অনলাইন ডেস্ক :
বন্দর নগরী চট্টগ্রামে শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রা করেছে আওয়ামী লীগ। আজ ১৮ জুলাই মঙ্গলবার নগরীর পুরাতন রেলওয়ে স্টেশন চত্বরে প্রথমে জমায়েত ও সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এর পর সেখান থেকে শোভাযাত্রা বের করা হয়। এতে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন। শোভাযাত্রাটি নিউমার্কেট মোড় ও লালদীঘির পাড় হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ইদানীং কিছুদিন পর পর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর চট্টগ্রামে আসছেন। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ শক্তিশালী সংগঠন। যদি বাড়াবাড়ি করেন, তাহলে আপনাদের আন্দোলন বঙ্গোপসারে ফেলে দেওয়া হবে। কেউ রক্ষচক্ষু দেখালে আওয়ামী লীগও বসে থাকবে না।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকারই নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করবে। নির্বাচন কমিশনই নির্বাচন পরিচালনা করবে। দেশে সংবিধান মেনে নির্বাচন হবে। আমাদের দেশ চলবে আমাদের আইনে। কারও প্রেসক্রিপশনে নয়। বিএনপির অনেক আশাই ছিল– যুক্তরাষ্ট্র-ইইউ নির্বাচন নিয়ে কিছু বলবে। কিন্তু তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে তারা কিছু বলেনি। এ জন্য তারা (বিএনপি) হতাশ।
হাছান মাহমুদ বলেন, পৃথিবীর অনেক মানুষকে দিয়ে তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফোন করিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী তাদের বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছেন।
তিনি বলেন, মাঝে মধ্যে তাদের (বিএনপি) হাঁটা কর্মসূচি, দৌড় কর্মসূচি থাকে। তবে রাতে বিভিন্ন দূতাবাসে ধরনা দেয়। সঙ্গে থাকে তাদের নারীনেত্রী রুমিন ফারহানা। তবে এখন তারা বুঝতে পেরেছে, এভাবে ধরনা দিয়ে আর লাভ নেই। তাই মির্জা ফখরুল কথা ঘুরিয়ে দিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী সভাপতিত্ব এবং প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুক সঞ্চালনা করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ১০৩ কেজি গাঁজা ও ২৯৮ বোতল ফেনসিডিলসহ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। রবিবার রাত ১১টার দিকে অভিযানটি চালায় র্যাব-১৪ ভৈরব ক্যাম্পের একটি দল।
র্যাব সূত্র জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাবের দলটি ভৈরবের নাটালের মোড় এলাকায় অভিযান চালায়। এ সময় একটি ট্রাক তল্লাশি চালিয়ে ৫১টি বান্ডিলে মোড়ানো ১০৩ কেজি গাঁজা, ২৯৮ বোতল ফেনসিডিল, নগদ ৫২০০ টাকা ও দুটি মোবাইল ফোনসেট উদ্ধার জব্দ করে। গ্রেফতার করা হয় ট্রাকে থাকা দুজনকে। তারা হলেন কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া থানার কল্পবাস গ্রামের ইউসুফ আলীর ছেলে আশিকুল ইসলাম (২৮) ও ভোলা জেলার দক্ষিণ আইচা থানার দক্ষিণ চর আইচা গ্রামের আবুল কাশেম হাওলাদারের ছেলে ফিরোজ হাওলাদার (৩১)।
র্যাবের স্কোয়াড কমান্ডার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আক্কাছ আলী গ্রেফতার দুজনকে মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে উল্লেখ করে জানান, তারা মাদকের এই চালানটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা থেকে ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছিল। দীর্ঘদিন যাবত তারা মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন বলেও জানান তিনি। এ ব্যাপারে ভৈরব থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১৮ অনুযায়ী মামলা দিয়ে তাদেরকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
অনলাইন ডেস্ক :
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন দেশকে এগিয়ে নিতে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ভেদাভেদ ভুলে সকলকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সকল ধর্মের মূল বাণী হচ্ছে মানবকল্যাণ। আমরা সবাই বাংলাদেশি। এখানে সবাই একই সূত্রে গাঁথা। এখানে মেজরিটি বা মাইনরিটির কোনো স্থান নেই। সবাই এক এবং অভিন্ন সত্ত্বা। ধর্মীয় মূল্যবোধকে দেশ ও জনকল্যাণে কাজে লাগাতে হবে।
শারদীয় দুর্গোৎসব ও বিজয়া দশমী উপলক্ষে আজ ১৩ অক্টোবর রোববার বঙ্গভবনে হিন্দু ধর্মাবলম্বীর বিশিষ্ট ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে মত বিনিময়ের আগে এক শুভেচ্ছা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
রাষ্ট্রপ্রধান বিশ্বাস করেন, আবহমান বাঙালি সংস্কৃতিতে বিদ্যমান অসাম্প্রদায়িক চেতনা, পারস্পরিক ঐক্য, সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতি একটি সুন্দর আগামী ও আধুনিক বাংলাদেশ গঠনে কার্যকর অবদান রাখবে। তিনি বলেন, সমগ্র বিশ্বে যুদ্ধ-বিগ্রহ পরিস্থিতির কারণে মানবতা আজ বিপর্যস্ত। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং মধ্যপ্রাচ্যের সংবাদ পুরো বিশ্ব অর্থনীতির সাথে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। এছাড়া দেশের বন্যা কবলিত এলাকার লোকজন মানবেতর জীবনযাপন করছে। পরোপকারের মহান ব্রত নিয়েই রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন দেশের এ সংকটকালে সহায়-সম্বলহীন মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ ও বৈষম্যহীন দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে পরমত সহিষ্ণুতা, পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাস আর সহযোগিতার কোনো বিকল্প নেই। ১৯৭১ সালে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশের সকল ধর্মের মানুষ তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান যথাযথ মর্যাদা ও আনন্দঘন পরিবেশে উদযাপন করবে- এটাই সকলের প্রত্যাশা।
হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি দেশের সকল হিন্দু ধর্মাবলম্বীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, শারদীয় দুর্গোৎসবের সাথে মিশে আছে চিরায়ত বাংলার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। দুর্গাপূজা ধর্মীয় উৎসবের পাশাপাশি সামাজিক উৎসবও। সকলের সম্মিলিত অংশগ্রহণ এ উৎসবকে সর্বজনীন রূপ দিয়েছে।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের সংস্কৃতির অনন্য বৈশিষ্ট্য। জাতীয় অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে সমাজে বিদ্যমান সম্প্রীতি ও পারস্পরিক সৌহার্দ্য অটুট রাখতে হবে। মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, পারস্পরিক সহমর্মিতা, সম্প্রীতি ও মানবিক মূল্যবোধের বন্ধনে নতুন প্রজন্মের জন্য একটি প্রগতিশীল ও শান্তিপূর্ণ সামাজিক ব্যবস্থা গড়ে তোলাই হোক এবারের বিজয়ার অঙ্গীকার।
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বার্তা প্রদান শেষে রাষ্ট্রপতি দরবার হলে সকল অতিথিগণের সাথে কুশল বিনিময় করেন।
এ সময় রাষ্ট্রপতির সহধর্মিনী ড. রেবেকা সুলতানা, অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা আফম খালিদ হোসেন, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর, বিচারপতি বিশ্বজিৎ দাস, কূটনৈতিক মিশনের সদস্যবৃন্দ, হিন্দু ধর্মীয় গুরু রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ স্বামী পূর্ণাত্মানন্দ মহারাজ, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সচিব ড. কৃষ্ণেন্দু কুমার পাল, উপ-পরিচালক প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শ্রী বাসুদেব ধর, সাধারণ সম্পাদক শ্রী সন্তোষ শর্মা এবং মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি শ্রী জয়ন্ত কুমার দেব ও সাধারণ সম্পাদক ড. তাপস কুমার পাল অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
র্যাবের মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত আইজিপি এম. খুরশীদ হোসেন বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনাক্রমে যে কোনো চ্যালেঞ্জ নিতে র্যাব প্রস্তুত।
তিনি আজ ১২ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কাজীপাড়ার সরকারপাড়ায় র্যাব-৯-এর অধীনে ক্রাইম প্রিভেশন কোম্পানী-১ এর উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।
এ সময় র্যাব মহাপরিচালক এম. খুরশীদ হোসেন আরো বলেন, জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশকে ভালোবাসতেন। আমরা যারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বিশ্বাস করি, আমরা দেশকে ভালোবাসি, দেশের মানুষকে ভালোবাসি আমরা তারই অনুসারী। আমরা দেশের এবং মানুষের নিরাপত্তার জন্য কাজ করি।
তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচনকালীন সময়ে আইন-শৃংখলা বাহিনী নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকবে। তারা যেভাবে পরিচালনা করেন ঠিক সেভাবে পরিচালিত হবে।
তবে আমাদের দায়িত্ব হবে সাধারণ মানুষের নির্বিঘ্নে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে তারা যাতে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন এই বিষয়টি নিশ্চিত করা। আমরা এটা দৃঢ়ভাবে করবো। এ ধরনের যে কোন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় র্যাব মানসিকভাবে প্রস্তুত।
পরে তিনি র্যাবের ক্রাইম প্রিভেনশন কোম্পানি-১ এর উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত সূধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন।
র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্ণেল মাহাবুব আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সূধী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক খান রফিকুল ইসলাম এবং জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন সরকার।
স্বাগত বক্তব্য রাখেন র্যাব-৯-এর অধিনায়ক উইং কমান্ডার মোঃ মুমিনুল হক।
অনুষ্ঠানে সিভিল সার্জন মোহাম্মদ একরাম উল্লাহ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ এ.এস.এম শফিকুল্লাহসহ র্যাবের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সূধী সমাবেশে র্যাবের মহাপরিচালক এম.খুরশীদ হোসেন বলেন, দেশের আগামী প্রজন্মকে ধ্বংস করার জন্য আর্ন্তজাতিকভাবে সুপরিকল্পিতভাবে দেশে মাদক ঢুকছে। মাদকের সাথে আপোষ করলে পরবর্তী প্রজন্মের কি হবে? দেশে এখন মেয়েরাও মাদক সেবন করে। উচ্চ ও মধ্যবিত্তের ছেলে মেয়েরা মাদকাসক্ত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা চলমান থাকলে আগামী ১০বছর পর কাউকে পাব না যারা আইনশৃংখলা বাহিনীতে যোগ দিতে পারবে।
তিনি বলেন, মাদক ব্যবসায় সংক্ষিপ্ত সময়ে অনেক টাকার মালিক হওয়া যায়। জনপ্রতিনিধিরাও মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। মাদকের গড ফাদারদের গ্রেফতার করতে হবে। তাই মাদক পাচার প্রতিরোধে জনপ্রতিনিধিসহ সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
সূধী সমাবেশের পর র্যাব-৯-এর অধীনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ক্রাইম প্রিভেনশন কোম্পানী-১-এর বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখেন র্যাব মহাপরিচালক। এর আগে র্যাব মহাপরিচালক র্যাবের নিজস্ব হেলিকপ্টারে করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের কাজীপাড়ায় কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে অবতরণ করেন।
অনলাইন ডেস্ক :
আগামী ২৯ জুনকে পবিত্র ঈদুল আজহার দিন ধরে ট্রেনের আগাম টিকিট বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলওয়ে। ১৪ জুন থেকে টিকিট বিক্রি শুরু হবে। এবারও শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রি হবে। তবে চাপ কমাতে দুই শিফটে টিকিট দেওয়া হবে। সকাল থেকে পশ্চিমাঞ্চলের এবং বেলা ১২টা থেকে পূর্বাঞ্চলের ট্রেনের টিকিট বিক্রি হবে।
আজ ৩০ মে মঙ্গলবার রেল ভবনে সংবাদ সম্মেলনে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন।
তিনি বলেন, ২৪ জুনের টিকিট ১৪ জুন, ২৫ জুনের টিকিট ১৫ জুন, ২৬ জুনের টিকিট ১৬ জুন, ২৭ জুনের টিকিট ১৭ জুন এবং ২৮ জুনের টিকিট ১৮ জুন বিক্রি করা হবে। এছাড়া ঈদের চাঁদ দেখার ওপর নির্ভর করে ২৯, ৩০ জুন ও ১ জুলাইয়ের টিকিট বিক্রি করা হবে। এছাড়া যাত্রী সাধারণের অনুরোধে ২৫ শতাংশ টিকিট যাত্রা শুরুর আগে প্রারম্ভিক স্টেশন থেকে পাওয়া যাবে।
মন্ত্রী আরো বলেন, এবার ঈদে ঢাকা থেকে বহির্গামী আন্তঃনগর ট্রেনে মোট আসন সংখ্যা হবে ২৯ হাজার। সব টিকিটি অনলাইনে বিক্রয় করা হবে। ঈদের ট্রেনে ৬৫টি অতিরিক্ত বগি যোগ করা হবে।
তিনি বলেন, একই সঙ্গে ট্রেনের ফিরতি টিকিট বিক্রি শুরু হবে ২২ জুন। ২২ জুন বিক্রি হবে ২ জুলাইয়ের ফিরতি টিকিট।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবীর, রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. কামরুল আহসান প্রমুখ।
স্টাফ রিপোর্টার:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল বুধবার দেশের প্রথম এলিভেটেড মেট্রোরেল উদ্বোধন করেছেন। এর মধ্য দিয়ে দেশে স্বপ্নের মেট্রোরেলের প্রথম যাত্রা হলো, একইসাথে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের ছয় মাসের ব্যবধানে দেশের যোগাযোগের ইতিহাসে আরেকটি মাইলফলক স্থাপিত হল। রাজধানীর দিয়াবাড়ি থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রোরেল প্রকল্পের ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) লাইন-৬-এর দিয়াবাড়িতে ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে আংশিকভাবে উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী মেট্রো রেলের উদ্বোধন উপলক্ষে ৫০ টাকার একটি স্মারক নোটও প্রকাশ করেন। তিনি রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ি খেলার মাঠে একটি নাগরিক সমাবেশে ভাষণ দেন যা বিরাট জনসভায় পরিণত হয়। পরে প্রধানমন্ত্রী উত্তরার দিয়াবাড়ি থেকে টিকিট কেনার পর প্রথম সরকারি যাত্রায় আগারগাঁও যান। এ মেট্রো ট্রেন চালিয়েছেন মরিয়ম আফিজা। আজ থেকে সাধারণ মানুষ মেট্রোরেলে চড়া শুরু করতে পারবেন।
প্রাথমিকভাবে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত উত্তরা স্টেশন থেকে আগারগাঁও স্টেশন পর্যন্ত কোনো স্টপেজ ছাড়াই চলাচল করবে মেট্রো ট্রেন। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন (বিআরটিসি) মেট্রো রেল স্টেশন থেকে যাত্রী পরিবহনের জন্য ৩০টি ডাবল ডেকার বাস পরিচালনা করবে। এর মধ্যে ২০টি বাস ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ ও গুলিস্তান হয়ে আগারগাঁও-মতিঝিল রুটে এবং ১০টি বাস উত্তরার হাউস বিল্ডিং থেকে আবদুল্লাহপুর হয়ে উত্তরার দিয়াবাড়ির উত্তর স্টেশন পর্যন্ত চলাচল করবে।
সরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) মেট্রোরেল প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করছে। জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) মেট্রোরেল নির্মাণ করছে এবং প্রকল্পে ঋণ দিচ্ছে। ২০১৬ সালে এমআরটি লাইন-৬ এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত দ্বিতীয় সেকশন এবং মতিঝিল থেকে কমলাপুর রেলস্টেশন পর্যন্ত তৃতীয় সেকশন পর্যায়ক্রমে চালু করা হবে।
আগামী ডিসেম্বরে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু হবে। মেট্রো রেল প্রতি ঘন্টায় ৬০ হাজার যাত্রী এবং প্রতিদিন অর্ধ মিলিয়ন যাত্রী বহন করতে সক্ষম হবে এবং প্রতি চার মিনিটে প্রতিটি স্টেশনে একটি ট্রেন আসবে। ঢাকায় এলিভেটেড মেট্রোরেল-এ এখন পর্যন্ত অদৃশ্য পরিবহনের নতুন মোড দিয়ে যাতায়াতের নতুন যুগে যাত্রা শুরু করতে চলেছে বাংলাদেশ। মেট্রোরেলটি আরামদায়ক উপায়ে কম সময়ে বেশি যাত্রী পরিবহন করায় জনদুর্ভোগ অনেকটাই কমবে। রাজস্ব আদায় বাড়ানোর পাশাপাশি মেট্রোরেল চালু হলে সম্পূর্ণ চালু হলে রাজধানীর যানজট কমবে।
প্রকল্পের বিবরণ অনুযায়ী, প্রাথমিকভাবে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ছয়টি বগি বিশিষ্ট ১০ সেট ট্রেন চলবে। ১০-সেটের ট্রেনের কোনটিতে কখনো সমস্যা দেখা দিলে সহায়ক হিসেবে থাকা বাকি দুটি বিকল্প হিসেবে চলবে। আপাতত এই রুটে ধীরগতিতে ট্রেন চলবে। তবে পূর্ণ গতিতে ট্রেন চলাচল শুরু হলে প্রতি সাড়ে তিন মিনিটে একটি করে ট্রেন চলবে। ট্রেন কোন স্টেশনে কতক্ষণ থাকবে তা এখনও ঠিক হয়নি। প্রতিটি স্টেশনে, যাত্রীদের বোর্ডিং এবং নামা সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত ট্রেনটি অপেক্ষা করবে। প্রতিটি ট্রেন ২,৩০০ যাত্রী নিয়ে ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারে। তবে বাঁকযুক্ত এলাকায় গতি কম হবে। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর রাজধানীর ওপর চাপ কমাতে নানা উদ্যোগ নেয় আওয়ামী লীগ সরকার। যানজট নিরসনে রাজধানীজুড়ে মেট্রোরেল নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে প্রকল্পের বিবরণে জানা গেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সালের ২৪ জুন মেট্রোরেল প্রকল্পের নির্মাণ কাজ উদ্বোধন করেন, যা এমআরটি লাইন-৬ নামে পরিচিত। পরে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের নগরীর আগারগাঁও পয়েন্টে এলিভেটেড ভায়াডাক্টের প্রথম অংশ এবং এমআরটি লাইন-৬ এর নয়টি স্টেশনের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। মোট ২২,০০০ কোটি টাকার প্রকল্পের মধ্যে জাইকা (জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি) প্রায় ১৬,৬০০ কোটি টাকা প্রকল্প সহায়তা হিসেবে প্রদান করেছে।