চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার তালশহর ইউনিয়নের নাওঘাট গ্রামের ফসলি জমির মাঝখানে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলছে। এতে ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়ে হুমকির মুখে পড়েছে আশপাশের জমিগুলো।
বালু উত্তোলন বন্ধে আনিছুর রহমানসহ কয়েকজন কৃষক উপজেলা নির্বাহীর কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মো. মাসুদ মিয়া নামে এক প্রভাবশালী ব্যক্তি তার মালিকাধীন জমি থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করছেন। যার চারদিকে অনেক কৃষকের জমি রয়েছে। অনেক বার নিষেধ করার পরও তিনি কারও কথা তোয়াক্কা করছেন না। ফলে আশপাশের ফসলি জমিগুলো ভেঙ্গে বড় ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। অবৈধ ড্রেজার দ্বারা ফসলি জমি থেকে বালু উত্তোলন বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন কৃষকরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিন নাওঘাট গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ফসলি জমির মাঝখানে বসানো হয়েছে ড্রেজার মেশিন। এ মেশিনের মাধ্যমে খনন যন্ত্রের সাহায্যে তোলা হচ্ছে বালু। সে বালু জমানো হচ্ছে পার্শ্ববর্তী বাজারের একটি খালি জায়গায়। ফলে আশপাশের অন্যান্য জমিগুলোর আইল ভাঙ্গনসহ বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে। এতে কৃষকরা দুঃচিন্তায় পড়েছেন। এর আগেও বেশ কয়েকটি ফসলি জমি থেকে বালু উত্তোলন করে পুকুর বানানো হয়েছে।
বেশ কয়েকজন কৃষক অভিযোগ করে বলেন, প্রভাবশালী ব্যক্তি মাসুদ কাউকে তোয়াক্কা না করেই দিনে রাতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছেন। এতে কোনো কৃষকই ফসল করতে পারবে না। মাসুদ মিয় লাভবান হবেন। কারণ, তিনি পুকুর বানিয়ে মাছ চাষ করবেন। কিন্তু আশপাশের কোনো কৃষক লাভবান হবেন না। ড্রেজার দিয়ে অতিরিক্ত মাটি কাটার ফলে জমি গভীর হয়। ফলে অন্য জমিগুলোর পাড় ভেঙ্গে যায়। এই চক্রটি প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই এই কাজটি করছে। আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাই, অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করে কৃষকদের ফসলি জমিগুলো যাতে রক্ষা করা হয়।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মাসুদ মিয়া বলেন, আমি এখানে পুকুর বানাব, সেজন্য বালু উত্তোলন করছি।
এ বিষয়ে আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে নিয়োজিত সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাজী তাহমিনা সারমিন বলেন, ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিষয়ে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলার বিভিন্ন স্থানে এভাবেই ফসলি জমি থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। প্রশাসন এ বিষয়ে তেমন কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে তাদের অভিযোগ।
স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে মাইশা আফরিন সুবর্ণা (১৪) নামের এক কিশোরী বিয়ের তিনমাসের মাথায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। রোববার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে কিশোরীর মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মাইশা আফরিন সুবর্ণা উপজেলার বুধন্তি ইউনিয়নের বীরপাশা গ্রামের নাসির উদ্দিনের মেয়ে। নাসির উদ্দিন বলেন, তার কিশোরী মেয়ে সুবর্ণা অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। পার্শ্ববর্তী বিন্নিঘাট এলাকার ইদ্রিস মিয়ার ছেলে মনির হোসেন (২২) তার মেয়েকে পছন্দ করতেন। পরে পারিবারিক ভাবে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের টাকার জন্য তার মেয়ে সুবর্ণাকে অত্যাচার করতো মনির। বিয়ের সময় মনিরকে ১ লাখ টাকা যৌতুক দেওয়ার পর সে আরও যৌতুককের টাকা দাবি করেন। টাকা না দিলে তার মেয়েকে তালাক দিবে একথা বলেন মনির। সে কথা শুনে সুবর্ণা শনিবার বিকেলে শোবার ঘরের বাশের তীরের সাথে ওড়না পেচিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। তিনি আরও বলেন, মনিরের চাপের কারণে তার মেয়ে সুবর্ণাকে বিয়ে দিতে হয়। মনিরের কারনে তার মেয়ে আত্মহত্যা করেছে।
এ ব্যাপারে বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু আহমেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এক কিশোরী গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। মরদেহ উদ্ধারের পর জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছি। থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
নিখোঁজের একদিন পর আশুগঞ্জ উপজেলার একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে আরাফাত আবিদ (২১) নামে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
২৩ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার দুপুরে আশুগঞ্জের লা-ভিডা নামক একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে আবিদের লাশ উদ্ধারের পর সন্ধ্যায় তার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে পাঠানো হয়। লাশ উদ্ধারের সময় আশুগঞ্জের হাসপাতাল থেকে আবিদের প্রেমিকা মাহিদা আক্তার তৃষাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তৃষা পুলিশকে জানায়, আবিদ আত্মহত্যা করছে। তবে আবিদের পরিবারের দাবি আবিদকে হত্যা করা হয়েছে। মৃত আবিদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার পশ্চিম পাইকপাড়ার প্রবাসী হেলাল উদ্দিনের ছেলে। গ্রেফতার হওয়া মাহিদা আক্তার তৃষার বাড়ি সদর উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়নের ঘাটুরা গ্রামে।
আবিদের স্বজনরা জানান, গত বুধবার সকাল ১০টার দিকে জন্মনিবন্ধন সার্টিফিকেটের ভুল সংশোধন করার কথা বলে আবিদ বাসা থেকে বের হয়। এ সময় তার মোবাইলে একটি ফোন আসে। দুপুরে আবিদ মোবাইল ফোনে তার মাকে জানায় রাতের বেলায় সে বন্ধুদের সাথে থাকবে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আবিদের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। দুপুরে আশুগঞ্জের লা-ভিডা হাসপাতাল থেকে পুলিশ আবিদের লাশ উদ্ধার করে। খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালে ছুটে যান।
পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ ঘাটুরা গ্রামের কাজী বাড়ির মাহিদা আক্তার তৃষা নামে একটি মেয়ের সাথে আবিদের প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। এই সম্পর্কের জের ধরে আবিদ তার বন্ধু আশুগঞ্জ উপজেলার লালপুর গ্রামের ইয়াছিন এবং প্রেমিকা মাহিদা আক্তার তৃষাকে নিয়ে তাদের পূর্ব পরিচিত আশুগঞ্জ উপজেলা সদরের রেলগেইট এলাকার অপর বন্ধু হযরত আলীর বাসায় যায়। সেখানে তারা রাত্রি যাপন করে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ইয়াছিন, হযরত আলী ও মাহিদা আক্তার তৃষা আবিদের লাশ নিয়ে আশুগঞ্জের লাভিডা হাসপাতালে যায়। খবর পেয়ে আশুগঞ্জ থানার পুলিশ হাসপাতাল থেকে আবিদের লাশ উদ্ধার ও প্রেমিকা তৃষাকে গ্রেফতার করে। আবিদের পরিবারের দাবি তৃষা, ইয়াছিন ও হযরত আলী আবিদকে পরিকল্পিত খুন করেছে।
আবিদের বাবা হেলাল উদ্দিন বলেন, বুধবার সকালে আমার ছেলে জন্মনিবন্ধন সার্টিফিকেট সংশোধন করার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়। এ সময় তার মোবাইলে একটি কল আসে। বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি খবর পান আশুগঞ্জের একটি হাসপাতালে আবিদের লাশ রয়েছে। খবর পেয়ে তিনি আশুগঞ্জ গিয়ে ছেলের লাশ নিয়ে আসেন। তিনি বলেন, আবিদকে পরিকল্পিত খুন করা হয়েছে। তিনি এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চান।
স্থানীয় বাসিন্দা নাহিদ জানান, বুধবার সকালে ইয়াছিন নামে একটি ছেলে তাকে ফোন করে আবিদকে বাসা থেকে নিয়ে যায়। পরে তাকে আশুগঞ্জে নিয়ে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়।
এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজাদ রহমান জানান, বুধবার দুপুরে আশুগঞ্জের লা-ভিডা নামক একটি হাসপাতাল থেকে আমরা আবিদের লাশ উদ্ধার করি। এ সময় হাসপাতালে লাশের সাথে তৃষা নামের এক তরুনী ছিলো। তৃষা আমাদেরকে জানায়, আবিদের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। বুধবার তারা পরিবারের অজান্তে বিয়ে করে আশুগঞ্জে তাদের পরিচিত এক বাসায় গিয়ে আশ্রয় নেয়। বৃহস্পতিবার সকালে তিনি টয়লেট থেকে এসে দেখেন আবিদ আত্মহত্যা করেছে। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি আজাদ রহমান আরো জানান, আমরা আবিদের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে প্রেরণ করা ও তৃষাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ২৪ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার সকালে তৃষাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে এটিকে আত্মহত্যা বলে মনে হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়া গেলে বিস্তারিত জানা যাবে। এ ঘটনায় থানায় এখনো কোন মামলা দায়ের করা হয়নি।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারে গ্রিলে গামছা পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন মো. জুয়েল নামে এক হাজতি। আজ ২৫ অক্টোবর শুক্রবার সকালে ময়নাতদন্তের শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এর আগে, ২৪ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাতে জেলা কারাগারে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এক কারারক্ষীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি দুজনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়েছে। মৃত মো. জুয়েল ব্রাহ্মণবাড়িয়া আশুগঞ্জ উপজেলার চরচারতলা গ্রামের আবু চাঁন মিয়ার ছেলে। জুয়েল ২০২০ সালে স্ত্রী হত্যার দায়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারে ছিলেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারের (ভারপ্রাপ্ত) জেল সুপার মো. ইকরামুল হক নাহিদ জানান, স্ত্রী হত্যা মামলায় বিচারাধীন ছিলেন জুয়েল। তাকে কারাগারে সেলে রাখা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার রাতে তিনি সেলের গ্রিলে গামছা পেঁচিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
এ সময় কারারক্ষীরা তাকে উদ্ধার করে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় কর্তৃপক্ষের নির্দেশে রিপন বড়ুয়া নামে এক কারারক্ষীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়াও প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রশিদ ও সহকারী কারারক্ষী উত্তম কান্তি বড়ুয়ার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতেই সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। শুক্রবার ময়নাতদন্তের শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
চলারপথে রিপোর্ট :
সৌদি আরবের আল জুবাইলে কেমিক্যাল ফ্যাক্টরির বয়লার বিস্ফোরণে এক প্রবাসী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। ৩০ নভেম্বর বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ১১টায় এ ঘটনা ঘটে। নিহতের নাম সোহেল শিকদার।
নিহত সোহেল ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার সোহাগপুর গ্রামের জহিরুল হক শিকদারের ছেলে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারে চলছে শোকের মাতম।
নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানান, ২০২২ সালের জানুয়ারিতে পরিবারের সচ্ছলতার জন্য সৌদি আরবের আল জুবাইলে গিয়েছিলেন সোহেল। সৌদি আরবে ফ্রি ভিসায় গিয়ে চুক্তিভিত্তিক ভাবে বিভিন্ন কোম্পানিতে কাজ করতেন। প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবার রাতে একটি ক্যামিকেল ফ্যাক্টরিতে ওয়েলডিং এর কাজ করছিলেন সোহেল। হঠাৎ ফ্যাক্টরির বয়লার বিকট শব্দ হয়ে বিস্ফোরণ হলে পুরো ফ্যাক্টরিতে আগুন ধরে যায়। এসময় সোহেল অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান। এ বিস্ফোরণের ঘটনায় সোহেলসহ ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৩ জন বাংলাদেশি ও আরেকজন ভারতীয় নাগরিক।
আজ ২ ডিসেম্বর শনিবার সোহাগপুর গ্রামে নিহত সোহেলের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, শোকের মাতম চলছে।
নিহত সোহেলের ভাই সবুজ শিকদার বলেন, আমার ভাই দুই বছর আগে প্রবাসে যান। প্রবাসে যাওয়ার পর থেকে ভালোই চলছিল। তার স্ত্রী দুই শিশু সন্তানও রয়েছে। তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা চিন্তিত। এছাড়া পরিবারটিও এখন আর্থিক সংকটের পড়বে। আমার বড় ভাইয়ের মরদেহ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের সহযোগিতা কামনা করছি।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের উপনির্বাচনের ফলাফলের গেজেট স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
আজ ৭ নভেম্বর মঙ্গলবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন ইসি সচিব জাহাংগীর আলম।
ইসি সচিব বলেন, লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের উপনির্বাচনে ফলাফলের গেজেট স্থগিত রাখা হয়েছে। এ ব্যাপারে তদন্ত শেষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইনে আছে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ এলে ইসি প্রকাশিত গেজেট স্থগিত রেখে তদন্তের নির্দেশ দিতে পারবে। সে অনুযায়ী তদন্ত চলছে। তদন্ত রিপোর্ট এলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী, এমন পরিস্থিতিতে তদন্ত প্রতিবেদনে ভোট কারচুপির অভিযোগ প্রমাণিত হলে ইসি নির্বাচন বাতিল বা সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের নির্বাচন বাতিল করতে পারে।
জাহাংগীর আলম বলেন, গণমাধ্যমে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একটি ও লক্ষীপুরের একটি ভোট কেন্দ্রের কিছু তথ্য-উপাত্ত পাওয়া গেছে। ইসি সেটির বিশ্লেষণ করেছে। এটার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও জেলা নির্বাচন অফিসারকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে ইসি। সরেজমিন তদন্তের পর তারা যে প্রতিবেদন দেবে, তারপরে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।
এর আগে, ৫ নভেম্বর রবিবার লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের উপনির্বাচনের ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়। এদিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নির্বাচনের ভোটগ্রহণের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। এতে দেখা যায়, সাদা রঙের পাঞ্জাবি পরা এক ব্যক্তি ব্যালট পেপারে নৌকা প্রতীকে একের পর এক সিল মারছেন। গণমাধ্যমের প্রতিবেদন বলছে, যিনি সিল মেরেছেন তার নাম আজাদ হোসেন। তিনি লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। তবে সম্প্রতি দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাকে বহিষ্কার করে জেলা ছাত্রলীগ। পরে বিষয়টি ইসির নজরে আসে।
লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের উপনির্বাচনে লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির মুহাম্মদ রাকিব হোসেন, নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ গোলাম ফারুক, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. সামছুল করিম ও আম প্রতীকে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির সেলিম মাহমুদ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এই আসনে মোট ভোটার চার লাখ তিন হাজার ৭৪৪ জন। ১১৫টি ভোট কেন্দ্রের ৮২৭টি ভোটকক্ষে ভোটগ্রহণ করা হয়েছে।
নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোহাম্মদ গোলাম ফারুক পিংকু এক লাখ ২০ হাজার ৫৯৯ ভোট পেয়ে জয় লাভ করেন। ভোট পড়ে ৩১ দশমিক ৮৫ শতাংশ। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন তিন হাজার ৮৪৬ ভোট।
আর ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. শাহজাহান আলম ৬৬ হাজার ৩১৪ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হন। এ উপনির্বাচনে কয়েকটি কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকের পক্ষে ‘ওপেন ভোট’ নেওয়ার পাশাপাশি ‘জাল ভোট’ দেওয়ার অভিযোগ তোলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক মৃধা।