অনলাইন ডেস্ক :
পাকিস্তানের সংসদের উচ্চকক্ষ সিনেটের সদস্য আনোয়ারুল হক কাকারকে দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত করা হয়েছে। আজ ১২ আগস্ট শনিবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের কার্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ ও জাতীয় পরিষদের (এনএন) বিদায়ী বিরোধীদলীয় নেতা রাজা রিয়াজ বেলুচিস্তান প্রদেশের সিনেটর কাকারকে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী মনোনীত করার বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করার পর বহুল প্রত্যাশিত এই ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, আনোয়ারুল হক কাকারকে তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের পরামর্শ দিয়ে প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভির কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। শনিবার শেহবাজ শরিফের সঙ্গে চূড়ান্ত আলোচনা শেষে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের বাইরে এক সংবাদ সম্মেলনে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করেন রাজা রিয়াজ।
রাজা রিয়াজ বলেন, আমরা আগেই বলেছিলাম, ছোট কোনও প্রদেশ থেকে তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী হওয়া উচিত। বেলুচিস্তানের সিনেটের আনোয়ারুল হক কাকার তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী হবেন বলে আমরা ঐকমত্যে পৌঁছেছি।
সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে দেশটির বিরোধী দলীয় এই নেতা বলেন, ‘আমি তার নাম দিয়েছিলাম এবং প্রধানমন্ত্রী তার বিষয়ে সম্মতি দিয়েছেন… আমি এবং প্রধানমন্ত্রী সারসংক্ষেপে স্বাক্ষর করেছি।’
আগামীকাল ১৩ আগস্ট রবিবার অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাকার শপথ নেবেন বলে জানিয়েছেন রাজা রিয়াজ। তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সাথে বৈঠকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মন্ত্রিসভা গঠনের বিষয়ে আলোচনা হয়নি।
পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার তিন দিন আগে গত ৯ আগস্ট রাতে পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি। দেশটির সংবিধান অনুযায়ী, মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই যদি জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়া হয়, তাহলে ভেঙে দেওয়ার দিন থেকে আগামী ৯০ দিনের মধ্যে সাধারণ নির্বাচন করতে হবে। তবে জাতীয় পরিষদের মেয়াদ পূর্ণ হলে সাধারণ নির্বাচন ৬০ দিনের মধ্যে করার বিধান আছে।
এর আগে, দেশটির প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফকে একটি চিঠি লেখেন। চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী এবং বিরোধীদলীয় নেতা রাজা রিয়াজকে ১২ আগস্ট শনিবার এর মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন প্রধানমন্ত্রী পদে একজন ‘যোগ্য ব্যক্তির’ নাম সুপারিশ করার পরামর্শ দেন।
প্রেসিডেন্টের এই চিঠি পাওয়ার পর শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ ও বিরোধী দলীয় নেতা রাজা রিয়াজ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে বৈঠকে কাকারের বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছান।
প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ এবং রিয়াজের কাছে লেখা চিঠিতে প্রেসিডেন্ট জানান, সংবিধানের ২২৪-এ অনুচ্ছেদের অধীনে জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার তিন দিনের মধ্যে অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রীর নাম প্রস্তাব করার বিধান রয়েছে।
সূত্র: ডন, জিও নিউজ।
অনলাইন ডেস্ক :
প্রত্যেক গ্রহই সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরছে। তাদের একটা নির্দিষ্ট কক্ষপথ আছে। আগে মানে করা হতো, গ্রহগুলো বোধ হয় বৃত্তাকার পথে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে। এ ধারণা ভুল। গ্রহগুলো উপবৃত্তকার পথে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে।
ষষ্ঠদশ শতাব্দীতে জার্মান বিজ্ঞানী জোহান কেপলার গ্রহগুলোর উপবৃত্তাকার পথের ধারণা দেন। নিউটন কেপলারের দেওয়া ধারণাগুলোকে সমীকরণের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত করেন। ফলে প্রমাণিত হয় গ্রহগুলো উপবৃত্তাক পথে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করছে।
পৃথিবীর কথায় ধরা যাক। পৃথিবী উপবৃত্তাকার পথে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করছে। তাই বছরের একটা সময়ে পৃথিবী সূর্যের সবচেয়ে নিকটে পৌঁছয়। ওই সময়ে পৃথিবী কক্ষপথের যে বিন্দুতে অবস্থান করে তাকে অনুসুর বিন্দু বলে।
অর্থাৎ অনুসুর বিন্দু হলো সূর্যের থেকে পৃথিবীর কক্ষপথের সবচেয়ে নিকটতম পথ। নিউটনের নিয়মানুযায়ী প্রতিটা গ্রহ এক গ্রহ বছরে একটা পূর্ণচক্র সমগ্র করতে হয়। একটা পূর্ণচক্র সম্পন্ন করা মানে ৪ সমকোণ বা ৩৬০ ডিগ্রি কৌণিক পথ ঘোরা।
কিন্তু নিউটনের পরবর্তী কালের জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা একটা ধাঁধায় পড়ে যান। সেটা হলো বুধ গ্রহের গতি।
বুধ গ্রহ একটা অনুসুর বিন্দু পার করে পরবর্তী বছর যখন আবার অনুসুর বিন্দুতে পৌঁছয় তখন তারা একটি পূর্ণচক্র আবর্তন করে না। করে তার চেয়ে বেশি কৌণিক পথ। অর্থাৎ বুধ গ্রহের দুটি অনুসুর বিন্দুর ভেতর ৩৬০ ডিগ্রির চেয়ে বেশি কোণ উৎপন্ন হয় না। দুটি অনুসুরের মধ্যে ৩৬০ ডিগ্রি কোণ হতো যদি বুধ গ্রহ প্রতিবছর একই বিন্দুতে অনুসুর পেত। কিন্তু প্রতিবছর বুধ গ্রহের অনুসুর বিন্দু একটু একটু করে সামনের দিকে সরে যায়। তাই দুই বিন্দুর মধ্যে কৌণিক ব্যাবধান সৃষ্টি হয়। এই কৌণিক ব্যাবধান মাপার উপায় হলো সূর্য থেকে অনুসুর বিন্দু পর্যন্ত একটা সরল রেখা আঁকা।
ওপরের চিত্র বুধ গ্রহের অনুসুর দেখানো হয়েছে। A বিন্দু হলো ২০২০ সালের অনসুর বিন্দু এবং B বিন্দু হলো ২০১৬ সালের অনুসুর বিন্দু। দুটির ভেতর স্পষ্ট পার্থক্য রয়েছে। যদিও এখানে কৌণিক ব্যাবধান যতখানি দেখানো হয়েছে হিসাব অনুযায়ী ফলটা এর চেয়ে অনেক অনেক ছোট হবে। কিন্তু বোঝার সুবিধার্থে আমরা এ রকম চিত্রই আঁকলাম।
কেন এমন হচ্ছে, দীর্ঘদিনের এ সমস্যার সমাধান দেন আইনস্টাইন। তাঁর জেনারেল থিওরি অব রিলেটিভিটির মাধ্যমে; হিসাব কষে।
আইনস্টানের এই হিসাব জ্যোতির্বিজ্ঞানের এক দীর্ঘদিনের সমস্যার সমাধান করে। আসলে নিউটনের সময় মহাকর্ষ বলের ধারণাই ছিল অন্য রকম। তা ছাড়া নিউটন সমতল জ্যামিতির বাইরে নন-ইউক্লিডিয়ান জ্যামিতির কথা ভাবেনইনি। তা ছাড়া দুমড়ানো-মোচড়ানো বক্র মহাবিশ্বের কথা তাঁর জানা ছিল না। সুতরাং বক্র মহাবিশ্বে গ্রহ-নক্ষত্রের চলার গতির জন্য সম্পূর্ণ আলাদা কোনো ব্যাখ্যা থাকতে পারে, তা তিনি জানতেন না। আইনস্টাইন নন-ইউক্লিডীয় জ্যামিতি ব্যবহার করে সাধারণ আপেক্ষিক তত্ত্বের সাহায্যে বুধ গ্রহের কক্ষপথের সমস্যার সমাধান দিলেন।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই সমস্যা কি শুধু বুধ গ্রহের ক্ষেত্রে নাকি অন্য গ্রহগুলোর ক্ষেত্রেও একই সমস্যা তৈরি হয়? সব গ্রহের অনুসুর বিন্দু প্রতিবছর একই কৌণিক অবস্থানে থাকে না। কিন্তু তাদের মধ্যে পার্থক্য অতি সামান্য। সেগুলো ইচ্ছে করলেই এড়িয়ে যাওয়া যায়। তাই নিউটনের সূত্র দিয়ে অন্য গ্রহগুলোর গতি ব্যাখ্যা করা যায়। সূত্র : স্পেস ডট কম
অনলাইন ডেস্ক :
বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন করার লক্ষ্য ৩২ সদস্যের মিয়ানমারের একটি প্রতিনিধি দল কক্সবাজারের টেকনাফে পৌঁছেছেন। এরপর তারা ১৮০ পরিবারের সাথে মতবিনিময় করেন।
আজ ৩১ অক্টোবর মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নৌপথে আরকান রাজ্যের সাউ নাইং এর নেতৃত্বে ৩২ সদস্যের প্রতিনিধি দলটি টেকনাফের জেটিঘাটে এসে পৌঁছায়। পরে গাড়িযোগে টেকনাফ সড়ক ও জনপথ বিভাগের রেস্ট হাউসে নদী নিবাসে পৌঁছার পর সাক্ষাৎকার নেওয়া শুরু করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে ক্যাম্প থেকে ১৮০ পরিবারের সদস্যদেরকে সিআইসি অফিসের পক্ষ থেকে ডাকা হয়েছে। তারা টেকনাফ সড়ক ও জনপদের রেস্ট হাউসে নদী নিবাসে যায়।সেখানে তাদের সাথে মিয়ানমারের একটি প্রতিনিধি দল প্রত্যাবাসনের বিষয়ে সাক্ষাৎকার নেয়।
কক্সবাজারের ত্রাণ ও প্রত্যাবাসনের অতিরিক্ত কমিশনার মো. শামসুদ্দোজা বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের লক্ষ্য ৩২ সদস্যের একটি মিয়ানমারে প্রতিনিধি দল সকালে টেকনাফে পৌঁছেন। এখনো তাদের সাথে মতবিনিময় চলছে।
উল্লেখ্য, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নিপীড়নের শিকার হয়ে বাংলাদেশে মানবিক আশ্রয় পাওয়া রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে প্রথম তালিকার ১৬৮ পরিবারের ৪৮০ জনের তথ্য যাচাই-বাছাই ও সাক্ষাৎকার শেষে মিয়ানমারের ১৭ সদস্যের টেকনিক্যাল টিম ২২ মার্চ (বুধবার) সকাল ১০টার দিকে নাফ নদ থেকে টেকনাফ চৌধুরী পাড়ার ট্রানজিট জেটিঘাট দিয়ে মিয়ানমারের উদ্দেশ্য রওনা দেয়।
প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ থেকে দেওয়া রোহিঙ্গাদের প্রথম তালিকার যাচাই-বাছাই করতে মিয়ানমারের ১৭ সদস্যের একটি টেকনিক্যাল টিম ১৫ মার্চ সকালে টেকনাফ ট্রানজিট জেটিঘাট হয়ে বাংলাদেশে আসে।
মিয়ানমারের কাছে পাঠানো প্রথম তালিকাটি থেকে গত সাতদিনে ১৬৮ পরিবারের ৪৮০ জনের তথ্য যাচাই-বাছাই ও সাক্ষাৎকার প্রক্রিয়া শেষ করেন। যাদের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করা হয়েছে তাদের থেকে বাংলাদেশের আশ্রয় শিবিরে জন্ম নেওয়া ওই পরিবারের শিশুদেরও নথিভুক্ত করেছে টেকনিক্যাল টিম।
অনলাইন ডেস্ক :
নিজ ঘরের মানুষের বিদ্রোহে সব উলট-পালট করে দেয়। যেমনটি ঘটেছে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের ক্ষেত্রে। তার দীর্ঘদিনের সঙ্গী ওয়াগনার প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন হঠাৎ বিদ্রোহ করে বসে। আর এতে সব হিসাব পাল্টে যেতে থাকে। দ্রুত ঘুরে যেতে রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধে মোড়। রাশিয়া যুদ্ধের ময়দান ছেড়ে নিজ ঘর রক্ষায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে। তবে ২৪ ঘন্টা পার না হতে সেই ভয়ঙ্কর পরিস্তিতি থেকে বেরিয়ে আসছে পেরেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট। বলা চলে বেঁচে গেলে তিনি।
দুই দশকের বেশি সময় ধরে রাশিয়ার একচ্ছত্র ক্ষমতায় রয়েছেন ভ্লাদিমির পুতিন। দিন দিন বেড়েছে সেই ক্ষমতা। রাজনৈতিক জীবনে বহু বাধা আর চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি পড়তে হয়েছে তাকে। সেসব উৎরেই এই পর্যন্ত এসেছেন তিনি। ইউক্রেনে আক্রমণ শুরুর পর থেকে নানা সংকট তাকে নতুন করে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। তবে সেই পরিস্থিতি হঠাৎ করে কালবৈশাখীতে রুপ নেয় বেসরকারি আধা-সামরিক বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপের বিদ্রোহ।
ভয়ংকর এক দিন পার করেছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। বলা হচ্ছে, ক্ষমতাসীন পুতিনকে প্রকাশ্যে চ্যালেঞ্জ করে এত বড় হুমকিতে এর আগে ফেলতে পারেনি কেউ। তবে এই যাত্রায় ‘বেঁচে’ গেলেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
জানা গেছে, রাশিয়ার ভাড়াটে ওয়াগনার বাহিনীর প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোঝিন ‘রক্তপাত এড়াতে’ তার অনুগতদের মস্কোমুখী যাত্রা বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন এবং তিনি নিজে বেলারুশে নির্বাসিত জীবনযাপন করতে রাজি হয়েছেন। এর মাধ্যমে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের রাজনৈতিক জীবনে নেমে আসা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্চের অবসান হলো বলে ধারণা করা হয়েছে।
নতুন কয়েকটি ভিডিওতে দেখা যায় যে প্রিগোঝিন ও তার বাহিনী দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় রোস্তভ-অন-ডন ত্যাগ করছে।
এদিকে বেলারুশের প্রেসিডেন্টের সাথে করা চুক্তির ব্যাপারে ক্রেমলিন খুব বেশি কিছু বলছে না। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেশকভ বলেছেন, প্রিগোঝিনকে প্রেসিডেন্ট পুতিন ‘কথা দিয়েছেন’ যে তিনি বেলারুশে যেতে এবং সেখানে বসবাস করতে পারবেন। আর তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো প্রত্যাহার করা হবে।
এর আগে রাশিয়ার রাজধানী দখলের উদ্দেশে লিপেৎস্ক থেকে ২০০ কিলোমিটার এগিয়ে গিয়েও আচমকা থমকে যায় প্রিগোঝিনের ভাড়াটে সেনাবাহিনী। কারণ হিসাবে জানানো হলো, রক্তপাত এড়াতেই আপাতত মস্কো অভিযান স্থগিত। ভাড়াটে সেনাবাহিনীর প্রধান প্রিগোঝিন নিজের টেলিগ্রামে জানিয়েছেন, রক্তপাত এড়াতেই মস্কো দখলের পরিকল্পনা বাতিল করা হয়েছে। পাশাপাশি, বিবিসি সূত্রে দাবি করা হয়েছে, বেলারুসের নেতা আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর সাথে এ বিষয় নিয়ে কথা হয় ভাড়াটে সেনাবাহিনীর প্রধান প্রিগোঝিনের। তার পরেই প্রিগোঝিন মস্কোর দিকে ধাবমান সেনাসদস্যদেরকে ফিরে আসার নির্দেশ দেন।
চলতি সপ্তাহেই ইউক্রেনের সীমান্ত পেরিয়ে রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডে বড় অভিযান শুরু করে বিদ্রোহী ওয়াগনার বাহিনী। প্রিগোজিনের মালিকানাধীন ভাড়াটে যোদ্ধারা শনিবার সকালে ইউক্রেন সীমান্তের অদূরে পশ্চিম রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ শহর ভোরোনেজ দখল করে বলে কয়েকটি পশ্চিমি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে দাবি করা হয়েছে। এর আগে ওয়াগনার বাহিনী শুক্রবার ইউক্রেন সীমান্ত লাগোয়া রোস্তভ-অন-ডন শহরের দখল নিয়েছিল। প্রিগোজিন দাবি করেছেন, একটি গুলি খরচ না-করেও রোস্তভ-অন-ডন শহরে সেনার সদর দফতর দখল করে তার বাহিনী। আর এতে সহায়তা করেছেন স্থানীয়েরা। তিনি একটি অডিও-বার্তা দিয়ে জানিয়েছিলেন, গোটা দেশের তার বাহিনীকে সমর্থন করা উচিত। কারণ তার বাহিনী ‘ন্যায়ের পদযাত্রায় নেমেছে। রোস্তভ-অন-ডন থেকে মস্কোর দূরত্ব প্রায় হাজার কিলোমিটার। এর পর মস্কোর দিকে আরো ২০০ কিলোমিটার এগিয়ে যায় তারা। কিন্তু তার পরেই আচমকা বন্ধ অভিযান।
কিন্তু আচমকা কেন মন বদল হলো একদা পুতিনের সহচর প্রিগোঝিনের? তার একাধিক ব্যাখ্যা পাওয়া যাচ্ছে। বিবিসির নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষাবিষয়ক সাংবাদিক ফ্রাঙ্ক গার্ডনারের দাবি, মস্কো অভিযান অসমাপ্ত রাখার চাপের উৎস রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনই। লুকাশেঙ্কোকে কাজে লাগিয়ে তিনি ভাড়াটে বাহিনীকে ঘোল খাইয়ে দিলেন। পাশাপাশি, গার্ডনারের বক্তব্য, প্রিগোঝিন মস্কো দখলের অভিযানে যোগ দিতে যে প্রকাশ্য বার্তা দিয়েছিলেন জনসাধারণের কাছে, তা-ও কাজে আসেনি। রাশিয়ার সেনাবাহিনীর মধ্যে বিদ্রোহ তো দূরঅস্ত , সাধারণ মানুষকেও খুব বেশি সংখ্যায় ভাড়াটে সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে দেখা যায়নি। তাই সম্ভবত দেয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া অবস্থা থেকেই মস্কো অভিযান বাতিল করার ভাবনা প্রিগেঝিনের। মস্কো অভিযান বাতিল হলো বটে, কিন্তু এর পর কী হবে প্রিগোঝিনের? তার রাজনৈতিক বা সামরিক ভবিষ্যৎ কিন্তু এখন পুতিনের মুঠোবন্দি, এমনটাই মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের একটি অংশ।
একদা পুতিন-ঘনিষ্ঠ হোটেল ব্যবসায়ী প্রিগোঝিনের ওই ভাড়াটে বাহিনী রুশ সেনাবাহিনীর অংশ নয়। কিন্তু গত দেড় বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে তারা রুশ বাহিনীর সহযোগী হয়ে ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নিয়েছে। অতীতে আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে গৃহযুদ্ধেও লড়েছে এই পেশাদার ভাড়াটে বাহিনী। ইউক্রেন যুদ্ধের কৌশল নির্ধারণ নিয়ে গত কয়েক মাস ধরে রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু এবং সেনাপ্রধান ভ্যালেরি গেরাসিমভের সাথে মতবিরোধ চলছিল প্রিগোঝিনের। রুশ সেনাবাহিনী পরিকল্পিতভাবে ওয়াগনার যোদ্ধাদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছিল বলেও অভিযোগ করেছিলেন তিনি। এ বার সরাসরি মস্কোর বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে ধরেছে প্রিগোজিনের ভাড়াটে যোদ্ধারা।
ট্যাঙ্ক এবং সাঁজোয়া গাড়ি নিয়ে প্রায় ২০ হাজার ওয়াগনার যোদ্ধা মস্কো দখলের অভিযানে নেমেছিল বলে একাধিক সংবাদ মাধ্যম দাবি করেছিল। তাদের রুখতে রুশ ‘চপার’ (যুদ্ধ হেলিকপ্টার) ধারাবাহিক আক্রমণ চালাচ্ছিল। এমনকি, ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় সাধারণ নাগরিকদের প্রাণহানির ঝুঁকি সত্ত্বেও আকাশপথে হামলা চালানো হয়। প্রেসিডেন্ট পুতিন শনিবার জাতির উদ্দেশে ভাষণে বলেন, ‘বিশ্বাসঘাতকেরা সমুচিত জবাব পাবে।’ প্রিগোঝিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করেন তিনি।
শনিবার সন্ধ্যায় যখন রাশিয়ার রাজধানী মস্কোর দিকে এগিয়ে আসছিল প্রিগোঝিনের ভাড়াটে বাহিনী, এই পরিস্থিতিতে বাসিন্দাদের শহরে ঘুরে বেড়ানোর বিষয়ে সতর্ক করছিলেন মস্কোর মেয়র সেরগেই সোবিয়ানিন। তিনি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিলেন, ‘পরিস্থিতি কঠিন। আমি বলব, যতটা সম্ভব শহরে ঘুরে বেড়ানো বন্ধ করুন।’ তিনি এ-ও জানিয়েছিলেন, শহরের বেশ কিছু রাস্তা বন্ধ থাকবে। রাশিয়ার রোস্টভ শহর দখল করেছে ওয়াগনার যোদ্ধারা। ইউক্রেন-সংলগ্ন দক্ষিণ রাশিয়ার রোস্টভ অঞ্চলের গভর্নরও বাসিন্দাদের ঘরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু ভারতীয় সময় মধ্যরাতেই নাটকীয় পালাবদল!
একদা পুতিন-ঘনিষ্ঠ
প্রিগোজিন একদা পুতিন-ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত ছিলেন। পেশায় হোটেল ব্যবসায়ী। তার ওই ভাড়াটে বাহিনী রুশ সেনার অংশ নয়। কিন্তু গত দেড় বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে তারা রুশ বাহিনীর সহযোগী হয়ে ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নিয়েছে। অতীতে লিবিয়া, সিরিয়া, মোজাম্বিক, সুদানের মতো দেশে গৃহযুদ্ধেও লড়েছে প্রায় ৪০ হাজার যোদ্ধার এই পেশাদার ভাড়াটে বাহিনী। ইউক্রেন যুদ্ধের কৌশল নির্ধারণ নিয়ে গত কয়েক মাস ধরে রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু এবং সেনাপ্রধান ভ্যালেরি গেরাসিমভের সাথে মতবিরোধ চলছিল প্রিগোজিনের। রুশ সেনাবাহিনী পরিকল্পিতভাবে ওয়াগনার যোদ্ধাদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছিল বলেও অভিযোগ করেছিলেন তিনি। এবার সরাসরি মস্কোর বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে ধরেছে প্রিগোঝিনের ভাড়াটে যোদ্ধারা।
‘ন্যায়ের পদযাত্রা’
চলতি সপ্তাহেই ইউক্রেনের সীমান্ত পেরিয়ে রাশিয়ার মূল ভূখণ্ডে বড় অভিযান শুরু করেছিল বিদ্রোহী ওয়াগনার বাহিনী। প্রিগোঝিনের মালিকানাধীন ভাড়াটে যোদ্ধারা শনিবার সকালে ইউক্রেন সীমান্তের অদূরে পশ্চিম রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ শহর ভোরোনেজ দখল করে বলে কয়েকটি পশ্চিমি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে দাবি করা হয়েছিল। এর আগে ওয়াগনার বাহিনী শুক্রবার ইউক্রেন সীমান্ত লাগোয়া রোস্তভ-অন-ডন শহরের দখল নিয়েছিল। প্রিগোজিন দাবি করেছেন, একটি গুলি খরচ না-করেও রোস্তভ-অন-ডন শহরে সেনার সদর দফতর দখল করেছে তার বাহিনী। আর এতে সহায়তা করেছেন স্থানীয়েরা। তিনি একটি অডিও-বার্তা দিয়ে জানিয়েছেন, গোটা দেশেরই তার বাহিনীকে সমর্থন করা উচিত। কারণ তার বাহিনী ‘ন্যায়ের পদযাত্রা’য় নেমেছে। রোস্তভ-অন-ডন থেকে মস্কোর দূরত্ব প্রায় হাজার কিলোমিটার। এর পর মস্কোর দিকে আরো কয়েক শ’ কিলোমিটার এগোয় তারা। তার পরেই অভিযান বাতিল ঘোষিত হয়। সূত্র : আল জাজিরা, সিএনএন, বিবিসি ও অন্যান্য।
অনলাইন ডেস্ক :
ভিসাধারী এবং আবেদনকারীদের প্রতি এক কঠোর বার্তায়, ভারতে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে, মার্কিন ভিসা পাওয়াই শেষ কথা নয়। মাইক্রোব্লগিং প্ল্যাটফর্ম এক্স (পূর্বে টুইটার নামে পরিচিত) -এ একটি সাম্প্রতিক পোস্টে দূতাবাস জানিয়েছে যে, ভিসা মঞ্জুর হওয়ার পরেও মার্কিন কর্তৃপক্ষ ভিসাধারীদের উপর নজরদারি অব্যাহত রেখেছে।
পোস্টে তারা স্পষ্টভাবে জানায়, ভিসা ইস্যুর পরেও আমাদের যাচাই প্রক্রিয়া থেমে থাকে না। আমরা নিয়মিত খতিয়ে দেখি, আবেদনকারী যুক্তরাষ্ট্রের আইন ও অভিবাসন নিয়ম মেনে চলছেন কি না। কেউ নিয়ম লঙ্ঘন করলে, তার ভিসা বাতিল করে দেশে ফেরত পাঠানো হবে।
বার্তাটি মূলত ভারতীয় শিক্ষার্থী ও কর্মীদের উদ্দেশে, যারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বা ইতিমধ্যে গিয়েছেন।
বিবৃতিটি ভারতীয় নাগরিকদের, বিশেষ করে ছাত্র এবং কর্মীদের যারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন তাদের জন্য একটি স্মরণ করিয়ে দেয় যে ভিসা অনুমোদন স্থায়ী প্রবেশ বা থাকার নিশ্চয়তা নয়। এটি অভিবাসন, শিক্ষাগত এবং কর্মসংস্থান বিধি সহ মার্কিন আইন মেনে চলার গুরুত্বকে তুলে ধরে।
দূতাবাসের পোস্টটি এমন এক সময়ে এসেছে যখন ভিসা জালিয়াতি, অতিরিক্ত সময় ধরে অবস্থান এবং ছাত্র ও কর্ম ভিসার অপব্যবহারের উদ্বেগের মধ্যে মার্কিন কর্তৃপক্ষ আন্তর্জাতিক ভ্রমণকারীদের উপর নজরদারি জোরদার করেছে বলে জানা গেছে।
যদিও দূতাবাস নির্দিষ্ট কোনও লঙ্ঘনের কথা উল্লেখ করেনি, কর্মকর্তারা অতীতে জোর দিয়ে বলেছিলেন যে, আবেদনে মিথ্যা দাবি থেকে শুরু করে অননুমোদিত কর্মসংস্থান পর্যন্ত যেকোনো লঙ্ঘনের ফলে ভিসা বাতিল, আটক বা নির্বাসন হতে পারে।
অনলাইন ডেস্ক :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে আগামী সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণে বিভিন্ন পর্যায়ের পর্যবেক্ষক পাঠাতে কমনওয়েলথের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। লন্ডনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের সময় কমনওয়েলথ মহাসচিব ব্যারনেস প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ডকে এ আহ্বান জানান তিনি।
আজ ৭মে রবিবার বিকেলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন ক্লারিজেস হোটেলে সাংবাদিকদের এ কথা জানান। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের বিষয়টি উত্থাপন করেছেন এবং আগামী সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করার জন্য কমনওয়েলথ থেকে বিভিন্ন পর্যায়ের নির্বাচন পর্যবেক্ষক পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছেন। খবর বাসসের
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো জানান, কমনওয়েলথ মহাসচিব বলেছেন, তারা শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশকে সাহায্য করতে চান।
ব্যারনেস প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ড বলেছেন, তারা সংস্থার কিছু সদস্য দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সহায়তা করেছেন। সেক্ষেত্রে সব রাজনৈতিক দলের অঙ্গীকার প্রয়োজন যে, তারা নির্বাচনে অংশ নেবে, নির্বাচনের ফলাফল মেনে নেবে এবং নির্বাচনে হারলে বা জিতলে সহিংসতায় যাবে না।
মোমেন বলেন, ‘কমনওয়েলথ (অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে) আমাদেরকে সাহায্য করতে চায় এবং আমরা তাদের স্বাগত জানিয়েছি। আমরাও চাই নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হোক।’