চলারপথে রিপোর্ট :
আশুগঞ্জে দুই মণ গাঁজাসহ মো. হুমায়ুন কবির (৪৫) ও মো. হানিফ (১৯) নামে দুইজন মাদক বিক্রেতাকে আটক করেছে পুলিশ।
আজ ২৫ জুলাই মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার চরচারতলা নতুন ফেরিঘাট এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে গাঁজাসহ তাদের আটক করা হয়।
আটক হুমায়ুন জেলার সদর উপজেলার পূর্ব মেড্ডা শান্তিবাগ এলাকার মো. জজ মিয়ার ছেলে ও হানিফ আশুগঞ্জ উপজেলার চর চারতলা (মহরম পাড়া) এলাকার মস্তু মিয়ার ছেলে।
আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাহিদ আহাম্মেদ বলেন, সকালে চরচারতলা নতুন ফেরিঘাট আসিফ এন্টারপ্রাইজের পাশে রাস্তার ওপর গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান পরিচালনাকালে রাস্তার ওপর থেকে ট্রাকসহ তাদের আটক করা হয়। পরে তাদের ট্রাকে তল্লাশি করে ৮৪ কেজি গাঁজা পাওয়া যায়। তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। মাদকের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
পূর্ণাঙ্গ নৌ-বন্দর ঘোষণার প্রায় ১ যুগ হলেও এখনো ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ নৌ-বন্দরে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। দেশের পূর্বাঞ্চলের এই নৌ-বন্দরটি দেশের অন্যান্য নৌ-বন্দরের তুলনায় অবকাঠামোগত দিক দিয়ে অনেক পিছিয়ে রয়েছে। তবে বিআইডব্লিওটিএ কর্তৃপক্ষের দাবি আধুনিকমানের প্রস্তাবিত অবকাঠামো নির্মিত হলে বর্তমানে বন্দরটিতে চলমান অনেক সমস্যারই সমাধান হয়ে যাবে।
বন্দর সংশ্লিষ্টরা জানায়, ২০১০ সালে আশুগঞ্জ নৌ-বন্দরকে পোর্ট অব কল থেকে নৌ-বন্দর ঘোষনা করা হয়। পরে ২০১১ সালে প্রথমবারের মতো ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পালাটানা বিদুৎ কেন্দ্রের জন্য মালামাল পরিবহন করা হয় এই বন্দর দিয়ে। এর পর থেকে আর্ন্তজাতিকভাবে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা করে এই নৌ-বন্দরটি। পরে ভারত এই বন্দরটি ব্যবহার করে কয়েক দফায় ভারি স্টীলজাত পন্য, খাদ্য শস্য পরিবহন করে। বর্তমানে এই নৌ-বন্দরটি দেশের অভ্যন্তরীন চাহিদার পাশাপাশি উত্তর-পূর্ব ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ন হয়ে উঠেছে। যার কারণে বন্দরটিকে নমনীয় ঋনে আধুনিকরনের উদ্যোগ নেয় ভারত সরকার। অবশ্য তার আগে থেকেই আশুগঞ্জের মেঘনা নদীর ফেরীঘাট এলাকায় নোঙর করতো পণ্যবাহী ছোট-বড় জাহাজ ও বাল্কহেড।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, ভারতের কলকাতার হলদিয়া বন্দর, বাংলাদেশের মোংলা, চট্টগ্রাম, নারায়নগঞ্জ সহ অন্যান্য নৌ-বন্দরের সাথে সহজে অভ্যন্তরীন এবং আর্ন্তজাতিক ক্ষেত্রে পন্য আমদানী- রপ্তানী হয়ে আসছে আশুগঞ্জ নৌ-বন্দরের মাধ্যমে। বর্তমানে এই বন্দরের সাথে বিভিন্ন কোম্পানী নিজেদের এজেন্টদের মাধ্যমে মালামাল সরবরাহ করে আসছেন। এর ফলে দিন দিন আশুগঞ্জ নদীবন্দর দিয়ে পণ্য পরিবহন বাড়ছে। এতে করে গুরুত্বপূর্ন হয়ে উঠেছে এই বন্দরটি।
বর্তমানে প্রতি মাসে রড, সিমেন্ট, পাথর, সার, ধান ও গমসহ বিভিন্ন পণ্য বোঝাই ছোট-বড় শতাধিক কার্গো জাহাজ আসে আশুগঞ্জ নদীবন্দরে। তবে বন্দরের জেটি সংখ্যা বৃদ্ধিসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা হলে বর্তমানের চেয়ে দ্বিগুণ জাহাজ বন্দরে আসবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
নৌ-বন্দরের কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, পর্যাপ্ত জেটির অভাবে পণ্য আনলোডিংয়ে অতিরিক্ত সময় লাগে। এতে করে জাহাজ মালিককে যেমন অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়, তেমনি বন্দরে অবস্থানকালীন বার্থিং ফিও দিতে হয় ইজারাদারকে। সবমিলিয়ে আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হন ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীরা বলেন, চাহিদা বিবেচনায় বন্দরে কমপক্ষে আরো ৫টি জেটি নির্মাণ করা প্রয়োজন। এতে করে বন্দরের বাণিজ্যিক কার্যক্রম আরও প্রসারিত হবে।
আশুগঞ্জ নৌ-বন্দরের ব্যবসায়ী আলমগীর মিয়া বলেন, পণ্য পরিবহনে আশুগঞ্জ নৌ-বন্দর ব্যবহারে চাহিদা বাড়লেও বন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন এখনো হয়নি।
তিনি বলেন, বর্তমানে বন্দরে মাত্র দুটি জেটি রয়েছে। অথচ একেকটি জাহাজ থেকে পণ্য আনলোডিংয়ে সময় লাগে ৪-৫দিন। একটি জাহাজের পণ্য আনলোডিং না হওয়া পর্যন্ত অন্য জাহাজ গুলোকে বন্দরেই নোঙর করে থাকতে হয়। এতে করে নদীতে প্রায়ই জাহাজের জটলা সৃষ্টি হয়। মূলত জেটির স্বল্পতার কারণেই সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে। তিনি বলেন, নিরবচ্ছিন্ন লোড-আনলোডিংয়ের জন্য বন্দরে কমপক্ষে আরো ৫টি জেটি নির্মাণ করা প্রয়োজন। জেটি সংখ্যা বাড়লে বন্দরে বর্তমানের চেয়ে দ্বিগুণ জাহাজ আসবে বলে জানান তিনি।
বন্দরের ব্যবসায়ী মোঃ নাসির মিয়া বলেন, প্রতিষ্ঠান ১ যুগ হয়ে গেলেও নৌ-বন্দরের কাঙ্খিত অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়নি। জেটি স্বল্পতার কারনে নির্ধারিত সময়ে জাহাজ থেকে পণ্য আনলোড করা যায় না। বন্দর থেকে পণ্য পরিবহনে ব্যবহৃত ট্রাকের জন্য একটি ট্রাকইয়ার্ড প্রয়োজন বলে তিনি জানান।
ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বলেন, বন্দরে প্রতিদিনই পন্যবাহী জাহাজ আসে। একটি জাহাজের পণ্য আনলোডিং না হওয়া পর্যন্ত অন্যান্য জাহাজগুলোকে বন্দরেই নোঙর করে রাখতে হয়। মূলত জেটি স্বল্পতার কারণেই সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে।
বন্দরের ব্যবসায়ী শাহীন শিকদার বলেন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন না হওয়ায় বন্দরটিতে কোন ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেননা ব্যবসায়ীরা। বন্দরে রয়েছে জেটি স্বল্পতা। বন্দরে পন্য খালাসের জন্যে নেই ইয়ার্ড। নৌ-বন্দরে কোনো ওয়ার হাউজ না থাকায় সার সহ বিভিন্ন পন্য খোলা আকাশের নিচে রাখতে হয়। ট্রাক ইয়ার্ড না থাকায় লোড-আনলোডের পর ট্রাকগুলোকে এলোপাথারিভাবে পুরাতন ফেরিঘাট এলাকায় রাখা হয়। তিনি বলেন, কমপক্ষে আরো ৫টি জেটি নির্মান করা হলে বন্দরের কার্যক্রমে আরো গতি আসবে।
এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ নদীবন্দরের ইজারাদার তৌহিদুল ইসলাম নাসির বলেন, ইজারা মূল্য অনুযায়ী বন্দরে তেমন কোন সুযোগ-সুবিধা নেই। পর্যাপ্ত জেটি না থাকায় পণ্য আনলোডিংয়ে বেশি সময় লাগে। তিনি বলেন, বন্দরে থাকা ২টি জেটির মধ্যে একটি জেটির অবস্থা ভালো না। এছাড়া বন্দরে ওয়্যারহাউজও নেই। এর ফলে আনলোডিংকৃত পণ্য ডেলিভারীতে বিলম্ব হলে পণ্য নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়। তিনি বলেন, বন্দরের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করলে ব্যবসা যেমন প্রসারিত হবে, তেমনি সরকারও লাভবান হবে।
এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ শহর শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি গোলাম হোসেন ইপটি বলেন, একযুগ হয়ে গেলেও বন্দরে অবকাঠামোগত দৃশ্যমান কোন উন্নয়ন হয়নি। জেটি স্বল্পতায় নির্ধারিত সময়ে জাহাজ থেকে পণ্য আনলোড করা যায়না। বন্দর থেকে পণ্য পরিবহনে ব্যবহৃত ট্রাকের জন্য একটি ট্রাক ইয়ার্ড প্রয়োজন। তিনি বলেন, বর্তমানে বন্দরে ১ হাজার ২ শত থেকে দেড় হাজার শ্রমিক কাজ করেন।
তিনি বলেন, আশুগঞ্জ নৌ-বন্দরটি আধুনিককরন করা হলে আন্তঃদেশীয় বাণিজ্যের পাশপাশি আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও বিশেষ ভূমিকা রাখবে। বিশেষ করে উত্তর পূর্ব ভারতের যে ৭টি অঙ্গরাজ্য আছে সেখান থেকে আমাদানী-রপ্তানী কার্যক্রম জোরদার সহ ব্যবসা বানিজ্যের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্তের দ্বার উন্মেচন হবে।
এদিকে বিআইডব্লিওটিএ সূত্র জানায়, বন্দরের সমস্যা লাঘবে ভারতীয় নমনীয় ঋনে ১ হাজার ২শত কোটি টাকারও বেশি ব্যয়ে সাড়ে ৩২ একর জমির উপর আধুনিক মানের নৌ-বন্দর নির্মানের উদ্যোগ গ্রহন করেছে সরকার। তবে প্রথম দফায় আহবানকৃত দরপত্রটি বাতিল হওয়ায় বন্দরটির উন্নয়ন কাজ পিছিয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ বিআইডব্লিওটিএ ভৈরব-আশুগঞ্জ নৌ-বন্দর উপ-পরিচালক মোঃ রেজাউল করিম বলেন, আশুগঞ্জ নৌ-বন্দর আধুনিকরন কাজের প্রথম দফার দরপত্রটি সফল না হওয়ার কারণে দরপত্রটি বাতিল করা হয়েছে। দরপত্রটি ভারতীয় এক্সিম ব্যাংকের কাছে পুনরায় পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে সম্মতিপত্র পাওয়ার পর দ্রুত সময়ের মধ্যে আবারো দরপত্র আহবান করা হবে।
তিনি বলেন, সরকার দ্রুত আধুনিকরণ কাজ শেষ করতে চায়। তাই ভারত থেকে সম্মতি আসলেই দ্রুত টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষে কাজ শুরু করা হবে।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম বলেন, ভূমি অধিগ্রহণসহ প্রাথমিক পর্যায়ে নৌ-বন্দর নির্মান কার্যক্রমের কাজ এগিয়েছে। বিশেষ করে ভূমি অধিগ্রহণ করে তারা বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, এরই মধ্যে আধুনিকমানের বন্দর নির্মানের জন্যে দরপত্র আহবান করা হয়েছিলো। তবে প্রথম দফায় প্রয়োজনীয় দরদাতা না পাওয়ার কারণে দরপত্রটি বাতিল করা হয়। ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছে পুনরায় দরপত্রের বিষয়ে সম্মতি চাওয়ায় হয়েছে। ভারতীয় এক্সিম ব্যাংকের কাছ থেকে সম্মতি পাওয়ার পর আবারো দরপত্র আহবান করা হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আশুগঞ্জে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে স্থানীয় আলম ব্রাদার্স এগ্রো ফুড এবং এস আলম এগ্রো ফুড নামের দুটি ডায়ার মিল (বয়লার) পরিবেশের ক্ষতি করে চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
তাদের মিলের কালো ধোঁয়ার সঙ্গে উড়ন্ত ছাই ও দূষিত কালো পানি মিল ঘেঁষা খালে পড়ে ভরাট হওয়ার পাশাপাশি কৃষি জমিরও ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।
এতে ওই মিলগুলোর পাশে থাকা জমির ধান এখন হুমকির মুখে। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়াসহ ডায়ার মিল দুটি অন্যত্র সরিয়ে নিতে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগসহ আবেদন জানিয়েছে গ্রামবাসী।
গ্রামবাসীর দেওয়া অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, আশুগঞ্জ উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের খড়িয়ালা গ্রামে আবাসিক এলাকায় আলম ব্রাদার্স এগ্রো ফুড এবং এস আলম এগ্রো ফুড নামের দুটি ডায়ার মিল (বয়লার) স্থাপন করা হয়েছে। যা পরিবেশ সম্মত না হওয়ায় মিল থেকে উড়ন্ত ছাই ও ধূলা বাতাসের সঙ্গে উড়ে গ্রামবাসীর জন জীবনে অসুবিধার সৃষ্টি করছে। এতে শিশু, বৃদ্ধসহ নানা বয়সী মানুষ বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন। এছাড়াও মিলের গরম পানি ও ছাই পার্শ্ববর্তী খালে পড়ে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। ফলে খালটি দিয়ে এখন কোনোভাবেই পানি প্রবাহিত হচ্ছে না। এতে মিলের গরম পানি ও ছাইয়ের কারণে কৃষিজমির ফসল নষ্ট হচ্ছে। গ্রামবাসী বিষয়টি মিল মালিকদের বার বার জানালেও তারা তাতে কর্ণপাত করেনি। বরং উল্টো গ্রামবাসীকে বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকি-ধমকি দিয়ে বে-আইনিভাবে মিলের কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
সরেজমিন খড়িয়ালা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ধানি জমির পাশেই রয়েছে একটি সরকারি খাল। এর পাশেই গড়ে তোলা হয়েছে ওই মিল। মিলের পেছন অংশে গিয়ে দেখা যায়, সরকারি খালটি পোড়া ধানের কালো ছাইয়ের স্তূপ জমে ভরাট হয়ে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে পড়েছে। এতে কৃষকরা জমি চাষের সময় খালের পানি ব্যবহার করতে পারছে না। এছাড়াও মিলের চিমনি দিয়ে অনবরত নির্গত হচ্ছে কালো ধোঁয়া।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ফরিদা বেগম বলেন, আমি ৩৭ শতক জমিতে ধানের চাষ করেছিলাম কিন্তু মিলের ছাইয়ের কারণে তা নষ্ট হয়ে গেছে। শুধু আমার জমিই নয় খালের পাশে থাকা অনেক জমির ধান এখন হুমকির মুখে।
তিনি আরো বলেন, এখানে একটি ডোবা রয়েছে সেখানে চাষের জন্য মাছ ছাড়া হলে সেগুলোও মারা যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা রাকিব মিয়া বলেন, মিলের কালো দূষিত ধোঁয়ার কারণে গ্রামের মানুষের অনেক কষ্ট হচ্ছে। সাদা কাপড় পড়ে থাকা যায় না। এছাড়া সরকারি যে খালটি ছাইয়ের কারণে ভরাট হয়ে গেছে সেটি মেঘনা নদীর সঙ্গে সংযুক্ত। কিন্তু ভরাটের কারণে পানি প্রবাহিত হচ্ছে না। আমরা এ থেকে মুক্তি চাই।
মো. ফয়সাল বলেন, ছাই এবং দূষিত পানিতে খালটির এখন করুণ অবস্থা। কৃষকরা জামি চাষ করার জন্য খালের পানি ব্যবহার করতে পারছে না। এতে করে জমিগুলো এখন নষ্ট হওয়ার পথে। আমরা খালটিকে পুনরায় আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে সরকারের দৃষ্টি কামনা করছি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আলম ব্রাদার্স এগ্রো ফুড এবং এস আলম এগ্রো ফুডের মালিক আলম মিয়া জানান, আশুগঞ্জে ৪০টি ডায়ার মিল রয়েছে। আমরা এই সমিতির আওতাভুক্ত। আমাদের পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র আছে। আমরা পরিবেশের সব আইন কানুন মেনেই মিল পরিচালনা করছি। তারা অন্য বিরোধের জেরে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আমার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো. খালেদ হাসান বলেন, এ বিষয়ে আমাদের হাতে একটি অভিযোগ এসেছে। দ্রুত সরেজমিন তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার ২ শতাধিক পরিবারের মাঝে বিনামূল্যে ঈদের বাজার বিতরণ করা হয়েছে।
সোমবার দুপুরে উপজেলার লালপুর ইউনিয়নের সূর্য কুমার উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এই ঈদের বাজার বিতরণ করা হয়। লালপুর মানব কল্যাণ যুব সংঘের ৬ষ্ঠ বর্ষে পদার্পণ উপলক্ষে আয়োজিত ঈদের বাজারে প্রধান অতিথি ছিলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য মো. মঈন উদ্দিন মঈন।
ঈদের বাজার হিসেবে নতুন কাপড়, সেমাই, চিনি, দুধ, কিসমিস, মুরগি সহ নানান ধরনের পণ্যে ভরা একটি করে ব্যাগ অসহায়, হতদরিদ্র ও ছিন্নমূল ২’শ পরিবারের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে লালপুর মানব কল্যাণ যুব সংঘের সভাপতি মো. ফারুক হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উদ্বোধক ছিলেন, লালপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মোর্শেদ মাষ্টার, বিশেষ অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য মো. মঈন উদ্দিন মঈনের সহধর্মিনী কামরুন নাহার, আশুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আতাউর রহমান কবির, লালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. খলিলুর রহমান, আশুগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি মো. মোজাম্মেল হক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আল মামুন, লালপুর এস কে দাস চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. মইনুল ইসলাম, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য বাকের আহমেদ খান প্রমুখ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জে আশরাফুল (১৫) নামে নবম শ্রেণির এক স্কুলছাত্র নিখোঁজের অভিযোগে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। ৬ জুন মঙ্গলবার বিকালে আশুগঞ্জ থানায় জিডি করেন নিখোঁজের বাবা দুলাল মিয়া। এর আগে ৫ জুন সোমবার সকালে সে নিখোঁজ হয়।
আশরাফুল আশুগঞ্জ উপজেলার তারুয়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা দুলাল মিয়ার ছেলে ও আড়াইসীধা কেবি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র।
নিখোঁজ স্কুলছাত্রের বাবা দুলাল মিয়া জানান, সোমবার সকাল সাড়ে ৬টায় প্রাইভেট পড়তে স্কুলের উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয় আশরাফুল। পরে আর বাসায় ফেরেনি। পরে বিভিন্ন স্থানে ও আত্মীয় স্বজনের বাসায় খোঁজাখুঁজি করা হয়। কিন্তু ছেলের সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরে মঙ্গলবার বিকালে আশুগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয় বলে জানান তিনি।
আশুগঞ্জ থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) সুজন পাল বলেন, স্কুলছাত্র নিখোঁজের ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। পুলিশ এ বিষয়ে তদন্ত করছে।
স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাশেমকে (৭৩) রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে। শনিবার দিবাগত রাত ৯টার দিকে উপজেলার শাহবাজপুর গ্রামে নিজ বাসভবনে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। পারিবারিক সূত্র জানায়, আবুল হাশেম দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। গত শনিবার রাতে নিজ বাসভবনে তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। গতকাল রোববার দুপুরে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের মাঠে তাকে নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মুহাম্মদ সরওয়ার উদ্দীনের নেতৃত্বে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেয়া হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মো. ইসমত আলী, সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসলাম হোসেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ৫ ছেলেসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।