চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ সার কারখানায় নিরবিচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে আশুগঞ্জ সার কারখানার শ্রমিক-কর্মচারিরা।
আজ ১৩ আগস্ট রবিবার সকালে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আশুগঞ্জ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সেতুর টোল প্লাজার সামনে এই মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধন শেষে আশুগঞ্জ সার কারখানা শ্রমিক- কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি বাবুল মিয়ার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক কবীর হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আশুগঞ্জ সার কারখানা শ্রমিক কর্মচারি ইউনিয়নের সিনিয়র-সহ-সভাপতি তৈমুর রহমান, সাবেক সভাপতি সোহরাব হোসেন, সাবেক সিনিয়র সহ- সভাপতি জাহিদুর রহমান প্রমুখ।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, ওভারহোলিং কাজের জন্য গত ১ মার্চ থেকে দুই মাস কারখানার উৎপাদন বন্ধ ছিলো। ওভারহোলিং শেষে গত মে মাস থেকে কারখানা চালু করতে চাইলে গ্যাস সংকটের কারণে কারখানার উৎপাদন বন্ধ রাখে বিসিআইসি কর্তপক্ষ। তাই প্রায় ৬ মাস ধরে কারখানার উৎপাদন বন্ধ থাকায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে কারখানার যন্ত্রাংশ। এবং ওভারহোলিংয়ের কমিশনিং করাও সম্ভব হচ্ছে না।
বক্তারা বলেন, কারখানাকে বাঁচাতে শ্রমিক-কর্মচারিরা আন্দোলনে নেমেছে। গত ১ মাস ধরে কারখানার শ্রমিক কর্মচারিরা গেইট মিটিং, বিক্ষোভ মিছিল, প্রতিবাদ সমাবেশ, মানববন্ধন, স্মারক লিপি প্রদানসহ নানা কর্মসূচি পালন করে আসছে।
বক্তারা দ্রুত কারখানায় গ্যাস সরবরাহের দাবি জানিয়ে বলেন, তাদের দাবি না মানা হলে কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি দেয়া হবে। উল্লেখ্য, আশুগঞ্জ সার কারখানা চালু থাকলে কারখানায় প্রতিদিন ১ হাজার ২শ মেট্টিকটন ইউনিয়া সার উৎপাদন হয়। এই সার ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জসহ দেশের ৮ জেলায় সরবরাহ করা হয়।
স্টাফ রিপোর্টার:
ভারত থেকে ৯৫৮ টন রড নিয়ে একটি জাহাজ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ নৌবন্দরে এসেছে। ২১ জানুয়ারি শনিবার সন্ধ্যায় জাহাজটি বন্দরে নোঙর করে। ২২ জানুয়ারি রবিবার বিকেলে বন্দর থেকে রডগুলো খালাস করার কথা রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, টাটা স্টিলের ৯৫৮ টন রড নিয়ে এমভি বোলকার নামে একটি জাহাজ গত ৭ জানুয়ারি কলকাতার হলদিয়া বন্দর থেকে লোড করা হয়। রডগুলো আশুগঞ্জ নদীবন্দর থেকে সড়কপথে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের আগরতলায় পাঠানো হবে। এগুলোর সিঅ্যান্ডএফ করবে আখাউড়া স্থলবন্দরের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট আদনান ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল। ত্রিপুরার আগরতলার মেসার্স এসএম করপোরেশন নামে একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য রডগুলো নেওয়া হচ্ছে।
আদনান ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের সত্ত্বাধিকারী আক্তার হোসেন বলেন, আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে আজ রবিবার বিকেলে খালাস করতে পারলে আগামীকাল ২৩ জানুয়ারি সোমবার সকাল থেকে রডগুলো আগরতলায় পাঠানোর কাজ শুরু হবে।
আশুগঞ্জ নৌবন্দরের উপপরিচালক রেজাউল করিম বলেন, জাহাজের মালামাল লোড-আনলোড বাবদ প্রতি টনের জন্য ৩৪ টাকা ৫০ পয়সা ও কার্যবেক্ষণ চার্জ হিসেবে প্রতি টন পণ্যের জন্য ১০ টাকা এবং জাহাজের বার্থিং চার্জ হিসেবে প্রতিদিন ৩১৫ টাকা পাবে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
আশুগঞ্জ উপজেলার তালশহর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সোলাইমান সেকান্দরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আজ ২৬ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার তালশহর ইউনিয়ন পরিষদের সামনে থেকে আশুগঞ্জ থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক জয়নাল আবেদীনের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। আটকের সময় সোলাইমান পুলিশের সাথে অসজৌন্যমূলক আচরণ করেছে বলে পুলিশের অভিযোগ।
সোলাইমান সেকান্দর আশুগঞ্জ উপজেলার তালশহর গ্রামের মৃত লাল মিয়ার ছেলে।
পুলিশ জানায়, তার বিরুদ্ধে ২০২১ সালে হেফাজতে ইসলামের মোদি বিরোধী আন্দোলনের সময় মাদরাসা শিক্ষার্থী হত্যার অভিযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় মামলা রয়েছে। এছাড়া গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগে আশুগঞ্জ থানায় তার বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনে একাধিক মামলা রয়েছে।
আশুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ইকবাল হোসেন জানান, আটক ইউপি চেয়ারম্যান সোলাইনের বিরুদ্ধে আশুগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় হত্যা ও নাশকতার অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে। তাকে আদালতে প্রেরণের প্রক্রিয়া চলছে।
চলারপথে রিপোর্ট :
ভারত থেকে আমদানি করা প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের এক কোটি চার লাখ টাকার কাঁচামালসহ দুই কাভার্ডভ্যান নিয়ে পালিয়েছেন চালক। এ ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ থানায় মামলা হয়েছে।
৩ নভেম্বর শুক্রবার কোম্পানির লিগ্যাল অফিসার জুলফিকার হোসেন খান বাদী হয়ে পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে মামলাটি করেন।
মামলার বিবাদীরা হলেন, মাগুরা সদরের বুজরুক শ্রীকুন্ডি গ্রামের ওয়াহিদুল মোল্লার ছেলে কাভার্ডভ্যান চালক ইয়াছিন হোসেন (৩৩), একই এলাকার আবছার মোল্লার ছেলে হেলপার জিসান হোসেন (২৫), আনছার বিশ্বাসের ছেলে মিরাজ মিয়া (৩৯), অহিদুল মোল্লার ছেলে হেলপার মো. হৃদয় (১৯) এবং একই জেলার মহম্মদপুর থানার বিনোদপুর গ্রামের আবুল মোল্লার ছেলে কাভার্ডভ্যান চালক মো. তুহিন (৩৫)।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ১৪ অক্টোবর ভারত থেকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে প্রাণ-আরএফএল কোম্পানির বৈদ্যুতিক মালামাল তৈরির কাঁচামাল (অ্যালুমিনিয়াম ইনগট) আমদানি করা হয়। মালামাল নিয়ে ৩০ অক্টোবর রাতে হবিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে কারখানায় পৌঁছানোর উদ্দেশ্যে রওয়ানা করে কোম্পানির নিজস্ব দুটি কাভার্ডভ্যান। পরদিন মালামাল নিয়ে হবিগঞ্জে পৌঁছানোর কথা থাকলেও কাভার্ডভ্যান দুটি যায়নি। এ অবস্থায় ১ নভেম্বর বুধবার রাতে কোম্পানির নিজস্ব কাভার্ডভ্যানগুলোতে সংযোজন থাকা জিপিএস ট্র্যাক করে দেখা যায়, কাভার্ডভ্যান দুটি মেঘনা নদীর সেতু অতিক্রম করে আশুগঞ্জের দিকে যাচ্ছে। পরবর্তী সময়ে একাধিকবার ট্র্যাকিং করলে কাভার্ডভ্যান দুটি আশুগঞ্জে অবস্থান দেখায়।
২ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সকালে পুনরায় ট্র্যাকিং করলে কাভার্ডভ্যানের জিপিএস এবং চালক-হেলপারের ফোন বন্ধ দেখায়। এ অবস্থায় বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও এক কোটি চার লাখ টাকার আমদানি করা কাঁচামালসহ কাভার্ডভ্যান দুটির সন্ধান মেলেনি।
আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাহিদ আহমদ বলেন, মামলার পরপরই পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। মালামালসহ কাভার্ডভ্যান দুটি উদ্ধার ও আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানি ॥ সংশ্লিষ্টদেরকে নোটিশ
স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ব্রোকেন স্টোন বা চূর্ণ পাথরের ঘোষণা দিয়ে ভারত থেকে আমদানি হয়েছে ২৭০০ টন পাথরের ধুলা (ডাস্ট)। মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানির অভিযোগে ছাড়পত্র মিলছে না কাস্টমসের। যে কারণে প্রায় এক মাস ধরে আখাউড়া স্থলবন্দরে এই ডাস্ট বা ধুলাগুলো পড়ে আছে। কাস্টমসের গঠিত তদন্ত কমিটিও ডাস্ট উল্লেখ করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়িরা দাবি করেছেন, এতে প্রতিদিন লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদেরকে। এ জন্য তারা কাস্টমস কর্তৃপক্ষকে দায়ী করছেন। রপ্তানিমুখী আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে প্রথমবারের মতো চূর্ণপাথর আমদানি হয় গত ১৩ নভেম্বর। এরপর কয়েক দফায় মোট ২৭০০ টন আমদানি করে ভারতীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। এ প্রতিষ্ঠানটি আশুগঞ্জ নদীবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত মহাসড়ক চারলেনে উন্নীত করার কাজের জন্য পাথর আমদানি করেছে। আমদানিকৃত চূর্ণপাথরগুলো প্রতি টন আমদানি হয়েছে ১৩ মার্কিন ডলারে। এগুলো বন্দর থেকে ছাড়ানোর কাজ পায় সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট খলিফা এন্টারপ্রাইজ। তবে কাস্টমস থেকে ছাড়পত্র নিতেই বাঁধে বিপত্তি। প্রথমবারের মতো আমদানি হওয়ায় পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ছাড়পত্র দেওয়ার কথা জানায় কাস্টমস। পরবর্তীতে এগুলো পরীক্ষা করে পাথরের বদলে ডাস্ট আনা হয়েছে জানিয়ে আটকে দেয়া হয়। ফলে প্রতিদিনই বন্দর কর্তৃপক্ষকে মাশুল বাবদ প্রায় ৩৬ হাজার টাকা গুনতে হচ্ছে আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে।
অভিযোগ উঠেছে- আমদারিকারক প্রতিষ্ঠান ভাঙা পাথরের ঘোষণা দিয়ে ডাস্ট এনেছে। এজন্য কাস্টমসের তরফ থেকে চার সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়। তদন্ত শেষে রিপোর্ট দেওয়া হয় ডাস্ট হিসেবে। তবে দ্রুত এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে বলে জানান কাস্টমসের কর্মকর্তারা।
এদিকে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে চূর্ণ পাথর বা ডাস্ট আমদানির অনুমতি না থাকায় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে আগামী ১০ দিনের মধ্যে তাদেরকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট খলিফা এন্টারপ্রাইজকেও কার্যার্থে একই চিঠি দেওয়া হয়। সিএন্ডএফ এর মালিক হলেন আখাউড়া পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মো.তাকজিল খলিফা কাজল।
খলিফা এন্টার প্রাইজের প্রতিদিন নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আমরা প্রথম দফা আনার পর বলা হয় সব আনার পর অনুমতি দেওয়া হবে। এখন বলা হচ্ছে এ ধরণের পাথরের অনুমতি নেই। এখন পাথর আটকে থাকায় আমরা লোকসানের মুখে পড়েছি।’
আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, ‘তদন্ত করে আমদানি করা পণ্য ডাস্ট হিসেবে পাওয়া গেছে। এ ধরণের পণ্য আমদানির অনুমতি নেই। এখন এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন।’