ডেঙ্গু কেড়ে নিল আরো এক তরুণ চিকিৎসকের প্রাণ

জাতীয়, 11 August 2023, 655 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরো এক তরুণ চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। ডা.শরীফা বিনতে আজিজ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

banner

আজ ১১ আগস্ট শুক্রবার ভোর ৫টায় সেখানে তার মৃত্যু হয় বলে দায়িত্বরত চিকিৎসক জানিয়েছেন।

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার মো. নাজমুল হক জানান, ডা. শরীফা ডেঙ্গু আক্রান্ত ছিলেন। ঢাকা মেডিকেলে আসার আগে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। অবস্থা খারাপ হলে বৃহস্পতিবার ঢামেকে আনা হয়।

রংপুর মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস করে ঢাকা মেডিকেল কলেজে এফসিপিএস পার্ট টু করছিলেন শরীফা বিনতে আজিজ। তার গ্রামের বাড়ি ঢাকার দোহার উপজেলার জয়পাড়ায়।

স্বজনরা জানিয়েছেন, ঢাকা মেডিকেলে ডিউটিতে থাকা অবস্থায় গত ৪ আগস্ট জ্বর আক্রান্ত হন শরিফা।

ডেঙ্গু ধরা পড়লে ছুটিতে চলে যায়। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এর আগে ৭ আগস্ট সোমবার ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে আলমিনা দেওয়ান মিশু নামে এক তরুণ চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) লাইফ সাপোর্ট থাকাকালে মারা যান তিনি।

Leave a Reply

সরাইলে জাল টাকার নোটসহ গ্রেফতার ২

চলারপথে রিপোর্ট : সরাইলে জাল টাকার নোটসহ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে Read more

নবীনগরে টিকটক বানাতে গিয়ে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায়…

চলারপথে রিপোর্ট : নবীনগরে টিকটক করতে গিয়ে মোটর সাইকেল নিয়ন্ত্রণ Read more

উঠান বৈঠক

চলারপথে রিপোর্ট : জেলা তথ্য অফিসের উদ্যোগে তথ্য ও সম্প্রচার Read more

আমন ধান সংগ্রহ অভিযান শুরু

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলায় ২০২৪-২৫ মৌসুমের আমন Read more

৫ দিনব্যাপী জোড় ইজতেমা শেষ হলো

অনলাইন ডেস্ক : দেশের কল্যাণ, নিরাপত্তা, মুক্তি ও শান্তি কামনা Read more

নাটক থেকে বিদায় নিলেন ফারিয়া শাহরিন

অনলাইন ডেস্ক : ছোট পর্দার অভিনেত্রী ফারিয়া শাহরিন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে Read more

যাকে বিয়ে করতে চান জানালেন ভাবনা

অনলাইন ডেস্ক : দেশের মডেল ও অভিনেত্রী আশনা হাবিব ভাবনা Read more
ছবি সংগৃহীত

লাখ টাকা আয় চিতই পিঠা বিক্রি…

চলারপথে রিপোর্ট : আব্দুল কাদের চিতই পিঠা বিক্রি করে মাসে Read more

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ক্যাবের মানববন্ধন

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ীদের কারসাজি ও অতিরিক্ত Read more

উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত

চলারপথে রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা তথ্য অফিসের উদ্যোগে তথ্য ও Read more

আল্লাহর আইন হচ্ছে সত্যের জয় আর…

চলারপথে রিপোর্ট : আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান Read more

নাসিরনগরে ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে হেফাজতের মানববন্ধন

চলারপথে রিপোর্ট : জাতীয় পতাকা অবমাননা, মসজিদ ভাংচুর ও চট্টগ্রামের Read more

পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু

জাতীয়, 23 August 2023, 629 Views,
ফাইল ছবি

চলারপথে রিপোর্ট :
সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় ডোবার পানিতে ডুবে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আজ ২৩ আগস্ট বুধবার দুপুরে সলঙ্গা থানার বাসুদেবকোল দক্ষিণপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। মৃতরা হলো- সলঙ্গা থানার বাসুদেবকোল দক্ষিণ পাড়া গ্রামের আব্দুল করিমের ছেলে সিহাব (৯) ও মনিরুল ইসলাম বাবুর ছেলে অনিক আহম্মেদ (৮)। এরা দুজন সম্পর্কে চাচাতো ভাই।

banner

সলঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এনামুল হক জানান, দুপুরে বাড়ি ডোবার পাশে খেলাধুলা করছিল সিহাব ও অনিক আহম্মেদ। এক পর্যায়ে দু’জনেই পানিতে পড়ে ডুবে যায়। পরে বাড়ির লোকজন খোঁজাখুঁজি করেও তাদের পায় না। সন্ধ্যার আগে সন্দেহজনকভাবে ডোবাতে খোঁজাখুঁজির জন্য নামার পর তাদের মৃতদেহ খুঁজে পায়। এ ঘটনায় এলাকা শোকের ছায়া বিরাজ করছে।

মামলাজট কমাতে বিচারক বৃদ্ধি ও আদালত প্রতিষ্ঠার কাজ চলছে: আইনমন্ত্রী

জাতীয়, 22 February 2024, 421 Views,
ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক :
দেশে মামলাজট কমানোর জন্য বিচারকের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং নতুন আদালত প্রতিষ্ঠার কার্যক্রম চলছে বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি আরো জানান, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোার্টের বিচারক সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়টি সরকারের বিবেচনায় রয়েছে।

banner

আজ ২২ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে এ সংক্রান্ত লিখিত প্রশ্নটি উত্থাপন করেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য এম. আবদুল লতিফ। জবাবে মন্ত্রী আরো জানান মামলাজট কমানোর জন্য সম্প্রতি সহায়ক জনবলসহ ৪৭টি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, ৭টি সাইবার ট্রাইব্যুনাল, ৭টি মানব পাচার ট্রাইব্যুনাল, ৭টি সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল, গাজীপুর ও রংপুর চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ও ২টি ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, ৩০টি সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, ২২টি জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, ৬২টি অতিরিক্ত জেলা জজ আদালত ও ১১টি অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত, পটুয়াখালী জেলার রাঙ্গাবালী উপজেলায় একটি সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ও একটি সিনিয়র সহকারী জজ আদালত এবং গাজীপুর, রংপুর ও বরিশালে ৩টি মহানগর দায়রা জজ আদালত, ৩টি অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত ও ৩টি যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ আদালত সৃজন করা হয়েছে।

এছাড়া ১১টি যুগ্ম জেলা জজ, ৩৪টি যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ ১৭টি অর্থঋণ আদালত, ২১৪টি সহকারী জজ আদালত, ১৩টি ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল, ৫৪টি ল্যান্ড সার্ভে আপিল ট্রাইব্যুনাল, চট্টগ্রাম জেলায় ৩টি অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, ১০টি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, ৭টি অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এবং মাদক সংক্রান্ত মামলা বিচারের জন্য স্বতন্ত্র ৩০টি অতিরিক্ত জেলা জজ, ২৪টি অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ, ৬৬টি যুগ্ম জেলা জজ ও ৩২টি যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রস্তাব প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

একই প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী জানান, বিচার কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য বিচারকের নতুন পদ সৃষ্টির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। অধস্তন আদালতে বিভিন্ন পদমর্যাদার ৩৫৯টি বিচারকের পদ ও এক হাজার ৯৯৯টি সহায়ক পদ সৃজন করা হয়েছে। অপরদিকে ২০০১ থেকে ২০০৬ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে মাত্র ২৫টি বিচারকের পদ এবং ১৩৩টি সহায়ক জনবলের পদ তৈরি করা হয়।

তিনি জানান, ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত অধস্তন আদালতে এক হাজার ৪২৬ জন বিচারক (সহকারী জজ) নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পক্ষান্তরে ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত চারদলীয় জোট আমলে অধস্তন আদালতে মাত্র ১৯০ জন বিচারক নিয়োগ করা হয়েছিল।

সাব-রেজিস্ট্রার পদ সংক্রান্ত

সাব-রেজিস্ট্রার পদগুলি আইন ও বিচার বিভাগ হতে ভূমি মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী আনিসুল হক।

স্বতন্ত্র সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলামের প্রশ্নের লিখিত উত্তরে তিনি আরো জানান, রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত বিষয়াদি আইন ও বিচার বিভাগের কর্মপরিধিভুক্ত।

ফলে সাব-রেজিস্ট্রি অফিস এবং সাব-রেজিস্ট্রার পদ আইন ও বিচার বিভাগের অধীন প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন অধিদপ্তরের আওতায় থাকাই যৌক্তিক। রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত বিষয় আইন ও বিচার বিভাগের আওতাধীন থাকার ব্যাপারটি নিষ্পত্তিকৃত বিষয়। ভূমি অফিস ও সাব-রেজিস্ট্রি অফিসকে স্ব স্ব প্রশাসনিক এখতিয়ারের মধ্যে রেখে সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসের সঙ্গে সাব-রেজিস্টার অফিসের একটি আন্তঃসংযোগ স্থাপন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন। এ স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় সাব-রেজিস্ট্রি অফিস ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসকে স্ব-স্ব প্রশাসনিক এখতিয়ারের মধ্যে রেখে ইতোমধ্যে আন্তঃসংযোগ স্থাপন করা হয়েছে।
একই প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, ২০২১ সালের ১০ জুন হতে ২০২৪ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আন্তঃসংযোগে যুক্ত ১৭টি সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে এক লাখ ৪ হাজার ১১৬টি দলিল ই-রেজিস্ট্রেশন সিস্টেমে নিবন্ধিত হয়েছে।

পূর্বে দলিল নিবন্ধনের পর সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে ল্যান্ড ট্রান্সফার (এলটি) নোটিশ প্রেরণ করতে বিলম্ব হতো। ই-রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে দলিল নিবন্ধনের সাথে সাথে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এলটি নোটিশ সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে প্রেরিত হয়। এর মাধ্যমে সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিস দ্রুততম সময়ে নামজারি কার্যক্রম গ্রহণ করতে পারেন। অপরদিকে এই আন্তঃসংযোগের মাধ্যমে সাব-রেজিস্ট্রারগণ কোনো দলিল নিবন্ধনের পূর্বে নামজারির সর্বশেষ অবস্থান দেখতে পান। ফলে ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন ও জাল খতিয়ানের মাধ্যমে দলিল নিবন্ধন বন্ধ হয়েছে, রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা কমেছে। স্বল্প সময়ে ও কম খরচে মানসম্মত সেবা নিশ্চিত হয়েছে।
বাড়ি ভাড়া সংক্রান্ত

বাড়ি ভাড়া সংক্রান্ত নতুন কোন আইন প্রণয়নের পরিকল্পনা সরকারের নেই বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী। সরকারি দলের নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নের লিখিত প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, ভাড়াটিয়াদের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত এবং বাড়িওয়ালা ও ভাড়াটিয়াদের মধ্যে সংঘাত নিরসনের জন্য ‘বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন-১৯৯১’ বর্তমানে বিদ্যমান রয়েছে। বাড়ি ভাড়া সংক্রান্ত নতুন কোন আইন প্রণয়ন করার পরিকল্পনা আপাতত সরকারের নেই। তবে প্রয়োজনে বিদ্যমান আইনের বিধানসমূহ পর্যালোচনা করা হবে।

কলাগাছের সুতা দিয়ে পোশাক তৈরি বিষয়ক প্রশিক্ষণ পরিদর্শন

জাতীয়, 23 September 2023, 634 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
কলাগাছের সুতা দিয়ে ঐতিহ্যবাহী পোশাক তৈরি বিষয়ক ২০ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ পরিদর্শন করলেন মৌলভীবাজার-হবিগঞ্জ সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দা জহুরা আলাউদ্দিন। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) ফাউন্ডেশনের আয়োজনে এ প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলছে।

banner

উদ্যোক্তা ও তাঁত প্রতিনিধি এবং ইউসি সদস্য মো. রবিউল ইসলাম রাসেলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মোছা. সালেহা বেগম ও কলাগাছের সুতা দিয়ে শাড়ি তৈরিকারী মনিপুরী নারী রাধাবতী দেবী।

সংশ্লিষ্টরা জানান, রাধাবতী দেবী নিজেই প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে ৩০ জন মনিপুরী নারীরা প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেন। ১১ সেপ্টেম্বর প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে এবং আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে সমাপ্তি হবে।

আজ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস

জাতীয়, 25 March 2024, 411 Views,

চলারপথে রিপোর্ট :
‘পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত/ ঘোষণার ধ্বনি-প্রতিধ্বনি তুলে/ নতুন নিশান উড়িয়ে/ দামামা বাজিয়ে দিগ্বিদিক/ এই বাংলায় তোমাকে আসতেই হবে হে স্বাধীনতা।’ সত্যিই বাংলায় এসেছে সেই মহার্ঘ্য স্বাধীনতা। আর আজ বাঙালির সেই গৌরবদীপ্ত দিন। মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। হাজার বছরের পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে ১৯৭১ সালের এই দিনে বিশ্বের বুকে স্বাধীন অস্তিত্ব ঘোষণা করেছিল বীর বাঙালি।

banner

বাঙালি জাতির জীবনে ২৬ মার্চ দিনটি একই সঙ্গে গৌরব ও শোকের। বাঙালির ওপর পাকিস্তানি শাসকেরা শোষণ এবং ভাষা ও সংস্কৃতির ওপর যে আগ্রাসন চালিয়েছিল, এরই পরিপ্রেক্ষিতে স্বাধিকারের আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন বাঙালিরা। তারা ২৫ মার্চ মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে উঠে দাঁড়িয়ে মুক্তিযুদ্ধ ও দেশ স্বাধীন করার শপথ গ্রহণ করে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে প্রতিটি বাঙালির মনে নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশের বীজ রোপিত হয়। শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। মৃত্যুপণ লড়াই ও রক্তসমুদ্র পাড়ি দিয়ে বীর বাঙালি জাতি ছিনিয়ে আনে জাতীয় ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন মহান স্বাধীনতা।

প্রতিবছর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হৃদয়ে ধারণ করে দিবসটি উদযাপন করে গোটা জাতি। বিনম্র শ্রদ্ধা ও গভীর কৃতজ্ঞতায় স্মরণ করে স্বাধীনতার জন্য আত্মদানকারী দেশের বীর সন্তানদের। শ্রদ্ধা জানায় মহান স্বাধীনতার রূপকার বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক জাতীয় নেতা, নৃশংস গণহত্যার শিকার লাখো সাধারণ মানুষ এবং সম্ভ্রম হারানো মা-বোনের প্রতি।

এই মহার্ঘ্য স্বাধীনতা অর্জন করতে বাঙালি জাতিকে করতে হয়েছে দীর্ঘ সংগ্রাম, দিতে হয়েছে এক সাগর রক্ত। বঙ্গবন্ধু ধাপে ধাপে পুরো বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ করেন। ১৯৪৭ সালে ভারত ভাগের অব্যবহিত পরেই ভাষার প্রশ্নে একাত্ম হয় বাঙালি। ১৯৪৮, বায়ান্ন পেরিয়ে চুয়ান্ন, বাষট্টি, ছেষট্টির পথ বেয়ে আসে ১৯৬৯।

ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে কেঁপে উঠেছিল জেনারেল আইয়ুবের গদি। জনতার সাগরে সৃষ্টি হয়েছিল তাল স্রোতধারা। ‘জাগো জাগো বাঙালি জাগো’, ‘তোমার আমার ঠিকানা- পদ্মা মেঘনা যমুনা’, ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ শ্লোগানে শ্লোগানে প্রকম্পিত ছিল গ্রাম-শহর, জনপদ। শত ষড়যন্ত্র ও সামরিক জান্তার রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে সত্তরের জাতীয় ও প্রাদেশিক নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পায় বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ।

কিন্তু বাঙালির হাতে শাসনভার দেয়ার বদলে শুরু হয় ষড়যন্ত্র। প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া ও পাকিস্তান পিপলস পার্টির জুলফিকার আলী ভুট্টো বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলোচনার নামে করতে থাকেন কালক্ষেপণ। পর্দার আড়ালে প্রস্তুত হয় হিংস্র কায়দায় বাঙালি হত্যাযজ্ঞের ‘নীলনকশা’।

কিন্তু ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণেই পাওয়া যায় মুক্তির দিকনির্দেশনা। আক্ষরিক অর্থেই তখন পূর্ব পাকিস্তানের প্রশাসন চলছিল বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে। সেই প্রবল প্রদীপ্ত আন্দোলনের জোয়ারে ধীরে ধীরে বাঙালির হৃদয়ে আঁকা হয় একটি লাল-সবুজ পতাকা, একটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশের ছবি।

কিন্তু বাঙালির আবেগ, সংগ্রাম ও মুক্তির আকাক্সক্ষাকে নির্মূল করতে অস্ত্র হাতে নামে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনী। শোষিত ও নির্যাতিত মানুষের স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষাকে রক্তের বন্যায় ডুবিয়ে দিতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে শুরু করে নিষ্ঠুর গণহত্যা।

সেই কালরাত্রি থেকেই শুরু হয় মৃত্যু, ধ্বংস, আগুন আর আর্তনাদ, পৈশাচিক বর্বরতা। কিন্তু ওই ঘোরতর অমানিশা ভেদ করেই দেশের আকাশে উদিত হয় স্বাধীনতার চিরভাস্বর সূর্য। ২৬ মার্চের সূচনালগ্নে গ্রেফতার হওয়ার আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ওয়্যারলেসের মাধ্যমে স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সাড়া দিয়ে শত্রুসেনাদের বিতাড়িত করতে শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে জীবনপণ সশস্ত্র লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে বীর বাঙালি। এক সাগর রক্তের বিনিময়ে ছিনিয়ে আনে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠতম অর্জন- মহান স্বাধীনতা।

বাংলাদেশের পতাকা হাতে ১৬৭ দেশে নাজমুন

আন্তর্জাতিক, জাতীয়, 9 July 2023, 1367 Views,

অনলাইন ডেস্ক :
লাল-সবুজের পতাকা হাতে বিশ্ব ভ্রমণ করেছেন নাজমুন নাহার। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে তিনি ১৬৭টি দেশ ভ্রমণের রেকর্ড গড়েছেন। সর্বশেষ ক্যারিবীয় অঞ্চলের দেশ সেন্ট লুসিয়া ভ্রমণের মাধ্যমে এই কৃতিত্ব অর্জন করেন নাজমুন। দেশটির প্রধানমন্ত্রী ফিলিপ জোসেফ পিয়ের এক বিশেষ সাক্ষাতে তাঁকে অভিনন্দন জানিয়ে ‘সুপার ব্রেভ গার্ল’ আখ্যা দেন।

banner

ভ্রমণের নতুন রেকর্ড গড়ার পর নাজমুন নাহারকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সেন্ট লুসিয়ার অন্যতম প্রধান পত্রিকা ‘দ্য ভয়েস’। খ্যাতনামা সাংবাদিক মার্বেলা অ্যান্থনির লেখায় তাঁর স্বপ্ন, সংগ্রাম ও বিশ্ব অভিযাত্রার কঠিন চ্যালেঞ্জের কথা উঠে এসেছে। নাজমুন নাহার দেশের সুনাম অক্ষুণ্ন রেখে এভাবেই গৌরবের সঙ্গে বাংলাদেশকে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন বিশ্ববাসীর কাছে।

২০০০ সালে ভারতের ভূপালের পাঁচমারিতে ‘ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল অ্যাডভেঞ্চার প্রোগ্রামে’ অংশগ্রহণের মাধ্যমে তাঁর বিশ্ব ভ্রমণের সূচনা হয়। এর পর থেকে ছুটে বেড়াচ্ছেন বিভিন্ন দেশ। এই ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালের ১ জুন ১০০তম দেশ ভ্রমণের মাইলফলক স্পর্শ করেন জাম্বিয়া ও জিম্বাবুয়ের সীমান্তের ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাতের ওপর। ১৫০তম দেশ ভ্রমণের মাইলফলক সৃষ্টি করেন আফ্রিকার দেশ সাওতমে অ্যান্ড প্রিন্সিপ। ২০২৩ সালের মে মাস থেকে তিনি এবার অভিযাত্রা শুরু করেছেন দক্ষিণ আমেরিকার দেশ সুরিনাম ও গায়ানা থেকে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ ত্রিনিদাদ ও টোবাগো, গ্রেনাডা, সেন্ট ভিনসেন্ট এবং গ্রেনাডাইন, বার্বাডোস ও সেন্ট লুসিয়া পর্যন্ত।

২২ বছর ধরে এক দেশ থেকে আরেক দেশে বিভিন্ন জনপদের মাঝে বাংলাদেশের পতাকা তুলে ধরছেন নাজমুন নাহার। এ ছাড়া তিনি পরিবেশ রক্ষা ও বাল্যবিয়ে বন্ধের লক্ষ্যে বিশ্বজুড়ে মানুষের মাঝে সচেতনতা তৈরিতে কাজ করেন। নাজমুন বিভিন্ন দেশে ভ্রমণের সময় শান্তি ও ঐক্যের বার্তা পৌঁছে দেন এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিশু ও তরুণদের উৎসাহিত করেন।

বেশিরভাগ দেশ সড়ক পথে ভ্রমণ করেছেন নাজমুন। ২২ বছরের বিশ্ব অভিযাত্রার মাঝে তিনি বহু প্রতিকূলতার মুখোমুখি হয়েছেন। মৃত্যুমুখে পড়েছেন বহুবার। তবুও একের পর এক দেশ ভ্রমণ করছেন লাল-সবুজ পতাকা হাতে। শিরোনাম হয়েছেন বিশ্ব গণমাধ্যমে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী, রাষ্ট্রপ্রধান, বিখ্যাত ব্যক্তিরা তাঁকে সংবর্ধনা দিয়েছেন।

বাংলাদেশের লক্ষ্মীপুর সদরে জন্ম নেওয়ায় নাজমুন নাহার সুইডেনের লুন্ড ইউনিভার্সিটি থেকে এশিয়ান স্টাডিজ বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। এ ছাড়া তিনি হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড এশিয়া বিষয়ে পড়াশোনা করেন দক্ষিণ কোরিয়ার সিউল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে। নাজমুন নাহারের আশা, বাংলাদেশের পতাকা হাতে বিশ্বের সব দেশে যাবেন।