চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়া-লাকসাম ডুয়েল গেজ ডাবল রেললাইন নির্মাণ এবং আখাউড়া রেলওয়ে ষ্টেশনের উন্নয়ন কাজে ব্যবহারের জন্য আখাউড়ায় রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে বিশাল জায়গা জুরে ইট ভেঙ্গে সুরকি করা হচ্ছে।
বছর খানেক আগে স্কুলের সামনের পুকুরটি ভরাট করে সেখানে ইট ভাঙ্গার কাজ শুরু করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ইট ভাঙ্গা হয়। এসব ইটের কনা, ধুলাবালি, বাতাসে মিশে বাতাসকে দূষিত করছে।
এসব দূষিত বাতাস আর ধুলাবালি নিঃশ্বাসের মাধ্যমে গ্রহণ করছে শিক্ষার্থীরা। শ্রেণী কক্ষের চেয়ার টেবিলে জমছে ধুলাবালি। ধুলাবালিতে কাপড়-চোপড় ময়লা হচ্ছে। এক অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পড়ালেখা করছে বিদ্যালয়ের প্রায় ১ হাজার ছাত্রছাত্রী। বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে এ ব্যাপারে অবগত করা হলেও সর্তকর্তামূলক কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।
সরজমিনে রেলওয়ে স্কুলে গিয়ে যায়, বিদ্যালয় মাঠের সামান্য দূরে মেশিন দিয়ে ইট ভাঙ্গার কাজ চলছে। শ্রমিকরা ইট ভেঙ্গে সুরকি করে স্তুপ আকারে রাখছে। পাশের রাস্তায় দিয়ে পথচারীসহ ছাত্রছাত্রীরা নাকে হাত চাপা দিয়ে যাতায়াত করছে। ভাঙ্গা ধুলিকনা বাতাসে মিশে চোখে মুখে লাগছে। বিদ্যালয়ের বাড়ান্দায় ধুলাবালু জমে আছে।
এ ব্যাপারে রেলওয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোঃ আসাদুজ্জামান খান বলেন, ধুলাবালির কারণে ছাত্রছাত্রীদের খুব অসুবিধা হচ্ছে। মেয়েরা বমি বমি ভাব হয়। তাদের মাথা ব্যথা হয়। ক্লাশ রুমে বসে থাকা দূর্বিষহ হয়ে পড়েছে। শ্বাস প্রশ্বাস গ্রহণে অসুবিধা হয়।
বিষয়টি ঠিকাদারের লোকজনকে বলার পরও কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না। তিনি ইট ভাঙ্গা বন্ধ করার দাবী জানান।
জানতে চাইলে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা বলেন, ধুলিকানা বাতাসে মিশে বায়ুদুষণ হচ্ছে। নিঃশ্বাসের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীরা এসব দুষিত বাতাস গ্রহণ করছে। এতে ফুসফুস জনিত প্রদাহ, শ্বাসকষ্ট জনিত রোগ হতে পারে। অনেকের ধুলাবালুতে এলার্জি থাকে। তাদের হাঁচি-কাশি হতে পারে।
এ ব্যপারে জানতে চাইলে আখাউড়া-লাকসাম ডুয়েল গেজ ডাবল রেল লাইন প্রকল্পের উর্ধতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (ওয়ার্কস) মোঃ আব্দুল্লাহ বলেন, ছাত্রছাত্রীদের অসুবিধার হওয়ার বিষয়টি আমি আপনাদের মাধ্যমে জানলাম। আমি সরজমিনে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় ভোটের লড়াইয়ে আপন দুই ভাই একে অপরের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। পৌর শহরের খড়মপুরস্থ প্রখ্যাত আওলিয়া কল্লা শহীদ (র.) মাজার শরীফ পরিচালনা কমিটির নির্বাচনে উত্তর পাড়া থেকে সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন দুই সহোদর।
তারা হলেন বড় ভাই মোঃ মলিন খাদেম (আনারস) ও ছোট ভাই মোঃ খোকন খাদেম (মোরগ)। খোকন খাদেম বর্তমানে কমিটির সদস্য।
একই পদে দুই ভাই প্রার্থী হওয়ায় এলাকায় ভোটারদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। আগামী ২৪ নভেম্বর ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
মাজার কমিটি সূত্রে জানা গেছে, কল্লা শহীদ (র.) মাজারটি বাংলাদেশ ওয়াকফ্ এস্টেট এর তালিকাভুক্ত একটি দরগাহ শরীফ। ই. সি. নং ৪৫৬৬। ২৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি মাজার পরিচালনা করে। পদাধিকার বলে জেলা প্রশাসক ওই কমিটির সভাপতি এবং আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিনিয়র-সহ সভাপতি। গ্রামের ৭টি পাড়া থেকে ৪২ জন প্রার্থী হয়েছেন। প্রত্যেক পাড়া থেকে ৩ জন করে ২১ জন সদস্য নির্বাচন করবেন ভোটাররা। পরবর্তীতে সদস্যের ভোটে একজন সাধারণ সম্পাদক ও একজন সহ-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়। ওয়াকফ প্রশাসকের সুপারিশক্রমে ২ জন সদস্য মনোনয়ন দেওয়া হয়। কমিটির মেয়াদ ৩ বছর।
এদিকে মাজার কমিটির নির্বাচনে আপন দুই ভাই প্রার্থী হওয়ার আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণ ভোটারদের ভাষ্য, একই পরিবার থেকে দু’জন প্রার্থী হওয়ায় বিষয়টি অশোভন দেখাচ্ছে। এতে তাদের নিজেদের ভোট ভাগাভাগি হয়ে যাবে। ভোটাররাও বিভ্রান্ত হবে। দুই ভাইয়ের দ্বন্দ্বের সুযোগ নিবে অন্যান্য প্রার্থীরা। ফলে নির্বাচনে জয়লাভ করা উভয়ের জন্য কঠিন হবে। কিন্তু এক ভাই প্রার্থী হলে দুই ভাইয়ের সম্বলিত শক্তিতে জয়লাভ করা সহজ হতো।
উত্তর পাড়া থেকে অপর প্রার্থীরা হলেন মোঃ কামরুল হাসান (দেয়াল ঘড়ি), মোঃ বাহাদুর খাদেম (চশমা), রোজবেল খাদেম (আম), সাকির খাদেম (হারিকেন) ও জাকির খাদেম (কলস)।
এদিকে প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই সরগরম খড়মপুরের পাড়া মহল্লা। প্রার্থীদের ছবি ও প্রতীক সম্বলিত মিনি পোষ্টারে ছেয়ে গেছে গ্রামের পাড়া মহল্লা। বাসা বাড়ির দেয়াল, বিদ্যুতের খুঁটি ও দোকান-পাটে প্রার্থীদের পোস্টার লাগানো হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও চলছে প্রচার প্রচারণা। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন প্রার্থীরা। নিজ নিজ প্রতীকে ভোট চাচ্ছেন ভোটারদের কাছে।
জানতে চাইলে, মলিন খাদেম বলেন, দুই ভাই নির্বাচন করলেও সমস্যা নাই। ভোটাররা যাকে যোগ্য মনে করবেন তাকে ভোট দিবেন।
অপর দিকে ছোট ভাই মোঃ খোকন খাদেম বলেন, কেউ ষড়যন্ত্র করে বড় ভাইকে প্রার্থী করেছে। তবে আমি সব সময় পাড়ার মানুষের সুখে-দুঃখে পাশে ছিলাম। আশা করি ভোটাররা আমাকে মূল্যায়ন করবেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
সরকারের নতুন মন্ত্রিসভায় আবারও আইন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (আখাউড়া-কসবা) আসনের সংসদ সদস্য আনিসুল হক।
আজ ১১ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মন্ত্রিপরিষদ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, আনিসুল হক বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা, জাতীয় চারনেতা হত্যা মামলার প্রধান কৌশলী। এ ছাড়া, বিডিআর হত্যা মামলা, দুদকের মামলাসহ রাষ্ট্রীয় অনেক গুরুত্বপূর্ণ মামলা পরিচালনা করেছেন। ক্লিন ইমেজের মানুষ হিসেবে পরিচিত আনিসুল হক বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
আনিসুল হকের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার পানিয়ারুপ গ্রামে। তিনি সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী। আনিসুল হকের প্রয়াত পিতা সিরাজুল হক ওরফে বাচ্চু ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য ও বঙ্গবন্ধুর পরিবারের ঘনিষ্ঠজন। আনিসুল হকের বাবা-মা দু’জনই মুক্তিযোদ্ধা।
চলারপথে রিপোর্ট :
গ্রীষ্ম আসার আগেই এর প্রভাব পড়লো রেললাইনে। গরমের কারণে সিলেট-ঢাকা পথের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার আজমপুর স্টেশনের অনতিদূরে ৩ মার্চ রবিবার দুপুরে ১৫ ফুট রেল লাইন বাঁকা হয়ে যায়। সংশ্লিষ্টরা খবর পেয়ে সেটি মেরামত করে দেন। তবে ওই সময়ে কোনো ট্রেন না থাকায় চলাচালে কোনো ধরণের ব্যাঘাত ঘটেনি বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র দাবি করেছে।
আখাউড়া রেলওয়ে জংশনের সহকারি নির্বাহী প্রকৌশলী (এইএন) মো. মেহেদী হাসান তারেক জানান, আজমপুর-মুকুন্দপুর সেকশনে ১৫ ফুটের মতো লাইন বাঁকা হয়ে যায়। রেলপথে দায়িত্বে থাকা লোকজন বেলা দুইটার দিকে বিষয়টি জানালে তাৎক্ষণিক ভাবে মেরামত করা হয়। তিনি বলেন, এখনো তেমন গরম পড়েনি। তবে কম গরমেও রেল লাইন বাঁকা হতে পারে। এখন গাড়ির গতি বাড়ানো হয়েছে। যেসব জায়গায় বাঁক আছে সেখানে কম গরমেও লাইন বাঁকা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
চলারপথে রিপোর্ট :
বরাবরের মতো ব্যতিক্রম আয়োজনের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠা বার্ষীকি উদযাপন করেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ার স্বেচ্ছায় রক্তদানের সংগঠন আত্মীয়। ষষ্ঠ বছরে পদার্পন উপলক্ষে ২ শতাধিক শিশ এবং বয়স্ক মানুষকে নতুন কাপড় উপহার দিয়েছে মানবিক এ সংগঠনটি। আজ ১৭ আগস্ট বৃহস্পতিবার বিকালে আখাউড়া উত্তর ইউনিয়নের ৫ টি আশ্রয়ন প্রকল্পে এসব উপহার দেয়া হয়। নতুন কাপড় পেয়ে খুশি ছোট্ট সোনামণিরা। আয়োজনে সহযোগিতায় ছিল তৈরি পোশাক বিক্রয় প্রতিষ্ঠান বেবি এন্ড মমস।
এ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বিকেলে আজমপুর লিচু বাগানে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
আত্মীয়ের প্রতিষ্ঠাতা সমীর চক্রবর্তীর সঞ্চালনায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আখাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন বাবুল, আখাউড়া উত্তর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ শাহজাহান, শিক্ষক নেতা মৌসুমী আক্তার, পৌর কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী,
উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন বেগ শাপলু, বেবি এন্ড মমসের স্বত্বাধিকারী মারজান উল করিম সুজন, আত্মীয়ের সমন্বয়ক সুজন সাহা, হৃদয় দেব, ইমদাদ কিবরিয়া, মিনহাজ মুনতাসীর প্রীতম, আকিব চৌধুরী, কাজী রুবেল প্রমুখ।
উল্লেখ, ২০১৮ সালে কলেজ বিশ্ববিদ্যালে অধ্যয়নরত ছাত্রদের একদল স্বপ্নবাজ তরুনদের সমন্বয়ে আত্মীয় প্রতিষ্ঠিত হয়। সখগঠনের নিবন্ধিত রক্তদাতা প্রায় ২ হাজার।
গত ছয় বছরে সহস্রাধিক মানুষকে বিনামূল্যে রক্ত দিয়েছে সংগঠনের রক্তবীরেরা। রক্তদানসহ সামাজিক নানা কাজে প্রশংসা কুড়িয়েছে আত্মীয়।