চলারপথে রিপোর্ট :
বরিশাল নগরীর ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের বাঘিয়া এলাকায় দুই চাচাতো ভাইয়ের দুই শিশু কন্যা পানিতে ডুবে মারা গেছে। আজ ১০ আগস্ট বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওই এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
২৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরিদ উদ্দিন জানান, বাঘিয়া নয়াদা বাড়ির দুই চাচাতো ভাই দেলোয়ার ও আনোয়ারের দুই শিশু কন্যা যথাক্রমে জিনিয়া (৫) ও খাদিজা (৫) দুপুরে বৃস্টির মধ্যে বাড়ির উঠোনে খেলছিল। সবার অলক্ষ্যে বাড়ির পাশে ডোবায় পরে যায় তারা। স্বজনরা ডোবারর পানি থেকে তাদের অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে শের-ই বাংলা মেডিকেলে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুই শিশুকে মৃত ঘোষনা করেন।
বিমান বন্দর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) লোকমান হোসেন এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
চলারপথে রিপোর্ট :
বগুড়ার শেরপুরে কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় মানসিক ভারসাম্যহীন নুরজাহান বেগমকে (৫২) পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আজ ১০ জুলাই সোমবার সকালে উপজেলার গাড়ীদহ ইউনিয়নের মহিপুর বাজার এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। পরে নিহতের লাশ থানা পুলিশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। এদিকে ঘটনার পরপরই ঘাতক আব্দুল মজিদকে (৪২) আটকের পর গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে স্থানীয় জনতা।
পুলিশ ও স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, বিগত দুইবছর আগে মহিপুর বাজার এলাকায় আসেন নুরজহান বেগম। এমনকি সেখানে ভাসমান অবস্থায় থাকতেন মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারী। আর স্থানীয় বাসিন্দা ঘাতক আব্দুল মজিদও ভবঘুরে জীবন যাপন করতেন। তিনিও একই বাজারে থাকতেন। এরই ধারাবাহিকতায় একাধিকবার তাকে কু-প্রস্তাব দেয় মজিদ। কিন্তু তাতে কোনো সাড়া দেননি ওই নারী। বরং বিষয়টি এলাকার একাধিক ব্যক্তিকে জানান তিনি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে ঘাতক মজিদ। এরই জেরে সোমবার সকালে তাদের দু’জনের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। এসময় ঘাতক মজিদ কাঠের বাটাম দিয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারীকে বেধড়ক পেটায়। এতে তার মাথা ফেটে রক্তপাত শুরু হয়। এছাড়া শরীরের একাধিক স্থানেও মারাত্মক জখম হয়। পরে ওই নারীর চিৎকারে আশাপাশের লোকজন এগিয়ে আসেন। সেই সঙ্গে ঘাতক মজিদকে আটক করে রাখেন। পরে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা এসে নুরজাহান কে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথেই মারা যান।
শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বাবু কুমার সাহা বলেন, এই ঘটনায় আব্দুল মজিদ নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সেও ভবঘুরে জীবন-যাপন করতো। ঘটনার পর থেকে কোনো কথা বলছে না। তাই কী-কারণে মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারীকে পিটিয়ে হত্যা করেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে সরকারি চাকরিসহ ৪ দফা দাবিতে ফের মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে ইনস্টিটিউট অব লাইভস্টক সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (আইএলএসটি) শিক্ষার্থীরা। এসময় আইএরএসটি প্রধানের কার্যালয় অবরুদ্ধ করে বিক্ষুব্ধ শিক্ষাক্ষর্থীরা। লাগাতার কর্মসূচি দেওয়ার হুমকী দেন বিক্ষুব্ধরা।
আজ ৪ ডিসেম্বর বুধবার দুপুরে আইএলএসটি ভবনের সামনে রাস্তা অবরোধ করে কর্মসূচিতে অংশ নেন প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থী। ডিপ্লোমা ইন লাইভস্টক স্টুডেন্ট ফেডারেশন নাসিরনগর শাখার উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। বেশকিছুধিন ধরে ক্লাশ বর্জন করে শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচি পালন করে আসছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবি মেনে না নিলে সারা দেশে আইএলএসটির পুরো কার্যক্রম বন্ধ করে দিবেন বলে জানা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
বক্তব্য বিডিএলএসএফ কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আয়াতুল্লাহ খান শিহাব, নাসিরনগর শাখার সভাপতি আহসান হাবিব, সাধারণ সম্পাদক তাহমিদ নিশাত ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আশিকুল হক আরফান ও ফারাহ সাদিয়া পুতুল।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, ডিপ্লোমা ইন লাইভস্টক (আইএলএসটি) অধিদপ্তরের ২০২০সালে গঠিত অর্গানোগ্রামে দু’হাজারের উপরে নতুন পদ সৃস্টি করা হয়েছে। যা ডিপ্লোমাধারীদের জন্য মুখ্য পদ। কিন্তু এ পদে তাদের বাদ দিয়ে নন-টেকনিক্যাল প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ২০২৩ এর অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের জন্য ৭২টি পদ সৃস্টি করা হয়েছে। সেখানেও তাদের নিয়োগ না দিয়ে নন-টেকনিক্যাল প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।
তারা বলেন, এখন পর্যন্ত চারটি ব্যাচ আইএলএসটি থেকে পাস করেও চাকরী পায়নি। তারা বেকার। নুতন চারটি ব্যাচ বের হবে। তাদেরও চাকরীর নিশ্চয়তা নেই। আর কোন শিক্ষার্থী পড়তে আসছেনা। এটি বেকার তৈরির একটি কারখানা।
বক্তারা আরও বলেন, লাখ লাখ টাকা খরচ করে পড়ালেখা করেও চাকরী না পেয়ে বিপদগামী হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। যদি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না হয় তাহলে আমাদের সার্টিফিকের আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হোক। আরো নতুন নতুন ইনস্টিটিউট স্থাপনের কাজ করছে। প্রতি বছর হাজার হাজার বেকার যুবকই বের হবে।
শিক্ষার্থীদের চার ধফা দাবির মধ্যে অন্যতম হলো-অর্থমন্ত্রণালয় কর্তৃক নিয়োগবিধি মোতাবেক উপসহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (কৃত্রিম প্রজনন ও প্রাণিস্বাস্থ্য) পদে দ্রুত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে তা কার্যকর করা। ভিএফ ও সমমানের পদে ডিপ্লোমা ইন লাইভস্টক থেকে পাস করে বের হওয়া শিক্ষার্থীদের যুক্ত করে ৭০ শতাংশ পদে অগ্রাধিকার দিয়ে নিয়োগ কার্যক্রম চুড়ান্ত করা। ওভারশিয়ার (কৃষি, বায়ার এবং ডেইরি) বায়ার ওভারশিয়ার ও ডেমনস্ট্রেটর পদসমূহে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া। নবসৃষ্ট গ্রেড-৩, গ্রেড-৫, গ্রেড-৬ ও গ্রেড-৯ পদ সমূহের বিপরীতে খসড়া নিয়োগবিধির আলোকে পূরণকৃত সকল নিয়োগ এবং পদোন্নতি বাতিল করা।
নাসিরনগর শাখার সভাপতি আহসান হাবিব বলেন, বিছুদিন আগে বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে ফ্যাসিস্ট সরকারকে পতন ঘটিয়েছি। কিন্তু আমাদের আইএলএসটির শিক্ষার্থীরা এখনো বৈষম্যের শিকার হচ্ছি। আমাদের জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে নন-টেকনিক্যাল লোকদের নেওয়া হচ্ছে। ডিপ্লোমা ইন লাইভস্টক (আইএলএসটি) অধ্যক্ষ ডাঃ কাজী রফিকুজ্জামান বলেন, শিক্ষাথীদের সকল দাবিই যৌক্তিক। কিন্তু উপর মহলকে তাদের দাবির গুরুত্বটি বুঝতে হবে এবং বুঝাতে হবে।
অনলাইন ডেস্ক :
একদফা দাবিতে সারাদেশে কঠোর অবস্থান নিয়েছে আন্দোলনকারীরা।
আন্দোলনকারীদের তোপের মুখে অসহায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এই অবস্থায় ফের মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে একটি সরকারি সংস্থা। এরইমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে সামাজিক যোগাযোগামাধ্যম ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপ।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের অসহযোগ কর্মসূচিতে সারা দিয়ে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে জড়ো হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এই আন্দোলন। মুন্সিগঞ্জে সংঘর্ষে দুজন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। এছাড়াও বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজে হামলা চালানো হয়েছে।
এদিন বেশ কিছু জায়গায় আন্দোলনকারীদের তোপের মুখে পড়ে জায়গা ছেড়েছে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের। কোথায় কোথায় পুলিশকে দেখা যায়নি। পরিস্থিতি খারাপ আকার ধারণ করলে ফের মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধের নির্দেশ দেয় সরকারি একটি সংস্থা। এর খানিক পরই বন্ধ হয়ে যায় ফেসবুক ও হোয়াইটসঅ্যাপ।
এর আগে, গত ১৮ জুলাই সারাদেশে ইন্টারনেট পরিসেবা বন্ধ করে দেয় সরকার। পরে সেনাবাহিনী মোতায়েন করে কারফিউ জারি করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে ১০ দিন বন্ধ থাকার পর পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলে ফের চালু করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট সেবা। তবে এবার ফের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে মোবাইল ইন্টারনেটে ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপ বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।তবে ব্রন্ডব্যান্ড লাইনে সামাজিক মাধ্যম চালু আছে।
অনলাইন ডেস্ক :
দেশের উন্নয়নের অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে বরিশালবাসীকে পাশে থাকার আহ্বান জানিয়ে নৌকায় ভোট চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে আবারও ক্ষমতায় আসতে পারলে বরিশালে ছয় লেনের রাস্তাসহ অনেকগুলো প্রকল্প বাস্তবায়নেরও প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
আজ ২৯ ডিসেম্বর শুক্রবার বিকেলে বরিশাল নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলে বাংলাদেশের উন্নয়ন হয়েছে। যখন জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া ক্ষমতায় ছিল তখন বাংলাদেশের উন্নয়ন হয়নি। বাংলাদেশ পিছিয়ে গেছে। আওয়ামী লীগ আসলে দেশ এগিয়ে যায়। কাজেই এই অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি তারুণ্যের শক্তি বাংলাদেশের অগ্রগতি।
এ সময় নতুন ভোটারদের কাছে নৌকায় ভোট চেয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার আহ্বান, যারা প্রথমবার ভোট দিতে আসবেন, নিশ্চয় চাইবেন না যে, আপনার ভোট ব্যর্থ হোক। কাজেই নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন।’
আওয়ামী লীগ যখন জনগণের জন্য উন্নয়ন করে, তখন বিএনপি-জামায়াত অগ্নিসন্ত্রাস করে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রেললাইন কেটে বগি ফেলে দিয়ে মানুষ মরার ফাঁদ পাতে। মা আর সন্তানকে একসাথে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মেরেছে। এই দৃশ্য বিশ্ব বিবেককে নাড়া দিয়েছে। গাড়িতে আগুন দেয়। ২০০১ সালের অগ্নিন্ত্রাস শুরু করেছিল। এরপর ২০১৩, ২০১৪ সালের পর এখন আবার শুরু করেছে।
“আমি ধিক্কার জানাই, ওই বিএনপি-জামায়াতকে। বিএনপি হচ্ছে সন্ত্রাসী দল। এই সন্ত্রাসী দলের রাজনীতি করার কোনো অধিকার বাংলাদেশে নেই। কারণ তারা মানুষ পোড়ায়, মানুষ হত্যা করে। আমাদের রাজনীতি মানুষের কল্যাণে, ওদের রাজনীতি মানুষ পোড়ানোতে। তাদের এদেশের মানুষ চায় না। তাদের দোসর কে? যারা একাত্তরের গণহত্যা করেছে, লুটপাট করেছে, নারী ধর্ষণ করেছে, মানুষের ওপর অত্যাচার করেছে, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সাথে হাত মিলিয়ে গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাড়খার করে দিয়েছে। যাদের বিচার করেছি, সাজা দিয়েছি; সেই যুদ্ধাপরাধীরা হচ্ছে তাদের দোসর।”
তিনি বলেন, একদল হচ্ছে খুনি, সন্ত্রাসী, দশ ট্রাক অস্ত্র চোরাকারবারি, মানিলন্ডারিং এবং যত প্রকার অপকর্ম…এতিমের অর্থ আত্মসাৎকারী সেই দল। তার সাথে জুটছে যুদ্ধাপরাধী দল। এরা নির্বাচন চায় না। বানচাল করতে চায়।
নৌকায় ভোট দিলে বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশের রূপান্তরিক হবে প্রতিশ্রুতি দিয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, ‘আপনাদের কাছে আহ্বান, আপনারা ৭ তারিখে সকলে সকাল সকাল সবাই ভোট কেন্দ্রে যাবেন। মার্কাটা কি? নৌকা মার্কা। এই নৌকা হচ্ছে নুহ (রা.) নবীর নৌকা। মহাপ্লাবন থেকে মানুষকে রক্ষা করেছিল।
“এই নৌকায় ভোট দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনতা পেয়েছে। এই নৌকায় ভোট দিয়ে আজকে দারিদ্র বিমোচন হয়েছে, ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছে। নৌকায় ভোট দিলে স্মার্ট বাংলাদেশ হবে।”
আগামীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রযুক্তিখাতে দেশকে এগিয়ে নিতে তার সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে দরে শেখ হাসিনা বলেন, দক্ষ জনশক্তি আমরা গড়ে তুলতে চাই। যাতে বিশ্বের সঙ্গে শিক্ষা-দীক্ষায় সব দিক থেকে আমাদের তরুণ প্রজন্ম চলতে পারে।
“ডিজিটাল বাংলাদেশ করে দিয়েছি এবং ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। আমাদের ছেলে মেয়ে সুশিক্ষায় সুশিক্ষিত হবে। আধুনিক বিজ্ঞান প্রযুক্তি শিখবে। দক্ষ জনশক্তি হবে। আমাদের সরকার ডিজিটাল পদ্ধতিতে স্মার্ট সরকার হবে, আমাদের অর্থনীতি স্মার্ট অর্থনীতি হবে, সমাজ ব্যবস্থা স্মার্ট হবে।”
দেশের শস্য ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত বরিশালে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন তুলে ধরে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘আজকে অবহেলিত বরিশাল আজ কোথায় আছে। বরিশাল কি উন্নত হয়েছে?’ এ সময় উপস্থিত জনতা দু’হাত তুলে বরিশালের উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে কৃতজ্ঞতা জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে বরিশাল বিভাগে নৌবাহিনীর ঘাটি করেছি, সেনানিবাস করেছি, এলাকার উন্নয়নের জন্য বিদ্যুৎ কেন্দ্র করা হয়েছে। বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দিচ্ছি, সেখানে সোলার প্যানলসহ কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করেছি। ভোলার গ্যাস সিএনজি করে ঢাকায় নিচ্ছি। ভবিষ্যতে বরিশালেও নিয়ে আসব যাতে আরও শিল্প কারখানা গড়ে ওঠে।’
“তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল কুয়াকাটায় চলে আসবে, সেখানে স্থাপন করা হবে যাতে দক্ষিণাঞ্চলের ইন্টারনেট নির্বিঘ্ন হয়। বরিশাল ছিল অন্ধকার। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে, এখন প্রতিটি ঘরে আলো জ্বলছে। প্রতিটি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি। কথা দিয়েছিলাম কোনো ঘর অন্ধকার থাকবে না। কথা রেখেছি। আমরা দিন বদলের সনদ দিয়েছিলাম, এখন দিন বদলে গেছে।”
ভাঙা থেকে বরিশাল-কুয়াকাটা এবং পায়রা পোর্ট পর্যন্ত ছয় লেনের রাস্তা তৈরি করা হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতিমধ্যেই আমাদের ভূমি অধিগ্রহণের কাজ শুরু হয়ে গেছে। এই বরিশালে আর কোনো দুর্ভোগ থাকবে না।
এ সময় বরিশাল একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করে দেওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, এরইমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় করে দিয়েছি, মেরিন একাডেমি করে দিয়েছি, প্রতিটি নদীর ওপর সেতু করে দিয়েছি।
তিনি বলেন, বরিশাল ছিল শষ্য ভাণ্ডার। আবারও সেই সুদিন ফিরিয়ে আনতে চাই। এজন্য খাদ্য সংরক্ষণাগার করে দিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতের ফলে দক্ষিণাঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, সেটা মাথায় রেখে ডেল্টা প্লান ২১০০ পর্যন্ত বাংলাদেশের উন্নয়নের পরিকল্পনা আমি করে দিয়েছি। কাজেই এই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। কারা পারবে? একমাত্র আওয়ামী লীগ পারবে।
এ সময় তিনি বলেন, দারিদ্রের হার ৪১ থেকে ১৮.৭ ভাগে নামিয়ে এনেছি। হতদরিদ্র ২৫.১ ভাগ ছিল, তা ৫.৬ ভাগে নামিয়ে এনেছি। ইনশাআল্লাহ এই বাংলাদেশের হতদরিদ্র থাকবে না। আমরা গৃহহীণদের ঘর করে দিচ্ছি। প্রতিটি মানুষ ঘর পাবে, জমি পাবে। কেউ গৃহহীন থাকবে না।
বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এসে দেশকে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, দুর্নীতির অভয়ারণ্য করেছিল উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ওই সময় ছিল বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে অন্ধকার যুগ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৯৬ থেকে থেকে ২০০১ সালে দেশ যত এগিয়েছিল, তারপর তার থেমে গেল। চক্রান্ত করে ২০০১ এ আমাদের হারানো হয়। এরপর যে অথ্যাচার শুরু হলো। এই বরিশাল থেকে ২৫ হাজার জনগণ আমার কোটালীপাড়া গোপালগঞ্জে আশ্রয় নিয়েছিল। কেউ ঘরে থাকতে পারত না। বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ হাত কাটা, পা কাটা, চোখ তোলা, হাতুরি দিয়ে পিটিয়ে পিটিয়ে হাড়গুড়ো করে মারা, ঘরবাড়ি দখল করা, মেয়েদের ওপর পাশবিক অত্যাচার করা, ফাহিমা-মহিমা কতো মানুষ আত্মহত্যা করেছে। এইভাবে তাদের অত্যাচার চলেছিল।’
“২০০১ থেকে ২০০৬ ছিল বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে অন্ধকার যুগ। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন না হলেও ওই বিএনপি ক্ষমতায় থেকে তাদের ভাগ্য গড়েছিল।”
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের সময়ে সমস্ত দেশের গ্রেনেড হামলা বোমা হামলা। এমনকি আমার ওপর পর্যন্ত গ্রেনেড হামলা হয়েছিল। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বাঁচিয়ে দিয়েছিল। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী আমাদের মানবঢাল করে সেদিন রক্ষা করেছিল। এই বাংলাদেশকে তারা একটা সন্ত্রাস জঙ্গিবাদ দুর্নীতির অভ্য়ারণ্য করেছিল।
প্রধানমন্ত্রী তার জনসভার শেষ দিকে বরিশাল বিভাগের নৌকার প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দিয়ে বরিশালবাসীর কাছে ভোট চান।
চলারপথে ডেস্ক :
আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ১৪ দিন আগে ৭৯ পুলিশ পরিদর্শকের (ওসি) বদলির অনুমতি চেয়ে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) চিঠি দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
আজ ২৩ ডিসেম্বর শনিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র সমকালকে এ তথ্য নিশ্চিত করে।
সূত্রটি জানায়, পুলিশ অধিদপ্তরের ৩০ পরিদর্শক (সশস্ত্র), ৪৬ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) এবং শহর ও যানবাহন শাখার ৩ পরিদর্শককে বদলি কিংবা পদায়নের সম্মতি চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
এদিকে দায়িত্ব পালনে নির্লিপ্ততা ও অবহেলার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ঝিনাইদহের শৈলকুপা এবং যশোরের হরিণাকুন্ড থানার ওসিকে প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ।
তিনি জানান, যেকোনো ধরনের অভিযোগ নির্বাচন কমিশনে আসবে। যেকোনো ভিডিও ক্লিপ বা প্রমাণ সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা ও এসপির কাছে পাঠানো হবে। তারপর তাদের তদন্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজশাহী ও ঝিনাইদহে প্রার্থীদের অনুসারীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় আজ বৈঠক করেছ্যা নির্বাচন কমিশন। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কমিশনের অতিরিক্ত সচিব বলেন, দায়িত্ব পালনে নির্লিপ্ততার কারণে শৈলকুপা ও হরিণাকুণ্ডু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার করা হয়েছে। ওখানে যে ঘটনা ঘটেছে, তার তদন্ত প্রতিবেদনে ২ ওসির নির্লিপ্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে।