চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অনুমোদনবিহীনভাবে বহুতল বিশিষ্ট ইমারত নির্মাণের দায়ে দুই ইমারত মালিককে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
আজ ২৪ জুলাই সোমবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর শহরের কালাইশ্রীপাড়া ও লোকনাথ উদ্যানের (ট্যাংকেরপাড়) এলাকায় পৃথক অভিযান পরিচালনা করে এই জরিমানা করা হয়।
এ ব্যাপারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ মোশারফ হোসেন বলেন, পৌরসভা থেকে ৬তলা ভবন নির্মানের অনুমতি নিয়ে কালাইশ্রীপাড়ার এক বাসিন্দা ৭ তলার ভবন নির্মান করায় এবং পৌর সভার কোন ধরনের অনুমতি না নিয়ে লোকনাথ উদ্যানের (ট্যাংকেরপাড়) পশ্চিমপাড় এলাকায় ৫তলা ভবন নির্মাণ করায় ইমারত নির্মান বিধিমালা আইনের বিভিন্ন ধারায় দুই ভবন মালিককে ৫ লাখ টাকা করে মোট ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
তিনি বলেন, অনুমোদনহীন ভবন নির্মাণের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যাহত থাকবে। অভিযানকালে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ফয়সাল আহমেদ ও সদর মডেল থানার পুলিশ উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ১৪জন ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমান দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
গতকাল শুক্রবার রাত দেড়টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের শিমরাইলকান্দি এলাকার রেললাইন সংলগ্ন তুলা গাছের (গাছ তলা) কাছ থেকে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার রামরাইল গ্রামের সাচ্চু মিয়ার ছেলে রিয়াদুল ইসলাম ওরফে রিয়াদ (২২), হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার খসরু মিয়ার ছেলে মোঃ মামুন (২১), ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার শ্যামবাড়ির মোঃ মনির মিয়ার ছেলে মোঃ আকাশ মিয়া (২০), শহরের কান্দিপাড়ার শফিক মিয়ার ছেলে মোঃ সাইমন (১৮), একই এলাকার করিম মিয়ার ছেলে মোঃ বিজয় মিয়া-(১৮), একই এলাকার সুজন মিয়ার ছেলে মোঃ পিয়াস (১৯),শহরের শিমরাইল কান্দি গ্রামের মৃত শেখ বাবর আলীর ছেলে শেখ সরোয়ার আলম ওরফে হৃদয় (৩২), শহরের পাইকপাড়ার আবদু রউফের ছেলে রাকিব-(২৪), আখাউড়া উপজেলার দেবগ্রামের মৃত সানি উদ্দিনের ছেলে তামাজ দেওয়ান (১৮), একই উপজেলার গাজীর বাজারের মৃত হান্নান মিয়ার ছেলে মোঃ সজীব মিয়া (২৩), নাসিরনগর উপজেলার আলিয়ারা গ্রামের আলাউদ্দিনের ছেলে সাহাবুদ্দীন (১৮), একই উপজেলার চাতলপাড় গ্রামের সাহাব উদ্দিনের ছেলে মোঃ খায়রুল (১৮), নবীনগর উপজেলার বাঘাউড়া গ্রামের নূরুল ইসলামের ছেলে সাইফুল ইসলাম (২৭) ও সদর উপজেলার মজলিশপুর গ্রামের বাছির মিয়ার ছেলে রিংকন মিয়া (২০)।
এ সময় তাদের কাছ থেকে ১টি দা, ১টি ডেগার, ১টি স্টিলের ছুরি, ২টি স্টীলের পাইপ, ২টি সুইচ গিয়ার, ৩টি লোহার রড, ৩টি কাঠের লাঠি, ১টি স্টিলের মাল্টি টোল প্লাস কাটার উদ্ধার করা হয়।
এ ব্যাপারে সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ এমরানুল ইসলাম বলেন, ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ১৪ ডাকাতকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমান দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আজ ৩ জুন শনিবার দুপুরে তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অবৈধভাবে রেলওয়ের জলাশয় বালু ফেলে ভরাটের দায়ে জব্দ করা ১৫ হাজার ঘনফুট বালু উম্মুক্ত নিলামে বিক্রি করা হয়েছে। নিলামে ৮১ হাজার টাকায় এই বালু বিক্রি করা হয়।
গতকাল বুধবার বিকেলে সদর উপজেলার নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গনে সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোঃ মোশারফ হোসেনের উপস্থিতিতে এই উম্মুক্ত নিলাম অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে রেলওয়ের জলাশয় অবৈধভাবে বালু ফেলে ভরাটের প্রতিবাদে গত রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সদর উপজেলার বড় হরণ লেবেল ক্রসিং এলাকায় মানববন্ধন করে এলাকার সর্বস্তরের জনগণ।
সদর উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় লোকজন ও নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, বড়হরণ এলাকায় রেলের জলাশয় বালু ফেলে ভরাট করে ফেলে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র। বিষয়টি জানতে পেরে গত সোমবার দুপুরে সেখানে ভ্রাম্যমান অভিযান পরিচালনা করেন সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোঃ মোশারফ হোসেন।
এ সময় বালু ভরাটের কাছে ব্যবহৃত একটি ভেকু ও জলাশয়ে ফেলা সকল বালু জব্দ করা হয় এবং চার কার্যদিবসের মধ্যে জব্দ করা বালু নিলাম ডেকে বিক্রি করে জলাশয়কে পূর্বের অবস্থায় ফিরে আনতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আলমকে নির্দেশ দেন তিনি।
এসিল্যান্ডের নির্দেশে বুধবার বিকেলে নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গনে উম্মুক্ত নিলাম আহবান করেন ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আলম। সেসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোঃ মোশারফ হোসেন। নিলামে নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের পয়াগ নরসিংসার গ্রামের খলিলুর রহমান নামে এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ মূল্য ৮১ হাজার টাকা ডাক তোলেন।
এ ব্যাপারে নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ আলম বলেন, ৮১হাজার টাকায় সর্বোচ্চ মূল্য উঠে উম্মুক্ত নিলামে। আগামী শনিবার থেকে ওই ব্যক্তির কাছে বালু বুঝিয়ে দেয়া হবে।
এ ব্যাপারে সদর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোঃ মোশারফ হোসেন বলেন, পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ এর আলোকে সদর উপজেলার নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের বড়হরণ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়।
রেলওয়ের মালিকানাধীন একটি জলাশয় বালু ফেলে ভরাট করার অপরাধে একটি ভেকু ও ভরাট করা বালু জব্দ করা হয়। তিনি বলেন, এর আগেও গত ১৯ ফেব্রিয়ারি বালু ফেলে জলাশয় ভরাটের দায়ে বড় হরণে অভিযান চালিয়ে খননযন্ত্র জব্দসহ এক লাখ টাকা করিমানা করা হয়। তিনি বলেন, পরিবেশ আইনে জলাশয় কোনোভাবেই ভরাট করার সুযোগ নেই।
চলারপথে রিপোর্ট :
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে পদযাত্রা করেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগ।
আজ ৬ মে সোমবার দুপুরে শহরের বঙ্গবন্ধু স্কয়ার থেকে পদযাত্রা শুরু হয়। পদযাত্রাটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে গিয়ে শেষ হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ চত্বরে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল ও সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভন বাংলাদেশের পতাকার পাশাপাশি ফিলিস্তিনের পতাকা উত্তোলন করেন।
পরে এক সংক্ষিপ্ত ছাত্র সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেলের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন – জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভন ও কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি জুবায়ের মাহমুদ শ্রাবণ।
এ সময় জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভন বলেন, গত সাত মাস ধরে বন্ধুরাষ্ট্র ফিলিস্তিনের ওপর বর্বরোচিত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এরই প্রতিবাদে সারাবিশ্বে ছাত্র-ছাত্রীরা প্রতিবাদ করে যাচ্ছে। তাদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নির্দেশনা অনুযায়ী আজকে আমাদের এই কর্মসূচি। ফিলিস্তিনের ওপর বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা জানাই।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন রুবেল বলেন, এই ইসরায়েল হচ্ছে পৃথিবীর সব অশান্তির মূল। ফিলিস্তিন হচ্ছে নিরীহ, নিপীড়িত ও শান্তিকামী রাষ্ট্র। এ শান্তিকামী দেশের পাশে ছিলেন স্বাধীন বাংলার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি লাল-সবুজের এই পতাকা আমাদের এনে দিয়েছেন। বাংলাদেশের পতাকার পাশে নিরীহ ও নিপীড়িত মানুষের রক্তে রাঙানো পতাকা টানিয়ে দিতে পেরে আমরা বলতে চাই, স্বাধীন বাংলা থেকে ফিলিস্তিনের স্বাধীন পতাকা আমরা উড়িয়ে দিলাম।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের অর্ন্তগত ০৪ টি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। মেয়াদোর্ত্তীন হওয়ায় আজ ৯ মে মঙ্গলবার বিকেলে জেলা আওয়ামীলীগের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের এক সভায় সর্বসম্মতভাবে কমিটিগুলো বিলুপ্ত করা হয়। সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের দপ্তর সম্পাদক মোঃ মোশাররফ হোসেন স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানা গেছে।
বিলুপ্ত কমিটিগুলো হচ্ছে সুলতানপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ, মজলিশপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ, রামরাইল ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ ও নাটাই উত্তর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ।
সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এম.এ. এইচ মাহবুব আলমসহ সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ।
এ ব্যাপারে সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এম.এ. এইচ মাহবুব আলম বলেন, ৪টি ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের কমিটি মেয়াদোর্ত্তীন হওয়ায় নেতৃবৃন্দের সর্বসম্মতিক্রমে কমিটিগুলো বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ৭ দিনের মধ্যে ইউনিয়নগুলোতে আহবায়ক কমিটি গঠন করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চালু থাকা বৈকালিক স্বাস্থ্য সেবা হঠাৎ করে বন্ধ করে দিয়েছেন চিকিৎসকরা। গত ৩ জুন থেকে চিকিৎসকরা বৈকালিক স্বাস্থ্য সেবা বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে একদিকে দুর্ভোগে পড়েছে জেলার সুবিধাবঞ্চিত ও অসহায় রোগীরা, অন্যদিকে রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১৩ জুন থেকে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা চালু করেন হাসপাতালের তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক প্রয়াত ডাঃ মোহাম্মদ ওয়াহীদুজ্জামান। বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা নির্ধারিত ফির মাধ্যমে অসহায় রোগীদের সেবাদান শুরু করেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার রোগীদের পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী জেলার হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলা থেকেও অনেক রোগী এই হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিতেন।
বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবায় মেডিকেল কর্মকর্তার সরকারি ফি ২০০ টাকা, জুনিয়ার কনসালটেন্ট ও আবাসিক সার্জনের ফি ৩০০ টাকা এবং সিনিয়র কনসালটেন্টের ফি ৪০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিলো। জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বৈকালিক স্বাস্থ্য সেবা চালু করায় সাধারণ রোগীরা অনেক খুশি হয়েছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করে গত ৩ জুন থেকে এই স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রোগীরা এখন অনেক অসন্তুষ্ট। বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা না পাওয়ায় জেলার দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীদের বাড়ি ফিরে যেতে হচ্ছে।
হাসপাতালের হিসাব শাখা সূত্রে জানা গেছে, বৈকালিক স্বাস্থ্য সেবায় বেলা দুইটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত চালু থাকা প্যাথলজি বিভাগের বিভিন্ন পরীক্ষা-নীরিক্ষা থেকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রতি মাসে সরকারি কোষাগারে অনেক টাকা জমা দিতে পেরেছেন। গত বছরের জুন মাসে শুধু পরীক্ষা-নীরিক্ষা থেকে প্রাপ্ত ২১ হাজার ৫৩৫ টাকা, জুলাই মাসে ৮৬ হাজার ৭০ টাকা, আগস্ট মাসে ১ লাখ ১২ হাজার ৯৬০ টাকা, সেপ্টেম্বর মাসে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৪৫ টাকা, অক্টোবর মাসে ১ লাখ ৪ হাজার ৯৩০ টাকা, নভেম্বর মাসে ১ লাখ ৮ হাজার ৪০০ টাকা ও ডিসেম্বর মাসে ৯০ হাজার ৮১৫ টাকার রাজস্ব সরকারি কোষাগারে জমা দেন।
আর চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৯১ হাজার ৩৫৫ টাকা, ফেব্রুয়ারি মাসে ৮৬ হাজার ৯৩০ টাকা, মার্চ মাসে ৬৪ হাজার ৭৮০ টাকা এবং এপ্রিল মাসে ৫৪ হাজার ৩৫০ টাকার রাজস্ব সরকারি কোষাগারে জমা দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
বিকেল তিনটা থেকে ছয়টা পর্যন্ত বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা চালুর প্রথম মাসে গত বছরের জুন মাসে চিকিৎসকরা ২৫১ জন রোগী, দ্বিতীয় মাস জুলাই মাসে ১ হাজার ২২৬ জন, আগস্ট মাসে ১ হাজার ৪৫৭ জন, সেপ্টেম্বর মাসে ১ হাজার ৫২৩ জন, অক্টোবর মাসে ১ হাজার ২১১ জন, নভেম্বর মাসে ১ হাজার ১৪০ জন ও ডিসেম্বর মাসে ৮৯২ জন রোগী দেখেছেন চিকিৎসকরা। চলতি বছরের গত জানুয়ারি মাসে ৯০৫ জন, ফেব্রুয়ারি মাসে ১ হাজার ১১৮ জন, মার্চ মাসে ৬৩১ জন ও এপ্রিল মাসে ৮৫৭ জন রোগী দেখেন চিকিৎসকরা।
জানা গেছে, গত বছরের জুলাই মাস থেকে চলতি বছরের এপ্রিল মাস পর্যন্ত হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগের চিকিৎসকরা ১১ হাজার ৩৬০ জন রোগী দেখেছেন, যেখান থেকে আয় হয়েছে ৩৫ লাখ ৩ হাজার ৯০০ টাকা।
গত বছরের জুন মাস থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত আট মাস এসব রোগী দেখার টাকা থেকে নিজেদের প্রাপ্ত সম্মানী ভাগাভাগি করে নিয়েছেন চিকিৎসকরা। কিন্তু গত ফেব্রুয়ারি মাসে হাসপাতালে স্বাস্থ্য বিভাগের এক সভায় বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবায় রোগী দেখা থেকে প্রাপ্ত টাকা চিকিৎসকদের না দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন চট্টগ্রাম স্বাস্থ্য বিভাগের এক পরিচালক। ফেব্রুয়ারি মাস থেকে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবায় নিযুক্ত চিকিৎসকদের সম্মানী বন্ধ রয়েছে। এরপর থেকেই হাসপাতালে বিকেলে রোগী দেখায় আগ্রহ হারাতে শুরু করেন চিকিৎসকরা।
চলতি বছরের ৩ জুন থেকে কোনো রকম পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবায় রোগী দেখা বন্ধ করেন চিকিৎসকরা। তবে প্যাথলজি বিভাগ চালু রয়েছে।
হাসপাতালে কর্মরত কয়েকজন জানান, বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবায় হাসপাতালে রোগী দেখার চেয়ে নিজেদের ব্যক্তিগত চেম্বারে রোগী দেখায় স্বাচ্ছন্দবোধ করেন চিকিৎসকরা। কারণ এতে চিকিৎসকদের আয়-রোজগার বেশি হয়। হাসপাতালের এক সভায় চট্টগ্রাম স্বাস্থ্য বিভাগের এক পরিচালক জানান, বাংলাদেশে যেসব সরকারি হাসপাতালে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা চালু হয়েছে, সেখানকার কোনো হাসপাতাল থেকে চিকিৎসকদের সম্মানি দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। সেখানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকরা সম্মানি উত্তোলন করে নিয়ে গেছেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ২৩ জুন ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে যোগদান করেন মোহাম্মদ ওয়াহীদুজ্জামান। তাঁর যোগদানের পর থেকেই হাসপাতালে যথাসময়ে চিকিৎসকের উপস্থিত হওয়াসহ সকল বিভাগেই স্বাস্থ্যসেবার বিরাট পরিবর্তন হয়েছিল। পাশাপাশি তার সময়ে হাসপাতাল থেকে সরকারি কোষাগারে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব জমা হয়েছে। তার একান্ত প্রচেষ্টায় চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে একমাত্র হাসপাতাল হিসেবে জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সকালের পর দুপুর দুইটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত প্যাথলজি বিভাগ চালু হয়। ২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে চট্টগ্রাম বিভাগের সকল হাসপাতালের মধ্যে স্বাস্থ্য সেবার বিবেচনায় প্রথম হয়েছিল জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়া। চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি দুপুরে কর্মস্থলেই অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। চলতি বছরের ৩ জুন থেকে হাসপাতালের বৈকালিক সেবা বন্ধ হয়ে যায়।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডাঃ শাখাওয়াত হোসেন বলেন, একটু প্রশাসনিক জটিলতা চলছে। বৈকালিক সেবায় নিযুক্ত চিকিৎসকদের সম্মানী বন্ধ রয়েছে। তাই বৈকালিক সেবার বিষয়ে আলোচনা চলছে। আগে বৈকালিক সেবার সবগুলো বিভাগ খোলা থাকত। কিন্তু এখন বিষয়টি রিশিডিউলিং করা হচ্ছে। এখন প্রতিটা বিভাগ হয়তো চালু থাকবেনা । কাস্টমাইজড করা করে কিছু বিভাগ কমিয়ে আবার চালু করা হবে। আগামী দুই-একদিনের মধ্যে বৈকালিক সেবা চালু হবে।
এ ব্যাপারে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ রতন কুমার ঢালী বলেন, কিছু জটিলতার কারণে বৈকালিক স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ আছে। আমরা সীমিত পরিসরে সেবাটা আবার চালু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।