অনলাইন ডেস্ক :
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমরা অধিকার আদায়ের আন্দোলনে আছি, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে আছি। এ আন্দোলন চূড়ান্ত আন্দোলন। এবার অধিকার আদায়ে মরণপণ যুদ্ধ করতে হবে। আমাদের ঘরে ফিরে যাওয়ার আর পথ নেই।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার সহধর্মিণী ডা. জুবাইদা রহমানকে সাজা দেওয়ার প্রতিবাদে আজ ৪ আগস্ট শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি এই সমাবেশের আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান।
বর্তমান সরকারকে ‘স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের শত্রু’ আখ্যা দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এরা দেশে ফ্যাসিবাদী রাজত্ব কায়েম করেছে। আর এই ফ্যাসিবাদী সরকার থেকে জনগণকে উদ্ধারে যিনি নেতৃত্ব দিচ্ছেন, যার নেতৃত্বে গোটা জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ, সেই তারেক রহমানকে আজকে মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে। শুধু তারেক রহমানকেই নয়, যিনি কোনোদিন রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না, সেই ডা. জুবাইদা রহমানকেও সাজা দেওয়া হয়েছে। কারণ তিনি তারেক রহমানের সহধর্মিণী।
তিনি বলেন, ‘এ সরকার ভীরু ও কাপুরুষ। তারা প্রশাসন ও বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকে রয়েছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকের পর ওবায়দুল কাদেরকে সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করেছেন‒ কোনো চাপে আছেন কিনা। তিনি বললেন, কোনো চাপে নেই, তবে বিবেকের চাপে আছি। আসলে সরকার চোখে অন্ধকার দেখছে। তাই তারা একেক সময় একেক কথা বলছেন।’
তিনি বলেন, ‘আজকে দুর্নীতির অভিযোগে তারেক রহমানকে সাজা দেওয়া হয়েছে। একই সময়ে দুর্নীতির অভিযোগে বর্তমান সরকারপ্রধানের বিরুদ্ধেও ১৫টি মামলা হয়েছিল। বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে মামলাগুলো তারা নাই করে ফেলেছেন। শুধু তাই নয়, যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে সরকার আজ তাদের পদন্নোতি দিচ্ছে। আজ সমগ্র দেশে দুর্নীতি মাকড়সার জালের মত ছড়িয়ে পড়েছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আজকে বিনা অপরাধে আমাদের নেতাকর্মীদের জেলে নেওয়া হচ্ছে, ফাঁসির আদেশ দেওয়া হচ্ছে। যারা অবৈধ রায় দিচ্ছেন সেইসব বিচারপতিদের আল্লাহর কাছে একদিন জবাব দিতে হবে। ন্যায়বিচারের জন্যই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ। অতীতের কথা সবসময় স্মরণ রাখবেন। সেই স্লোগানের কথা ভুলে যাবেন না‒ বিচারপতি তোমার বিচার করবে যারা আজ জেগেছে সেই জনতা।’
তিনি বলেন, ‘আজকে চাল-ডাল, বিদ্যুৎ-জ্বালানির দাম বেড়েছে। সেদিকে সরকারের কোনো দৃষ্টি নেই। আজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ভিসা পান না। ডেঙ্গুতে মারা যাচ্ছে শত শত মানুষ। সেদিকে সরকারে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। তাদের একটাই চিন্তা কীভাবে ক্ষমতা ধরে রাখা যায়।’
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী, বরকত উল্লাহ বুলু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবি রিজভী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, শিমুল বিশ্বাস, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বকুল, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী, ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল প্রমুখ।
চলারপথে রিপোর্ট :
গত ৩০ ফেব্রুয়ারি বসেছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন। আইন অনুযায়ী প্রথম অধিবেশনেই নির্বাচনে বিজয়ী দল বা জোটগুলোর প্রাপ্ত আসনের ভিত্তিতে ৫০টি সংরক্ষিত আসন বন্টন করা হয়। সাধারণত ৬ আসনের বিপরীতে কোন দল বা জোট একটি সংরক্ষিত আসন পেয়ে থাকে।
গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৬টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ৫টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে আওয়ামীলীগের প্রার্থীরা। আসন সমঝোতার কারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২-(সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনটি মহাজোটের শরীকদল জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেয়া হয়।
নির্বাচনে ৬টি আসনের মধ্যে ৪টি আসনে বিজয়ী হয় আওয়ামীলীগের প্রার্থীরা এবং ২টি আসনে বিজয়ী হয় স্বতন্ত্র প্রার্থীগণ। এর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২-(সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনে আওয়ামীলীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দিন মঈন (কলার ছড়ি) প্রতীকে বিজয়ী হন।
অপরদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১-(নাসিরনগর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের বহিষ্কৃত উপদেষ্টা, বিশিষ্ট শিল্পপতি সৈয়দ এ.কে এমরামুজ্জামান আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী বি.এম. ফরহাদ হোসেনকে হারিয়ে নির্বাচিত হন। ইতিমধ্যেই নতুন মন্ত্রী সভায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে দু’জন পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী হয়েছেন।
এদিকে নির্বাচনের পর থেকেই শুরু হয়েছে আলোচনা ও গুঞ্জন। কে হচ্ছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য হতে প্রায় ৭/৮ জন মহিলা নেত্রী ঢাকায় দৌড়ঝাপ করছেন।
এরা হলেন, সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সংরক্ষিত আসনের সদ্য সাবেক এমপি উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম ওরফে শিউলী আজাদ, সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জোবেদা খাতুন পারুল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সভানেত্রী, নব্বই এর রাজপথ কাঁপানো নেত্রী মিসেস মিনারা বেগম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট তাসলিমা সুলতানা খানম নিশাত, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের সংরক্ষিত আসনের সদস্য ও বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বিউটি কানিজ ও এমবি কানিজ, বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের সহ-সভাপতি শামীমা চৌধুরী বিথি, নাসিরনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি রুমা বেগম প্রমুখ।
মিনারা বেগমঃ রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান মিনারা বেগম স্কুল জীবন থেকেই রাজনীতিতে হাতে খড়ি। তার পিতা মরহুম আবু তাহের ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সহ-সভাপতি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর সভার কমিশনার ছিলেন। ১৯৭৩ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া কলেজে অধ্যয়নকালে তিনি ছাত্রলীগের প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে যোগ দেন।
১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে (মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহেনা ছাড়া) হত্যাকান্ডের পর তিনি চরম প্রতিকূল পরিবেশে বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিবাদে ও হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হওয়া প্রতিটি মিছিল-সমাবেশে অগ্রভাগে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
১৯৭৮ সালে তিনি জেলা আওয়ামী লীগের মহিলা সম্পাদিকা ও ১৯৮৯ সালে জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সভানেত্রীর দায়িত্ব লাভ করেন। স্বৈরাচারি এরশাদ সরকারের পতনের দাবিতে আন্দোলন করতে গিয়ে তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা শারিরিকভাবে তৎকালীন সরকারের ক্যাডার বাহিনীর দ্বার বিভিন্নভাবে নাজেহাল হন।
তিনি ২০০৪ সালে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন হত্যার প্রতিবাদে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের নিয়ে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তুলেন। আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভা ও জেলা তথ্য অফিস ভাংচুর ও প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছবি ভাংচুর ও অগ্নি সংযোগ করলে তাঁকে প্রধান আসামী করে দ্রুত বিচার আইনে দুটি মামলা হয়।
ওয়ান ইলেভেনের সময় জননেত্রী শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করা হলে তিনি নেত্রীর মুক্তির আন্দোলনে ব্যাপক ভূমিকা রাখেন। বড় ছেলে আশিকুল আলম বাবলু (প্রয়াত) ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ ছাত্র-ছাত্রী সংসদের ভিপি ছিলেন। এছাড়াও বাবলু ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগ ও জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন।
মিনারা বেগম ২০২৩ সালে জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ শীর্ষক বিশেষ কার্যক্রমের আওতায় “সমাজ উন্নয়নে অসামান্য অবদান রেখেছেন যে নারী” ক্যাটাগরিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার জয়িতা সম্মানে ভ‚ষিত হন। তিনি বর্তমানে জেলা মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যনের দায়িত্ব পালন করছেন।
উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম ওরফে শিউলী আজাদঃ শিউলী আজাদ সরাইল উপজেলা আওয়ামীলীগের জনপ্রিয় নেতা ও সরাইল উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এ.কে.এম. ইকবাল আজাদের স্ত্রী। দলীয় গ্রুপিংয়ের কারনে ২০১২ সালের ২১ অক্টোবর সরাইল সদরের অন্নদা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে ইকবাল আজাদ ঘাতকদের হাতে খুন হন। এর পর থেকে শিউলী আজাদ রাজনীতিতে যোগদান করেন ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এবারো তিনি প্রার্থী হবেন বলে জানা গেছে।
বিউটি কানিজঃ বিউটি কানিজ ঢাকাস্থ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সমিতির সদস্য। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (ঢাকা মহানগর) শাখার সাবেক সহ-সম্পাদক ও বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের সাবেক শিক্ষা ও প্রক্ষিশণ ও পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। বর্তমানে বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের সংরক্ষিত সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এমবি কানিজ জানান, তিনি জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনে মনোনয়ন চাইবেন।
শামীমা চৌধুরী বিথিঃ শামীমা চৌধুরী বিথি ঢাকাস্থ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সমিতির সদস্য, তিনি ইডেন মহিলা কলেজ শাখার (১৯৯১-১৯৯২) সালে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। শামীমা চৌধুরী বিথি জানান, তিনি জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনে মনোনয়ন চাইবেন।
অ্যাডভোকেট তাসলিমা সুলতানা খানম নিশাতঃ অ্যাডভোকেট তাসলিমা সুলতানা খানম নিশাত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা মহিলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি, সাপ্তাহিক গতিপথ’র সম্পাদক। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ শাখার সাবেক মহিলা সম্পাদক ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন।
রুমা বেগমঃ-রুমা বেগম নাসিরনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র- সভাপতি। তিনি বাংলাদেশ কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির অর্থ বিষয়ক সম্পাদক নাজির মিয়ার স্ত্রী। তার পিতা লে. গোলাম নূর নাসিরনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। গত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রুমা বেগম ও তার স্বামী নাজির মিয়া দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন। রুমা বেগম জানিয়েছেন তিনি সংরক্ষিত মহিলা আসনে মনোনয়ন চাইবেন।
অনলাইন ডেস্ক :
অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন না করতে পারলে রাষ্ট্র নিজেই ব্যর্থ রাষ্ট্র হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান। আজ ২ জানুয়ারি মঙ্গলবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য একটিই। সেটি হলো অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করা। আমরা যদি অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন না করতে পারি, কোনো কারণে যদি আমরা ব্যর্থ হই, তাহলে আমাদের রাষ্ট্র নিজেই ব্যর্থ রাষ্ট্র হয়ে যাবে। কারণ আমরা সমগ্র বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাব।
সরকারের সাবেক এ সচিব বলেন, কোনোভাবেই এ নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ হতে দেওয়া যাবে না। যখন যেখানে যে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, সময়ক্ষেপণ না করে তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে পদক্ষেপ নিতে হবে।
তিনি বলেন, মাঠে আমাদের প্রায় তিন হাজার নির্বাহী ও বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট কাজ করবেন। আমরা তিনটি শব্দের কথা বলে থাকি এগুলো হলো অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন, এর কোনো বিকল্প নেই। এ নির্বাচন শুধু ১৮ কোটি মানুষ দেখছে, তা নয়, আমাদের দেখছে সমগ্র বিশ্ব। আমরা কীভাবে নির্বাচন করব, কতটা গ্রহণযোগ্য হবে, এটি তারা মূল্যায়ন করবে।
এই নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, এবারের নির্বাচনে সর্বোচ্চ সংখ্যক বিদেশি পর্যবেক্ষক থাকবেন। তারা কে কোথায় যাবেন, এটি তাদের ইচ্ছা, আমরা কাউকেই ইমপোজ করবো না যে, আপনারা এখানে বা ওখানে যান। তারাই ঠিক করবেন কোথায় যাবেন, আমরা তাদের যাতায়াত ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা করব।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিব মো. জাহাংগীর আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান, অর্থবিভাগের সচিব ড. মো. খায়েরুজ্জামান মজুমদার, মন্ত্রিপরিষদের সমন্বয় ও সংস্কার সচিব মো. মাহমুদুল হোসাইন খানসহ ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অনলাইন ডেস্ক :
দ্বাদশ সংসদের সংরক্ষিত আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশায় ফরম কিনেছেন ১৫৪৯ জন নারী। সংরক্ষিত আসনের নির্বাচন উপলক্ষে মোট ৭ কোটি ৭৪ লাখ ৫০ হাজার টাকার মনোনয়ন ফরম বিক্রি করেছে দলটি। ৫০টি আসনের মধ্যে ৪৮টি আসনে মনোনয়ন দেবে আওয়ামী লীগ।
আজ ৮ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে অবস্থিত দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, গত তিন দিনে মোট মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয়েছে ১৫৪৯টি। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি দলের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। সেই সভায় প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে।
এসময় প্রার্থী সংখ্যা অনেক বেশি হয়ে গেল কি না- এমন এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, গত নির্বাচনের সময় কত সংখ্যক প্রার্থী ছিল সেটা কি মনে আছে? চৌদ্দশ’র বেশি ছিল। তখন সিট ছিল ৪৩টা, এখন ৪৮টা। ৫টা বেশি আছে।
তিনি বলেন, আমাদের অভ্যন্তরীণ গণতান্ত্রিক যে চর্চা, আমি বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি, বাংলাদেশে যতটুকু অভ্যন্তরীণ গণতান্ত্রিক চর্চা হয়, সেটা আওয়ামী লীগের ভেতরেই হয়। আমরা নিয়ম কানুন মেনে সবকিছু করে থাকি। ভুল ত্রুটি হয় না তা নয়, কারণ পারফেক্ট পৃথিবীতে কেউ নয়। এছাড়া আমরাই এদেশে একমাত্র রাজনৈতিক দল যারা গণতন্ত্রের কথা মুখে বলি না, নিজেদের ঘরে চর্চা করি। আর বিএনপি সেটা করে না। তাদের কনফারেন্সও হয় না কত বছর।
গত মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) থেকে সংরক্ষিত নারী আসনের জন্য আওয়ামী লীগের ফরম বিক্রির কার্যক্রম শুরু হয়। যা আজ বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে। শেষদিন দলটি ২১৭টি মনোনয়ন ফরম বিক্রি করে। বিপরীতে আয় করে ১ কোটি ৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
গতকাল দ্বিতীয় দিন ৫২২টি ফরম বিক্রি করা হয়। এ থেকে মোট আয় হয় ২ কোটি ৬১ লাখ টাকা। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগ থেকে ১৬৭টি, ময়মনসিংহ বিভাগ থেকে ৪৭টি, চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে ৭৮টি, সিলেট বিভাগ থেকে ২২টি, বরিশাল বিভাগ থেকে ৩৬ টি, খুলনা বিভাগ থেকে ৬৮টি, রংপুর বিভাগ থেকে ৬০টি এবং রাজশাহী বিভাগ থেকে ৪৪টি মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয়।
প্রথম দিন বিক্রি হয়েছিল ৮১০টি ফরম। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগ থেকে ২৭৫টি, ময়মনসিংহ বিভাগ থেকে ৬২টি, চট্টগ্রাম বিভাগ থেকে ১৪৯টি, সিলেট বিভাগ থেকে ২৬টি, বরিশাল বিভাগ থেকে ৫৬টি, খুলনা বিভাগ থেকে ৭৭টি, রংপুর বিভাগ থেকে ৭৫টি এবং রাজশাহী বিভাগ থেকে ৯০টি মনোনয়ন ফরম বিক্রি হয়েছিল।
ঢাকা।।
সভাপতি পদে বরাবরের মতোই নির্বাচিত হয়েছেন শেখ হাসিনা; সাধারণ সম্পাদক পদে ওবায়দুল কাদেরও পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন।সম্মেলনে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বে কোনো পরিবর্তন আসেনি।এনিয়ে দশমবার আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হলেন শেখ হাসিনা; ওবায়দুল কাদের সাধারণ সম্পাদক হলেন তৃতীয়বার।আজ শনিবার সকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ক্ষমতাসীন দলটির ২২তম সম্মেলন উদ্বোধনের পর বিকালে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বসে কাউন্সিল অধিবেশন।কাউন্সিলে নির্বাচনী অধিবেশনে দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনার নাম প্রস্তাব করেন। সাধারণ সম্পাদক পদে ওবায়দুল কাদেরের নামের প্রস্তাবও আসে।নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের প্রক্রিয়া পরিচালনা করতে গঠিত তিন সদস্যের নির্বাচন কমিশনের প্রধান ও দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন সভাপতি পদে শেখ হাসিনা এবং সাধারণ সম্পাদক পদে কাদেরের নাম কাউন্সিলরদের বিবেচনার জন্য উপস্থাপন করেন।
সারাদেশ থেকে আসা সাড়ে ৭ হাজার কাউন্সিলর সমস্বরে এই প্রস্তাব সমর্থন করেন।এর আগে পায়রা উরিয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা।