চলারপথে রিপোর্ট :
বাঞ্ছারামপুর উপজেলার গলাচিপা বিলে বাঁধ দিয়ে মাছ মাছ ধরছেন ইজারাদার। বাঁধের কারণে নৌচলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। বাঁধের দু’পাশে কচুরিপানা আটকে ফসলি জমিতে উঠে যাচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রূপসদী ইউনিয়নের হোগলাকান্দি গ্রামের পশ্চিমপাশে রূপসদী মৌজায় গলাচিপা বিল। এর পাশে ছলিমাবাদ ইউনিয়নের পাঠামারা, রূপসদী ইউনিয়নের খাউরপুরা, হোগলাকান্দি ও রূপসদী গ্রাম। গ্রামগুলোতে অবস্থিত বাজারে বর্ষাকালে নৌকা দিয়ে পণ্য আনা-নেওয়া করেন ব্যবসায়ীরা। চলতি বছর ২২ একর আয়তনের বিলটি ৫৩ হাজার ৩০০ টাকায় ইজারা নেন রূপসদী ইউপির ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য রবীন্দ্র দাস। ইজারা নিয়ে বিলের দক্ষিণ ও উত্তরপাশে বাঁশ ও জাল দিয়ে আড়াআড়ি বাঁধ নির্মাণ করেন। বাঁধের কারণে নৌচলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। দুর্ভোগে পড়েছেন চার গ্রামের মানুষ।
গলাচিপা বিলে গিয়ে দেখা গেছে, হোগলাকান্দা বাঞ্ছারামপুর সড়কের গলাচিপা সেতুর দক্ষিণপাশে বাঁশ ও জাল দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। বিলে কোনো নৌকা প্রবেশ করতে পারছে না। বিলের উত্তরপাশেও বাঁশ ও জাল দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। এই বাঁধের কারণে রূপসী দক্ষিণপাড়া জামাই বাজার, হোগলাকান্দা বাজার, দক্ষিণ বাজার ও খাউয়ূরপুরা বাজারের ব্যবসায়ীরা নৌপথে পণ্য আনতে পারছেন না। বাঁধের কারণে কচুরিপানা সরতে না পারায় ফসলি জমিতে উঠে যাচ্ছে।
খাউয়ূরপুরা গ্রামের কৃষক লিল মিয়া জানান, বাঁধের কারণে কচুরিপানা সরতে না পেরে বর্ষার পানি বাড়ায় তা ফসলি জমিতে উঠে গেছে। ধইঞ্চা, পাট ও ধানক্ষেতের অবস্থা খুবই খারাপ।
হোগলাকান্দি গ্রামের সুমন মিয়া বলেন, ‘বর্ষাকালে আমরা নৌকা দিয়ে পাশের জমিতে ও খালে মাছ ধরতাম। কিন্তু বিলে বাঁধ দেওয়ার কারণে নৌকা নিয়ে কোথাও যেতে পারছি না। বর্ষাকাল এলে আমরা এটার ওপরেই চলতাম। এখন মাছ ধরতে না পারায় পরিবার নিয়ে খুব কষ্টে আছি।’
রূপসদী দক্ষিণপাড়া জামাই বাজারের ব্যবসায়ী মিন্টু মিয়ার দাবি, বর্ষাকালে গলাচিপা বিল দিয়ে নৌকায় করে পণ্য বহন করতেন তারা। কিন্তু এখন বিলে বাঁধ থাকায় পণ্য বহন করতে পারছেন না। এতে অনেকদূর ঘুরে পণ্য আনতে হচ্ছে। ফলে খরচ অনেক বেড়ে গেছে।
গলাচিপা বিলের ইজারাদার রবীন্দ্র দাস জানান, বিল থেকে অবৈধভাবে বালু তোলার কারণে সময়মতো মাছ ধরতে পারেননি। ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বিলে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করতে হচ্ছে। এতে কারও ক্ষতি হচ্ছে না। বিলের পাশের জমিও বিলের আওতায়, তাই সেখানেও বাঁধ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে ভূমি অফিসের লোকজনও জানে। তবে গলাচিপার বিলে বাঁধের বিষয়টি জানা নেই বলে দাবি করেছেন রূপসদী ইউনিয়ন উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান।
রূপসদী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিমের ভাষ্য, বিলে বাঁধ দেওয়ার বিষয়টি তাঁকে অনেকে জানিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে ইউএনওর সঙ্গে আলাপ করতে হবে। বাঁধ দেওয়ার কারণে এই এলাকার মানুষের নৌচলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সাঈদা আক্তার জানান, প্রবহমান জলাধারের কোনো জায়গায় বাঁধ দিয়ে মাছ চাষের সুযোগ নেই।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাজী আতিকুর রহমান বলেন, ‘বাঁধ দেওয়ার বিষয়টি জানি না। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেব।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ কি মিত্র চাকমার ভাষ্য, বিলে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করা যাবে না। বিশেষ করে নৌচলাচল ব্যাহত হয় এমন কোনো কাজ করা যাবে না। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
দেশের শীর্ষস্থানীয় মিডিয়া হাউজ ইস্ট ওয়েষ্ট মিডিয়া গ্রুপ কমপ্লেক্সে দুর্বৃত্তদের হামলার ঘটনার প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুরে সাংবাদিকবৃন্দ ও ছাত্র জনতা মানববন্ধন করেছে। আজ ১ সেপ্টেম্বর রবিবার বাঞ্ছারামপুর সরকারি কলেজ মাঠে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এ ঘটনায় হামলায় জড়িতদের সঠিক তদন্তের মাধ্যমে অবিলম্বে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি করেছেন বক্তারা। সাংবাদিকরা সরকারের কাছে বাংলাদেশের সকল সাংবাদিক এবং মিডিয়া প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তার নিশ্চিতে জোর দাবি জানান।
এতে উপস্থিত ছিলেন এম এ আউয়াল, রিপন মিয়া, মো. জহিরুল হক, মোল্লা মোঃ নাছির, দিলীপ কুমার সূত্রধর, মীর মোশারফ হোসনে, মোঃ শামিম শিবলী, মোঃ শফিকুল ইসলাম, সুমন চক্রবর্তী, আশিকুর রহমান, মাহবুবুর রহমান বাবু, মোঃ নাছির উদ্দিন, মোঃ বাহারুল ইসলাম, মোঃ পলাশ সরকার এবং আতাউর রহমান সনেট প্রমুখ।
বাঞ্ছারামপুর সরকারি কলেজের একাডেমিক কাউন্সিলের সম্পাদক ও হিসাব বিজ্ঞান বিভিাগরে বিভাগীয় প্রধান মো. চাঁন মিয়া সরকার বলেন, হামলাকারীদের সঠিক তদন্তের মাধ্যমে বিচারের আওতায় এনে বিচার করতে হবে। তা না হলে মিডিয়া প্রতিষ্ঠান ও সাংবাদিকরা উভয়ই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ঝুঁকি নিয়ে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ সংগ্রহ ও পরিবেশন করতে উৎসাহ হারাবে সাংবাদিকরা।
চলারপথে রিপোর্ট :
নতুন সেতু নির্মাণ করতে হবে। তাই ভেঙে ফেলা হয় বেইলি সেতু। এর কয়েক মাস পেরিয়ে গেলেও নির্মাণকাজ শুরু হয়নি। বিকল্প রাস্তা নির্মাণ না করেই সেতুটি ভেঙে ফেলায় দুর্ভোগে পড়েছেন মানুষ।
বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ফরদাবাদ গ্রামের বেইলি সেতুটি গত জানুয়ারি মাসের শেষ দিকে ভেঙে ফেলেন ঠিকাদার। ঢাকা-বাঞ্ছারামপুর-মুরাদনগর-কুমিল্লা সড়কে ছিল সেতুটি। বিকল্প সড়ক নির্মাণ না করায় ঝুঁকি নিয়ে পাশের কাঁচা মাঠ দিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। কোনো রকম ঘোষণা ছাড়াই ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক ও জনপথ বিভাগ বেইলি সেতুটি ভেঙে ফেলায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিতাস নদী থেকে বারিয়াদহ বিলের সঙ্গে যুক্ত খালের ওপর একটি বেইলি সেতু ছিল। ১৯৯০ সালে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। এই সেতু দিয়ে ঢাকার সঙ্গে বাঞ্ছারামপুর, মুরাদনগর, দেবীদ্বার, নবীনগর, হোমনা উপজেলার সড়ক যোগাযোগ রয়েছে। ফরদাবাদ গ্রামের শান্তির বাজারসংলগ্ন খালটির ওপর ৩১ দশমিক ৪২ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১০ দশমিক ২৫ মিটার প্রস্থের সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। ৫ কোটি ৯৬ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করছে আমিনুল হক প্রাইভেট লিমিটেড ও হাসান টেকনো বিল্ডার্স (জেবি) নামে দুটি প্রতিষ্ঠান। গত ২ জানুয়ারি কার্যাদেশ পায় প্রতিষ্ঠান দুটি। কাজটি ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি শেষ করতে হবে।
সরেজমিন দেখা গেছে, পুরোনো বেইলি সেতুটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। এখনও নির্মাণ হয়নি বিকল্প সড়ক। এ কারণে রাস্তার পাশের ফরদাবাদ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ দিয়ে যাতায়াত করছে যানবাহন। মাঠের নরম মাটিতে যানবাহন প্রায়ই আটকে গিয়ে দীর্ঘ যানজট তৈরি হচ্ছে। বৃষ্টির কারণে বড় বড় গর্ত ও মাটি কাদা হয়ে যাওয়ার কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। দুই মাস ধরে সেতুর কাজ বন্ধ রয়েছে। মাটি কাটার কারণে সেতুর দক্ষিণ পাশের ফরদাবাদ আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের দ্বিতল মার্কেটের দুটি কলামের মাটি সরে গিয়ে বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। উত্তর পাশের আলমগীর হোসেনের বাড়িতে নির্মিত মার্কেটের তলার মাটি সরে গিয়ে মার্কেটে ফাটল দেখা দিয়েছে। কয়েকটি দোকানের ভাড়াটিয়া তাদের মালপত্র নিয়ে সরে গেছে।
ফরদাবাদ গ্রামের দেলোয়ার হোসেন বলেন, গত জানুয়ারি মাসে কাজ শুরু হলেও কিছুদিন পর কাজ বন্ধ হয়ে যায়। বিকল্প সড়ক নির্মাণ না হওয়ায় ঝুঁকি নিয়েই যানবাহনগুলো স্কুলের মাঠ দিয়ে যাচ্ছে। এতে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। যানবাহন চলার কারণে মাঠে খেলাধুলা করতে পারছে না শিক্ষার্থীরা।
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় মুরাদনগর উপজেলার রামচন্দ্রপুর বাজারের ব্যবসায়ী কবির হোসেনের সঙ্গে। তাঁর ভাষ্য, বৃষ্টি হলেই মালবাহী ট্রাক মাঠের কাদামাটিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকছে। এমন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বিকল্প সড়ক নির্মাণ না করেই সেতুটি ভাঙা কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালিপনা।
সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক বাবু মিয়া বলেন, হটাৎ করে সেতুটি ভেঙে ফেলায় ও বিকল্প সড়ক নির্মাণ না করায় এই সড়ক দিয়ে যেতে অনেক বেগ পেতে হচ্ছে। প্রায়ই ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকতে হচ্ছে।
তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দুটির স্থানীয় প্রতিনিধি মোস্তফা কামালের দাবি, জায়গা না থাকায় বিকল্প সড়ক নির্মাণ করা হয়নি। স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেই মাঠ দিয়ে রাস্তা নেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে এই জায়গায় ইট-সুরকি ফেলে দেওয়া হবে।
পাশের ভবনগুলোতে ফাটল ও ঝুঁকির বিষয়ে তাঁর বক্তব্য, উন্নয়নকাজের সময় কিছু সমস্যা হতে পারে। ৭-৮ মাস ধরে নির্মাণসামগ্রী এনে রাখা হয়েছে। কিন্তু বিদ্যুতের খুঁটির কারণে কাজ করা যাচ্ছে না।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, যাবতীয় কাজের দায়িত্ব ঠিকাদারের। দ্রুত সময়ের মধ্যে বিকল্প সড়ক নির্মাণ করার জন্য তাঁকে বলে দেওয়া হবে।
স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাশেমকে (৭৩) রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে। শনিবার দিবাগত রাত ৯টার দিকে উপজেলার শাহবাজপুর গ্রামে নিজ বাসভবনে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। পারিবারিক সূত্র জানায়, আবুল হাশেম দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। গত শনিবার রাতে নিজ বাসভবনে তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। গতকাল রোববার দুপুরে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের মাঠে তাকে নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মুহাম্মদ সরওয়ার উদ্দীনের নেতৃত্বে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেয়া হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মো. ইসমত আলী, সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসলাম হোসেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ৫ ছেলেসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুরে প্রেম করে বিয়ে করে পারিবারিক কলজের জেরে এক সাথে কেড়ির ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করেছে স্বামী সিয়াম (১৯) ও তার স্ত্রী শাহিনুর (১৯)।
আজ ৬ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ তাদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে পাঠিয়েছে। এরআগে, সোমবার রাতে উপজেলা সদরে এই ঘটনা ঘটে।
মৃত সিয়াম বাঞ্ছারামপুর উপজেলা সদরের মৃত রফিক মিয়ার ছেলে ও শাহিনুর একই এলাকার সফিকুল ইসলাম।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শাহিনুরের আপন খালার স্বামীর নাম সুজন মিয়া। আর সুজন মিয়ার ছোট ভাইয়ের নাম সিয়াম। সিয়াম ও শাহীনুর সম্পর্কে মামা-ভাগ্নি। পরে সিয়ামের সাথে শাহিনুরের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উছে। গত ৬/৭ মাস আগে তারা পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে। বিয়ের পর সিয়াম তার স্ত্রী শাহিনুর ও মাকে নিয়ে বাসা ভাড়ায় বসবাস করে আসছেন। কিন্তু তাদের বিয়ে মেনে নিতে পারেনি পরিবার। এনিয়ে দুই পরিবারের মাঝে কলহ লেগে থাকতো। এরই জের ধরে সোমবার রাতে সিয়াম ও শাহিনুর চালে দেওয়ার কেড়ি পোকার ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। অসুস্থ্য অবস্থায় স্থানীয়রা তাদেরকে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদেরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেণ। পরে ঢাকায় নেয়ার পথে শাহিনুর মৃত্যুবরণ করেন এবং নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ হাসপাতালে সিয়াম মৃত্যুবরণ করেন।
এ ব্যাপারে বাঞ্ছারামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মহিউদ্দিন বলেন, সিয়ামের লাশ সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ ময়নাতদন্তসহ যাবতীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রঞন করেছে এবং শাহিনুরের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় বাঞ্ছারামপুর থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।
স্টাফ রিপোর্টার:
বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) আরো ১০টি পণ্যকে মান সনদের আওতায় এনেছে। বিএসটিআই’র সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী কাউন্সিলের ৩৭তম সভায় বাধ্যতামূলক মান সনদের তালিকায় ১০টি নতুন পণ্যকে মান সনদের অন্তর্ভূক্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রোববার রাজধানীর তেজগাঁওস্থ বিএসটিআই’র প্রাধন কার্যালয়ে এই প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী কাউন্সিলের এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। শিল্পমন্ত্রী ও বিএসটিআই কাউন্সিলের চেয়ারম্যান নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এ সভায় সভাপতিত্ব করেন। নতুন যে ১০টি পণ্য মান সনদের আওতায় আনা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে ডিসপোজেবল ডায়াপারস, ফেসওয়াস, পেট্রোলয়িাম জেলি, রুটি (ফ্ল্যাটব্রেড/ টরটিলা), এ্যারোসলস, গিজার, শেভিং ফোম/জেল, আই কেয়ার, হেয়ার ডাইস লিকুইড ও শু-পলিশিং লিকুইড। বর্তমানে বিএসটিআই’র বাধ্যতামূলক মান সনদের আওতাভুক্ত পণ্যের সংখ্যা ২২৯টি। বিএসটিআই কাউন্সিলের প্রথম ভাইস চেয়ারম্যান শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার এমপি, দ্বিতীয় ভাইস চেয়ারম্যান শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা এ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া, এ সভায় শিল্প, স্বরাষ্ট্র, অর্থ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ, বাণিজ্য, বস্ত্র ও পাট, তথ্য, কৃষি, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, আইসিটি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, তথ্য অধিদপ্তর, বাংলাদেশ টেলিভিশন, কৃষি গবেষণা কাউন্সিল, বিসিএসআইআর, আমদানি ও রপ্তানি নিয়ন্ত্রক, ইপিবি এবং এমসিসিআই, ক্যাবসহ কাউন্সিলের সদস্য প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। বিএসটিআই’র মহাপরিচালক ও কাউন্সিলের সদস্য সচিব মোঃ আবদুস সাত্তার এ সভা পরিচালনা করেন।
সভাপতির বক্তৃতায় শিল্পমন্ত্রী বলেন, বিএসটিআই সকলের জন্য একটি আস্থার জায়গা তৈরি করেছে। পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণে বিএসটিআইকে আরও সক্রিয় ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। অভ্যন্তরীণ বাজার এবং রপ্তানির ক্ষেত্রে পণ্যের গুণগত মান নিয়ন্ত্রণ করা এবং মানসম্মত পণ্য উৎপাদনে সহায়ক ভূমিকা রাখতে হবে। তিনি বলেন, বর্তমান বিশ্বে হালাল পণ্যের সার্টিফিকেশন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিএসটিআইকে পণ্যের হালাল সার্টিফিকেশনের ক্ষেত্রে গুণগত মান ঠিক রেখে এগিয়ে যেতে হবে।
জনগণের স্বার্থ রক্ষার্থে প্রয়োজনে বিএসটিআইকে আরও কঠোর ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানিয়ে কাউন্সিলের প্রথম ভাইস চেয়ারম্যান ও শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, ব্যবসায়ীরা করোনা মহামারিকে পূঁজি করে অতিরিক্ত মুনাফা করেছে। তারা পণ্যে ভেজাল দিচ্ছে, সিন্ডিকেট করছে। তিনি বলেন, ১৭ কোটি মানুষকে রক্ষায় বিএসটিআইকে দায়িত্ব নিতে হবে। স্বাস্থ্যসম্মত খাবার নিশ্চিত করতে হবে। এ লক্ষ্যে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সাথে সমন্বয় রেখে পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণে বিএসটিআইকে কাজ করতে হবে।
কাউন্সিল সভার পরে শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বিএসটিআই’র ৯১ জন নবনিযুক্ত কর্মকর্তার নিয়োগ, যোগদান এবং প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, বিএসটিআই’র মহাপরিচালক, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জনেন্দ্র নাথ সরকারসহ শিল্প মন্ত্রণালয় এবং বিএসটিআই’র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।