চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে যাওয়া সেই শিশুটি অবশেষে মারা গেছে

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 22 July 2023, 744 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
বিজয়নগরে চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে যাওয়া আনুমানিক ১০ বছর বয়সী অজ্ঞাতনামা শিশুটি অবশেষে মারা গেছে।

আজ ২২ জুলাই শনিবার বেলা ১১টার দিকে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটি মারা যায়। শিশুটি দুইদিন জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অচেতন অবস্থায় ছিলো।

আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ জসিম উদ্দিন খন্দকার বলেন, গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সিলেট থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ট্রেনটি বিজয়নগর উপজেলার মেরাশানি রেলওয়ে স্টেশনে অতিক্রমকালে চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে যায় ১০ বছর বয়সী ছেলে শিশুটি। স্থানীয়রা শিশুটিকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে গ্রাম্য চিকিৎসক ও পরে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নিয়ে আসে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার দুপুরে শিশুটি মারা গেছে।

তিনি আরো বলেন, শিশুটির নাম-পরিচয় সনাক্ত করার চেষ্টা করছি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাতিঘর নামক একটি সংগঠনের কাছে তার লাশ দাফনের জন্য হস্তান্তর করেছি।

Leave a Reply

আশুগঞ্জে ইয়াবা ও প্রাইভেটকারসহ ৩জন গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : আশুগঞ্জ উপজেলা পুলিশের বিশেষ অভিযানে ২ হাজার Read more

চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজির ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সফর

চলারপথে রিপোর্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সফর করেছেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. Read more

গাঁজা ও পিকআপসহ গ্রেফতার ১

চলারপথে রিপোর্ট: আশুগঞ্জে সাড়ে ১২ কেজি গাঁজা ও একটি পিকআপসহ Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের গঠনতন্ত্র সংশোধন বিষয়ক বিশেষ…

চলারপথে রিপোর্ট : কোন রাজনৈতিক সংগঠনে পদ-পদবী রেখে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস Read more

কিশোর-কিশোরী ও নারী উন্নয়নে উঠান বৈঠক…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা তথ্য অফিসের উদ্যোগে তথ্য ও Read more

আখাউড়া স্থলবন্দরে স্ত্রীসহ স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা…

চলারপথে রিপোর্ট : আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে যাওয়ার সময় স্ত্রীসহ Read more

নবীনগরে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে অস্ত্রসহ চার ডাকাত…

চলারপথে রিপোর্ট : নবীনগরে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে চার ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে Read more

পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের মতবিনিময় সভা

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) উদ্যোগে মতবিনিময় Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির…

উৎসবমূখর পরিবেশে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখা Read more

ফেনসিডিলসহ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার

কসবায় ১৫২ বোতল ফেনসিডিলসহ রাজু আহমেদ (২৬) নামে একজনকে গ্রেফতার Read more

নবীনগর প্রেসক্লাবের ৩৯ তম বর্ষে পদার্পণ…

চলারপথে রিপোর্ট : নবীনগর প্রেসক্লাবের ৩৮ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ও Read more

লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রেস মিনিস্টার হিসেবে…

অনলাইন ডেস্ক : যুক্তরাজ্যের লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রেস উইংয়ে মিনিস্টার Read more

বিএনপি ও জামায়াতের নামে যারা রাজনীতি করে, তারা বাংলাদেশ চায় না: আইনমন্ত্রী

জাতীয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 10 January 2023, 1995 Views,
স্টাফ রিপোর্টার:
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা যখনই ক্ষমতায় আসেন, তখনই উন্নয়নের জোয়ার শুরু হয়। তিনি বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে গড়ে তুলেছেন। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে অনলাইনে যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি। আইনমন্ত্রী বলেন, বিএনপি ও জামায়াতের নামে যারা রাজনীতি করে, তারা বাংলাদেশ চায় না। তারা ষড়যন্ত্র করে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের খুন করেছে। আবার বিএনপি-জামায়াত ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (আখাউড়া ও কসবা উপজেলা) আসনের এই সংসদ সদস্য আরও বলেন, আমরা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেল ও বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট করেছি। এই উন্নয়নের অংশীদার বাংলাদেশের জনগণ। আপনারা জনগণের কাছে শেখ হাসিনার নৌকা মার্কায় ভোট চাইবেন। আমার জন্যও নৌকা মার্কায় ভোট চাইবেন।
বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের জনগণকে বিশ্বে মর্যাদার আসনে বসিয়েছিলেন মন্তব্য করে আনিসুল হক বলেন, স্বার্থান্বেষী মহল আলবদর, আলশামস, রাজাকাররা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবার হত্যা না করলে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নত দেশ হতে পারত। যারা পাকিস্তানি বাহিনীর দোসর, তারা বাংলাদেশকে মেনে নিতে পারেনি। এ কারণে জিয়ার পরিকল্পনায় বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যা করা হয়েছে।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের কর্তব্য হলো জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গঠন করা। আজকের দিনে আমাদের শপথ হোক, যত দিন পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গঠন না করব, তত দিন আমরা ঘরে ফিরব না।’
কসবা উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন কসবা পৌরসভার মেয়র মো. গোলাম হাক্কানী। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন কসবা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদুল কাউছার ভূইয়া, ভাইস চেয়ারম্যান মো. মনির হোসেন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফারহানা ছিদ্দিকা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মো. আবদুল আজিজ, জেলা পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য রুমানুল ফারহানা, কসবা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী মো. আজহারুল ইসলাম, উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রুহুল আমিন ভূঁইয়া, কসবা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. সফিকুল ইসলাম, কসবা উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক আফজাল হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মানিক প্রমুখ।

২৭ ঘণ্টা পর উদ্ধার হলো লাইনচ্যুত সেই ট্রেন, তদন্ত কমিটি গঠন

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 28 April 2023, 1182 Views,

ক্ষতিগ্রস্ত লাইনে ট্রেন চলাচল শুরু

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঘটনার ২৭ ঘণ্টা পর কনটেইনার ট্রেনের লাইনচ্যুত হওয়া ৭টি বগি উদ্ধার করা হয়েছে। আজ ২৮ এপ্রিল শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে উদ্ধার কাজ শেষ হয়। এরপর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ক্ষতিগ্রস্ত লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। এর আগে প্রচন্ড গরমে রেল লাইন বাঁকা হয়ে যাওয়ায় গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটের দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার দারিয়াপুর এলাকায় কনটেইনার ট্রেনের ৭টি বগি লাইনচ্যুত হয়।

এদিকে কনটেইনার ট্রেনের ৭টি বগি লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনায় পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটিকে তিন কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

বাংলাদেশ রেলওয়ের ঢাকা বিভাগীয় কর্মকর্তা খাইরুল কবিরকে প্রধান করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভাগীর প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম, ঢাকা বিভাগীয় সংকেত প্রকৌশলী মোঃ সৌমাক শাওন, বিভাগীয় প্রকৌশলী ঢাকা- ২ সিরাজ জিন্নাত ও বিভাগীয় যান্ত্রিক প্রকৌশলী মোঃ রাসেল।

এদিকে বৃহস্পতিবার ১টার দিকে অতিরিক্ত গরমে রেললাইন বাঁকা হয়ে কনটেইনার ট্রেনের ৭বগি লাইনচ্যুত হওয়ার পর ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট রেলপথে ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয় দেখা দেয়। উল্লেখিত পথের আন্তঃনগরসহ সব ধরণের ট্রেন বেশ বিলম্বে চলাচল করে। আপ লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ডাউন লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল করায় ট্রেনগুলো বিলম্বে চলাচল করে।

গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা একটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দাড়িয়াপুর এলাকায় অতিরিক্ত গরমে রেললাইন বাঁকা হয়ে মালবাহী (কন্টেইনার) ট্রেনের ৭টি বগি লাইনচ্যুত হয়। এর পরপরই চট্টগ্রাম ও সিলেটের সাথে ঢাকা অভিমুখী রেলপথ (আপ লাইন) দিয়ে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে, ডাউন লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল করে।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, দুর্ঘটনার সময় দাড়িয়াপুর এলাকায় রেলাইনের উপর ৫১ ডিগ্রী তাপমাত্রা ছিলো। রেললাইনের উপর সাধারনত ৪৫ ডিগ্রীর উপরে তাপমাত্রা গেলেই ট্রেনের গতি কমিয়ে চলার নির্দেশনা দেওয়া হয়। গত কয়েকদিন ধরেই এ পথে গতি কমিয়ে চলার নির্দেশনা দেওয়া আছে। পাশাপাশি কচুরিপানা ও পানি দিয়ে রেললাইনের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছিল।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও আখাউড়া রেলওয়ে জংশন স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, দুর্ঘটনার কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম. ঢাকা-সিলেট পথে বেশিরভাগ ট্রেনই বেশ বিলম্বে চলাচল করে। ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা মহানগর প্রভাতী নির্ধারিত সময় থেকে প্রায় আড়াই ঘন্টা বিলম্বে ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশন থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এছাড়া আন্তঃনগর তূর্ণা নিশিথা, উপবন এক্সপ্রেস, মহানগর এক্সপ্রেস, উপকুল এক্সপ্রেস, চট্টগ্রাম মেইল, ঢাকা মেইলসহ সব কয়টি ট্রেন বিলম্বে চলাচল করে।

এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপপরিদর্শক আমিনুলল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে কনটেইনার ট্রেনের ৭ বগি লাইনচ্যুত হওয়ার শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বগি গুলো উদ্ধার করা হয়।

এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত মাষ্টার মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টার সময় লাইনচ্যুত হওয়া বগিগুলো উদ্ধার করা হয়। পরে লাইন মেরামত শেষে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার সময় ক্ষতিগ্রস্ত লাইনে ট্রেন চলাচল শুরু হয়। তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত লাইনে ১০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন চলাচলের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

ফ্ল্যাটের তালা ভেঙে টাকা-সোনা চুরি

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 22 September 2023, 690 Views,
প্রতীকী ছবি

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের একটি ফ্ল্যাটের তালা ভেঙে চুরির ঘটনা ঘটেছে। ঘরে থাকা নগদ সাড়ে তিন লাখ টাকা ও সাড়ে তিন ভরি স্বর্ণালঙ্কার চুরি হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।

আজ ২২ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যায় জেলা শহরের বাগানবাড়ি এলাকায় ব্যবসায়ী মোস্তাক আহমেদের ভাড়া বাসায় এই ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ।

মোস্তাক আহমেদের ছেলে সজিব আহমেদ বলেন, আমার বাবার শহরের নিউ মার্কেটে কাপড়ের দোকান আছে। আমি একটি প্রতিষ্ঠানে ম্যানেজারের চাকরি করি। এছাড়া বাসায় আমার ছোট ভাই ও মা থাকেন। আমরা বাগানবাড়ি এলাকায় একটি ভবনের তিন তলার ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকি।

তিনি বলেন, বিকেলে ফ্ল্যাটের দরজায় তালা দিয়ে মাকে নিয়ে বাসার বাইরে যায় আমার ছোট ভাই। সে খেলতে চলে যায় এবং আম্মা চলে যান ডাক্তারের চেম্বারে। তারা সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে দেখেন দরজার তালা ভাঙা। ভেতরে ঢুকে দেখেন ওয়ারড্রবের ড্রয়ার সব খোলা এবং কাপড়চোপড় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। তারা দেখেন আলমারির ভেতরে থাকা ডিজিটাল লকার এবং সিন্দুক ভাঙা। পরে তল্লাশি করে দেখা যায়, লকারে থাকা নগদ সাড়ে তিন লাখ টাকা ও সিন্দুকে থাকা আম্মার সাড়ে তিন ভরি স্বর্ণালঙ্কার নেই। খবর পেয়ে আমি এসে বিষয়টি পুলিশকে জানালে তাদের একটি দল আসে।

এ বিষয়ে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসলাম হোসাইন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। বাড়িটি একটি নির্জন এলাকায় এবং সেখানে কোনো সিসিটিভি ক্যামেরা নেই। আমরা বিষয়টি তদন্ত শুরু করেছি।

সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে আবেদনপত্র নিয়েছেন নিশাত

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, রাজনীতি, 6 February 2024, 688 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ-এর মনোনয়ন পেতে দলীয় মনোনয়নের আবেদনপত্র নিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা মহিলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট তাসলিমা সুলতানা খানম নিশাত।

আজ ৬ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ-এর কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু হয়েছে। ৮ ই ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত মনোনয়ন সংগ্রহ ও জমা দেয়া যাবে।

মনোনয়নপত্রের আবেদন নিয়ে এডভোকেট নিশাত সাংবাদিকদের কাছে দলের সর্বস্থরের নেতাকর্মীসহ জেলাবাসীর দোয়া কামনা করেন। এরআগে নবম ও একাদশ সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন পেতে আবেদন করেছিলেন নিশাত।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া আওয়ামীলীগের তুখোর নেত্রী এডভোকেট নিশাত ১৯৮৯ সালে ছাত্রলীগে যোগদানের মাধ্যমে রাজনীতি শুরু করেন। পর্যায়ক্রমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের মহিলা সম্পাদিকা, জেলা ছাত্রলীগের মহিলা সম্পাদিকা নির্বাচিত হয়ে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে ওই বছরই জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদিকা নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত একই পদে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।

২০০৪ সালে গ্রেনেড হামলার প্রতিবাদে রাজপথে আন্দোলন করতে গিয়ে তৎকালীন বিএনপি-জামায়েত জোট সরকারের রোষানলে পড়েন নিশাত। দ্রুত বিচার আইনে তার বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা ও আদালতে ২টি মামলা হয়। পরবর্তীতে দলীয় সভানেত্রী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপে এবং তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুনের তত্ত্বাবধানে হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে এলাকায় ফিরে আসেন নিশাতসহ মামলার অন্যান্য আসামিরা। আওয়ামী লীগের একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে নিশাত সাংগঠনিক কর্মকান্ডে বরাবরই অগ্রণী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। জেলা আওয়ামী লীগের ২০২২ সালের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের সম্মেলনে তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের ব্যাপক প্রশংসা পান।

এছাড়া জাতীয় সংসদ এবং স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচনে দল অন্তপ্রাণ নিশাত দলের প্রার্থীর পক্ষে প্রচার-প্রচারণায় সবসময় মুখ্য ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনে নারী প্রচারকর্মীদের প্রধান সমন্বয়কারীর দায়িত্ব পালন করেন নিশাত। প্রায় ১৫শ’ নারীকর্মী তার নেতৃত্বে প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে ঘরে ঘরে গিয়ে গণসংযোগ এবং প্রচারণা চালিয়েছেন। এছাড়া বিভিন্ন ইউনিয়নে নারীদের ব্যাপক উপস্থিতিতে নারী সমাবেশের আয়োজন হয় তার নেতৃত্বে।

নিশাত ২০১৪ সালের ৩১ মার্চ অনুষ্ঠিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ৭৫ হাজার ৫৫২ ভোট পেয়ে নারী ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন।

রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি নারীদের কল্যাণে কাজ করেন নিশাত। পারিবারিক কলহে অসহায় নারীদের আইনী সহায়তা প্রদান, দরিদ্র নারীদের ভাগ্য পরিবর্তনে তার ভূমিকা অসামান্য। জাতিসংঘের ইউএন উইম্যান এবং ইউএন সিডিএফ প্রতিনিধিদল ছাড়াও দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রতিনিধি দল তার কর্মকাণ্ডের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

তিনি সুইড বাংলাদেশ পরিচালিত আসমাতুন্নেছা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী স্কুলের প্রতিষ্ঠাকাল থেকে ১৫ বছর প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে সুইড বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সাধারণ সম্পাদক নিশাত। এছাড়াও তিনি ড্রিম ফর ডিসএ্যাবিলিটি ফাউন্ডেশন, ড্রিম ফর ডিসএ্যাবিলিটি ফাউন্ডেশন হুইল চেয়ার ক্রিকেট টিম, ড্রিম ফর ডিসএ্যাবিলিটি ফাউন্ডেশন ফিজিক্যাল চ্যালেঞ্জড ক্রিকেট টিমের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

সমাজ উন্নয়নে অসামান্য ভূমিকার জন্যে ২০২১ সালে চট্টগ্রাম বিভাগের শ্রেষ্ঠ জয়িতা নির্বাচিত হন নিশাত। এছাড়া নারী উদ্যোক্তা হিসেবে ২০২০ সালের ৮মার্চ জাতীয়ভাবে দেশের অন্যতম শীর্ষ ইংরেজি দৈনিক ‘দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড’ কর্তৃক ‘আনস্টপ্যাবল ওম্যান অ্যাওয়ার্ড’ লাভ করেন।

চার কার্যদিবসে বিচারপ্রার্থীদের ভোগান্তি চরমে

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 9 January 2023, 1237 Views,
স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালতের জেলা জজসহ দুই বিচারকের অপসারণ ও নাজিরের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে আইনজীবীদের কর্মবিরতি গতকাল সোমবারও চলেছে। গতকাল ছিল এই কর্মবিরতির শেষ দিন। এর আগে এক দিনের কর্মবিরতি পালন করেছিল আদালতের কর্মচারী সমিতি। এ কারণে গত বুধবার থেকে গতকাল সোমবার পর্যন্ত চার কার্যদিবসে জেলার কোনো আদালতে বিচারিক কার্যক্রম হয়নি। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন ৫০ থেকে ৬০ হাজার বিচারপ্রার্থী। যে বিচারকদের অপসারণ দাবি করেছে আইনজীবী সমিতি, তাঁরা হলেন জেলা জেলা জজ শারমিন নিগার এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের-১ বিচারক (জেলা জজ) মোহাম্মদ ফারুক। আর শাস্তি দাবি করা নাজির (বর্তমানে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালের সেরেস্তাদার) হলেন মুমিনুল ইসলাম চৌধুরী।

চার দিনের কর্মবিরতিতে বিচারপ্রার্থীরা জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আদালতে এসে নিরাশ হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। আইনজীবী সমিতি জানিয়েছে, প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫ হাজার বিচারপ্রার্থী সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। গত চার দিনের হিসাবে ৪০ থেকে ৬০ হাজার বিচারপ্রার্থী দুর্ভোগে পড়েছেন। সোমবার বেলা তিনটায় আইনজীবী সমিতির সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাধারণ সভায় কর্মবিরতির মেয়াদ আরও তিনদিন বৃদ্ধিসহ আনুসাঙ্গিক সিদ্ধান্ত করা হয়েছে।

জানা গেছে, গত ১ ডিসেম্বর শীতকালীন ছুটির আগে আদালতের শেষ কার্যদিবস ছিল। ওই দিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ ফারুকের আদালতে তিনটি মামলা গ্রহণ করা হয়নি। জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বিচারককে মামলা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। তখন বিচারক তাঁদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
ছুটি শেষে ২৬ ডিসেম্বর জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যকরী পরিষদের সভায় মোহাম্মদ ফারুকের আদালত বর্জনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ১ জানুয়ারি মোহাম্মদ ফারুকের আদালত বর্জন করেন আইনজীবীরা। এরপর ২ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর এজলাস চলাকালে বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের সঙ্গে আইনজীবীদের বাদানুবাদের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ৩ জানুয়ারি জেলা জজ শারমিন নিগারের কক্ষে সব বিচারক সভা করেন। এতে আদালতের বিচারক কার্যক্রম দুপুর পৌনে ১২টার দিকে শুরু হয়। বেলা সাড়ে ১০টার দিকে আইনজীবীরা জেলা জজ শারমিন নিগারের আদালত এলাকার সামনে জড়ো হয়ে হইহুল্লোড় শুরু করেন। মুঠোফোনে এসব ভিডিও করতে এসে আইনজীবীদের হাতে লাঞ্ছিত হন আদালতের কর্মচারী মেহেদী হাসান।
৪ জানুয়ারি বিচার বিভাগীয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন আদালতের সব এজলাসের দরজা ও প্রধান ফটকে তালা দিয়ে কর্মবিরতি পালন শুরু করে। একই দিন আগের ঘটনা ও কর্মচারীদের কর্মবিরতির প্রতিবাদে বিক্ষোভ করে দুই বিচারকের অপসারণ ও নাজিরের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি জানান আইনজীবীরা। ৫ জানুয়ারি সকালে কর্মচারীরা তাঁদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেন।

এদিনই (৫ জানুয়ারি) আইনজীবীরা তিন কার্যদিবসের কর্মবিরতির ডাক দেন, যা গতকাল সোমবার পর্যন্ত চলেছে। গত বুধ থেকে রোববার পর্যন্ত সরেজমিন আদালতে অবস্থান করে বিচারপ্রার্থী মানুষদের শীত উপেক্ষা করে আদালতে হাজির হয়ে হতাশা ও ক্ষোভ নিয়ে বাড়ি ফিরে যেতে দেখা গেছে।

এ ব্যাপারে জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বাবুল বলেন, আমরা আরো তিনদিনের কর্মবিরতির কর্মসূচী দিয়েছি। আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চলবে। তিনি বলেন, আমাদের দাবি জেলা জজ শারমিন নিগার মহোদয়, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের -১ বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ ফারুকের অপসারণসহ নাজির মুমিনুল ইসলামের (বর্তমানে প্রেষণে ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালের সেরেস্তাদার) দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি। আমাদের দাবি এখনো আদায় হয়নি তাই আমরা আমাদের কর্মসূচী আরো তিনদিন বাড়িয়েছি। আমরা আশা করি জেলা জজ মহোদয় এবং নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সাত শতাধিক আইনজীবীর ভবিষ্যত ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সকল বিচার প্রার্থী মানুষের কথা চিন্তা করে তারা ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে সরে যাবেন। আমারা এই সমস্যা নিরসণের জন্য মাননীয় আইনমন্ত্রী অ্যাডভোটে আনিসুল হক ও আইন সচিব মোঃ গোলাম সারওয়ার মহোদয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছি।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট তানভীর ভুইয়া বলেন, তৃতীয় দিনের মত আমাদের কোর্ট বর্জন কর্মসূচী পালিত হয়েছে। ৩ কার্য দিবসের কর্মসূচী চলাকালে আমাদের দাবী আদায় না হওয়ায় আমরা আমাদের আদালত বর্জন কর্মসূচী আরো ৩ দিন বৃদ্ধি করেছি। দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।