চলারপথে রিপোর্ট :
‘১৯৭৩ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ৫০ বছর পবিত্র কুরআনের শিক্ষকতা করেছেন হাফেজ মোহাম্মদ নূরুজ্জামান। দীর্ঘকাল গৌরবময় শিক্ষকতার পাশাপাশি একাধারে সমাজ চিন্তা ও পরিবর্তনে নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। কয়েক সহস্রাধিক শিক্ষার্থীকে কুরআন শিক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি ধর্মীয় সংস্কারমূলক কাজেও নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন তিনি।’
গতকাল শনিবার বিজয়নগর উপজেলার হরষপুর খেলার মাঠে আয়োজিত স্মরণ সভায় দেশের বিশিষ্ট আলেম ও হাফেজ মোহাম্মদ নূরুজ্জামানের শিক্ষার্থীরা এসব কথা বলেছেন। হাফেজ নূরুজ্জামানের গৌরবময় শিক্ষকতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে দিনব্যাপী এই আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রয়াত হাফেজ নূরুজ্জামানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু-সহকর্মী দারুল উলুম ইসলামিয়া হরষপুর মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা সিরাজুল ইসলাম খান। অনুষ্ঠানে ‘গৌরবময় শিক্ষকতার ৫০ বছর: রঈসুল হুফফাজ হাফেজ মোহাম্মদ নূরুজ্জামান রহ. স্মারকগ্রন্থ জীবন ও সংগ্রাম’ শীর্ষক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
এর আগে গত ২৭ মে হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার নিজ গ্রামের বাড়ি গোবিন্দপুরে আনুমানিক ৭৫ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন হাফেজ মোহাম্মদ নূরুজ্জামান। মৃত্যুর আগে বেশ কিছুদিন অসুস্থ হয়ে বিছানায় শায়িত ছিলেন তিনি।
সভায় বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের মহাসচিব ও জামিয়া রাহমানিয়া আজিজিয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা মাহফুজুল হক বলেন, হাফেজ নূরুজ্জামান কুরআনের দীর্ঘদিনের খাদেম ছিলেন। মরহুম হাফেজ নূরুজ্জামান সাহেবের পরিবারের সঙ্গে আমার বহু বছর আগে সম্পর্ক হয়েছিল। তার শিক্ষাদানের মাধ্যমে দেশের বহু এলাকায় কুরআনের আলোয় আলোকিত হয়েছেন অনেকে। যিনি হাজার হাজার হাফেজ তৈরির শিক্ষক ছিলেন। তিনি যখন হেফজ পড়ানো শুরু করেন, তখন আজকের মতো সুবিধাজনক পরিস্থিতি ছিল না।
আলোচনা সভায় হাফেজ নূরুজ্জামানের ছাত্র, ভক্ত ও অনুরাগীসহ বিপুল লোকের সমাগম হয়। বক্তারা তাদের বক্তব্যে তার শিক্ষকতা জীবনের স্মৃতি, সমাজ সংস্কার, সমাজচিন্তা, ধর্মীয় মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় ঐকান্তিক প্রচেষ্টার বিষয়গুলো তুলে ধরেন।
আলোচনা সভায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা অংশ নেন।
মাহফিল বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব হাফেজ মাওলানা এনায়েতুল্লাহর স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে শুরু হয় আলোচনা সভা।
এতে আরো বক্তব্য দেন হেফাজত মহাসচিব ও হাইয়াতুল উলিয়ার কো-চেয়ারম্যান মাওলানা সাজিদুর রহমান, বসুন্ধরা মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আরশাদ রাহমানী, মাওলানা নুরুল ইসলাম খান, হেফাজত নেতা মুফতি মুবারকুল্লাহ, শায়খুল হাদিস পরিষদের সভাপতি মাওলানা তাফাজ্জুল হক আজিজ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, মাওলানা আবদুর রহিম কাসেমী, শায়খুল হাদিস পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা হাসান জুনাইদ, মাওলানা মহসিনুল হাসান, মাওলানা এহসানুল হক, মাওলানা আল আবিদ শাকির ও পীর ইয়ামেনি মার্কেট মসজিদের খতিব মাওলানা ইমরানুল বারী সিরাজী প্রমুখ।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগরে শ্বশুর বাড়ি থেকে নিখোঁজ হওয়া গৃহবধূর এখনো সন্ধান মেলেনি। নিখোঁজ হওয়ার প্রায় ১ মাস ধরে মেয়ের সন্ধানে আত্মীয় স্বজনসহ বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ নেন গৃহবধূর বাবা- মা ও তার স্বজনরা। এতো খোঁজাখুঁজির পরও নিখোঁজ মেয়ের সন্ধান না পেয়ে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি বিজয়নগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেন নিখোঁজ হওয়া গৃহবধূর মা সুমি বেগম।
জানা গেছে, নিখোঁজ হওয়া গৃহবধূ খাজিদা আক্তার ময়না বিজয়নগর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ছতুরপুর গ্রামের সেলিম মিয়া মেয়ে। প্রায় ৭ বছর আগে একই উপজেলার সিঙ্গারবিল ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামের মোঃ রমজান মিয়ার ছেলে সৌদি প্রবাসী রাসেল মিয়ার সাথে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয় ময়নার। স্বামী প্রবাসে থাকলেও ওই গৃহবধূর তাবাচ্ছুব (০৫) বছরের একটি কন্যা সন্তান নিয়ে বসবাস করতেন স্বামীর বাড়িতে। গত ১৯ জানুয়ারি বিকেল ৩ টায় খাদিজা আক্তার ময়না (২৫) তার শ্বশুর বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন। প্রায় এক মাস অতিবাহিত হলেও কোন সন্ধান মেলেনি ওই গৃহবধূর।
ময়না নিখোঁজ হওয়ার পর সম্প্রতি একটি ভয়েস বার্তা প্রকাশ পাই। ভয়েস বার্তা প্রকাশের পর ঘটনাটি মোড় নেয় ভিন্ন দিকে।
ময়নার স্বামীর কাছে পাঠানো ভয়েস বার্তায় গৃহবধূ জানায়, আমারে কিভাবে ভুলে থাকতেছো, আমাকে কি বাঁচাইবানা, আমি কোথায় আছি বলতে পারছি না। চারপাশে পাহাড় আর প্রচন্ড ঠান্ডা। আম্মা (শাশুড়ি) এবং আপা (স্বামীর ছোট বোন) জানে আমি কোথায় আছি। আমার মোবাইল পপি আপা কোথায় জানি রাখছে। তুমি পপি আপার সাথে কথা বল। এখানে অনেক ঠান্ডা।
স্বামীর কাছে ইমুর মাধ্যমে খাদিজা আক্তার ময়নার পাঠানো ভয়েস বার্তায় পেয়ে স্বামী রাসেল মিয়া প্রবাস থেকে এ ভয়েস বার্তা ময়নার বাবার কাছে পাঠিয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। ময়নাকে উদ্ধারের ব্যবস্থা নিতে জানান বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ময়নার চাচা মোশাররফ হোসেন। তিনি আরো বলেন, আমার ভাতিজি একজন সরল সহজ মেয়ে। এ ব্যাপারে থানায় মামলার দায়ের করার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।
এ ঘটনায় এলাকা জুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এটি কি নিখোঁজ না কি গুম তা নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন। এদিকে শনিবার সকালে ময়নার শ্বশুর ও শ্বাশুড়িকে পুলিশি হেফাজতে আনা হয়েছে। তথ্য সংগ্রহের কাজ করছে পুলিশ।
বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসাদুল ইসলাম বলেন, গৃহবধু নিখোঁজের বিষয়ে একটি জিডি করা হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে গৃহবধু উদ্ধারের বিষয়ে কাজ করছে পুলিশ।
চলারপথে রিপোর্ট :
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগরে হাফিজুর রহমান (৬০) নামের এক বৃদ্ধকে হত্যা করেছে মেয়ের জামাই। আজ ৪ নভেম্বর শনিবার ভোরে উপজেলার চম্পকনগর ইউনিয়নের নূরপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত হাফিজুর রহমান ওই এলাকা গুলু মিয়ার ছেলে। অভিযুক্ত মেয়ের জামাতা শামীম মিয়া ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন। তিনি একই ইউনিয়নের পেটুয়া গ্রামের তাজু মিয়ার ছেলে।
পুলিশ ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৩ বছর আগে হাফিজুর রহমানের মেয়ে নাহিদা আক্তারের সঙ্গে পারিবারিকভাবে শামিম মিয়ার বিয়ে হয়। নাহিদা আক্তার ও শামিম মিয়ার সংসারে ২ বছরের একটি শিশু সন্তান আছে। বেশ কিছুদিন ধরে পারিবারিক নানান বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। এরই প্রেক্ষিতে ৮ অক্টোবর নাহিদা আক্তার তার স্বামী শামিম মিয়াকে তালাক দিয়ে বাবার বাড়ি চলে আসে। এর পর তিনি স্বামীর বাড়ি ফিরে না গেলে শামীম তার বাবা হাফিজুর রহমানকে হত্যার হুমকি দেয়।
নাহিদা আক্তার এরই মধ্যে পরিবারের লোকজনদের কিছু না জানিয়ে আবার স্বামীর সংসারে ফিরে যান। কিন্তু তাদের মধ্যে ফের কলহ শুরু হয়। এরই জেরে ৩ নভেম্বর শুক্রবার নাহিদা আবার বাবার বাড়ি চলে আসেন। নাহিদাকে ফিরিয়ে নিতে শামীমের বাবাসহ পরিবারের সদস্যরা তাদের বাড়ি আসে। কিন্তু শামীমের সংসারে নাহিদা আক্তার ফিরে যাবে না বলে জানিয়ে দেয়। এরই জেরে ভোরে শামীম শ্বশুর বাড়ি এসে এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাত করে তার শ্বশুর হাফিজুর রহমানকে হত্যা করে পালিয়ে যান।
বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাজু আহমেদ বলেন, মরদেহ জেনারেল হাসপাতাল ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ঘাতক শামীমকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে।
চলারপথে ডেস্ক :
বিজয়নগরে পৃথক অভিযানে ১৫৪ স্কপ সিরাপ এবং ১৪২ বোতল ফেনসিডিলসহ একজনকে আটক করেছে বিজয়নগর থানা পুলিশ। গতকাল বুধবার রাতে এসব মাদক দ্রব্য উদ্ধার করা হয়।
জানা যায়, বুধবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এএসআই সেলিম আহমেদ তার সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে উপজেলার ইকরতরী বাজার রোডের পাকা রাস্তার ওপর চট দিয়ে মোড়ানো অবস্থায় চার প্যাকেটে ১৫৪ স্কপ সিরাপ উদ্ধার করেছেন। এ ঘটনায় উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের মহেষপুর গ্রামের আ. হাসেমের ছেলে আনোয়ার হোসেনকে (২৫) গ্রেফতার করা হয়েছে।
অপরদিকে আউলিয়া বাজার তদন্ত ফাঁড়ির পুলিশ পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মো. মাসুদ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের বড়মোড়া থেকে ১৪২ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করেন। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আসামিরা আনারস বাগানে ফেনসিডিলের বস্তা রেখে পালিয়ে যায়।
বিজয়নগর থানার ওসি রাজু আহম্মেদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এ বিষয়ে বিজয়নগর থানায় পৃথক দুটি মাদকদ্রব্য আইনে মামলা হয়েছে। মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
চলারপথে রিপোর্ট :
বিজয়নগর উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণী পেশার নাগরিকদের সম্মিলিত প্রয়াস নিয়ে গঠিত বিজয়নগর উপজেলা নাগরিক ফোরাম এর উদ্যোগে ভেজাল বিরোধী সচেতনতামূলক কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে।
আজ ২৪ মার্চ শুক্রবার পহেলা রমজানের বিকাল বেলায় উপজেলার হরষপুর ইউনিয়নের নিদারাবাদ বাজারের উক্ত কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন বিজয়নগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ এইচ ইরফান উদ্দিন আহমেদ।
এসময় তিনি উক্ত সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে বিভিন্ন দোকানের মালিক ও উপস্থিত বিভিন্ন ক্রেতার মাঝে সচেতনামূলক লিফলেট বিতরণ করেন। এবং মানুষকে ভেজাল খাদ্যের ক্ষতিকারক দিক তুলে ধরে তা পরিহার করার জন্য সচেতন করেন।
এসময় বিজয়নগর উপজেলা নাগরিক ফোরাম এর সভাপতি মোঃ আব্দুর রশিদ খান, সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক কামরুল হাসান শান্ত, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ আবু হানিফ, কার্তিক চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ আলাল উদ্দিন, মোঃ মাহমুদুল হাসান হেলন, কোষাধ্যক্ষ মোঃ মাহিদুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ সেলিম চৌধুরী, সদস্য মোঃ জহিরুল ইসলাম সুজন, মোঃ হাবিব, নাহিদ খাঁন, কাজী সাগরসহ স্থানীয় বিভিন্ন নেতৃত্ব উপস্থিত ছিলেন।