চলারপথে রিপোর্ট :
সঠিক তদারকির অভাবে এবং অযত্ন ও অবহেলায় অস্তিত্ব হারাতে বসেছিল কালের সাক্ষী হয়ে থাকা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার হরিপুর জমিদার বাড়ি। ৭৫ বছর ধরে বেদখলে ছিল বিশালাকার বাড়িটি।
সম্প্রতি হরিপুর বড় বাড়ি সংরক্ষণে উদ্যোগ নিয়েছে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ। অবৈধ দখল উচ্ছেদের পর এবার শীঘ্রই সংস্কারের কাজে হাত দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
১৮শ শতাব্দীতে জেলার নাসিরনগর উপজেলায় তিতাস নদীর পাড়ে প্রায় ৪৮০ শতাংশ জমিতে জমিদার কৃষ্ণপ্রদাস রায় চৌধুরী ও গৌরীপ্রসাদ রায় চৌধুরী দৃষ্টিনন্দন এ বাড়িটি নির্মাণ করেন।
জানা যায়, ১৯৪৭ সালে দেশ ভাগের পর জমিদার পরিবারের লোকজন বাড়িটিতে কয়েকজন পুরোহিতদের রেখে কলকাতায় চলে যান। এরপর পুরোহিতদের বংশধরদের পাশাপাশি স্থানীয় কিছু মুসলিম পরিবার দখল নিয়ে বসবাস শুরু করেন সেখানে। সেই থেকে প্রায় ৭৫ বছর ধরে বাড়িটি ছিল বেদখলে। এতে বাড়িটি দিনের পর দিন বিলুপ্তির পথে যেতে থাকে। তবে সম্প্রতি জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বাড়িটির দখলে থাকা পরিবারগুলোকে অন্যত্র পুনর্বাসিত করা হয়। এরপরই নেওয়া হয় বাড়িটি সংস্কারের উদ্যোগ।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, তিতাসের পূর্বপ্রান্তে এত বড় বাড়ি আর কোথাও নেই। কারুকাজ খচিত ৬০টি কক্ষ বিশিষ্ট বাড়িটিতে রং মহল, দরবার হল, নাচ ঘর, পুকুর, খেলার মাঠ, মন্দির ও সীমানা প্রাচীর রয়েছে। তবে এর অনেক অংশ ভেঙে ফাটলও ধরেছে। লাল ইট সুরকির গাঁথুনি দিয়ে তৈরি ভবনের দু’পাশে কৃষ্ণ প্রসাদ রায় চৌধুরী ও গৌরী প্রসাদ রায় চৌধুরীর দুটি সমাধি সুউচ্চ মঠ রয়েছে। বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটকরা এখানে এসে ঘুরে ঘুরে পুরো রাজবাড়ির সৌন্দর্য দেখছেন। অনেকে আবার মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. গোলাপ মিয়া বলেন, হরিপুর রাজবাড়ি এটি আমার জন্মের আগে নির্মিত। এই বাড়িটি দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত ছিল। বাড়িটিতে বহিরাগত লোকেরা থাকতেন। তবে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দখলে থাকা বহিরাগতদের আশ্রয়ণ প্রকল্পে জায়গা দিয়ে তাদের উচ্ছেদ করা হয়। আমাদের দাবি, এই বাড়ি যেন পুনঃসংস্কার করে দেয়। তাহলে আমাদের তিতাসের পূর্ব পাড়ে অতীতের একটি স্মৃতি থাকবে।
স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দা আব্দুল জব্বার বলেন, দীর্ঘ কয়েক যুগ ধরে বাড়িটি পরিত্যক্ত। এই বাড়িটি চুনকাঠ ও বীমের উপর দাঁড়িয়ে আছে। যেকোনো সময় একটি বড়ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। আমি চাই, সরকার যেন দ্রুত এই বাড়িটি সংস্কার করে দেয়। বাড়িটি সংস্কার করে দিলে দর্শনার্থীর সংখ্যা আরো বাড়বে। আমাদের এলাকার উন্নয়ন হবে।
ঘুরতে আসা কয়েকজন পর্যটক বলেন, আমরা হরিপুর জমিদার বাড়ি দেখতে এসেছি। দেখলাম এখানে অনেক ঐতিহাসিক নিদর্শন রয়েছে। রাজমহল, রঙমহল, দরমহলসহ প্রতিটি দেওয়ালে বিভিন্ন প্রকার কারুকাজ করানো রয়েছে। বাড়িটি অনেক পুরোনো হওয়ায় জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। যেকোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে। তবে বাড়িটির ফটকের সামনে যদি এর ইতিহাস লিখে রাখা হয় তাহলে পর্যটকরা এসে এর সঠিক তথ্য জানতে পারবে। বাড়িটি যদি দ্রুত সংস্কার করা যায় তাহলে ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসেবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম দেখতে পারবে।
জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম বলেন, হরিপুর জমিদার একটি দর্শনীয় স্থান। এটা প্রত্নতত্ত্বের একটা গুরুত্ব আছে। জমিদার বাড়িতে যেসব বহিরাগত পরিবার ছিল তাদের আশ্রয়ণ প্রকল্পে জায়গা দিয়ে ওখানে স্থানান্তর করা হয়েছে। এর মধ্যে হিন্দু ব্রাহ্মণ পরিবার ছিল তারা নিজেরাই চলে গেছেন।
বাড়িটি সংস্কারের বিষয়ে প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের মহাপরিচালক চন্দন কুমার দে বলেন, আমাদের যে সরকারি রাজস্ব ফান্ড আছে তা থেকে এই বছরই আমরা বাড়িটির সংস্কার কাজ শুরু করব। আমরা প্রকল্প তৈরির চেষ্টা করছি। খুব দ্রুত প্রকল্পটা আমাদের মন্ত্রণালয়ে আমরা পাঠিয়ে দেব। আসা করছি প্রকল্পটা অনুমোদন হলে একটা বড় আকারের কাজ করতে পারব। বাড়িটি যেভাবে আছে আমরা ঠিক সেই ভাবে রেখেই সংস্কার কাজ করব।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালেদ বলেন, প্রত্নতাত্ত্বিক সংরক্ষার একটি আইন বা ব্যবস্থা আছে যা সারা বিশ্বে একই নিয়ম। সেভাবেই আমরা এটি সংস্কার করব।
চলারপথে রিপোর্ট :
নাসিরনগরে কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে।
১১ জুন মঙ্গলবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার মাওলানা আবু আহমেদ কল্যাণ ট্রাষ্ট নামে একটি শিক্ষা ও সেবামূলক সংস্থার উদ্যোগে উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে সংবর্ধনা ও বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
কল্যাণ ট্রাষ্টের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা আবু আহমেদের সভাপতিত্বে সাংবাদিক মনিরুল হোসাইন ও তম্ময় আহমেদের যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা মো: ইমরানুল হক ভূইয়া। বিশেষ অতিথি ছিলেন সহকারী কমিশনার ভূমি কাজী রবিউস সারোয়ার, জেলা পরিষদের সংরক্ষিত আসনের সদস্য এম.বি কানিজ, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: আজহারুল ইসলাম ভূইয়া, তুরস্কের মানবিক সেচ্ছাসেবী সংস্থা রিভাত এর প্রতিনিধি মোস্তুফা ইরোগলু, বিল্লাল ইরোগলু, হাফেজ মোহাম্মদ যুগনিউল হাসান ও প্রেসক্লাব সভাপতি সুজিত কুমার চক্রবর্তী। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মাওলানা আবু আহমেদ কল্যাণ ট্রাষ্টের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু বক্কর সিদ্দিক।
অনুষ্ঠানে ২০২৪ সালের এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ৪৫ জন শিক্ষার্থীকে স্কুল ব্যাগ, ক্রেস্ট ও নগদ অর্থ প্রদান করা হয়। এ সময় শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক ও স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
নাসিরনগর প্রতিনিধি :
নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে থেকে আফিলা আক্তার (৪০) নামে এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ১৪ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। তিনি উপজেলার বুড়িশ্বর ইউনিয়নের আশুরাইল গ্রামের সুন্দর আলীর মেয়ে।
পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ভাঙ্গারির ব্যবসা করেন গৃহবধূর স্বামী জজ মিয়া। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে জজ মিয়া আফিলা আক্তারকে মারধর করে। অত্যাচার সইতে না পেরে অভিমান করে বিষপান করেন গৃহবধূ আফিলা। রাত ৯টার দিকে অচেতন অবস্থায় আফিলাকে উদ্ধার করে নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান তিনি। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায় জজ মিয়া।
নাসিরনগর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুল্লাহ সরকার বলেন, হাসপাতাল থেকে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। জানতে পেরেছি, পারিবারিক কলহের জেরে বিষপানে আত্মহত্যা করেছে তিনি। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ বুধবার জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মর্গে পাঠানো হবে। তবে এ ঘটনায় থানায় কেউ মামলা করেনি।
স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাশেমকে (৭৩) রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে। শনিবার দিবাগত রাত ৯টার দিকে উপজেলার শাহবাজপুর গ্রামে নিজ বাসভবনে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। পারিবারিক সূত্র জানায়, আবুল হাশেম দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। গত শনিবার রাতে নিজ বাসভবনে তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। গতকাল রোববার দুপুরে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের মাঠে তাকে নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মুহাম্মদ সরওয়ার উদ্দীনের নেতৃত্বে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেয়া হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মো. ইসমত আলী, সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসলাম হোসেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ৫ ছেলেসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
বাংলাদেশ হেলথ্ এসিস্ট্যান্ট এসোসিয়েশন নাসিরনগর উপজেলা শাখার গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় এবং সরাসরি প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়। নির্বাচিত কমিটির আহবায়ক হলেন আলী আকরাম খন্দকার স্বপন, সদস্য সচিব ফজল ভূইয়া, যুগ্ম আহবায়ক মোঃ ছোয়াব মিয়া।
গত ১৮ আগস্ট নাসিরগর উপজেলার হেলথ্ এসিস্ট্যান্ট এসোসিয়েশন এর নেতৃবৃন্দের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলী আকরাম খন্দকার স্বপনের আহবানে এবং শরীফ রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন মোঃ ফিরোজ আহমেদ, ছোয়াব মিয়া, মাজহারুল হক, হালিমা বেগম, সোহেল রানা, জুলহাস শাহ, আলমাছ উদ্দিন, জহির উদ্দিন, নজরুল ইসলাম, পলাশ দেবনাথ, বিজয় সূত্রধরসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
সকলের মতামতের ভিত্তিতে একটি শক্তিশালী আহবায়ক কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
আহবায়ক ও সদস্য সচিব, যুগ্ম আহবায়ক পদে একাধিক প্রার্থী থাকায় গোপন ভোটের মাধ্যমে আহবায়ক ও সদস্য সচিব নির্বাচন করা হয়।
আহবায়ক হিসেবে আলী আকরাম খন্দকার স্বপন ও সদস্য সচিব হিসেবে মোঃ ফজল ভূইয়াকে ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত করা হয়।
যুগ্ম আহবায়ক এর পদে একজন প্রার্থীর নাম প্রত্যাহার করায় মোঃ ছোয়াব মিয়া নির্বাচিত হয়।