চলারপথে রিপোর্ট :
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেছেন, ‘যে স্বপ্ন নিয়ে দেশ স্বাধীন হয়েছিল, তা বাস্তবায়ন হয়নি। স্বাধীনতার মূল মন্ত্র ছিল ‘কেউ খাবে, কেউ খাবে না-তা হবে না।’ সমাজতন্ত্র কায়েমের জন্যই দেশ স্বাধীন করেছিলাম। দেশ স্বাধীনের জন্য যুদ্ধ করেছে এ দেশের কৃষক, শ্রমিক, মেহনতি মানুষ। তাদের সেই ত্যাগের সুফল ভোগ করছে পুঁজিবাদী একটি শ্রেণি।’
নবীনগর উপজেলা কমিউনিস্ট নেতা প্রদীপ সাহার স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলার পৌর সদর বড়বাজার প্রাঙ্গণে এ সভা হয়।
ডাকসুর প্রথম ভিপি সেলিম বলেন, ‘মাথাপিছু আয়ের হিসাব ধরা হয়েছে ৩ লাখ টাকা। সেই পরিমাণ টাকা কি আমারা পাচ্ছি? দেশ আজ ঋণগ্রস্ত, মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ ১ লাখ টাকা। আজ দেশের অর্থ এক শ্রেণির হাতে জিম্মি। ১৬ বছরে দেশ থেকে ১১ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়ে গেছে, যা ফেরত আনার কোনো সুযোগ নেই।’
আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার যে নীতিতে দেশ চালাচ্ছে, তার আগে বিএনপি, এরশাদসহ সব সরকাই একই নীতিতে দেশ চালিয়েছে। তারা দেশকে আজ দেওলিয়াপনার দিকে নিয়ে যাচ্ছে।’
প্রদীপ সাহার স্মৃতিচারণ করে তাঁর নামে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে একটি সড়ক নামকরণের দাবি জানান মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম।
সিপিবির নবীনগর উপজেলা শাখার সভাপতি ইসহাকের সভাপতিত্বে স্মরণসভায় আরও বক্তব্য দেন সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হাসান তারিখ চৌধুরী, সিপিবির জেলা শাখার সভাপতি সৈয়দ মো. জামাল, সম্পাদক সাজিদুল ইসলাম, প্রয়াত নেতার সহধর্মিণী সবিতা রানী সাহা প্রমুখ।
চলারপথে রিপোর্ট :
সুবিন্যস্থ বেণি জুড়ে গাছে দুলছে আশ্চর্য সুন্দর হিজল ফুল। দেখে মুগ্ধ না হয়ে পারা যায় না। প্রতি বছর বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য মাসে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরের হাওড় বেষ্টিত ভাটির অঞ্চলে এ ফুলের দেখা মিলে, এখন সেই সময়। রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশের কবিতায় ঘুরে ফিরেই এসেছে হিজলের কথা। কবির ভাষায়- “চোখে তার হিজল কাঠের রক্তিম/চিতা জ্বলে”। একই ভাবে হিজল বনে ঘুঘু দেখে উচ্ছ্বসিত কবি লিখেছেন- “পৃথিবীর সব ঘুঘু ডাকিতেছে হিজলের বনে”। অবশ্য কবিতার বাইরে বাস্তবে হিজল গাছের সংখ্যা অনেক কমে গেছে। গণসংগীত শিল্পী হেমাঙ্গ বিশ্বাস সুরে সুরে বলেছেন- “হাওড়ের পানি নাই রে হেথায়, নাই রে তাজা মাছ/বিলের বুকে ডালা মেলা, নাই রে হিজল গাছ”। অর্থাৎ দিন দিন হিজল গাছের সংখ্যা কমছে। বর্তমানে গাছটি প্রায় দুর্লভ। এ গাছটি সংস্কৃত নাম নিচুল, এ ছাড়াও জলন্ত ও নন্দীক্রান্ত নামেও পরিচিত। হিজল গাছের বৈজ্ঞানিক নাম- Barringtonia acutangula। এটি Lecythidaceae পরিবারের সদস্য। এটি বাংলাদেশের ভাটির অঞ্চলে বহুকাল ধরে টিকে থাকলেও এর আদি নিবাস অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া এবং ভারত। গাছ মাঝারি আকারের, উচ্চতা ৫-১০ মিটার পর্যন্ত, এর ডালপালা থাকে ছড়ানো, বাকল যথেষ্ট পুরো, ঘনছাই রঙের হয়ে থাকে, বীজ থেকে গাছ হয়। খাল, বিল, নদী, ডোবা, হাওর ইত্যাদি জায়গায় দেখতে পাওয়া যায়। এটি পানির নিচে কয়েক মাস জীবিত থাকতে পারে। এ গাছের মূল আকর্ষণ লাল ও গোলাপি রঙের ছোট ছোট ফুল, ফুলের আছে মিষ্টি ঘ্রাণ। উদ্ভিদবিদ দ্বিজেন শর্মার বর্ণনা মতে- “ফুলের মঞ্জুরী ৬-১৫ ইঞ্চি লম্বা। বহুপুষ্পিক ফুলের বৈশিষ্ট্যে হিজল অনন্য”।
হিজল বীজের অনেক ঔষুধি গুনাগুন আছে- মাথা ও কপাল ব্যথা হলে হিজল বীজ শুকিয়ে গুড়া করে দুই চামচ পরিমাণ এক কাপ দুধসহ সকালে এবং বিকেলে খেলে মাথা ব্যাথা কমে যায়। পেটে গ্যাস হলে, ঢেকুর উঠলে, পেট ফাঁপা হলে হিজল বীজ চূর্ণ করে গরম মসলা সহ খেলে কিছুক্ষনের মধ্যে সেই সমস্যা চলে যায়। চোখ উঠলে, চোখ লাল হলে, চুলকায়, পানি পড়ে। সেই সময় বীজ নিয়ে পাথরে ঘসে চন্দনের মত চোখের চারি পাশে লাগিয়ে দিলে কিছুক্ষণ রাখার পর ছোট নেকড়া ভিজিয়ে মুছে দিলে যন্ত্রণা কমে যায়। হিজল ফুল গভীর রাতে ফুটে, সকাল হতে না হতেই ঝড়ে যায়। হিজল সাধারণত জলমগ্ন বা জলসংলগ্ন অঞ্চলে ভাল হয়। তাই নবীনগরের ভাটির অঞ্চলের গ্রামীণ ঐতিহ্যের অংশ হয়ে আছে টিকে আছে হিজল গাছ। নদী সংলগ্ন গ্রাম গুলোতে নৌকা দিয়ে গেলে চোখে পড়ে অপূর্ব হিজল গাছের সারি কারন- হিজলের আবাস নিচু এলাকা/ হাওড় অঞ্চল।
নবীনগরের মত দেশের হাওড় বেষ্টিত সাত জেলার ৪০টি উপজেলায় কম বেশি প্রায় প্রতি গ্রামেই দেখা যায় হিজল। নিচু জলাঅঞ্চলে মাছের অভয়রাণ্য তৈরিতে এই গাছের ডাল ব্যবহৃত হয়। ভরা বর্ষায় নবীনগরের ভাটি অঞ্চলে বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়ার সময় নৌকা থেকে চারপাশে তাকালে থৈ থৈ জলের মধ্যে দেখা যায় হিজল গাছ। যেন ঘাটে নৌকা লাগতেই স্বাগত জানাচ্ছে হিজলের ফুল। স্থানীয়দের খুব চেনা এ গাছটি শুকনো মৌসুমেও দিব্যি থাকে। এমনকি রাজধানী শহরের একাধিক উদ্যানেও দেখা যায় হিজল গাছ। বর্তমানে কিছু সরকারি বেসরকারি প্র্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে এ গাছ লাগানো হচ্ছে। হিজলের প্রাণশক্তি অনেক বেশি, দীর্ঘজীবী গাছ, বিধ্বংসী বন্যা কিংবা তীব্র খরাও একে কুপোকাত করতে পারে না। জল এবং স্থল দুই জায়গাতেই এরা সাবলীল, এদের এই আলাদা বৈশিষ্ট্য ও অভিযোজনের কারনে হিজল সবার দৃষ্টি কাড়ে।
চলারপথে রিপোর্ট :
১০ বছর আগে শাহনূর আলম নামে ব্যবসায়ীকে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ মামলা হিসেবে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।৬ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও বিচারপতি সগীর হোসেন লিয়নের বেঞ্চ এ রায় দেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আগের আদেশ বাতিল করে মামলাটি নেয়ার নির্দেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার আশরাফ রহমান। তিনি বলেন, দীর্ঘ ১০ বছর এ রুলটির শুনানি হয়নি। জুলাই অভ্যুত্থানের পর আমরা বিষয়টি শুনানির জন্য হাইকোর্টে উপস্থাপন করি। এরপর হাইকোর্ট রুল শুনানি শেষে রায়ের দিন ধার্য করেন। বৃহস্পতিবার রুলটি অ্যাবসোলুট করে রায় দিলেন হাইকোর্ট। ফলে শাহনূর আলম হত্যার অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণে বাধা কাটলো।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব-১৪) নয়জন সদস্যের বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২০১৪ সালের ১ জুন একটি নালিশি আবেদন করেন শাহনূরের ভাই মেহেদি হাসান। ওই অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ২০১৪ সালের ২৯ এপ্রিল শাহনূরকে র্যাব-১৪ এর সদস্যরা বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে নির্যাতন করেন। পরে ৬ মে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শাহনূর মারা যান। র্যাবের নির্যাতনে শাহনূরের মৃত্যু হয়েছে।
পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত নির্যাতনে শাহনূরের মৃত্যুর অভিযোগের আবেদনটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দেন। কিন্তু এ আদেশের বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতে রিভিশন আবেদন করেন অভিযুক্ত এক র্যাব সদস্য।
ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের আদেশ বাতিল করে নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন জেলা ও দায়রা জজ আদালত। তবে এ আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করেন শাহনূরের ভাই মেহেদি হাসান।
২০১৪ সালের ১৬ জুলাই হাইকোর্টের বিচারপতি শওকত হোসেন ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের আদেশ সংশোধন করে জেলা দায়রা জজ আদালতের দেওয়া আদেশ কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। সে রুল ৬ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার যথাযথ ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট।
চলারপথে রিপোর্ট :
সমাজকল্যাণের ব্রত নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের বাঘাউড়া গ্রামে যাত্রা শুরু করেছে বাঘাউড়া প্রবাসী সমাজকল্যাণ সংগঠন। গ্রামটির সব প্রবাসীদের উদ্যোগে ও নিরলস পরিশ্রমের পর আত্মপ্রকাশ করেছে সংগঠনটি।
আজ ২৮ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার সংগঠনটি ও একটি পাঠাগার উদ্বোধন করা হয়েছে। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে পাঠাগারটি উদ্বোধন করেন গ্রামটির কৃতি সন্তান, শিবপুর ইউনিয়নের সাবেক সফল চেয়ারম্যান এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. শাহীন সরকার।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, দুঃস্থ ও অসহায় মানুষের সেবার পাশাপাশি সংগঠনটি গ্রামের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়নেও ভূমিকা রাখবে। গ্রামের জ্ঞানপিপাসু শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের জ্ঞানের পরিধি বাড়ানোর লক্ষ্য পাঠাগারটি স্থাপন করা হয়েছে। সংগঠনের সদস্যদের আশা, এই পাঠাগারটি শিক্ষার্থীসহ সব বয়সের মানুষের মধ্যে বই পড়ার আগ্রহ গড়ে তুলবে।
ইতোমধ্যে এই সংগঠনের উদ্যোগে গ্রামের কবরস্থানের দেয়ালে টাইলসকরণ করা হয়েছে। এছাড়া, দুঃস্থ মানুষের সহায়তায় তাদের আর্থিকভাবে সহযোগিতা করা হয়েছে। একটি গৃহহীন পরিবারকে ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি মো. শাহীন সরকার তার বক্তব্যে বলেন, শুরু থেকেই গ্রামের মাদরাসা ও কবরস্থানের বিভিন্ন কাজে তাদের অনেক ভূমিকা আছে। তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা আগামীতে আরও ভালো ভালো কাজ করবে বলে বিশ্বাস করি। যারা প্রবাসে থেকে গ্রামের উন্নয়নের জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়েছে তাদের জন্য আমরা দোয়া করব ও যেকোনো সময়ে যেকোনো সহযোগিতায় আমরা তাদের পাশে থাকব।
তিনি আরও বলেন, এখন আমরা গ্রামবাসী গ্রামের উন্নয়নে কাজ করছি, পাশাপাশি তারা প্রায় দুই শতাধিক যুবক মিলে গ্রামের উন্নয়নে অবদান রাখছে। আমরা সব গ্রামবাসী তাদের এই মহৎ উদ্যোগের জন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকব।
সংগঠনের কর্মপরিকল্পনা ও পাঠাগার স্থাপনের বিষয়ে সংগঠনটির কুয়েত প্রবাসী সদস্য মো. নাহিদ মিয়া মোবাইলফোনে বলেন, শিক্ষা থেকে শুরু করে সমাজের সব উন্নয়নমূলক কাজ করার লক্ষ্য নিয়ে এই সংগঠনের যাত্রা শুরু করা। এখানে গরিব মানুষকে সহায়তার পাশাপাশি গরিব শিক্ষার্থীদেরও শিক্ষাকার্যক্রম চালিয়ে নেওয়ার জন্য সব ধরনের সহায়তা করা হবে। সবাইকে বইমুখি করতে আমাদের পাঠাগারে বিভিন্ন ধরনের বইয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে করে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ সবাই উপকৃত হবে বলে আশা করি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের সংগঠনের আরও একটি উদ্দেশ্য আছে, সেটি হলো একতা। গ্রামের সবাই বিশেষ করে সব প্রবাসীদের ঐক্যবদ্ধ করতে আমাদের এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করা। এখানে সবাই ব্যক্তিগত স্বার্থ বাদ দিয়ে সবার জন্য কাজ করবে। তাই সংগঠনে আমরা কাউকে কোনো পদ-পদবি দিচ্ছি না। এখানে সবাই সমান।
অনুষ্ঠানে সুহেল মেম্বারের সভাপতিত্বে ও হাফেজ মাওলানা সাইফুল ইসলাম মোল্লার সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন মিরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক কৃষ্ণকান্ত দেবনাথ, শিবপুর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য মো. জাকির হোসেন, মো. আব্দুল হক সাহেব, মো. বাছির মিয়া, শহীদ মিয়া, কালন সর্দার, ডা. রুকুনুজ্জামানসহ আরও অনেকে। মিলাদ ও দোয়া পরিচালনা করেন মুফতি আবুল হাসেম কাসেমী সাহেব।
চলারপথে রিপোর্ট :
নবীনগরের সাবেক পৌর কাউন্সিলর নিলুফা ইয়াসমিনের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সাইবার ট্রাইব্যুনালে করা মামলায় নবীনগরের ৫ সাংবাদিককে অব্যাহতি দিয়েছেন মহামান্য আদালত।
আজ ২৯ অক্টোবর মঙ্গলবার সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালত চট্টগ্রামের বিচারক জহিরুল কবিরের বেঞ্চ তাদের অব্যাহতি দেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী স্বরূপ কান্তি দেবনাথ বলেন, ২০২৩ সালের ৫ জানুয়ারি সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালত চট্টগ্রামে দায়ের হওয়া মামলায় গতকাল মঙ্গলবার দুই পক্ষের শুনানী শেষে ৫ সাংবাদিককে মহামান্য আদালত অব্যাহতি দিয়েছেন।
অব্যাহতি পাওয়া পাঁচ সাংবাদিক হলেন-ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি দৈনিক সমকালের উপজেলা প্রতিনিধি মাহবুব আলম লিটন, এশিয়ান টিভির উপজেলা প্রতিনিধি জয় বুলবুল, দৈনিক বর্তমান উপজেলা প্রতিনিধি সফর আলী, নবীনগর থানা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পদক মমিনুল হক রুবেল, আমার সংবাদের উপজেলা প্রতিনিধি মোঃ বাবুল মিয়া।
মামলার বাদী পক্ষে আইনজীবী ছিলেন মো. হাসান রেজা নাজমী ভূইয়া ডেভিড।
প্রসঙ্গত: পাঁচ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে নবীনগরের পৌর কাউন্সিলর নিলুফা ইয়াসমিন গত ২০২৩ সালের ৫ জানুয়ারি সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালত চট্টগ্রামে মামলা করেছিলেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগরে ঘুস না দেওয়ায় আদালতে মনগড়া প্রতিবেদন দাখিল করায় পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) বাছির আলমের প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ ২৩ আগস্ট বুধবার নবীনগর উপজেলার রছুল্লাবাদ ইউনিয়নের কালঘরা বাজারে লহরি-কালঘরা সড়কে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা জানান, জেলে পাঠানোর ভয় দেখিয়ে রছুল্লাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের মাধ্যমে এসআই বাছির আলম ২০ হাজার টাকা ঘুস দাবি করেন। এনিয়ে আসামিপক্ষের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা হয়। বাধ্য হয়ে চেয়ারম্যানের সামনে ১০ হাজার টাকা দিতে হয়। পরে আরও টাকা দাবি করলে সেই টাকা দিতে অস্বীকার করায় আদালতে তদন্ত বিহীন প্রতিবেদন দাখিল করে।
মানববন্ধনে স্থানীয় বাসিন্দা হবি মিয়া, রুবেল মিয়া, খলিল মিয়া, ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম খান, ফয়সাল চৌধুরী,শাহীন আহমেদ খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
রছুল্লাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খন্দকার মনির জানান, আমার সামনে কোনো ধরনের ঘুষ লেনদেন হয়নি।
বিষয়টি অস্বীকার করে নবীনগর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বাছির আলম বলেন, অভিযোগ নেওয়ার দায়িত্ব ওসি সাহেবের। আমাকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। আমি শুধু তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করেছি।
গত ৩০ জুলাই কালঘড়া হাফিজ উল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন শিক্ষক সুমন আহমেদের অনৈতিক কাজের বিরুদ্ধে স্থানীয় ফয়সাল চৌধুরীসহ তিন শতাধিক অভিভাবক-শিক্ষার্থী বিক্ষোভ মিছিল করে। মিছিল শেষে ফয়সাল চৌধুরীসহ কয়েকজন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে শিক্ষক সুমনের প্রত্যাহারের দাবিতে লিখিত অভিযোগ করতে যান। সেখানে শিক্ষক সুমন আহমেদ অভিযোগ দিতে যাওয়া ফয়সাল চৌধুরীসহ সবাইকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন। এর জের ধরে ফয়সাল চৌধুরী ও শিক্ষক সুমন আহমেদ নবীনগর থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করেন। অভিযোগগুলোর তদন্তের দায়িত্ব পান নবীনগর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বাছির আলম। অভিযোগ তদন্তের দায়িত্বে থাকা নবীনগর থানার উপ-পরিদর্শক (এস.আই) বাছির আলম কোনো ধরনের তদন্ত না করে ২০ আগস্ট সুমন আহমেদের অভিযোগটির প্রতিবেদন আকারে আদালতে দাখিল করেন। কিন্তু তিনি ফয়সাল চৌধুরীর অভিযোগটির কোনো তদন্তই করেননি। তাই পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন ফয়সাল চৌধুরী। এতে সুষ্ঠু তদন্ত করে এস আই বাছির আলমকে প্রত্যাহারের দাবি করা হয়।