এক যুগেও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি আশুগঞ্জ নৌ-বন্দরে

আশুগঞ্জ, 28 July 2023, 607 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
পূর্ণাঙ্গ নৌ-বন্দর ঘোষণার প্রায় ১ যুগ হলেও এখনো ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ নৌ-বন্দরে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। দেশের পূর্বাঞ্চলের এই নৌ-বন্দরটি দেশের অন্যান্য নৌ-বন্দরের তুলনায় অবকাঠামোগত দিক দিয়ে অনেক পিছিয়ে রয়েছে। তবে বিআইডব্লিওটিএ কর্তৃপক্ষের দাবি আধুনিকমানের প্রস্তাবিত অবকাঠামো নির্মিত হলে বর্তমানে বন্দরটিতে চলমান অনেক সমস্যারই সমাধান হয়ে যাবে।

বন্দর সংশ্লিষ্টরা জানায়, ২০১০ সালে আশুগঞ্জ নৌ-বন্দরকে পোর্ট অব কল থেকে নৌ-বন্দর ঘোষনা করা হয়। পরে ২০১১ সালে প্রথমবারের মতো ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পালাটানা বিদুৎ কেন্দ্রের জন্য মালামাল পরিবহন করা হয় এই বন্দর দিয়ে। এর পর থেকে আর্ন্তজাতিকভাবে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা করে এই নৌ-বন্দরটি। পরে ভারত এই বন্দরটি ব্যবহার করে কয়েক দফায় ভারি স্টীলজাত পন্য, খাদ্য শস্য পরিবহন করে। বর্তমানে এই নৌ-বন্দরটি দেশের অভ্যন্তরীন চাহিদার পাশাপাশি উত্তর-পূর্ব ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ন হয়ে উঠেছে। যার কারণে বন্দরটিকে নমনীয় ঋনে আধুনিকরনের উদ্যোগ নেয় ভারত সরকার। অবশ্য তার আগে থেকেই আশুগঞ্জের মেঘনা নদীর ফেরীঘাট এলাকায় নোঙর করতো পণ্যবাহী ছোট-বড় জাহাজ ও বাল্কহেড।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, ভারতের কলকাতার হলদিয়া বন্দর, বাংলাদেশের মোংলা, চট্টগ্রাম, নারায়নগঞ্জ সহ অন্যান্য নৌ-বন্দরের সাথে সহজে অভ্যন্তরীন এবং আর্ন্তজাতিক ক্ষেত্রে পন্য আমদানী- রপ্তানী হয়ে আসছে আশুগঞ্জ নৌ-বন্দরের মাধ্যমে। বর্তমানে এই বন্দরের সাথে বিভিন্ন কোম্পানী নিজেদের এজেন্টদের মাধ্যমে মালামাল সরবরাহ করে আসছেন। এর ফলে দিন দিন আশুগঞ্জ নদীবন্দর দিয়ে পণ্য পরিবহন বাড়ছে। এতে করে গুরুত্বপূর্ন হয়ে উঠেছে এই বন্দরটি।

বর্তমানে প্রতি মাসে রড, সিমেন্ট, পাথর, সার, ধান ও গমসহ বিভিন্ন পণ্য বোঝাই ছোট-বড় শতাধিক কার্গো জাহাজ আসে আশুগঞ্জ নদীবন্দরে। তবে বন্দরের জেটি সংখ্যা বৃদ্ধিসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা হলে বর্তমানের চেয়ে দ্বিগুণ জাহাজ বন্দরে আসবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

নৌ-বন্দরের কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, পর্যাপ্ত জেটির অভাবে পণ্য আনলোডিংয়ে অতিরিক্ত সময় লাগে। এতে করে জাহাজ মালিককে যেমন অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়, তেমনি বন্দরে অবস্থানকালীন বার্থিং ফিও দিতে হয় ইজারাদারকে। সবমিলিয়ে আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হন ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীরা বলেন, চাহিদা বিবেচনায় বন্দরে কমপক্ষে আরো ৫টি জেটি নির্মাণ করা প্রয়োজন। এতে করে বন্দরের বাণিজ্যিক কার্যক্রম আরও প্রসারিত হবে।

আশুগঞ্জ নৌ-বন্দরের ব্যবসায়ী আলমগীর মিয়া বলেন, পণ্য পরিবহনে আশুগঞ্জ নৌ-বন্দর ব্যবহারে চাহিদা বাড়লেও বন্দরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন এখনো হয়নি।

তিনি বলেন, বর্তমানে বন্দরে মাত্র দুটি জেটি রয়েছে। অথচ একেকটি জাহাজ থেকে পণ্য আনলোডিংয়ে সময় লাগে ৪-৫দিন। একটি জাহাজের পণ্য আনলোডিং না হওয়া পর্যন্ত অন্য জাহাজ গুলোকে বন্দরেই নোঙর করে থাকতে হয়। এতে করে নদীতে প্রায়ই জাহাজের জটলা সৃষ্টি হয়। মূলত জেটির স্বল্পতার কারণেই সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে। তিনি বলেন, নিরবচ্ছিন্ন লোড-আনলোডিংয়ের জন্য বন্দরে কমপক্ষে আরো ৫টি জেটি নির্মাণ করা প্রয়োজন। জেটি সংখ্যা বাড়লে বন্দরে বর্তমানের চেয়ে দ্বিগুণ জাহাজ আসবে বলে জানান তিনি।

বন্দরের ব্যবসায়ী মোঃ নাসির মিয়া বলেন, প্রতিষ্ঠান ১ যুগ হয়ে গেলেও নৌ-বন্দরের কাঙ্খিত অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়নি। জেটি স্বল্পতার কারনে নির্ধারিত সময়ে জাহাজ থেকে পণ্য আনলোড করা যায় না। বন্দর থেকে পণ্য পরিবহনে ব্যবহৃত ট্রাকের জন্য একটি ট্রাকইয়ার্ড প্রয়োজন বলে তিনি জানান।

ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম বলেন, বন্দরে প্রতিদিনই পন্যবাহী জাহাজ আসে। একটি জাহাজের পণ্য আনলোডিং না হওয়া পর্যন্ত অন্যান্য জাহাজগুলোকে বন্দরেই নোঙর করে রাখতে হয়। মূলত জেটি স্বল্পতার কারণেই সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে।

বন্দরের ব্যবসায়ী শাহীন শিকদার বলেন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন না হওয়ায় বন্দরটিতে কোন ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেননা ব্যবসায়ীরা। বন্দরে রয়েছে জেটি স্বল্পতা। বন্দরে পন্য খালাসের জন্যে নেই ইয়ার্ড। নৌ-বন্দরে কোনো ওয়ার হাউজ না থাকায় সার সহ বিভিন্ন পন্য খোলা আকাশের নিচে রাখতে হয়। ট্রাক ইয়ার্ড না থাকায় লোড-আনলোডের পর ট্রাকগুলোকে এলোপাথারিভাবে পুরাতন ফেরিঘাট এলাকায় রাখা হয়। তিনি বলেন, কমপক্ষে আরো ৫টি জেটি নির্মান করা হলে বন্দরের কার্যক্রমে আরো গতি আসবে।

এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ নদীবন্দরের ইজারাদার তৌহিদুল ইসলাম নাসির বলেন, ইজারা মূল্য অনুযায়ী বন্দরে তেমন কোন সুযোগ-সুবিধা নেই। পর্যাপ্ত জেটি না থাকায় পণ্য আনলোডিংয়ে বেশি সময় লাগে। তিনি বলেন, বন্দরে থাকা ২টি জেটির মধ্যে একটি জেটির অবস্থা ভালো না। এছাড়া বন্দরে ওয়্যারহাউজও নেই। এর ফলে আনলোডিংকৃত পণ্য ডেলিভারীতে বিলম্ব হলে পণ্য নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়। তিনি বলেন, বন্দরের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করলে ব্যবসা যেমন প্রসারিত হবে, তেমনি সরকারও লাভবান হবে।

এ ব্যাপারে আশুগঞ্জ শহর শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি গোলাম হোসেন ইপটি বলেন, একযুগ হয়ে গেলেও বন্দরে অবকাঠামোগত দৃশ্যমান কোন উন্নয়ন হয়নি। জেটি স্বল্পতায় নির্ধারিত সময়ে জাহাজ থেকে পণ্য আনলোড করা যায়না। বন্দর থেকে পণ্য পরিবহনে ব্যবহৃত ট্রাকের জন্য একটি ট্রাক ইয়ার্ড প্রয়োজন। তিনি বলেন, বর্তমানে বন্দরে ১ হাজার ২ শত থেকে দেড় হাজার শ্রমিক কাজ করেন।

তিনি বলেন, আশুগঞ্জ নৌ-বন্দরটি আধুনিককরন করা হলে আন্তঃদেশীয় বাণিজ্যের পাশপাশি আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও বিশেষ ভূমিকা রাখবে। বিশেষ করে উত্তর পূর্ব ভারতের যে ৭টি অঙ্গরাজ্য আছে সেখান থেকে আমাদানী-রপ্তানী কার্যক্রম জোরদার সহ ব্যবসা বানিজ্যের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্তের দ্বার উন্মেচন হবে।

এদিকে বিআইডব্লিওটিএ সূত্র জানায়, বন্দরের সমস্যা লাঘবে ভারতীয় নমনীয় ঋনে ১ হাজার ২শত কোটি টাকারও বেশি ব্যয়ে সাড়ে ৩২ একর জমির উপর আধুনিক মানের নৌ-বন্দর নির্মানের উদ্যোগ গ্রহন করেছে সরকার। তবে প্রথম দফায় আহবানকৃত দরপত্রটি বাতিল হওয়ায় বন্দরটির উন্নয়ন কাজ পিছিয়ে গেছে।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ বিআইডব্লিওটিএ ভৈরব-আশুগঞ্জ নৌ-বন্দর উপ-পরিচালক মোঃ রেজাউল করিম বলেন, আশুগঞ্জ নৌ-বন্দর আধুনিকরন কাজের প্রথম দফার দরপত্রটি সফল না হওয়ার কারণে দরপত্রটি বাতিল করা হয়েছে। দরপত্রটি ভারতীয় এক্সিম ব্যাংকের কাছে পুনরায় পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে সম্মতিপত্র পাওয়ার পর দ্রুত সময়ের মধ্যে আবারো দরপত্র আহবান করা হবে।

তিনি বলেন, সরকার দ্রুত আধুনিকরণ কাজ শেষ করতে চায়। তাই ভারত থেকে সম্মতি আসলেই দ্রুত টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষে কাজ শুরু করা হবে।

এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মোঃ শাহগীর আলম বলেন, ভূমি অধিগ্রহণসহ প্রাথমিক পর্যায়ে নৌ-বন্দর নির্মান কার্যক্রমের কাজ এগিয়েছে। বিশেষ করে ভূমি অধিগ্রহণ করে তারা বাংলাদেশ অভ্যন্তরীন নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দিয়েছেন।

তিনি বলেন, এরই মধ্যে আধুনিকমানের বন্দর নির্মানের জন্যে দরপত্র আহবান করা হয়েছিলো। তবে প্রথম দফায় প্রয়োজনীয় দরদাতা না পাওয়ার কারণে দরপত্রটি বাতিল করা হয়। ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছে পুনরায় দরপত্রের বিষয়ে সম্মতি চাওয়ায় হয়েছে। ভারতীয় এক্সিম ব্যাংকের কাছ থেকে সম্মতি পাওয়ার পর আবারো দরপত্র আহবান করা হবে।

Leave a Reply

ঈদুল ফিতরে ৫ দিন, ঈদুল আযহায়…

অনলাইন ডেস্ক : আগামী বছরের (২০২৫ সাল) সরকারি ছুটির তালিকা Read more

৩০ লাখ টাকা করে পাবে ছাত্র…

অনলাইন ডেস্ক : বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে প্রত্যেক শহীদ পরিবারকে পুনর্বাসনের জন্য Read more
ফাইল ছবি

২০২৫ সালের সরকারি ছুটির তালিকা প্রকাশ

অনলাইন ডেস্ক : ২০২৫ সালের সরকারি ছুটির তালিকা অনুমোদন করেছে Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভূমিকম্প ও অগ্নিকান্ড বিষয়ক মহড়া…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দূর্যোগ প্রশমন দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসনের Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দেশীয় অস্ত্র-নগদ টাকা উদ্ধারসহ দুই…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গত ২৪ ঘন্টায় গ্রেফতারী পরোয়ানার আসামীসহ Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অনির্দিষ্টকালের জন্য…

চলারপথে রিপোর্ট : পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তাদের বরখাস্তের প্রতিবাদে ও Read more

আন্দোলনে নিহত তানজিল মাহমুদ সুজয় এইচএসসি…

চলারপথে রিপোর্ট : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর Read more

পল্লীবিদ্যুতের ১০ জেলা কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুৎ, বিদ্যুৎ…

চলারপথে রিপোর্ট : বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কয়েকটি জেলার ১০ Read more
ফাইল ছবি

শেখ হাসিনাকে গ্রেফতারে ট্রাইব্যুনালের পরোয়ানা

অনলাইন ডেস্ক : পদত্যাগের পর দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী Read more

ভারত ৪৬ রানে অলআউট

অনলাইন ডেস্ক : ঘরের মাঠে বাংলাদেশের বিপক্ষে দাপট দেখিয়েছিল ভারত। Read more

কসবায় ২০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি বিদ্যুৎ…

চলারপথে রিপোর্ট : অস্ত্র মামলায় ২০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত মো. মোস্তাফিজুর Read more
ফাইল ছবি

৮ জাতীয় দিবস বাতিল করে আদেশ…

অনলাইন ডেস্ক : আটটি জাতীয় দিবস বাতিল করে আদেশ জারি Read more

ফসলি জমি থেকে বালু উত্তোলন, হুমকির মুখে আশপাশের জমি

আশুগঞ্জ, 21 July 2023, 587 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার তালশহর ইউনিয়নের নাওঘাট গ্রামের ফসলি জমির মাঝখানে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলছে। এতে ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়ে হুমকির মুখে পড়েছে আশপাশের জমিগুলো।

বালু উত্তোলন বন্ধে আনিছুর রহমানসহ কয়েকজন কৃষক উপজেলা নির্বাহীর কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মো. মাসুদ মিয়া নামে এক প্রভাবশালী ব্যক্তি তার মালিকাধীন জমি থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করছেন। যার চারদিকে অনেক কৃষকের জমি রয়েছে। অনেক বার নিষেধ করার পরও তিনি কারও কথা তোয়াক্কা করছেন না। ফলে আশপাশের ফসলি জমিগুলো ভেঙ্গে বড় ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। অবৈধ ড্রেজার দ্বারা ফসলি জমি থেকে বালু উত্তোলন বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন কৃষকরা।

গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিন নাওঘাট গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ফসলি জমির মাঝখানে বসানো হয়েছে ড্রেজার মেশিন। এ মেশিনের মাধ্যমে খনন যন্ত্রের সাহায্যে তোলা হচ্ছে বালু। সে বালু জমানো হচ্ছে পার্শ্ববর্তী বাজারের একটি খালি জায়গায়। ফলে আশপাশের অন্যান্য জমিগুলোর আইল ভাঙ্গনসহ বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে। এতে কৃষকরা দুঃচিন্তায় পড়েছেন। এর আগেও বেশ কয়েকটি ফসলি জমি থেকে বালু উত্তোলন করে পুকুর বানানো হয়েছে।

বেশ কয়েকজন কৃষক অভিযোগ করে বলেন, প্রভাবশালী ব্যক্তি মাসুদ কাউকে তোয়াক্কা না করেই দিনে রাতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছেন। এতে কোনো কৃষকই ফসল করতে পারবে না। মাসুদ মিয় লাভবান হবেন। কারণ, তিনি পুকুর বানিয়ে মাছ চাষ করবেন। কিন্তু আশপাশের কোনো কৃষক লাভবান হবেন না। ড্রেজার দিয়ে অতিরিক্ত মাটি কাটার ফলে জমি গভীর হয়। ফলে অন্য জমিগুলোর পাড় ভেঙ্গে যায়। এই চক্রটি প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই এই কাজটি করছে। আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানাই, অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করে কৃষকদের ফসলি জমিগুলো যাতে রক্ষা করা হয়।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মাসুদ মিয়া বলেন, আমি এখানে পুকুর বানাব, সেজন্য বালু উত্তোলন করছি।

এ বিষয়ে আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে নিয়োজিত সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাজী তাহমিনা সারমিন বলেন, ড্রেজার দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিষয়ে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, উপজেলার বিভিন্ন স্থানে এভাবেই ফসলি জমি থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। প্রশাসন এ বিষয়ে তেমন কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে তাদের অভিযোগ।

শপথ নিলেন নবনির্বাচিত ছয় সংসদ সদস্য

আশুগঞ্জ, জাতীয়, সরাইল, 8 February 2023, 2489 Views,

চলারপথে ডেস্ক :
একাদশ জাতীয় সংসদের উপনির্বাচনে নির্বাচিত ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের সংসদ সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ (জাতীয় পার্টি), বগুড়া-৪ আসনের এ কে এম রেজাউল করিম তানসেন (জাসদ), বগুড়া-৬ আসনের রাগেবুল আহসান রিপু (বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ), চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের মু. জিয়াউর রহমান (বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ), চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের মো. আব্দুল ওদুদ (বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ) এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের আবদুস সাত্তার ভূঞা (স্বতন্ত্র) শপথবাক্য পাঠ করেছেন। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী আজ ৮ ফেব্রুয়ারি বুধবার তাঁর সংসদ ভবন কার্যালয়ে তাদের শপথ পাঠ করান।

বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের সচিব কে এম আব্দুস সালাম শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।

শপথ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মো. শামসুল হক টুকু, চীফ হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী, হুইপ ইকবালুর রহিম, হুইপ আতিউর রহমান আতিক, সংসদ সদস্য মো. মুজিবুল হক চুন্নু, শিরীন আখতার, ফখরুল ইমাম, সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল, উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম (শিউলী আজাদ) ও ফেরদৌসী ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

শপথ গ্রহণ শেষে নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যরা রীতি অনুযায়ী শপথ বইয়ে স্বাক্ষর করেন।

এ সময় সংসদ সচিবালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

হাজার হাজার মানুষের ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হলেন মঈন উদ্দিন মঈন

আশুগঞ্জ, রাজনীতি, 9 January 2024, 693 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
হাজার হাজার মানুষের ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (আশুগঞ্জ-সরাইল) আসন থেকে নির্বাচিত স্বতন্ত্র কলার ছড়ি প্রতীকের প্রার্থী মঈন উদ্দিন মঈন।

গত সোমবার ও মঙ্গলবার আশুগঞ্জ ও সরাইল উপজেলা থেকে দিনভর সাধারণ মানুষ, সুশীল সমাজ ও নেতাকর্মীরা স্বত:স্ফূর্তভাবে উপস্থিত হয়ে প্রিয় নেতাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। এসময় নবনির্বাচিত এমপি মঈন উদ্দিন মঈনকে প্রীতি ও শুভেচ্ছা নিবেদন করেন।

গত রবিবার সন্ধ্যার পর থেকেই এই আসনের বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে ভোটের ফলাফল আসতে থাকলে বিভিন্ন এলাকা থেকে শতশত মানুষ বিজয় মিছিল করে জননেতা মঈন উদ্দিন মঈনকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানাতে থাকেন।

স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, শিক্ষাগত যোগ্যতা, পরিচ্ছন্ন ব্যক্তিত্ব, বিনয়, সততা, স্পষ্টবাদিতা ও জনপ্রিয়তা এবং প্রার্থীর প্রতি তরুণ-যুবসমাজ আকৃষ্ট হওয়া ইত্যাদি কারণে মঈন উদ্দিন জয়ী হয়েছেন।

উল্লেখ্য, মঈন উদ্দিন মঈন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জহিরুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ছিলেন। স্কুলজীবন থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হন তিনি। ১৯৯০ সালের আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রলীগের আলম-কামরুল-মেহেদী পরিষদে ছাত্র মিলনায়তন সম্পাদক পদে নির্বাচন করেছিলেন তিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হিসাববিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করেছেন তিনি।

স্টাফ রিপোর্টার:
দেশে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধী টিকার বুস্টার ডোজ পেয়েছেন ৬ কোটি ৪২ লাখ ৬১ হাজার ৯১৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় বুস্টার ডোজ পেয়েছেন ১ লাখ ১ হাজার ৬৫৮ জন। রোববার (১১ ডিসেম্বর) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন শাখার (এমআইএস) পরিচালক ও লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. মো. শাহাদাত হোসেন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা যায়। এতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে প্রথম ডোজ পেয়েছেন ১৫ হাজার ৮৪৮ জন এবং দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ২১ হাজার ৭৮১ জন। তাদেরকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা, সিনোফার্ম, ফাইজার, মডার্না এবং জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছেন ১৪ কোটি ৮৮ লাখ ৫৬ হাজার ৪৯২ জন এবং দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ১২ কোটি ৬৪ লাখ ৫৮ হাজার ৮৪৮ জন। এ সময়ে টিকার বুস্টার (তৃতীয়) ডোজ পেয়েছেন ছয় কোটি ৪২ লাখ ৬১ হাজার ৯১৪ জন।
২০২১ সালের ১ নভেম্বর ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের টিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়। এখন পর্যন্ত এক কোটি ৭৩ লাখ ৯৭ হাজার ৫৩৯ শিক্ষার্থী টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছে। দ্বিতীয় ডোজ পেয়েছে ১ কোটি ৬১ লাখ ৯৮ হাজার ৩২৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে প্রথম ডোজ পেয়েছেন ২৪২ শিক্ষার্থী। দ্বিতীয় ডোজ টিকা পেয়েছেন ৬৮৯ শিক্ষার্থী। তবে এখন পর্যন্ত কোনো শিক্ষার্থীকে বুস্টার ডোজ দেওয়া হয়নি।
এদিকে, এখন পর্যন্ত ৫ থেকে ১১ বছর বয়সী শিশুদের টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে ১ কোটি ৭৫ লাখ ৩৫ হাজার ৮০০টি। এছাড়া দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে ১০ লাখ ৩৩ হাজার ৪২১ শিশুকে। অন্যদিকে, এখন পর্যন্ত ভাসমান জনগোষ্ঠীর ৫ লাখ ৭৭ হাজার ১৮০ জনকে জনসন অ্যান্ড জনসনের সিঙ্গেল ডোজের টিকা দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে বুস্টার ডোজ পেয়েছেন ১৪ হাজার ৭৭০ জন।

বাহাদুরপুরে ইট ভাটাকে দেড় লক্ষ টাকা জরিমানা

আশুগঞ্জ, 20 February 2024, 374 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপ‌জেলার বাহাদুরপুর এলাকায় আশুগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় পরিবেশ অধিদপ্তর ব্রাহ্মণবাড়িয়া মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন।

১৯ ফেব্রুয়ারি সোমবার অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে পরিচালিত মোবাইল কোর্টে মেসার্স স্টার ব্রিকস নাম ভাটাকে ১ টি মামলায় ১,৫০,০০০ টাকা জরিমানা ধার্যপূর্বক আদায় করা হয়। একই সা‌থে ৮ টি ভাটাকে ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) ২০১৩ ( সংশোধিত ১০১৯) মেনে ভাটা পরিচালার বিষয়ে সতর্ক করা হয়।

উপজেলা প্রশাসনের বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এর দায়িত্ব পালন করেন কাজী তাহমিনা সারমিন। পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী প‌রিচালক বিসল চক্রবর্ত্তী ও বাংলা‌দেশ পু‌লিশ বা‌হি‌নীর সদস্যরা সহযোগিতা করেন।
এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান ব্রাহ্মণবা‌ড়িয়া প‌রি‌বেশ অধিদপ্তর।