পবিত্র আশুরা ও তাজিয়া মিছিলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে : ডিএমপি কমিশনার

জাতীয়, 26 July 2023, 712 Views,

ডেস্ক রিপোর্ট :
শিয়া সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান পবিত্র আশুরা উদযাপন ও তাজিয়া শোক মিছিলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক।

ডিএমপি কমিশনার আজ ২৬ জুলাই বুধবার সকালে রাজধানীর লালবাগ হোসাইনী দালান ইমামবাড়ায় পবিত্র আশুরা উদযাপন ও তাজিয়া মিছিল উপলক্ষে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। শিয়া সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

কমিশনার বলেন, আগামী ২৯ জুলাই (১০ই মহরম) পবিত্র আশুরা। সারা বিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায় অত্যন্ত ভাব গাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করে থাকে।

হোসাইনী দালান ইমামবাড়া নিরাপত্তা সম্পর্কে তিনি বলেন, পুরো এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। রাস্তাগুলোও সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকবে। আশুরার দিন অনুষ্ঠিত তাজিয়া শোক মিছিলের সামনে পিছনে ইউনিফর্ম পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে পুলিশ থাকবে। যেকোনো দুর্ঘটনা প্রতিরোধে পুরা এলাকা ডগ স্কোয়াড ও ম্যানুয়ালি সুইপিং করানো হবে। আশুরা উদযাপন ও তাজিয়া শোক মিছিল চলাকালীন সময় পুরো দৃশ্য ক্যামেরাবন্দী করা হবে এবং অনুষ্ঠানের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ সর্বদা সচেষ্ট থাকবে। তাজিয়া মিছিল উপলক্ষ্যে উচ্চস্বরে ঢাকঢোল না বাজানো, গায়ে চাদর জড়িয়ে মিছিলে না আসা ও শরীরে আঘাত করে রক্তাক্ত জখম না করার জন অংশ গ্রহণকারীদের প্রতি অনুরোধ করেন ডিএমপি কমিশনার।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সমাবেশ করা রাজনৈতিক দলের গণতান্ত্রিক অধিকার, একইভাবে নগরবাসীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও ঢাকা মহানগর পুলিশের দায়িত্ব। কর্ম দিবসে জনগণকে কষ্ট দিয়ে রাজনৈতিক কর্মসূচি না করে সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে এসব কর্মসূচি পালন করার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানান ডিএমপি কমিশনার।

রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যে খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, ‘আপনারা সমাবেশ করেন, তবে এর কারণে জনগণ যেন কষ্ট না পায়। লোকজনের দুর্ভোগের বিষয়টি লক্ষ্য রাখতে হবে। হয়তো ভবিষ্যতে এমন সময় আসবে, জনগণ অতিষ্ঠ হলে আমাদের বাধ্য হয়ে এসব কর্মসূচির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হতে পারে।’

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) এ কে এম হাফিজ আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস্) ড. খ. মহিদ উদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস্, ফিন্যান্স অ্যান্ড প্রকিউরমেন্ট) মহা. আশরাফুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. আসাদুজ্জামানসহ যুগ্ম ও উপ-পুলিশ কমিশনারগণ ও বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। সূত্র : বাসস

Leave a Reply

বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ গ্রেফতার ১

চলারপথে রিপোর্ট : বিজয়নগর উপজেলা থেকে বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ ১ Read more

সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বাঞ্ছারামপুরে ১৪৪ ধারা…

চলারপথে রিপোর্ট : বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় সম্মেলনকে কেন্দ্র করে উপজেলা ও Read more

বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অংশীজন ও…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় “বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে অংশীজন ও Read more
ফাইল ছবি

আশুগঞ্জে ট্রেনের ধাক্কায় বৃদ্ধার মৃত্যু

চলারপথে রিপোর্ট : আশুগঞ্জে ট্রেনের ধাক্কায় মাথায় আঘাত পেয়ে অজ্ঞাতনামা Read more

আখাউড়ায় বিনামূল্যে ধান বীজ বিতরণ চলারপথে রিপোর্ট : আখাউড়া উপজেলায় Read more

কুয়েতে সড়ক দুর্ঘটনায় আবু বাক্কার নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : কুয়েতে প্রাইভেটকার দুর্ঘটনায় শেখ আবু বাক্কার (৩৪) Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাস উল্টে যাত্রী নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : সরাইল উপজেলায় বাস উল্টে গোপী কান্ত ঘোষ Read more

ট্রাক-অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ একজন নিহত

চলারপথে রিপোর্ট : ট্রাক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে অটোরিকশার Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শিশু নাট্যমের বিতর্ক প্রতিযোগিতা

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শিশু নাট্যমের ৩৮ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে Read more

ইয়াবা ট্যাবলেটসহ দুই পাচারকারী গ্রেফতার

চলারপথে রিপোর্ট : আশুগঞ্জে ১হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ গোপাল রায় Read more

সঠিকভাবে নির্বাচিত সরকার গঠিত হয়, তাহলে…

চারপথে রিপোর্ট : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, Read more

শিশু নাট্যমের বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শিশু নাট্যম প্রতিষ্ঠার ৩৮ বছর উপলক্ষে Read more

জাতিসংঘের খাদ্য সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর ৫ প্রস্তাব

জাতীয়, 24 July 2023, 657 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
বিশ্বব্যাপী টেকসই, নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে জাতিসংঘ খাদ্য সম্মেলনে পাঁচ দফা প্রস্তাব পেশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

একই সঙ্গে তিনি টেকসই খাদ্য নিরাপত্তার লক্ষ্য অর্জনে বিশ্ব সম্প্রদায়কে সম্মিলিতভাবে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ এবং বাস্তবায়নেরও আহ্বান জানান।

আজ ২৪ জুলাই সোমবার স্থানীয় সময় বিকেলে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) সদর দপ্তরে জাতিসংঘের খাদ্য ব্যবস্থাপণা সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে শেখ হাসিনা এ আহ্বান জানান।

টেকসই, নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য ব্যবস্থা নিশ্চিতে ৫ দফা প্রস্তাবে আর্থিক প্রণোদনা, খাদ্য ও সার রপ্তানির বিধি-নিষেধগুলো তুলে নেওয়া, বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক ফুড ব্যাংক প্রতিষ্ঠা, প্রযুক্তি বিনিময়, খাদ্য অপচয় রোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

সারা বিশ্বে ক্ষুধা-দারিদ্র্য-অপুষ্টিতে ভোগা মানুষের কষ্টের কথা তুলে ধরে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, বৈশ্বিকভাবে ৬৯০ মিলিয়ন মানুষ এখনও অপুষ্টিতে ভুগছে, প্রায় ২ বিলিয়ন মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নেই এবং প্রায় ৩ বিলিয়ন মানুষ সুষম খাবার থেকে বঞ্ছিত।

তিনি বলেন, চলমান ইউক্রেন যুদ্ধ এবং নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা-নিষেধাজ্ঞার ফলে সৃষ্ট খাদ্য, সার, জ্বালানি ও আর্থিক সংকট বিশ্বজুড়ে ক্ষুধা ও অপুষ্টির সমস্যাকে ঘনীভূত করেছে।

সবার জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই খাদ্য ব্যবস্থাপনা প্রবর্তনের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুষ্টিকর খাবার সংগ্রহের অক্ষমতার জন্য কৃষি ও খাদ্যপণ্যের মূল্যই একমাত্র প্রতিবন্ধকতা নয়।

তিনি বলেন, সম্মিলিতভাবে প্রয়োজনীয় কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে পারলে আমরা বিশ্বব্যাপী টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা অর্জন করতে পারব।

জাতিসংঘের খাদ্য সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর পাঁচ দফা প্রস্তাব
প্রথমত, আধুনিক কৃষিতে বিনিয়োগের জন্য বহুপাক্ষিক উন্নয়ন ব্যাংক এবং বেসরকারি উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আর্থিক প্রণোদনা ও নীতি সহায়তা প্রদান করা প্রয়োজন।

দ্বিতীয়ত, জাতিসংঘ মহাসচিবের উদ্যোগে ‘ব্ল্যাক সি গ্রেইন ডিল’-কে চালু রাখার পাশাপাশি খাদ্য ও সার রপ্তানির বিধি-নিষেধগুলো তুলে নেওয়াসহ যে কোন বাণিজ্য বাঁধা অপসারণের লক্ষ্যে সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়া একান্ত দরকার।

তৃতীয়ত, জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় বৈশ্বিক এবং আঞ্চলিক ‘ফুড ব্যাংক’ প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থার রূপান্তরের লক্ষ্যে উন্নয়নশীল দেশগুলোর সহায়তায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে হবে।

চতুর্থত, কৃষিশিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সঙ্গে তাল রেখে ন্যানো-প্রযুক্তি, বায়ো-ইনফরমেটিক্স ও অত্যাধুনিক কৃষি প্রযুক্তিগুলো সকলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া বাঞ্ছনীয়।

পঞ্চমত, প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে উৎপাদিত খাদ্যের প্রায় এক-তৃতীয়াংশের অপচয় রোধে তরুণ সমাজকে অন্তর্ভুক্ত করার মধ্য দিয়ে ব্যাপক সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা জরুরি।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সময় জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) সদর দপ্তরের প্লেনারি হল রুমে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান, মন্ত্রী, রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধি, বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধি ও আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।

প্লেনারি হল ছাড়াও জাতিসংঘের সদরদপ্তরে গ্রিন রুম, রেড রুম, ইরান রুমসহ বেশ কয়েকটি হল রুমে বড় পর্দায় প্রদর্শন করা হয়। এসব রুমে বিপুল সংখ্যক শ্রোতা প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শোনেন এবং করতালির মাধ্যমে তার বক্তব্যকে সমর্থন জানান।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি, ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী আবি আহমেদ, নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কামাল দহল, সামাও এর প্রধানমন্ত্রী ফিয়ামি নাওমি মাতাফা, ইতালির উপ-প্রধানমন্ত্রী অ্যান্তেনিও তাজানি, জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস।

২৪ থেকে ২৬ জুলাই রোমে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা আয়োজিত জাতিসংঘ খাদ্য ব্যবস্থাপণা সম্মেলনে ২০টির বেশি রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানসহ ১৬০টির বেশি দেশ থেকে প্রায় ২ হাজারের অধিক প্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ অংশগ্রহণ করছেন।

কৃষিতে বাংলাদেশের সফলতার কথা তুলে ধরে বক্তব্যে শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সালে আমাদের সরকার যখন দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হয় তখন আবার ২৬ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য ঘাটতি দিয়ে শুরু করি।

তিনি বলেন, আমরা কৃষি যান্ত্রিকীকরণে ভর্তুকি প্রদান, ১০ টাকায় কৃষকের জন্য ব্যাংক হিসাব চালুকরণ, শৃঙ্খলাপূর্ণ সার বিতরণ ব্যবস্থাসহ নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করি। এরফলে, ২০১৩ সালের মধ্যে আমরা শুধু খাদ্যে স্বয়ং-সম্পূর্ণতাই অর্জন করিনি, বরং খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশে পরিণত হই।

আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বাংলাদেশের খাদ্য উৎপাদন কতটা বেড়েছে তার তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরে টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বলেন, এফএও-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী বিশ্বের শীর্ষ খাদ্য উৎপাদনকারী ১০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। ২০০৮-০৯ অর্থছরে দেশে খাদ্যশস্যের উৎপাদন ছিল ৩২.৯ মিলিয়ন মেট্রিক টন, ২০২২-২৩ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৯.৪ মিলিয়ন মেট্রিক টনে।

তিনি বলেন, ২০০৮-০৯ থেকে ২০২০-২১ বছর পর্যন্ত প্রতিবছর দেশে সবজি উৎপাদন গড়ে ৫ শতাংশ এবং ফল উৎপাদন গড়ে ১১ শতাংশের বেশি হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে বিশ্বে বাংলাদেশ ধান ও মাছ উৎপাদনে ৩য়, পাট উৎপাদনে ২য়, সবজি উৎপাদনে ৩য় এবং আলু উৎপাদনে ৬ষ্ঠ।

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষি খাতের অবদানের কথা তুলে ধরে সরকার প্রধান জানান, বাংলাদেশের জিডিপিতে কৃষিখাতের অবদান ১১.৬৬%। তবে আমাদের কর্মশক্তির প্রায় ৪০.৬% কৃষিতে নিয়োজিত। আমাদের জিডিপিতে মৎস্যখাতের অবদান ২.৪৩% এবং প্রাণিসম্পদ খাতের অবদান ১.৯০%।

বাংলাদেশে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে বিগত বছরগুলোতে আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার কৃষি গবেষণা ও উদ্ভাবনকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে। দেশে বর্তমানে ৮টি সরকারি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। গত ১৪ বছরে ৬৯০টি উন্নত ও উচ্চ ফলনশীল শস্যের জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। আমাদের বিজ্ঞানীরা লবণাক্ত-সহিষ্ণু ধান উদ্বাবন করেছেন এবং খরা ও জলমগ্ন-সহিষ্ণু ধান উদ্বাবনের জন্য গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে।

কৃষিকে আধুনিক ও যান্ত্রিকীকরণে সরকারের কার্যক্রমের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, কৃষিকে আধুনিক ও লাভজনক করতে ২০১০ থেকে ২০২২ পর্যন্ত প্রায় ৮১ হাজার কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহ করেছি। সার, বিদ্যুৎ ও সেচ ইত্যাদির জন্য ১ লাখ ২ হাজার ৯১৭ কোটি টাকা উন্নয়ন সহায়তা দেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে সারের মূল্য বৃদ্ধির কারণে ২০২২-২৩ অর্থবছরে উন্নয়ন সহায়তা হিসেবে ২৬ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কৃষি ও খাদ্যপণ্যের রপ্তানি বাড়াতে উৎপাদন হতে শিপমেন্ট পর্যন্ত উত্তম কৃষি চর্চা, হাইজিন প্র্যাকটিসেস, গুড ম্যানুফ্যাকচারিং প্র্যাকটিসেস অনুসরণ করার কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

এছাড়াও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন অ্যাক্রিডিটেড ল্যাব স্থাপন করে দেশি পণ্যের মান নিশ্চিত করার দিকে সরকার মনোনিবেশ করেছে বলে জানান তিনি।

আফ্রিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশের কৃষি উদ্ভাবন ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে আগ্রহ প্রকাশ করার কথা উল্লেখ করেন সরকারপ্রধান।

জাতিসংঘ মহাসচিবের আমন্ত্রণে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) আয়োজিত ফুড সিস্টেম সামিটে যোগ দিতে রোববার (২৩ জুলাই) স্থানীয় সময় বিকেলে ইতালির রোম আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফর শেষে আগামী বুধবার দেশে ফিরবেন তিনি।

বজ্রপাতে নৌকা থেকে পড়ে মাঝি নিখোঁজ

জাতীয়, 10 May 2023, 1139 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে বজ্রপাতের সময় যমুনা নদীতে পড়ে সাদ্দাম হোসেন (৩৪) নামের এক মাঝি নিখোঁজ হয়েছেন। তিনি হাটাইল চরের আজাহার শিকদারের ছেলে। আজ ১০ মে বুধবার বিকেল ৩টার দিকে উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের হাটাইল চর সংলগ্ন নদীতে এ ঘটনা ঘটে।

চৌহালী উপজেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক মৌসুমী খান জানান, সাদ্দাম মাঝি নৌকা নিয়ে ভূতের মোড় থেকে হাটাইল চরে আসার পথে নদীতীরের কাছাকাছি পৌঁছলে বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। ওই সময় নৌকা থেকে নদীতে পড়ে গিয়ে নিখোঁজ হন সাদ্দাম। আত্মীয়-স্বজন ও স্থানীয়রা নৌকায় করে এবং নদীতে জাল ফেলে খোঁজাখুঁজি করছে।

চৌহালী নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ফারুক হোসেন বলেন, ‘সংবাদ পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলের দিকে রওনা হয়েছি। সেখানে পৌঁছনোর পর বিস্তারিত জানানো যাবে।’

৭ লাখ মিটার কারেন্ট জাল জব্দ, ১৯ জেলে আটক

জাতীয়, 4 April 2023, 1147 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
চাঁদপুর নৌ পুলিশের অভিযানে ২৪ ঘণ্টায় পদ্মা-মেঘনার অভয়াশ্রম এলাকায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জাটকা ধরায় ১৯ জেলেকে আটক এবং ৭ লাখ ২০ হাজার ৩০০ মিটার কারেন্টজাল জব্দ করা হয়েছে।

জেলেদের মধ্যে ১৭ জনের বিরুদ্ধে থানায় পৃথক মামলা এবং দুইজন অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় অভিভাবকের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। একই সময় নিয়ম লঙ্ঘন করে নদীতে বাল্কহেড চলাচল করায় ১৩টি বাল্কহেড জব্দ করে নৌ পুলিশ।

আজ ৪ এপ্রিল মঙ্গলবার সকালে চাঁদপুর নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান এসব তথ্য জানান।

আটককৃত জেলেরা হলো-পারভেজ (১৯), শাকিল গাজী (১৯), কালাম মিজি (২৭), মামুন ছৈয়াল (১৯), মো. মহসীন (৩০), মো. লায়াজ মিয়াজ (৫০), নবী হোসেন (৩৫), রিয়াজুল (৪২), সজিব (২৮), ছোটন মিয়া (২২), বিল্লাল মিয়া, (২২) আবু বক্কর (৩২), জিয়াউর রহমান (৩৫), কামরুজ্জামান (৩৯), আলী হোসেন (২৯), কুদ্দুস আলী (৩৫) ও মো. হারুন (৩৯)। এসব জেলেদের বাড়ী লক্ষ্মীপুর, ভোলা, কিশোরগঞ্জ ও চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন এলাকায়।

ওসি কামরুজ্জামান বলেন, সোমবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নৌ-পুলিশের একাধিক টিম অভিযান চালিয়ে অভয়াশ্রম এলাকায় জাটকা ধরা অবস্থায় তাদেরকে হাতে-নাতে আটক করে। তাদের বিরুদ্ধে থানায় নিয়মিত মামলা হয়েছে। দুইজন জেলে অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় অভিভাবকের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। জব্দকৃত কারেন্টজাল আগুনে পুড়িয়ে বিনষ্ট করা হয় এবং জব্দকৃত ৫৫ কেজি জাটকা স্থানীয় গরীব ও দুস্থদের মাঝে বিতরণ করা হয়।

ওসি আরো বলেন, অভিযানের সময় চলাচলের জন্য সঠিক কাগজপত্র না থাকায় ১৩টি বালুবাহী বাল্কহেড জব্দ করা হয়। এর মধ্যে ১১টি সুকানির জিম্মায় প্রদান করা হয় এবং বাকি দুটি বাল্কহেড নৌ থানায় মামলার আলামত হিসেবে রাখা হয়েছে।

স্টেশনে যাত্রীর ঘুষিতে আনসার সদস্য নিহত

জাতীয়, 9 February 2024, 412 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রীর ঘুষিতে আনসার সদস্য মাইনুল ইসলাম (৪৫) নিহত হয়েছেন। তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে এক যাত্রী তাকে ঘুষি মারে। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি পড়ে যান।

পরে সেখান থেকে উদ্ধার করে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।

নিহত আনসার সদস্য মাইনুল ইসলাম পিতার নাম জয়েন উদ্দীন। তার বাড়ি রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার মাঙ্গনপুর গ্রামে। তিনি রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনে আনসার সদস্য হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

স্টেশন ম্যানেজার আব্দুল করিম বলেন, রাত ৯টার দিকে বিনা টিকিটে ঢুকে স্টেশনের প্লাট ফরর্মে এক যুবক ঘোরাঘুরি করছিলো। ওই সময় আনসার সদস্য তাকে বের হয়ে যেতে বললে তর্কাতর্কিতে জড়ায়। এক পর্যায়ে আনসার সদস্য মাইনুলকে ঘুষি মারে। এতে সে মাটিতে পড়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে রামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

রেলওয়ে থানার ওসি গোপাল কুমার বলেন, এ ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে। তবে সেখানে কি ঘটেছে বা কিভাবে মাইনুলের মৃত্যু হয়েছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এছাড়াও সিসি ক্যামেরাও দেখা হবে।

তিনি বলেন, মৃতদেহ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। শুক্রবার ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের সদস্যদের কাছে মৃতদেহ হস্তান্তর করা হবে।

ঈদযাত্রায় ভোগাবে ৪০ কিলোমিটার সড়ক

জাতীয়, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, 10 April 2023, 1983 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
দেশের পূর্বাঞ্চলের অন্যতম প্রবেশদ্বার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা। ঢাকা-সিলেট ও কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কে ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশে রয়েছে ৭৬ কিলোমিটার সড়ক।

আসন্ন ঈদ যাত্রায় যাত্রীদের ভোগাবে এই অংশের অন্তত ৪০ কিলোমিটার সড়ক।

দুটি সড়কে চারলেন প্রকল্পের নির্মাণ কাজের কারণে এ শঙ্কা দেখা দিয়েছে। সড়কের বেহাল দশা ও খানাখন্দের কারণে যান চালানো এখন বড় দায়। যানজট ও ধীর গতির কারণে প্রতিদিনই ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হচ্ছে সড়কে। এতে একদিকে যেমন সময় নষ্ট হচ্ছে, তেমনি চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের।

সড়ক বিভাগ জানায়, ২০২০ সালের মার্চে শুরু হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ নৌ-বন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত ৫০ দশমিক ৫৮ কিলোমিটারের চারলেন সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের কাজ। এর আওতায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে আশুগঞ্জ নৌ-বন্দর থেকে খাঁটিহাতা বিশ্বরোড মোড় পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার ও কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কে খাঁটিহাতা বিশ্বরোড মোড় থেকে ধরখার পর্যন্ত ২৪ কিলোমিটার আঞ্চলিক সড়ক রয়েছে।

তবে করোনাকালীন সময়সহ নানা জটিলতায় বড় এই প্রকল্পের কাজে অনেকটাই ধীরগতি এসেছে। ফলে এখনও শেষ হয়নি রাস্তা নির্মাণ কাজ। এ কারণে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে এই সড়ক ব্যবহার করে চলাচলে। এসব সড়ক দিয়ে প্রতিদিন বিভিন্ন ধরণের ৩০/৩৫ হাজার যানবাহন চলাচল করছে। এরমধ্যে যাত্রীবাহী যানবাহনের সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার।

ঈদ মৌসুমে দেশের সব সড়ক-মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বেড়ে যায় কয়েকগুণ। এর ব্যতিক্রম হবে না ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা অধ্যুষিত এই রাস্তায়ও। এমতাবস্থায় আসন্ন ঈদে এ সড়ক ব্যবহার করে চলাচলে বেশ ভোগান্তি পোহাতে হবে ঘরমুখো যাত্রীসাধারণের।

চালক ও যাত্রীরা জানান, দুটি সড়ক দিয়ে বিপুল সংখ্যক যানবাহন চলাচল করার কারণে সড়কগুলোর অবস্থা করুণ। নির্মাণকাজ করতে সড়ক খুঁড়ে রাখাসহ একপাশ বন্ধ করে রাখায় প্রতিদিনই যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। সেই সঙ্গে তীব্র ধুলোবালির কারণে এসব পথে চলাচলকারীদের দুর্ভোগের অন্ত নেই।

তারা আরো জানান, সময় নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি সড়কে বিভিন্ন সময়েই ঘটেছে ছোটখাটো দুর্ঘটনা। ফলে ঝুঁকি নিয়েই সড়কে চলাচল করতে হচ্ছে তাদের। রাস্তার খানাখন্দ ও যানজটের কারণে এক ঘণ্টার যাত্রাপথ চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা লেগে যাচ্ছে।

এ সময় সড়কগুলো দ্রুত মেরামত করার দাবি জানিয়েছেন চালক ও যাত্রীরা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে আশুগঞ্জ থেকে বিশ্বরোড পর্যন্ত যান চলাচলের উপযোগী করা হয়েছে। ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রাকে নির্বিঘ্নে করতে অবশিষ্ট সড়ক দ্রুত মেরামত করা হবে।

সরাইল খাটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আকুল চন্দ্র বিশ্বাস জানান, যানজট নিরসনে চালক ও হেলপারদের সচেতন করতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি হাইওয়ে পুলিশের সাতটি টিম সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে যানজট নিরসনে কাজ করছে।