চলারপথে রিপোর্ট :
৬ দিন ধরে মাকে দেখছে না দেড় বছরের শিশু সন্তান আইয়ুব। সারাক্ষণ মায়ের জন্য কান্নাকাটি করছে। অবুঝ শিশুকে কোন কথা বলে বুলাতে পারছে না বৃদ্ধ নানা-নানি, দাদা-দাদু। আর মেয়েকে খুঁজতে খুঁজতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে হতভাগ্য মা-বাবা।
অবশেষে মেয়ের সন্ধান পেতে সংবাদ সম্মেলন করেছে স্বজনরা। এমন ঘটনায় ঘটেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায়।
আজ ২৬ জুলাই বুধবার দুপুরে আখাউড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের বড় কুড়িপাইকা গ্রামে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিল্লাল ভূঁইয়ার স্ত্রী বিলকিছ বেগম। তিনি অভিযোগ করেন, গত ২০ জুলাই মেয়েকে নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালত থেকে ফেরার সময় আদালতের গেইট থেকে মনির মাস্টার আমার মেয়েকে জোর পূর্বক সিএনজিতে উঠিয়ে নিয়ে যায়। সে একই ইউনিয়নের হীরাপুরের মৃত জানু মিয়ার ছেলে।
এরপর থেকে আমার মেয়ের কোন খোঁজ পাচ্ছি না। মেয়েকে উদ্ধারের জন্য তিনি প্রশাসনের সহযোগিতা চান।
নাতিকে কোলে নিয়ে কান্না জড়িত কন্ঠে তিনি বলেন, ছোট্ট শিশুটির মাকে না দেখে কান্নাকাটি করে। তাকে কেন মায়ের আদর থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। মনির মাষ্টার তার মেয়েকে আটকে রেখেছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
তিনি আরো বলেন, মনিরুল ইসলাম ওরফে মনির মাস্টার (৩৭) এক সময় আমার মেয়েকে প্রাইভেট পড়াতো। এসময় সে আমার মেয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ার চেষ্টা করে। আমরা মান সম্মানের কথা চিন্তা করে মেয়েকে অন্যত্র বিয়ে দেই। কিন্তু বিয়ের পরেও মনির মাষ্টার আমার মেয়ের সাথে যোগাযোগ রাখতে চাইলে আমরা তাকে নিষেধ করি।
এ কারণে সে আমাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে আদালতে একটি মিথ্যা মামলা দেয়। সেদিন আমরা তার মামলায় হাজিরা দিতে গিয়েছিলাম। মেয়েকে উঠিয়ে নেওয়ার ঘটনায় তিনি আদালতে মামলা করেছেন বলে জানান।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে, অভিযুক্ত মনিরুল ইসলাম বলেন, এসব অভিযোগ সত্য নয়। তারা আমার বিরুদ্ধে থানায় এবং কোর্টে একাধিক মামলা করেছেন। আমিও মামলা করেছি। সেখানে ব্যর্থ হয়ে আমাকে সামাজিক ভাবে হেয় করার জন্য এসব ষড়যন্ত্র করছেন। আমি তাকে আটকে রাখার প্রশ্নই আসে না।
চলারপথে রিপোর্ট :
দুই বছরের হাবিবকে বিছানায় রেখে মা ঘরের বাইরে যান। এ সময় জানালা ধরে খেলা করছিল সে। এরই মাঝে জানালার ছিটকিনি খুলে আসে তার হাতে। অবুঝ শিশু হাবিব সেই ছিটকিনি মুখে ঢুকিয়ে গিলে ফেলে। এরপরই শুরু হয় পেটব্যথা ও যন্ত্রণা। পরিবারও কিছু বুঝে উঠতে পারছিল না। অবশেষে দুইদিন অবজারভেশনে রেখে শিশু হাবিবের খাদ্যনালী থেকে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বের করা হলো জানালার সেই ছিটকিনি। বর্তমানে শঙ্কামুক্ত হাবিব।
হাবিব ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার শান্তিনগর গ্রামের জুয়েল মিয়ার ছেলে। জুয়েল মিয়ার ৩ ছেলে সন্তানের মধ্যে হাবিব কনিষ্ঠ। ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের পর বর্তমানে হাবিব সেখানেই চিকিৎসাধীন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হাবিবের মা পাখি বেগম বলেন, আমার ছেলেটি অনেক চঞ্চল। ২ আগস্ট বুধবার সকালে তাকে আমি নাস্তা করিয়ে বসিয়ে রেখে একটু ঘরের বাইরে যাই। এসে দেখি তার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। তার মুখ খুলে প্রথমে কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। পরে গলায় সাদা ধরনের কিছু একটা দেখা যায় এবং মুখ দিয়ে রক্ত ঝরছিল। এই অবস্থায় তাকে দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে হাবিবের এক্স-রে করে দেখে গলায় কিছু একটা আছে। সেখান থেকে দ্রুত বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসি। আসার পর এক্স-রে করে চিকিৎসকরা দেখেন পেটের ভেতর একটা ছিটকিনি। চিকিৎসকরা তাকে দুইদিন অবজারভেশনে রাখেন। এর দুইদিন পর শুক্রবার রাতে আমার ছেলেকে অপারেশন করে খাদ্যনালী থেকে একটি ছিটকিনি বের করেন ডা. আবু সাঈদ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও হাবিবের অস্ত্রোপচারকারী চিকিৎসক ডা. আবু সাঈদ জানান, এক্স-রে রিপোর্টে শিশুটির পেটের খাদ্যনালীতে ছিটকিনি দেখা যায়। পেটের ভেতরে খাদ্যনালী প্রায় ২০ ফুট লম্বা থাকে। অস্ত্রোপচারের সময় খাদ্যনালীর ভেতর থেকে খুঁজে বের করা হয়েছে ছিটকিনিটি।
তিনি জানান, শিশুটির খাদ্যনালী কেটে ছিটকিনিটি বের করা হয়েছে। তা কিছুদিনের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে। তাকে আরও দুইদিন হাসপাতালে থাকতে হবে। তবে সে এখন সম্পূর্ণ ঝুঁকিমুক্ত।
চলারপথে রিপোর্ট :
বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ায় পরিবেশবাদী সংগঠন প্রকৃতি ও পরিবেশ ক্লাবের উদ্যোগে র্যালি ও পথসভা হয়েছে।
“প্রকৃতি বাঁচাও, প্রাণবিক ধরিত্রী গড়ো’ সবাই মিলে করি পণ বন্ধ হবে প্লাস্টিক দূষণ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে আজ ৫ জুন সোমবার সকালে পৌর শহরের কলেজ পাড়া থেকে একটি র্যালীটি বের হয়। র্যালিটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে সড়ক বাজারে বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. সিরাজুল হক পৌর মুক্তমঞ্চে পথসভা করে।
পথসভায় বক্তব্য রাখেন প্রকৃতি ও পরিবেশ ক্লাবের উপদেষ্টা, সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী অ্যাড. আকছির এম. চৌধুরী, ক্লাবের আহবায়ক সাংবাদিক রুবেল আহমেদ, আখাউড়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক কাজী হান্নান খাদেম, পরিবেশ ক্লাবের সদস্য সচিব রকিব উদ্দিন প্রমুখ।
পথসভায় বক্তারা বলেন, খননের অভাব, ময়লা আবর্জনা আর প্লাস্টিকের বর্জ্য আখাউড়ার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তিতাস নদী, হাওড়া নদী, কালন্দি খালসহ বিভিন্ন জলাশয় ভরাট হয়ে যাচ্ছে। খাল খনন করে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে। প্রকৃতিকে স্বাভাবিক রাখতে হলে মাটি, পানি এবং বায়ু এই তিনটি উপাদানকে সঠিক ভাবে পরিচর্যা করতে হবে।
পরিবেশ রক্ষার দায়িত্ব সবার। তাই প্লাস্টিক বর্জ্যের ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। গাছ কাটা বন্ধ করতে হবে। বেশি বেশি গাছ লাগাতে হবে। সবাই মিলে পৃথিবীকে বসবাসযোগ্য উপযোগী করে গড়ে তুলতে কাজ করতে হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া ও কসবায় বন্যার পানি কমতে থাকায় পরিস্থিতির আরও উন্নতি হয়েছে। গত ১২ঘণ্টায় আখাউড়ার হাওড়া নদীর পানি আরও ৪ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ৫১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে বন্যার পানিতে বিভিন্ন স্থানে সড়ক ও বাঁধ ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এছাড়া নিরাপত্তার স্বার্থে এখনও বেশ কয়েকটি গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিপাতের ফলে গত বুধবার আখাউড়ায় বন্যা সৃষ্টি হয়। এতে উপজেলার বঙ্গেরচর, কালিকাপুর, বাউতলা, আড়িয়ল ও খলাপাড়াসহ ৪০টিরও বেশি গ্রাম প্লাবিত হয়। পরদিন বৃহস্পতিবার বন্যার পানি বেড়ে পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়। তবে ঢলের পানির বেগ কমায় এবং বৃষ্টি না হওয়ায় বন্যার পানি কমতে থাকে। গতকাল শনিবার সকাল থেকে পরিস্থিতির আরও উন্নতি হয়। ইতোমধ্যে বেশিরভাগ বসা-বাড়ি থেকে পানি সরে গেছে।
তবে বন্যার কারণে আড়িয়ল ও খলাপাড়া এলায় হাওড়া নদীর দুইটি বাঁধসহ অন্তত ৮টি স্থানে সড়ক ধ্বসে পড়ে। এতে করে ওইসব সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এছাড়া পানি সরে গেলেও সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় এখনও বন্ধ রয়েছে আখাউড়া স্থলবন্দরের বাণিজ্যিক কার্যক্রম। পাশাপাশি আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট দিয়েও যাত্রী পারাপার বন্ধ রয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মনজুর আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, হাওড়া নদীর পানির সমতল হ্রাস পাওয়া অব্যাহত রয়েছে। গত সন্ধ্যা ৬টা হতে গতকাল সকাল ৬টা পর্যন্ত আরও ৪ সেঃমিঃ কমে বিপৎসীমার ৫১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বর্তমানে হাওড়া নদীর গঙ্গাসাগর পয়েন্টে পানির সমতল রয়েছে ৫ দশমিক ৫৪ মিটার। ফলে বন্যা পরিস্থিতির ক্রমশ উন্নতি হচ্ছে।
আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গাজালা পারভীন রুহি জানান, আখাউড়ার বন্যা পরিস্থিতি ক্রমশ উন্নতি হচ্ছে। বাসা-বাড়ি থেকে পানি সরে যাচ্ছে। দ্রুত ভেঙে যাওয়া বাঁধ ও সড়ক মেরামত করে যান চলাচল ও স্থলবন্দরের বাণিজ্যিক কার্যক্রম স্বাভাবিক করা হবে।
বিশেষ প্রতিনিধি :
ব্যবসায়ীদের দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর অবেশেষে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে সবজি রপ্তানি শুরু হয়েছে। আজ ৮ ফেব্রুয়ারি বুধবার তৃতীয় ধাপে পাঁচ মেট্রিক টন সবজি রপ্তানি হয়েছে ভারতে। এদিন দুপুরে বিভিন্ন সবজিবোঝাই একটি ট্রাক স্থলবন্দর দিয়ে আগরতলায় প্রবেশ করে। রপ্তানি পণ্য হিসেবে সবজিকে সম্ভাবনাময় মনে করছেন বন্দরের ব্যবসায়ী ও বন্দর কর্তৃপক্ষ।
স্থলবন্দর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে প্রথমবারের মতো সবজি রপ্তানি শুরু হয় ভারতে। এরপর বুধবার পর্যন্ত তিন ধাপে মোট ১৫ মেট্রিক টন সবজি রপ্তানি হয়েছে। প্রতি টন সবজি রপ্তানি হচ্ছে ৪০০ মার্কিন ডলারে। রপ্তানিকৃত সবজির মধ্যে আছে কচুর লতি, গাজর, পেঁয়াজ পাতা এবং উস্তা।
আখাউড়া স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী মো. নাসির উদ্দিন সবজিগুলো রপ্তানি করেছেন। তিনি মোট ২০ মেট্রিক টন সবজি রপ্তানি করবেন আগরতলায়।
নাসির উদ্দিন বলেন, আমাদের বন্দর দিয়ে আগে থেকেই সবজি রপ্তানির অনুমতি ছিল। আমরা দীর্ঘদিন ধরে সবজি রপ্তানির জন্য আগরতলার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করে আসছিলাম। এর প্রেক্ষিতে পরীক্ষামূলকভাবে ২০ টন সবজি রপ্তানি হচ্ছে। আশা করছি অন্যান্য পণ্যের মতোই নিয়মিত সবজি রপ্তানি হবে।
আখাউড়া স্থলবন্দরের সুপারিনটেনডেন্ট মো. সামাউল ইসলাম বলেন, রপ্তানি পণ্যের তালিকায় নতুন করে সবজি যুক্ত হয়েছে। এটি ব্যবসায়ী এবং বন্দর কর্তৃপক্ষের জন্য ইতিবাচক। নিয়মিত রপ্তানি হলে বন্দর কর্তৃপক্ষের রাজস্ব বাড়বে এবং সরকারও বৈদেশিক মুদ্রা পাবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আখাউড়ায় উপজেলা দিনব্যাপী প্রাণীসম্পদ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। আজ ২৫ ফেব্রুয়ারি শনিবার সকালে উপজেলা প্রাণীসম্পদ দপ্তরের উদ্যোগে প্রাণীসম্পদ চত্বরে ফিতা কেটে মেলার উদ্বোধন করেন তিনি।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আখাউড়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক তাকজিল খলিফা কাজল, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নাসরিন সফিক আলেয়া, উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ জুয়েল মজুমদার, আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আসাদুল ইসলাম প্রমুখ। প্রদর্শনীতে ২৩টি স্টল রয়েছে।
পরে অতিথিরা বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন। প্রদর্শনীতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার খামারীরা গরু, মহিষ, ছাগল, গাড়ল হাঁস-কবতুরসহ বিভিন্ন পশু প্রদর্শণ করা হয়।