বিজিবির সঙ্গে মাদক চোরাকারবারির স্বজনদের সংঘর্ষ, রোহিঙ্গা নিহত

জাতীয়, 2 August 2023, 598 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের লেদা এলাকায় আজ ২ আগস্ট বুধবার দুপুরে বিজিবি সদস্যদের সঙ্গে মাদক চোরাকারবারিদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে মোহাম্মদ রফিক নামে এক রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে। তিনি টেকনাফের লেদা ক্যাম্পের এ-ব্লকের বাসিন্দা। এ ঘটনায় বিবিজির এক সদস্যসহ আরও ছয়জন আহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘তথ্য পেয়ে বিজিবির একটি দল ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাদক চোরাকারবারি জাফরকে আটক করে। এ সময় স্বজনরা তাকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে প্রধান সড়কে উঠলে তারা জড়ো হয়ে বিজিবির ওপর হামলা চালায়। বিজিবির সদস্যরা তাদের সরানোর চেষ্টা করে। সেখানে লোকজন গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর আমিও শুনেছি। বিষয়টি আরও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’

এলাকাবাসী জানায়, লেদায় দুপুরে মাদক চোরাকারবারি জাফরকে আটক করে বিজিবি। এ সময় তাকে নিয়ে যাওয়ার সময় আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে বিজিবির সংঘর্ষ হয়। স্থানীয় লোকজন ইটপাটকেল ছোড়ে। এ সময় বিজিবিও পাল্টা গুলি চালায়। এতে পথচারী এক রোহিঙ্গাসহ ৬ জন আহত হয়েছে। পরে তাদের উদ্ধার করে লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে স্বাস্থ্য ক্লিনিকে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক গুলিবিদ্ধ এক রোহিঙ্গাকে মৃত ঘোষণা করেন। অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কক্সবাজারে পাঠানো হয়েছে। আহতরা হলেন, টেকনাফের লেদা গ্রামের বাসিন্দা রাজু, ইসমাইল, গুরা মিয়া, হাফেজ মুজিব।

টেকনাফের লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলম বলেন, লেদায় স্থানীয়দের সঙ্গে বিজিবির সংর্ঘষে আমার ক্যাম্পের একজন বাসিন্দা মারা গেছে। তিনি পথচারী ছিলেন।

টেকনাফ মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দ বলেন, বিজিবির অভিযানে গ্রামবাসীর সঙ্গে সংর্ঘষের ঘটনায় একজন মারা যাওয়ার খবর শুনেছি। এ ঘটনায় আরও কয়েকজন আহত হওয়ার খবর পেয়েছি। এ বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য নুরুল হুদা বলেন, একজনকে আটক করে নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয়দের সঙ্গে বিজিবির সংঘর্ষের ঘটনায় একজন রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয়রা ভীতির মধ্য রয়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. ফরিদ আলম জানান, জাফর নামে একজনকে আটক করে নিয়ে যাওয়ার সময় বিজিবির সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষ হয়। এ সময় বিজিবি গুলি চালায়। এতে একজন রোহিঙ্গাসহ আরো কয়েকজন আহত হয়। এ ঘটনায় এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল বেড়েছে। ভয়ে আছেন স্থানীয়রা।

Leave a Reply

ঈদুল ফিতরে ৫ দিন, ঈদুল আযহায়…

অনলাইন ডেস্ক : আগামী বছরের (২০২৫ সাল) সরকারি ছুটির তালিকা Read more

৩০ লাখ টাকা করে পাবে ছাত্র…

অনলাইন ডেস্ক : বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে প্রত্যেক শহীদ পরিবারকে পুনর্বাসনের জন্য Read more
ফাইল ছবি

২০২৫ সালের সরকারি ছুটির তালিকা প্রকাশ

অনলাইন ডেস্ক : ২০২৫ সালের সরকারি ছুটির তালিকা অনুমোদন করেছে Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভূমিকম্প ও অগ্নিকান্ড বিষয়ক মহড়া…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দূর্যোগ প্রশমন দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসনের Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দেশীয় অস্ত্র-নগদ টাকা উদ্ধারসহ দুই…

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গত ২৪ ঘন্টায় গ্রেফতারী পরোয়ানার আসামীসহ Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অনির্দিষ্টকালের জন্য…

চলারপথে রিপোর্ট : পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তাদের বরখাস্তের প্রতিবাদে ও Read more

আন্দোলনে নিহত তানজিল মাহমুদ সুজয় এইচএসসি…

চলারপথে রিপোর্ট : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর Read more

পল্লীবিদ্যুতের ১০ জেলা কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুৎ, বিদ্যুৎ…

চলারপথে রিপোর্ট : বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কয়েকটি জেলার ১০ Read more
ফাইল ছবি

শেখ হাসিনাকে গ্রেফতারে ট্রাইব্যুনালের পরোয়ানা

অনলাইন ডেস্ক : পদত্যাগের পর দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী Read more

ভারত ৪৬ রানে অলআউট

অনলাইন ডেস্ক : ঘরের মাঠে বাংলাদেশের বিপক্ষে দাপট দেখিয়েছিল ভারত। Read more

কসবায় ২০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি বিদ্যুৎ…

চলারপথে রিপোর্ট : অস্ত্র মামলায় ২০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত মো. মোস্তাফিজুর Read more
ফাইল ছবি

৮ জাতীয় দিবস বাতিল করে আদেশ…

অনলাইন ডেস্ক : আটটি জাতীয় দিবস বাতিল করে আদেশ জারি Read more

বড় ভাইয়ের হাতে ছোট ভাই খুন

জাতীয়, 4 October 2023, 570 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ধামরাইয়ে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা পাওনা ও বসত বাড়ির সীমানা নিয়ে বিরোধের জেরে ছোট ভাই ফারুক হোসেনকে (৪০) প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করেছে বড় ভাই। এ ঘটনার পরই স্থানীয় এলাকাবাসী ঘাতক বড় ভাই ওসমান গনি ও তার স্ত্রী জিয়াসমিনকে আটকের পর পুলিশে সোর্পদ করেছে।

আজ ৪ অক্টোবর বুধবার দুপুরে ধামরাইয়ের ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের কাকরান গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ফারুক হোসেন কাকরান গ্রামের মৃত কালা মিয়ার ছেলে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, কাকরান গ্রামের কালা মিয়ার বড় ছেলে ওসমান গনির সঙ্গে ছোট ভাই ফারুক হোসেনের বাড়ির সীমানা এবং ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা পাওনা নিয়ে গত এক মাস ধরে বিরোধ চলে আসছিল। সম্প্রতি দুই ভাইয়ের বসতবাড়ির মাঝখান নিয়ে ফারুক হোসেন টিনের বেড়া দেয় এবং পাওনা টাকা দাবি করে। গত রবিবার বড় ভাই ওসমান গনি কোন টাকা দিবে না জানিয়ে টিনের বেড়া ভেঙ্গে ফেলে। এ নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে কথাকাটাকাটি হয়। পরে বুধবার সকাল ৯টার দিকে বাড়ির উঠানেই বড় ভাই ওসমান গনি অতর্কিতভাবে ধারালো দা দিয়ে ছোট ভাই ফারুক হোসেনের মাথায়, পেটে ৬টি কোপ দেয় এবং তার ডান পা কুপিয়ে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। এসময় ঘটনাস্থলেই ওসমান গণির স্ত্রী জিয়াসমিন উপস্থিত থেকে তার স্বামীকে সহযোগিতা করেছেন বলে স্থানীয় এলাকাবাসী জানিয়েছেন। পরে স্থানীয়রা ফারুক হোসেনকে উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। দুপুর ২ টার দিকে অস্ত্রোপাচার করার সময় হাসপাতালেই তার মৃত্যু হয় বলে স্থানীয় সোহেল মোল্লা জানান। এসময় স্থানীয় লোকজন ঘাতক ওসমান গনি ও তার স্ত্রী জিয়াসমিনকে আটকের পর পুলিশে সোর্পদ করেন।

স্থানীয় ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের সদস্য আদর আলী জানান, পাওনা টাকা ও বাড়ির সীমানা নিয়ে বিরোধ মিমাংসা করে দেওয়ার জন্য ফারুক হোসেন আমাদের জানিয়েছিলেন। কিন্তু ওসমান গণি মিমাংসায় রাজি ছিল না।

এ বিষয়ে ধামরাই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হারুন অর রশীদ বলেন, পাওনা টাকা ও বসত বাড়ির সীমানা নিয়ে বিরোধের জের ধরেই ছোট ভাই ফারুক হোসেনকে মাথায়, পেটে ও ডান পায়ে উপর্যুপরি কুপিয়ে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় ওসমান গণি ও তার স্ত্রী জিয়াসমিনকে আটক করা হয়েছে। তারা হত্যার কথা স্বীকার করেছে। এ ঘটনায় নিহত ফারুক হোসেনের স্ত্রী সীমা আক্তার বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান তিনি।

নিশান দেখে থামল ট্রেন, বাঁচল হাজার যাত্রীর প্রাণ

জাতীয়, 4 February 2024, 397 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
নরসিংদীর পলাশ উপজেলায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছে আন্তনগর উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেন। ট্রেনটি আসার পথে ভাঙা ছিল রেললাইন।

রেললাইনের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার ভিডিপির সদস্যরা লাল নিশান দেখিয়ে ট্রেনটির গতিরোধ করে দেওয়ায় এ দুর্ঘটনা থেকে ট্রেন ও এর হাজারো যাত্রী রক্ষা পায়।

আজ ৪ ফেব্রুয়ারি রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পলাশ উপজেলার ঘোড়াশাল পৌর এলাকার চামরাব ও জিনারদীর বরাব রেলক্রসিংয়ের মাঝামাঝি স্থানে এ ঘটনা ঘটে। রেললাইন মেরামতের পর এ পথে ট্টেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

ঘটনার সময়ে দায়িত্বে থাকা আনসার ভিডিপির দলনেতা মেহেদী হাসান বলেন, প্রতিদিনের মতো আজও আমরা সকাল থেকে রেললাইনের নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করে আসছিলাম। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চামড়াব রেলক্রসিং পার হয়ে সামনের দিকে যাওয়ার পর ৮ থেকে ৯ ইঞ্চি রেললাইন ভাঙা দেখতে পাই।

তিনি আরো জানান, এ সময় নোয়াখালী থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঘটনাস্থলের দিকে আসতে দেখা যায়। পরে দ্রুত আমরা লাল নিশান দেখিয়ে ট্রেনটির গতিরোধ করে দিয়েছি। এতে দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পায় ট্রেন ও যাত্রীরা।

উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা শহিদুজ্জামান রাজু বলেন, এ ঘটনা আমাদের সদস্যরা জানানোর পর দ্রুত রেলওয়ের প্রকৌশলী বিভাগের দায়িত্বরত কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে। এটি কোনো নাশকতা নয়, শীতের কারণে রেললাইনে এমন ভাঙন ধরে থাকে। তাই আমাদের সদস্যদের দায়িত্ব পালনে আরো তৎপর থাকতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

জিনারদী রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. বরকত হোসেন বলেন, রেললাইন ভাঙার খবর পেয়ে দ্রুত আমাদের মিস্ত্রিরা মেরামত কাজ শুরু করেছে। তারা লোহার পাটাতন পরিবর্তন করে নতুন পাটাতন বসিয়েছে। বর্তমানে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

আম পাড়তে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে শিক্ষকের মৃত্যু

জাতীয়, 9 April 2023, 1049 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
লক্ষ্মীপুর সদরে আম পাড়তে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মো. রাকিব হোসেন নামে এক মাদরাসা শিক্ষকের মৃত্যু হয়েছে। আজ ৯ এপ্রিল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার মান্দারি ইউনিয়ন ৯ নম্বর ওয়ার্ডের গন্ধ্যব্যপুর আতর আলি ভূঁইয়া বাড়ি জামে মসজিদ মাদরাসার ছাদে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তিনি ওই মসজিদের ইমাম ও মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলেন। কুশাখালি ইউনিয়নের মিডাইর খিল গ্রামের ইলিয়াস মৌলভি সাহেবের বাড়ির নুর আলমের ছেলে তিনি।

স্থানীয়রা জানায়, শিক্ষক রাকিব হোসেন গাছ থেকে আম পাড়ার জন্য মাদ্রাসার চাদের উপর উঠেন। চাদের উপর দিয়ে একটি হাই ভোল্টেজের বিদ্যুতের লাইন ছিল। আম পাড়তে গিয়ে অসাবধানতাবসত তিনি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন। এতে সেখানেই মারা যান তিনি। মান্দারি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন রুবেল পাটওয়ারী দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ঘোড়া দিয়ে হাল চাষ

জাতীয়, 14 December 2023, 428 Views,

বিশেষ প্রতিনিধি :
একসময় রাজা-বাদশাহদের বাহন ছিল ঘোড়া ও ঘোড়ার গাড়ি। যুদ্ধক্ষেত্রেও তার ঘোড়া ব্যবহার করতো। যদিও এখন এই বাহন হিসেবে ঘোড়া ও ঘোড়ার গাড়ি বিলুপ্তির পথে। পাশাপাশি সেই আদিকাল থেকেই কৃষিকাজে ঘোড়ার ব্যবহার হয়ে আসছে। তবে ঘোড়ার পাশাপাশি কৃষি কাজে গরু-মহিষও ব্যবহার হতো। কৃষকরা গরু-মহিষ দিয়ে হালচাষ করতো। কিন্তু কালের বির্বতনে ঐতিহ্যবাহী গরু-মহিষের হাল আজ বিলুপ্তির পথে। বর্তমানে কৃষকরা পশু দিয়ে চাষাবাদ না করে উন্নতমানের যান্ত্রিক প্রযুক্তির সাহায্যে জমিতে হালচাষ করছেন। এতে কম খরচে স্বল্প সময়ে অধিক জমি চাষ করা সম্ভব।

যান্ত্রিক সভ্যতার এ যুগে যখন গরু দিয়ে হালচাষ বিলুপ্তির পথে তখন ঘোড়া দিয়ে হালচাষ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন মো. হানিফ (৫০) নামের এক কৃষক।

দীর্ঘকাল ধরে রণক্ষেত্রের পাশাপাশি মালামাল ও মানুষ পরিবহনে ঘোড়া ব্যবহৃত হয়ে আসলেও কালের পরিক্রমায় তা আজ বিলুপ্তির পথে। কিন্তু বর্তমান সময়ে ঘোড়া দিয়ে জমিতে হালচাষ করা এক বিরল ঘটনা এমনটাই বললেন স্থানীয়রা।
হানিফ দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার ফতেজংপুর ইউপির উত্তর পলাশবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা। বুধবার বিকালে সরজমিন দেখা যায়, ঘোড়া দিয়ে জমিতে হালচাষ করছেন কৃষক হানিফ। হালচাষ দেখতে প্রতিনিয়ত অনেক মানুষ পথ চলতে চলতে থমকে দাঁড়ান।

কৃষক হানিফ জানান, বর্তমান বাজারে এক জোড়া হালের গরুর দাম কমপক্ষে এক লাখ টাকা। সেই তুলনায় বর্তমান বাজারে গরুর চেয়ে ঘোড়ার দাম কম। কিছুদিন পূর্বে তিনি মাত্র ৪৫ হাজার টাকা দিয়ে দুটি ছোট সাইজের ঘোড়া কিনেছেন। এ ঘোড়া দুটি দিয়ে তিনি প্রতিদিন এক থেকে দেড় বিঘা জমি চাষ করছেন। তিনি নিজের জমি ছাড়াও গত ৩ বছর ধরে অন্যের জমিতেও টাকার বিনিময়ে ঘোড়া দিয়ে হালচাষ করছেন।

তিনি আরো জানান, গরুর চেয়ে ঘোড়া হাঁটে-চলেও অনেক বেশি। ফলে গরুর হালের চেয়ে একই সময়ে ঘোড়া দিয়ে তিনগুণ বেশি জমি চাষ করা যায়। ঘোড়া দিয়ে তিনি প্রতিদিন সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত দেড় থেকে দুই বিঘা জমিতে হালচাষ করতে পারেন। তিনি জমি চাষ করতে বিঘাপ্রতি ৬০০ টাকা করে নেন। এতে তার প্রতিমাসে প্রায় ৩০ হাজার টাকা আয় হয়। ঘোড়া দুইটির খাদ্য বাবদ দৈনিক ১০০ টাকা করে খরচ হয়। অবশিষ্ট টাকা দিয়ে পরিবারের ৫ সদস্যের খরচ চলে। এ ঘোড়ার হাল দিয়েই তিনি ঘোড়াচ্ছেন তার জীবিকার চাকা। ঘোড়ার হাল দিয়ে অন্যের জমি চাষ করে যা উপার্জন হয় তা দিয়েই তিনি সংসারের চাহিদা পূরণ করছেন। হালচাষ বা জমিতে মই দিয়ে যা পেয়ে থাকেন তা দিয়েই সংসার ভালোভাবেই চলে।

কৃষক নুরুল আলম, হেলাল জানান, ঘোড়া দিয়ে জমিতে হালচাষ করলে মাটি গভীরভাবে খনন হয়। মই দেয়ার সময় জমির উঁচু-নিচুও ভালোভাবে সমান হয়। এতে জমিতে পানি সমানভাবে ধরে রাখা সহজতর হয়। একদিনে অনেক জমিতে হালচাষ করা যায়। ফলে অর্থ ও সময় সাশ্রয় হয়। তাই এলাকায় হানিফের ঘোড়ার হালের বেশ চাহিদা রয়েছে।

চিরিরবন্দর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জোহরা সুলতানা বলেন, কৃষকরা এখন যান্ত্রিক উপায়ে জমি চাষ করেন। সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে ঘোড়ার গাড়িও উঠে গেছে। ঘোড়া দিয়ে হালচাষ করা দুর্লভ একটি বিষয়। এটা পারসেনট্রিনের মধ্যে পড়ে না। কৃষি বিভাগ আধুনিক মানের যন্ত্র ব্যবহার করে চাষাবাদ করার জন্য কৃষকদের উৎসাহ দিচ্ছে।

উন্নয়ন কার্যক্রম মনিটরিং জোরদারের নির্দেশ গণপূর্তমন্ত্রীর

জাতীয়, 28 July 2024, 120 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
উন্নয়নমূলক কার্যক্রম মনিটরিং জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। ২৮ জুলাই রোববার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে মাসিক এডিপি (বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি) বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় এ নির্দেশনা দেন তিনি। মন্ত্রী উন্নয়ন কাজ পরিদর্শন শেষে আবশ্যিকভাবে মন্ত্রণালয়ে পরিদর্শন প্রতিবেদন পাঠানোর নির্দেশ দেন।

তিনি যথাসময়ে দফতর ও সংস্থার অনুকূলে অর্থ ছাড় এবং যাদের গবেষণা করার সুযোগ রয়েছে সেসব দফতর ও সংস্থার গবেষণা খাতে অর্থ বরাদ্দ বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশনা প্রদান করেন। সরকারি ক্রয় কার্যক্রমে মানসম্মত দেশীয় পণ্য বিশেষ করে লিফটসহ দেশে উৎপাদিত বিভিন্ন ইলেকট্রনিক সামগ্রী ক্রয়ের জন্য মন্ত্রী নির্দেশ প্রদান করেন।

সরকারি ক্রয় কার্যক্রমে প্রচলিত আর্থিক বিধিবিধান বিশেষ করে পিপিআর- ২০০৮ ও ফিন্যান্সিয়াল রুলস যেন যথাযথভাবে মেনে চলা হয় সে ব্যাপারে তিনি সবাইকে সর্তক থাকতে বলেন।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির জন্য মোট ৬০৮১ কোটি ৮০ লাখ টাকা বরাদ্দ ছিল। চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) বাস্তবায়ন হয়েছে ৯৫ দশমিক ৭৬ শতাংশ, যা গত বছর একই সময়ে ছিলো ৮৮ দশমিক ৭৬ শতাংশ। এক্ষেত্রে এ বছর জাতীয় অগ্রগতি ৮০ শতাংশ।

মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নবীরুল ইসলামের সভাপতিত্বে আয়োজিত এডিপি বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় গণপূর্ত অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী মো. শামীম আখতার, রাজউক চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সিদ্দিকুর রহমান সরকার, হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্স ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক আশরাফুল আলম, রাজশাহী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জিয়াউল হকসহ গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ও এর অধীন সব দফতর ও সংস্থার প্রধানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।