চলারপথে রিপোর্ট :
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে আনোয়ার হোসেন নামে এক ইউপি সদস্যের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে তার স্ত্রী, মেয়ে ও তার প্রেমিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার মধ্য রাতে উপজেলার মালিয়াট গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন নিহত ইউপি সদস্যের স্ত্রী মাহফুজা বেগম,মেয়ে মিতু খাতুন ও মেয়ের প্রেমিক পার্শ্ববর্তী পাঁচ কাউনিয়া গ্রামের সাজ্জাদ হোসেন চয়ন।
কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মাহবুবুর রহমান জানান, ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেনের মৃত্যু নিয়ে রহস্য ছিল। এটা নিয়ে পুলিশ তদন্ত করছিল। তদন্তে জানতে পারে এ হত্যার সাথে নিহতের স্ত্রী, মেয়ে ও তার প্রেমিক জড়িত। এরপর পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসে। সে সময় তাদের স্বীকারোক্তি মোতাবেক হত্যায় ব্যবহৃত রক্তমাখা ধারালো দা উদ্ধার করে। পরে আদালতে স্বীকারোক্তি মুলক জবানবন্দি দেওয়ার পর মঙ্গলবার বিকালে তাদের কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক :
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) পাঁচ পরিচালককে বদলি করে নতুন দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ৭ জুলাই রোববার র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদ স্বাক্ষরিত এক আদেশে তাদের বদলি করা হয়।
বদলি আদেশে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার আরাফাত ইসলামকে র্যাব-৮ এর অধিনায়ক, র্যাব-৪ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুর রহমানকে র্যাব সদর দপ্তরের অপারেশনস উইংয়ের পরিচালক, র্যাব-৮ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল কাজী যুবায়ের আলম শোভনকে র্যাব-৩ এর অধিনায়ক, র্যাব-৫ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌসকে আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক ও র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল ফিরোজ কবীরকে র্যাব-৫ এর অধিনায়ক করা হয়েছে।
অনলাইন ডেস্ক :
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শপথ নেওয়ার মাসপূর্তির একদিন পর ঢাকাসহ ২৫ জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
আজ ৯ সেপ্টেম্বর সোমবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ঢাকা, ফরিদপুর, সিলেট, হবিগঞ্জ, শেরপুর, ময়মনসিংহ, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মাগুরা, রংপুর, গাইবান্ধা, নওগাঁ, নাটোর, পাবনা, বগুড়া, জয়পুরহাট, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, চাঁদপুর, গাজীপুর, কুমিল্লা, মৌলভীবাজার, খুলনা ও গোপালগঞ্জে নতুন জেলা প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে গত ২০ আগস্ট এসব জেলার ডিসিকে প্রত্যাহার করে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দফতরে বদলি করা হয়। এর মধ্যে একটি প্রজ্ঞাপনে ঢাকা, সিলেট, হবিগঞ্জ, ময়মনসিংহ, মাগুরা, রংপুর, গাইবান্ধা, নওগাঁ, নাটোর, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, গাজীপুর, কুমিল্লা, মৌলভীবাজার, খুলনা ও গোপালগঞ্জের ডিসিকে প্রত্যাহার করার কথা জানানো হয়েছে।
দ্বিতীয় প্রজ্ঞাপনে ফরিদপুর, শেরপুর, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, পাবনা, বগুড়া, জয়পুরহাট ও চাঁদপুরের ডিসিকে প্রত্যাহার করার কথা বলা হয়।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর মাঠ প্রশাসনকে নতুন করে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। দায়িত্ব নেওয়ার পরই জনপ্রশাসনে বড় পরিবর্তনে হাত দেয় সরকার।
গত ১৪ আগস্ট একদিনেই জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানসহ ১১ জন সচিবের চুক্তি বাতিল করা হয়। আর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিবকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে। এছাড়া পদ-পদায়ন থেকে বঞ্চিত কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে উপসচিব ও যুগ্ম সচিব পদে বড় পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। পুলিশ প্রশাসনেও আনা হয়েছে বড় পরিবর্তন। এরই অংশ হিসেবে জেলা প্রশাসকদের প্রত্যাহার করে নতুন করে জেলা প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।
অনলাইন ডেস্ক :
‘আমাদের কাছে পাবেন অরিজিনাল (এ জে এস কাগজের) গ্লেজিং প্রিন্টের সুতা জলছাপসহ নিখুঁত কাজের মাল। আমাদের কাছে ৫০, ১০০, ৫০০ ও ১০০০ টাকার জাল নোট আছে, যা ব্যাংকের মেশিন ছাড়া খালি চোখে বোঝা অসম্ভব।’ ফেসবুকের একটি গ্রুপে এমন বিজ্ঞাপন দিয়ে চলছিল জাল টাকার কারবার। এই চক্রটি জাল টাকা তৈরির টিকটক ভিডিও বানিয়ে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে প্রচারণা চালাত। তবে মূলত জাল টাকা সরবরাহের নামে প্রতারণা করে অর্থ হাতিয়ে আসছিল তারা।
সম্প্রতি এই চক্রের অন্যতম সদস্য সিফাত শেখকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থেকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ সময় তার কাছ থেকে দুই লাখ টাকার জাল নোট উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে জাল টাকার কারবার ও এই চক্রের বিস্তারিত।
ডিবির লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার মশিউর রহমান বলেন, সিফাত ও তার সহযোগীরা নিখুঁত জাল টাকা সরবরাহের বিজ্ঞাপন দিয়ে আগ্রহীদের আকৃষ্ট করত। এরপর অগ্রিম টাকা নিয়ে যোগাযোগ বন্ধ করে দিত। ক্রেতাদের দেখানোর জন্য কিছু জাল নোট তারা নিজেদের কাছে রাখত। তবে সেগুলো কাউকে সরবরাহ করত না। এই চক্রে ১০ জনের বেশি সদস্য রয়েছে। তারা কেউ জাল নোট বানায়, কেউ ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেয়, কেউ ক্রেতার কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করে।
উপকমিশনার জানান, চক্রের সদস্যরা সবাই সাধারণ পরিবার থেকে আসা তরুণ। তবে তারা ফ্যাশনেবল ও বিলাসী জীবনযাপনের চেষ্টা চালায়। মাঝেমধ্যেই তারা কক্সবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে বেড়াতে যায়। জাল নোট বিক্রির নামে হাতিয়ে নেওয়া অর্থ তারা মূলত ‘ফূর্তি’র জন্য ব্যয় করে। সিফাতকে গত ২৯ এপ্রিল কক্সবাজার থেকে ফেরার পথেই গ্রেফতার করা হয়।
ডিবি সূত্র জানায়, কেরানীগঞ্জ উপজেলা চত্বরে ফুটপাতে ছয় হাজার টাকা বেতনে পোশাক বিক্রেতা হিসেবে কাজ করে সিফাত। সে ইউটিউবসহ অনলাইনে বিভিন্ন সাইট ঘেঁটে জাল টাকা তৈরি করা শিখেছে। পরে নিজেরা জাল টাকা বানানোর সময় তা ভিডিও করে অনলাইনে ছড়িয়ে দিয়েছে। মূলত সহজে অধিক অর্থ উপার্জন করতে চাওয়া লোভী ব্যক্তিরা তাদের টার্গেট। তারা এক হাজার টাকার ১০০টি জাল নোটের জন্য ১০ হাজার টাকা, ৫০০ টাকার ১০০টি নোটের জন্য ১২ হাজার টাকা, ১০০ ও ২০০ টাকার এক লাখ জাল নোটের জন্য ২০ হাজার টাকা দাম নিত। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা নেওয়ার পর তারা যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।
এই চক্রের একটি ফেসবুক গ্রুপে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন সময়ে জাল টাকার বান্ডিলের ছবি-ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে। ভিডিওতে দেখানো হচ্ছে, জাল টাকায় আসল টাকার সব নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য রয়েছে। ফলে হঠাৎ করে কারও পক্ষে সেটাকে জাল হিসেবে ধরা সম্ভব নয়। গত মাসের একটি পোস্টে বলা হয়েছে, ঈদ উপলক্ষে এ-গ্রেডের নিখুঁত জাল নোট তৈরি করা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দেশের যে কোনো এলাকায় হোম ডেলিভারি দেওয়া হবে। সেজন্য ৫০ ভাগ টাকা অগ্রিম দিতে হবে। কুরিয়ার সার্ভিস বা নিজস্ব প্রতিনিধির মাধ্যমে পাঠানো জাল টাকার চালান হাতে পাওয়ার পর বাকি টাকা দিতে হবে। যোগাযোগের জন্য একটি ফোন নম্বরও দেওয়া আছে।
একটি ফেসবুক পেজে বলা হয়েছে, ‘মালের (জাল টাকা) স্যাম্পল নিজ হাতে চেক করে তারপর অর্ডার করবেন।’
চারদিন আগে লেখক আফসান চৌধুরী ফেসবুকে জাল টাকা বিক্রির বিজ্ঞাপনের একটি স্ক্রিনশট শেয়ার করেন। সেখানে তিনি লিখেছেন– ‘পুলিশ এত কিছু জানে, এটা জানে না? রেট এত ভালো। এক টাকার বদলে নকল আট টাকা।’ তাঁর শেয়ার করা স্ক্রিনশটে লেখা রয়েছে– ‘এক লাখ মালের দাম ১২ হাজার টাকা। সব রকমের নোট। সর্বনিম্ন অর্ডার ৫০ হাজার টাকা।’
এর আগে গত ২৪ এপ্রিল রাজধানীর দক্ষিণ গোড়ান থেকে ফেসবুকে প্রচার চালিয়ে জাল নোটের কারবারে জড়িত চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
অনলাইন ডেস্ক :
নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. জাহাংগীর আলম বলেছেন, বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় শেষ হয়েছে। তফসিল পুনর্নিধারণের কোনো সুযোগ নেই।
তবে কি বিএনপিকে ছাড়াই আরো একটি জাতীয় নির্বাচন হতে যাচ্ছে- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা আপনারা বুঝে নেন।
আজ ৩০ নভেম্বর বৃহস্পতিবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মলনে ইসি সচিব এসব কথা বলেন।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে মো. জাহাংগীর আলম বলেন, আপনারা আগে থেকেই জানেন যে বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় মনোনয়নপত্র দাখিলের সময়সীমা শেষ হয়েছে। তাই বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন মনে করে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিলের সময়সীমা বর্ধিতকরণের কোনো সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, প্রার্থীরা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। আমরা ১ ডিসেম্বর শুক্রবার কয়টি দল কোন কোন আসনে মোট কতজন প্রার্থী অংশগ্রহণ করছে তা বিস্তারিত জানাতে পারবো।
নির্বাচনী আচরণবিধি প্রতিপালন বিষয়ে ইসির এ মুখপাত্র বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব সাক্ষাৎ করেছিলেন। বিশেষত আইজিপি মহোদয় সামগ্রিক বিষয় অবহিত করেছেন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে জানিয়েছেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব কমিশনের কোনো নির্দেশনা আছে কি না তা জেনে নিয়েছেন। পরবর্তী সময়ে সে অনুযায়ী কার্যক্রম গ্রহণ করবেন।
তিনি বলেন, কিছু কিছু প্রার্থী কোনো কোনো জায়গায় আচরণবিধি ভঙ্গ করায় আমাদের নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি তাদের তলব করেছে। এছাড়া রিটার্নিং কর্মকর্তার মাধ্যমে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরাও কাজ করছেন। তারা তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন।
বেশ কয়েকটি দল এখনো মনোনয়নপত্র জমা দেয়নি। এরই মধ্যে সময় শেষ হয়েছে। সেসব দলের আর কোনো সুযোগ আছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব বলেন, সময়সীমা অতিক্রম হয়েছে। সময় বাড়ানোর আর কোনো সুযোগ নেই।
ভোটের ৫২ দিন আগে গত ১৫ নভেম্বর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তফসিল অনুযায়ী, ভোট হবে আগামী ৭ জানুয়ারি। এছাড়া মনোনয়নপত্র জমার শেষ তারিখ ৩০ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর। প্রতীক বরাদ্দ ১৮ ডিসেম্বর।
সেক্ষেত্রে মনোনয়নপত্র জমার জন্য ১৪ দিন সময় দেওয়া হয় এবং প্রচারের জন্য সময় রয়েছে ১৯ দিন। ভোটের ৪৮ ঘণ্টা আগে প্রচার শেষ করতে হয়। অর্থাৎ, ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ভোটের প্রচার চালাতে পারবেন প্রার্থীরা।
চলারপথে রিপোর্ট :
সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঞার দাফন সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার বাদ এশা পরমানন্দপুর ঈদগাহ মাঠে চতুর্থ জানাজা শেষে মা-বাবার কবরের পাশে তাঁর মরদেহ দাফন করা হয়।
এর আগে আজ ৩০ সেপ্টেম্বর শনিবার রাত ৩টায় রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর।
উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঞার ছেলে মাইনুল হাসান তুষার বলেন, ‘বাবা দীর্ঘদিন ধরে কিডনিজনিত রোগে ভুগছিলেন। তার শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে এক সপ্তাহ আগে এভার কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই চিকিৎসা চলছিলেন। শুক্রবার রাত ৩টা ২ মিনিটে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।’
এর আগে উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঞার প্রথম জানাযা শনিবার সকাল ১১টায় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় অনুষ্ঠিত হয়। পরে সড়কপথে মরদেহ সরাইল উপজেলা সদরে আনা হয়। শনিবার বাদ আসর সরাইল অন্নদা সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখান থেকে মরদেহ নেওয়া হয় অরুয়াইল আব্দুস সাত্তার ডিগ্রি কলেজ মাঠে। বাদ মাগরিব তৃতীয় জানাজা শেষে মরদেহ নেওয়া হয় পরমানন্দপুর গ্রামে। শনিবার বাদ এশা পরমানন্দপুর ঈদগাহ মাঠে চতুর্থ জানাজা শেষে মা-বাবার কবরের পাশে তাঁর মরদেহ দাফন করা হয়।
এ দিকে সরাইল সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় জানাজায় অংশ নেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ (নাসিরনগর) আসনের সংসদ সদস্য বি এম ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আল-মামুন সরকার, সরাইল উপজেলা চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর, নাসিরনগর উপজেলা চেয়ারম্যান ডা. রাফিজ উদ্দিন আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট নাজমুল হোসেন, জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা প্রমুখ। এ সময় সংরক্ষিত নারী সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম ওরফে শিউলী আজাদ উপস্থিত ছিলেন। তবে জানাজায় বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ কোনো নেতা উপস্থিত ছিলেন না।
উকিল আব্দুস সাত্তারের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি এবং সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আল-মামুন সরকার।
জানা যায়, আব্দুস সাত্তার ভূঞা ১৯৩৯ সালের ১৬ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার পাকশিমুল ইউনিয়নের পরমানন্দপুর গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে আইনজীবী পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সভাপতিও ছিলেন।
আব্দুস সাত্তার ভূঞা ১৯৭৯ সালে তৎকালীন কুমিল্লা-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে বিএনপি থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালের নির্বাচনে তৎকালীন ৪ দলীয় জোট সরকার থেকে টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী হিসেবে আবদুস সাত্তার আইন, মৎস্য ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। তবে ২০০৮ সালের নির্বাচনের পরে রাজনৈতিক কার্যক্রমে নিষ্ক্রিয় ছিলেন তিনি। ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারও ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য হিসেবে জয়লাভ করেন। ২০২৩ সালের ২ জানুয়ারি তাকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়। পরে ২ ফেব্রুয়ারি উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়লাভ করেন এ নেতা। এ সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা তার পক্ষে নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশ নেন।