চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অব্যবস্থাপনার দায়ে হলি ল্যাব ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতালকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
আজ ১ আগস্ট মঙ্গলবার দুপুরে হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ও উন্মুক্ত অবস্থায় মেডিকেল বর্জ্য ফেলে রাখার দায়ে এ জরিমানা করা হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফয়সাল আহমদে।
অভিযান শেষে তিনি জানান, হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ও উন্মুক্ত অবস্থায় মেডিক্যাল বর্জ্য পাওয়া যায়। পাশাপাশি সাধারণ ওয়ার্ডে পর্যাপ্ত ভেন্টিলেশন, আলো বাতাসের ব্যবস্থা ও দক্ষ ডিপ্লোমা নার্স পাওয়া যায়নি। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে হাসপাতালটিকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
অভিযানের সময় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে মেডিকেল অফিসার (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) আশরাফুর রহমান হিমেল ও জেলা ওষুধ তত্ত্বাবধায়ক মো. শাহজালাল ভূঁইয়া উপস্থিত ছিলেন।
গতকাল রংপুর শহীদ আবু সাঈদের কবর জিয়ারত করেছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। এ সময় হেফাজত ইসলামের সংগ্রামী মহাসচিব আল্লামা শায়েখ সাজিদুর রহমান বলেন, শহীদ আবু সাঈদের কবরের পাশে জামিয়া শহীদ আবু সাঈদ নামে কওমি মাদ্রাসা নির্মাণ করা হবে। হেফাজত ইসলামের নেতৃবৃন্দ শহীদ আবু সাঈদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তাদের খোঁজ খবর নেন। এ সময় অন্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন হেফাজতে ইসলামের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব, হেফাজত ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব আজিজুল হক ইসলামাবাদী, হেফাজত ইসলামের অর্থ সম্পাদক মাওলানা মুফতি মনির কাসেমী ও স্থানীয় হেফাজত নেতৃবৃন্দ পরে হেফাজতে ইসলামের নেতৃবৃন্দ রংপুর বিভাগীয় সমাবেশে যোগদান করেন এবং বক্তব্য রাখেন।-প্রেস বিজ্ঞপ্তি
চলারপথে রিপোর্ট :
দীর্ঘ একমাস পর শিশুদের সম্প্রসারিত টিকাদান কার্যক্রমের (ইপিআই) টিকা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় পৌঁছেছে। ২৭ ফেব্রুয়ারি সোমবার বিকেলে মেড্ডায় ইপিআই সুপারিনটেনডেন্টের কার্যালয়ের স্টোরে এগুলো পৌঁছায়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন ডা. একরাম উল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ইপিআই কর্মসূচিতে শিশুদের রোগ প্রতিরোধে বিভিন্ন ধাপে টিকা দেওয়া হয়। এর মধ্যে রয়েছে যক্ষ্মা, পোলিও, ডিপথেরিয়া, হুপিং কাশি, ধনুষ্টংকার, হেপাটাইটিস-বি, হিমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা-বি জনিত রোগ, হাম, নিউমোকক্কাল জনিত নিউমোনিয়া, রুবেলা। সময়সূচি অনুযায়ী টিকা না নিলে শিশুর মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি দেখা দিতে পারে।
জন্মের পর শিশকে প্রথম বিসিজি টিকা দিতে হয়। বয়স ৬ সপ্তাহ হলে আইপিভি টিকার প্রথম ডোজ ও ১৪ সপ্তাহ বয়সে দ্বিতীয় ডোজ দিতে হয়। একই সময়ে পেন্টাভ্যালেন্ট (ডিপিটি, হেপাটাইটিস-বি, হিব), ওপিভি এবং পিসিভি টিকার প্রথম ডোজ দিতে হয়। তারপর কমপক্ষে ৪ সপ্তাহ/২৮ দিনের ব্যবধানে এসব টিকার দ্বিতীয় ও তৃতীয় ডোজ দিতে হয়।
শিশুর বয়স ২৭০ দিন পূর্ণ হলেই শিশুকে প্রথম ডোজ এবং ১৫ মাস বয়স পূর্ণ হলে দ্বিতীয় ডোজ এমআর (হাম ও রুবেলা) টিকা দিতে হয়। কিন্তু ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় গত একমাস ধরে বিসিজি টিকা ছাড়া শিশুদের কোনো টিকা মজুত ছিল না। ফলে শিশুদের সময়মতো টিকাগুলো দেওয়া যায়নি।
জেলার ইপিআই সুপারিনটেনডেন্ট আমিনুল ইসলাম বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বছরে ৯১ হাজার শিশুকে প্রতিটি টিকা দেওয়া হয়। জেলার ৯৮টি ইউনিয়নের প্রতিটিতে ২৪টিকে টিকাকেন্দ্রে মাসে একবার করে টিকা দেওয়া হয়। এছাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও জেলা সদর হাসপাতালে ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন টিকা দেওয়া হয়।
সিভিল সার্জন মোহাম্মদ একরাম উল্লাহ বলেন, সোমবার বিকেলে ইপিআই টিকা এসেছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহম্মদ হোসেন বলেছেন, বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিতে চাইলে নেবে। তবে আগুন-সন্ত্রাস করলে বিএনপি-জামায়াত জনগণের কাছ থেকে রক্ষা পাবে না। তাদের শেষ পরিণতি ভোগ করতে হবে।
১৩ অক্টোবর শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে জেলা আওয়ামী লীগের প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক আল-মামুন সরকারের স্মরণে আয়োজিত শোক সভায় এ কথা বলেন তিনি। শহীদ ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত ভাষা চত্বরে এ সভার আয়োজন করা হয়।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে আহম্মদ হোসেন বলেন, বিদেশে ঘুরে লাভ নেই, বিদেশিরা ক্ষমতায় উঠাতে পারবে না। দেশের মূলশক্তি হচ্ছে জনগণ। তারা সিদ্ধান্ত নেবে কারা ক্ষমতায় থাকবে।
তিনি বলেন, মাছ যেমন পানি ছাড়া বাঁচতে পারে না, তেমনি একটি গণতান্ত্রিক দল নির্বাচন ছাড়া বাঁচতে পারে না। এ কথা বিএনপির অনুধাবন করা উচিত।
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আহম্মদ হোসেন বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সৈনিকেরা যুদ্ধে গিয়ে হেরে আসেন না, হারতেও জানেন না। সামনে অগ্নি পরীক্ষা, সেই পরীক্ষায় আবার জিততে হবে। চ্যালেঞ্জিং এই সময়ে মরে যাব, তবে গণতন্ত্রকে খুন করতে দেব না। পাকিস্তান মার্কা স্বাধীনতা আনতে দেব না। সরকার বহির্ভূত কোনো সরকার আসতে দেব না।
সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও স্থানীয় সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম শিউলি আজাদ, পৌর মেয়র মিসেস নায়ার কবির, জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন, সহ-সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী মন্টু, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালাম ভূঁইয়া, স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু।
এছাড়া সভায় জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
নির্বাচনী প্রচারণায় আপত্তিকর বক্তব্য দেওয়ায় কাঁচি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ফিরোজুর রহমানের বিরুদ্ধে শতকোটি টাকার মানহানি মামলা করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনের সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। গতকাল ১১ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া যুগ্ম জেলা জজ নজরুল ইসলামের আদালতে মামলার এজাহার জমা দেওয়া হয়।
বাদীপক্ষের আইনজীবী আব্দুল জব্বার মামুন বিষয়টি নিশ্চিত করেন জানান, ফিরোজুর রহমান গত ২৬ ডিসেম্বর সদর উপজেলার সুহিলপুরে এক নির্বাচনী সভায় র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা বক্তব্য দিয়েছিলেন। ওই বক্তব্যের কারণে ফিরোজুর রহমানকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে গত ২৮ ডিসেম্বর থেকে পর পর তিনটি নোটিশ পাঠানো হয়। কিন্তু তিনি সেই নোটিশ আমলে নেননি। অতঃপর আদালতে শতকোটি টাকার মানহানির মামলা করা করেন র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। আগামী রবিবার আদালত এ মামলায় শুনানি হবে।
এ ব্যাপারে ফিরোজুর রহমান বলেন, আমি নির্বাচনী একটি সভায় বলেছিলাম- তিনি যে আমার মদের ব্যাবসা নিয়ে কথা বলেন, আমি তো উনার ইউনিভার্সিটিতে ৫ লাখ টাকা ডোনেট করেছিলাম। এটা বলাতে উনার মানহানি হয়েছে নাকি। তবে যা সত্য তাই তো বললাম। মামলা করার আগে উনি উকিল নোটিশ পাঠিয়েছিলেন কিন্তু নির্বাচনী ব্যস্ততার কারণে সেদিকে মনোনিবেশ করতে পারিনি। সেটি লক্ষ্য করলে হয়তো মামলা করতেন না। যেহেতু মামলা করেছেন আইনিভাবে আমি জবাব দেব।
চলারপথে রিপোর্ট :
সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের ২৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ২০০-৩০০ জনকে আসামি করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। ২০২১ সালের ২৭ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের টি.এ. রোডে সংঘর্ষের সময় মাওলানা হোসাইন আহাম্মদ হত্যার ঘটনায় তার বড় বোন তানিয়া আক্তার বাদী হয়ে গতকাল ২৩ আগস্ট শুক্রবার এ মামলাটি দায়ের করেন। নিহত হোসাইন আহাম্মদ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদারাসার ছাত্র ছিলেন। তিনি জেলার আখাউড়া উপজেলার মনিয়ন্দের বাসিন্দা।
মামলায় জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি মুজিবুর রহমান বাবুল, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শাহাদাৎ হোসেন শোভন, সাবেক গণপূর্তমন্ত্রী র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর ব্যক্তিগত সহকারী আবু মুছা আনছারি, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব রহমান (এম.এ.এইচ মাহবুব আলম), জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট লোকমান হোসেন, জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক এম. সাইদুজ্জামান আরিফ, জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মো. মনির হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক সুজন দত্ত, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ ছাত্র-সংসদের সাবেক ভিপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হাসান সারোয়ার হাসান, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মাসুম বিল্লাহ, সদর উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি মো. আলী আজম, সাধারণ সম্পাদক জসিম রানা, ঠিকাদার হামদু মিয়া, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোমিন মিয়াসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের ২৬ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরো দুই-তিনশ’ লোককে আসামি করা হয়েছে।
মামলায় তানিয়া আক্তার অভিযোগ করেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে আন্দোলন কর্মসূচির চলাকালে ২৭ মার্চ সকাল ১০টায় হেফাজতে ইসলামের উদ্যোগে পরের দিন হরতালের সমর্থনে শহরে একটি বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। ওই দিন সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে একটি মিছিল হয়। মিছিলটি জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদরাসার সামনে গিয়ে আসামিরা দেশীয় ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা করে। এ সময় হোসাইন আহাম্মদ মাথার ডানপাশে গুলিবিদ্ধ হন। আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে জেলা সদর হাসপাতালে ও পরে ঢাকার একটি হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ওই সময় পুলিশ ও সিভিল প্রশাসনের অসহযোগিতা এবং দমন-নিপীড়নের ভয়ে কোনো আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়ে উঠেনি। এমনকি পুলিশের চাপে তখন নিহতের লাশ ময়না তদন্ত ছাড়া দাফন করতে বাধ্য করা হয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করেছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোজাফফর হোসেন মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।