অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জনগণের আস্থা ও ভরসা সেনাবাহিনীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাংলাদেশের সেনাবাহিনী তাদের কর্মদক্ষতা দিয়ে তা অর্জন করেছে।
তিনি বলেন, যেকোনো সেনাবাহিনীর জন্য আস্থা ও আত্মবিশ্বাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আস্থা ও আত্মবিশ্বাস না থাকলে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা যায় না। আজ আমি বলতে পারি আমাদের সেনাবাহিনীর ওপর জনগণের আস্থা ও ভরসা আছে।
আজ ২২ জুলাই শনিবার ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে সেনা নির্বাচন বোর্ড (প্রথম পর্যায়) ২০২৩ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জনগণের বাহিনী। তারা সবসময় দেশের জনগণের পাশে থাকে এবং যেকোনো দুর্যোগে অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সেনাবাহিনীর সরাসরি সম্পৃক্ততার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অবকাঠামো উন্নয়ন থেকে শুরু করে সর্বত্র তারা কাজ করছে।
তিনি বলেন, সেনাবাহিনী অনেক বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। তাই আমরা নিশ্চিত যে কাজগুলো গুণগত মান নিশ্চিত করে দ্রুততার সঙ্গেই সম্পন্ন হবে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি উদ্ধৃতি উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, বঙ্গবন্ধু সেনাবাহিনীকে বলেছিলেন- আমাদের সেনাবাহিনী হবে জনগণের সেনাবাহিনী।
এ পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জনগণের সেনাবাহিনী হিসেবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা।
তিনি বাংলাদেশ সেনা নির্বাচন বোর্ড-২০২৩-কে নিরপেক্ষ মূল্যায়নের মাধ্যমে পদোন্নতির জন্য যোগ্য ও বিচক্ষণ কর্মকর্তাদের বাছাই করতে বলেন।
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, আপনাদের পেশাদার যোগ্যতা বিবেচনা করে এটি করা উচিত। যৌক্তিক এবং বৈজ্ঞানিক উপায়ে তুলনামূলক মূল্যায়ন করা উচিত
তিনি আরও বলেন, এ ছাড়া অফিসারদের কমান্ড দেওয়ার দক্ষতা বা (বিশেষ পরিস্থিতিতে) দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা আছে কিনা- সেদিকে আপনাদের মনোযোগ দিতে হবে।
পদোন্নতির জন্য যোগ্য কর্মকর্তাদের বাছাই করার জন্য নির্বাচন বোর্ড সততা ও সঠিক বিচারের সঙ্গে পবিত্র দায়িত্ব পালন করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, মাঠের কাজে তাদের অভিজ্ঞতা এবং তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার এবং তাৎক্ষণিকভাবে সরঞ্জামাদি ব্যবহার করার ক্ষমতা বিবেচনা করুন। আমরা চাই আপনি নিরপেক্ষ মূল্যায়নের মাধ্যমে ভবিষ্যতের নেতৃত্বের (বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে) কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দিন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের অতন্ত্র প্রহরী হিসেবে আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ শান্তিতে বিশ্বাসী বলে কারও সঙ্গে যুদ্ধে জড়াতে চায় না। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ উন্নয়নের পূর্বশর্ত।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রশংসা করে শেখ হাসিনা বলেন, সেনাবাহিনী যেকোনো দুর্যোগ ও সংকটময় সময়ে জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করছে।
তিনি বলেন, আমাদের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী সবসময় দেশের মানুষের পাশে আছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
সৌদি আরবে পবিত্র মক্কায় ওমরাহ শেষে ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের নিহত তিন বাংলাদেশির পরিবারে চলছে শোকের মাতম। সন্তান, নাতি-নাতনিকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে বৃদ্ধা মা আলেয়া বেগম। শুধু অবাক চোখে চেয়ে রয়েছেন ছেলে, নাতি-নাতনির ছবির দিকে; আর তার দুই চোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে পানি।
সরেজমিনে আজ ৬ আগস্ট রবিবার নিহত মোবারক হোসেনের শহরের দক্ষিণ ঝিলটুলীর বাড়ীতে গিয়ে দেখা যায়, সন্তান, নাতি-নাতনিকে হারিয়ে বৃদ্ধা আলেয়া বেগমের শুধু চোখ বেয়ে পানি ঝড়ছে। অসুস্থ আলেয়া বেগম কোনো কথাই বলতে পারছেন না। মোবাইলে ছেলে, নাতি নাতনিদের ছবির দিকে চেয়ে আছেন। এ ছাড়া বড় ভাইকে হারিয়ে ভাই-বোনদের আহাজারিতে পরিবেশ ভারি হয়ে উঠেছে।
সৌদি আরবে পবিত্র মক্কায় ওমরাহ পালন শেষে দাম্মামে নিজ বাড়িতে ফেরার পথে আরবের আল-কাসিম এলাকায় ৫ আগষ্ট বাংলাদেশ সময় দুপুর ১টার দিকে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের তিন বাংলাদেশি মারা যান। নিহতরা হলেন মোবারক হোসেন (৪৮), তার ছেলে তানজিল আব্দুল্লাহ মাহি (১৫) ও মেয়ে মাহিয়া (১৩)। মাহি ওই দেশের নবম শ্রেণিতে ও মাহিয়া সপ্তম শ্রেণিতে পড়ালেখা করতো।
একই সময় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হন মোবারক হোসেনের স্ত্রী শিখা আক্তার (৪০) ও বড় মেয়ে মিথিলা ফারজানা মীম (১৯)। উচ্চ শিক্ষার জন্য চলতি মাসের ২৩ তারিখ মীমের কানাডা যাওয়ার কথা ছিল। তারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুর শহরের দক্ষিণ ঝিলটুলিতে ২০০৬ সাল থেকে বসবাস করে আসছেন শেখ মোহাম্মদ আলী। তিনি ৫ ছেলে ও ৩ মেয়ের জনক। ভাই বোনদের মধ্যে দ্বিতীয় মোবারক হোসেন।
পরিবার সূত্রে আরও জানা যায়, মোবারক হোসেন দারিদ্রতা ঘুচাতে বিশ বছর আগে পাড়ী জমান সৌদি আরবে। এরপর দুই ভাইকে নিয়েছেন সৌদি এবং এক ভাইকে পাঠিয়েছেন দুবাইয়ে। মোবারক হোসেন স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়েকে নিয়ে সৌদি আরবের দাম্মাম শহরে বসবাস করতেন। সেখানে তার কার রিপেয়ার শপ (গাড়ী মেরামতের দোকান) রয়েছে।
মোবারক হোসেনের ছোট ভাই জাহাঙ্গির হোসেন বলেন, ৬ মাস আগে বড়ভাই ও তার স্ত্রী সন্তান দেশে এসে কিছুদিন থেকে পুনরায় সৌদি চলে যান। ভাইয়ের বড় মেয়ে মিথিলা ফারজানা মীমের ২৩ আগস্ট উচ্চ শিক্ষার জন্য কানাডায় যাওয়ার কথা ছিল। এ কারণে স্ত্রী, ছেলে ও দুই মেয়েকে নিয়ে ওমরাহ করতে যান তিনি। ফেরার পথে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
মোবারক হোসেনের বাবা শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, আমার মোবারকের জন্যই আজ আমাদের অবস্থার উন্নতি। কি করলে আমরা একটু ভালো থাকবো, সব সময় ওর মাথায় এই চিন্তাই থাকতো। বলতো আব্বা আপনি কোনো চিন্তা করবেন না, যখন যা লাগবে আমাকে জানাবেন। আমার কোনো কিছুই চাওয়া লাগতো না ওর কাছে।
তিনি বলেন, সংবাদ পাওয়ার পর আমার ছেলের শ্যালক সৌদি চলে গেছেন। আমার ছেলে, নাতি-নাতনিদের মরদেহ দেশে আনার কথা বলেছি। ওদের এক নজর শেষ দেখা দেখতে চাই। সরকার যেন আমার ছেলে ও নাতিদের মরহেদ দেশে আনার ব্যবস্থা করেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে আম পাড়তে গিয়ে গাছ থেকে পড়ে দিপু মিয়া (৩৮) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। আজ ১০ মে বুধবার বিকেলে পৌর শহরের জগন্নাথপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। দিপু মিয়া পৌর শহরের জগন্নাথপুর এলাকার নোয়াজ ব্যাপারীর বাড়ির সিরাফ মিয়ার ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ দুপুরে বিনিবাজারে তার বাড়ির পাশের আম গাছে ওঠেন আম পারার জন্য। কয়েকটি আম পাড়ার পর এক ডাল থেকে অন্য ডালে পা রাখা অবস্থায় ডাল ভেঙ্গে মাটিতে পড়ে যান। এতে মাথায় আঘাত পেয়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
ভৈরব থানার ওসি মোহাম্মদ মাকছুদুল আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘আমরা শুনেছি যে আম পাড়তে গিয়ে দিপু নামে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে এ ব্যাপারে কারো কোনো অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি।’
অনলাইন ডেস্ক :
সাংবাদিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অনিবন্ধিত অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
আজ ২০ এপ্রিল শনিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সৈয়দ শুকুর আলী শুভ, আর সঞ্চালনা করেন ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে প্রতিষ্ঠিত গণমাধ্যমের ২১৩টি অনলাইন আছে আর অনিবন্ধিত অনলাইন আছে ২১৩টি।
অর্থাৎ মোট ৪২৬ অনলাইন আছে। বেশ কিছু নিউজ পোর্টাল নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে। এর বাইরে মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সবগুলো নিউজ পোর্টালের তালিকা করা হয়েছে। নিবন্ধন ও আবেদনের বাইরে থাকা পোর্টালগুলো বন্ধ করে দেওয়ার জন্য তালিকা বিটিআরসিতে পাঠানো হচ্ছে।
এর বাইরে যতগুলো অনলাইন নিউজ পোর্টাল আছে, যেগুলো অনিবন্ধিত, সেগুলো বন্ধ করে দেওয়ার দাবি ছিল সাংবাদিকদের। অনলাইন গণমাধ্যমের কমিটি, প্রেস ক্লাবসহ অন্যান্য সাংবাদিক সংগঠনও একই দাবি করেছে। সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে তথ্য প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, তারপর নতুন করে যারা আবেদন করবে, তখন তা চালু হবে।
আবেদন না করলে চালু হবে না। আবেদন করলে নিবন্ধন পাওয়ার আগ পর্যন্ত চালু থাকবে। কারণ তাকে চলতে হবে, দেখতে হবে যে কেমন হচ্ছে। তারপর যদি ছাড়পত্র না হয়, তখন আবার বন্ধ। কিন্তু আবেদন করল না, কোনো প্রক্রিয়ায় যায়নি, সেগুলো যদি চলে, সেখানে যদি অসত্য ও অপতথ্যের মাধ্যমের চকটদার খবর দেওয়া হয়, তাহলে সেই ধরনের সাংবাদিকতা পেশাদারির সঙ্গে যাঁরা সাংবাদিকতা করছেন, তাঁদের ক্ষতিগ্রস্ত করে।
তাই সাংবাদিকদের সুরক্ষার স্বার্থে, সাংবাদিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের মতামত নিয়ে প্রস্তাবিত গণমাধ্যমকর্মী আইন দ্রুত সময়ের মধ্যে পাস করা হবে। সাংবাদিকতার জন্য চমৎকার পরিবেশ তৈরি করতে চাই। তথ্যপ্রবাহকে অবারিত করতে চাই। মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার হিসেবে মুক্ত গণমাধ্যমের পরিবেশ তৈরি করতে চাই।
তথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে দেশে কিছুটা অনীহা রয়েছে বলে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘তথ্য চাওয়া হলে তথ্য দিতে হবে। সেটাই করার জন্য আমরা মন্ত্রীসহ প্রশাসনের সবাইকে নিয়ে কাজ করছি। কারণ তথ্য না থাকলে অপ্রচারের সুযোগ তৈরি হয়। অসত্য তথ্য দিয়ে যারা সরকারের সমালোচনা ও অপ্রচার করে তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য আহ্বান জানান মন্ত্রী।’
এ সময় সাংবাদিকদের কল্যাণ ফান্ডে ৬০ কোটি টাকা রয়েছে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।
চলারপথে ডেস্ক :
আসন্ন রমজানে প্রায় এক কোটি মানুষকে খাদ্য সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আজ ২৩ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার গাজীপুরে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের ৫০ বছরপূর্তি উদযাপন ও ‘বঙ্গবন্ধু-পিয়েরে ট্রুডো কৃষি প্রযুক্তিকেন্দ্র’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘রমজানের সময় আমরা প্রায় এক কোটি মানুষকে খাদ্য সহায়তা দেবো, সেই সিদ্ধান্ত আমরা নিয়েছি। যাতে দেশের মানুষের কখনো খাদ্যে কষ্ট না পায় সেটাই আমাদের লক্ষ্য। ’
দরিদ্র মানুষের জন্য সরকারের বিভিন্ন সহায়তা কর্মসূচির কথা উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আপনারা জানেন আমাদের দেশে যারা হতদরিদ্র তাদেরকে আমরা প্রতিমাসে ৩০ কেজি করে চাল দিচ্ছি। এই চালের সঙ্গে আমরা পুষ্টি চালও মিশিয়ে দিচ্ছি যাতে তাদের পুষ্টিহীনতা না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রেখে। ’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের সময়ে আমরা নগদ অর্থ সহায়তা দিয়েছি। ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ, স্যাংশন, পাল্টা স্যাংশনের ফলে বিশ্বব্যাপী যখন মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে আমরা আমাদের দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রায় এক কোটি মানুষকে ৩০ টাকা কেজিতে চাল দিতে টিসিবি কার্ড বিতরণ করেছি। তার থেকেও যারা নিম্নবিত্ত, তারা ১৫ টাকায করে কেজিতে চাল নিতে পারবে আমরা সেই ব্যবস্থা প্রায় ৫০ লাখ মানুষের জন্য করেছি। ’
নিজে ফসল ফলানো গর্বের
স্কুল জীবন থেকে শিক্ষার্থীদের কৃষি কাজে সম্পৃক্ত করার ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কৃষিতে আমাদের যুব সমাজকে আরও বেশি সম্পৃক্ত করা দরকার। আমার মনে হয় স্কুলজীবন থেকেই সম্পৃক্ত করা দরকার। মাঠে কাজ করা, ফসল ফলানো এটা অত্যন্ত গৌরবের বিষয়, লজ্জার বিষয় না। কাজেই সেভাবেই আমাদের দেশের মানুষকে গড়ে তুলতে হবে। ’
কৃষি নিয়ে শিক্ষিত যুবকদের মানসিকতা বদলেছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে আমি সত্যি খুব আনন্দিত। অনেক ছেলেমেয়ে লেখাপড়া শিখে মাঠে যেতে চায় না, এমনও ছিল যে, বাবা কৃষক সেটা বলতেও লজ্জা পেতো। আজকে কিন্তু সেই লজ্জাটা আর নাই, সেই লজ্জাটা আমরা ভেঙে দিয়েছি। ’
তিনি বলেন, ‘যেটা খেয়ে আমাদের জীবন বাঁচে, সেই কাজ করাটা লজ্জার না। সেই কাজ করাটা গর্বের। কাজেই মানসিকতার পরিবর্তন করা একান্ত প্রয়োজন। সেটাও আজকে অনেকটা পরিবর্তন হয়েছে বলে আমি বিশ্বাস করি। ’
(প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেও তার সরকারি বাসভবন গণভবনে বিভিন্ন প্রজাতির ধান, সরিষা, মধু, প্রায় সব ধরনের শাক-সবজি, ফলমূল, হাঁস-মুরগি, কবুতর, গরু, মাছ চাষ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। )
আরও গবেষণা বাড়াতে হবে
কৃষিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গবেষণা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি সব সময় মনে করি গবেষণা ছাড়া কখনো উৎকর্ষ সাধন করা যায় না। আর যেহেতু কৃষিনির্ভর দেশ, আমরা গবেষণার ওপর বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। পাশাপাশি আমরা স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বিজ্ঞান সেগুলো গবেষণার ওপর গুরুত্ব দিয়েছি। ’
তিনি বলেন, ‘একটা কথা মনে রাখতে হবে ভৌগলিক অবস্থানের কারণে সব সময় জলবায়ু পরিবর্তনজনিত আঘাত আমাদের ওপর আসে। সেজন্য গবেষণা সবসময় অব্যাহত রাখতে হবে এবং এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের ফসল উৎপাদন করতে হবে। শুধু ধান উৎপাদন নয়, ধানের সঙ্গে আমাদের তরকারি, ফলমূল সবকিছু উৎপাদনে বাংলাদেশ একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। ’
কৃষি যান্ত্রিকীকরণে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কৃষি যান্ত্রিকীকরণের কথা স্বাধীনতার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু সব সময় বলে গেছেন এবং ব্যবস্থা নিয়েছিলেন। আজকে আমরা সে ব্যাপারে যথেষ্ট এগিয়ে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে আমরা যান্ত্রিকীকরণের জন্য বিশেষ বরাদ্দ দিচ্ছি, ভর্তুকি দিচ্ছি, উপকূল অঞ্চলে প্রায় ৭০ শতাংশ আমরা ভর্তুকি দিই এবং অন্যান্য অঞ্চলে ৫০ শতাংশ ভর্তুকি। ’
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছি। সেজন্য দক্ষ মানবশক্তি তৈরি করতে আমরা ইতোমধ্যেই পদক্ষেপ নিয়েছি। বিশ্বে নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন হচ্ছে, আমাদেরও সেসঙ্গে তাল মিলিয়ে নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে হবে। ’
এর আগে গাজীপুরের বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটে ‘বঙ্গবন্ধু-পিয়েরে ট্রুডো কৃষিপ্রযুক্তি কেন্দ্র’র উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
উদ্বোধনের পর তিনি বঙ্গবন্ধু-পিয়েরে ট্রুডো কৃষিপ্রযুক্তি কেন্দ্রের বিভিন্ন উদ্ভাবন ঘুরে ঘুরে দেখেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ওয়াহিদা আক্তার, ইন্টারন্যাশনাল রাইস রিসার্স ইনস্টিটিউটের (আইআরআরআই) মহাপরিচালক জেইন বালিই, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, কানাডার গ্লোবাল ইনস্টিটিউট অব ফুড সিকিউরিটির (সিইইউ) নির্বাহী পরিচালক ড. স্টেভিন ওয়েব, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. শাহজাহান কবির।
উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল।
চলারপথে রিপোর্ট :
বগুড়ায় বেশি দামে ডাব বিক্রি করায় চার ব্যবসায়ীকে সাড়ে সাত হাজার টাকা জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। আজ ২৬ আগস্ট শনিবার বেলা ১২টায় শহরের কালিতলা ও জজকোর্ট চত্বর এলাকায় এ জরিমানা করা হয়।
অভিযানে কালিতলায় এক পাইকারী ব্যবসায়ীকে পাঁচ হাজার, লাইন বাজারে দুইজন ব্যবসায়ীকে ২ হাজার এবং জজকোর্ট চত্বরে এক খুচরা ডাব বিক্রেতাকে ৫০০ টাকাসহ মোট সাড়ে ৭ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বগুড়া জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক ইফতেখারুল আলম রিজভী জানান, বগুড়া শহরে চড়া দামে ব্যবসায়ীরা ডাব বিক্রি করছেন এমন সংবাদে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। সদরের কালিতলা ও জজকোর্ট এলাকায় পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতারা ইচ্ছে মতো দামে ডাব বিক্রি করছেন। ৫০ থেকে ৬০ টাকার দরের ডাব ১৮০ থেকে ২০০ টাকা দরে বিক্রি করছেন তারা। সঠিক মূল্যে ডাব বিক্রি ও ভাউচার সংরক্ষণ করতে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হয়। অভিযানে পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।