন। দক্ষিণখানে এক আত্মীয়ের বাড়িতে ওঠেন। ওই আত্মীয়ের সহযোগিতায় এক গার্মেন্টে যোগ দেন। আয়েশা জানান, প্রতিদিন কাকডাকা ভোরে কাজ শুরু করেন। দুই সন্তানের জন্য খাবার তৈরি করেন। সাড়ে ৭টার মধ্যেই কর্মস্থলে যেতে হয়। দুপুরে এক ঘণ্টার বিরতিতে হেঁটে আবার বাড়িতে যান। সন্তানদের খাইয়ে, ঘুম পাড়িয়ে আবারও ছোটেন কর্মস্থলে। বিকেলে গার্মেন্ট ছুটি হলে বাড়ি ফেরেন। সন্তানদের যত্ন নেন, লেখাপড়া করান। সব কাজ শেষে বিছানায় যান রাত ১১টায়। জীবনের টানে এভাবেই ঘোরে তাঁর ভাগ্যের চাকা।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান এশিয়ান সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্টের (এসিডি) এক প্রতিবেদন অনুযায়ী পোশাক খাতে ২০২০ সালে নারী ও পুরুষ কর্মীর হার দাঁড়ায় যথাক্রমে ৬০ ও ৪০ শতাংশ। নিম্ন আয়ের নারীশ্রমিকের অধিকাংশই পারিবারিকভাবে সুখী হন না। স্ত্রী-সন্তান ছেড়ে চলে যান অনেক পুরুষ। সন্তানকে নানি-খালার কাছে রেখে কাজ চালিয়ে যান নারী। কেউ কেউ সন্তানদেরও শ্রমে যুক্ত করেন। শুধু পোশাকশিল্পেই নয়, উপকূলীয় অঞ্চলেও পুরুষদের বহুবিবাহের ঘটনা বেশি ঘটে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে স্বামী মারা গেলেও সংসারের হাল ধরেন নারী।
কক্সবাজার সৈকতে ঝিনুকের মালা বিক্রি করে আবদুল মোতালেব (১০)। সংসারের কাজকর্ম শেষে মোতালেবের মা মালা গাঁথেন। সেই মালা সৈকতে ঘুরে ঘুরে বিক্রি করে মোতালেব। সে জানায়, দিনে দুই-তিনটি বিক্রি হয়। একেকটায় লাভ হয় প্রায় ৫০ টাকা। সৈকত থেকে দূরে দরিয়ানগর গ্রামে তার বাড়ি। তার বাবা পরিবার ছেড়ে চলে গেছেন। দিনে যা আয় হয়, তা দিয়ে চাল-আলু কিনে বাড়ি যায় সে।
রাজধানীর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন লাবণ্য। একমাত্র সন্তান শঙ্খনীলকে নিয়েই তাঁর সংসার। এক সন্ধ্যায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে লাবণ্যর স্বামী মৃত্যুবরণ করেন। নীলের বয়স তখন বছর গড়ায়নি। সেই থেকে শুরু একাকী সংগ্রাম। চাকরির পাশাপাশি একজন আদর্শ মা হিসেবে সন্তানকে দেখভাল করছেন।
জেন্ডার বিশেষজ্ঞ মনজুন নাহার বলেন, ‘গর্ভে সন্তান ধারণ করলেই যে একজন মা হন, তা নয়। তাঁকে মানসিকভাবেও মা হয়ে উঠতে হয়। শত বাধা-বিপত্তিতেও মানসিকভাবে শক্ত বলেই একজন প্রকৃত অর্থে মা।’
শাশ্বত রূপের মায়েদের সম্মান জানাতেই আজ পালিত হবে ‘বিশ্ব মা দিবস’। প্রতিবছর মে মাসের দ্বিতীয় রোববার বাংলাদেশে মা দিবস পালিত হয়। দিবসটি পালনে বিভিন্ন সংগঠন প্রস্তুতি নিয়েছে। বিভিন্ন দেশে নানা আয়োজনে মা দিবস উদযাপন করা হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলনের ‘বাংলা ব্লকেট’ কর্মসূচি থেকেই সারাদেশে রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। তখন থেকে এখন পর্যন্ত রেল চলাচল বন্ধই রয়েছে। কবে নাগাদ ট্রেন চলাচল করবে এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক (ডিজি) সরদার সাহাদাত।
২৮ জুলাই রবিবার সকালে এ তথ্য জানান তিনি। সরদার সাহাদাত বলেন, ট্রেন চলাচলের সিদ্ধান্ত হলে জানানো হবে। ট্রেন চলাচলের বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। ট্রেন চালানো কোনো বিষয় না, বিষয়টি হচ্ছে নিরাপত্তা।
তিনি আরো বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে মন্ত্রী, সচিব এবং সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনা করে কবে থেকে ট্রেন চলবে সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত ১৮ জুলাই রাজধানীর নাখালপাড়া রেলগেট এলাকায় কোট আন্দোলনকারীরা রেললাইনের ওপর আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করলে জননিরাপত্তার স্বার্থে ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখে বাংলাদেশ রেলওয়ে।
অনলাইন ডেস্ক :
কোনো দেশ স্যাংশন দিলে তাদের কাছ থেকে বাংলাদেশ কিছু কিনবে না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ ১৩ মে শনিবার রাজধানীর রমনায় ‘ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের (আইইবি) ৬০তম কনভেনশন’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আরেকটা সিদ্ধান্ত আমি নিতে বলেছি, এখন আবার ওই স্যাংশন দেওয়ার একটা প্রবণতা, যাদের দিয়ে সন্ত্রাস দমন করি তাদের ওপর স্যাংশন, আমি বলে দিয়েছি যে দেশ স্যাংশন দেবে তাদের কাছ থেকে আমি কিচ্ছু কিনবো না। ’
অনলাইন ডেস্ক :
সংলাপের কথা শুনে বিএনপির নেতাদের আবারও জিহ্বায় পানি এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, সংলাপ নিয়ে আপাতত আমরা ভাবছি না, ভাবব কি না সেটা পরের বিষয়। গতবারের কথা আমাদের মনে আছে; এক বার নয়, দুই বার তাদের সঙ্গে সংলাপে বসেছি। রেজাল্ট কী?
ঐতিহাসিক ৬ দফা দিবস উপলক্ষে ৮ জুন বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।
কাদের বলেন, নিষেধাজ্ঞার জন্য নালিশ করতে করতে বিএনপি এখন নিজেরাই ফাঁদে পড়েছে। তারা নিজেরাই ‘ফাঁদে পড়ে কান্দে’। এখন তারা নালিশ করে নিষেধাজ্ঞার পরিবর্তে পেয়েছে ভিসানীতি। এই ভিসানীতি নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কাকে ভিসা দেবে, কাকে দেবে না, একটা সেই দেশের ব্যাপার। আমরাও আমাদের দেশে কাকে ভিসা দেব, কাকে দেব না, সেটাও আমাদের ব্যাপার। এ নিয়ে ভয় পাওয়ার কী আছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ফখরুল সাহেবের জিহ্বায় পানি আসছে। মনে করছে আওয়ামী লীগ তাদেরকে সংলাপে ডাকবে। এই সংলাপের কথা আমরা ভাবছি না। নিরপেক্ষ কে? আপনার নেত্রী বলেছে শিশু এবং পাগল। শিশু এবং পাগল ছাড়া কেউ নিরপেক্ষ নয়। কাজেই আপনি শিশু এবং পাগলের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নিরপেক্ষ ব্যক্তি খুঁজে বের করুন। তারপর বোঝা যাবে কী হবে। আর এটা নিয়ে মাথা খারাপ করে কাজ নেই, এই তত্ত্বাবধায়ক আর আসবে না, তত্ত্বাবধায়ক মরে গেছে। এই মরা জিনিসকে আর জীবিত করার চেষ্টা করবেন না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করেনি, এটা নিষিদ্ধ করেছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত।
তিনি বলেন, বিএনপি নমিনেশন লন্ডন থেকে দেয়, ঢাকা থেকে দেয়, নয়াপল্টন থেকে দেয়, গুলশান থেকে দেয়। বিভিন্ন জায়গা থেকে নমিনেশন বিক্রি করে। এটাই হচ্ছে বিএনপি। মনে আছে ওই নমিনেশন বাণিজ্য, অনেকের পকেট খালি করেছে। একেক জায়গায় তিনজন চারজন করে নমিনেশন পেয়েছে, এটা হচ্ছে বিএনপি।
কাদের বলেন, আমাদের স্বাধীন নির্বাচন কমিশন ছিল না। খালেদা জিয়ার ইচ্ছায় নির্বাচন কমিশন ছিল আজিজ মার্কা নির্বাচন কমিশন। সেটা আর হবে না। সেই দিন চলে গেছে। আমাদের নেত্রী পার্লামেন্ট আইন করে স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন। নির্বাচন কমিশন নিয়ে আপনাদের চিৎকার করার কোনো কারণ নেই।
সেতুমন্ত্রী বলেন, আজকে বিদেশি বন্ধুরা তারা চায় নিরপেক্ষ নির্বাচন। তারা চায় ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশন। আমাদের নেত্রী দেশি বিদেশিদের আশ্বস্ত করে বলেছেন যে, নিরপেক্ষ অবাধ নির্বাচন করব। বিএনপি চায় তত্ত্বাবধায়ক। বিএনপি চায় শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে হবে। এটা মামা বাড়ির আবদার।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে কাদের বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নিয়মের মধ্যে থাকুন। আপনারা আমাদের শপথে থাকুন। আমাদের আবারও ৬ জুন, ৭ মার্চের শপথ নিতে হবে।
তিনি বলেন, বিএনপি গণতন্ত্র গিলে খেয়েছে। নির্বাচন ব্যবস্থা গিলে খেয়েছে। এরা মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ গিলে খেয়েছে। এদের হাতে দেশ নিরাপদ নয়। এরা যদি ক্ষমতা ফিরে পায়, বিএনপি নামের বিষধর সাপ গোটা দেশ গিলে খাবে।
বিদ্যুৎ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা জনগণকে বলেছি, আপনারা সময় দিন। ১০-১৫টা দিন সময় দিন। সব ঠিক হবে। বঙ্গবন্ধু কন্যার ওপর ভরসা রাখুন।
নতুন ভোটারদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশের তরুণ সমাজ, এবার তোমরা যারা প্রথমবার ভোট দেবে তোমরা স্মার্ট বাংলাদেশের পক্ষে ভোটটা দেবে।
চলারপথে ডেস্ক :
বড় দলকে বাংলাদেশ প্রথম হারাল, এমন নয়। অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডকে সিরিজ হারানোর সুখস্মৃতি এখনও খুব একটা দূরের গল্প নয়। কিন্তু ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এই জয়টা আলাদা। তাদের সঙ্গে প্রথম বলে তো অবশ্যই , একই সঙ্গে টি-টোয়েন্টিতে খেলার ধরন, মানসিকতা, উইকেট সবকিছু মিলিয়েই।
সপ্তাহিক কর্মদিবসের প্রথম দিন বিকেল তিনটায় খেলা, তবুও গ্যালারি ছিল ভর্তি। তাদের গর্জনের সুরেও বোধ হয় ‘ভালো দল’ দেখার সেই সাক্ষী। মিরপুরে সন্ধ্যে নামার আগে জ্বলে উঠা মোবাইলের ফ্লাশলাইটে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টিতে বদলে যাওয়ার শুরু হলো কি না, উঠবে এখন এই আলোচনাও।
অনেকদিন ধরে হতাশার টি-টোয়েন্টি দল বিশ্বকাপের পর খেলতে নেমেছিল প্রথমবার। একাদশ, স্কোয়াডেও বদলও এসেছিল বেশ কিছু। ‘পারফরমারদের’ নিয়ে গড়া ‘সাকিব আল হাসানের দল’ দেখিয়েছে নতুন আশার আলো, দিয়েছে টি-টোয়েন্টিতে ভালো করার বার্তাও।
আজ ১২ মার্চ রবিবার মিরপুরের শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ইংল্যান্ডকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এক ম্যাচ আগেই প্রথমটিতে জেতা স্বাগতিকদের জন্য নিশ্চিত হয়েছে সিরিজও। শুরুতে ব্যাট করতে নেমে সব উইকেট হারিয়ে ইংল্যান্ড পায় ১১৭ রানের সংগ্রহ। ৭ বল হাতে রেখেই লক্ষ্যে পৌঁছায় স্বাগতিকরা।
টস হেরে ব্যাট করতে নামে ইংল্যান্ড। সফরকারীদের স্কোরকার্ডে তখন জমা হয়েছে ১৬ রান, ইনিংসের তৃতীয় ওভারেই প্রথম আঘাত হানেন তাসকিন। তাকে বড় শট হাঁকাতে গিয়ে ডিপ থার্ড ম্যানে হাসান মাহমুদের হাতে ক্যাচ দেন ডেভিড মালান। ৮ বল খেলে এই ব্যাটার করেন ৫ রান। সঙ্গী হারালেও তিনে নামা মঈন আলীকে নিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন ফিল সল্ট। ইংলিশদের চাপে ফেলতে তাসকিনকে দিয়ে টানা তিন ওভার করান সাকিব। উইকেটের দেখা না পেলেও ওই ওভারগুলোতে ১৯ রান দেন এই পেসার।
সপ্তম ওভারে নিজেই বোলিংয়ে এসে সল্টকে সাজঘরের পথ দেখান সাকিব। বাঁহাতি এই স্পিনারের ফ্লাইটেড ডেলেভারিতে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে বসেন ইংলিশ ওপেনার। সাকিব দারুণ ক্যাচ নিলে ১৯ বলে ২৫ রান করে সাজঘরে ফেরেন সল্ট।
এরপর দারুণ এক ইয়র্কারে জস বাটলারের স্টাম্প ভাঙেন হাসান। ৪ রানে বাটলার ফিরে গেলে মেহেদী হাসান মিরাজকে স্লগ সুইপ খেলতে গিয়ে শামীম পাটোয়ারির তালুবন্দি হন মঈন। ৫৭ রানে চার উইকেট হারিয়ে ফেলে ইংল্যান্ড।
এরপর স্যাম কারানের সঙ্গে ৪৪ রানের জুটি গড়েন বেন ডাকেট। তাদের জুটি ভাঙেন মেহেদী হাসান মিরাজ, ১৬ বলে ১২ রান করা কারান হয়েছেন স্টাম্পিং। এক বল পরেই ক্রিস ওকসকেও শূন্য রানে স্টাম্পিংয়ের ফাঁদে ফেলেন মিরাজ।
এই স্পিনার ৪ ওভারে কেবল ১২ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়ে দলের সেরা বোলার। কম খরুচে ছিলেন বাংলাদেশের প্রায় সব বোলারই। তাসকিন আহমেদ নিজের ৪ ওভারে ২৭ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন, এক উইকেট নিতে সাকিব ৩ ওভারে দেন ১৩ রান। ১ উইকেট নেওয়া হাসান মাহমুদ ২ ওভারে ১০ রান দেন। মোস্তাফিজুর রহমান ৪ ওভারে ১৯ রান দিয়ে এক উইকেট নেন।
অল্প রানের লক্ষ্যে খেলতে নামা বাংলাদেশের দরকার ছিল কেবল উইকেটে টিকে থাকা। মাঝেমধ্যে বড় টার্ন নিচ্ছিল বল, পিচও ছিল কিছুটা স্লো; কিন্তু মিরপুরের এই উইকেটে কীভাবে খেলতে হয় বাংলাদেশের ব্যাটারদেরই তা সবচেয়ে ভালো জানা। শুরুটা অবশ্য ছিল কিছুটা হতাশার।
রান খরায় ভুগতে থাকা লিটন দাস এদিনও আউট হন হতাশাজনকভাবে। ৯ বলে ৯ রান করে এই ব্যাটার স্যাম কারানের বলে পুল করতে যান। ডিপ স্কয়ার লেগে দাঁড়ানো ফিল সল্টে হাতে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। ১৬ রানে এসে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। রনি তালুকদারও পারেননি নিজের ইনিংস লম্বা করতে।
১৪ বলে ৯ রান করে এই ব্যাটার ক্যাচ তুলে দেন মঈন আলীর হাতে, জফরা আর্চারের বলে। তাওহীদ হৃদয় ব্যাটিংয়ে এসে দারুণ দুটি শট খেলেন। কিন্তু এই ব্যাটারও পারেননি ইনিংস টেনে নিতে। ২ চারে ১৮ বলে ১৭ রান করে পয়েন্টে দাঁড়ানো ওকসের হাতে তিনি ক্যাচ দেন রেহান আহমেদের বলে।
বাকিরা যখন পথ ধরছেন সাজঘরে, ফর্মে থাকা শান্ত তখন একাই টেনেছেন দলকে। সাকিব আল হাসান, মেহেদী হাসান মিরাজ, আফিফ হোসেন কেউই তাকে দিতে পারেননি যোগ্য সঙ্গ। এক পর্যায়ে এসে ভয়ই ধরেছিল বাংলাদেশের। এর মাঝে অবশ্য মিরাজের ১৬ বলে ২ ছক্কায় ২০ রান কিছুটা চাপ কমায়। ষষ্ঠ ব্যাটার হিসেবে আফিফ হোসেন ধ্রুব যখন ফেরেন, তখনও বাংলাদেশের ১৩ বলে দরকার ১৩ রান।
শান্ত ফিরলেই বাংলাদেশের জন্য ছিল হারের বড় শঙ্কা। কিন্তু ক্রিস জর্ডানের করা ১৯তম ওভারে প্রতি আক্রমণে যান তাসকিন আহমেদ ও নাজমুল হোসেন শান্ত। এই ওভারে দুজন মিলে হাঁকান তিন বাউন্ডারি, শান্ত অপরাজিত থাকেন ৪৭ বলে ৩ চারে ৪৬ রান করে। জর্ডানের পঞ্চম বলে তাসকিনের চারে জয় নিশ্চিত হওয়ার পর উল্লাসে ফেটে পড়ে পুরো মিরপুর।
নাজমুল হোসেন শান্ত জড়িয়ে ধরেন ক্রিজে থাকা আরেক ব্যাটার তাসকিন আহমেদকে। শান্ত চিৎকার করে এমন কিছুই বলতে চাইলেন কি না, ‘আমরা এসেছি নতুনের বার্তা নিয়ে’ এটুকু অবশ্য নিশ্চিত হওয়া গেল না।
জয়ের বড় কৃতিত্ব অবশ্য ব্যাটিং করতে শেখা তাসকিনেও। তিনি পরপর দুই চার মেরে সাত বল থাকতে দেশকে সিরিজ জেতান।