চলারপথে রিপোর্ট :
পারিবারিক শত্রুতার জেরে নেত্রকোনার পূর্বধলার হিরনপুরে বড় ভাবিকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছে দেবর। সেই সাথে গুরুতর যখম করেছে শিশু ভাতিজা আলিফকেও। আজ ৩ আগস্ট বৃহস্পতিবার দুপুরে পূর্বধলার কুমারকান্দা গ্রামের নিজ বসত ঘরে এ নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে।
পরিবারের বড় ছেলে খোকন একসময় বাদাম বিক্রি করলেও পরবর্তীতে বিদেশে গিয়ে অর্থ সম্পদ উপার্জন করা নিয়েই সৃষ্টি হয় দ্বন্দ্ব। প্রতিবেশী স্বজন ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে অর্থ সম্পদ নিয়ে পাঁচ ভাই ও পিতা মাতার সাথে বিরোধ চলে আসছিল বড় ছেলে খোকন মিয়া ও তার স্ত্রী রানু আক্তারের।
এ বিরোধের জেরেই পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ঘরের ভেতর ধারাল ছুরি দিয়ে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় রানু আক্তারকে।
নিহত রানু আক্তার পূর্বধলা উপজেলার জারিয়া গ্রামের শামসুদ্দিনের মেয়ে।
মৃতপ্রায় অবস্থায় আহত শিশু সন্তান আলিফকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এমন হত্যাকাণ্ডের খবরে ঘটনাস্থলে ভিড় করেন আশপাশের কয়েকটি গ্রামের অন্তত সহস্রাধিক নারী-পুরুষ। কান্নায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন নিহতের স্বামী ও স্বজনরা। হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তারা।
মূলত পিতা-মাতার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদেই এমন হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে ঘাতক সুজন মিয়া (৩০), রুবেল মিয়া (২৮) ও সুমন মিয়া (২৬)। হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে অন্যরা পালিয়ে গেলেও স্থানীয়রা ঘরের বাইরে থেকে তালাবদ্ধ করে দেওয়ায় পালাতে পারেনি সুজন ও তার মা।
হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন ঘাতক সুজন মিয়া। কিন্তু তার দাবি দীর্ঘদিনের পারিবারিক ক্ষোভ থেকে একাই এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন।
এ ঘটনায় জড়িত ঘাতক সুজন ও মা রাবেয়া বেগম (৫৮)-কে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যান্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন পূর্বধলা থানার ওসি মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, পারিবারিক বিরোধ থেকে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা প্রতিরোধে সামাজিক জনসচেতনতার পাশাপাশি সোচ্চার হতে হবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের। তবেই কমতে পারে এমন হত্যাকাণ্ড।
চলারপথে রিপোর্ট :
হত্যা মামলায় আট দিনের রিমান্ড শেষে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগমকে (শিউলি আজাদ) কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ ২৯ অক্টোবর মঙ্গলবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আমলি আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট স্বাগত সাম্য এ আদেশ দেন। এর আগে রিমান্ড শেষে উম্মে ফাতেমাকে আদালতে হাজিরের পর কারাগারে রাখার আবেদন করে সরাইল থানা-পুলিশ। একই সঙ্গে ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সরাইল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুর রহমান খান পাঠান আদালতকে লিখিতভাবে জানান, জিজ্ঞাসাবাদে মামলার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন সাবেক এই সংসদ সদস্য। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।
সরাইল থানায় দায়ের করা একটি হত্যা মামলায় উম্মে ফাতেমাকে ৬ অক্টোবর রাতে ঢাকার নিকেতনের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। ওই রাতেই তাঁকে সরাইল থানা-পুলিশের জিম্মায় দেওয়া হয়।
থানা-পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সরাইলের চুন্টা ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের সুলতান উদ্দিন বাদী হয়ে গত ৩ সেপ্টেম্বর সরাইল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম, সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীসহ ৬৭ নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের বিরোধিতা করে ২০২১ সালের ২৮ মার্চ হেফাজতে ইসলামের আন্দোলনের সময় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সরাইল বিশ্বরোড মোড় এলাকায় আসামিদের গুলিতে নিহত হন উপজেলার কাটানিশার গ্রামের বাসিন্দা লিটন মিয়া (২৭)।
রিমান্ডে থাকা অবস্থায় মামলাটির বিষয়ে শিউলি আজাদের দেওয়া তথ্যের যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে বলে জানান সরাইল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রফিকুল হাসান। তিনি বলেন, প্রয়োজন হলে তাঁকে আবারও রিমান্ডে আনার আবেদন করা হবে।
এদিকে শিউলি আজাদের আইনজীবী জয়নাল উদ্দিন জানান, আগামী ৩ নভেম্বর শিউলি আজাদের জামিন আবেদনের ওপর আদালতে শুনানি হবে।
অনলাইন ডেস্ক :
ভারতীয় পণ্য বর্জনের ঘোষণা বিএনপি নেতাদের হিপোক্রেসি বলে মন্তব্য করেছেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী।
আজ ৩১ মার্চ রবিবার রাজধানীর পূর্ত ভবনে গণপূর্ত অধিদপ্তরের আয়োজনে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মোকতাদির চৌধুরী বলেন, ‘ভারতীয় পণ্য বর্জনের ঘোষণা দিয়ে বিএনপির একজন নেতা গায়ের চাদর খুলে ফেলেছেন, কিন্তু উনি ভারতীয় কিসমিস, জিরা, এলাচ, দারুচিনি, পেঁয়াজসহ অন্যান্য পণ্য ঠিকই ব্যবহার করছেন এবং করবেন। তাহলে জনসমক্ষে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ঘোষণা হিপোক্রেসি ছাড়া আর কি হতে পারে।’
মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক একটি বিশেষ বইয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘জিয়াউর রহমান কখনো সম্মুখ সমরে যাননি, তিনি মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনায়ও বিশ্বাস করতেন না। শোষণহীন, বৈষম্যহীন, ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার যে প্রত্যয় নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল জিয়াউর রহমান তার কোনোটিতেই বিশ্বাস স্থাপন করেননি। তিনি তার মন্ত্রিসভায় এমন লোকদের স্থান দিয়েছিলেন যারা ভারতে গিয়েছিল মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে বিভেদ সৃষ্টি করার জন্য, যারা জাতিসংঘে বাংলাদেশের বিপক্ষে ওকালতি করতে গিয়েছিলেন এমন লোকদেরকে।’
তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমান এবং হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ দুজনেই স্বৈরশাসক ছিলেন।
অনেকেই জিয়াউর রহমান ও এরশাদকে এক পাল্লায় মাপতে চান না। এটা একটা ভ্রান্ত ধারণা। জিয়াউর রহমান জীবনে একটা ভালো কাজও করেননি। অনেকে বলে থাকেন জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক।
কিন্তু এটাও সঠিক না। জিয়াউর রহমান নিছক একজন স্বৈরশাসক ছিলেন। পক্ষান্তরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অসাম্প্রদায?িক চেতনায় বিশ্বাস করতেন বলে একটি মানবিক বাংলাদেশ গড়তে চেয়েছিলেন।’
স্বাধীনতার ঘোষণা নিয়ে যে বিতর্কের অবতারণা অনেকে করতে চান তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদ বলেন, ‘১৯৭০ সালের নির্বাচনে নির্ধারিত হয়েছে স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার অধিকার কার। বঙ্গবন্ধু যে স্বাধীনতার ঘোষক এ নিয়ে বিতর্কের কোনো অবকাশ নেই।’
বর্তমান বাজার ব্যবস্থা এবং দ্রব্যমূলের ঊর্ধ্বগতি প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘যারা স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না, যাদের মধ্যে দেশপ্রেম নেই, যারা একাত্তরের শহীদের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করতে চায়, এমনকি সম্ভ্রমহারা মা-বোনদের নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রুপ করে, তারাই নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বাড়িয়ে অধিক মুনাফা অর্জন করে এবং সে মুনাফার টাকা খরচ করে আবার হজ করতেও যায়। মানুষের দুর্ভোগ সৃষ্টি করে অসৎ উপায়ে অর্জিত অর্থে কোন ধর্মীয় কাজই সিদ্ধ হবে না।’
হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘দেশপ্রেম ঈমানের অঙ্গ। হিন্দু ধর্মেও রয়েছে যে, স্বর্গের দেবীর চেয়েও দেশ মহিমামণ্ডিত।’ তাই দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে মানুষের কল্যাণে সঠিকভাবে নিজের কাজ করার জন্য সবার উদ্দেশ্যে তিনি আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট লেখক, শিক্ষাবিদ ও ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসির মামুন। গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আক্তারের সভাপতিত্বে আয়োজিত এ আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ নবীরুল ইসলাম ও স্থাপত্য অধিদপ্তরের প্রধান স্থপতি মীর মনজুরুর রহমান। অনুষ্ঠানে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং গণপূর্ত অধিদপ্তরের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অনলাইন ডেস্ক :
ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম রাতের মধ্যেই দুর্বল হয়ে পড়বে। বাংলাদেশে বৃষ্টিপাত ঝরানো ছাড়া তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না।
আজ ৫ ডিসেম্বর মঙ্গলবার ভারত ও বাংলাদেশের আবহাওয়া অফিস এমন তথ্য জানিয়েছে।
ভারতের আবহাওয়া বিজ্ঞানী শশী কান্ত জানিয়েছেন, মিগজাউম অন্ধ্র প্রদেশের স্থলভাগে উঠে আসছে। এটি ধীরে ধীরে শক্তিক্ষয় করবে। মঙ্গলবার রাতের মধ্যই এটি নিম্নচাপে পরিণত হবে।
বাংলাদেশের আবহাওয়াবিদ মো. তরিফুল নেওয়া কবির জানিয়েছেন, ৬ ডিসেম্বর বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত খুলনা, বরিশাল এবং চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা বৃষ্টিবজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
শেষরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের উত্তরাঞ্চল ও নদী অববাহিকার কোথাও কোথাও হালকা কুয়াশা পড়তে পারে।
এছাড়া সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধি পেতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে ।
৭ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং রংপুর বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকাঝড়ো হাওয়াসহ হালকা বৃষ্টিবজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। সে-সময় সারাদেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা ১-২ ডিগ্রি সেলসিয়াস হ্রাস পেতে পারে।
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সাগর সংক্ষুব্ধ থাকায় সকল সমুদ্রবন্দরে দুই নম্বর সংকেত বহাল রাখা হয়েছে। এজন্য সকল মাছ ধরা নৌকা ও ট্রলারকে গভীর সাগরে বিচরণ করতে নিষেধ করা হয়েছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গ্যাসের বিতরণ প্ল্যান্টে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে পাইপলাইনের মাধ্যমে গ্রাহকপর্যায়ে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
গতকাল ২১ এপ্রিল রবিবার দিবাগত রাত ১টা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের ঘাটুরা এলাকায় অবস্থিত তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের বিতরণ প্ল্যান্টে ত্রুটির কারণে গ্যাস সরবাহ বন্ধ রয়েছে। এর ফলে বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের অন্তত ১২ হাজার গ্রাহক দুর্ভোগে পড়েছেন।
মূলত তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের কাছ থেকে গ্যাস নিয়ে তা গ্রাহক পর্যায়ে সরবরাহ করে বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড।
প্রতিষ্ঠানটির বৈধ গ্রাহক সংখ্যা ২২ হাজারেরও বেশি। এসব গ্রাহকদের প্রতিদিন প্রায় ১২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে।
বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের ব্রাহ্মণবাড়িয়া কার্যালয়ের উপ-মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. শাহ আলম জানান, গতকাল রাতে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশনের বিতরণ প্ল্যান্টে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। এর ফলে বাখারাবাদের গ্রাহক পর্যায়ে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। জেলা সদর ও সরাইল উপজেলার একাংশের গ্রাহকরা গ্যাস পাচ্ছেন না।
তিনি বলেন, ত্রুটি মেরামতে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন কর্তৃপক্ষ কাজ করছে। ইতোমধ্যে অর্ধেক কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আশা করছি দুপুরের মধ্যেই গ্যাস সরবরাহ কার্যক্রম স্বাভাবিক হবে।
অনলাইন ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু’র চিঠির জবাব দিয়েছে আওয়ামী লীগ। আজ ১৭ নভেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশের মার্কিন দূতাবাসে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের পক্ষে চিঠির জবাব নিয়ে যান দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মোহাম্মদ এ আরাফাত।
এ বিষয়ে এ আরাফাত বলেন, ডোনাল্ড লু’র চিঠির জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পক্ষে আমি মার্কিন দূতাবাসের আ্যকটিং ডেপুটি চিফ অব মিশন মি. আর্টুরো হাইন্সের কাছে একটি চিঠি হস্তান্তর করেছি।
চিঠিতে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আমি আপনার (ডোনাল্ড লু), রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ও ইউএস স্টেট ডিপার্টমেন্টের প্রতি ১২ নভেম্বরের চিঠির জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই। বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও সহিংসতামুক্ত করতে আন্তর্জাতিক বন্ধুদের সাহায্য ও সহযোগিতার প্রশংসা করছি।
দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ঠিক রাখতে আমি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে আমাদের দলের অঙ্গীকার আবারও তুলে ধরতে চাই। আওয়ামী লীগ জনগণের ভোট দেওয়ার অধিকারকে একটি পবিত্র অধিকার বলে মনে করে। সেই অধিকার রক্ষায় আওয়ামী লীগের নিরলস সংগ্রাম ও আত্মত্যাগের দীর্ঘ-বর্ণাঢ্য ইতিহাস রয়েছে।
চিঠিতে আরো উল্লেখ করা হয়, নির্বাচন কমিশনকে সত্যিকার অর্থে সংবিধান স্বীকৃত স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে আমাদের দূরদর্শী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাঠামোগত, আর্থিক ও আইনি উদ্যোগ নিয়েছেন। সেগুলোর মধ্যে মধ্যে ছবিযুক্ত ভোটার আইডি কার্ড, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের জন্য আইন প্রণয়ন উল্লেখযোগ্য।
এরই মধ্যে বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে। ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি ভোটের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ নভেম্বর।
আওয়ামী লীগ কয়েক মাস ধরে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে নিঃশর্ত সংলাপের জন্য দরজা খোলা রেখেছিল। বিএনপি এই জাতীয় সংলাপের পূর্বশর্ত হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের পদত্যাগের উপর অনড় থাকায় সংলাপে বসা সম্ভব হয়নি।
তাতে আরও বলা হয়েছে, বর্তমানে বিএনপি-জামায়াতসহ তাদের মিত্ররা সরকারের পদত্যাগের দাবিতে অবরোধ করছে। এই ধরনের কর্মসূচিতে তারা অগ্নিসংযোগের মতো অপরাধ করছে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ২৮ অক্টোবর থেকে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ১৫৪টি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটিয়েছে অবরোধ সমর্থকরা।
চলমান অবরোধ ও এ ধরনের কর্মসূচির প্রধান দাবির মধ্যেও বিএনপি ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যদি আওয়ামী লীগ বসতে পারে, তবুও কোনো অর্থবহ সংলাপ হবে না। আগামী সপ্তাহে রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের নির্বাচনী কাজ চূড়ান্ত করতে সমস্ত সময় ব্যয় করতে হবে।
৩০০টি আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তথ্য পর্যালোচনা ও প্রার্থীতা চূড়ান্ত করা, ইশতেহার তৈরি করা, প্রচারণার কৌশল চূড়ান্ত করা ও প্রচারণার কাজ রয়েছে। যদি সংলাপের জন্য অনুকূল পরিস্থিতি সৃষ্টিও হয়, বর্তমান বাস্তবতায় একটি অর্থপূর্ণ সংলাপের জন্য যথেষ্ট সময় হাতে নেই।
চিঠিতে আরো উল্লেখ করা হয়, আওয়ামী লীগ সব আন্তর্জাতিক বন্ধুদের সঙ্গে অংশীদারত্বকে গুরুত্ব দেয়। পাশাপাশি আওয়ামী লীগ আশা করে, আন্তর্জাতিক মহল বাংলাদেশের জনগণের সামনে একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন উপস্থাপনের জন্য সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।
এর আগে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সংলাপের প্রস্তাব দিয়ে আওয়ামী লীগকে আনুষ্ঠানিক চিঠি দেয় যুক্তরাষ্ট্র। ডোনাল্ড লুর দেওয়া চিঠি ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস গত ১৫ নভেম্বর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের কাছে হস্তান্তর করেন।
এছাড়া সংলাপের আহ্বান জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি ও জাতীয় পার্টিকেও চিঠি দিয়েছে। এরই মধ্যে বিএনপি সেই চিঠির জবাব দিয়েছে।